বিডিআরের ক্লাস স্ট্রাগল এবং এই দুর্দিনে আমার বইয়ের প্রকাশ

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: বুধ, ২৫/০২/২০০৯ - ১:২৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

Their account of events - this morning at Darbar Hall, a soldier apparently went to the chief and asked for the accounting of the profits from operation daal bhaat. At that point, the chief’s guard shot the soldier, and that’s how this started. দৃষ্টিপাতের ব্লগ আনহার্ড ভয়েস এর এই লিংকে কিছু কথা আছে। দেখতে পারেন।

শেষ খবর যা পেলাম তাতে ধারণা হচ্ছে, বিদ্রোহটা হয়েছে তলার সৈন্যদের পক্ষ থেকে। তারা প্রথমত বিডিআরের বাইরে থেকে তাদের অফিসার বা প্রধান নিয়োগ হোক তা চায় না। দ্বিতীয়ত তাদের অভিযোগ যে, তাদের চিফ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাধারণ সৈন্যদের ব্যবহার করছেন। আবার উল্টো তাদের কোনো সুযোগ সুবিধার দিকে খেয়ালও রাখা তো দূরের কথা, তাদের টাইট দেওয়াও হয়ে আসছে।
ওদিকে পরিস্থিতি শান্ত না হলে দুপুরের মধ্যে কারফিউ আসতে পারে। সাভার ক্যান্টন্টমেন্টও প্রস্তুত। তারা যদি ঢাকা আসে সেটা হবে দীর্ঘদিনের মধ্যে বড় আকারের আর্মি ইনস্টলেশন। সেটার শুরুটা আমরা কল্পনা করতে পারি, শেষটা নয়। সেটাই দুশ্চিন্তার জায়গা। আমি ভীত এটা যদি সত্যিই সাধারণ সৈন্যদের বিদ্রোহ হয়, তাহলে তাদের পরিণতি নিয়ে ভীত।
মনে হচ্ছে, এটা পূর্বপরিকল্পিত। দরবার হলে অফিসাররা যখন সমবেত, তখন তাদের ঘেরাও করে ফেলার সংবাদ এসেছে। এর মধ্যে ভারি অস্ত্র ও বিমান বিধ্বংসী কামানও বসিয়েছে সৈন্যরা। এসব এক ঘন্টার নোটিসে করা যায় না। তবে আর্মিও মনে হয় কম রক্তপাতে এর শেষ করতে চায়। যদি বেশি রক্তপাত হয় সেটা যে বঙ্গভবন পর্যন্ত গড়াবে না তার কোনো নিশ্চয়তাই নাই। আর তা হলে সেটা হবে বাংলাদেশের চরম সর্বনাশের নতুন শুর।
আর দুঃখের মধ্যে আরো দুঃখ হচ্ছে, আজ আমার বই, জরুরি অবস্থার আমলনামাটা বের হচ্ছে। বিকালে মেলায় শুদ্ধস্বরের স্টলে থাকবার কথা। বইয়ের ভূমিকায় ইঙ্গিত করা ছিল যে. আরেকটা বড় আকারের বিপর্যয় আসন্ন। এই সরকার ভেতর-বাহির দুই দিক থেকেই বিপন্ন। কিন্তু যত মার্কিন-ভারতের স্বার্থ দেখার জন্যই একে আনা হোক, শেষপর্যন্ত এটা স্বাধীন সংসদে প্রতিষ্ঠিত সরকার। এই সরকারের মেয়াদ শেষ করার ওপরই নির্ভর করছে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা। এখন যেকোনো মূল্যে সরকার টিকিয়ে রাখাটাই বড় নাগরিক দায়িত্ব।
এরকম অবস্থায় যেকোনো ঘটনা থেকে তিল থেকে তাল হবার আশঙ্কা আছে।
গত কয়েকদিন থেকে ঢাকায় আবার গুজব ভাসা শুরু করেছে। শেখ হাসিনা নিজেও পেছন থেকে গণতন্ত্রের ঘাড় মটকানোর হুশিয়ারি জানিয়েছেন। হয়তো বিডিআরের সঙ্গে আর্মির বিরোধ এটা। কিন্তু এটা ভাবার কোনো কারণ নাই যে, আর্মি একাট্টা। তাদের মধ্যেও নানান প্রো-দের দ্বন্দ্ব আছে। বিডিআরের অন্তর্বিরোধ যদি আর্মির ভেতরও ছড়ালে ভয়াবহ ব্যপার হয়ে যাবে।
বিষয়টা এরকম সরল বিরোধ নাও হতে পারে।
আমার চোখে জরুরি অবস্থা এখনো শেষ হয়নি। এটি বোধহয় তারই নতুন আলামত।

প্রথম আপডেট:
সম্ভবত সাভার ডিভিশন ঢাকায় চলে আসতে পারে। যেহেতু বিডিআরের জওয়ানরা এখনো আপস করেনি। তারা যদি নিশ্চিত হয় যে, বিডিআরের চিফ এবং অন্য অফিসাররা নিহত, তাহলে এই অপারেশন অনিবার্য।
বিডিআর বনাম আর্মি:
বিডিআর সেনাবাহিনীর বাইরের প্রতিষ্ঠান হলেও এর সকল অফিসার নিয়োগ হয় সেনাবাহিনী থেকে। ফলে এটা ননকমিশনড সৈন্য আর 'বহিরাগত' অফিসারদের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব রয়ে যায়। বিশেষ মুহূর্তে সেই দ্বন্দ্বের এই বিশেষ বিষ্ফোরণ ঘটলো। আপাতত এই।


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

আপনার পোস্টটা পড়ে সত্যি সত্যি ভয় পেলাম। মনে প্রাণে আশা করি এমন কিছু হবে না ...


অলমিতি বিস্তারেণ

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমার ধারণা ঘটনা ততদূর নাও গড়াতে পারে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভেতরের অবস্থার সবিস্তার বিশ্লেষণের অপেক্ষায় থাকলাম।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

প্রথম আপডেট:
সম্ভবত সাভার ডিভিশন ঢাকায় চলে আসতে পারে। যেহেতু বিডিআরের জওয়ানরা এখনো আপস করেনি। তারা যদি নিশ্চিত হয় যে, বিডিআরের চিফ এবং অন্য অফিসাররা নিহত, তাহলে এই অপারেশন অনিবার্য।
বিডিআর বনাম আর্মি:
বিডিআর সেনাবাহিনীর বাইরের প্রতিষ্ঠান হলেও এর সকল অফিসার নিয়োগ হয় সেনাবাহিনী থেকে। ফলে এটা ননকমিশনড সৈন্য আর 'বহিরাগত' অফিসারদের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব রয়ে যায়। বিশেষ মুহূর্তে সেই দ্বন্দ্বের এই বিশেষ বিষ্ফোরণ ঘটলো। আপাতত এই।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বিডিআর সেনাবাহিনীর বাইরের প্রতিষ্ঠান হলেও এর সকল অফিসার নিয়োগ হয় সেনাবাহিনী থেকে।

এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম অনেক দিন থেকে। বাংলাদেশে এখন ক্রিকেট খেলার আগে ৩ সদস্যের পিচ পরিদর্শন কমিটি বানালে তারও ১ জন আর্মি অফিসার হতে হয়। এই ব্যাপারটা এক পর্যায়ে অসহনীয় হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার জন্যই আর্মির এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

বিডিআরের বিদ্রোহীরা বলছে, আর্মি সরে না গেলে তারা শান্ত হবে না। ওদিকে সাভার থেকে ট্যাংক ও গানশিপ নড়চড়া শুরুর খবর পেলাম জাবির লোকদের থেকে। রংপুরেও বিডিআর অবস্থান নিয়েছে বলে শোনা গেছে। অন্যান্য জায়গাতেও তেমনটা ঘটবার আশঙ্কা আছে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

এনকিদু এর ছবি

একটা সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আরেকটা বিশেষ চক্র আর্মির ভেতর থেকেই ক্যু করে বসতে পারে ।

গোলাম আযমের ছেলে আমাদের গৌরবময় সেনাবাহিনীর জেনারেল । সেনা প্রধান হবার যোগ্যতা(!) সম্পন্ন অফিসার ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রেনেট এর ছবি

গোলাম আযমের ছেলে আমাদের গৌরবময় সেনাবাহিনীর জেনারেল ।

জানতাম না তো! WTF
---------------------------------------------------------------------------
If your father is a poor man, it's not your fault ; but If your father-in-Law is a poor man, it's definitely your fault.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

দ্যাখেন, সবকিছুতেই রাজাকার দেখতে দেখতে আরো বড় বিপদটা কিন্তু খেয়াল করা হচ্ছে না।

যাহোক, এদিকে মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও চিফ হুইপ মির্জা আজম বিডিআরের গেটে দাঁড়িয়ে বিডিআরের সঙ্গে আলোচনার জন্য আহ্বান জানিয়ে ডাকাডাকি করছেন। উদ্যোগটি অভিনন্দনীয়। আমাদেরও আশা থাকা উচিত যাতে এর শেষ রাজনৈতিক নের্তৃত্বের মধ্যস্থতায় হয়, সেনা অভিযান যাতে দরকার না হয়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

এনকিদু এর ছবি

তাও ঠিক ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

তারা চায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে কথা বলুন। প্রয়োজনে সেটাই করা উচিত। এবং উচিত তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এতে আরো মাথায় চড়ে বসবে। ভবিষ্যতে যে-কেউ দাবি-দাওয়া নিয়ে এমন হাঙ্গামা করে বসবে। সরকার যাঁদের পাঠিয়েছে, তাঁরা যথেষ্ট উচ্চপদস্থ ব্যক্তি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডেকে নিয়ে আসার মত কেউকেটা এরা না। তাছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে যাবেন, তাঁর নিরাপত্তা কে দেবে? তাঁকে যদি জিম্মি করে আরো দাবি করতে থাকে?

নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কেউ গুলি চালানো অনেক বড় অপরাধ। একে এমনি এমনি ক্ষমা করে দেওয়া কি ঠিক? এরা এরই মধ্যে মানুষ খুন করেছে। গুলি/খুন করার আগে হলে কথা ছিল। সবকিছুই মাফ করে দিলে তো শাস্তির ধারণাটাই বাহুল্যে পরিণত হবে।

আলমগীর এর ছবি

একশনে গিয়ে যারা কচুকাটা করবে তারাও কী মাথায় চড়বে না?

অমিত এর ছবি

এই পরিস্থিতিতে সম্ভব্য সংখাত এড়াতে ক্ষমা ঘোষণা ছাড়া আর কোনই পথ নাই। পরেরটা পরে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সংঘাত, ক্ষয়-ক্ষতি, প্রাণনাশ, ইত্যাদি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। সকাল ১০টায় এই পদক্ষেপ কাজে আসতো।

বিডিআর-এর দাবিগুলো খুব সম্ভবত খুবই ন্যায্য। এর সব ক'টাই পূরণ করা উচিত। তবে যারা এই দাবি আদায়ের জন্য হত্যার পথ বেছে নিয়েছে, তাদেরকে সেই অপরাধের পূর্ণ শাস্তি দেওয়া উচিত। আশা করি আমার অবস্থানটা বোঝাতে পেরেছি।

আইনের শাসনের ক্ষেত্রে খুব বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এ-ধরণের ক্ষমা। যেই রিকশাওয়ালাকে গুলি করা হল, তার তো দোষ ছিল না। নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের চোখে তিনিও সমান। নিরীহ মানুষ মরার সময় আলোচনা হয়নি, আলোচনা চায়নি। সামনে সেনা অভিযান হলে আরো কিছু লাশ পড়বে, তবে তা হবে হত্যাকারীদের লাশ।

হুট করে গোলাগুলি শুরু না করে অনেক অনেক পন্থা অবলম্বন করা যেত। সেগুলো না করে মানুষ/সরকার/দেশকে জিম্মি করা এবং হত্যা করাকে দুর্বল ভাবে সামলালে ভবিষ্যতে এগুলো আরো বাড়বে।

আলমগীর এর ছবি

বেসলান ট্র্যাজিডির কথা মনে আছে? সন্ত্রাসীরা যত মানুষ মেরেছিল, তার চে বেশী মারা গিয়েছিল রাশান আর্মির একশনে।

এখন একশনের সময় না। অস্ত্র কোন সমাধান দেয় না।

এনকিদু এর ছবি

সহমত


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অমিত এর ছবি

ব্যাপারটা হুট করে হওয়া কোনওভাবেই সম্ভব না। আমি বরং অবাক হচ্ছি আর্মির গোয়েন্দা সংস্থা এটা আগে থেকেই ধরতে না পারা নিয়ে।

আমি বলছিলাম বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারকে সংঘাত এড়াতে চাইলে ক্ষমা ঘোষনা করতে হবে, সাময়িক ভাবে হলেও। আর যদি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়, তাহলে একটা হার্ডকোর অপারেশন। আর সেই অপারেশনটা যদি আর্মি করে, তাহলে কি মনে হয় দেশের বাকি বিডিআর এটা সহজভাবে নেবে ?

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আজ একজন বলছিলেন যে, সেনাবাহিনীর জন্য জাতিসংঘের চাকুরি আছে, তাই তারা বিদ্রোহ করে না। আর বিডিআরের নাই বলে করে। তিনি বলছিলেন দুঃখে। বিদ্রোহী মানেই শয়তান-খারাপ, অশান্তির জন্য দায়ী এই চিন্তা কিন্তু আরো অনিষ্টকে স্বাগত জানায়। একাত্তরেও কিন্তু এপিআর স্বাধীনতার পক্ষে বিদ্রোহ করেছিল। যাহোক, আমি বিদ্রোহকে স্বাগত জানাতে বলছি না, বলছি কেন তারা এটা করেছে সেটা বুঝতে। তারাও ভাল করে জানে, জয়ী হোক বা পরাজিত হোক নেতাদের পরিণতি ফায়ারিং স্কোয়াড।
সেকারণেই তাদের ন্যায্য দাবি থাকলে তা মেনে নিয়ে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করাই কর্তব্য। আর বিডিআর দেশরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিরোধ কারোরই কাম্য নয়। আবার এটাও উচিত নয় যে, তারা কেবল ক্ষমতার কামলা খেটে যাবে। সুতরাং আমাদের পুরো নিরাপত্তা কাঠামোর পুনর্গঠনের প্রশ্নটাও এই ঘটনা তুলে ধরছে। সেটা রকতে হবে জাতীয় সংসদকেই এবং জনগণ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়েই।
আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমন কিছু মহান নন যে, রক্তক্ষয় এড়ানোর জন্য তিনি যেতে পারবেন না। বরং দেখা দরকার কোন ব্যবস্থায় আলোচনাটা হচ্ছে, সেটা।
নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে যারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছিল, তাদের বিচারের দাবিটাও তাহলে তোলা হোক।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

আলমগীর এর ছবি

আপনার কথার সাথে একমত।
মানুষ নূন্যতম প্রাপ্তির নিশ্চয়তা না পেলেই এ ধরনের মরণ-পণ কাজে নামে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

"সাধারণ ক্ষমা"র অংশটুকু বাদ দিয়ে আপনার সব কথার সাথেই একমত। এই মুহূর্তে সাধারণ ক্ষমায় কার প্রাণ বাঁচবে, এটাই আমার জিজ্ঞাস্য। সাধারণ ক্ষমা মানে কোন ধরণের বিচারই না হওয়া। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, এত এত মানুষ খুন করে এরা একটা ছিচকে চোরের সমান শাস্তিও পাচ্ছে না। আমি এটারই বিরুদ্ধে। সবকিছুরই একটা পরিণতি থাকা উচিত।

এদের দাবিগুলো সঠিক এবং ন্যায্য, কিন্তু সেটা এই মাত্রার একটা যজ্ঞকে হালাল করে না। ক্ষমতার বেদখল ও অপব্যবহারের সকল ঘটনার ব্যাপারেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমাদের সমস্যা হল, আমরা প্রতিটা ঘটনাকেই "স্পেশাল কেস" বলে গণ্য করি। সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল সেনাশাসন মেনে নেওয়া। আর কোন দেশে আমাদের মত "স্পেশাল কেস"এর পাইকারি আড়ত নেই। সে-কারণেই আর সব দেশে লোকে আইন মেনে চলে।

বিদ্রোহ অনেক ক্ষেত্রেই একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, এটা আমি মানি। কিন্তু এর তো একটা জাত-পদ-মাপ-মাত্রা আছে! বিদ্রোহের প্রথম পদক্ষেপই যদি হয় গোলাগুলি, তাহলে বুদ্ধু নেতার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য হলেও সেই বিদ্রোহ থামাতে হবে। বিপথগামী বিদ্রোহের চেয়ে ক্ষতিকর কিছু কিন্তু কমই আছে।

আলমগীর এর ছবি

ইশতি
সংঘাত এড়ানোর জন্য এ মুহূর্তে যেকোন হালাল। সংঘাতটা বিডিআর বনাম আর্মি। ঘটনাস্থলে ১৫হাজার বিডিআর আছে যারা বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষ্যে একত্র হয়েছিল। দুটো বাহিনীর বিরোধ এত সহজে মেটানো যায় না। অপারেশনে কয়েকশ বিডিআর নিহত হলে এর রিপার্কাশন কী হবে বাকী বিডিআরদের মাঝে? সীমান্তে পাহারায় যারা আছে তারা কীভাবে নেবে?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সরকার জনগণের মণিব। ভৃত্য যদি ধমক দিয়ে মণিবকে চালানো শুরু করে, তাহলে অবস্থা কেমন হবে শেষ পর্যন্ত?

স্পার্ক যেকারণেই হয়ে থাকুক না কেন, এরা ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে এখন নিজেদেরও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। অপরিকল্পিত বিস্তার হচ্ছে এখন।

সমস্যা অন্য জায়গায়। দাবিগুলো অনেক বেশি র‌্যাডিক্যাল। কোন অথরিটিই এতটা র‌্যাডিক্যাল দাবি মেনে নেবে না। এই বিষয়টা বোঝানোর দায়িত্ব কর্মকর্তাদের। অথচ এই কর্মকর্তারা নিজেরাই ক্ষমতার অপব্যবহারকারী আর্মি অফিসার।

আরেক সমস্যা হল স্পষ্টতই অযোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। সাহারা খাতুন এখনও পর্যন্ত ছাত্রলীগ থেকে বিডিআর-আর্মি পর্যন্ত কিছুই নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। আর সোহেল তাজ যতই সম্ভাবনাময় হন না কেন, তিনি মাত্র ৩৯ বছর বয়সের এক অনভিজ্ঞ রাজনীতিক।

সবশেষে আছে আর্মির অতি-লোভ এবং আর্মি-বিষয়ক যেকোন কিছুতেই রাজনীতিকদের মেরুদণ্ডহীনতা। এই দুষ্টচক্রের সমাধান কোথায় শুরু, জানি না। তবে কোথাও না কোথাও তো শুরু করতে হবে...

রাত জেগে জেগে এভাবে দেশের মানুষ মরার খবর পড়ার মত কষ্টকর অভিজ্ঞতা কমই আছে।

অমিত এর ছবি

"সরকার জনগণের মণিব। ভৃত্য যদি ধমক দিয়ে মণিবকে চালানো শুরু করে, তাহলে অবস্থা কেমন হবে শেষ পর্যন্ত? "

বুঝলাম না। তোমার এই থিওরি মানলে তো যাবতীয় গণঅভ্যুথান কে অস্বীকার করতে হয় !

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এটা কোন গণঅভ্যুত্থান না। আমি তেমনটা মনে করি না। একই দাবি ইউনিয়ন শ্রমিক কিংবা তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীরা কর্মবিরতি বা হরতালের মাধ্যমে পেশ/আদায় করে থাকেন।

এই গোলাগুলিকে ৭১ বা অন্য কোন গণঅভ্যুত্থানের সাথে তুলনা করার উপায় নেই। ক্ষোভ, অনাচার, নিপীড়ন, বা গণজাগরণ -- কোন দিক থেকেই মনে হয় না সেন্স অফ প্রোপোরশন মেলে।

এমনকি ৭১ এর আগেও আমরা অনেক রকম নিয়মতান্ত্রিক ধাপ পেরিয়ে যুদ্ধের মত অবস্থায় গেছি। সেই তুলনায় এটা তো স্রেফ মামা বাড়ির আবদার!

বিডিআর এর প্রতিপক্ষ আর্মি বলে সাধারণ মানুষদের পক্ষে তাদের দিকটা টানা সহজ। তারাও সেই চেষ্টাই করছে। বলছি না যে তাদের দাবি অন্যায্য। শুধু বলছি একটু নৈর্ব্যক্তিক ভাবে দেখতে। কোন ভাবেই "নির্বাচনের ৭ কোটি টাকা" কিংবা "আমাদের র‌্যাঙ্ক কেড়ে নেওয়া"র জন্য এভাবে গোলাগুলি, অবরোধ জাস্টিফাইড না আমার কাছে।

অমিত এর ছবি

আবারো কনটেন্ট পাল্টালা। আমি আমার বক্তব্যের কোথাও বলেছি এটা গণঅভ্যুত্থান ?
তুমি বললা সরকার জনমানুষের মনিব। আজকের ঘটনা তো পুরোটাই সরকারি। এখানে তো গণমানুষের দাবির কিছু নাই। আর এটাকে আমি একবারও জাস্টিফাই করছি না। বারবার আমি বলছি সাময়িকভাবে সাধারণ ক্ষমা। এটা একরাতের ঘটনা না, গত ২৫ বছর আর্মি আর বিডিআর এর তুলানমূলক বিচার করলেই ব্যাপারটা হয়ত সহজ হবে। আবার এমনও হতে পারে স্যাবোটেজ। কিন্তু সব অপশন ধরে নিয়ে এখন যদি শুট অ্যাট সাইট পন্থা নেয়া হয়, তাহলে কি সেটা আদতেই ফলপ্রসু হবে ?

অমিত এর ছবি

যাইহোক, যাই এখন। রাত এখন ২টা। সকাল ৮টায় অফিস।
সবাই ভাল থাকুকরে ভাই। এসব আর ভাল লাগে না। খারাপ অবস্থা দেখতে দেখতে শেষ পর্যন্ত মনে হয় রাজাকাররাও শান্তিতে থাক।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমার ভোর পাঁচটা। জীবন থেকে আরো একটা রাত হারিয়ে গেল কোন কারণ ছাড়াই। যেভাবেই হোক, এদের মানাতে পারলে হয়। এই অংশটা খুব সহজ। কঠিন হল পরের অংশটুকু। ডি-আর্মিফিকেশন। এই কাজটা আদৌ করা হবে কিনা জানি না। আমিও ঘুমাই গিয়ে এবার।

স্পর্শ এর ছবি

ইশতিয়াক,
ক্ষমার 'ঘোষনা' না করে আপনি ঠিক কী কী করতে বলেন, যেখানে রক্তক্ষয় কমবে? এদের কত জনকে আপনি 'খুনি' হিসেবে ধরবেন? তাহলে সেই অপরাধীদের কী শাস্তি দেওয়া উচিৎ?

এরকম একটা আউটবার্স্ট এক দিনে হয়না। আজ শুধু থ্রেশহোল্ড ক্রস করেছে ঘটনাটা।

ক্রাইসিস এর শুরুতে নেগোসিয়েশনে না গেলেও দেরিতে হলেও সেটা করা উচিৎ; কোনো ধরণের অ্যাটাকের আগে। তার উপর সবাই যদি হয় নিজেদের লোক।

এই ঘটনার শুরু/কারণ সম্পর্কে ডিটেইল আমি জানিনা। আপনিও হয়তো না।

সরকার জনগণের মণিব।

আমি জানতাম ঠিক উলটোটা সঠিক। দুঃখিত।

ভৃত্য যদি ধমক দিয়ে মণিবকে চালানো শুরু করে, তাহলে অবস্থা কেমন হবে শেষ পর্যন্ত?

আবারো বলি এদের ব্যপারে তেমন জানিনা। তার পরও সাধারণত যেকোন বিপ্লবই আসলে মনিবকে ছোড়া ভ্রৃত্যের ধমক।

সকল রক্তপাতের প্রতি তীব্র নিন্দা। সবার আগে এই রক্তপাত বন্ধ হোক তাই চাই।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমি ঘুরে-ফিরে একটাই কথা বলছি -- আমরা যেন sense of proportion ভুলে না যাই। আমি নিশ্চিত যে এটা একদিনে হয়নি, অনেক দিনের পুঞ্জিত ক্ষোভ, ইত্যাদি। যে-কারণগুলো টিভিতে বলা হলঃ

- কম বেতন
- দুর্নীতি
- বৈদেশিক মিশনে না পাঠানো
- গায়ে হাত তোলা

আমার একটাই প্রশ্ন, ভাই। বাংলাদেশের কত লক্ষ মানুষের এই একই অভিযোগ? কাল এরাও গুলি ছুঁড়বে? কত লক্ষ মানুষ মরতে হবে? কত লক্ষ মানুষকে সাধারণ ক্ষমা করা হবে? আমি দাবির অন্যায্যতার কথা বলছি না, শুধু এই out of proportion হওয়ার কথা বলছি। দেশকে জিম্মি করে রাখার বড় অভিযোগ এগুলো না।

এই ঘটনাকে "বিপ্লব" বলে আখ্যা দেওয়া অতি-উৎসাহ বলে মনে করি আমি। "বিক্ষোভ" আর "বিপ্লব" এক না।

সরকারকে আমরা নির্বাচিত করি আমাদের দেখভালের জন্য। সেকারণে আমি 'অভিভাবক' অর্থে মণিব বলেছি, 'জমিদার' অর্থে না। তবু ভুল বোঝার সুযোগ থেকে যায়। "অভিভাবক" হিসেবেই দেখুন সুবিধা হলে। বাস্তব এটাই যে government is a higher authority. এর উল্টোটা হলে সেটা আখেরে বেশি খারাপ। নিজের পরিবারের সাথেই তুলনা করুন। ছেলের ধমকে বাপ ওঠা-বসা করলে যেমন হয়, তেমনই মনে হয়েছে আমার কাছে।

স্পর্শ এর ছবি

proportion এর ব্যাপারে আপনার সাথে একমত।

বাবা-ছেলের কথা বললেন? আমি আমার বন্ধুদের কয়েকজন কে দেখেছি বাবার কথা কে না বলতে পারেনি বলে নিজেকেই ধ্বংস করে ফেলেছে। কখনো তিলে তিলে কখনো হুঠ করে। আপনারও এধরণের ঘটোনা অপরিচিত হয়।

বাবা হলেও আমার বাবা সব সময় সঠিক না।
এই মেসেজটা বাবার ভুললে চলেনা।

আর 'বিপ্লব' শব্দের ব্যবহারে আপনার আপত্তি আছে। আর আমার নিজেরও আছে কিছুটা দ্বিধা। পার্টিকুলার এই ঘটোনা সম্পর্কে; কারণ নিজস্ব অজ্ঞতা।

"government is a higher authority." এই বাক্যে govt. যে higher authority সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
আর এই বাক্যের বারংবার প্র‌য়োগে বোঝা যাচ্ছে। 'কেউ একজন higher authority হলেই তার প্রতি আপনার অগাধ আনুগত্য।

অর্ডার না থাকলে কিছুই থাকেনা। আবার তাই বলে এত অনুগত হলেও মুশকিল।
এসব কথা বাদ।

আমার অবস্থান শুধু মাত্র আপনার 'একটু পরেই(নাকি শুরুতেই?) কঠোর অবস্থান নেওয়ার' বিপরীতে।
বুঝতে হবে এখানে ভিনদেশি জঙ্গি না। আময়া কথা বলছি নিজ দেশের মানুষের ব্যাপারে।

আরো বেশি রক্তপাত চাইনা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অমিত এর ছবি

"আর কোন দেশে আমাদের মত "স্পেশাল কেস"এর পাইকারি আড়ত নেই।"

বুশের আট বছর আমেরিকায় কাটানোর পর এইটা বললা কিভাবে ?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এই আট বছরে কি স্পেশাল কেসগুলো ভাল কিছু দিয়েছে?

"ন্যায্য দাবি মানা হবে"
"কোন উদ্দেশ্যেই অনাচার মেনে নেওয়া হবে না"

আমার ভাষ্য এই দুটো। All good things should prevail. Ends don't justify the means.

অমিত এর ছবি

সম্পূর্ন ভিন্ন কনটেন্ট-এ চলে গেলা মনে হয়। স্পেশাল কেস ভাল না খারাপ সেটা নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলিনি, প্রশ্ন তুলেছি স্পেশাল কেস এর সংখ্যা বিচারে।
আর "Ends don't justify the means."-এই রসিক বাণীর মর্মার্থ নিয়ে অন্য একদিন ত্যানা প্যাচাবোনে। আজ থাক।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সেটাই। মনে হয় না কেউ নিজের জায়গা থেকে সহজে নড়ছি। হাসি

দুঃখিত আমিও, কিন্তু সেই সাথে অনেক বেশি বিরক্তও। আমার কাছে বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে এর অনেকটাই। কোন কিছুতেই বাড়াবাড়ি ভাল না। সে ২৮-এ অক্টোবরেই হোক, বা ২৫-শে ফেব্রুয়ারি। বাড়াবাড়ির অংশটুকুর শাস্তি দেওয়াও ন্যায়বিচারের সংজ্ঞায় পড়ে। নইলে শৃঙ্খলা বজায় রাখা অসম্ভব।

এদের দাবি দেশ, সরকার, বিশ্ব জেনেছে। বাকিটা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে হবে। এখন সরকার এদের কাছে নত হোক, তা আমি চাই না। গভমেন্ট স্টিল ইজ দ্য হায়ার অথরিটি। একটু পুরনো ঘরানার মানুষ দেখেই হয়তো এভাবে দেখছি আমি।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

''সরকার জনগণের মণিব। ভৃত্য যদি ধমক দিয়ে মণিবকে চালানো শুরু করে, তাহলে অবস্থা কেমন হবে শেষ পর্যন্ত?''

এই দৃষ্টিভঙ্গি রাজতন্ত্রের সঙ্গে যায়, গণতন্ত্রের সঙ্গে নয়। সরকার জনগণের চাকর। তারা বিডিআরের প্রতিপক্ষ নয়, তাই তাদের পক্ষেই যতটা সম্ভব সুবিবেচনা করা যায়। বিডিআর তরুণ জওয়ানরা অনেক বছর থেকেই তাদের এইসব দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলছিল, কেউ শোনে নাই। এখন তারা মিডিয়ায় সরাসরি অফিসারদের বিডিআর ডিজি'র দুর্নীতি, একাধিক গাড়ি কেনা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ করেছে। তারা ব্যাপক মরিয়া। শুনেছি এরকম একজন সাবেক ডিজির স্ত্রী বিমানবন্দরে কোটি কোটি টাকা নিয়ে ধরা পড়েছিলেন। বাহিনীর সম্মান বিবেচনায় সেটা গোপন রাখা হয়। তো এদের মাথায় তুলে রাখতে হবে নাকি?

এখানে অপরাধ-শাস্তি এ আলোচনা আমাদের করার দরকার নাই? জানা মতে, এরকম অভিযোগ ও দাবি উত্থাপন করাতেই আজ সকালে অফিসাররা তাদের ব্যক্তিগত পিস্তল দিয়ে প্রথম গুলিটা করে। তা যদি হয় তাহলে দায়টা কার?
এই জওয়ানরা বেশিরভাগ কৃষকের সন্তান, হতদরিদ্র দশায় দিনযাপন করে তাদের পরিবার। ওদিকে অফিসাররা কেমন আছে এবং কী কামায় তা আমরা জানি। এটা বিডিআরের ক্লাস স্ট্রাগল। আর যাদের হাতে অস্ত্র দেওয়া হয়, তাদের জুতা পালিশে লাগানো কতদিন তারা সইবে?
আমি তাই ইশতিয়াক রউফ, আপনার এই কঠোর অবস্থানের সঙ্গে মিলতে পারছি না। আমি দিব্যি দেখতে পাচ্ছি, এইসব দরিদ্র-হতাশ ও মরিয়া তরুণদের জন্য ফাঁসিকাষ্ঠ তৈরি হচ্ছে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ইশতি,

মণিব/ভৃত্য জাতীয় শব্দ ব্যবহার না করাই ভালো। প্রতিনিধিত্বশীল সরকারব্যবস্থার তাহলে আর কোন অস্তিত্বই থাকে না।

পরিস্থিতি জটিল। বিডিআর জওয়ানদের দাবী এই পর্যন্ত যা শুনলাম তাতে অন্যায্য মনে হয়নি। তবে এই প্রক্রিয়ায় দাবী আদায় কতোটা সম্ভব সেটাই প্রশ্ন। ঐ বাস্তবতা আর দাবীর প্রেক্ষিতে বিচার করলে ফারুক যেই পরিণতির কথা বলছে তাকে ভয়াবহ ট্র্যাজেডিই বলতে হবে।



অজ্ঞাতবাস

এনকিদু এর ছবি

সহমত ।

একটু আগে টিভিতে দেখলাম অপারেশন ডাল ভাতে ডিজির দূর্নীতির কথা উঠে এসেছে এক সৈনিকের মুখে । ডিজি কোন এক সৈনিককে নাকি গুলি করে হত্যাও করেছে, দাবী করলেন বক্তা ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

জরুরি অবস্থার আমলনামা বের হচ্ছে 'জরুরি অবস্থা'র মত পরিস্থিতিতে । শুধু তাই নয় গ্রন্থের প্রিডিকশনও মিলে যাচ্ছে ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

এরকম একটি বিদ্রোহ বিডিআরের তরফে হয়েছিল স্বাধীনতার পরপরই। তখন সরকার ততকালীন ইপিআর আর কাদেরিয়া বাহিনীসহ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশ নিয়ে মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু বিডিআর তার আগের গঠনেই থাকতে চায়। সেটা নিয়ে পিলখানায় সংঘাত হলেও পরে শেখ মুজিবের সরাসরি হস্তক্ষেপে তার নিরসন হয়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

এনকিদু এর ছবি

কামনা করি আর যেন রক্তক্ষয় না হয়, আলোচনার মাধ্যমেই যেন সমাধান হয় ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ধ্রুব হাসান এর ছবি

যদি সম্ভব হয় বিডিআরের পক্ষ থেকে কারো বক্তব্য নেন। এই মূহুর্তে ঐটা খুব জরুরী। আমরাও চেষ্টা করছি ভেতরের খবর আনতে।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

মাত্র চ্যানেল আইয়ে দেখলাম এক শিশুর খুলিতে গুলি লেগেছে ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটু আগে কথা বললাম ঢাকায়। এরকমই আভাস পেলাম। কালকে বিডিআর সপ্তাহ ছিলো। শুরুটা বুঝি সেখানেই। সকাল আটটায় দরবার হলে মিটিং ছিলো। সকাল পৌণে ন'টায় দরবার হলের দরোজায় বাইরে থেকে তালা দেয়া হয়েছে।

আশংকা হচ্ছে...
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ধ্রুব হাসান এর ছবি

বিডিআরের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুজিব সাহেব ও তার ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে বিডিআর! তার বাসায়ও আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে! বিবিসি বলছে বেতন নিয়ে সমস্যা! এই লিংকটা দেখতে পারেন

ধ্রুব হাসান এর ছবি

সম্ভবত একটু পর ফোনের লাইনও ডিসকানেক্ট করা হবে।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

এনটিভির তিনটার বিশেষ খবর দেখুন বিডিয়ারের ব্যক্তব্য পাবেন।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

সাদা পতাকা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও চিফ হুইপ মির্জা আজম ভিতরে প্রবেশ করেছেন
এবং বিডিআরের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছেন ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

সদর দপ্তরের বিডিআরের এক সদস্য সব ধরনের হামলার মোকাবেলা করার হুমকি দিলেন । সেনাবাহিনী একশনে রয়েছে ।( সুত্র ঃ বৈশাখী টিভি )

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

স্পর্শ এর ছবি

এইমাত্র এটিএন বাংলায় মুন্নী সাহার একটা রিপোর্ট দেখলাম। তিনি বিডিয়ার এর ৩ নং গেটে গিয়ে (আর্মির বাধা টপকে) বিডিয়ার জওয়ান দের ভিডিও সাক্ষাৎকার গ্রহন করতে সমর্থ হয়েছেন। যদিও প্রচারের সময় বক্তব্যের কিছু কিছু অংশ কেটে দেওয়া হয়েছে।

মুন্নী সাহার ফ্যান হয়ে গেলাম আবার। সাহসী সাংবাদিকতার জন্য ...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মুস্তাফিজ এর ছবি

শুধু মুন্নি সাহা না, দুনিয়ার লোকের সাথে আগে থেকেই কথা বলছে বিডিয়ার, সাংবাদিকরা গেছে পাব্লিকের দেখাদেখি, বিডিয়ারের অনুমতি নিয়া।
ক্রেডিটের কিছু নাই

...........................
Every Picture Tells a Story

স্পর্শ এর ছবি

হয়তো। কিন্তু তখন পর্যন্ত আর কারো ক্যামেরায়/রিপোর্টে তো এরকম দেখলাম না।

হতে পারে তারা প্রকাশ করেনি।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মুস্তাফিজ এর ছবি

ওরা যাবার আরো আগে থেকেই, মোটামূটি ঘন্টাখানিক আগে থেকেই আমরা ওখানে ছিলাম, তারো আগে থেকেই স্থানীয়দের সাথে কথা বলছিলো ওরা। ছবি তুলতে দিয়েছিলো, অনুরোধ করে বাইরে থেকে একজন ১০/১২ কাপ চা এনেও খেয়েছে।

কিছু সাংবাদিকদের অভ্যাস হলো সবসময় ফুলিয়ে ফাপিয়ে ঘটনার বিবরন দেয়া। আমরা যখন গেটের সামনে তখন টিভিতে এক সাংবাদিককে বলতে শুনেছি এখানে ঢোকা যাচ্ছেনা, সে এক বাসার ছাদের উপর থেকে কোন্রকমে ঘটনার বিবরন জানার চেষ্টা চালাচ্ছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

এনকিদু এর ছবি

আমিও


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

আলমগীর এর ছবি

মুন্নী সাহা, এটিএন অফ যা, বিডিআরের জোয়ানদের মুখ দেখানো উচিৎ হয়নি।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

একমত, নিজের ক্যারিয়ার বাড়লো আরো, কিন্তু এই লোকগুলোর পরিণতিটা কী হতে পারে, ওই প্রতিটি মুখই যে জীবন্ত লাশ হয়ে যেতে পারে, সেটা তারা ভাববেন না?

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় থাকার সময় একটা এরকম বিদ্রোহ দেখেছিলাম।
তবে আনসারদের কাছে বেশি অস্ত্র-শস্ত্র ছিল না।
শেষমেশ হেলিকপ্টার আক্রমণে আনসাররা সারেন্ডার করে।
ঘটনাটা ৯২-৯৩ সালের।

সেই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারি আলোচনা করার বাহানায় এক ধরনের শক্তি প্রয়োগ না করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না।

ক্যান্টনমেন্ট, বিডিআর হেডকোয়ার্টার্স এগুলো জনপদ থেকে দূরে নিয়ে যা্‌ওয়া দরকার অচিরেই।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

আলমগীর এর ছবি

সে সময় আরো জানা গিয়েছিল আনসারের একজন সাধারণ সদস্যের ঈদ-ভাতা ছিল দশ কী তিন টাকার মতো।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- জানি ব্যাপারটা ঠিক এই মুহূর্তে বলাটা ঠিক শোভন হবে না তাও বলছি। সেনাবাহিনীর একজন আর্দালিও যেখানে বৈদেশিক মিশনে গিয়ে লাখ লাখ টাকা উপার্জনের সুযোগ পায় সেখানে রাস্ট্রের নিরাপত্তার তুলনামূলক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকার পরেও বিডিআর অথবা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান কোথায়? পুলিশ সদস্যরা দুই টাকা পর্যন্তও ঘুষ খায়। কেনো খায় সেটা নিয়ে আমরা কেনো সিরিয়াসলী ভাবছিনা? সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করে রাস্ট্র। তার সিকিভাগও কি পুলিশ বা বিডিআর বাহিনী পায়? আমার তো মনেহয় সেনাবাহিনী না বরং এই দুই সেক্টরেই সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকা উচিৎ রাস্ট্রের যদি সেটা প্রতিরক্ষা খাতেই ব্যয় করতে হয়। বিডিআর জোয়ানদের কমপ্লেইন তো বোধহয় এখানেই। তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার প্রতিবাদ করেছে তারা। এর পরে যদি পুলিশ প্রশাসন এরকম করে বিদ্রোহ করে বসে তাহলে? খুব কি অমূলক হবে তাদের চাওয়া?

তবে অবস্থা যাই হোক। বলপ্রয়োগ না করে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা উচিৎ। তবে হ্যাঁ, এমন ঘটনা ঘটানোর জন্য দোষীদেরকে ছেড়ে দেয়ার পক্ষপাতিত্ব আমি করবো না। আর যাই হোক, স্বাধীন সার্বভৌম দেশে দাবী মানানোর জন্য গোলাগুলি করে পরিস্থিতি রক্তারক্তি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অধিকার কোনো বাহিনীরই নেই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

উপরে বিভিন্ন মন্তব্যে ইশতিয়াক রউফের মতামত পড়ে আমি মুগ্ধ।
গরম রক্তের তরুণরাও ঠান্ডা মাথায় ভাবতে পারে ইশতি হচ্ছে তার উদাহরণ। ইশতির আরেকটা গুণ দেখলাম যে প্রশাসন বা দেশ পরিচালনা সম্পর্কে তার ধারণাগুলো খুব পরিষ্কার।
বড় প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা বা সরকারী নীতি-নির্ধারণী মূলক পদে কাজ করলে সে অনেক দক্ষতার পরিচয় দিতে পারতো।
জয়তু ইশতি।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ভবঘুরে [অতিথি] এর ছবি

আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি। এমন ঘটনায় আবেগের বশবর্তী না হয়ে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি, যা ইশতিয়াক রউফ সুচারুরূপে করতে পেরেছেন।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

সেই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারি আলোচনা করার বাহানায় এক ধরনের শক্তি প্রয়োগ না করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না।

বাংলাদেশ ও আমেরিকার মধ্যে একটা মিল অপূর্ব। দুখানেই মস্তিষ্ক বাদ দিয়ে বলপ্রয়োগের সুযোগ অবারিত। বলপ্রয়োগে সমাধানই দখানকার রাষ্ট্রীয় নীতি। এটা অনেকটা বুশীয় রীতি। আমাদের পয়েন্ট দুটি :
১. বিডিআরের বিদ্রোহ ন্যায্য কি অন্যায্য সেই আলোচনার বাইরে এসে দেখা দরকার কেন তারা বিদ্রোহ করেছে। সেটা জানা না থাকলে বলপ্রয়োগ হাঁটুর বুদ্ধির কাজ বলে গণ্য হবে। দেড় লাখ বিডিআর সারাদেশে আছে। তারা ভারি অস্ত্রে সজ্জিত। সীমান্ত তাদের হাতে। এখানে এক দেড় হাজার মানুষ মারার প্রতিক্রিয়া সেখানে কী হবে জানা আছে আপনার সোহেইল ভাই? মনে রাখবেন এরা কিন্তু আনসার না। পিলখানার চারপাশে কয়েক লাখ সিভিলিয়ান বাস করেন। যুদ্ধ শুরু হলে তাদের কী হবে। এই ঘটনাকে ব্যবহার করে মার্শাল ল জারি করে সিভিলিয়ান সরকার হঠানো হলে ঠাণ্ডা মাথা গরম হবে না? এখন পর্যন্ত দেখলাম না, বিডিআরের পরিচালনায় বৈষম্য ও নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে। সেখানে শ্রেণীগত বিরোধই মুখ্য। এই জওয়ানরা মূলত গ্রামের সন্তান-দরিদ্র তাদের পরিবার। তাদের চিন্তাটাও রাখতে হবে। আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক বিবচেনায় আমি এখন পর্যন্ত খুশি। তারা সাহসিকতার সঙ্গে সিভিলিয়ান কর্তৃত্বে এর সমাধানের চেষ্টা করছেন। আমি আশাবাদী যে, তাঁরা সফল হবেন। তারা সেনাবাহিনীকেও চটাতে পারবেন না, বিডিআরকেও ফেলতে পারবেন না। এই কঠিন কাজটিই তাদের সামনে।
২. বাংলাদেশের সকল নিরাপত্তা বাহিনী রাষ্ট্রের বাহিনী। এদের মধ্যে শৃঙ্ক্ষলাভঙ্গের কাজ সবসময়ই করা হয় ঊর্ধ্বতনদের তরফে। দোষের আঙুল সেদিকেই রাখা দরকার। যারা ভিক্টিম তাদের দিকে নয়। আজ এই দুই বাহিনীর সংঘাত হলে তা রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে আরো ঝুঁকিতে ফেলবে। আবারও বলি আমরা আনসার নিয়ে কথা বলছি না, বলছি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী নিয়ে। আজ যদি তারা সীমান্ত থেকেও বিদ্রোহ করে কী হবে ভেবে দেখেছেন?বাংলাদেশ বহুভাবেই বিপন্ন। এই বিপন্নতা থেকে রক্ষা পেতে পারে সেনাবাহিনীর সহনশীলতায় আর রাজনীতিবিদদের ঐক্যের মধ্যে দিয়ে। এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আমাদের রাষ্ট্র কতটা বিপন্ন। আরো রক্তপাত সেই বিপন্নতাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে।

তাই সোহেইল আপনার ‌'প্রশাসন বা দেশ পরিচালনা সম্পর্কে ধারণাগুলোর সঙ্গে একমত হতে পারলাম না।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

মন্তব্য লিখেছিলাম। যান্ত্রিক বিভ্রাটে হাওয়া। আবার সংক্ষেপে লিখছি।

উপরে আমরা কষ্টকল্পিত কোনো ভাবনা উল্লেখ করি নাই। যা বাস্তবে ঘটবে বা ঘটা সম্ভব তাই বলেছি।
রাষ্ট্র যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে বা এই মূহুর্তে রাষ্ট্রের যে কাঠামো তাতে সমাধানের এই একটাই লাইন। আগামী ২ দিনের মধ্যে অকস্মাৎ রাষ্ট্রের চরিত্র বদলানোর কোনো সম্ভাবনা নাই।
এই অবস্থায় আমাকে কেনো যে কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের প্রধান করে দিলেও আলোচনা করে প্রথমে বিষয়টাকে শান্ত করা হবে। তারপর যথারীতি স্বাভাবিক প্রশাসনিক নিয়মেই পুরো পরিস্থিতিকে বিচার করা হবে। শাস্তি হবে, পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তবে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় আসতে পারে নানা সংশোধনমূলক পদক্ষেপ যেগুলো ভবিষ্যতে এরকম অহেতুক পরিস্থিতির উদ্ভবকে রুখবে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অতিথি এর ছবি

বিডিয়ার সদস্যদের মাগনা খাটিয়ে আমরা সুখে থাকতে চেয়েছি। সবার জন্য ডাল-ভাত এর ব্যবস্থা করবে ওরা (যদিও ওটা তাদের কাজ নয়), আর তারা থাকবে উপোস। এমন তো হবে না। পুরো বিষয়টাতে নিশ্চয় তাদের প্রতি ভয়াবহ কোনো অন্যায় করা হয়েছে। তাদের কথা খুব সততার সাথে শোনা দরকার। কোনো শক্ত কারণ ছাড়া এ রকম কিছু হয়ার কথা না। অন্তত তাদের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের কোনো আশা নাই, সেটা অনুমান করা যায়। আর, সেনাবাহিনীর সবকিছুতে অযাচিত খবরদারী বেশ বেড়ে গিয়েছিল।

একজন বিডিয়ার সদস্য বলেছেন, নির্বাচনের টাকা দেওয়া হয় নাই। সরকারি সব দেনা পাওনায় এ রকম দেরি হয়। সেজন্য অস্ত্র হাতে হামলা চালাতে হবে। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। মূল কারণ খুব সম্ভব এমন ক্ষুদ্র কোনো বিষয় নয়।

তবে, রাষ্ট্রের দুই অস্ত্রদারীর মধ্যাকার দ্বন্দ্ব কোনো ভাল লক্ষণ নয়।

এনকিদু এর ছবি

বি ডি আর সদস্যরা দুইটি চিঠি পাঠিয়েছেন । তাতে অপারেশন ডাল-ভাতের দূর্নীতি, নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের টাকা না দেয়া এবং কয়েকজন বি ডি আর সৈনিককে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ আছে । আমি তৃতীয় অভিযোগটি শুনে রীতিমত স্তম্ভিত !


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রেজওয়ান এর ছবি

বিডিআর জওয়ানদের দাবী দাওয়ার ভিডিওটি এখানে। সেনাবাহিনীর দুর্নীতির খোজ খবর কেউ কি কখনও রেখেছে?

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

রেজওয়ান এর ছবি

প্রবাসী সচলদের জন্যে বাংলাদেশী টিভি চ্যানেলের খবর। রিপোর্টিংয়ের মান অনেক এগিয়েছে:

Live Video streaming by Ustream

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

তানিয়া এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রেজওয়ান

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বিডিআর জওয়ানদের বিদ্রোহ একদিনে হয় নাই। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা বাহিনী অথচ চরম অবহেলিত। গোটা বাহিনী চালায় সেনাবাহিনী থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত বহিরাগতরা।
আর গেলো দুই বছরে সেনাবাহিনীর লাগামছাড়া অনাচার অত্যাচার আর দূর্ণীতির কথা বলছেন বিডিআর জওয়ানরা। তাদের বিদ্রোহকে অমূলক বলতে পারছি না। তারা চিঠি পাঠাচ্ছেন মিডিয়ায়, বলছেন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াতেই তারা বাধ্য হয়েছেন এরকম পরিস্থিতিতে যেতে।

সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ছাড়া এ মুহূর্তে উপায় নেই। তবে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করাটা কঠিনও বটে। সেনাবাহিনী সম্ভবত এর বিরোধীতা করবে। কারন বিডিআর বিদ্রোহ করেছে আসলে সেনাবাহিনীরই বিরুদ্ধে। আর গুজব যদি সত্যি হয়, তাহলে বিদ্রোহে যারা নিহত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই আর্মি অফিসার। এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী সাধারণ ক্ষমার বিরোধীতা করবে বলে মনে হয়।
আবার সেনা অপারেশন চালালে সারাদেশে এবং সীমান্তে বিডিআর ক্ষেপবে। যদিও সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাতেই সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

এনকিদু এর ছবি

বি ডি আর যেই সেবা দেয়, সেনাবাহিনী কি সেই সেবা দিতে পারবে ? বাংলাদেশের সীমান্ত পাহারা দেয়ার মুরোদ কি আছে সেনাবাহিনীর ? থাকলে বি ডি আর কে সরিয়ে দিয়ে নিজেরাই সেই দায়িত্বে বসুক । মাঝে মাঝে খবরের কাগজে আসুক সীমান্তে একজন দুইজন করে সেনা সদস্য মারা পড়ছে বি এস এফ এর হাতে । এরকম বেশ কিছুদিন চলার পর সেনাবাহিনীর সৈনিকেরাও টের পাবে ( হয়ত একনো তারা জানে) সীমান্তে কাজ করার কষ্ট কত । তখন তারাও একদিন এরকম রিভোল্ট করবে । তখন কি পুলিশ বা আনসার পাঠিয়ে সেই সৈন্যদের থামান হবে ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রেজওয়ান।

আর যাঁরা ঘটনা পুরো জানবার আগেই বিচারকের আসনে বসে বিচার করা শুরু করেছেন, তাঁদের ঘটনার বিভিন্নমুখী জটিলতা বুঝবার জন্য ধৈর্য্য ধরবার অনুরোধ জানাই।
বিদ্রোহীরা জানে, তাদের কাজের শাস্তি ফায়ারিং স্কোয়াড। তারপরও যখন তারা নেমেছে, সেটাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া দরকার। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, আমরা যার যার মতো খবর সংগ্রহ করে ব্যাখ্যা দিয়ে ভাসিয়ে দিতে থাকলেও কেউ কেন বলছি না, সরকার কেন আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দিচ্ছে না? নইলে গুজব-গুঞ্জন চলতেই থাকবে। এ অবস্থায় আমি কোনো বাহিনী নয়, সরকারের ওপরই আস্থা রাখতে চাই।

দ্বিতীয়ত, রাজনীতি, জাতিসংঘ, পরাশক্তির আছর, জঙ্গিবাদ সব মিলিয়ে আমাদের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা কাঠামোকে কোন জায়গায় নিয়ে গিয়েছে, ভেবে দেখেছেন? এখন নাকি আবার ব্যর্থ রাষ্ট্রের ধুয়া তুলে সরকার সরানোর কাজ শুরু হয় সেই ভয়ে আছি। বিডিআরের জওয়ানরা আজ যেই অভিযোগ করছেন, সেটা জাতীয় অভিযোগ জনপ্রিয় অভিযোগ। তাঁরা নিন্দিত হন মেনে নেব, কিন্তু তাদের রক্তের বিনিময়ে তোলা অভিযোগের তদন্ত ও বিচার কী হবে? এই দাবি না করে তাদের শাস্তির দাবি করা রাষ্ট্রকে আরো আগ্রাসী হওয়ার কানপড়া দেওয়া। আমি মনে করি এটা নাগরিকের কাজ নয়। নাগরিকের কাজ হলো সত্য, ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার পক্ষে দাঁড়ানো। আজ আমাদের দেশে এই তিন পরস্পরবিরোধী হয়ে গেছে, একে এক দেহে আনতে হবে। নইলে বাংলাদেশ টিকবে না।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই ব্যাপারটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের না, প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের। সাহারা খাতুন এখানে উল্লেখযোগ্য হলেন কেন বুঝলাম না। যা হোক তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এবং তিনি প্রথমেই টিভিতে বলেছেন এটা ভুল বুঝাবুঝির ফল... অ্যাঁ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

দেশের ভেতর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ।
তাছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তো মনে হয় এখন প্রধানমন্ত্রীর হাতে।
সুতরাং এটা একটা ভুল বুঝাবুঝিরই ফসল....হাসি
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

রেজওয়ান এর ছবি

বিডিআরের সৈন্যদের কথা শুনে সত্যিই কষ্ট লাগছে।

Video chat rooms at Ustream

বিডিআর চীফের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে যাওয়ার সময় (তার বউই নাকি ৪০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে জরুরী অবস্থার সময়) এক জওয়ানকে বিডিআর চীফ গুলি করে হত্যা করেন। সেখান থেকেই বিদ্রোহের উৎপত্তি। বিডিআর চীফকে তারা বন্দী রেখেছে। তাদের কাছে অনেক তথ্য আছে। এদেরও কি ফায়রিং স্কোয়াডে দিয়ে এসব তথ্যকে ধামা চাপা দেয়া হবে?

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

তাদের কণ্ঠগুলো কেউ একটু ভালো করে খেয়াল করেছেন? এক-দুইদিনে এমন ক্ষোভ হয় না, এমন ডেসপারেট ভয়েস আসে না। খুব খারাপ লাগছে ভিডিওটা দেখে। কেমন দেশের নাগরিক আমরা?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

একটা জরুরি বিবৃতি এসেছে, কেউ যদি দয়া করে অণুবাদ করে আলাদা ব্লগে দেন তো সত্যি সত্যি কৃতজ্ঞ হব। আমি এখনই বাইরে যাচ্ছি, তাই। এই রকম বিবৃতি ও সই-স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সংবাদমাধ্যমে পাঠালে ভাল হয়। বিতর্ক করা আর সম্ভব হচ্ছে না। বরং যে যা ভাল মনে করেন সেটাই করুন। এটা পাঠিয়েছেন রেহনুমা আহমেদ, নৃবিজ্ঞানী সংগঠক এবং জাবির সাবেক শিক্ষক।

''We are following the coverage of the BDR rebellion on the media andwould like you to voice the concerns we have as ordinary citizens. Please find below a statement which expresses the sentiments of many,
many people. I am sending this on behalf of Rahnuma Ahmed, a writer and myself, Shireen Huq an activist in the women’s movement.

"We, as the citizens of Bangladesh are extremely concerned at thesituation that has arisen today from members of the BDR (Bangladesh Rifles) having expressed their grievances against structured
inequalities that they suffer (vis a vis the Bangladesh army), regarding pay, benefits, work-related risks etc. We have also heard that they have expressed their dissatisfaction at army corruption, towhich they have been forced to be silent spectators.

We, as concerned citizens, support their demands for the declarationof a general amnesty, and demand that army encirclement of the BDR camp be immediately withdrawn and that the government should takeimmediate initiative to sit down and settle the matter through peaceful means of negotiation, rather than treating it as alaw-and-order problem to be quelled forcefully."

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

মন্তব্য অনেকগুলো পড়লাম - কারো অবস্থান বিডিআরের প্রতি বেশী সহানুভূতিশীল, আর কারো সিম্প্যাথি কম। আমার মনে হয় অতীত ঘটনার আলোকে একটা প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে।

প্রায় দেড় বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যদের জবরদস্তি আর বাড়াবাড়ির কারনে ঢাবিতে ব্যাপক সংঘাত শুরু হয়, যেটা দুই-তিনদিনের মধ্যে দেশব্যাপী বিক্ষোভে পরিণত হয়। সেটা নিয়ে তখন ব্লগে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। আর্মি অফিসারকে ফ্লাইয়িং কিক মারার সেই ছবিটা বিখ্যাত হয়ে গেছে।

আজকে আবার সেই ঘটনার প্যারালেল দেখা যাচ্ছে। প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হচ্ছে যে বিডিআরের এক সৈনিককেই প্রথমে গুলি করা হয়েছে, যখন সে উপরমহলের অফিসারের কাছে কোন দাবী নিয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার সত্য-অসত্য এখনো নিরুপণ হয়নি।

কিন্তু রিপোর্ট যদি সত্য হয় তাহলে যেই প্যাটার্নটা ধরা পড়ে, সেটা হলো -
প্রথমে সেনাবাহিনীর জবরদস্তি আচরণ --> পরিণতিতে জুলুমকৃত পক্ষের বিক্ষোভ, যেটা দুইবারই সহিংস রূপ নিয়েছে, এবং জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

প্রশ্ন হলো - এই যে একটা lawless সেনাবাহিনী তৈরী হয়েছে যারা নিজেদের সবকিছুর ঊর্দ্ধে মনে করে, নিজেদের entitled মনে করে, এবং যাদের ব্যবহার/দুর্ব্যবহারের ফলাফল প্রতিবার এহেন ভয়াবহ হয়, তাদের সামাল দেবে কে? এইসব তুরস্ক, পাকিস্তানের মত দেশে দেখা গেছে, যেখানে সেনাবাহিনী মানে প্যারালেল পাওয়ার।

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

আলমগীর এর ছবি

পিলখানার ভেতরে কতগুলো স্কুল আছে, তাতে কী সংখ্যাক শিশু-কিশোর পড়াশোনা করে এ নিয়ে কারে ধারণা থাকলে জানান, প্লিজ। বিডিআরের উর্ধ্বতন কারো কারো পরিবার-সন্তানদের অপহরণের কথাও বিভিন্ন ব্লগে আসছে।

এনকিদু এর ছবি

পিলখানা বি ডি আর সদর দপ্তরের বিদ্যুৎ পানি এবং গ্যাসের সংযোগ কেটে দেয়া হয়েছে বাইরে থেকে । রাত নামার আগে সমস্যাটির সমাধানও হয়নি । সেনাবাহিনীও সরেনি পিলখানার চারপাশ থেকে । মনে হচ্ছে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে আরেকটি পঁচিশে মার্চ দেখতে পাব আজ রাতে । একাত্তরের পঁচিশে মার্চের সাথে পার্থক্য হবে, আজ বাঙ্গালি সৈনিক বাঙ্গালি সৈনিককে খুন করবে ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- এই আশঙ্কা সত্যি না হোক। এমনটা হলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে যেটা হয়তো আমরা কল্পনাও করতে পারছিনা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আরেকটি ব্লগে দেখতে পেলাম সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করা হয়েছে, চমৎকার!
পুরো ব্যাপারটা যথাযথভাবে কাজ করে যাতে সেই আশাটাই করি।
সেই আশায় ভর করে সরকারকে আগাম অভিনন্দন

আর সেনাবাহিনীকে সরিয়ে ফেলা উচিত যত তাড়াতাড়ি, রাত বাড়লে এদের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে।

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সাধারন ক্ষমার খবর সঠিক। এই মাত্র প্রথম আলোতে দেখলাম।

সরকার শেষ পর্যন্ত একটা রাজনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছেন শুনে ভালো লাগলো।



অজ্ঞাতবাস

জিজ্ঞাসু এর ছবি

এই সাধারণ ক্ষমা যেন সাধারণ ক্ষমাই হয়। পরবর্তীতে যেন কোন ডিপার্টমেন্টাল অ্যাকশন তাদের বিরুদ্ধে না নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা গ্রহণের শুরুতেই অনেক কঠিন সমস্যা এসে গেল। খুবই দুঃখজনক। বিডিআর জওয়ানদের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে আন্তরিক উদ্যোগ কামনা করি বর্তমান সরকারের কাছে।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

এনকিদু এর ছবি

জ্বীনের বাদশাহ'র অভিনন্দনটা অপচয় হল কিনা ভাবছি । এখনো ধানমন্ডি এলাকা থেকে বন্ধুরা জানাচ্ছে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে । সেনাবাহিনী রয়েছে আগের অবস্থানেই । পিলখানায় গ্যাস বিদ্যুৎ পানি এখনো আসেনি ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

মিডিয়া এখন অনেক তৎপর .... এটুকু ভরসা করছি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শামীম এর ছবি

একটা আশঙ্কা মনের মধ্যে খচখচ করছে .... এই সাধারণ ক্ষমা এবং হ্যাপি এন্ডিংটা আই ওয়াশ কি না .... রাতে হয়তো দেখা যাবে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ইন অ্যাকশন --- অসম্ভব নয়, কারণ দূর্নীতিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য হাটুর বুদ্ধি বল প্রয়োগ করতেই পারে।

সেনা অবরোধ সরার কোন খবর এখন পর্যন্ত কোন মিডিয়াতে দেখি নাই।
সন্ধ্যা ৭:২৭।

কোন একটা চ্যানেলে দেখলাম যে সুয়্যারেজ থেকে নালায় বের হয়ে আসা দুইজন বিডিআর সদস্যের লাশ দেখেছে এমন প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাতকার দেখালো। প্রথমে পুলিশ লাশ টেনে উপরে এনেছে তারপর পুলিশ/র‌্যাব ঐ লাশ নিয়ে গেছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রণদীপম বসু এর ছবি

বিডিআর চীফের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে যাওয়ার সময় (তার বউই নাকি ৪০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে জরুরী অবস্থার সময়) এক জওয়ানকে বিডিআর চীফ গুলি করে হত্যা করেন।

বিডিআর-এর স্ত্রীর দুর্নীতির এই টাকার একটা অংশই হয়তো সেটা ছিল যেটা নিয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করতে গিয়ে বিমান বন্দরে ধরা পড়ার একটা গুঞ্জন তখন শোনা গিয়েছিল। সেনা প্রধান নাকি তা চাপা দিতে নিজে বিমান বন্দর গিয়ে ডিজি'র স্ত্রীকে টাকাসহ নিজের জিম্মায় নিয়ে চলে যান, যা কোন মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয় নি। আর দুর্নীতির আরেকটি নমুনা হয়তো ছিলো ডাল-ভাত কর্মসূচির আড়ালে বিডিআর জওয়ানদের বাধ্য করা হয়েছিল ভেজাল দুধ বিক্রি করতে, যা বিডিআর-এর ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলোতে পাওয়া যেতো। এ ব্যাপারে 'সংবাদে' প্রথম পেজে দুধের ছবিসহ রিপোর্ট হলে ডিজির উপর সাধারণ জওয়ানদের ক্ষোভ নজরে পড়ে। ঐদিনই সব দুধ উধাও হয়ে যায়। যদিও সেই বিপুল পরিমাণ গায়েব হয়ে যাওয়া দুধ এখনো হঠাৎ করে চোখে পড়ে ফেরি করে গোপন বিক্রির মাধ্যমে বিভিন্ন হোটেলগুলোতে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ক্ষমা ঘোষণা হলেও... এখনও পর্যন্ত যা চেহারা দেখা যাচ্ছে তাতে রাতে অভিযানের পথ একেবারেই পরিষ্কার... সবরকম প্রস্তুতির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আচ্ছা, সেনাবাহিনী কার অনুমতি নিয়ে মাঠে নামলো? সরকার কি অনুমতি দিয়েছে? নাকি, এসব অপারেশনে তাদের সরকারের কাছ থেকে অনুমতি লাগে না? এ বিষয়ে কেউ বিস্তারিত বলতে পারবেন?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ফারুক হাসান এর ছবি

প্রথমআলোর প্রথম কাভারেজে বলা ছিল যে সরকারই সেনাবাহিনী তলব করেছে। যদি তাই হয় তাহলে ঠিক আছে।
ভয় একটাই, পরিস্থিতি বিবেচনায় সেনাবাহিনী কতটা বিবেচক হবে সে সম্পর্কে আশাবাদী হওয়া কষ্টকর। আমার মনে হয় না যে সরকার রক্তক্ষয়ী কোনো সমাধান চাইবে। এতে কোনো সমাধান তো হবেই না, বরং আরেকটা কালোরাতের সাক্ষী হবে পিলখানা আর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকার নিজে। আমার ধারণা, সরকার এটা বুঝেই সাধারণ ক্ষমার কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু যদি সেনাবাহিনী সরকারের অবাধ্য হয়ে রাতে কোনো একশনে যায় সেটা হবে মোষ্ট শেমলেস এ্যাক্ট।
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনার আশঙ্কা আমারো। এই আশঙ্কা গুলি ভুল হোক।



অজ্ঞাতবাস

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

এই আশঙ্কা গুলি ভুল হোক।

এইটাই চাই
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ফারুক ভাই, ধন্যবাদ। সরকারের উচিত এই মুহূর্তেই সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেয়া। বিডিআর যে সরকারের জন্য কোনো হুমকি না, কিছু অত্যন্ত বেসিক এবং ন্যায্য দাবিই তাদের ফোকাস, এতক্ষণে সায়েরা খাতুনদের তা বোঝা উচিত।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ঠিক। বিডিআরের বিদ্রোহী সদস্যরা গরম ভাষায় আর্মির বিরোধীতা করলেও প্রধাণমন্ত্রীর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ রেখেছেন কথাবার্তায়। যদি রাস্ট্র কিংবা রাস্ট্র নায়কদের প্রতি বিরূপ ধারণা থাকতো তাহলে সেটা কথাতেও প্রকাশ পেতো তাদের। সেটা না হয়ে বরং শ্রদ্ধা নিয়েই প্রধাণমন্ত্রীর নাম উচ্চারণ করতে দেখা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে রেড এলার্ট অবস্থা থেকে ফিরিয়ে নেয়াটাই এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রধাণ এবং একমাত্র পন্থা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

এনকিদু এর ছবি

আই ওয়াশের মতই তো লাগছে । পিলখানার ভেতরে বি ডি আর কলোনি গুলো থেকে বি ডি আর সদস্যদের পরিবার পরিজন কে বের করে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে । ভাবসাব সুবিধার না । পঁচিশে মার্চ হয়ে যায় কিনা ভাবছি ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

হিমু এর ছবি

সচলায়তনের সদস্যদের প্রতি অনুরোধ রইলো, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আলোচনা করার, এবং স্পেকুলেটিভ মন্তব্য থেকে বিরত থাকার। আগের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, একজনের অনুমিত কথার ভিত্তিতে গুজব ব্লগ থেকে ব্লগে দ্রুত ছড়ায়।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সুমন চৌধুরী এর ছবি

চ্যানেল আই এবং প্রথম আলো কোন সূত্রেই সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কিছু জানা যায় নি। একটু আগে চ্যানেল আই খবরে জানা গেলো বিডিআর সদস্যরা হ্যান্ড মাইকে ঘোষনা করেছে যে পিলখানার চারপাশ থেকে সেনাপ্রত্যাহার না করা হলে তারা অস্ত্রজমা দেবে না।



অজ্ঞাতবাস

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সেনা প্রত্যাহার হয়ে গেলেও অস্ত্র জমা দেয়ার প্রশ্ন আসে না। তাদের দাবিগুলো মেনে নিলে তারা যদি গোলাগুলি বন্ধ করে, তাহলে তাদের অস্ত্র তাদের কাছেই থাক। তারা তো ক্যান্টনমেন্ট বা বঙ্গভবন দখল করতে যাচ্ছে না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

জিজ্ঞাসু এর ছবি

একমত।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

সবজান্তা এর ছবি

শেষ খবরঃ সরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বিডিআর সদর দপ্তরের সামনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দাবি অনুযায়ী সেনাবাহিনী ধীরে ধীরে প্রত্যাহার শুরু হয়ে গিয়েছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

http://www.bbc.co.uk/mediaselector/check/bengali/meta/tx/beng_probaho?size=au&bgc=003399&lang=bn&nbram=1&nbwm=1

বিবিসি বাংলার প্রবাহ প্রোগ্রাম - ২২ মিনিট পয়েন্ট থেকে বেনামী এক জোয়ানের ইন্টারভিউ - শুনে দেখেন। সেনাবাহিনীর দুর্নীতি আর জুলুমের কথা বললেন, কথা বলতে বলতে শেষে তিনি অসহায়ের মত কেঁদে ফেললেন।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

রণদীপম বসু এর ছবি

এখন আবার খবর পাওয়া যাচ্ছে যে পিলখানাতে আবারো নাকি গোলাগুলির শব্দ শুনা যাচ্ছে। আশেপাশে যারা থাকেন তারা কি খবরটির সত্যতা নিশ্চিৎ করবেন ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

আপাতত কোনো শব্দ পাচ্ছি না ৮টার পর থেকে।
--------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক

গৃহান্তরী এর ছবি

বিবিসিতে দেয়া সেই বিডিআর কর্মীর মত আমিও কাঁদছি। ব্যাপারটাকে যতই বিবিসি কেবল বেতন ভাতার বৈষম্য বলে খাট করার চেষ্টা করুক, আসল সমস্যা অন্য, অনেক গভীরে। তবুতো কেউ গত দুবছরের ঐ কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের হিসাব চাওয়ার মত সাহস দেখাল!

২০০০০ জোয়ানের কাছে অস্ত্র চলে গেছে, সবার মনে অবিশ্বাস। আল্লাহ তুমি রক্ষা কর! আর রক্তপাত নয়। আপাততঃ এটাই চাওয়া।

দীর্ঘমেয়াদে ঐ ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হাটুবাহিনীকে কিভাবে সামলানো হবে সেটা বড় ভাবনা হয়ে রইল।

শামীম এর ছবি

একটু আগে সম্ভবত এনটিভির ক্যামেরায় দেখলাম একজন মুখ ঢাকা বিডিআর সদস্য বলছিলেন: খাদ্যদ্রব্যের দাম এ্যাত বেড়েছিল কিভাবে জানেন। সীমান্ত থেকে মাল এনে সেগুলো বিডিআর-এর গুদামে রাখা হত। আর ছাড়া হত অনেক পরে .... এভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনীর লোকজনের সিন্ডিকেট।

-- আশা করছি এই অভিযোগ সত্য হবে না। মন খারাপ
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

এনকিদু এর ছবি

এই লোকটাই সম্ভবত বলছিল যে প্যারেড গ্রাউন্ডে সেই খাদ্যদ্রব্য মজুদ করা হয়েছিল । অসম্ভব না, যদ্দূর মনে পড়ে সেই প্যারেড গ্রাউন্ডটা বিশাল বড় এবং যেহেতু পিলখানার ভেতর দিয়ে (সেনানিবাসের মত) বাইরের লোকে খুব বেশি চলাফেরা করেনা, খুব বেশি লোকজনের চোখেও পড়েনি জিনসটা ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ধ্রুব হাসান এর ছবি

অবস্থা সম্ভবত আরো খারাপের দিকে যাবে। আপাতত হয়তো এটা দমন করা যাবে কিন্তু এটাই শেষ নয়। যে কোন অজুহাতে সংবদ্ধ হত্যা কোন অধিকার আদায়ের মাধ্যম হতে পারেনা। কিছুই বলার নেই...এই পর্যন্ত যতদূর জানি ২৮জন নিহত হয়েছেন, এই ২৮ জনের মধ্য মুজিব সাহেবের লাশ শনান্ত করা গেছে, উনার বউকে তুলে নিয়ে গেছে বিডিআর জোয়ানরা; এমনকি তাদের ছেলেটিকেও স্কুল থেকে ফেরার পথে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরকম অনেক অফিসারের পরিবারের সদস্যই নিখোঁজ। এখন প্রশ্ন হলো কারো ভুল কর্মকান্ডের জন্য হত্যা হালাল কিনা? যদি হালাল হয় অনেককেই শূলে ছড়ানো উচিত; দুয়েকজনকে নয়! গোটা ঘটনার পেছনে কি রহস্য তা বের হয়ে আসলে হয়তো সব কিছু আরো পরিস্কার বোঝা যাবে।

গৃহান্তরী এর ছবি

গোটা ঘটনার পেছনে কি রহস্য তা বের হয়ে আসলে হয়তো সব কিছু আরো পরিস্কার বোঝা যাবে।

সেই। ঘটনা শেষ হউক তাড়াতাড়ি, কিন্তু রহস্য বাইর হউক। রহস্যটাই আসল দরকার। কিন্তু বাইর হবে কি?

অবাঞ্ছিত এর ছবি

উদ্ভট... আমি বেকুব টাইপ মানুষ এবং এইসব কম বুঝি... বিপ্লব / বিক্ষোভ ও ঠিক বুঝি না... তবে আমার মনে হয় যে আমরা বিপ্লব আর বিক্ষোভের মতন টার্মগুলোকে ধুমায়ে অপব্যবহার করি...

একটা কালচার হইল, কিছু হইলেই গাড়ি ভাঙো, বাস পুড়াও... দোকানে আগুন জ্বালাও.... এইটা নাকি বিক্ষোভ.... .হরতাল, দাবি দাওয়া আদায়ের সংগ্রাম..... সহিংসতাই যেন একমাত্র আশ্রয়... নাকি ব্যর্থতা আমাদেরই? সহিংস না হলে আমরা পাত্তা দেই না?

আর কিছু হইলে মারা যায় কিন্তু রিকশাওয়ালা আর চা-ওয়ালারাই..... আমরা বিক্ষোভের মধ্যে এমন দুয়েকটা মৃত্যুতে এমনই সয়ে গেছি যে এগুলা গায়েই লাগে না আজকাল... মহত স্বার্থে ক্ষুদ্র ক্ষতি.... মাঝে মধ্যে বুঝি না মার্কিন মনোভাবটা আসলে কোথায়..

ভয় হয় ক্ষমার মাধ্যমে যদি এমন আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়? আজ বিডিআর সাধারণ ক্ষমা পেয়ে বের হয়ে গেলে কাল যদি আর্মির কোনো বাহিনী এতে অনুপ্রাণিত হয়ে এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি করে? পরশু পুলিশ ?

সহিংসতা ছাড়া কি আমাদের দেশে দাবি উত্থাপনের আর কোনো সুযোগই আমরা খালি রাখিনি? ন্যায্য দাবি তো শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভেও উত্থাপন করা যেতে পারে... নাকি আমি একান্তই "নাইভ"?

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

সহিংসতা ছাড়া কি আমাদের দেশে দাবি উত্থাপনের আর কোনো সুযোগই আমরা খালি রাখিনি? ন্যায্য দাবি তো শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভেও উত্থাপন করা যেতে পারে...

এটাই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল সমস্যা। এখানে রাষ্ট্র নিজে সহিংস, তার ক্ষমতাধররা ক্ষমতার অপব্যবহারে ওস্তাদ। ক্ষোভ জানানোর কোনো নিষ্কাশন পথ কোথাও খোলা নাই। তাই রাষ্ট্র ও জনগণের বিভিন্ন অংশ বারবারই বলপ্রয়োগের প্রতিযোগিতায় নামতে বাধ্য হয়। সুতরাং রাষ্ট্রের চলন-বলন বদলানো না হলে এরকম ঘটনা আরো ঘটবে। গার্মেন্ট শ্রমিকরা কেন বারবার বিদ্রোহী হয়? কারণ তাদের সঙ্গে দাসোপম আচরণ করা হয়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।