গ্রামের মুক্তিযুদ্ধ

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: বুধ, ১০/১২/২০০৮ - ৮:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে
তখন আমি খুব ছোট । আওয়ামী লীগের পক্ষে বিরাট মিছিল দেখে জয় বাংলা শ্লোগান দিতে দিতে মিছিলে ঢুকে গেলাম। আমার লম্ফ-ঝম্ফ দেখে, সবাই আমাকে মিছিলের সামনে, একে বারে শ্লোগানের দায়ীত্বে এগিয়ে দেন। ঢাকা চট্রগ্রাম মহা সড়কের দাউদকান্দি এবং গৌরীপুরের মাঝামাঝি জায়গায় শহীদ নগর যাচ্ছে মিছিলটা। রাস্তার উত্তর দিকের গ্রাম গুলোর ছাত্র-যুবকরা মিছিলের আয়োজক। নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান। আমার দূরসর্ম্পকের খালাত ভাই। পড়া লেখায় কিংবদন্তীর মত ফলাফল। নব্বই এর নীচে কোন বিষয়ে নম্বর নেই। ঢাকা চট্রগ্রাম মহা সড়কের পর আমাদের গ্রাম। সেটা ফেলে শাহজান ভাইদের গ্রাম নূরপুর। উদ্দেশ্য শহীদ নগর আওয়ামী লীগ অফিসে সমাবেশ করা। কুখ্যাত খুনী মোস্তাক সভাপতির ভাষণ দিতে ঢাকা থেকে আসার পথে ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কে, সভা স্থলের অনতিদূরে মিছিলটির মুখোমুখি হন। ছোট্ট একটি ছেলে জয় বাংলা শ্লোগান দিচ্ছে, অন্তত তখন সেটা তার (খূনীর) কাছেও উপভোগ্য। কোলে নিয়ে চুমু খেলেন আমাকে। রাজাকার (আমার মতে মোস্তাক-জিয়া “ছুপা” রাজাকার) কর্তৃক ইহা আমার প্রথম ও শেষ চুমু নহে!

মুক্তিযুদ্ধে আমাদের গ্রামের অবস্থান
তার পর কত মিছিল-মিটিং হল! একটা সময় সব চুপ-চাপ! কিন্তু বর্ষায় আমরা মুক্তিযুদ্ধ একটু একটু করে টের পেতে লাগলাম। গৌরীপুর এবং দাউদকান্দি বাজারে চোরাগুপ্তা হামলা শুরু হল। এর মধ্যে বোধ হয় আমাদের গ্রামের রাজাকার ও মুক্তি বাহিনী গঠিত হয়ে গেছে। আমার চাচা রাজাকার হিসাবে প্রথম অভিযান সমাপ্ত করে এসেছেন। তার প্রতিক্রিয়া কী, বা তিনি সেখানে কী কী করে থাকতে পারেন; সেটা আমার ধারনা। একটু এদিক সেদিক হতে পারে। অপারেশন যতদ্দূর সম্ভব গৌরীপুর বাজারে হয়ে থাকবে। সেখানে অনেক হিন্দু ব্যবসায়ীদের দোকান লুট এবং অগ্নি সংযোগ করা হয়। হিন্দু কোন ব্যবসায়ীকে হত্যা করাও সম্ভব। অন্তত সেখানে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছে। এটা প্রমানিত সত্য। এটা আমার চাচার প্রথম কীর্তি। দোকানীদের সবাই আমাদের পরিচিত। লজ্জা বা অনুশোচনা যাই হোক, চাচা আর রাজাকার বাহিনীতে থাকতে নারাজ।

দলছুট হলেন আরেক রাজাকার; রমিজ উদ্দীন। তিনি আর একধাপ এগিয়ে, পাকিদের ষ্টেনগান চুরি করে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন বলে শুনেছি।

তাদের কথায় পরে আসছি, এবার আমাদের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কিছুটা পরিচয় হোক। আমাদের পাশের বাড়ীর বাকিন ভূইয়া (বাকিন ভাই), যুদ্ধের সময় তাদের পরিবার গ্রামবাসীর কাছে বাকিন ভাই মুক্তিযুদ্ধে গেছেন, এই কথাটা গোপন রাখতে সক্ষম হন। আমার দুই ফুফাত ভাই; মালেক ভাই আমাদের বাড়ীতে থেকেই লেখা পড়া করতেন, মনে হয় যুদ্ধের সময় তিনি মেট্রিক পরিক্ষার্থী বা দশম শ্রেনীর ছাত্র, বাকিন ভাইও। কাশেম ভাই বাউশিয়া গ্রামের, কিন্ত আমাদের বাড়ীতেই বেশীর ভাগ সময় কাটাতেন। বাকিন ভাই, মালেক ভাই এবং কাশেম ভাই সম বয়সী এবং বন্ধু ছিলেন। সে জন্য কাশেম ভাইয়ের নামটা এখানে রাখলাম। আলি আকবর আমাদের গ্রামের আর এক মুক্তি যোদ্ধা।

এছাড়া আরো অনেক মুক্তিযোদ্ধা নিশ্চই আছেন। আমার মনে পড়ছে না, বা আমি জানি না।
বলাই বাহুল্য; অনেক মুক্তিযোদ্ধা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে গ্রামে ফিরেছেন। যুদ্ধের সময় তাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন পরিবার পরিজনের নিরাপত্তার কারনে বিশেষ ভাবে গোপন রাখা হয়েছে। এটা আমার ধারনা।

তবে রাজাকারদের সংখ্যা অগনিত! প্রায় প্রতি ঘরেই রাজাকার ছিল। যেসব পরিবারে তরুন যুবক ছেলে ছিল না, সেসব পরিবারের বৃদ্ধদের ঢাকা চট্রগ্রাম মহা সড়কের পুল (ব্রীজ) পাহারায় যাওয়া বাধ্যতা মূলক ছিল। অনেককেই রাজাকার হতে বাধ্য করা হয়েছে। ব্রীজের উপর নিরাপত্তা এত কঠিন ছিল যে, মুক্তি যোদ্ধারা ব্রীজ না ভেঙ্গে বর্তমান হাসানপুর শহীদ নজরুল কলেজের পূর্ব দিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহা সড়কের অংশ বিশেষ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। পাকিদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিতে।
অনেকেই মুজিব সরকারের সমালোচনা করার সময় এই বিষয়গুলে এড়িয়ে যান। অনেকটা আত্মঘাতী হামলার মত, যুদ্ধের কৌশল হিসাবে পাকিদের যোগাযোগ অস্ত্র গোলা-বারুদের সরবরাহ ভেঙ্গে দিতে ব্রীজ বা রাস্তা ভেঙ্গে দেয়া ছাড়া কোন উপায় ছিলনা মুক্তিযোদ্ধাদের। স্বাধীনতার পরে সর্বাঙ্গে ব্যাথার মত, এসব মেরামতের জন্যও অনেক অর্থ এবং শ্রমের প্রয়োজন হয়েছে মুজিব সরকারের।

পদাধীকার বলে গ্রামের তৎকালীন মেম্বার তমিজ ডাক্তার, মেম্বার মমতাজ উদ্দীন সিকদার চেয়ারম্যান ওহাব সরকার রাজাকার বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন।

এবার আসল মুক্তিযুদ্ধে
আমার মামার বাড়ী আমাদের গ্রামেই। কাজে অকাজে সেখানে প্রায়ই যাতায়াত হয়। একদিন গিয়ে দেখি বিরাট একটা নতুন ঘর। চক্ষু চড়ক গাছ! ঘর নতুন অথচ বেড়া-চাল সবই পুরানো টিনের। পরে জেনেছি সেটা ভারতে পালিয়ে যাওয়া কোন হিন্দু পরিবারের। আমার আপন নানা আমার জন্মের আগেই মারা যান। আমার নানার ভাই পুলিশে চাকরী করতেন। সে নানার ছেলে মান্নান মামা পাকি সেনা বাহিনীতে চাকুরী করতেন। ছুটি কাটাতে এসে মনে হয় দেশে আটকা পরেন। আর আমাদের শহীদ নগর পাকী ক্যাম্পে ভাল যোগাযোগ রক্ষা করেন। সে সুবাদে হিন্দুর সম্পত্তি হাতিয়ে ঘর খানা নিয়ে আসেন। তখন প্রায় সব হিন্দু পরিবার পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। অনেকে আর ফিরে আসেনি। তাদের সয়-সম্পত্তি নিয়ে এখনো দখল-পাল্টা দখল চলছে আমাদের গ্রামে।

পাক রাজাকারের বুটের ঠকঠকানীতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি এলাহী কান্ড। আসবাবপত্র কাঁথা বালিশ ইতস্ত-বিক্ষিপ্ত। ঘরের সব জায়গায় খোঁজাখুজি শেষ। এখন আমার বাবার পিঠে রাইফেলের বাট দিয়ে গুতো মারছে রাজাকার লোকমান। পাকীদের চেয়ে এই রাজাকারের চোটপাট আরো বেশী। বাবা এরমধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পরেছেন। বাবার পিঠে রাইফেলের বাট (কপাল ভাল বেয়নেট নয়) দিয়ে গুতা মারে আর জিজ্ঞেস করে; বল সিরাজ (রাজাকার থেকে পালিয়ে আসা আমার চাচা) কৈ? সে দিনের বিভীষিকায় অনেকদিন পর্যন্ত পেটের অসুখে ভুগেছিল আমার ছোট ভাই।
কিন্তু বাবা বলতে পারলেন না, তার ছোট ভাই মটপী গ্রামে তার শ্বশুর বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে। বাবা পাল্টা প্রশ্ন করলেন; তোমাদের সাথে অপারেশ শেষে সে আর ফিরে আসেনি। তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ? আমার ভাই কেন বাড়ী আসে না? এতে আপাতত কাজ হলেও বাবাকে পাকি রাজাকাররা ধরে নিয়ে গেল।
এখন একমাত্র ভরসা গ্রামের মেম্বার রাজাকার তমিজ ডাক্তার। তিনি আবার আমার মায়ের ফুফাত ভাই। মায়ের অশ্রু বৃথা যায়নি। পরের দিন তমিজ ডাক্তারের সুপারিশে বাবাকে ছেড়ে দেয় পাকিরা। আমার বড় ভাই আর আমি নৌকা নিয়ে সপ্তাহে একদিন চাচার কাছে যেতাম। খোঁজ-খবর এবং চাল-ডাল পৌঁছে দিতে।
কিন্তু আমাদের মত বড় ধরনের রাজাকার আত্মীয় না থাকায় (রাজাকার থেকে মুক্তিযুদ্ধে যোগদেয়া) রমিজ উদ্দীনের পরিবার বিরাট ধ্বংষের সম্মুখীন হতে হয়। দলবল নিয়ে পাকি এবং রাজাকার রমিজের খোঁজে আসে। ধাউধাউ করে জ্বলে উঠে সব কটি ঘর। বাড়ীর বা গ্রামের লোকের যোগ-সাজসে একদিন বাড়ী এলে রমিজ উদ্দীন পাকীদের হাতে ধরা পরে যায়! রাতে নৌকায় করে মুক্তিবাহিনী প্রায় প্রতি রাতেই তখন গ্রামে আসতো!
দাউদকান্দি পাকি ক্যাম্পে নিয়ে যায় রমিজ উদ্দীনকে। নৌকার গলুইয়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। রমিজ মরার মত পানিতে ডুবে যায়। তখন বর্ষার শেষ সময়। পাকিদের ও শেষ সময় ঘনিয়ে এল বলে!

মরন কামড় দিয়ে রাজাকাররা ওহাব চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমাদের পাশের বাড়িতে ঝাঁপিয়ে পরে। সে বাড়ীর সবাই কোন না কোন ভাবে চৌর্য্যবৃত্তির সাথে জড়িত ছিল। আমি তাদেরকে কখনো চুরী করতে দেখিনি। গ্রাম থেকে চোর তাড়াতে স্বাধীনতার মাত্র দিন কয়েক আগে তাদের বাড়ীতে এক অন্ধকার রাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। স্বাবালক পুরুষ লোকগুলোর মধ্যে পালাতে পেরেছে মাত্র তিন জন। বাকী সবাইকে (১৫/২০ জন হবে) জঘন্যতম ভাবে হত্যা করা হয়। তার বর্ণনা শেরালী উপন্যাসে দেয়ার চেষ্টা করেছি। অবশ্য পুরো উপন্যাসটাই এর পটভূমিকে আশ্রয় করে। লোকে চোরা বাড়ী বলতো। সে নাম মুছে দিতে ওদের দখল করা জায়গা জমিতে পুকুর এবং চাষাবাদের সুবিধার জন্য একটা ডিপ বসিয়েছে প্রভাব শালী দখলদার বিএনপি সর্মথকরা। হয়তো রাজাকাররা টের পেয়ে গিয়েছিল যে, এদের দিন শেষ। সে জন্যই কিছু ব্যাক্তিগত শত্রুতা মেটাতে এ ধরনের জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হয় রাজাকাররা। এই ঘটনাটা কোন ভাবেই যুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। শুধু ব্যক্তিগত শত্রুতা, গ্রাম্য দলাদলির অংশ। ঘটনাক্রমে সে গ্রামেই আমার জন্ম! এসব লিখতে বসে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়!

আমদের গ্রাম যে ভাবে স্বাধীন হল
কার্তিকের শেষ অঘ্রানের শুরু। ডিসেম্বরের ৮/৯ ১৯৭১, আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের আগেই আমাদের এলাকা মুক্ত হয়। অনেকের উঠোনেই আমন ধানের স্তুপ। আমাদের উঠোনেও খড় শুদ্ধ আমন ধান, কিছু মারাই হয়েছে। রোদে শুকোতে দিয়েছে। সকালের দিকে ভীষন গোলাগুলি শুরু হয়েছে। মুক্তি বাহিনী অনেক বাড়ির সামনে বুংকার করেছে। কতদিন যুদ্ধ চলবে সেটা কে জানে! তাই সতর্কাবস্থা। গ্রামের সব লোক মুক্তিযোদ্ধাদের সাধ্যানুযায়ী সহায়তা করছে। কেউ বুংকার খূঁড়তে সাহায্য করছে। কেউ রান্নার দায়ীত্ব নিয়েছে। মোট কথা মানুষ আমাদের বিজয়ের পক্ষে সর্বান্তকরনে বিশ্বাস করছে। তো এই গোলাগুলির মধ্যে সবাইকে গ্রামের পেছনে অপেক্ষাকৃত নীচ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হল। এর মধ্যে মা বাবা গরু আর ধান একটা নিশ্চিত অবস্থায় রেখে যেতে চাইছিলেন। মুক্তি যোদ্ধাদের কঠিন নির্দেশ সত্ত্বেও বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছিলেন না। আমরাও গো ধরলাম; তোমরা না গেলে আমরাও যাব না! কথার মাঝখানে গুলি এসে লাগল আমাদের টিনের চালে। ঘরের মাটির পিরায়। এবার গরু-বাছুর-ধান যেভাবে ছিল সেভাবে রেখেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়লাম সবাই। আমাদের পেছনে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহা সড়ক। শত্রু যাতে সে সড়ক থেকে নেমে গ্রামে ঢুকতে না পারে তার জন্য প্রাণপনে লড়ে যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করছে রাস্তার দিকে। পাকিরা গুলি করছে রাস্তা থেকে। সে কি গুলি! বৃষ্টির মত গোলাগুলির শব্দে কানে তালা লেগে গেছে! এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা খবর পাঠাল আরো পিছনে নূরপুর গ্রামে চলে যেতে। বুংকার পেছনের দিকেও খোড়া শুরু হল। বলাতো যায় না যদি পাকিরা রাস্তা থেকে নেমে এদিকে এগিয়ে আসে। নূরপুর গ্রামের পেছনে গোমতী নদী পার হলে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। সেখানে আমাদের আত্মীয়ও আছে। তাই করবে কী না সে পরামর্শ করতে করতে আর একটা গুলি বাবার লুঙ্গী ফুঁটো করে কাঁদায় গেথে গেল। এবার কথা না বাড়িয়ে সবাই নূরপুর গ্রামের দিকে হাঁটা দিল। এদিকে যুদ্ধের এই পরিনতি দেখে আমার পালিয়ে যাওয়া রাজাকার চাচা এসে আমাদের মুখোমুখি হলেন। সামরিক ট্রেনিং থাকার কারনে তিনি সবাইকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দ্রুত হাটতে ধমক দিলেন। এর ভেতর মাঝে মাঝে গুলি এসে পড়তে লাগল আমাদের আশে পাশে। আমরা আধ ঘন্টার মধ্যে বিলের পানি কাঁদা ভেঙ্গে প্রায় দুই মাইল পথ পার হয়ে নূরপুর গ্রামে পৌঁছে গেলাম। সবাই নিরাপদে।
নূরপুর আগেই মুক্ত হয়েছে। সাবধানতার কারনে নদীর তীরে বুংকার গুলোতে তখনো কিছু মুক্তিযোদ্ধা স্বসস্ত্র অবস্থান নিয়ে ছিল। বাকীরা সড়কের দিকে মানে আমাদের গ্রামের যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতায় চলে গেছে।
একটা গ্রামের প্রায় সব মানুষ আর একটা গ্রামে এসে উঠেছে। প্রতিবেশী গ্রামের প্রায় সবাই সবার পরিচিত। আমাদের গ্রামের সব গুলো পরিবার নূরপুর গ্রামের একেকটা পরিবার নিজেরদের মধ্যে ভাগ করে নিল। চিড়া-মুড়ি দিয়ে প্রাথমিক আপ্যায়নের পর খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা হল। সে এক অকল্পনীয় দৃশ্য। মানুষের প্রতি মানুষের এত অগাধ সহযোগীতা জীবনে এই প্রথম ও শেষ বারের মত দেখেছি। এদিকে মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত পরিবারের সংশয়াকূল জিজ্ঞাসা; পাকিরা এখনো পালায়নি! আমরা উঠেছিলাম শাহজাহান ভাইদের ঘরে, আত্মীয় বিধায়। তখন শাহজাহান ভাই যুদ্ধে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল। গোলাগুলি অনেকটাই কমে এসেছে। অনেকেই সাহস করে নিজের ঘর বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। এর মধ্যে খবর এল মিত্র বাহিনীর ট্যাংক ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মুক্ত করে এখন ইলিয়টগঞ্জ পার হয়ে গৌরীপুর চলে এসেছে। শহীদ নগর পাক ঘাটিতে মিত্রবাহিনীর গোলা আঘাত হেনেছে। পাকিরা পালিয়ে ঢাকার দিকে চলে গেছে।
মুক্তিযুদ্ধের খতিয়ান
খবর শুনে যে যার বাড়ী চলে যাচ্ছে। আমি দৌড়ে সবার আগে গ্রামে ঢুকলাম। কিন্তু তখন যুদ্ধ শেষ। আমাদের পক্ষে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সবাই হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
মুক্তি বাহিনী এবার রাজাকারদের খোঁজ করতে লাগল। প্রায় সব রাজাকারদের ঘরে মুক্তিযোদ্ধারা আগুন ধরিয়ে দেয়। রাজাকার থেকে পালিয়ে ছিলেন বলে আমার চাচার প্রতি কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা হলো না। খুব নিরীহ দুএকজন রাজাকার ধরা পড়ল। পরে তাদের নাকে খত দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু ঘাগু রাজাকারদের কোন খবর পাওয়া গেল না।

আমার চেনা আমাদের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের কাউকেই স্বাধীন দেশে প্রতিষ্ঠিত দেখিনি। মালেক ভাই বলতে গেলে এখনো বেকার। বাকিন ভাই শ্রমিক হিসাবে মালোশিয়ায় ছিলেন কয়েক বছর। আলি আকবর আমাদের গ্রামের মসজিদে ইমামতির চাকুরী পেয়েও সেটা হারান। তিনি ধুমপায়ী ছিলেন এই অজুহাতে। কাশেম ভাই পুলিশের চাকুরী পান। শাহজাহান ভাই আ,লীগ থেকে নমিনেশন নিয়ে একাধিক বার ইলেকশনে পরাজিত হন। এই আসন থেকে গত দুইবার আ.লীগ থেকে নমিনেশন পান ছাত্তার (পুরো নাম মনে পরছে না)। তিনি মুসলীমলিগের তৎকালীন এমপি প্রার্থী সামাদ (পুরো নাম মনে নেই) এর ছেলে। পরাজিত হন বিএনপি প্রার্থী ডঃ খন্দকার মোশারফ হোসেনের (গত সরকারের জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী) সাথে।

বড় রাজাকারদের মধ্যে তমিজ ডাক্তার ধরা পরেন। গন আদালতের মত করে তার বিচার হয়। রাজাকার থেকে পালিয়ে যাওয়া রমিজ উদ্দীনের সাক্ষ্যের কারনে এবং তমিজ ডাক্তারের পক্ষে কোন লোক সাক্ষী না দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। সেটা ডিসেম্বরের ১২/১৩ তারিখের দিকে। মেম্বার মমতাজ উদ্দীন সিকদার আর কখনো গ্রামে ফেরেনি। লোকমান রাজাকার কখনো গ্রামে ফেরেনি। কিন্তু ওহাব সরকার (ওহাব চেয়ারম্যান) স্বাধীনতার অনেকদিন পর গ্রামে ফেরেন। পরে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে চেয়ারম্যানের পদে প্রতিদন্ধিতা করেন। যদিও বিপুল ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হন। মান্নান মামা স্বাধীন বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। এখন বাংলাদেশ সরকারের পেনশন গ্রহন করছেন।

আমার মায়ের চাচাত ভাই বজলু সরকার (বজলু মামা) পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকুরী করতেন। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে ছিলেন। তিনি এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ।
মুক্তিযুদ্ধে নিহত শিশু


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

পুতুল, ছবিটা দেখার পর লেখা নিয়ে আর কোন মন্তব্য করতে পারছি না ......

... এর ছবি

Please don't take it otherwise, if possible, remove the picture, or at least put it inside the article so that it can't be seen in the main page without opening.

... এর ছবি

Please don't take it otherwise, if possible, remove the picture, or at least put it inside the article so that it can't be seen in the main page without opening.

রণদীপম বসু এর ছবি

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

কল্পনা আক্তার এর ছবি

ছবিটাই দেখেই বাকরুদ্ধ হয়ে আছি........

.............................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা


........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

পুতুল এর ছবি

ছবিটা মুছে দিলাম।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

স্নিগ্ধা এর ছবি

মুছলেন কেন ? ছবিটা দেখে কিছু বলতে পারছিলাম না ঠিকই, কিন্তু তার মানে তো এই না যে চোখের সামনে না থাকলেই যা যা ঘটেছিলো, আর যাদের প্রিয়জনদের ঘটেছিলো, সেগুলো মিথ্যা হয়ে যাবে। বরং হয়তো এরকম কিছু ছবিই দরকার আমাদের '৭১ কে বারবার মনে করিয়ে দেয়ার জন্য!

আমার নিজেরও ছোট একটা মেয়ে আছে, হয়তো সেজন্য ধাক্কাটাও ছিলো খুব বেশী। তবুও মনে করি, এরকম ছবি আমাদের এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মগুলোর দেখা দরকার।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

লোমহর্ষক। কোন্‌ ছবির কথা হচ্ছে? দেখতে ইচ্ছুক। লিংক/ছবি ইমেইল করে দিতে পারেন? পোস্টের সাথে রেস্ট্রিক্টেড আকারেও দিতে পারেন, যাতে লগ-ইন না করে কেউ দেখতে না পারেন। অল্প-বয়সী কেউ দেখার হাত থেকে হয়তো এভাবে প্রতিকার পাওয়া যাবে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

একটা বাচ্চাকে অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে কালো রঙের স্বাস্থ্যবান একট কুকুর -- সেই ছবিটা।

রানা মেহের এর ছবি

কী অদ্ভুত লেখা!!!!

এতো অনাড়ম্বর
এতো সুন্দর

ছবিটা দেয়া যায় কি?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ রানা মেহের। ছবি দেয়া হল।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

...........................
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পুতুল এর ছবি

বস, নাটকীয় কিছু হয়নি সেটা বুঝতে পারছি! কষ্ট করে দু একটা শব্দ লিখলে বাকীটা বুঝতে পারতাম! তবুও পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রিয় পুতুল, ঈদের ভেজালে কয়েকদিন নেটে বসতে পারিনি তাই লেখাটা দেরীতে পড়লাম এবং ছবিটা মিস করলাম। আচ্ছা আপনাদের গ্রামের নামটা কি? জীবনে একসময় আপনাদের ওখানে গাবুরাকান্দি, কালাইকান্দি, গোয়ালমারী বাজারের আলুচাষীদের মাঝে কাজ করেছিলাম। জীবিকা নয়, রাজনীতির প্রয়োজনে। আপনার লেখা পড়ে সে সব দিনের কথা মনে হল।

প্রিয় পুতুল, আপনি যেহেতু বড় ধরনের লেখা (যেমন উপন্যাস) টান টান রেখে লিখতে পারেন তাই অনুরোধ লেখাটি আরো বড় করুন, আরো বিস্তারিত ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলোতে যান। মুক্তিযুদ্ধকালীন সব ঘটনাই কম-বেশী গুরুত্বপূর্ণ। সকল মূল চরিত্র ও পার্শ্বচরিত্রগুলোর ব্যাপারে আরো বিস্তারিত বলুন নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে। লেখক হিসাবে আপনার সততা ও সাহস অনুকরণীয়। এটি বজায় রেখে আপনার গ্রামের পুরো মুক্তিযুদ্ধকালীন ও তার আফটারম্যাথ লিখে ফেলুন। তারপর এই বইমেলায় না হোক আগামী বইমেলা বা তার মধ্যেই বই আকারে প্রকাশ করে ফেলুন।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এধরণের প্রামানিক ও প্রয়োজনীয় বই নেই বললেই চলে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীর কাছে পরবর্তী প্রজন্ম এই দাবী করবেই। আর আমি আমার প্রিয় লেখকের কাছে এই দাবী কেন করবোনা?

লেখার জন্য ধন্যবাদ নয়, অশেষ কৃতজ্ঞতা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পুতুল এর ছবি

ষষ্ঠ পান্ডব, ধন্যবাদ আপনাকে।
কালারকান্দি (কালাইকান্দি) এবং গোয়ালমারী (শেরালী উপন্যাসে গো-কে বো-করে বোয়ালমারী করেছি) শেরালী উপন্যাসের পানিপথ। সব ঘটনা এই সব গ্রামকে ঘিরেই। ক্ষেত্র বিশেষে পাত্র-পাত্রীদের নাম ও বদলাতে হয়েছে। আমি এমন কোন প্রতিভাবান লেখক নই যে, পুরো কল্পনার ফানুসকে গল্পবানিয়ে বলতে পারব।
কিন্তু আমাদের গ্রাম গোয়ালমারী থেকে একটু পূব-উত্তর দিকে। এখন শহীদ নজরুল (এই বীর মুক্তিযেদ্ধার কথা শেরালীতে অবিকল সেভাই রাখার চেষ্টা করেছি, যেভাবে তিনি শহীদ হন) কলেজের উত্তর পার্শে। গ্রামের নাম মোহাম্মদ পুর। সেটা এই লেখায় উল্লেখ করা প্রয়োজন ছিল!

প্রিয় ষষ্ঠ পান্ডব, আমার সাহস ও খুব সীমিত। সে কারনেই শেরালীর আশ্রয় নিয়ে সব কথা বলার চেষ্টা করছি। তবুও ভেবে দেখব, লেখাটা পূর্ণাঙ্গ করা যায় কিনা। আর এ সব নিয়ে আমাদের রচনা সত্যই নেই বললেই চলে। আমি লিখতে গেলে সব কিছু একেবারে স্মৃতির উপর ভর করেই লিখতে হবে। সরজমিনে একটু পায়চারি করার সুযোগও নেই। তবু এই গল্পের কারনে মূল কাঠামোটা দাঁড়িয়ে গেছে। দেখি একটু একটু করে যা মনে আসে, একে সমৃদ্ধ করতে হবে।
উৎসাহের জন্য আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সবজান্তা এর ছবি

ছবিটা সরানোর বিন্দুমাত্র প্রয়োজন ছিলো না। সত্যি কথা বলতে কি, এই সুশীল মনোভাবই আমাদের ধ্বংস করে দিলো। একটা সময় আমাদের দেশের মানুষ পাইকারী হারে হত্যা করা হলো, তাঁদের লাশ শিয়াল কুকুর খেতে পারলো, আর শুধু আমাদের দেখতেই সমস্যা ? এ ছবিগুলিই আমাদের চোখের সামনে প্রতিমূহুর্তে ঝুলিয়ে রাখা উচিত, যাতে আমরা ভুলে না যাই কত বড় অত্যাচারের শিকার আমরা হয়েছি...

আশা করবো ছবিটা সত্বর যোগ করবেন মূল লেখাতে, এবং লেখার শুরুতেই।

লেখার ব্যাপারে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।


অলমিতি বিস্তারেণ

পুতুল এর ছবি

ছবিটা দিলাম বস।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

পুতুল এর ছবি

কৈফিয়ৎ;
লেখাটা লেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম জালাল ভাই আর হিমু ভাইয়ের ডায়েরী লেখার আহ্বানে। হয়তো আমার দেখা যুদ্ধের অংশটা বীরত্বপূর্ণ কোন ব্যাপার না, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের অংশ তো! আমার দায়ীত্বটা আমি করি, আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য লিখে রাখি যা দেখেছি তাই সই। হিমুভায়ের ডায়েরীতে দেবার কারিগরী জ্ঞান ছিল না। তাই পোষ্ট হিসাবে দিলাম। দিন-ক্ষন মনে নেই, তাই সেভাবে সাজানো সম্ভব হয়নি। ভেবেছিলাম, প্রয়োজনীয় মনে হলে কেউ সেটা সেখানে যোগ করবে।

লেখার সময় খুব সাবধান থাকতে হয়েছে। আমার বর্ণনা যেন অতিরঞ্জিত বা অবহেলিত না হয়। সেটা রানা মেহেরের কথায় স্পষ্ট হল যে, বাহুল্যতা না করে ভালই করেছি। যা দেখেছি তার যতটা সম্ভব বাস্তব বর্ণনা দিতে চেয়েছি।

এবার ছবিটার কথা বলতে হয়। লেখাটা পোষ্ট করে বউয়ের কাজে একটু সহযোগীতা করতে গেছি, কিছুক্ষন পরে এসে দেখি, আর একটা পোষ্ট প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ছবিটা লেখার ভেতরে কোথাও ঢুকানো। পোষ্টে ক্লিক না করলে ছবিটা দেখা যাবে না। এর সাথে ছবিটা দেখে পাঠকের তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া। মন্তব্য পড়ে মনে হয়েছে ছবিটা মুছে দেয়াই উচিৎ। তাই করলাম। একটু কনফিউজ্ড হয়ে গিয়েছিলাম তো!

ছবিটা নির্বাচন করেছিলাম এই ভেবে যে, ছবির বাচ্চাটাতো আমিও হতে পারতাম। এখন বুঝি কত সৌভাগ্য নিয়ে জন্মেছিলাম! তখন আমার এত কিছু বোঝার বয়স ছিলনা। এখনতো বুঝি! সত্যি বলতে তখন আমার কাছে যুদ্ধটা যেন একটা উৎসব। যুদ্ধটা এত ভয়ংকর কিছু, সেটা বোঝার ক্ষমতাই ছিল না! যাই হোক লেখার নীচে ছবিটা আবার দিচ্ছি।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।