অসম্ভবের বিজ্ঞান (৩য় পর্ব) - আপনিও হতে পারেন একজন জুলভার্ণ

অভিজিৎ এর ছবি
লিখেছেন অভিজিৎ (তারিখ: রবি, ২৬/১০/২০০৮ - ৪:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২য় পর্বের পর...

টেলিপোর্টেশন বা সময়পরিভ্রমণের মত 'অসম্ভবের বিজ্ঞানের' আলোচনা এ পর্বে না হয় বাদ থাকুক - আপনাদের যদি বলা হয় আগামি ২৫ বা ৩০ বছরের মধ্যে যে সমস্ত প্রযুক্তিকে চোখের সামনে ঘটতে দেখবেন বলে মনে করছেন তার একটা তালিকা বানাতে, আপনি কি বানাতে পারবেন? তৈরি করতে পারবেন -'অসম্ভভবের প্রযুক্তির' সম্ভাব্যতার একটা 'ঝাকাস তালিকা'? অনেক সংগঠন কিন্তু আছে যারা এ নিয়েই নিরন্তর কাজ করেন। আজকের জ্ঞান বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং অবস্থানের সাপেক্ষে তারা মানুষকে একটা ধারনা দিতে চেষ্টা করেন যে, আগামী কয়েক দশকে মানব সভ্যতা কোথায় পৌছুঁতে পারে। এমনি একটি সংগঠন হল 'ওয়ার্ল্ড ফিউচার সোসাইটি'। তাদের দেওয়া ভবিষ্যদ্বানীগুলো অনেকটা এরকম-

আসুননা, আমরাও আমাদের চিন্তা থেকে এরকম একটা 'টপ টেন' তালিকা করার চেষ্টা করি। তালিকাটা কি অনেকটা আমার করা নীচের লিস্টির মত দেখাবে?

১। ইন্টারনেট হয়ে উঠবে যোগাযোগের অনেকটাই মূল এবং জনপ্রিয় মাধ্যম। ওয়েবসাইট গুলো হয়ে উঠবে সচলায়তনের মত অনেক বেশী ইন্টার-এক্টিভ। নিউজপেপারের ‘স্ট্যাটিক পেজ’ গুলো ব্লগের মত ডায়নামিক হয়ে উঠবে, যার ছোঁয়া এখনই বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে। হয়ত ভবিষ্যতে এর সাথে যুক্ত হবে ভিডিও কনফেরেন্সিংও। থাকবে নিউজপেপারের কলামিস্টের সাথে সরাসরি ভার্চুয়াল যোগাযোগের ব্যবস্থা। অনেকের জীবন হয়ে উঠবে অনেকটাই 'ভার্চুয়াল'। তাদের 'সাইবার বন্ধু'র সংখ্যা সত্যিকার চেনা জানা বন্ধুদের সংখ্যাকে অতিক্রম করে যাবে।

তবে ইন্টারনেট জনপ্রিয় হবার সাথে সাথে আইডেন্টিটি চুরি সহ অন্যান্য আন্তর্জালিক অপরাধও পাল্লা দিয়ে আরো বাড়বে।

২। টিভি এবং সিনেমা হলগুলো হয়ে উঠবে থ্রিডি (জার্ণি টু দ্য সেন্টার অব দি আর্থের ত্রিডি ভার্শন দেখেছেন নাকি মুভি হলে?)।

৩। ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ৮০ ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে।

তেলের উপর অব্যাহত চাপ কমানোর চেষ্টা থেকে নবায়নযোগ্য শক্তির উপর গবেষণা বাড়বে। খনিজ তেলের বিকল্প হিসেবে অন্য কোন শক্তি যানবাহনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করার চিন্তা অব্যাহত থাকবে। হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহার বাড়বে, যতদিন পর্যন্ত না চূড়ান্ত বিকল্প কিছু খুঁজে পাওয়া যায়।

৪। 'চেতনা সম্পন্ন যন্ত্র' (self-aware machine) ছোট স্কেলে হলেও হয়ত বাজারে চলে আসবে, আগামী শতকের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে। রবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কম্পিউটার নিয়ে অব্যাহত গবেষণা অদূর ভবিষ্যতে উন্মোচন করবে আর্থার সি ক্লার্কের সেই Hal 9000 তৈরির দুয়ার।

৪। গুগলের মত সার্চ ইঞ্জিনগুলো আগামী ২৫ বছরের মধ্যে হয়ে উঠবে অনেক বেশী মানব সদৃশ (Human like)। এ সমস্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর (AI-based) সার্চ ইঞ্জিনগুলো অনেকটা মানুষের মতই প্রশ্ন শুনে এবং এর উত্তর দিয়ে সাহায্য করবে।

৫। 'জেনেটিক থেরাপী' চিকিৎসাক্ষেত্রে বিপ্লব নিয়ে আসবে। যে বংশগত বিভিন্ন রোগ ঔযধ প্রয়োগে এতদিন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না, (মানুষের জিনোমের উপর চিকিৎসকদের জ্ঞান বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে) সেগুলো জেনেটিক কোড বদলে দিয়ে নিরাময় করা সম্ভব হবে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস কিংবা ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত সূচিত হবে, এবং এগুলোর চিকিৎসা হয়ে উঠবে অনেক নিরাপদ।

কিন্তু এ ধরনের জিনগত চিকিৎসা চালুর কারণে মানুষের ভয় এবং উৎকন্ঠাও পাল্লা দিয়ে বাড়বে। কারণ অনেকেই নিজের ডিএনএর বিন্যাস পালটে দিয়ে চেহারা এবং দেহের গঠণ অনেক আকর্ষনীয় করে তুলতে চাইবে, কেউ বা অর্জন করে চাইবে লাইটনিং বোল্টের মত ক্ষিপ্রতা, অথবা উত্তোরণ ঘটাতে চাইবে নিজের বুদ্ধিমত্তার। কোন্ টি করা নৈতিক আর কোনটি অনৈতিক – এ নিয়ে আদর্শিক দ্বন্দ্ব বাড়বে। রাষ্ট্র হয়ত চেষ্টা করবে একটা নিয়মে গবেষক এবং চিকিৎসকদের বেধে রাখতে।

৬। সিন্থেটিক রক্ত এবং গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে তৈরী বিভিন্ন অংগ-প্রত্যংগ ক্রমশঃ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে চিকিৎসাক্ষেত্রে এবং প্রযুক্ত হবে মুমূর্ষু রোগীদের বাঁচানোর ক্ষেত্রে।

৭। ভবিষ্যতের বইগুলো সেলফোনে শোনা যাবে, কিংবা এর টেক্সট সেলফোনে ডাউনলোড করা যাবে।

৮। যানজট সমাধানের জন্য ‘ফ্লাইং কার’গুলো শেষ পর্যন্ত বাজারে আসবে। জামে পড়লেই সেগুলো আকাশ পথে উড়াল দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছুবে। এতে সময় এবং শক্তি দুই-ই বাঁচবে। তবে তাদের চলাচলের জন্য রাষ্ট্র এবং সরকারকে দিতে হবে নতুন নীতিমালা।

৯। সনাতন স্কুল-কলেজের শিক্ষাগুলোর জনপ্রিয়তায় ঘাটতি শুরু হবে। অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিগুলো আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে। স্কুল লাইব্রেরি গুলোও হয়ত হবে ভার্চুয়াল। Avatar জাতীয় কোন ভার্চুয়াল শিক্ষক ছাত্রদের গাইড করবে নিপুন দক্ষতায়!

১০। মানববিধ্বংসী অস্ত্র নিউক বোমা, জৈবঅস্ত্র ইত্যাদি টেরোরিস্টদের হাতে সহজলভ্য হয়ে উঠতে পারে। খুব বেশি কষ্ট করে সংগ্রহ না করে হয়ত নিজেরাই তা বানিয়ে নিয়ে পারবে, সে সমস্ত টেকনোলজি চলে যেতে পারে টেরোরিস্টদের হাতে। জিনোমিক্স, ন্যানোটেকনোলজি এবং মাইক্রোসায়েন্সের উন্নতির পাশাপাশি এদের অপব্যাবহারও বাড়বে, বাড়বে বায়ো-ভায়োলেন্সের আশংকাও। অবশ্য রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাও হয়ে উঠবে পাল্লা দিয়ে আধুনিক।

তালিকাটা তো আরো বাড়ানো যায় নিঃসন্দেহে ...।

আপনারাও এতে অংশ নিন না! আপনি যে যে প্রযুক্তিগুলোকে অদূরভবিষ্যতে চোখের সামনে কিংবা কল্পণায় ঘটতে দেখতে চান - তার একটা তালিকা করে ফেলুন চটপট। হয়ত আপনিও হতে পারেন ভবিষ্যতের জুলভার্ণ কিংবা আর্থার সি ক্লার্ক! কে জানে!

চলবে...


মন্তব্য

...অসমাপ্ত [অতিথি] এর ছবি

ভবিষ্যতের কম্পিউটার প্রোগ্রাম গুলো হবে বেশির ভাগই অনলাইন ভিত্তিক।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গুলোর সম্মিলিত বুদ্ধিমত্তা কে নানা ভাবে ব্যবহার করা হবে (খারাপ এবং ভাল কাজে)।

কম্পিউটার ভাইরাস গুলো হার্ডওয়ারের ক্ষতি করার মত দক্ষতা অর্জন করবে।

হার্ডওয়ার ভিত্তিক কোন রকম এন্টিভাইরাস ব্যবস্থা নেটওয়ার্ক এ ইমপ্লিমেন্ট করা হবে (হার্ডওয়ার ফায়ারওয়ালের মত)।

কাগুজে টাকার প্রচলন অনেক অনেক কমে যাবে।

বুদ্ধিমান সিস্টেম এর ব্যাপক উন্নতি এবং প্রচলন হবে। ফলে ব্যাপক হারে মানুষ বেকার হবে।

অভিজিৎ এর ছবি

চমৎকার।
চালিয়ে যান...। আমি সবার মন্তব্য পাওয়ার পর একটা মতামত দেয়ার চেষ্টা করব।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

...অসমাপ্ত লিখেছেন:

ভবিষ্যতের কম্পিউটার প্রোগ্রাম গুলো হবে বেশির ভাগই অনলাইন ভিত্তিক।

ভবিষ্যত বলছেন কেন। এটাতো বর্তমানেই ঘটছে। উইন্ডোজ ৭ তো তৈরী করা হচ্ছে এই ব্যাপারটি মাথায় রেখেই। আপনি পেনড্রাইভে বা একই রকম ড্রাইভে আপনার উইন্ডোজ রাখবেন। অন্য কম্পিউটারে সেটা ইনসার্ট করলে ওএস ওখান থেকে বুট হবে এবং সেই কম্পিউটারটি আপনার কম্পিউটারে পরিনত হবে। তাছাড়া গুগল তো এই উদ্দেশ্যেই গুগল ডকসের মত এপ্লিকেশন তৈরী করছে। ক্রোম ব্রাউজারের জন্মও হয়েছে একারনেই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

কীর্তিনাশা এর ছবি

ভবিষ্যতে মানুষ প্রকৃতিজাত খাবার কম খাবে। আসলে কিভাবে খাবে, পেলে তো? মানে প্রকৃতিজাত খাবার হয়ে যাবে দুর্লভ এবং দুর্মূল্য। তখন শরীরের প্রয়োজন মেটাতে মানুষ একটা বিশেষ ধরনের ট্যাবলেট খাবে। বাস্ এক গুলিতে দিন পাড়।

এইটা আসলে আমার চিন্তা না। কোথায় যেন পড়ছিলাম। দেঁতো হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

অনেক আগে (বিটিভিতে মনে হয়) একটি ইংরেজি চলচিত্র দেখেছিলাম। সেখানে মহাকাশযানের লোকজন বিভিন্নস্বাদের ক্যাপসুল খায়।

এক ছোকরা কেবল বায়না ধরেছিলো মুরগা খাওয়ার।

মানববিধ্বংসী অস্ত্র নিউক বোমা, জৈবঅস্ত্র ইত্যাদি টেরোরিস্টদের হাতে সহজলভ্য হয়ে উঠলে তা হবে সত্যিই ভয়ঙ্কর!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

অভিজিৎ এর ছবি

মুরগা তো আমিও খাইতে চাই... হাসি



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বস্, আবার টেলিপোর্টেশনে ফিরে আসেন
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অভিজিৎ এর ছবি

হ্যা, তাই যাইতে হবে... ব্যাক টু দ্য ফিউচার (প্যাভিলিয়ন?) হাসি
একটু ফাঁকি দিছিলাম এই পর্বে, তাও আপনাগো জ্বালায় পারি না।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

রণদীপম বসু এর ছবি

গত দু'তিন দিন যাবৎ অন-লাইন ব্রাউজিং-এ এতো বেশি সমস্যা হচ্ছে যে, পোস্ট দেয়া তো দূরের কথা, কারো পোস্টে মন্তব্য দেয়াটাই দায় হয়ে পড়েছে।

গতকাল এই পোস্টে তিন নম্বর মন্তব্য করতে গিয়ে অভিজিৎদার দুরভিসন্ধিতে পড়ে রীতিমতো সাইন্স ফিকশনই লিখে ফেলেছিলাম প্রায়। মন্তব্যের শেষে ক্লিক করেই সার্ভার নাকি আর এড্রেস খুঁজে পায় না। পায় না পায়ই না। ফায়ারফক্সে বহুবার প্রায় আধঘণ্টা ঘুটাঘুটি করেও কোথাও ব্রাউজিং করতে না পেরে শেষে এক্সপ্লোরার-এ সচেষ্ট হলাম। কিন্তু যাহা লাউ তাহাই কদু।
আমার দুঃখটা হলো সেই ফিকশন মন্তব্যটা হারিয়ে গেলো, যা এখন আর লেখার ধৈর্য্যে কুলোবে না।

অতএব, আমাকে বলতে হবে, ভবিষ্যতের বিজ্ঞানে ব্রাউজিং-এ এভাবে ঠুটু জগন্নাথের মতো হেবলা হয়ে থাকতে হবে কিনা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অভিজিৎ এর ছবি

গতকাল এই পোস্টে তিন নম্বর মন্তব্য করতে গিয়ে অভিজিৎদার দুরভিসন্ধিতে পড়ে রীতিমতো সাইন্স ফিকশনই লিখে ফেলেছিলাম প্রায়। মন্তব্যের শেষে ক্লিক করেই সার্ভার নাকি আর এড্রেস খুঁজে পায় না। পায় না পায়ই না।

ইসস... ভাল একটা সায়েন্স ফিকশন মিস করলাম মনে হয়



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

শিক্ষানবিস এর ছবি

ভবিষ্যৎ বিবেচনা করতে গিয়ে বোধহয় বিজ্ঞানীরাই বেশী ভুল করেন। এজন্যই কল্পবিজ্ঞান এতো ভালো লাগে। আর্থার সি ক্লার্কের ১০০ বছরের ভবিষ্যৎবাণীগুলো অসাধারণ লেগেছিলো। অবশ্য তার অনেকগুলোই অতিরঞ্জিত মনে হয়। তরপরও সেগুলো ভালো লাগে। কারণ তাতে থাকে অসাধারণ কল্পনাশক্তি।

আমার কল্পনাশক্তি এতো ভালো না। আমি ভবিষ্যৎবাণী না করে বরং কয়েকটা আশার বাণী শুনিয়ে যাই।
- আগামী ১০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সব দেশ সামরিক বাহিনী বিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু করবে।
- আগামী ২০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে সব ধরণের মারণাস্ত্র উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।
- ২৫-৩০ বছরের মধ্যে মানুষ মঙ্গলে উপনিবেশ স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে।
- ২৫-৩০ বছরের মধ্যে নিউক্লীয় শক্তিতে বিপ্লব আসবে: নিরাপত্তা বাড়বে, ইতিবাচক ব্যবহার বাড়বে।
- ২৫-৩০ বছরের মধ্যে "আইএইএ" পৃথিবীর সব পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংসের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হবে।

অভিজিৎ এর ছবি

আরে আর্থার সি ক্লার্কের এ লেখাটা আপনি অনুবাদ করেছিলেন? আমি মিস করলাম ক্যামনে! কল্পণা আক্তারের মত আমিও লেখাটা খুঁজেছি বহুদিন। প্রয়োজনীয় লেখা ...খুব ভাল করেছেন অনুবাদ করে। আমার কাজে আসবে...।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

নন্দিনী  এর ছবি

আহারে ! এর কিছুও যদি দেখে যেতে পারতাম ঃ-)

নন্দিনী

নন্দিনী  এর ছবি

ওহ ! বলতে ভুলে গেছি , আমি ভাই সব কাজ শুধু মাত্র একটা সূইচ টিপে করতে চাই,তাও আমার বিছানায় বসে ঃ-) যেমন চা খেতে ইচ্ছা হলো, মনে মনে ভাবলেই আমার কাছে ট্রে সমেত চা নাচতে নাচতে চলে এলো, এই আর কি ! এটা কি সম্ভব , হলে কখন,কবে?
মোট কথা আমি এই রকম একটা স্বপ্ন দেখি শুধু একটা সূইচ টিপবো,ব্যাস কেল্লাফতে ঃ-) উফ কাজ করতে করতে আর পারিনা ঃ(

নন্দিনী

অভিজিৎ এর ছবি

হাঃ হাঃ...আর আমি সুইচটাও টিপতে চাইনা। মুখে অর্ডার দিয়ে দিব আর আমার পোষা রবোটটা যা করার করে দেবে...



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

দ্রোহী এর ছবি

২০৫০ সালেও বদনা জিনিসটা বদনাই থেকে যাবে।

আফসোস!!!!!!!!


কী ব্লগার? ডরাইলা?

সুধীর এর ছবি

@নন্দিনী,অভিজিৎ

না, সব কিছুই আপনারা রোবটকে দিয়ে করাতে চান না!

দিগন্ত এর ছবি

মোবাইলে সব ব্যাঙ্কিং, ক্যাশলেস ট্রান্সাকশন। তবে প্রযুক্তি খুব সস্তা হয়ে যাবে। তাই পরে মোবাইল ফোন কোম্পানী ফ্রি-তে ফোন দিলেও অবাক হবার কিছু নেই।

বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে তৈরী হওয়া জিনিসপত্র বিক্রি হবে যে কোনো অঞ্চলে - যাকে বলে ফ্রি ট্রেড।

আশা রাখি তেলের বিকল্পও চলে আসবে বাজারে।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অভিজিৎ এর ছবি

এই পর্বের লেখাটা খুব হাল্কা হয়ে গিয়েছে বলে মনে একটা খচখচানি ছিলো। লেখাটাকে একটু ঢেলে সাজিয়েছি এখানে। নিঃসন্দেহে শিক্ষানবিসের করা আর্থার সি ক্লার্কের ১০০ বছরের ভবিষ্যৎবাণীগুলো খুবই কাজে এসেছে। এ লেখার বাইরেও ক্লার্কের যে ভবিষ্যদ্বানীগুলো বাস্তবতার সাথে মিলে গেছে, সে নিয়ে কিছু হাল্কা পাতলা কথাবার্তা সংযোজন করেছি প্রথম দিকে। প্রাসঙ্গিক মনে করায় সচল ব্লগারদের করা ভবিষ্যদ্বানীগুলোও রেখে দিয়েছি।

সবাইকে ধন্যবাদ সিরিজটির সাথে থাকার জন্য।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

অভিজিৎ এর ছবি

বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যদ্বানীর পাশাপাশি কিছু সামাজিক ভবিষ্যদ্বানী করা শুরু করলে মন্দ হয় না!

আমি শুরু করে দিলাম ...

১) অর্গানাইজড রিলিজিয়নের আবেদন অনেক দিন হল পড়তির দিকে, অন্ততঃ পশ্চিমা বিশ্বে। সুইডেনে ৮৪% লোক এখন আর কোন ধর্মে বিশ্বাস করে না; ফ্রান্সে ৫৪%, ইংল্যন্ডে ৪৪%, আর ওদিকে জাপানে নাকি ৬৫% মানুষই নাকি ধর্মে আস্থা হারিয়েছে। সে তুলনায় আমেরিকায় সংখ্যাটা যদিও মাত্র ১৬%, তারপরও, গত কয়েক বছরে ৮% থেকে বেড়ে ১৬% হওয়াটা একটা ট্রেন্ডকে তুলে ধরে। সে নিরিখে বলা যায়, ভবিষ্যতের পৃথিবী বিশ্বাস নির্ভর না হয়ে হবে যুক্তি নির্ভর। World Trends and Forcast, July-August 2008, p 16 -এর ভবিষ্যদ্বানী সে দিকেই ইঙ্গিত করছে।

২) যৌনস্বাধীনতা (বিশেষতঃ মেয়েদের) বাড়বে, এরেঞ্জড ম্যারেজ এর সঙ্খ্যা ক্রমশঃ কমে আসবে। অন্ততঃ সমাজ বিজ্ঞানী হেলেন ফিশার তাই মনে করেন। - 'women will feel freer to express their sexuality'।

৩) মধ্যপ্রাচ্য অনেক স্যেকুলার হয়ে উঠবে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের একটি সাম্প্রতিক স্টাডিতে তার উল্লেখ পাওয়া যায়। পশ্চিমা বিশ্ব তেমের অলটারনেটিভ কিছু খুঁজে পেলে আরব বিশ্বের পেট্রোডলারের প্রকোপে বাংলাদেশে মাদ্রাসা গড়ে উঠার ট্রেন্ডও যাবে পড়তির দিকে।

৪) নতুন প্রজন্মের জন্য ভবিষ্যত পৃথিবীতে আসবে নতুন ধরনের মূল্যবোধ। যে নৈতিকতা আর মূল্যবোধের ব্যাপার স্যাপার গুলো এতদিন মোল্লা-পুরুতেরা নিয়ন্ত্রোন করত, প্রাচীণ 'পবিত্র' গ্রন্থের সাপেক্ষে, সেগুলো ক্রমশঃ হারিয়ে যাবে। তার বদলে পরিবেশ সচেতনতা, জিনগত চিকিৎসার আদর্শিক দ্বন্দ্ব প্রভৃতি হয়ত পুরোনো মূল্যবধের মাপকাঠিকে প্রতিস্থাপন করবে।

৫) চীন এবং ভারতের অর্থনৈতিক উত্থান এবং পশ্চিমা বিশ্বে এইচ ওয়ান ভিসায় ব্যাপক ভারতীয়, বাংলাদেশী এবং তৃতীয় বিশ্বের মানুষের ক্রমিক উপস্থিতি আমেরিকান সাংস্কৃতিক হেজিমনি এবং আধিপত্যকে খর্ব করবে।

৬) বিবাহ-বিচ্ছেদের প্রকোপ বাড়বে অনেক। ট্রাডিশনাল বিয়েই থাকে কিনা সন্দেহ।

৭) ভবিষ্যত পৃথিবীতে প্রাইভেসি জিনিসটা চাইলেও হয়ত পাওয়া যাবে না। ক্যামেরা, স্যাটেলাইট, ডিএনএ রেকর্ড, ফিংগারপ্রিন্টিং, ন্যানো স্টোরেজের ব্যাবহারে আপনার প্রতিটি কথা, প্রতিটি চাল চলন এবং কর্মকান্ড রেকর্ড হয়ে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে।

৮) ইন্টারনেট যোগাযোগের মূল এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠায় মেদের অনেকেই cyber bullyর শিকার, অনেক অপ্রাপ্তবয়স্কারা সেক্স-প্রেডিটরের খপ্পরেও পড়বে - চ্যাটরুম, ম্যাসেজ বোর্ড, ব্লগ, ইন্সটান্ট ম্যাসেজিংকে সরলভাবে বিশ্বাস করে। ওয়ার্ল্ড ট্রেন্ড এবং ফোরকাস্ট এর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায় সে ধরনের আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে।

৯) পৃথিবীর লিগাল সিস্টেমগুলো একটি নেট ওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে।

১০) অত্যাধুনিক বিজ্ঞানের (ভবিষ্যত-) আবিস্কারকে (যেমন টেলিপোর্টেশন, অদৃশ্যতা, নিউরসায়েন্সের বিভিন্ন আবিস্কার প্রভৃতিকে সমরাস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।

১১) চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে মৃত্যহার কমে আসবে। পশ্চিমা বিশ্বে এমনিতেই বাচ্চা-কাচ্চা নেওয়ার প্রকোপ পড়তির দিকে - জন্মহার কমে গেছে বহুলাংশে। ভবিষ্যতের প্ররথিবিতে হয়ত অনেক প্রবীন কিন্তু স্বাস্থবান মানুষ দেখা যাবে ...।

এবার আপনারা এ তালিকাটা শেষ করতে পারেন...।।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

শিক্ষানবিস এর ছবি

সামাজিক ভবিষ্যৎবাণীগুলা আরও ভাল লাগলো। তবে কয়েকটা পড়ে খুব মর্মাহত হলাম। ১০ নম্বরটা ঘটলে তো ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এটা কমতির দিকে যাওয়ার কি কোনই সম্ভাবনা নেই? আমি আরও সবাইকে সামরিক বাহিনী ও অস্ত্র-শস্ত্র বিলুপ্তির কথা শুনিয়ে বেড়াচ্ছি।

২,৬ আর ৮ নম্বরটা আমাদের পারিবারিক জীবনের জন্য খুব ক্ষতিকর। তারপরও এটা হচ্ছে, কিছু করার থাকছে না। মানুষের প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠানটা (পরিবার) কি তবে বিলুপ্ত হতে বসলো? এটা ভেবেও ভাল লাগছে না।

তবে প্রতিষ্ঠিত ধর্মগুলো থাকবে না, এটার পেছনে আমি অনেক যুক্তি খুজে পাচ্ছি। এই যেন হয়।
৭ নম্বরটাও খুব একটা স্বস্তিদায়ক না। তবে তখনও নিশ্চয়ই মানুষ প্রাইভেসি রক্ষার জন্য কিছু না কিছু করবে। দেখা যাক কি হয়।

আমিও কিছু ভবিষ্যৎবাণী করি:
- মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধ বলে কিছু থাকবে না। সবাই বিশ্ব নাগরিক হয়ে যাবে। একসময় মহাবিশ্বের নাগরিক হওয়ার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করবে।
- পৃথিবীর অনেকগুলো সংস্কৃতি মিউজিয়ামে যেতে বাধ্য হবে। কারণ জাতীয়তাবোধ হারানোর অর্থই হচ্ছে স্বজাতির সংস্কৃতি চর্চা কমে আসা। সব সংস্কৃতি এক হয়ে একটা জগাখিচুড়ি হয়ে যাবে। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংস্কৃতিগুলোর স্থান হবে তাই জাদুঘরে।

আপাতত এটুকুই।

অভিজিৎ এর ছবি

সামাজিক ভবিষ্যৎবাণীগুলা আরও ভাল লাগলো। তবে কয়েকটা পড়ে খুব মর্মাহত হলাম। ১০ নম্বরটা ঘটলে তো ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এটা কমতির দিকে যাওয়ার কি কোনই সম্ভাবনা নেই?

এতটা আশাবাদী আমি সত্যই হতে পারছি না। ১০ নম্বর ভবিষ্যদ্বানীতে বলা হয়েছে - "অত্যাধুনিক বিজ্ঞানের আবিস্কারগুলোকে (যেমন টেলিপোর্টেশন, অদৃশ্যতা, নিউরসায়েন্সের বিভিন্ন আবিস্কার প্রভৃতিকে) সমরাস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে"। টেলিপোর্টেশনের কথা চিন্তা করুন। আমি জ্বনের বাদশাকে উত্তর দিতে গিয়ে বলেছিলাম - এই টেলিপোর্টেশন সমরাস্ত্রের জগতে রীতিমত বিপ্লব এনে দেবে। শত্রু খতম করতে তখন আর সময় আর অর্থ নষ্ট করে লোক-লস্কর, ট্যাংক, যুদ্ধজাহাজ নিয়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিতে হবে না। এক লহমাতেই শত্রুর ক্যাম্পের পেছনে 'ভুতের মত' আপনি আবির্ভুত হতে পারবেন, আর তারপর ঝাকানাকার মত কষতে পারবেন জুজুৎসুর এক মোক্ষম প্যাঁচ। ব্যাস শত্রু আপনার বগলদাবা। ইনভিজিবিলিটি বা অদৃশ্যতা নিয়ে গবেষনাতেও কিন্তু একই কথা খাটে। সমস্ত যুদ্ধজাহাজ চখের সামনে থেকে অদৃশ্য করে দিয়ে যদি অন্য দেশে হানা দেওয়া যায় তাহলে আর পায় কে! আসলে এটার ট্রেন্ড কিন্তু এখনই দৃশ্যমান। আর সেজন্যই DARPA (Defense Advansed Project Research Agency) দেদারসে এগুলোতে ফান্ডিং দিয়ে যাচ্ছে। ...।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

তুলিরেখা [অতিথি] এর ছবি

ভাষা বিষয়ে চিন্তায় আছি। কটা ভাষা টিকবে?কটা আর্কাইভে যাবে?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।