আমি গোলাম আযম বলছি…

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৮/০৭/২০১৩ - ৪:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

৭১ এ আমি কোন ভুল করি নাই। কারণ আমরা পাকিস্তানের পক্ষে আসিলাম এবং এখন আছি। ভবিষতেও থাকব ইনশাল্লাহ। আস্তে ধীরে বাংলাদেশকে আমরা আবার পবিত্র পূর্বপাকিস্তানে পরিণত করার সংগ্রাম তখনও করসি, এখনও করতাসি। এই চেষ্টা জাড়ি থাকবে মরতে দমতক।

ঈমানদার মুমিন মুসলমাদের বিরোদ্ধে অনেক বানোয়াট এবং আজগুবী অভিযোগ আনা হয়েসে এবং হচ্ছে। কেউ কেউ বলে থাকেন আমরা জামাতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রসংঘ, শান্তি কমিটি, আল বদর, আল সামস এবং রাজাকার বাহিনীর মাধ্যমে হত্যা, লুট ধর্ষণ এই ধরণের আপরাধ করেসি। সব মিথ্যা।

আমরা আল্রহ এবং রসুলের খেদমতে বিজাতীয় হিন্দুদের মাল-সামাল বায়তুল মাল হিসাবে সংগ্রহ করেসি। যেখানে সম্ভব হয়নাই, সেই সব জায়গায় আগুন দিয়ে পুড়ায়া দিসি। কারণ হিন্দুর সম্পতি হইল শত্রু সম্পতি। এই সব ইসলামী কাজকে কোন অবস্থায়ই লুট বা অগ্নিসংযোগ বলা জায়েজ না।

তারপর আসে ধর্ষণের অবিযোগ। আমরা দেশ ও জাতি এবং পাকিস্তানকে মুক্তিফৌজের মতন বেজন্মা বিপদগামী পোলাপানের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আদমক্ষেতী করেসি। পশ্চিম পাকিস্তানের নওজোয়ান পাঞ্জাবী সৈন্যদের শারিরীক গঠন এবং মর্দম ক্ষমতা বেশী আসিল বিধায় আদমক্ষেতীর জন্য তাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হইসে। তাদের ঔরসেই কেবল ইসলাম রক্ষার সৈনিক শিবিরের মতো চরিত্রবান জেহাদী নওযোয়ান পয়দা করা সম্ভব হইসে। মাঝে মইধ্যে মেহমানের লগে বইসা খাওয়ার মতন, আমরাও আদম ক্ষেতীতে শরিক হইসি। হওয়ার সময় আমরা মনকীর-নেকীর সাক্ষী রাইক্ষ্যা শাদি কইরা লইসি মনে মনে। কাজেই বল কইরা বল্যাৎকার করার মতো বলদ আমাদের বলা যাবে না। আমরা পাকিস্তানের উন্নতি কল্পে আমাদের দেহ-মন-প্রাণ ঢাইল্যা ইসলামের খেদমত করসি। আদম ক্ষেতীর সময় বাইচ্ছা সুন্দর দেইখ্যা বিধর্মী হিন্দু মাইয়াগো বেশী নিসি। কারণ একটা হিন্দু বা ভিন্ন ধর্মের জেনানীর গর্ভে ইসলামের বীজ বপন করা জিহাদের সামিল। সব সময় তাদের যোগান পাওয়া যাইত না। কারণ তারা তাদের আসল বাড়ি ইন্ডিয়া পলায়া গেসেগা। সেই কারণে শেখের দল আর বেজম্না মুক্তি ফৌজের মা-বইনগো নিতে অইসে আদম ক্ষেতীর জন্য। আমরা কোন ধর্ষণ কখনো করি নাই।

এবার আসি হত্যার ব্যাপারে; আমরা কোন মানুষকে কখনো হত্যা করি নাই। তবে, যারা দুনিয়ায় আল্লাহর আইন কায়েমে বাঁধা দেয়, তারা শুধু দেশ ও জাতির শত্রু না, তারা আল্লর শত্রু। আল্লাহর দুনিয়ায় তাদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নাই। আল্লার দান এই দেশের যে কোন নেয়ামতের মতো নিশ্বাস নেয়ার বাতাসেও তাদের কোন হক নাই। অনেকের হিসাবে তিরিশ লাখ হইলেও তখন বেইমানের সংখ্যা আরো অনেব বেশী ছিল। আমাদের করার কিছুই ছিল না। আমরা আল্লাহর মুমিন বন্ধ্যা হিসাবে দুনিয়াতে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেসি মাত্র। একে হত্যা বলা নাজায়েজ।
কাজেই আমরা কোন অপরাধ-অন্যায় বা ভুল করি নাই। যা করছে তা শুধু মুমিন বন্ধ্যা হিসাবে মুসলমান হিসাবে যে কোন মুসলমানের ফরজে আইন পালন করেসি। দ্বীন ইসলামের খেদমত করেসি। ভবিষতেও আমাদের এই ফরজে আইন জারি থাকবে ইনশাল্লাহ হু তালা।

[স্মৃতি থেকে লেখা। বক্তৃতাটা দিয়েছিলাম সম্ভবত ১৯৯৫ সালের শুরুর দিকে “৭১ কোন ভূল করি নাই” শীরোনামে গোলাম আযমের সাক্ষ্যাৎকার বিচিত্রায় প্রকাশিত হওয়ার পরে, ঐতিহাসিক বটতলায়। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনে। বকৃতাটা দেওয়ার সময় আল্লাহর প্রেরিত মহা পুরুষ হিসাবে অন্য মানুষের সমান তলে বসা না জায়েজ বিধায় কারো কাঁদে বসে ছিলাম। সামনে দুইজনের কাঁধে ছিল দুই পা। আমাকে পেছন থেকে যাত্রার ডায়লগের মতো বকৃতার বক্তব্য বলে দিয়েছিলেন আমান ভাই। তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক। কী অদ্ভূত ব্যাপর! অনেকদিন পরে দেশে গিয়ে শুনেছি আমান ভাই জামাতে ইসলামে যোগ দিয়েছেন!]

এই সব বরাহদের পেছনে বুদ্ধি বিবেচনা বা মানবিকতা কাজে লাগে না, লাগবে না। সরকার একটা বড় কোম্পানীর ম্যানেজমেন্ট মাত্র। তাদের কাজ লাভ বাড়ানো। মুনাফা বাড়ানো। ন্যায়-নীতি এই সব বানিজ্যে বাড়তি ঝামেলা। যে দিকের বাতাস সে দিকে পাল তোলাই তাদের কাজ।
নিয়মতান্ত্রিক, মানবিক বা সত্য ও ন্যায়ের কারণে দুনিয়ায় কোন কিছু প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কখনো হবেও না। জামাতের তাণ্ডবের ফল তারা হাতে নাতে পেয়েছে। অথচ ব্যাপারটা উল্টো ঘটার কথা ছিল। আমাদের রোশ থেকে বা গনপিটুনী থেকে রক্ষার জন্য তারা রাষ্ট্রের সাহায়তা কামনা করবে। কিন্তু ঘটেছে উল্টোটা। আমাদের অনেকেই গানম্যান পেয়েছেন। নিহত হয়েছেন গোলাম আযমের বিপক্ষে স্বাক্ষ্যদানকারী আহমদ ইমতিয়াজ বুবুলের ভাই। নিহত হয়েছে আমাদের সহযোদ্ধা থাবা বাবা!
বেশী কিছু তো করার দরকার নেই। গৃহযুদ্ধের ডাক দেয়া বরাহটাকে ধরে লুঙ্গি খুলে মেশিনটার ভেতরে বেতের কাঁটা ঢুকিয়ে গুলিস্তানে ছেড়ে দিলেই চলে। মুক্তিযোদ্ধারাও নাকী অপরাধী- বলেছে ঐ বরাহটা আমার দেশ সেটা আবার ছেপেছে! সরকার বহুত ব্যস্ত লোক। এইসব মামুলি ব্যাপারে তাকে ডেকে লাভ নাই। আমার দেশের সামনে সবাই গিয়ে মুতে দেই না কেন! জামাতে ইসলামের ট্রেজারী ইসলামী ব্যাংক সহ তাদের সব প্রতিষ্ঠান একটা মুত্রস্নান এত দিনে নিশ্চই অর্জন করেছে। প্রজন্মচত্তরের সদস্যারা দেখী জামাত শিবির ধরে পুলিশে দেয়! কী-বোর্ড পীশে তো হাতে জমে গেছে বাবা! শিবিরের বরাহ পেলে হাতের শক্তিটা একটু যাচাই করে নে না! পুলিশ তো ওদের রক্ষ্যা করতে আপনি থেকেই আসবে।
এই সব ছোট খাট কাজের ফজিলত কিন্তু খারাপ না। রাজাকাররা আর্থিক এবং সামাজিক দিক থেকে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠত। নিশ্চিৎ না হয়ে সমাজের অনেক মানুষ সহজে তাদের বিরোদ্ধে যাওয়ার সাহস পায়না। সেটা তাদের দোষ নয়, আমাদের। আমরাই আসলে দেখানো উচিৎ যে, এই দেশে রাজাকার বড় নয়।


মন্তব্য

বনজোছনা এর ছবি

আমাদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে ,এ দেশে রাজাকার বড় নয়

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

রেগে টং

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মৃষৎ এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি

এই দেশে রাজাকার বড় নয়। গুল্লি

আমি জানি না এর ছবি

এই দেশটা রাজাকারদের নয়, আমাদেরও নয়। তাহলে এই দেশ কাদের? সুবিধাবাদীদের, নাকি ক্ষমতাশালীদের, নাকি রাজনীতিবিদদের?

(একটি হতাশামূলক মন্তব্য)

আমি জানি না

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।