যেসব সিনেমার দৃ্শ্যে আলোড়িত হই!

আয়নামতি এর ছবি
লিখেছেন আয়নামতি [অতিথি] (তারিখ: রবি, ২২/০৫/২০১১ - ৯:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কতো কতো সিনেমা দেখা হয়েছে এপর্যন্ত। তার কোনোটি দেখে কষ্টে চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে, কোনোটি ডুকরে উঠতে বাধ্য করেছে, আবার কোনোটি দেখে হাসতে হাসতে খুন হতে হয়েছে। কোনোটির রোমান্টিক ভাবের জোয়ারে মন ভেসে যেতে চেয়েছে খাইছে

আমি ভীষণ রকম রোমান্টিক সিনেমার ভক্ত বলে দাবী করলেও কেনো জানিনা বিষাদের সিনেমাগুলোই আমার বেশি দেখা হয়। আমার এক বন্ধুর অভিযোগ, আমি নাকি দুঃখ খুঁজি তাই ওরকম সিনেমায় ঝোঁক আমার। মনে মনে 'কইছে তোরে' বললেও প্রতিবাদ তেমন করিনা। বলছিলাম আমার দেখা যেসব সিনেমা আমাকে আলোড়িত করেছে তার কথা। সবগুলোর কথা তো আর বলা সম্ভব নয়, তবে সে মহাভারত হয়ে যাবে। তবে কিস্তিতে পর্ব আকারে লেখতে পারলে বেশ হতো। কিন্তু এতে যে ধৈর্য্য, পরিশ্রম আর সবচে বড় কথা পর্ব লেখাবার জন্য যে মেধার দরকার আমার কোনোটাই নাই। তাই ছোট্ট করে একপর্বেই খেইল খতমের ইরাদা। জানিনা এতে কতোজন বিরক্ত হবেন। কতোজন বিরক্তি চেপে ভদ্রতা করে বলবেন, 'বেশ লেখেছেন' ভদ্রতা আসলেই বড় বালাই! আসুন দেখি কয়েকটা ছুঁয়ে যাওয়া ছবির দৃশ্য।

১.
প্রথমেই যে সিনেমার কথা মনে পড়ছে সেটি হলো 'লাইফ ইজ বিউটিফুল'। আমার দেখা ১০টি সবচেয়ে প্রিয় সিনেমার তালিকায় এটি আজীবন থাকবে। অসাধারণ এই সিনেমার প্রতিটা দৃশ্যই মনে রাখবার মতো। তবে প্রায় শেষ পর্যায়ে সেই দৃশ্য মনকে ভীষণ রকম আলোড়িত করেছে। যেখানে এক বাবা তার শিশু সন্তানের কাছ থেকে যুদ্ধকালীন অনাচার লুকোবার জন্য মরিয়া, খেলাচ্ছলে ছেলেকে ভুলাতে চান, মর্মান্তিক পুরো সিগমেন্টটাই। শেষদৃশ্যে জশোয়া যখন মিত্রবাহিনীর ট্যাঙ্ক দেখে "ইটস্ ট্রু!" বলে ওঠে কান্না চেপে রাখা সত্যই দায় হয়। পরের দৃশ্যে মাকে খুঁজে পাওয়া এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে বড়বেলার জশোয়ার বলে যেতে থাকা কথাগুলো কান্নার তোড়ে ভেসে যাচ্ছে তখন........."দিস ওয়াজ হিজ গিফ্ট টু মী.........."
ছবিটা এখানে দেখুন......................."

২.
এটি সুন্দরী মোনিকা বেলুচ্চির ছবি, 'ম্যালেনা' যেখানে এক কিশোর যে কিনা মোনিকার গোপন প্রেমিক হিসেবে মোনিকাকে সবর্ত্রই অনুসরণে ব্যস্ত থাকে। ছবিটির শেষ দৃশ্যে দেখা যায় যে শহর একদা মোনিকাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলো সেখানে সে ফের ফিরে আসে স্বমহিমাতেই এবং সওদাপাতি নিয়ে বাড়ি মুখো মোনিকার হাত ফস্কে পড়ে যাওয়া সওদা তুলতে সাহায্যে ছুটে আসে সেই গোপন প্রেমিক। ফিরে যাবার মুখে কিশোর মোনিকাকে শুভবার্তা জানিয়ে সাইকেল নিয়ে বিপরীত মুখে যেতে থাকে। ব্যাকগ্রাউন্ডে শুনতে পাই মন কামড়ে বসা সংলাপ যা চোখের কোণে অজান্তেই এনে দেয় জলবিন্দু! আমি ভীষণভাবে আলোড়িত হই সে সংলাপে....... আমি তা নাই বলি, বরং দেখে নেয়া যাক আমার খুব প্রিয় বিষন্ন সেই সংলাপ সেই ছবিটাতেই।

৩.
এরপর আগাগোড়া অসহ্য-মর্মান্তিক যাতনায় ভরা একটি মুভি, যেটি দেখে আমার খাওয়া হয়নি সেরাতে! মুভীর নাম 'গ্রেভ অব দ্যা ফায়ার ফ্লাইজ'। এ ছবির পরতে পরতে মর্মান্তিক দৃশ‍্য ছড়ানো। যেমন, ক্ষুধার্ত বোনের জন্য ভাইয়ের টমেটো-মিষ্টিআলু চুরির দৃশ্য। এবং সে অপরাধে ধরে নিয়ে যাওয়া ভাইয়ের খোঁজে দাঁড়িয়ে থাকা মুমুর্ষ বোনের উৎকন্ঠিত প্রতীক্ষা এবং ডাক্তারের চিকিৎসা নেবার কথা বলাতে ভাইয়ের কান্নায় ভেঙ্গে পড়া.....' যা বুকের কান্নাকে সশব্দে বের হতে বাধ্য করে।
ছবিটা দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

৪.
বাংলা দ্রুপদী সিনেমা বলতেই আমার কাছে অনেক অনেক সিনেমার মুখ পেরিয়ে দুটো সিনেমা সব সময়ই এগিয়ে থাকে। একটি সত্যজিৎ রায়ের 'পথের পাঁচালী' অন্যটি ঋত্বিক কুমার ঘটকের 'মেঘে ঢাকা তারা'। 'পথের পাঁচালী' আমি খুব ছোটবেলায় আমার বাবাইয়ের সাথে বসে দেখি। সেকারণেও এটি একটি স্মৃতিময় ছবি হিসেবে এগিয়ে থাকে। এবং প্রিয় ১০টির তালিকায় নাম লেখিয়ে রাখে সৃষ্টি শৈলির জোরেই! এর কতো কতো দৃশ্যই না মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। এখনো এর আবেদন আমার কাছে একটুও পুরনো মনে হয়না। এখনো অপু দূর্গার কাশবন পেরিয়ে রেলগাড়ি দেখতে যাবার অবাক দৌড়ে নি্জেও কখন যে সামিল হয়ে যাই টেরটিও পাইনা। একইভাবে, মৃত বোনের চুরি করা পুঁথির মালাটি নিয়ে শ্যাওলাভরা পুকুরে ফেলে দেয়া এবং বোনের চুরি গোপনে প্রকৃতির সহমর্মিতায় মালাটি ডুবে গিয়ে শ্যাওলার আবার পূর্বাস্হায় ফিরে এসে দূর্গার অপকর্ম গোপনের দৃশ্য আজও আমাকে কাঁদায় সমান ব্যথায়।
ছবিটা এখানে।

৫.
'মেঘে ঢাকা তাঁরা' মধ্যবিত্তের সংকীর্ণতা, টানাপোড়েন, নিজেকে নিঃস্ব করে পরিবারকে দিয়ে যাবার এমন সমন্বয় আজকাল আর তেমন করে দেখা যায় না। নিজেকে উজাড় করে দিয়ে বিনিময়ে শূণ্যহাতে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা নীতা'কে অপরিচিতা মনে হয়না একটুও। বড্ড মমতায় তাকে দিদি বলে গর্ব করতে ইচ্ছে করে। আবার "দাদা আমি বাঁচবো! দাদা আমি বাঁচবো বলে" আত্মচিৎকার করতে থাকা বোকা দিদিটার জন্য চোখের জল ধরে রাখাও দায় হয়ে পড়ে। কিংবা শেষ দৃশ্যে নীতার দাদা পথে দাঁড়িয়ে পড়ে অন্য আরেক মেয়ের মাঝে তার বোন নীতাকে দেখতে থাকার দৃশ্য মনকে কেমন বিবশ করে দেয়।
ছবি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

৬.
'তারে জামিন পাড়' একটি চমৎকার সিনেমা। অন্যদের কাছে কতোটা আবেগের জানিনা, আমার কাছে ছবির যেখানে ঈষাণকে বোর্ডিংস্কুলে রেখে আসা হয় সে সিগমেন্টে গান বাজতে থাকে একটি, যা এতো কষ্টের, এতো মন খারাপের কী বলবো! এটি যখন দেখি তখনও মা বেঁচে!...তখনই সইতে পারিনি। এত্তো বুড়ি হয়ে গেছি তারপরও ঐ ছোট্ট শিশুটির কষ্ট নিজের বুকেও বাজতে শুনেছি সমান যাতনায়। দেশে থাকা মায়ের জন্য মনটা কেমন যে হু হু করেছে বলার না! এখন ব্যক্তিগতভাবে হারিয়ে ফেলবার আবেগটা এতোবেশি জড়িয়ে গেছে যে, এই দৃশ্য দেখবার সাহস আমি আর রাখিনা..............।
ছবিটা এখানে।

৭.
"ধোবিঘাট" কিছুদিন আগে দেখা অনবদ্য এই সিনেমার কিছু দৃশ্যও মনে বেশ দাগ কেটেছে। আমি আলোড়িত হয়েছি। চারটি প্রধান চরিত্রের হাত ধরে ক্রমশঃ এগিয়ে যেতে যেতে একটি শহরের ভাঁজে ভাঁজে থাকা অনেক গল্প বলে যাবার একটি চমৎকার সিনেমা এটি। আঁকিয়ে আমীর খান(অরুন) যখন তার পর্ববর্তী ভাড়াটিয়া মেয়েটির( ইয়াসমিন)ভিডিও চিঠি দেখতে দেখতে ছবি আঁকতে থাকে এবং মেয়েটি তার ভাইকে উদ্দেশ্য করে জানিয়ে দেয় এটিই তার শেষ চিঠি। আমীরের থমকে যাওয়ার সেই প্রতিক্রিয়া কিংবা ভিডিও করতে থাকা মেয়েটি যখন প্বার্শবতী বাকহীন বয়স্কা মহিলাকে দেখে বলে,' কুছ্ হুয়াহোগা ইনকি সাথ্.......' মনটা কেমন গুমড়ে ওঠে। আর শেষ দৃশ্যে ধোপা মুন্নার কাছে যখন সাই(shai) আঁকিয়ে আমীরের নতুন বাড়ির ঠিকানা জানতে চায় এবং ক্ষোভে ফেটে পড়া মুন্না তার কাছে ঠিকানা নেই বলে অস্বীকার করাসহ পরবর্তীতে চলন্ত গাড়ি থামিয়ে সাইয়ের হাতে আমীরের ঠিকানা গুঁজে দেয়া আর ক্ষণিকের জন্য সাইয়ের চোখে জলের আভাস....মুন্না এগিয়ে গিয়ে মিশে যায় শহুরে ভীড়ে, এগিয়ে যেতে থাকে সাইয়ের গাড়ি' এ দৃশ্যে বড় বেশি আলোড়িত হই আমি!
ছবিটা এখানে।

-আয়নামতি


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

৭-নম্বর ছাড়া বাকিসবগুলোর ব্যাপারে একমত। কয়েকটার সাথে প্রবল ভাবে একমত। লিস্টটা আরো লম্বা করা যায়, সেটা কেউ কেউ হয়তো করবেন। আমি শুধু একটা যোগ করবো। এই সিনেমাটা কতোজন দেখেছেন জানি না। এর একটা দৃশ্য যেখানে কেন্দ্রিয় চরিত্র রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া ছেলেকে (নিজের নয়) নিজের ছেলে বলে পরিচয় দেয়, বাবা-ছেলে দু'জনকে জড়িয়ে ধরে, কান্নারুদ্ধ গলায় ছেলে জমানো সব অভিযোগ জানাতে থাকে, নিয়ন্ত্রনহীন ট্রাকটা আস্তে আস্তে রাস্তা ছেড়ে মাঠে নামতে থাকে - এই দৃশ্য দেখে আমি নির্লজ্জের মতো কেঁদেছি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আয়নামতি1 এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া! ৭নং বাদে অন্যগুলো আপনারও ভালোলাগার জেনে খুব ভালো লাগলো হাসি আপনার উল্লেখ করা সিনেমাটি আমার দেখা নেই। ভালো হয়েছে, এই সুযোগে কিছু চমৎকার সিনেমার নাম জেনে যাওয়া হবে। সময় করে দেখে জানাবো, আমি কেমন কাঁদলাম খাইছে শুভেচ্ছা।

ভাসমান পাঠক এর ছবি

আপনি মনে হয় শুধু হালজামানার সিনেমাগুলো দেখেন। সুযোগ পেলে Vittorio De Sica-র দ্য বাইসাইকেল থিফ বা আমবারটো-ডি দেখেন, এই ছবি দুইটার কিছু অংশ ইমোশনে শুধু নাড়া দিবে না একদম ঝড় বইয়ে দিবে, তারপর চোখে বৃষ্টি আনবে!! তারপর আবার নতুন করে লিস্টি বানাতে বসেন হাসি ৫ ও ৭ দেখিনি তাই কিছু বলতে পারছি না। বাকিগুলোর ব্যাপারে একমত, বিশেষ করে ৩ নম্বরটা আমার খুবই পছন্দের। ষষ্ঠ পাণ্ডবকে ধন্যবাদ একটা ভালো মুভির খোঁজ দেওয়ার জন্য, দেখতে হবে হাসি

আয়নামতি1 এর ছবি

ঠিক তা নয়। যখন সময় পাই ভালো সিনেমা পেলেই দেখে ফেলি। এক্ষেত্রে জামানার তেমন প্রভাব নেই ভাইয়া
আর কী জানেন, কিছু দেখা সিনেমার নাম সময়ে মনে আসেনা। যেমন 'বাইসাইকেল থিফ' ওটা আমি দেখেছি বহু দিন আগে এবং ভেতর বাড়িতে সাড়া পড়েছিলো চোখে জলও! বাকী দুটো দেখা নেই। আপনার পছন্দের দুটি সিনেমার নাম উল্লেখ করাবার জন্য ধন্যবাদ।

আশালতা এর ছবি

লিস্ট ভালো হয়েছে । তবে সাথে আরও দুটো সিনেমার কথা এই মুহূর্তে মনে পড়ছে । একটা অড্রে হেপবার্ন এর রোমান হলিডে । শেষ দৃশ্যে নায়কের চোখের বিষণ্ণতা ভোলার নয় । আর আরেকটা মেল গিবসনের ব্রেভ হার্ট । মৃত্যুর আগে তীব্র যন্ত্রনার সময় ভালবাসার মেয়েটিকে খুঁজে পাবার আর্তি একইসাথে প্রবল ক্রোধ আর বেদনার অনুভব দেয় ।
মেঘে ঢাকা তারা এখনও অনবদ্য ।

আয়নামতি1 এর ছবি

কতো কতো চমৎকার সিনেমার নাম ভুলে বসে আছি আপু! এই দুটোই আমার দেখা হাসি আপনার অনুভূতিটা জেনে ভালো লাগলো। 'গ্ল্যাডিয়েটর' কিন্তু দারুণ একটা সিনেমা। 'জাপানিজ ওয়াইফ' দেখেছেন আপু? খুব যত্ন করে মন খারাপ করে দেয় এগুলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একমত। ৫ ও ৭ আমিও দেখিনি। আসলে ইউরোপীয়, ইরানী ছবিগুলো তেমন দেখা হয়না বলে হয়তো আমাদের লিস্টগুলো হলিউড, হিন্দী আর বাংলাতেই সীমাবদ্ধ থাকে। পান্ডবদা যেই ছবির লিঙ্ক দিয়েছেন ওটা ইউক্রেনীয় নাকি?

আয়নামতি1 এর ছবি

খুব ঠিক আপনার কথা। হাতে গোনা কয়েকটা সিনেমা ছাড়া(ইউরোপীয়-ইরানী-জাপানিজসহ অন্যান্য) দেখা হয়নি তেমন। কেউ সাজেষ্ট করলে সময় করে দেখে নেওয়া যায়। কেউ কেউ বলছেন, এটা বাড়তি পাওনা হাসি অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সিনেমার কাহিনী মিখাইল শলোখভের গল্প থেকে নেয়া। নির্মাতা সার্গেই বান্দারচুক। মূল সিনেমার ভাষা রুশ। সিনেমাটা যখন বানানো হয়েছিলো তখন দেশটার নাম ছিলো "সোভিয়েত ইউনিয়ন"।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

১-৫ পর্যন্ত একমত। ৬, ৭ দেখিনি। তবে দেখে ফেলবো মনে হচ্ছে শীঘ্রি।

'গ্রেভ অব ফায়ারফ্লাইস' ছবিটা দেখার পর আপনি খেতে পারেননি। আমি কি করেছি বলি।

একসময় বাতি নিবিয়ে টিভি দেখার একটা রেওয়াজ ছিল। তখন চ্যানেল ছিল মাত্র একটা। ওখানে যা দেখায় তা গোগ্রাসে গেলার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা হতো বাতি নিবিয়ে। এই ছবিটা দেখার সময়ও আমি কেন যেন বাতি নিবিয়ে দিয়েছিলাম। সেদিন রুমে কেউ ছিল না, দরোজা বন্ধ করে একা একা ছবিটা দেখছিলাম। ছবিটা শেষ হবার পর খেয়াল করলাম আমার ঢোক গিলতে কষ্ট হচ্ছে। একটা এনিমেশান ছবি যে এত মর্মস্পর্শী হতে পারে অবিশ্বাস্য!!!

এই তালিকাগুলোর সাথে অনায়াসে যোগ করা যায় চিলড্রেন অব হেভেন, কালার অব প্যারাডাইস আর বাইসাইকেল থীফকে। এরকম একটা স্মৃতি উস্কানি পোষ্টের জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আয়নামতি1 এর ছবি

সত্যিই খুব মর্মস্পর্শী সিনেমা ওটা! আপনার উল্লেখকরা তিনটিই আমি দেখেছি হাসি আরো কিছু যোগ করুন নীড়ভাইয়া এই পোষ্টে। আপনি বেকেট্(Becket) দেখেছেন নাকি ভাইয়া? বেশ পুরনো। রিচার্ড বার্টন আর পিটার ও'টুলের দারুণ সিনেমা একটা। রিচার্ডের চেয়ে আমার ও'টুলের খ্যাপা রাজার অভিনয়টা কেন জানি বেশি ভালো লেগেছে শয়তানী হাসি অনেক ধন্যবাদ।

আসমা খান, অটোয়া। এর ছবি

লিস্টটা আরো একটু বড় হোলে মনে হয় খুব ভালো হোত। সবগুলি আমার দেখা হয়নি, কিন্তু আমারও মনে হয় অনুভুতির তীব্রতা, প্রশান্তির মাপকাঠিতে আপনি যেগুলি উল্লেখ করেছেন, অবশ্যই সেগুলি স্বরনীয়। ধন্যবাদ।

আয়নামতি1 এর ছবি

আপনিও আপনার কিছু পছন্দের সিনেমার নাম যোগ করে দিন আপা, লিষ্ট তাতেই বড় হয়ে যাবে হাসি সত্যি বলতে কী, হুট করেই পোষ্টটা লেখেছি। সময়ে তাই অনেক নাম মনেই আসেনি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা।

Guest এর ছবি

তালিকার যে কয়েকটি ছবি দেখেছি, তার সাথে একমত। এর সাথে আমি "আ বিউটিফুল মাইন্ড" ছবিটাও যোগ করতে চাই। প্রিয় দৃশ্যগুলোর মধ্য়ে একটি হচ্ছে এক্দম শেষের দিকে যখন সব প্রফেসরেরা তাদের বুক পকেটের কলম গুলো দিয়ে দিচ্ছে।

-নিলম্বিত গণিতক

রু (অতিথি)  এর ছবি

আবেগ তাড়িত হয়েছি অনেক সিনেমা দেখেই, কিন্তু কেঁদেছি বলে মনে পড়ে না।

নিঃসঙ্গ গ্রহচারী! এর ছবি

দারুন লিস্ট।
আপনার লিস্ট পড়ে আমার যে ছবিগুলোর কথা মনে পড়লো -

আপ
কার্ল আর অ্যালির ম্যারিড লাইফটা যখন দেখায়। শুধু ওইটুকুই একটা সিনেমা।

কালার অফ প্যারাডাইস
মুহামম্দ যখন 'আমাকে কেউ ভালোবাসে না' বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

সিনেমা প্যারাডিসো
শেষ দৃশ্যে যেখানে টেমা বসে বসে আলফ্রেডোর তৈরি মন্টাজটা দেখে। অদ্ভুত!

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

লিস্টটি আসলেই আরো দীর্ঘ হবে। আমাকে খুব বেশি আবেগপ্রবণ করেছে এরকম মুভির নাম মনে পড়ছে যা তা হল, শিন্ডলার'স লিস্ট, কালার অব প্যারাডাইজ(এর সিনেমাটোগ্রাফির কথা বলতে হয়, রিয়েলি প্যারডাইজলাইক), চিল্ড্রেন অব হ্যাভেন, আরো কিছু - মনে পড়ছে না!!! আর হিন্দি এড়িয়ে চলি (ব্যক্তিগত রুচি)!

লেখায় চলুক

আয়নামতি1 এর ছবি

জটিল ছবি 'অ্যা বিউটিফুল মাইন্ড'! কিন্তু কেন জানিনা ওটা আমি অর্ধেক দেখে রেখে দিয়েছিলাম পরে দেখবো বলে। আর দেখা হয়ে উঠেনি। আপনার কথায় মনে পড়ে গেলো! ধন্যবাদ সেজন্য।

onogh এর ছবি

"The Pianist" ছবিতে Wladyslaw Szpilman চরিত্রে Adrian Brody-র অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। পালিয়ে থাকার সময় পিয়ানোর ওপর হাওয়ায় বাজানোর দৃশ্য দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনা।
"পথের পাঁচালী"তে দূর্গার মৃত্যুর পর হরিহর বাড়িতে ফেরার পরের যে দৃশ্য, তা দেখে চোখের পানি ধরে রাখা কিভাবে সম্ভব আমি জানিনা।

-------------------
অনঘ

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমি নিজে সিনেমা প্রেমিক নই এবং তালিকার কয়েকটা ছবি দেখিনি। তবে যেগুলো দেখা আছে, সেগুলোর ব্যাপারে দ্বিমতের অবকাশ নেই যে এগুলো প্রথম সারিতে থাকার মতো সিনেমা।

সুযোগ পেলে একটু কষ্ট করে ববিতা এবং ইলিয়াস কাঞ্চনের অভিনীত বসুন্ধরা ছবিটা একটু দেখে নিয়েন। বহুকাল আগের ছবি, তাই জোগাড় করতে একটু কষ্ট হতে পারে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

৩ দেখি নাই
৫ পুরাটা দেখি নাই, তাই বলতে পারবো না
৭ ভালো লাগে নাই
এছাড়া একমত

তবে এরকম লিস্ট করা খুব মুশকিল... তাই এই চেষ্টায় আমি সাধারণত যাই না

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পৃথ্বী এর ছবি

"এ বিউটিফুল মাইন্ড" আর "গডফাদার"(প্রথম পার্ট) এর শেষ দৃশ্যটা আমার অসম্ভব ভাল লেগেছিল। বিউটিফুল মাইন্ডের কথা তো উপরে নিল্মবিত গণিতক বলেছেন। গডফাদারে মার্লন ব্র্যান্ডো পুরো ছবিটা জুড়েই আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল। শেষ দৃশ্যে মাইকেলের কর্লিয়ন ফ্যামিলির ডন হিসেবে স্বীকৃ্তি পাওয়ার দৃশ্যটা অসাধারণ লেগেছিল।

কম্পন এর ছবি

আপনার লিস্টের ৭-নম্বর ছাড়া বাকিগুলো ভালোই।
উপরে অনেকই বলেেছন - "দ্য বাইসাইকেল থিফ", "গডফাদার", "শিন্ডলার'স লিস্ট","দ্য পিয়ানিসট্","কালার অব প্যারাডাইজ" চলুক
সিনেমা প্রেমিকদের জন্য আমিও কিছু যোগ করে দিলাম খাইছে
"দ্য মিড্লম্যান", "দ্য লাইফ অফ আদারস্", "টু ওমেন", "সুবর্ণ-রেখা", "রাসোমন"

কম্পন এর ছবি

আপনার লিস্টের ৭-নম্বর ছাড়া বাকিগুলো ভালোই।
উপরে অনেকই বলেেছন - "দ্য বাইসাইকেল থিফ", "গডফাদার", "শিন্ডলার'স লিস্ট","দ্য পিয়ানিসট্","কালার অব প্যারাডাইজ" চলুক
সিনেমা প্রেমিকদের জন্য আমিও কিছু যোগ করে দিলাম খাইছে
"দ্য মিড্লম্যান", "দ্য লাইফ অফ আদারস্", "টু ওমেন", "সুবর্ণ-রেখা", "রাসোমন"

বিষণ্ন বাউন্ডুলে এর ছবি

সুন্দর পোষ্ট।

আর কেই বলেনি,
এমন কয়েকটা নাম দিলাম..

A.I.
my sister's keeper,
the boys are back,
kramer vs kramer,
the pursuit of happiness,
the shawshank redemption,
spirt:stallion of the ciamarron,
the gameplan,
no resarvation,
the forrest gump..

এগুলো ভাল লাগলে পরে আরো জানাবো নে!
ভাল থাকুন।।

আয়নামতি1 এর ছবি

ব্যস্ততার কারণে মাঝে একটা গ্যাপ পড়ে যাওয়াতে এ পোষ্টের পরবর্তী মন্তব্যগুলোর উত্তর করে উঠতে পারিনি বলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। যারা যারা মন্তব্য দিয়ে পোষ্টের ভালোলাগার লিষ্টকে দীর্ঘ করেছেন কিংবা ভালোলাগাটুকু জমা রেখে গেছেন তাদের সবার প্রতি আমি বিনীত কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ধন্যবাদ।

wasif এর ছবি

" Its a Wonderful Life " দেখতে পারেন। আমার খুবই ভালো লেগেছিল।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।