বাউল নিপীড়ন, শহুরে বাবু সংস্কৃতি ও তার বিরুদ্ধে লালনের লড়াইয়ের আকাঙ্ক্ষা...

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৪/০৪/২০১১ - ৭:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মূল শিরোনাম:

বাউল নিপীড়ন, শহুরে বাবু সংস্কৃতি ও তার বিরুদ্ধে লালনের লড়াইয়ের আকাঙ্ক্ষা...


রচনাকার: যিশু মহমমদ

০১.

‘না জেনে মজো না পিরীতে
জেনে শুনে করো পিরীত
শেষ ভালো দাঁড়ায় যাতে’

কখনো কি শুনেছেন বাউলেরা নিজের মত/পন্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সাধের লাউ দিয়া বানানো একতারা দিয়ে কারো মাথা ফাটিয়েছে? জোর কোরে কারো ধূতি বা কারো টুপি খুলে নিয়েছে? জোর করে বলেছে কি যে, তুমি বাউল হও? না বলে নি, শোনেনও নি। তার মানে আবার বাউলরা নিখাদ অহিংসবাদী তেমনটা ভাববার দরকার নেই। অহিংসবাদীরা তাদের শত্রু একগালে চড় লাগালে আরেক গাল পেতে দিয়ে শত্রুর মন জয় করতে চায়। প্রকারন্তে শত্রু চিহূ মুছে দিয়ে সমাজে আপোষের দিকনির্দেশনা হাজির করে। রাজনৈতিকতাকেই মিইয়ে দেয়। না বাউলপন্থীরা তেমন পথ অবলম্বন করেন না। তাদের অতিঅবশ্যই হিংসুটেদের বিরোদ্ধে কর্তাসত্তা, করণীয় দিক আছে। সোনার মানুষ, সহজ মানুষদের সঙ্গে নিয়ে তারা অমানুষদের বিরোদ্ধে করণীয় দিক প্রস্তুত করে। এ করণীয় দিক কি কি রকমের, পদ্ধতিগত রণনীতি কেমনতর সে নমুনা জানতে চাইলে তবে উত্তর দীর্ঘ হবে এবং বাস্তব অনুশীলন, চর্চা-চরিত্র দিয়েই তা আপনাকে সমূলে মর্ম উদ্ধার/টের পেতে হবে। দীর্ঘ বাস্তব অনুশীলন দিয়েই সে পথের দিকে একটু একটু করে তারা আগায়। কথা বলে গেরিলা ভাষায়, হিংসুটেদের বিরোদ্ধে গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধের ময়দান তৈরী করে। হুট করেই তারা বলে না- ওহে বৎস অত্যাচরীদের, অমানুষদের, হিংসুটেদের হটাতে হবে। কেননা মানুষের ভেতর নিজেরই অজান্তে নিজবিরোদ্ধ মত(অমানুষীয় চিন্তা, কাঠামো) গেড়ে আছে গভীর ভাবে। সেটায় চিড় ধরাতে হয়। ফাটল ধরলে তবেই মানুষ সত্যিকারের হুঙ্কার দিয়ে মানবীয় সত্বার অস্তিত্ব রক্ষার লড়ায়ে নামে। হয়ত অনেকদিনের নিপীড়িত একটা সমাজে হুট করে বললেই হুট করে যুদ্ধ জারি হয়ে যায়, কেননা মানুষ অমানুষদের হাত থেকে বাঁচতে চায় যতদ্রুত সম্ভব। কিন্তু লালন ফকিরের ইঙ্গিত ভিন্ন দিকের, যদি না মানুষ মানবীয় সত্বার অস্তিত্ব রক্ষার লড়ায়ের চিন্তা-দর্শন, মত ও পথ ঠিক ঠিক জেনে বুঝে না নামে তো বিজয়ের নিশান হাতছুট হবে। অর্থাৎ একটা সংখ্যগরিষ্ট অংশকে সাথে নিতে হবে। এবার বেশ বুঝদারের মতো কেউ কেউ রসিকতার ছলে মাথা-মণ্ডু দুলিয়ে বলতে পারেন- বিপ্লবী রাজনীতির লাল মেনিফেষ্টো লালন বোধহয় পড়েছিল। চমতকার রসিকতাই বটে। হা আমি লালনের চর্চায় সে রকমরেই তুলনামূলক সম্ভবনার আলোকপাত দেখি, মিল খুঁজে পাই। এটা আমার জোরজবরদস্তি করে পক্ষপাত খুঁজে বের করার অছিলা নয়। মানুষের ভেতর একটা চিন্তা, মতাদর্শ, আকাঙ্ক্ষাকে পৌঁছে দেয়া, অনুশীলন করানো এবং তার মধ্য দিয়েই সম্ভাব্য ভিত্তি তৈয়ারের প্রচেষ্টা দেখি আমি সে সবে। ‘এমন মানব সমাজ কবে গো সৃজন হবে/যে দিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান জাতি গোত্র নাহি রবে’। এভাবেই একে একে ইতড় আতরাফের আকাঙ্ক্ষায় জানাচ্ছে যে সে ‘ধর্ম-কুল-গোত্র-জাতি’ ঘুচিয়ে দিতে চায়, ‘আশরাফ বলিয়া রেহাই/ভবে কেহ নাহি পাবে’ এ প্রতিজ্ঞার মধ্যদিয়ে সে ‘অমন’ মানব সমাজ সৃজন হবার আকাঙ্ক্ষা করছে যেখানে মানুষের ভেদ-বৈষম্যহীন ভাবে ‘একঠাঁই’ হবে। এবং ‘কেঁদে বলে লালন ফকির কে মোরে দেখায়ে দেবে’। অসম্ভব একটা সহজীসুরে/ভাবে সহজ মানুষ, সোনার মানুষ ভজে ভজে/ মানুষের তরে সেজদা করেই বৈরী সমাজের ভেতর লালন তা প্রচার করে গেছেন। নিশ্চয় সাধ-আহ্লাদ-শখ করে এসব বলেন নি। একটা সমাজ কামনা করেছেন এবং সে সমাজ তৈয়ারের ধাত্রী/কর্তাসত্বাকে খুঁজে দেখছেন, ক্ষেত্র প্রস্তুতের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। পাঠক, আজঅব্দী লালনের সে কান্না কান পাতলেই টের পাবেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আশরাফ শ্রেণীকে রেহাই দিয়ে যাচ্ছি কেন আমরা? আমাদের জপমালা/তছবীতে ঠিক কোন জায়গায় গুটি সরে আছে যে আমরা এখনো আত্মতত্ত্বের হদিশ পাচ্ছি না? এখনো জাতের চিহূ বয়ে বেড়াই কোন ভুলে? কেন জাতের ফাতা সাধ বাজারে ডুবাইতে দেরী হচ্ছে? নিশ্চয় আমাদের সাধন/ভজন পদ্ধতিতে গলদ আছে, নিশ্চয় আমাদের ধেয়ানে মক্করউল্লার মক্করবাজি ঠেক ধরে আছে। অথচ হুশিয়ারী বাণী- ‘সময় গেলে সাধন হবে না’।

০২.
‘প্রেম জানিনে প্রেমের হাটের বুলবুলা
কথায় করি ব্রহ্ম আলাপ
মনে মনে খাই মনকলা’

বাউল নিয়ে, বিশেষতঃ লালন নিয়ে অনেক কুদরতি আছে আমাদের নাগরিক সমাজে। যেমন অনেকে ফি বছর লালন মাজার জেয়ারতে যায়। হজ্ব করা হাজীর মতো হাবভাব নিয়ে সে গল্পে শাহাবাগীয় আর্ট-কালচারের মাঠে-ময়দানে আসর জমায়। ফটো তুলে আনে, একতারা কিনে আনে। চমৎকার লালন ভক্ত! বিপদটা হলো এরা স্রেফ ধর্মদুষিতে ওস্তাদ কিন্তু ‘মূল কান্ড’ এড়িয়ে যায়(সকলের জন্য গড়েহড়ে কথাটা নয়)। সাধনার জায়গাটাই এড়িয়ে যায়। এদের এই হয়ত মেকি হয়ত খাসা ভক্তরূপটা আত্মসাত করে পণ্যায়িত নগর, হয়ত স্ব-উদ্দেগ্যে হয়ত নিজেরই অজান্তেই পুঁজির ফিকিরিতে শরীর ডুবিয়ে দেয়। অধিপতি/শাসক শ্রেণীর সাথে তাল-তরঙ্গ মিলিয়ে ঝুলিয়ে বর্জোখ সাজে, ভক্ত সাজে। যা আসলে লালনকে বেচাবিক্রি তুল্য, লালন বিরোধী, ভোগের ইন্তেজার। এতে করে- গণমানুষের সংস্কৃতি কব্জা হয়ে যায়। যা লড়াইয়ের ভাষা/অস্ত্র/উপাদন সেটাই পুঁজি ছলেবলে কব্জা করে। ফলে ক্রমেই লড়াইয়ের মাঠে ময়দানে এসব উপাদনের মেজাজা ভিন্ন হয়ে পড়বে যা ব্যবহারে র্দূঘট দেখা দেবে একদিন, শেষ কালে পস্তাতে হবে। পুঁজিকাঠামোর হাতে গড়া পণ্যের বেলায় লালন কোন ছার তা যদি ঈশ্বরও হয় তা কেন স্বয়ীরূপে থাকবে? তাকে দিয়ে ব্যবসা হাসিল হোক। অথচ গানেরকথায়-জীবনচর্চায়-তত্ত্বেকথায় অধিপতি/শাসক শ্রেণীর সাথে স্পষ্টতই নানান দিক থেকে দূরত্ব বজায় আছে এ ধারার। নিন্মবর্গের মানুষের সাথে ‘আত্মতত্বের স্বরূপ’ খোঁজা, শ্রেণীচেতনা-একাত্মতাবোধ এবং সংগ্রাম সব দিক থেকেই ভাবনা-চিন্তা-চর্চা আছে। ঠিক এ ভাবনা-চিন্তা-চর্চাটাকে পুঁজি পৃষ্টপোষকতা দিয়ে আত্মসাত করে ব্যবসা খাটায় এবং প্রাকে প্রকারে তার(পুঁজি) বিরোদ্ধেই যাবে এমন ব্যবহারের ক্ষেত্র নষ্ট করে। সাময়িক দোটানায় ফেলে দেয় ব্যবহারকারীদের। (খেয়াল করলে দেখবো গৌতম ঘোষ নির্মিত ‘মনের মানুষ’এ লালনের চর্চার ধারাকে বিকৃত করে বেহাত করার ফাঁদ সেখানে বিস্তর পাতা আছে। শহুরে সুরে-ঢঙে লালন গান গাইবার চক্করের ভেতর দিয়েও বেহাত করার সে অনেক আছে)। আর দোটানায় ফেলার ক্ষেত্র তৈরীতে নাগরিক সমাজে বেড়ে উঠা ‘মধ্যবিত্ত সংস্কৃতি সেবকরাই’ ঝাঁকেবাঁকে মিশে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে। সংস্কৃতির রাজনৈতিকতা থেকে রাজনীতিটা খসিয়ে দিয়ে যারা সংস্কৃতিকে বিশুদ্ধ দেখতে চায় সেসব পশ্চিমা নন্দনতত্ত্বের ফেরীঅলারা এবং কখনোবা ইউরোপকেন্দ্রিক রাজনৈতিকতার ছাঁচে ঢেলে কৌশলে মাটি এবং তার মানুষকে খুবলে খায় যে নয়া উপনিবেশবাদ/সাম্রাজ্যবাদের পণ্য কায়কারবার সেসব আধুনিক ধারা সংস্কৃতির আয়তনটাকে সংকুচিত করে রাখে এবং তারা মানুষের যাপিত জীবনের অনেক অনুশীলনকেই আদতে নাকোচ করে দেয়, পৃষ্টপোষকতার নামে।(‘বিদেশীনীর সঙ্গে প্রেম করো না/ভাব জেনে প্রেমকরো/যাতে ঘুচবে মনের বেদনা।/দেশের দেশি যদি সে হয়/তারে মনে করলে একবার পাওয়া যায়/বিদেশি ঐ জংলা টিয়ে/কভু তো পোষ মানে না’। একাট্টা পশ্চিাম বিরোধীতাকারীদের বিরোধিতা আছে আমার)। শিরনি খাওয়ার লোভে পুঁজির দরগাতলায় যাদের মন মজেছে, আইল ডিঙ্গায়ে ঘাস খাওয়ার ইচ্ছা যাদের -লালন তাদের সহজে সই হবার হবার পথ বাতলে দিলেও তাদের তো ‘চটকে জগত মেতেছে’। এ ‘ট্যারা চলন বদ লোভা’ শ্রেণীগুলোকে ঠ্যাঙ্গানো ও ধসানো, শহুরে ধাচের বাবু বাঙলী মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সমাজ-(এবং ঠ্যাঙ্গানো তে কখনো নিন্মবিত্তও পড়ে যারা আত্মরূপ চিনতে চায় না) তাদেরকে শ্লেষ, বক্রোক্তি, সমালোচনা ও পর্যালোচানার ভেতর দিয়ে ধসিয়ে দেয়ার তত্ত্বকখা ও ঠেঙ্গানোর মতো কৌতুকের ত্রিকোণমিতি হাজির থাকে চর্চা-চরিত্রে, গানের ভাষায়। চরিত্রে গেরিলা, উপস্থাপনে গেরিলা ভাষাতত্ত্বের ব্যবহার লক্ষণীয়। তো শহুরে বাবুশ্রেণীর ঐতিহাসিক গঠনে/বিশ্লেষণে দেখা যায় এরা যখন লালন ভক্ত সাজে, বাউল গান শোনে সেখানে বিস্তর ফাঁক ও ফাঁকি আছে। এরা যখন সংস্কৃতিক উৎসব করে সেখানেও চালাকী আছে। ‘চালাকী’টা স্থায়ীত্ব পায় বা জায়েজ তখনি হয় যখন এরা নিজনিজ ‘শ্রেণী স্বার্থ’ টিকিয়ে রাখতে সংস্কৃতি চর্চা করে। এরা সংস্কৃতিটাকে উতসব হিসেবে উদযাপন করে মাত্র, জীবনের সাথে যোগ ঘটিয়ে যাপন করে না। বাউলের গান এদের কাছে ‘আঞ্চলিক গান’, ‘লোক গান’ ইত্যাদি সংকেতিক চিহূ দিয়ে আধিপত্যটাই চাপিয়ে দেয়। এদের সংস্কৃতি হলো শ্রেণী সংস্কৃতি, জাত রক্ষার সংস্কৃতি।

‘মন তুই ভেড়ুয়া বাঙাল জ্ঞানছাড়া
সদরের সাজ করছো ভালো
পাছবাড়িতে নাই বেড়া’

[বৈশাখ উপলক্ষে সংযুক্তি: এ শহুরে শ্রেণী গুলোর পহেলা বৈশাখ/নববর্ষ পালন হচ্ছে- ইংরেজ বেশভুষে ‘নিউ ইয়ার’ পালন করার মতোন। সম্রাট আকবর বাংলা বছর চালু করেন সৌর বছর আশ্রয় করে। কিন্তু তিনি যে কাজটা করেছিলেন খাজনা আদায় করবার জন্য, জমির মালিকানা ও দখলদারির ওপর মোঘলাই শাসন কায়েম করবার দরকারে। ধনী, নব্য উঠতি মধ্যবিত্ত তা অনায়সে গ্রহন করে নিয়েছে জাতে উঠার মোহ-মন-মর্জি নিয়ে। মানসিক উপনিবেশ থেকে ধনীকশ্রেণীর চরিত্রের অনুকরণ করার ‘উৎসব’ এসব। বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সঙ্গে সুবিধা আদায়ের মতলব ভিন্ন অন্যকোন সংস্কৃতিক সম্পর্ক এরা রাখে না, কিন্তু আপামর বাঙালির সংস্কৃতি ও ইতিহাসের বয়ান রচনার জন্য নিজেদের যোগ্য মনে করে। মতলবটা হচ্ছে নিজ শ্রেণীর আধিপত্য বজায় রাখবার জন্যই সেটা দরকার। উৎসবের দিন বড়লোকের চকচকে কার্পেটের উপর ধূলোমলিন হাত-পা নিয়ে বাউল গান গাইবার সুযোগ করে দিয়ে শ্রেণীগুলো আসলে বোঝাতে চায় দেখ, প্রভু তার চাকরের প্রতি কতটা সহনশীল। বাংলালিংক বা গ্রামীন ফোনের দান-খয়রাতে বাউল উৎসব হবে, বার-মাইষ্যা গান হবে। এরকমের অন্যান্য উপাদান নিয়ে এদের বর্ষবরণ, খাজনা আদায়ের/মুনাফা আদায়ের সুখে বর্ষবরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর উল্টো দিকে বঙের আপামর কৃষককূল, গরীব সাধারণ জনগোষ্টিরা বৈশাখের আগের দিন চৈত্রসংক্রান্তি পালন করে থাকে। চৈত্র মাসের সংক্রান্তির ভাবই আলাদা। সূর্যের শেষ দাবদাহ জ্বালিয়ে দিচ্ছে সব। কিন্তু বিদায় নিচ্ছে চৈত্র। আসছে বৈশাখ আর ওর সঙ্গে হাত ধরে মেঘ আর জল। জমিতে জো আসবে এখন, কৃষক নতুন আমন ধান লাগাবার জন্য তৈরি হবে। তাহলে জাতে-মাতাল তালে ঠিক বড়লোকের/জমিদারের বৈশাখ(খাজনা আদায়ের আনন্দ) আর গরিব কৃষকের বৈশাখের(মেঘজলে মাটির উর্বরতায় নতুন আবাদের স্বপ্ন) পার্থক্য আছে। অতঅত আমাদেরও ভেদ-বিচার করে নির্দিষ্ট হতে হবে আমরা কি পালন করছি, তা কার লাভের খাতে প্রবাহিত হচ্ছে। চৈত্রসংক্রান্তি পালনের দিক থেকে আরো আরো তাৎপর্যপূর্ণ- ধানের বীজ, প্রাণ-প্রকৃতির হালহাকিকত খোঁজ করা, রক্ষাণাবেক্ষণের নিমিত্তে পরিকল্পনা করা, আগামী বর্ষ যেন ফসলের উৎপাদন ভালো হয় সে জন্য কৃষক বউয়ের ব্রত পালন করা ইত্যাদি ইত্যাদি। এর ভেতর দিয়ে কৃষক মানসিক ভাবে/মর্মবস্তুতে এই প্রতিজ্ঞাই জারি রাখে যে- মানুষ আর প্রকৃতির সম্পর্ক একবিন্দু/এককে বাঁধা। তা লঙ্ঘন মানে মানুষ নিজেই নিজের বিরোদ্ধে যাওয়া। হাতের কুড়াল পায়ে মারা। প্রকৃতির রক্ষণাবেক্ষণ থেকে দূরে সরার মানে নিজ প্রাণ বদ করা। চৈত্রসংক্রান্তি এ প্রাণ হরণ থেকে দূরে থাকার এবং প্রাণ বৈচিত্র আবাদ ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রতিজ্ঞা/সংস্কৃতি জারি রাখে। আজকের দিনে পরিবেশ ধ্বংশ সৃষ্টিকারী পুঁজিবাদের একচেটিয়া সাম্রাজ্যবাদী সভ্যতার মাত্রাতিরিক্ত কার্বণ নিঃসরণের ফলে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের বিরোদ্ধে আমাদের প্রাণপণে বেঁচে থাকতে হলে চৈত্রসংক্রান্তির মতো সংস্কৃতিক উপাদানকে শহুরে মেকি সংস্কৃতিক উদযাপনের পাল্টা হিসেবে জনগণের সামনে আবার তুলে ধরতে হবে। এটা কর্তব্য। জমিদারী মনের আরাম-ব্যারাম নিয়ে বাবু কালচারের রূপ ধরে এখন দিকে দিকে ঢুকে পড়ছে কর্পোরেট দুনিয়া। জায়গাটা সংস্কৃতির নয়, কেবলি মুনাফার এবং সম্পদ বাড়াবার লোভের। এই লোভের ফাঁদে পড়ে আমাদের জনমানুষের/সহজ মানুষের সংস্কৃতি আড়ালে যাচ্ছে।]

০৩.
‘লালন কয়
ছটাকে মোল্লার দড়বড়ি মিছে’

বিপ্লবের জন্য কোন তাবিজ নাই। আত্মার স্বরূপ ও কর্তা গুণ জানবার শর্টকার্ট কোন রাস্তা নাই যে সামিজক সত্ত্বা(আত্মরূপ) হিসেবে সমাজে কর্মীরূপ/কর্তাসত্ত্বা নির্ণয় করে সচেতন ভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক কাণ্ডে অংশগ্রহন করার জন্য কোন তাবিজ গালায় বা হাতে বাঁধলেই তা অর্জন করা সহজ হয়ে যাবে। লালন ঝাড়ফুঁক দেয়া পীর-মুরিদের মতো তাবিজ বেঁচা ব্যাপরি নয়। আত্মা ও কর্তাকে অর্জন করার জন্য সক্রিয় অংশগ্রহনের ভেতর দিয়েই উত্তরণ ও পতন অন্বেষণ করতে হবে, এ পদ্ধতি ভিন্ন তাবিজে কাজ হবে না। আর এ প্রতিরোধের পথ বিস্তৃত করবার, জারি রাখবার পথের পথিক হতে গেল কর্তাকে আগেই জানতে ও বুঝতে হবে পথের মোড়ে মোড়ে তার জন্য ঘটিবাটি ভর্তি অমৃততুল্য গরল অপেক্ষা করছে। সে গরল কণ্ঠে নিয়ে নীলকন্ঠ রূপী ‘শিব’ হয়ে উঠতে হবে। লালন জানতেন, আর তাই তার গানে-তত্ত্বে ব্যাক্তি দুঃখের কেচ্ছ কাহিনী নাই। ‘আমি’র আহা-উহু-কুহু কোন বিলাপ নাই(গানে গানে যে ‘আমি’ বর্ণিত হয় তা ‘ব্যাক্তি’ নয়। যে আত্মরূপের দিকনির্দেশনা থাকে তা বুর্জোয়া ব্যাক্তিবাদী/ব্যাক্তিকেদ্রিক কোন ধারণা নয়)। প্রতিরোধের এ রাস্তায় হোঁচট খাওয়া, গর্তে পড়ে যাওয়া, সাপে ছোবল মারার মতো কারন-করণ, অমানুষীয় কর্তীকলাপের আর্বিভাব ঘটবে মানুষরূপী অ-মানুষের হাত ধরে। কিন্তু নিরন্তর সহজ মানুষ/সাধক মানুষ/সোনার মানুষ/মানুষ রতন অন্বেষণ ও হয়ে উঠার ভেতর দিয়ে মানুষ গুরু/মানুষ নিরঞ্জন/মানুষ তত্ত্বের নাগাল পাওয়া যাবে। যতদ্দূর জানা যায়- ফকিরি তত্ত্ব বিরোধী, জীবনযাপন বিরোধী, বাউল ধারা বিরোধী ব্যঙ্গবিদ্রুপ, লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, শাররিক পীড়নের ইতিহাস কম নয়। লালনের শুরুটাই তো জাতহিন্দু, শাস্ত্রবাদী হিন্দুদের জাতের ছাতামাতা অস্বীকারের মধ্যদিয়ে এগিয়ে গেছে। বিকাশ কালে আরেক মুছলমান শাস্ত্রবাদী, শরিয়তী প্রচল ধর্মকে সমালোচনা-পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে অস্বীকারের পালা তৈয়ার হয়েছে। এ দুই ধর্মের বিশ্বাস(?) রক্ষাকারীরা যারা তখনকার সমাজের কর্তৃত্বকারী, নেতৃত্বদাতা, অধিপতি শ্রেণী, শাসকশ্রেণীর গ্রামীন পরিবেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অংশ- ধর্ম রক্ষার সাথে প্রকৃত অর্থে যাদের আধিপত্য কায়েমের সড়ক প্রস্তত ও নির্ঝঞ্জাট হবার/রাখবার স্বার্থ আছে তাদের বিরোদ্ধে শ্রেণীগত একত্বতা বোধ নিয়েই সুনির্দিষ্ট মত-পথ নিয়েই এগুতে হয়েছে লালনকে। নতুন সমাজ/পৃথিবীর আকাঙ্ক্ষা ও লড়াই জারি রাখতে হয়েছে। আর ঐ লড়াইয়ের পদ্ধতি আগেই বলেছি- গেরিলা ভাষাতাত্ত্বিক আদলের। কখনো মৃদু, কখনো শ্লেষ-ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ মিশ্রিত, কখনো সমালাচনা-পর্যালোচনার ব্যাকারণে, কখনো উচ্চকিত। গ্রাম্য শাসক মাতব্বর শ্রেণী, গোঁড়া হিন্দু-মুসলমান(উদার বলে কিছু নেই), আলেম-মোল্লা-মৌলবি যারা মনে করতো বাউল-ফকির, ন্যাড়ার-ফকির, দরবেশরা তাদের ধর্মভাবের ও নামাজ-পূঁজায়, ধর্মীয় কাজেকারবারে হিন্দু-মুছলমানের ধর্মাচার, ধর্মবিশ্বাস নষ্ট করছে। অনৈছলামিক ও কুফুরি মত প্রচার করছে। বাউল বিরোধী, লালন বিরোধী এ প্রচার এ প্রপাগাণ্ডার মুদ্রিত নিদর্শন- উচিত কথা(জানু ১৮৯০), ভণ্ড ফকির(জুলাই ১৯১৪/১৩২১), বাউল ধ্বংশ ফতোয়া ১ম খণ্ড(১৩৩২), ২য় খণ্ড(১৯৩৩), ফকিরি কুফরী খণ্ডন ফতুয়া(১৩৩৩), ফকিরি ধোকা রদ ফতওয়া(১৯২৬), জওয়াবে ইবলিস(১৯৬৮), সত্যের দিশারী(১৯৭৯) ইত্যাদি ইত্যাদি। এ মুদ্রিত বিরোধিতার প্রথম নিদর্শন লালনের জীবত কালেই প্রকাশিত হয় ‘জালালাতল ফোকরা’, প্রকাশকাল ২ ভাদ্র ১২৮৫। এছাড়া সাধুসঙ্গে এসে বাহাস(তর্কযুদ্ধ) করতে চাইতো আলেম-মোল্লা-মৌলবি-সমাজ নেতারা। বাহাসে টিকতে না পেরে(স্বয়ং লালনের সঙ্গে বাহাসে হেরে যাবার পর লালন অনুসারীর রচনা ‘আক্কেল নামা’ নামক পুথির নির্দশন পাওয়া গেছে, যাতে মোল্লা-মৌলবীদের হেরে যাবার ফলস্বরূপ উপহাস করা হয়েছে) ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে মেজাজ খিঁচড়ে গেলে তারা অপমান-গালাগালি-হেস্তনেস্ত তো করতোই হাতে ধরেও মারতো। পথে ঘাটে, আখড়ায় গিয়ে, সাধু সঙ্গে গিয়ে চুল কেটে মনের ঝাল মিটাতো। যাইহোক শত হলেও ধর্মানুভূতির উপকথা রক্ষা করতে হবে। এটা তাদের স্বার্থের দরকারে। এমন কায়েমী/শ্রেণী স্বার্থের বিরোদ্ধে লালন চুপ না মেরে নীলকন্ঠি গলা আরো মেলে ধরেছিলেন, আর ভবিষ্যত সম্ভবনা জারি রেখেছিলেন। ঠিক এখানটায় আমি আবার কৌশল/পদ্ধতিগত দিক থেকে শ্রেণী রাজনৈতিক ভাবে লড়ায়ে থাকা সর্বহারা শ্রেণীর রাজনীতিকে তুলনামূলক ভাবে মিলে যেতে দেখি। অতঅত্র দুনিয়াদারির নতুন পর্বে এসে বাউলরা অত্যাচারের হাত থেকে প্রতিরোধের এবং নতুন সমাজের জন্য শাসক শ্রেণীর বিরোদ্ধে লাঠিসোটা ধরে তবে সেটাতে চোখ ছানাবড়া হবার কিছু নেই। পরিস্থতি সে দিকেই ঠেকেছে।

০৪.
‘আশাসিন্ধুর কূলে লালন
পাবার আশে অমূল ধন
জীবন যৌবন সব সমর্পন
আপন কিছু রাখলো না’

কালের গুহায় থেকে অনেক রক্তদাগ সাক্ষ্যি দিচ্ছে মানুষ অ-মানুষীয় প্রথা-পদ্ধতির হাত থেকে বাঁচতে জানবাজি রেখে লড়াই করেছে দিনের পর দিন। দিন গুন্তে গুন্তে দুবৃর্ত্তরা আজকের কালিকালে আগের তুলনায় অনেক পাকাপোক্ত, রাষ্ট্রযন্ত্র নামের ভড়ঙের ভেতর তার নানান ঢংয়ের নাচন-কুঁদন। মানুষীয় সত্ত্বার সাথে চালাবজি করে টোপে ফেলে অস্তিত্বের শর্তটাকেই করে তোলে কাহিল। এসব- ফেনানো গল্পের মতো মনে হলেও বাস্তবতায় অনেকেই একে নিয়ত নির্ধারিত বলে মেনে নেওয়ার সহজ কায়দা কানুন শিখে নিয়েছে।(‘সকলি কাপলে করে/ কপালের নাম গোপালচন্দ্র/ কপালের নাম গুয়ে গোবরে’)। বাতিকটা আসলে হাস্য মুখে দাস্য সুখ বৈ কিছু নয়। এই হলো প্রভুশ্রেণীর মনমর্জি, চিন্তা ও জ্ঞান কাঠামোয় নিজেকে সঁপে দেয়া। মেনে নেওয়া- শাসকের বগলের ওমের ভেতর থাকে সমস্ত গতি-প্রগতি, সভ্যতা আর উন্নয়ন- সে তুলনায় ‘আমরা’ তাদের থেকে জ্ঞান-গরিমায়-চিন্তা-চেতনায় সবদিক থেকেই পশ্চাতপদ, নিচুজাতের। এসবের সাথে বিতর্কে জড়ালে দেখবেন বুদ্ধির ঝোলা ফেটে বের হবে- ‘নানা মুনির নানা মত। যত পথ তত মত’। হরেক রকম চিন্তা-মতাদর্শ এসে ভীড় করবে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাক্তি অনুযায়ী, ব্যাক্তির স্বার্থানুযায়ী, দল বা গোষ্ঠী অনুযায়ী। কেউ পক্ষে কেউ বিপক্ষে কেউ বা নিরপক্ষে। নিরপক্ষ থাকার মানুষই বেশী। এতে আরাম নষ্ট হয় না। নিরপক্ষতা সুবিধাবাদীতার বড় রকমের ফেউ। এতে প্রায়শঃ শত্রু-মিত্র বোঝা দায়। নিরপেক্ষতা নিয়ে বেশ আগেও আছি পাছেও আছি সুবিধায় থাকা যায়। ঝাঁকে মিশে থাকা যায়, চোর চেনা যায় না। স্রেফ ভাওতাবাজী। এরা মাথাও মুড়াবে তেলও ঢালবে। প্রেক্ষিত অনুযায়ী এমন ধন্দে ও রঙ্গে আপনি(যাচাই-বাচাই করতে চাওয়া ব্যাক্তি) হয়তবা তাল-তরঙ্গ খুঁজে পেতে বেলা বয়ে যাবে। এ জন্যই হয়ত হুশিয়ারী বাণী- ‘সময় গেলে সাধন হবে না’। কিন্তু কিসের সাধন? কেন সাধন? কোন পদ্ধতিতে? মণ্ডু বাঁকানো প্রশ্ন বোধক এসে বেশ চালাকীর ঠাঁটে আপনার সামনে ঢাঁট ধরবে। যদি আপনার গণ্ডারের গোঁ না থাকে, যদি আপনার চেতনে গুঁতো লাগে তো আপনি উত্তর খোঁজায় বিষম দায় ঠেকবেন। আপনার উপর দায়িত্ব বর্তাবে- ‘পাছবাড়ী আটেল কর/মন চোরারে চিনে ধর/নাইলে তোর হবে না মূল এককড়া’। কিসের ‘মূল এককড়া’ থাকবে না? এ প্রশ্নের আরো তলানিতে যাবার মতো হাঁসফাঁস শুরু হবে এবার আপনার। হূদমাঝারে ঢিপ ঢিপ নড়নচড়ন হবে। নিজেই নিজেকে কাঠগড়ায় তুলে বিচার-সালিশ, খুঁটিনাটি হদিশ করার সরস-নিরস মর্মালাপ শুরু হবে। কিন্তু আপনি সদায় অন্বেষণে থাকলে হযত সদয় হবে সাধনা। হয়ত শুনতে পাবেন- লালন গাইছে, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি/মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপা রে তুই মূল হারাবি’। লালন আমাদের আরো জানাচ্ছেন, ‘কলিযুগে মানুষ অবতার’।

_________________________________________________________

ভণিতা পর্ব:

‘না ঘুচিলে মনের ময়লা
সেই সত্যপথে না যায় চলা’

এখন সময় হয়েছে মানুষকে তার অবতার রূপ বুঝে/সাধন করে সত্যিকারের হুঙ্কার দিয়ে মানবীয় সত্বার অস্তিত্ব রক্ষার লড়ায়ে নামতে হবে। আর নতুবা আমরা বাঙাল। আমরা আতেল। আমরা চাকরি করি। আমরা পাহাড়িদের উপর অত্যাচার করি। আশা রাখি আমরা বিদেশী উন্নয়ন তত্ত্বের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ঠিকি একদিন এগিয়ে যাবে। অনেক উন্নতি করবে, অনেক বাবুগিরি করবো। ১০-৫ টার ডিউটি করবো আর রাজনীতীক দের গালি দেবো। অথবা বাকি দেশ খেটে মরবে আর আমরা ভাষন দেবো। শাহরুখ নাচবে আর আমরাও নাচবো। বোন ধর্ষিত হোক, ভাই ক্রসফায়ারে পড়ুক তাতে কি। শেখ হাসিনা দিনবদলের গান শোনাক, খালেদা জিয়া গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে ধাপ্পবাজি করুক তাতেই সই। ২৫ মার্চ/১৬ ডিসেম্বর এলে স্বাধীনতার চেতনা গাঢ় হবে বাকী দিন বেশরমের মতো ভুলো যাবো, অধীনতা মেনে চলবো। আমারা লক্ষ্যি ছেলে, আমারা ঘুম পাড়ানি গানে গানে ঘুমাই। বাজারে চালে-ডালে-তেলে দাম বাড়ুক, না খেয়ে মানুষ তবু চোপ থাকুক। দেশের সম্পদ বিদেশীরা ছলেবলে কৌশলে হাতিয়ে নিক, জলবায়ু পরিবর্তনের জের ধরে আমাদের ভিক্ষার থলি ফুলেফেঁপে উঠুক, এই তো নিয়ম। গ্রামেন্টস কর্মীরা ন্যায্য পাওয়া চাইলে কাপড় উল্টে দু’ঘা লাগিয়ে দাও। সুদি ইনূচের সুদ পরিশোধ না করতে পেরে নারী বেশ্যা হোক, নারীর উন্নতিতে হাসিনা-আমিনির গোঁজামিল দুই চাপা থাকুক। বাউলের চুল-ঝুটি কেটে তাওবা পড়াক আওয়ামী মোল্লারা তাতে আমাদের কি? -ওসব ভেবে ভেবে সময় নষ্ট করার দরকার নাই। এই সব ছাইপাঁশ নিয়ে ভাববার, বাদানুবাদ করার খেই কই। কথায় আছে সময় আর নদীর স্রোত কারো জন্যে অপেক্ষা করে না। অতএব ঘড়ির কাটা গুনে আর স্রোতে খড়কুটো ধরে পাকেপ্রকারে নিজ জাতপাত উদ্ধার করার ফায়দাটাই শেষমেশ কম্ম। ঐসব আকাম্মা বজ্জাতেরাই করে, ওসব ছুঁয়ো না। নজর ফেরাও। বরঙ ব্যাক্তি জীবনযাপনের লেপামোছা করাটাই যুতসই কিনারা। ঘাটাঘাটি, বিতন্ডা করে তো আর পেটের খোরাক কুলাবে না, পেটের খোরাক কুলালো বটে কিন্তু আয়েশ আরামের তো আর ছাড় দেয়া যায় না। তো বৎস আজ ঘুমাও কাল ঠিক ঠিক গেয়ে উঠো- ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ ...


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গভীর লেখা হলেও কোনো মন্তব্য পড়েনি দেখে অবাক হলাম। দীর্ঘ্য এবং জটিল বাক্যের ব্যবহার এবং মূল প্রসঙ্গ অবতারনার আরে প্রাককথন বেশী বলে আমারও পড়তে কষ্ট হয়েছে। আশা রাখি ভবিষ্যতে আরো সহজবোধ্য লেখা পাবো আপনার কাছ থেকে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একমত। এক একটা পর্বে কোন অনুচ্ছেদের ভাগ পর্যন্ত নেই। পড়তে গিয়ে হিমশিম খেয়ে গেছি। জরুরী বিষয়ের উপস্থাপনা সরল না হলে লেখকের রচনা ও গবেষণার পরিশ্রম মাঠে মারা যাবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।