পাবনার ঘটনা এবং ওই পাজেরো আমার

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৯/২০১০ - ১১:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইন্টারনেটের সংবাদ মাধ্যমে পাবনার ঘটনা জানলাম, জানলাম মদ্যপ অবস্থায় নারী সহকর্মীর যৌন হয়রানীর প্রচেষ্টাকারী হাইলিবিডোম্যান শাকিলের ঘটনা, আরও কিছু কিছু। শাকিলের ঘটনা পড়ে অপ্রয়োজনীয়ভাবেই জয়নাল হাজারীর কথা মনে পড়ে গেলো। একবার তার বাসায় তল্লাসি চালিয়ে পুলিশ মদ, লোকাল-ভায়াগ্র আর রসময়গুপ্তের চটি বই উদ্ধার করেছিলো। আর পাবনার ঘটনা পড়ে এবং সচলে আমার বন্ধুদের বিশ্লেষণ আর আলোচনায় আ ...ইন্টারনেটের সংবাদ মাধ্যমে পাবনার ঘটনা জানলাম, জানলাম মদ্যপ অবস্থায় নারী সহকর্মীর যৌন হয়রানীর প্রচেষ্টাকারী হাইলিবিডোম্যান শাকিলের ঘটনা, আরও কিছু কিছু। শাকিলের ঘটনা পড়ে অপ্রয়োজনীয়ভাবেই জয়নাল হাজারীর কথা মনে পড়ে গেলো। একবার তার বাসায় তল্লাসি চালিয়ে পুলিশ মদ, লোকাল-ভায়াগ্র আর রসময়গুপ্তের চটি বই উদ্ধার করেছিলো। আর পাবনার ঘটনা পড়ে এবং সচলে আমার বন্ধুদের বিশ্লেষণ আর আলোচনায় আমার মনে পড়ে গেলো আমার ড্রাইভার সেলিমের বলা একটা ঘটনা। ইউএনডিপি থেকে আমাকে একটা পাজেরো দিয়েছিলো ঢাকার হার্টজ থেকে ভাড়া করে অফিসিয়াল মুভমেন্ট করার জন্যে। সেলিম ছিলো সেটার ড্রাইভার। গল্পটা শোনেন-

ঢাকার আইপিএসএসএল নামের একটা কোম্পানি বিশ্বখ্যাত হার্টজের ব্রান্ড ফ্রাঞ্চাইজ করে বাংলাদেশে কার রেন্টাল ব্যবসা করতো। এদের মূল ক্লায়েন্ট দূতাবাসগুলো, ইউএন, বিদেশী প্রকল্পগুলো, আর কালেভদ্রে ঢাকার কিছু মালদার লোকেরা।

একবার গুলশানের এক কোটিপতির ছেলের কিছু মস্তিষ্কজনিত সমস্যা দেখা দিলে সিদ্ধান্ত হলো তাকে পাবনায় ভর্তি করার। নিজেদের গাড়ি থাকলেও তা না নিয়ে তারা হার্টজ থেকে এক পাজেরো ভাড়া করলো ছেলেকে পাবনা নিতে। সেলিমের এক কলিগ-বন্ধু সেই পাজেরোর ড্রাইভার। যথাসময়ে ছেলেকে ইঞ্জেকশন দিয়ে বেহুশ করে পাজেরোতে তোলা হলো। সকালে গাড়ি পাবনায় গন্তব্যে পৌঁছে গেলো। সাথের লোকজন যখন ছেলেকে ভর্তি করাতে ব্যাস্ত, ড্রাইভারের একটু শখ হলো জায়গাটার ভিতরে ঘুরে দেখার। সে বিভিন্ন সেলের সামনে গিয়ে বাসিন্দাদের সাথে কথাবার্তা-ঠাট্টা মস্করা করতে করতে বেশ খানিকটা সময় কেটে গেলো এবং একটা ডিউটি শিফট বদল হয়ে গেলো। কিন্তু যেইনা ড্রাইভার বেরোতে যাবে, দেখতে পেলো বেরোনোর মেইন গেট বন্ধ হয়ে গেছে। সে একজন নতুন শিফটের গার্ডকে বললো তাকে বের করে দিতে। গার্ড তো জাপটে ধরলো তাকে এই ভেবে যে সে ভিতরের একজন রোগি ধাপ্পা দিয়ে পালিয়ে যেতে চাইছে। সাথে সাথে কয়েকজন গার্ড এসে তাকে আটকে ফেললো। সে যা’ই বলতে চায়, তারা কিছুই শোনেনা। এরপর সে বললো যে গেটের সামনের ওই পাজেরোটা তার। একজন গার্ড বললো যে “এখানে যারাই আসে তারাই বলে যে ওই পাজেরো আমার”। এরপর সে যেই বললো যে পাজেরোর চাবি তার পকেটে, এবার খেলো দু’ঘা। গার্ড ধারণা করলো যে সে কোনওভাবে বাইরে বেরিয়ে পাজেরোর চাবি চুরি করে এনেছে। তার পকেট হাতড়িয়ে চাবি, মোবাইল, মানিব্যাগ, সব সীজ করা হলো।

যাইহোক পরে সবকিছুই বোঝা গেলো। তবে ড্রাইভারকে অপেক্ষা করতে হলো পুনরায় হসপিটাল সুপার ডিউটিতে না আসা পর্যন্ত। তিনি আসার পরেই মুক্তি মিললো।

আমার মনে হচ্ছে আমাদের দেশে যারাই ক্ষমতায় আসে তারাই পাগল হয়ে যায় এবং তাদের অবস্থা হয় “ওই পারেরো আমার”-এর মতো। শুধু পাজেরোর বদলে কথাটা হয়ে যায় “ওই দেশটা আমার।” দেশ আমাদের সবার কিন্তু ক্ষমতায় আসলে আমরা পাগল হয়ে যাই কিভাবে দেশটাকে কেনা সম্পত্তির মতো করে যথেচ্ছ অধিকার করতে পারবো। পাবনার ঘটনা তার একটা জ্বলন্ত প্রমান।


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

শিরোনাম দেখে ভেবেছিলাম একটি বিশ্লেষনধর্মী পোস্ট। প্রথম প্যারার প্রথম চারটি লাইন (অংশবিশেষ ছাড়া) কেন লিখলেন, পরের চার প্যারায় তা বুঝলাম না।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অতিথি লেখক এর ছবি

হাজারীর প্রসঙ্গটা না আসলেও হতো, বুঝতে পারছি। শাকিলের ঘটনার উল্লেখের কারনটা হচ্ছে রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডসমৃদ্ধ আমলারা স্বভাবজাতভাবে একটু বেপরোয়া হয়ে থাকে সেটা বোঝানো। এখানে যোগসূত্রটা হচ্ছে মদ ও সেক্স। তবে আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ভাই। এডিট করার উপায় থাকলে এক্ষুনি করে ফেলতাম।

রাতঃস্মরণীয়

মুস্তাফিজ এর ছবি

পাবনা সম্পর্কিত জোকস্‌টা অনেক পুরোনো। আবার সত্যও হতে পারে। '৭৯ তে জিয়া একবার পাবনা হাসপাতালে ভিজিটে গিয়েছিলেন। সে সময় একজন রোগী প্রেসিডেন্ট এসেছে শুনে বলে উঠেছিলো প্রথম প্রথম সবাই নিজেকে তাই বলে।

..............................

হার্টজের অফিস এখনও আছে।

--------------------------

...........................
Every Picture Tells a Story

অতিথি লেখক এর ছবি

সেলিমের বন্ধু ড্রাইভারকে এটা অবশ্য কোনও রোগি বলেনি, বলেছিলো একজন গার্ড।

২০০৯ সালের শুরুতে মালিকানা সংক্রান্ত ডিসপিউটের কারনে হার্টজ লিগ্যাল নোটিস দিয়ে আইপিএসএসএল থেকে তাদের ফ্রাঞ্চাইজ তুলে নেয়। তখন স্বঘোষিত নতুন মালিক এভিএস এর ফ্রাঞ্চাইজ যোগাড়ের চেষ্টা করছিলো। এখন তাহলে হয়তো হার্টজ অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যবসা করছে।

আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

লেখাটা ঠিকমতো হয় নাই। মন খারাপ

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ দাদা, তবে একটু ধরিয়ে দিলে ত্রুটিগুলো আগামী লেখাগুলোতে সংশোধনের চেষ্টা করতাম।

নাশতারান এর ছবি

লেখাটা কোনো পোস্টের ভূমিকা হতে পারত। শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে গেলো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে বুনোহাঁস। সাজেশন খেয়াল রাখবো।

রাতঃস্মরণীয়

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কি মেসেজ দিতে চাইলেন ঠিক বুঝলাম না, কারণ তুলনাটা জুতসই হয় নাই। আর দেশটাতো আমাদের সবারই। বয়সের রেন্জ দিলেন কিশোর, তারপর হাজারি, গুপ্তদার পাহাড়তলী নিয়ে টানাটানি শুরু করলেন। ১০ বছর বয়সে একজন কিশোর চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে, আপনার কি মনে হয় তাদের জন্যে আপনার এই লেখা উপযুক্ত। জানি যে ক্যাটেগরী দেখে কেউ লেখা পড়েন না, কিন্তু আপনে কি নিজের সন্তানকে পড়তে দিতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন? বাস্তবে কি ঘটে আর কি করা উচিৎ তা কখনই এক হয় না, কিন্তু ব্যাপারটা অভ্যাস করা উচিৎ ঠিক ভাবেই, ঠিক না? একই সাথে 'পাজেরো' 'আমার' এরকম কি পয়েন্ট কেন দিলেন ঠিক বুঝলাম না, যদি না পাজেরো নিয়ে সিরিজ করার ইচ্ছা থাকে। কি পয়েন্ট নিয়ে অনেকেই এমন করেন, আমার মতে আমাদের আরেকটু সতর্ক হওয়া দরকার। তাতে একই ধরণের লেখা খুজে বের করতে সুবিধা হয়

লেখার গল্পটা বেশ মজার, কিন্তু এত ছোট যে মজা পাওয়া শুরু করতেই তা শেষ হয়ে গেছে। তবে, আরেকটু গুছিয়ে লিখুন, আমরাও পড়ে মজা পাই। ভবিষ্যতে আরো মজার মজার লেখা পাবার প্রত্যাশা নিয়ে বিদায় হই আজকে

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে ভাই, বেশ কিছু দূর্বলতা রয়ে গেছে। বয়সশ্রেণী ১০ দিয়েছিলাম কারণ হাজারীর প্রসঙ্গ তখন লেখার ইচ্ছে ছিলোনা। ওটা ঘটনাচক্রে লিখে ফেলেছি। আর এডিটও তো করতে পারিনা সচল না বলে।

রাতঃস্মরণীয়

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

হাওয়াই মিঠাই মুখে দিলাম আর ফুড়ুৎ কইরা হাওয়া হয়া গেলো ... ...

===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

দ্রোহী এর ছবি

প্রথম কয়েকটা লাইনের সাথে পুরো লেখার সংযোগটুকু ধরতে পারলাম না। মন খারাপ

সেলিমের উদ্ধৃতি দিয়ে তার বন্ধুর যে ঘটনা বর্ণনা করেছেন এ ধরনের বহু কৌতুক শুনে আসছি সেই ছোটবেলা থেকেই। এমনকী আব্রাহাম লিঙ্কনকে নিয়েই এ ধরনের কৌতুক প্রচলিত।

এ ধরনের ঘটনাগুলো সবসময়ই কেন জানি বক্তার বন্ধুবান্ধব বা পরিচিত লোকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়। একইভাবে ভূতের গল্পগুলোতে বক্তার নিজের পরিচিত কাউকে নাম ভূমিকায় বসিয়ে দিলে গল্পের আমেজ বৃদ্ধি পায়।


কাকস্য পরিবেদনা

অতিথি লেখক এর ছবি

যেহেতু সেলিমের কাছ থেকে যখন গল্পটা শুনি তখন তা রেকর্ড করে রাখা হয়নি যে আপলোড করে দেবো। আর এটা একান্তই পাঠকের ব্যাপার বিশ্বাস করা না করা, লেখকের এখানে কিছুই করার নেই। ব্যাক্তিগতভাবে আমি যা শুনি বা পড়ি তা বিশ্বাস করতে চেষ্টা করি যদি যুক্তিসংগত হয়।

আপনার কমেন্টের জন্যে ধন্যবাদ দ্রোহী ভাই।

রাতঃস্মরণীয়

যাচিত বিবেক [অতিথি] এর ছবি

পাবনার গল্পটা বেশ মজার, তবে শুরুর ভুমিকা তেমন মিলছে না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।