কট ইন ইল্যুশন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৫/১২/২০১০ - ৬:০২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ড. ইউনুস ধরা খেলেন। একেবারে কড়া ধরা যাকে বলে। খোদ নরওয়ের সরকারি চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এবং যেনতেন সাংবাদিকের হাত দিয়ে তৈরি হয়নি এটি। যিনি তৈরি করেছেন তিনি পুরস্কার পাওয়া লোক। যাইহোক এটা গুরুত্বপুর্ণ না। গুরুত্বপুর্ণ হল আমরা বাঙ্গালিরা এতো দিন ধরে যা ফিসফিস করে বলাবলি করছিলাম তাই আজ সত্য হিসেবে প্রমাণিত হল। তখন আমাদের কথা কেউ শুনে নাই। কিন্তু এখন বিশ্বাস করতেই হবে।

এখন তাই আমাদের আনন্দের দিন। ড. ইউনুস নোবেল পুরস্কারে মানুষ যত খুশি হয়েছিল কিছু মানুষ তার থেকেও বেশি খুশি এখন। এজন্য ড. ইউনুসকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ দেয়া উচিত। আর আজকের এই লেখা কেন আমরা এত খুশি তা নিয়ে।

ড. ইউনুস তার ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা শুরু করেছেন তিন দশকেরও বেশি আগে মাত্র ২৭ ডলার পুজি নিয়ে। আজ সে ব্যবসা এক বিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে। এই কাহিনি সবাই জানেন। এটা নিয়ে আমিও প্যাচালে যাব না। আমি শুধু একটি ব্যাপারই উল্লেখ করতে চাই যা আমরা সবসময়ই ভুলে যাই তা হল ব্যবসায়ি ড. ইউনুসকে আমরা ক'জন চিনি। আমার মনে হয় খুব কম মানুষই। হ্যাঁ ড. ইউনুস একজন ব্যবসায়িও। তবে একটু পার্থক্য আছে। কী সেটা?

তার উদ্ভাবনি ক্ষমতা। তিনি সম্পুর্ণ নুতন ধারণা নিয়ে বাজারে এসেছেন এবং তার সফল প্রয়োগ করেছেন। গরিব মানুষকে যে ঋণ দেয়া যায় এটাই কারো মাথায় আসেনি। অথচ তিনি এখন সফলতার সাথে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে এই ধারনা দিয়ে কোটি টাকার ব্যবসা করা যায়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে গুগলের লেরি পেইজ-সার্গেই ব্রিন বা ফেইসবুকের মার্ক জাকারবার্গের মত ব্যাক্তদের যারা তাদের উদ্ভাবনি ও সম্পুর্ণ নুতন ধারণাকে পুজি করেই আজ বিশ্বে বিলিওনিয়ার। ইউনুস সাহেবও তার ব্যতিক্রম নন। তাই তিনি তাদের মত বিলিওনিয়ার হতে না পারলেও কম সেলিব্রেটি নন। শান্তিতে নোবেল পাওয়া ব্যাক্তি!

তারপরো আমরা তার উপর অসন্তুষ্ট। কেন? আরো ব্যাখ্যা লাগবে মনে হচ্ছে। ড. ইউনুস একজন ব্যাঙ্কার। একটু সভ্য হয়ে গেল মনে হয়। আরো স্পস্ট ভাবে বললে ক্রেডিটর। এখন আরো ভদ্রস্থ মনে হচ্ছে। আচ্ছা শেখ হাসিনা তাকে ক্ষমতা নিয়ে রশি টানাটানি খেলার সময়ে (খুব সম্ভবত এক এগারোর দিকে) কি বলেছেন সেটা বলি। বলেছিলেন তিনি একজন সুদখোর। এখন গালি মনে হচ্ছে তাই না। মানুষ খুব খুশি হয়েছিল তখন। আচ্ছা ক্রেডিটর অর্থ কি? যে ঋণ দেয়। বিনিময়ে কি পায়? ড. ইউনুসের ব্যবসাই হচ্ছে মানুষকে ঋণ দেয়া। যেমন ব্যাঙ্ক গুলো যখন ঋণ দেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে। পার্থক্য হল ড. ইউনুস এর প্রতিষ্ঠান গ্রামীন ব্যাঙ্ক ঋণ দেয় গরিব মানুষকে। যদি ব্যাঙ্ক এই ব্যবসা করতে পারে ইউনুস সাহেবের দোষ কোথায়? মানুষ ব্যবসা করেই মুনাফার জন্য। যদি কোনো ব্যবসাতে মুনাফা না আসে তাহলে কোনো বেক্কলও ওই কাজ করবে না। যদি জাকারবার্গ ফেসবুকের মত সোশ্যাল নেটওয়ার্ক থেকে কোনো মুনাফা না পেতেনে তিনি কি হার্ভাড ছেড়ে দিতেন? ইউনুস সাহেবের ক্ষেত্রেও আমরা একই হিসাব করি না কেন? ব্যবসায়ে মুলধন বাদে অতিরিক্ত যে টাকা উঠে আসে তাই মুনাফা। ঋণ ব্যবসায় মুনাফা হল ঋণের বিপরিতে পাওয়া সুদ। ধরা যাক, ক খ'কে গ পরিমান টাকা ঋণ দিয়েছে। এখন খ যদি খুব দ্রুতই সে ঋণ শোধ করে তাহলে তাকে অতিরিক্ত কিছু দিতে হবে না। এখানে দেখার বিষয় হল এতে ক'এর কোনো লাভ হচ্ছে না। যদি খ' দ্রুত সময়ের মধ্যে ঋণ নেয়া টাকা ফেরত দিতে না পারে তাহলে কিস্তিতে শোধ করার সুযোগ থাকে। সেক্ষেত্রে কিস্তিতে সুদ আরোপিত হবে। এবং তখনই একমাত্র ক'এর লাভ হবে। তাই এই ব্যবসার সিস্টেমই এমন, ঋণগ্রহিতাদের একটা বড় অংশ সুদসহ ঋণ শোধ করবে। এটা না করতে পারলে বিনিয়োগকারি মুনাফা করতে পারবে না। এটা নৈতিক কি অনৈতিক তা ভিন্ন জিনিস। দুনিয়াতে হাজার ধরণের ব্যবসা আছে এবং এটাও এক ধরণের ব্যবসা। এবং এটা বৈধ ব্যবসা। (ধর্মের হিসেব বাদ দিলে)। তাই সুদখোর অর্থনৈতিক বা ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে মোটেও খারাপ কিছু না। কারণ এটাই তার মুনাফা।

প্রশ্ন উঠেছে তার সুদসহ ঋণের কিস্তি আদায়ের পদ্ধতিতে। কেউ যদি সময়মত ঋণের কিস্তি ফেরত দিতে না পারে বা ডিফল্টার হয়ে যায় তার ক্ষেত্রে আদায়ের পদ্ধতি সব সিস্টেমেই কঠোর। বড় ঋণ গ্রহিতারা সমাজ ব্যবস্থার দুর্বলতায় পার পেয়ে যায়। তাই এই কঠোর প্রয়োগ শুধু গরিব মানুষদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। গ্রামীন ব্যাঙ্কের সব ঋণ গ্রহিতা যেহেতু গরিব, তাই আমরাও তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োগিত কঠোরতা দেখি। সুতরাং এতে ড. ইউনুসের দায় নেই। তিনি শুধু সিস্টেমই ফলো করছেন। তারপরো এতো হাউ কাউ কেন? কারণ আগেই বলেছি নরওয়ের রাষ্ট্রিয় চ্যানেলে প্রচারিত কট ইন দ্য মাইক্রো-ডেট ডকুমেন্টারিতে তার বিরুদ্ধে গ্রামীন ব্যাঙ্কে দেয়া অনুদানের টাকা অন্য সংস্থায় সরানোর অভিযোগ।

আমি এইসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ না। তাই বিস্তারিত আলোচনায় যাব না। শুধু এই চিঠি পড়ে এতটুকুই মনে হয়েছে তার গ্রামীন ব্যাঙ্কে দেয়া অনুদানের টাকা গ্রামীন কল্যাণ নামে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে, সেই টাকা আবার গ্রামীন ব্যাঙ্কে ঋণ হিসেবে নেয়া একটি সাধারণ ব্যবসায়িক কৌশল। এর ফলে গ্রামীন ব্যাঙ্কের পরিচালনা পর্ষদের কাজে দায়বদ্ধতা আসবে কারণ তারা এই টাকা ঋণ হিসেবে নিয়েছে। একই সাথে এই টাকাটা গ্রামীণ কল্যাণের কাছে না থাকায় তাদের পরিচালনা পরিষদ এর অপব্যবহার করতে পারবেনা। একই সাথে অনুদানের টাকা গ্রামীন ব্যাংকের কাছে ঋণ হিসেবে থাকায় এর জন্য শুল্ক দেয়াও লাগবে না। এই কৌশল অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানই করে থাকে।

কিন্তু আমাদের খুশির কারণ কি? কারণ আমরা তার এই পতনই দেখতে চেয়েছিলাম। আমরা তাকে নিয়ে এখন আরো বেশি করে গীবত গাইতে পারব। যদিও আমরা একটু আধটু জানতাম কিন্তু এখন খবরটি পশ্চিমাদের সার্টিফায়েড হওয়াতে আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে সেই খবর বিশ্বাস করব। এতে অবশ্য বহির্বিশ্বে আমাদের জাতিগত ইমেজে আরো একটু কলঙ্ক স্থাপিত হয়েছে তবে সেটা পরের ব্যাপার। আমরা এখন আপাতত আনন্দ উৎসব করব।

এই ঘটনায় ড. ইউনুসের অবদান কতটুকু? ড. ইউনুস সবসময়ই বলেন তার ব্যবসার ফলে গ্রামীন মানুষ দারিদ্র মুক্ত হবে এবং এর জন্য তিনি তার ব্যবসার ফলে যারা ইতিমধ্যে সাবলম্বি হয়েছেন তাদের উদাহরণ তুলে ধরেন। এই কথা কাদের জন্য বলা? এই কথা বলা গ্রামীন মানুষদের প্রতি যারা এগুলো দেখে আকৃষ্ট হয়ে তার কাছ থেকে আরো ঋণ নিবে। সুতরাং এটা এক ধরণের বিজ্ঞাপণ যা দেখে ভোক্তা আকৃষ্ট হয়। বিজ্ঞাপণে চটকদার অনেক কথাই বলা হয় কিন্তু সব কথা কি বিশ্বাসযোগ্য? তাই একজন ভোক্তা যখন কোনো পণ্য কিনে, ধরে নেয়া হয়, সে এটা বুঝেই কিনে যে সে একই সাথে পণ্যের সুবিধা আর অসুবিধা গুলো কিনছে। অর্থাৎ পুজিবাদি ব্যবস্থায় ভোক্তার বিজ্ঞাপনে প্রচারিত পণ্য ক্রয় মানে সে পণ্যের দুর্বলতাটুকু স্বীকার করে নিচ্ছে। সুতরাং যারা ঋণ নিচ্ছে, ধরে নেয়া হচ্ছে, তারা জানে তাদেরকে এই সময়ের মধ্যে তা পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় কঠোর পদ্ধতিতে তা আদায় করা হবে। অনেক ঋণ গ্রহিতাই নির্দিষ্ট সময়ে কিস্তি শোধ করতে পারছেন। আবার অনেকেই ব্যর্থ হয়েছেন। এটাই বাস্তবতা।

গ্রামীন ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে বিদেশে ড. ইউনুসের খুব ভাল এবং শক্তিশালী ভাবমুর্তি তৈরি হয়েছে।এবং আমাদের মিডিয়াও ব্যাপারটিকে সেভাবে তুলে ধরেছে। এই কয়েক দিন আগে প্রথম আলো তার প্রথম পৃষ্ঠার প্রায় পুরোটাই ড. ইউনুসের সাক্ষাৎকার সহ তার সামাজিক ব্যবসার বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রতিবেদন ছেপেছে। এগুলো আমাদের মানসিকতায় প্রভাব ফেলে। আমাদের খেয়াল থাকেনা এখানে একটি বিজ্ঞাপন আছে এবং মিডিয়া এক ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিল গেইটস আজকে পৃথিবির সবচেয়ে বড় ফিল্যানথ্রপিস্ট হিসেবে খুবই সমাদর পাচ্ছে। অথচ প্রচুর মুনাফা না করতে পারলে এটা সম্ভব ছিল? আর এখন এই দান থেকে তার কোম্পানি কি কোনো সুবিধা পাচ্ছে? তার এই অফুরান দানের ফলে অনেক মানুষের ভিতরে মাইক্রোসফট নিয়ে একটা সফটনেস কাজ করে। ফলে তারা মাইক্রোসফট এর পণ্য আরো বেশি করে কিনে। তাই বলে আমি বলছিনা ব্যবসা খারাপ বা ব্যবসায়ির দান করা খারাপ। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় ব্যবসা ছাড়া সমাজের উন্নয়ন সম্ভব না। আর ব্যবসায়ি তার মুনাফার একটা অংশ দারিদ্র দুরিকরণে ব্যয় করলে দারিদ্রও দূর হয় এবং একই সাথে ওই ব্যবসায়ি তার নুতন ভোক্তাও পায়।

ব্যবসায়ে ভাল খারাপ সব ধরণের মানুষই আসবে। কিন্তু সবার মুল উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন। এরপরে বাই প্রোডাক্ট হিসেবে কোথাও সমাজের কল্যাণ হবে কোথাও নৈরাজ্য হবে। অনেকে তাই বলেন ব্যবসার নীতিনির্ধারণী সরকার থেকেই নিয়ন্ত্রণ হওয়া উচিত। আমি বাস্তববাদি। আমাদের উচিত, যেটা নেই বা এখন সম্ভব না তা নিয়ে দিবাস্বপ্নে সময় নষ্ট না করে যা আছে তা থেকে সর্বোচ্চ ভাল কিভাবে বের করে আনা যায়। তাই বর্তমান পুজিবাদি বিশ্বে ভোক্তা হিসেবে আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হয় পণ্য হিসেবে যা আমাদেরকে গছিয়ে দেয়া হচ্ছে তা সঠিক এবং মানস্মমত কিনা।

আমি যা বলতে চাচ্ছি তা হল ড. ইউনুস অন্য সবার মত দোষগুণে ভরা একজন ব্যবসায়ি। তার প্রতিটি কৌশল, বক্তব্য, কর্মকান্ড তার ব্যবসার প্রসারের দিক মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে। নক্ষত্রের পতন ভেবে আজকে তাকে কেউ কেউ চড়া সুদে কড়া কথা শুনিয়ে দিচ্ছে, অথচ এটা তার অনেক আগে থেকেই স্বল্প সুদে অন্যান্য ব্যবসায়ির মত নিয়মিত কিস্তিতে পাওয়ার কথা।

আসলে ড. ইউনুসের আমি দোষ দিব না। দোষ আমাদের মানসিকতায়। আমরাই তাকে নক্ষত্র বানিয়েছি। দেশি বিদেশি মিডিয়ার কল্যাণে তার মানবতাবাদি চেহারার আড়ালে তার ব্যবসা করার কথা আমাদের মনে থাকেনি। আমরা ইচ্ছে করে ভুলে থেকেছি তার গরিব মানুষদের জন্য চড়া সুদের হিসাব। অল্প-বিস্তর শুনলেও দ্রুতই ভুলে গিয়েছি এইসব মানুষের কষ্ট করে সেই ঋণ শোধের প্রানান্ত চেষ্টা। এক অদ্ভুত মিথ্যা ইল্যুশন তৈরি করে রেখেছি আমাদের ভিতরে। আমরা কখনোই খেয়াল করার চেষ্টা করিনি এই পুজিবাদি বিশ্বের একজন ব্যবসায়ির সব বৈশিষ্টই তিনি ধারণ করছেন। দরিদ্র মানুষকে ঋণ দেয়া তার ব্যবসা। দেশ থেকে দরিদ্র পুরোপুরি দূর হলে কি ব্যবসা আর চলবে? কিছু মানুষ দারিদ্র মুক্ত হচ্ছে বাই প্রোডাক্ট হিসেবে। আমরা এই সত্যকে মানতে চাইনি অথবা সন্তুষ্ট থাকিনি।

কেউ কেউ এখন বলছেন ড. ইউনুস আমাদের দেশের ব্যবসায়ি। অর্থাৎ জাতীয়তাবাদের পোশাক পরছেন তিনি। তারা আরো বলছেন এখনো এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি যে তিনি মোটা অঙ্ক অন্য দেশের কোথাও রেখেছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হল তার গ্রাম ভিত্তিক ব্যবসার কারণে আমাদের দেশের একটা ভাল ভাবমুর্তি তৈরি হচ্ছে। উল্লেখ্য ভাবমুর্তি জিনিসটা নিজেই এক ধরণের ইল্যুশন। সুতরাং তার বিরুদ্ধে যা হচ্ছে তা হল বিদেশিদের অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্র। তারা বলতে চাচ্ছে যে, এখানে যা হচ্ছে তা একটি ব্যবসায়িক কৌশল। আমরা সবাই কমবেশি নরওয়ের টেলিনর কোম্পানির সাথে ড. ইউনুসের মধ্যকার সমস্যা জানি। এটা হয়ত তারই কোনো প্রভাব। এই প্রচার তাকে ব্যবসায়িক বার্গেনে কিছুটা দুর্বল করবে।

হতে পারে। তবে যাই হোক এবং যেটাই হোক, কেউ কেউ আজ ইউফোরিয়াতে আক্রান্ত, কেউ কেউ অন্ধভাবে ক্রুদ্ধ। অথচ খেয়াল করেছি কি যে আমরাই আছি এক মিথ্যা মায়াজালের ফাঁদে?

----------------------------
অনন্ত
অনন্ত অ্যাট ইউয়াহু ডট কম


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষন।

পাগল মন

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ পাগল মন।

আজব পোলা [অতিথি] এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন। আমার মতে যে কোন ব্যবসায় নৈরাজ্য হতে পারে যদি সেটা রেগুলেট না করা হয়। আমাদের মিডিয়া এবং সরকার প্রথম থেকেই ইউনূস সাহেবের এই অভিনব ব্যবসায় নিরপেক্ষ আলোচনা-সমালোচনার চর্চা বজায় রাখলে, আজ হয়তো এই ব্যবসা সবার জন্যই ভাল হত। কিন্তু আমরা আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারিনি। আমরা ভালো মত বিচার না করেই ইউনূসকে মাথায় তুলেছি, আর এখন বিদেশী মিডিয়া বলামাত্র আমাদের সবার চোখ খুলেছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। আমাদের উচিত আসলে নিরপেক্ষ ভাবে সবকিছু বিশ্লেষণ করা।

অতিথি লেখক এর ছবি

নক্ষত্রের পতন ভেবে আজকে তাকে কেউ কেউ চড়া সুদে কড়া কথা শুনিয়ে দিচ্ছে, অথচ এটা তার অনেক আগে থেকেই স্বল্প সুদে অন্যান্য ব্যবসায়ির মত নিয়মিত কিস্তিতে পাওয়ার কথা। চলুক

রনি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ রনি।

অতিথি লেখক এর ছবি

সংশোধনঃ

কিছু লিঙ্ক যোগ করতে ভুলে গেছি। এগুলো নিচে দেয়া হলঃ

১/ ডকুমেন্টারিঃ কট ইন দ্য মাইক্রো-ডেট;
২/ চিঠিঃ নোরাড প্রশ্ন ও ড. ইউনুসের উত্তর

এই অনিচ্ছাকৃক্ত ভুলের জন্য দুঃখিত।

অনন্ত

শামীম এর ছবি

ভাল .... তবে কেন জানি 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি' - এমন মনে হল।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ শামীম ভাই। আসলে আমার বক্তব্য হল আমাদের সবসময় এই বিষয়গুলোতে নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ করা উচিত ছিল যা আমরা করতে পারিনি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ইকোনমিক্সের ব্যাপার স্যাপার ভালো বুঝি না। এই যেমন ঋন সরায়ে নেয়ার ব্যাপারটা এখনো আমার কাছে ক্লিয়ার না। আমার বিদ্যাবুদ্ধির দৈন্যতা।

একই সাথে অনুদানের টাকা গ্রামীন ব্যাংকের কাছে ঋণ হিসেবে থাকায় এর জন্য শুল্ক দেয়াও লাগবে না।
---এটা কি এক ধরণের ধাপ্পাবাজি না?

---আশফাক আহমেদ

অতিথি লেখক এর ছবি

অর্থনীতির বিষয়ে আমার দৌড় আরো খারাপ। এজন্য বিস্তারিত ব্যাখ্যা করিনি। গ্রামীন ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্য ছিল শুল্ক ফাকি দেয়া। এবং তারা সফল হয়েছিল। এই শুল্ক ফাকি দেয়া বা কম দেয়ার অনুশীলন কম বেশি সব ইন্সটিউটই করার চেষ্টা করে। অনেক সময়ে এটা অবৈধ ভাবে করা হয়। তবে শুল্ক ফাঁকি দেয়াকে আমি কোনো ভাবেই সমর্থন করিনা। মজার ব্যাপার হচ্ছে গ্রামীন ব্যাঙ্ক আজ এত বড় কর্পোরেশন হওয়ার পরেও সরকারের কাছ থেকে শুল্ক ছাড় পেয়ে আসছে।

সাবিহ ওমর এর ছবি

আমাদের দেশে ব্যবসা বা টাকাপয়সা সংক্রান্ত ব্যাপারস্যাপারকে কিছুটা খারাপ চোখে দেখা হয়। ছোটবেলা থেকেই 'অর্থ অনর্থের মূল' টাইপের জিনিস পড়েটড়ে মাথা বায়াসড হয়ে থাকে। আমার মনে হয়, এটার পরিবর্তন দরকার।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সাবিহ ওমর। আমিও মনে করি আমরা কেন জানি ব্যবসাকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখি। এটার আসলেই পরিবর্তন দরকার।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

প্রফেসর ইউনূসের নামের বানানটা ূ দিয়ে। একটু খিয়াল কইরা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ শুভাশীষদা। এটা খেয়াল করি নাই। ভুল হয়ে গেছে কিন্তু এখন আর সংশোধনের সুযোগ নেই।

mef এর ছবি

এ বিষয়ে পড়া সবচেয়ে চমৎকার বিশ্লেষণ।

"আমাদের সবার চোখ খুলেছে।" বোধহয় না।

ক্ষমতার শীর্ষ মানুষটি কি এ লেখা পড়বেন ?
শুভবুদ্ধি না ভেনেডেটা ?

অথবা উইকিলিকসের কোন আসন্ন শিরোনাম ।
আনবে হঠাৎ নীরবতা .....

সার্কাস দেখুন !!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ mef।

ratulbd [অতিথি] এর ছবি

কাগজে কলমে মালিক যেই হোক, আসল মালিক তো ইউনুস

রণদীপম বসু এর ছবি

কিন্তু এই শুল্ক ফাঁকি দেয়ায় ড ইউনূসের কী লাভ হলো তা তো বুঝতে পারলাম না ! যতটুকু জানি, গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানার ৭৫ বা ৮৫ শতাংশ ওই ভূমিহীনরা, আর বাকিটা সরকারের। ড ইউনূস কেবলই একজন বেতনধারী এমডি। ক্ষুদ্রঋণের নতুন ধারণার স্রষ্টা ও এর ব্যবহারিক রূপদানকারী প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে সরকারই ওই পদে তাঁকে নিয়োজিত রেখেছে। এর বোর্ড চেয়ারম্যানসহ তিনজন সদস্য পরিচালকমণ্ডলিতে সরকারই নিয়োগ করে থাকে। রক্ত বা মাখন তো সব সরকারসহ মালিক পক্ষই খায়, আর রঙটা লাগে ড ইউনূসের গায় !

বড় আজিব দুনিয়া !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ রণদা। আমি এই ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না। আশা করছি শুভাশীষদার দেয়া এই লিঙ্কটাতে উত্তর থাকতে পারে।

ratulbd [অতিথি] এর ছবি

ইউনুস দারদ্র দূর করেননি, করেছেন বাটপারি দেখুন
সাপ্তাহিক ২০০০ : একটি report

সুফিয়ার কবর চাঁদার টাকায়ঃ ইউনূসের হাতে নোবেল -

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের সাফল্য হিসেবে সারাবিশ্বে তুলে ধরা হয় চট্টগ্রামের ‘জোবরা’ গ্রামের সুফিয়াকে। প্রচার করা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে সুফিয়া স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে এই সুফিয়া খাতুন চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মারা যান ১৯৯৮ সালে। গ্রামবাসী চাঁদা তুলে তার দাফনের ব্যবস্থা করে।

report এর শেষে আরো আছে :

এদিকে উন্নয়ন মডেল সুফিয়ার পরিবারে এখন প্রকট দারিদ্র্যের চিহ্ন। মাথা গোঁজার কুঁড়েঘরটি ভেঙে পড়ার অপেক্ষায়। গত বর্ষায় তারা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এখনই যদি ঘর মেরামতের ব্যবস্থা করা না যায় তাহলে এই বর্ষায়ও তাদের ভিজতে হবে। সুফিয়ার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, বাড়ির যেখানে এমনই দশা সেখানে ড. ইউনূস প্রচার করছেন আমাদের নাকি পাকা বাড়ি আছে।

এ প্রসঙ্গে প্রতিবেশী রুকুনুজ্জামান বলেন, অনেকদিন ধরে দেশি-বিদেশি মিডিয়ায় সুফিয়ার বাড়ির পাশের দোতলা বাড়িটি সুফিয়ার বাড়ি বলে দেখানো হচ্ছে। গ্রামবাসীর মতো ওই দোতলা বাড়ির মালিক দুবাই প্রবাসী জেবল হোসেনও এতে চরম ক্ষুব্ধ। গ্রামবাসীদের তিনি জানিয়েছেন বাড়ি নিয়ে প্রতারণার দায়ে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।

ratulbd

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।