নির্বাচনী উত্তাপে বাংলাদেশ ও আমেরিকা

জিজ্ঞাসু এর ছবি
লিখেছেন জিজ্ঞাসু (তারিখ: মঙ্গল, ২১/১০/২০০৮ - ৫:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কারা কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমেরিকানদের ভোট কারচুপি -

আমাদের দেশের প্রায় সবারই জানা বাংলাদেশে ভোট নিয়ে কিভাবে দুর্নীতি হয়। ভোটের আগের রাতে টাকা দিয়ে ভোট কেনা হয়। ভোট দেয়ার জন্য বস্তিবাসী ও দরিদ্রজনগণকে শাড়ী, লুঙ্গি ইত্যাদি প্রার্থীর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেয়া হয়। অপেক্ষাকৃত গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ভয়ভীতি দেখানো হয় । সংখ্যালঘুদের কিংবা কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের উপর নানা ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হয় যাতে তারা ভোট দিতে না যায়। তারপর আছে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের আনা নেওয়ার ব্যবস্থা করা। চা-নাস্তা, কোমল পানীয়, বিড়ি-সিগারেট ইত্যাদি দিয়ে ভোটার আপ্যায়নের ব্যবস্থা, ইত্যাদি। জাল ভোট প্রদান, ব্যালট বাক্স চুরি বা প্রকৃত ভোট গায়েব করাসহ আরও হাজারও দুর্নীতি হয় ভোট নিয়ে, আমাদের দেশে, যেসবের সব বা কিছু এখানে উল্লেখ করা আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং আমি বলতে চাই এসব বাংলাদেশে করা হয় আইনের চোখের সামনে, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে –প্রকাশ্যে – যাকে বলা যায় একধরনের ওপেন সিক্রেট। এসব নিয়ে কেউ অনেক সময় কোন কথা বলে না, দেখেও না দেখার ভান করে বা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করে। কারণ প্রতিবাদ করতে গেলে ব্যক্তি পর্যায়ে কোন বিপদে পড়তে হবে সেই ভয় ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশাসনের নিস্পৃহতা, জটিলতা ও বাধার মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি নিয়ে আর কাজের কাজ তেমন কিছু করা হয় না। কোর্টকাছারিতে মামলা করলে পাঁচ-দশ বছর গড়ায় ততদিনে একটা সংসদের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। ততদিনে বিজয়ী দলের বিজয় মিছিল, মিডিয়ার কলকাকলিতে সারা দেশে উৎসব শুরু হয়ে যায়। বিজয়ী দল পাঁচ বছর তাদের কূকীর্তিপূর্ণ মনস্কামনা পূর্ণ করে।

প্রায় একই ধরনের দুর্নীতি হয় আমেরিকাতেও। কিন্তু সেটা আবার এমন গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরা প্রকাশ্যে বা আমাদের মত এত দৃষ্টিকটুভাবে করে না। তবে করে। কারণ আমেরিকায় আপামর জনসাধারণের মিডিয়া এক্সপোজার একটু ভিন ধরনের। মিডিয়ার মাধ্যমেই জনগণকে বোকা বানানো হয় সেখানে।

আমাদের দেশে জনগণের মিডিয়া এক্সপোজার একরকম। আমেরিকায় তারচেয়ে একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন আমেরিকায় বেশির ভাগ মানুষ যারা পত্রিকা পড়ে তারা রাজনীতির খবর খুব একটা পড়ে না। তারা পত্রিকা কিনে ফুটবল (যে বলকে তারা পায়ে খুব একটা লাথি মারে না বরং বগলদাবা করে নিয়ে দৌড় দেয়), এবং বাস্কেট বল, বেইসবলের খবর নিতে এবং স্থানীয় কিছু খবর ও অ্যাডভারটাইজমেন্ট তথা ডিসকাউন্ট কুপনের জন্য। কোন বিষয়ের surface থেকে তারা যতটা তথ্য পায় সেটুকু পায় টিভিতে। কিন্তু thorough reading এর মাধ্যমে একটা বিষয়ের গভীরে যাওয়ার জন্য পত্রিকার যেসব কলাম পড়া দরকার তা আমাদের দেশের পাঠকদের মতই আমেরিকার পাঠকেরাও পড়ে না। যারা পড়ে তারা সংখ্যায় নগণ্য। অর্থাৎ মিডিয়া প্রায় একই রকম ইফেক্ট নিয়ে কাজ করে বাংলাদেশ ও আমেরিকায়। তবে আমেরিকায় visual মিডিয়ার audience আমাদের অনুপাতে অনেক অনেক বেশি।

মিডিয়া এক্সপোজারের এমন ধরনের কারণেই ৯-১১ এর টুইনটাওয়ার হামলা নিয়া কোন্ ফরাসী সাংবাদিক এটাকে false flag operation নামে আখ্যায়িত করেছেন কিংবা ২০০০ সাল ও ২০০৪ সালের আমেরিকার নির্বাচনে জর্জ বুশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিজয় চুরি করেছে কি না - তা খুব খুব সামান্য লোকই জানে। অর্থাৎ যারা প্রগ্রেসিভ তারা একটু বেশি খবর রাখে বৈকি, তবে তাদের সংখ্যা সারাদেশের শতকরা চার পাঁচ জন। বাংলাদেশে যেমন সিভিল সোসাইটি ভারি ভারি বিষয় নিয়ে মিডিয়ায় বিতর্কে লিপ্ত হয়, যেমন, গ্রীণ হাউস ইফেক্ট, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, নারী উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, সিডও (CEDAW) ডিক্লারেশন, গণতন্ত্র, ওমবুডসম্যান বা ন্যায়পাল, ন্যায় বিচার, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা, গণস্বাস্থ্য বা পাবলিক হেলথ, প্রজনন স্বাস্থ্য, ড্রাগ অ্যাডিকশন, শতাব্দী উন্নয়ন লক্ষমাত্রা, ইন্টেলেকচুয়ার প্রপার্টি রাইটস ইত্যাদি নিয়ে যত আলোচনা হয় তার প্রতি যেমন সাধারণ শ্রোতাদর্শকদের খুব একটা মনোযোগ নেই বরং টিভিতে "ইত্যাদি" দেখার জন্য প্রায় শতকরা একশ’ ভাগ শ্রোতাদর্শক পাওয়া যায় তেমনি আমেরিকাতে লেইট নাইট কমেডিতেও যথেষ্ট দর্শক হয়। এজন্য সিরিয়াস বিষয় নিয়ে যেহেতু সাধারণ ভোটাররা তেমন ইন্টারপ্রিটেটিভ সাংবাদিকতার মুখোমুখি হয় না তাই ভোটের রাজনীতিতে গুটি চালতে অনেক ক্ষেত্রে আমেরিকানরা সফল হয় - ভোটারদের পক্ষ থেকে কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া ছাড়াই। রিপাবলিকান দল এর আগেও এর প্রমান দিয়েছে এবছরও তারা সে চেষ্টা করবে।

এছাড়া ভোটের ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক প্রেশার গ্রুপ। ধনকুবেরদের দল (corporate businesses), ইসরাইলি ইহুদি লবি, নারীবাদী, সিনিয়র সিটিজেনস, কনজারভেটিভস, গে-মেরিজ ইত্যাদি প্রেশার গ্রুপ আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ে ভোটকে প্রভাবিত করতে।

যেহেতু আমেরিকায় সরাসরি জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় না বরং ইলেক্টোরাল কলেজ (কলেজ অব ইলেক্টরস বা নির্বাচক দল বা নির্বাচক মণ্ডলীর) ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হচ্ছে সেহেতু কিছু কিছু রাজ্যে – যাদের ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা অন্য রাজ্যের চেয়ে বেশি – এনিয়ে ইতিপূর্বে সূক্ষ্ম দুর্নীতি হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা তাদের জনগণের আনুপাতিক হারে নির্ধারিত হয় যা মেম্বারস্ অব হাউস আব রেপ্রেজেন্টেটিভ এবং সিনেটরের মোট সংখ্যার সমান। তাই কিছু রাজ্যে, - যেমন ক্যালিফোর্নিয়ায় (৫৫), টেক্সাসে (৩৪), ফ্লোরিডায় (২৭), নিউইয়র্কে (৩১) ইত্যাদি - ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা বেশি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে প্রার্থীকে আমেরিকার সর্বমোট ৫৩৮ টা ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০ টা পেতে হবে। খুব কাছাকাছি প্রতিযোগিতা হলে একটি বড় রাজ্যে দুর্নীতি করলেই ভোটের ফলাফল পরিবর্তন হয়ে যায়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যেহেতু পরোক্ষ ভোট, তাই একজন নাগরিক ভোটের দিন (৪ নভেম্বর ২০০৮) সরাসরি ভোট দেন কিছু প্রতিনিধিকে/নির্বাচককে (কলেজ অব ইলেক্টরসকে) যারা বস্তুত যেকোন প্রার্থীকে নির্বাচন করার জন্য স্বাধীন কিন্তু একজন প্রার্থীর প্রতিনিধিত্ব করতে ওয়াদাবদ্ধ। ফ্লোরিডার কথা ধরা যাক। এখানে ২৭ জন নির্বাচক আছেন। তারা যার যার ওয়াদা অনুযায়ী ওবামা, ম্যাককেইন দু’ভাগে দলবদ্ধ হয়ে গেল। ভাটাররা যেকোন একভাগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করল। কিন্তু যে প্রার্থীর নির্বাচকদল জয়ী হবে সে প্রার্থীর পক্ষে সবকটি (২৭ টি) ভোটই কাউন্ট হবে।

এই জটিলতার মাঝে তাহলে দুর্নীতিটা কোথায় হচ্ছে? প্রার্থীরা এধরনের পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে স্বভাবতই বেশি মনোযোগ দিয়ে থাকে সেসব রাজ্যে যেখানে ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা বেশি। কারণ যে পক্ষই নাগরিক ভোট বেশি পাবে তারা ইলেক্টোরাল ভোটের হিসেবে ঐ রাজ্যের সবকটি ইলেক্টোরাল ভোটই পেয়ে যাবে।
দুর্নীতি হচ্ছে ভোটার রেজিস্ট্রেশনে, ভোট কেন্দ্রের কর্মীদের ভুলের নামে, কম্পিউটারের টেকনিক্যাল গ্লিচের নামে। এবছর নতুন যারা কলেজে পড়ুয়া ছাত্র, মাত্র ভোটার হওয়ার বয়সে পদার্পন করেছে, তাদের ভোটার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে ইতিমধ্যে দুর্নীতি হয়ে গেছে। তাদের ভোটার হওয়ার আইন করেছে এমন - তারা যদি কলেজের হোস্টেলের ঠিকানায় ভোটার হয় তাহলে তারা তাদের বাড়ির ঠিকানার অনুকূলে যে বৃত্তি পাচ্ছে তা বাতিল হয়ে যাবে, ইত্যাদি আইনি জটিলতায় ফেলে তাদের ভোটার হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা হয়েছে। ভোটার লিস্টের কিছু ভলান্টিয়ার দল অপেক্ষাকৃত গরিব ও সংখ্যালঘু এলাকায় প্রকৃত ভোটারদের ভোটার করেনি। বরং ভোটার রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিজেরা লিখে কার্টুন চরিত্র বা ফুটবল দলের তারকাদের নামে কার্ড পূরণ করে জমা দিয়েছে। সমাজের কিছু গ্রুপ আছে যারা নির্দিষ্ট দলের সমর্থক। যেমন অপেক্ষাকৃত গরিবরা, কোন কোন স্টেটে কালোরা, যুবকরা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে তাদেরকে নানাভাবে ভোটদিতে বাধাবিপত্তি সৃষ্টি করা। যদি কোন নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা লাইন হয় এবং ভোট কাস্টিং প্রকৃয়া ধীরগতি হয় (ইচ্ছাকৃতভাবে সেখানে ভোট বুথ কম রাখা হয়) তাহলে ভোটাররা ধৈর্য হারিয়ে বাড়ি চলে যেতে পারে ভোট না দিয়ে। লিগ্যাল ব্যালট ফেলে দেয়া হতে পারে (২০০০ সাল)। ভোটাররা ভুল করতে পারে। সাধারণত কালদের মধ্যে এবং যুবকদের মধ্যে ভুল ভোট কাস্ট করার প্রবণতা দেখা যায়। তারা মার্কা বা নাম দেখেই সামনের ঘরে সিল মেরে দিয়ে চলে আসল, যেখানে হয়ত ব্যালট এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে নামের সামনে যে ঘর সেটা বিপক্ষের জন্য বরাদ্দ। এসব চালাকি ভোটিং সিস্টেমের মধ্যে খুব সূক্ষ্মভাবে করা হয় যা সরাসরি ধরার উপায় নেই। তাছাড়া এবছর একই সাথে ২০০৮ সালের সিনেট ইলেকশন (৩৩টি রাজ্যে), হাউজ অব রিপ্রেসেন্টেটিভ ইলেকশান (সবকটি রাজ্যে), এবং এগারটি রাজ্যে গভর্নর নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এজন্য ভোট কাস্টিং এ ভুল হওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে।

২০০৪ সালে এবং এবছর ভোট কাস্টিং হবে কম্পিউটারে। ইতিমধ্যে কোথাও কোথাও ভোট কেন্দ্রে প্রয়োজনের চেয়ে কম যন্ত্রপাতি ও লোকবল থাকার অভিযোগ উঠেছে।

এসব কারণেই যে প্রার্থী জনসমর্থন জরিপে এগিয়ে আছে তার নির্বাচিত হওয়া সবসময় নিশ্চিত বলা যায় না আমেরিকাতে। আল গোর ২০০০ সালে এবং ২০০৪ সালে জন কেরি বিপুল জনসমর্থন থাকার পরও বিজয়ী হতে পারেননি কারচুপির কারণে।

আর আমাদের দেশে গত দু'বছরের যত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজরা জেলে গিয়েছে তারা আদালত থেকে জামিন নিয়ে, আর ফেরারি, সন্ত্রাসীরা ফিরে এসে লুকিয়ে রাখা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ১৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জেতার জন্য। ইতিমধ্যে ধর্মের কথিত পতাকাবাহীরা মাঠে নেমে মূর্তি ভাঙ্গা শুরু করেছে। তারা হয়তো সাধারণ জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে উস্কানি দিয়ে কোন নির্দিষ্ট দলের পক্ষে সমর্থন টানার চেষ্টা করছে।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

সারাহ প্যালিন স্যাটারডে নাইট লাইভে এসে ধরা খেয়েছে। ভিডিওটা দেখুন। আমি টিনা ফে-র প্রেমে রীতিমতো হাবুডুবু খাচ্ছি এখন।


হাঁটুপানির জলদস্যু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

"ইউ বেচ্চ্যা" চোখ টিপি

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জিজ্ঞাসু [অতিথি] এর ছবি

ম্যাককেইন যেমন ঘাড়তেড়া সে বুঝতে পারছে কি যে প্যালিনকে নির্বাচনটা ভুল ছিল! রাজনীতির কিছু বক্তা তখন বলেছিলেন প্যালিনকে রানিংমেট করাটা এক ধরনের গ্যাম্বলিং হয়েছে। অর্থাৎ ম্যাককেইন একজন গ্যাম্বলার। এখন ভোটাররা ভেবে দেখুক তারা একজন গ্যাম্বলারকে হোয়াইট হাউসে বসাবে কি না।

শামীম এর ছবি

ভোটারদের ভোটে কি আর আমেরিকায় নির্বাচন হয়! ...

এই ব্লগে তো অন্য কথা বলে .... Braunwald-এ পোস্ট গ্রাজুয়েট ছাত্রদের একটা সামার ক্যাম্পে অংশগ্রহণের সময় আমিও কয়েকজন আমেরিকান বন্ধুকে (সাদা চামড়ারই .... ) এই ধরণের মন্তব্য দিতে শুনেছি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।