শেফালী ঘোষের গান শুনতে শুনতে নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়া!

ধ্রুব হাসান এর ছবি
লিখেছেন ধ্রুব হাসান (তারিখ: শনি, ২২/০৮/২০০৯ - ৭:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

“এক কূলদি নগরবন্দর
আর এক কূলত আছে
আর এক কূলত সবুজ দুয়ার মাতায়
সোনালী দান(ধান) হাসে
গাছর আগাত মালখাবানু গান
মরদ ফোয়া গা’র(গায়) ফরান খুলি।”

আহা এই চাটঁগা যদি একবারের জন্যও দেখতে পেতাম...............! তাও ভেবে দেখলাম এই পাওয়া না পাওয়ার মাঝে ঠিকে থাকা শহরটির মতো আমারো অবস্থা আজ। ছবির মতো ঐ মিথ্যে কথাগুলোকে ভালোবেসে বেচেঁ আছি। নগর আর গ্রামবাংলার যুগলবন্ধী ছবি দেখতে চেয়েছি। দেখতে না পেয়ে কল্পলোক থেকে আকাঁর চেষ্টা করেছি একদিন, পারিনি। যে সবুজ ফুটে উঠে তা এক্রেলিকের তুলিতে বেশ ভালোই লাগতো দেখতে; কিন্তু বাস্তবে তার উপমা ছিলো বড়ই দুর্লব! তাও যতোদিন ছিলাম তুলির আছড়ে আর আলতো চুমুতে শহরটাকে জাগাতে চেষ্টা করতাম। কখনো কখনো চুমুর তীব্রতা ছিলো তরবারির উজ্জ্বলতার মতো ধারালো। এক সময় বিরক্ত হয়ে গেলাম। চলে গেলাম নিজের ভাগ্য গড়তে। গেলাম ঢাকায়, শহরটার জঞ্জাল আর অলি-গলি মাখা গিঞ্জি মহল্লাগুলোকে ভাললেগে গেলো; ভাংগাযন্ত্রগুলো বাদে। একসময় আবারো বিরক্ত হয়ে গেলাম, চলে এলাম বিলেত নামক আরেক শহরে। এই দেশটাকে এখনো জানিনা-বুঝিনা; তবে শহটাকে খানিকটা জেনেছি! যন্ত্রের সাথে যন্ত্রের, যন্ত্রের সাথে ভাঙ্গা যন্ত্রের, যন্ত্রের সাথে লাংগলের বোঝাপড়া দেখে অভিভূত হলাম! যে ছবিটা আকাঁর চেষ্টা করেছিলাম তার ল্যাব-প্রদর্শনী দেখে অবাক হলাম। এক সময় অবাক হওয়া দৃষ্টির পলক পড়লো। বুঝলাম আমার যদি মনের চামড়াটা বদলাতে হয় তবে আরো একবার জন্ম নেয়া লাগবে, এই এক জনমে হবেনা; নিজের রক্তের কেউ হোক তাও চাইনা (ব্যাপারটা আপেক্ষিক)। আসমান ছোঁয়ার স্বপ্ন যদি আকাঁ না যায় তবে এই শহরে থেকে লাভ কি? না অন্তত আমার যে লাভ নেই তা বুঝে গেলাম। একমাত্র দিন বদলের স্বপন বাস্তবায়নের আমেজটুকু যদি এখানে ছড়াতে পারতাম তবে এখানে থাকার মানে হতে পারতো। হয়তো মানে একদিন হবে! হয়তো ওদের আমাদের একদিন দাওয়াত করে আনতে হবে!
যাইহোক ঠিক করলাম ফিরে যাই, যতটুকু জেনেছি, শিখেছি তা দিয়ে একটা যন্ত্র কিনে শুরু করা যাবে। এখন একটু গুছিয়ে নিচ্ছি চলে যাওয়ার আগে; তবে এই ব্রীজটা একেবারে ভেঙ্গে ফেলতে চাইনা। জানি, বোকাঁর মতো ভালোবেসে ফেলেছি এই শহরটাকে, যেমন করে আজো ভালোবাসি চাটঁগা’কে। এখনো কোথাও এই শেফালী ঘোষের গানটা শুনলে কান পেতে শুনি, আর হাসি...। কেমন যেন এক ভালোলাগা কাজ করে...ইনহাস্ত ওয়াতানাম !

“পাহাড়ি কন সোন্দরী মাইয়া
ঢেউঅর আগাত যার
সিয়ান করি উডি দেখে কানত
কানর ফুল তার নাই
যেইদিন কানর ফুল হাজাইয়ে
সেইদিনত্তুন নাম কর্ণফুলী।”

নোটঃ গানটার জন্য থ্যাংকু দৃশা।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ঢাকা ফিরছেন নাকি? কবে?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

এক সময় অবাক হওয়া দৃষ্টির পলক পড়লো। বুঝলাম আমার যদি মনের চামড়াটা বদলাতে হয় তবে আরো একবার জন্ম নেয়া লাগবে, এই এক জনমে হবেনা; নিজের রক্তের কেউ হোক তাও চাইনা (ব্যাপারটা আপেক্ষিক)। আসমান ছোঁয়ার স্বপ্ন যদি আকাঁ না যায় তবে এই শহরে থেকে লাভ কি?

চলুক

গুড লাক, ধ্রুব ভাই। আপনার সিদ্ধান্তের কথা শুনলাম। কবে যাওয়ার প্ল্যান করতেছেন? যাওয়ার আগে দেখা হবে তো নিশ্চয়ই।

এই মন্দা আসলে দেখায় দিলো এক হাত। কত চেনা মানুষ যে এদিক সেদিক ছড়ায় গেলো, ফিরে গেলো, হিসাব নাই আর।

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অগ্রিম স্বাগতম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

চাটঁগা আমিও miss করি.....বিদেশ এসে কতদিন যাই না.....শেফালী ঘোষের কণফুলি গানটা এখনো কানে বাজে , অদ্ভুত সুন্দর......

........ ....
Bilashi

হাসান মোরশেদ এর ছবি

শুভ কামনা ধ্রুব। দেশে ফিরে যাওয়া অনেক সাহসের। সময় সাহসী মানুষকে ছায়া দিক।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

পলাশ দত্ত এর ছবি

এবং চট্টগ্রাম। এবং কর্ণফুলী। এবং শেফালী ঘোষ।

দুর্ভগ্যা কী জানেন, তবুও আমরা হাসি, গান শুনি, ভালোবাসি- এই মুহূর্তে। (মহীনের ঘোড়ার একটা গান থেকে নকল করে বললাম।)

নগর আর গ্রামবাংলার যুগলবন্ধী ছবি দেখতে চেয়েছি।

বাস্তবে দেখতে চাইছিলাম ওইরকম। হয় নাই। হবে না। তবু এরকম অনেক বেঠিক মানুষ বেচে থাকতে বাধ্য হবে। এই দুনিয়ায়।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

দৃশা এর ছবি

দেশের ফোয়া দেশে ফিরে, আনন্দের খবর।

দৃশা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।