সাইক্লোন সিডার: আমদের অভিজ্ঞতা - ১

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৮/১২/২০০৭ - ৬:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সিডরের আঘাতের পরে আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি, ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য কিছু একটা করার প্রয়াস নেয় নাই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া একটু দুর্লভই হবে। আমরাও সে রকমই কিছু একটা করার চেষ্টা করেছি। যদিও সেই আয়োজন খুবই ক্ষুদ্র ক্ষয়ক্ষতির অনুপাতে। এই চেষ্টা করতে গিয়েই কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে বিশেষ করে ভিনদেশীদের ভালবাসা দেখে আমার দেশের মানুষদের জন্য। সেই অভিজ্ঞতাগুলোই এখানে শেয়ার করছি এই আশা নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে আবার কোন দূর্যোগের (খোদা/ভগবান/গড/বুদ্ধ/ঈশ্বর না করুক)পরে কি করব বা কিভাবে করব বা কি করা যায় এই চিন্তাগুলো থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বলতে পারেন অনেকটা নিজের জন্যই একটু টুকে রাখা।

সিডরের আঘাতের পরে পরেই যখন ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বিভিন্ন মিডিয়াতে আসতে শুরু করল তখন থেকেই মাথাটা আস্তে আস্তে ঘোলা হতে শুরু করল। বলা যায় মাথাটা আউলাইয়া গেল। দিন যায় আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বাড়ে। লাশের সংখ্যা বাড়ে। লাশ নাকি ১০,০০০ হাজারও ছাড়াইয়া যাইতে পারে!! আমি নিউজ দেখি আর স্তম্ভিত হই। কিছু একটা করার তাগিদ বোধ করি। প্রথম যেই চিন্তাটা আসল কি করব বা কি করতে পারি: শুধু টাকা কালেকশন!! আচ্ছা কালেকশন না হয় করব তার পর কি ভাবে সেই টাকা পাঠাব? কাকে পাঠাব। অস্থির অবস্থা এর মধ্যে সময়ও নাই। যা করার দ্রুত করতে হবে। কারণ প্রথম ধাক্কার সময় সাহায্যটা বেশি প্রয়োজন। মিডিয়াগুলানও তাই বলে আর ব্লগত আছেই।

তার পরেই ফোন দিলাম আমাদের কমিটির আরও দুই সহযোদ্ধা রাকিব ভাই আর সোবাহান ভাইকে। আলাপ করলাম ২১শে নভেম্বর তিনজনেই। সবাইরে নিয়া মিটিং করার বা ডাকার সময় নাই। মিটিংয়ে ডিসিশন হইলে বিএসএ (BSA) গ্রুপে মেইল ছাড়নের সাহায্যের আবেদন জানাইয়া। আমি তাই করলাম। এর মধ্যে জোহা ভাই ফোন দিলেন, বললেন কিছু একটা করেন ভাই। কি করুম জোহা ভাই? কইল ওমসা (OMSA)-রে বলেন সাহায্যের জন্য সাথে আমিও বলব (জোহা ভাই, ওমসার সেক্রেটারি)।

এই কথোপকথনাটাই মাথাটা ক্লিয়ার কইরা দিল। যদি ওমসা রে বলতে পারি তাইলে ISAOU-রে বলতেত বাধা নাই সাথে ইন্টারন্যাশনাল আডভাইজার প্লাস সেক্রেটারিরেও বলতে পারি। যা ভাবা তাই কাজ দিলাম মেইল ছাইড়া। চিন্তায় আছি কে কি মনে করে বা কি ভাবে বা কিছু ভুল হইল কিনা।

সর্বপ্রথমে মেইল দিল মিশরের কাশেম (ওমসার প্রসিডেন্ট)। বলল এই জুম্মার পরে (নভেম্বর ২৩, ২০০৭)আমি সবাইরে বলব আর আমরাও চিন্তা করতেছিলাম কিছু একটা করার, তোমার মেইল পেয়ে ভালই হইল। মনটা খুবই ভাল হইয়া গেল। যাক একজনত সাহায্য করবে বলছে। বাসায় গেলাম খুশি মনে। পরের দিন সকালে মেইল বক্স খুইলা আমার পাগল হবার দশা। কয়টা মেইল আসছিল মনে নাই তবে সবগুলা মেইলেই ছিল সমবেদনা আমার দেশের মানুষের জন্য আর সাহায্য করতে চাই, কিভাবে, কখন, কোথায় তোমাদের পাওয়া যাবে ইত্যাদি। চোখের পানি আর ধইরা রাখতে পারি নাই মানুষের ভালবাসা দেইখা। কাউরে হয়ত বড়জোড় ২ বছর চিনি আবার এমন অনেকরও মেইলও পাইছি যারে চিনিও না। এই লেখার মাধ্যমে তাদের সবাইরে কৃতজ্ঞতা জানাই।

আমদের ইন্টারন্যাশনাল এডভাইজারেরও মেইল করল। বলল তুমি আগামী বুধবার (নভেম্বর ২৮, ০৭) WAWA -র মিটিংয় আছে ঐখানে আস।
(চলবে).....

--বাপ্পী


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।