আমার সকল গান তবুও তোমায় লক্ষ্য করে

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ২৭/০৭/২০১২ - ৬:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাক্ষিক ‘আলোর খেয়া’ সাহিত্য পুরষ্কার পাওয়ার পর থেকেই আমার জীবনে শুরু হয়েছে এক মধুর যন্ত্রণা। প্রতিদিনই ‘ভোরের আলো’, ‘গোধূলির আলো’, ‘রাতের অন্ধকার’ ইত্যাকার নানা পত্রিকা থেকে কোন না কোন সাংবাদিক সাক্ষাৎকার নিতে চলে আসে। পত্রিকার পাতায় আমার সাক্ষাৎকার আর গুরুগম্ভীর পোজ দিয়ে তোলা কৃত্রিম ছবি দেখতে আমার অবশ্য মন্দ লাগে না। তবে অমৃতেও তো কখনো কখনো অরুচি চলে আসে,আমার এখন সেই দশা চলছে। তাছাড়া মাঝে মাঝে কিছু সাংবাদিকের প্রশ্ন শুনলে ভীষণ রাগও হয়। সেদিন কোন এক পত্রিকার বিনোদন পাতার সাংবাদিক চলে এসেছে সাক্ষাৎকার নিতে; সাহিত্য বিষয়ক কোন প্রশ্নের ধার না ধেরে সে আমাকে জিজ্ঞেস করে আমার পছন্দের রং কি, পছন্দের খাবার কি, কি ধরনের পোশাক পরতে পছন্দ করি এইসব।

একটু বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা আমার অভ্যেস। সকালের চা খেতে খেতে পত্রিকার উপর চোখ বুলিয়ে নিচ্ছি, এমন সময় দৈনিক যুগের সাক্ষী পত্রিকার সাংবাদিক এসে হাজির। তাকে নাকি আগেই সময় দেয়া ছিল, অথচ আমারই মনে নেই। কি আর করা, অগত্যা বিরক্তি চেপে বললাম, আপনি দশ মিনিট অপেক্ষা করুন, আমি আসছি। কোন মতে সকালের নাস্তাটা সেরে চলে গেলাম ড্রয়িংরুমে। দেখি বেশ কমবয়সী এক ছেলে বসে আছে, তবে চোখে মুখে বুদ্ধির একটা আভা আছে। আমি প্রস্তুত বলতেই দেখলাম একটা মৃদু হাসি দিয়ে কাঁধ ব্যাগ থেকে কিছু কাগজ-পত্র বের করছে। তার সামনে সোফায় বসতে বসতে বললাম, ‘প্রস্তুতি নিয়ে বেশ আটঘাট বেঁধেই সাক্ষাৎকার নিতে এসেছ মনে হয়।’ জবাবে ছেলেটি কোন কথা না বলে মিষ্টি করে একটু হাসল।

কথা রেকর্ড করার যন্ত্রটি ঠিক করতে করতে ছেলেটি জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, আমি কি প্রশ্ন শুরু করতে পারি?’

- দেখ, আমি কখনো শিক্ষকতার সাথে জড়িত ছিলাম না যে, আমাকে তুমি স্যার হিসেবে সম্বোধন করবে। আমাকে হাসান ভাই হিসেবে সম্বোধন করলেই হবে। প্রশ্ন শুরু কর।

- আমি যতদূর জানি, এই পর্যন্ত আপনার ছয়টি বই বের হয়েছে এবং আপনার ষষ্ঠ বই ‘জানা অজানার কাব্য’র জন্য আপনি সাহিত্য পুরস্কারটি পেয়েছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়েছে এটি আপনার শ্রেষ্ঠ কাজ নয়। আমি বরং আপনার তৃতীয় বই অর্থাৎ ‘যে জলে তোমার ছায়া পরে’ কে এগিয়ে রাখব। এ বিষয়ে আপনি কি বলেন?

বুঝতে পারলাম যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই সে আমার সাক্ষাৎকার নিতে এসেছে। সে কারণে সচরাচর সাক্ষাৎকারের সময় যেমন থাকি, তার চেয়ে একটু বেশি মনযোগী হয়ে উঠলাম। আমি বললাম,

-আর সব লেখকের মতোই আমিও আমার সৃষ্টির মধ্যে কোন ভেদ রেখা টানতে চাই না। যখন যে লেখাটিই আমি লিখেছি তখন সেটা অনুভব করেই লিখেছি। তাই কোন লেখাকেই আমার পক্ষে ছোট করা সম্ভব না। আর পাঠক যখন একটা লেখা পড়ে তখন সে তার জীবনের সাথে ঐ লেখার একটা যোগসূত্র তৈরি করতে চায়। যে যত বেশি একটা লেখার সাথে যোগসূত্র স্থাপন করতে পারে ঐ লেখাটা তার কাছে তত বেশি প্রিয় হয়ে ওঠে। সেজন্যই হয়তো তোমার কাছে আমার তৃতীয় বইটা বেশি ভালো লেগেছে।

-আপনার গদ্যে তো প্রায়ই কবিতার ছায়া দেখতে পাই তাহলে আপনি কবিতা লেখেন না কেন?

- আসলে কবিতা আমার কাছে সাহিত্যের সর্বোচ্চ শাখা মনে হয়। দুইশ পৃষ্ঠার উপন্যাসের চেয়ে দশ লাইনের কবিতা অনেক সময় বেশি কথা বলে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে সবচেয়ে দুর্লভ হচ্ছে একটা ভাল কবিতা আবার সবচেয়ে সুলভ হচ্ছে বাজে কবিতা। আমার মেধা আর মননের ঘাটতির জন্য কবিতার প্রতি আমার ভালোবাসাটা শুধু পাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি, কবিতা লেখার দিকে আর সাহস করি নি।

- আপনার রচনাগুলো একটু খেয়াল করলে বোঝা যায় আপনি একেবারে শেষে একটা চমক রাখতে পছন্দ করেন। এটা কি আপনি সচেতন ভাবে করেন নাকি চলে আসে?
-আসলে আমি তাই লিখি যা আমি নিজে পছন্দ করি। শেষে একটা চমক বা টুইস্ট আছে এমন লেখা পড়তে আমার নিজের ভালো লাগে বলে আমিও চেষ্টা করি সেরকম কিছুই লিখতে। তবে অযাচিত বা অপ্রাসঙ্গিক চমকের কারণে মাঝে মাঝে কিছু গল্প হয়তো বেশ খোঁড়া হয়ে যায় কিন্তু তারপরও আমি নিজেকে আসলে সংবরণ করতে পারি না।

-আমি মনে করি আপনার প্রতিভার তুলনায় আপনার রচনার সংখ্যা বেশ অপ্রতুল। আপনি একটি সরকারি চাকরীতেও নিয়োজিত আছেন। কখনো কি মনে হয় না, চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি লেখালেখিতে মন দিলে আপনি হয়তো আরও ভাল করতেন?

- আসলে লেখালেখিটা আমার কাছে বরাবরই একটা শখ ছিল,আছে আর থাকবে। আমার মনে হয় আমি যদি লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নেই তাহলে আর একটা লাইনও আমি লিখতে পারব না।

-আপনার রচনায় নারী চরিত্রগুলো কেমন যেন অস্পষ্ট। মনে হয় তারা আছে কিন্তু থেকেও নেই। আপনি তাদেরকে কখনোই পুরোপুরি প্রস্ফুটিত হতে দেন না, এর কি কোন কারণ আছে?

- হয়তো আমি নিজেই তাদেরকে ভাল বুঝি না, এজন্যই তাদেরকে ঠিকমতো ফুটিয়েও তুলতে পারি না।

- একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি যদি কিছু মনে না করেন। সৃষ্টিশীল মানুষদের জন্য সাধারণত নারীদের অনুপ্রেরণার একটা বড় ভূমিকা থাকে। কিন্তু আপনি এতগুলো বছর অকৃতদার হিসেবে পার করে দিলেন। কখনো কি অনুপ্রেরণার অভাব না নিঃসঙ্গ বোধ করেন নি?

খুবই স্বাভাবিক একটা প্রশ্ন কিন্তু কেন জানি না আমার মনটা খুব বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল। আমি কোনরকম দায়সারা ভাবে বললাম, ‘নাহ! আসলে সেরকম নিঃসঙ্গ কখনো বোধ করি নি। চাকরি করি, লেখালেখি নিয়ে আছি, এইতো বেশ ভালোই চলে যাচ্ছে।’ এতোটুকু বলে আমি জানিয়ে দিলাম আজকে আর সময় দিতে পারছি না। তার সাথে কথা বলে বেশ ভালো লেগেছে জানিয়ে আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণ করে তাকে বিদায় জানালাম।

ছেলেটা চলে গেলেও তার শেষ প্রশ্নটা আমার মাথা থেকে যায় না। আমি নিজেকে প্রশ্ন করি, খুব কি ক্ষতি হত সত্য কথাটা বললে। পৃথিবীর ঘূর্ণন কি থেমে যেত যদি আমি বলতাম, আমার সব লেখার অনুপ্রেরণা একজনই। আমার প্রতিটা বইয়ের উৎসর্গ পাতাটা আমি সাদা রাখি শুধু একজনের নাম লিখব বলে, প্রত্যেকটা বইয়ের প্রথম কপিটা আমি পাঠাই সুস্মিতার পুরনো ঠিকানায় যদিও জানি ও এখন আর থাকেনা সেখানে। পরক্ষনেই মনে হয়, কি দরকার বলার, সুস্মিতার হয়তো একটা সুন্দর ঘর আছে, সংসার আছে, থাকনা ও ওর মতো করে। আর কে জানে এখনকার সুস্মিতাকে হয়তো আমি ভালোও বাসি না। থাকনা আমার সুস্মিতা আমার মাঝে, আমার মতো করে। ভাবনার এই সব সময়ে আমি আশ্রয় নেই জীবনানন্দের কাছে আর বিড়বিড় করে আবৃতি করি...

আমি ঝরে যাব, তবু জীবন অগাধ
তোমারে রাখিবে ধরে সেইদিন পৃথিবীর ’পরে,-
আমার সকল গান তবুও তোমায় লক্ষ্য করে!

# হিল্লোল


মন্তব্য

সুরঞ্জনা এর ছবি

পড়তে ভালো লাগছিলো, বুদ্ধিদীপ্ত লাগছিল।
শেষ প্যারাটায় একদম জোলো হয়ে গেল, যেন জমজমাট রহস্য গল্পের মলাটের ভেতর টলটলে প্রেমের কাহিনী। মন খারাপ

লিখুন লিখুন, নিশ্চয়ই জমজমাট গল্প আসবে সামনে হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে আমারই ব্যর্থতা, জিনিসটা ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারি নি বোধ হয়। যাই হোক উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ।

হিল্লোল

অমি_বন্যা এর ছবি

ভালো লাগলো । লেখা চালু থাক । বাস্তবে এই সুস্মিতা আছে নাকি , হিল্লোল ভাই ?

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম কথা হল আমাকে ভাই বলে লজ্জা দিবেন না; বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিই পেরোতে পারি নি এখনো। সুতরাং তুমি বা তুই বলে, আমার কান ধরে লেখার ভুল ত্রুটি গুলো ধরিয়ে দিলেই খুশি হব।

আর সুস্মিতারা তো সব সময়েই থাকে, কি বলেন ?

হিল্লোল

তিথীডোর এর ছবি

আপনার টুকটাক মন্তব্য চোখে পড়ছিল কিছুদিন ধরে, এবার পোস্ট পড়লাম।
আমি ঝরে যাব, তবু জীবন অগাধ....?' -- শিরোনাম পছন্দ হয়েছে।
লিখতে থাকুন। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

ইয়ে আপু, সচলে কিন্তু এর আগেও আমার বেশ কয়েকটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। আর বইপড়ুয়া গ্রুপ থেকেই যেহেতু জানি আপনি কবিতা পাগল, সেক্ষেত্রে আপনার তো শিরোনাম পছন্দ হওয়ারই কথা হাসি

উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ।

হিল্লোল

তিথীডোর এর ছবি

আবার সেই কবিতা! ইয়ে, মানে...
আম্মুউউউউ... ওঁয়া ওঁয়া

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

হিমু এর ছবি

লেখার শেষে অনুগ্রহ করে ইমেইল ঠিকানা যোগ করে দেবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখিত পরেরবার থেকে দেব অবশ্যই।
আমার ইমেইল ঠিকানা

হিল্লোল

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হু, শেষ‌টা আসলেই চমৎকার শুরুটাকে মেরে দিল!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হিল্লোল এর ছবি

নাহ! পরেরবার থেকে সাবধান থাকতে হবে মন খারাপ পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি

তারেক অণু এর ছবি

শেষে দেখি লেখকের মতই টুইস্ট দিয়ে দিলেন!
লেখা চলুক চলুক

হিল্লোল এর ছবি

আর বইলেন না, শেষটা এখন আমার নিজেরই কেমন যেন লাগতেছে। যাই হোক পড়ার জন্য ধন্যবাদ অণুদা আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

"রাতের অন্ধকার" গড়াগড়ি দিয়া হাসি
আমার কিন্তু শেষটাও ভালো লাগসে। হাসি
যাক, বিখ্যাত হইলে তাইলে অ্যাম্নে সাক্ষাতকার দিবেন। গুড গুড। দেঁতো হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

হিল্লোল এর ছবি

বিখ্যাত তো আর হইতে পারব না তাই চামে একটা সাক্ষাৎকার দিয়েই দিলাম হাসি

অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ক্রেসিডা এর ছবি

আমারো ভালো লাগছে হিল্লোল ভাই।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

হিল্লোল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- । তবে দয়া করে ভাই বলবেন না, লজ্জা পাই লইজ্জা লাগে কারণ আমি আপনার বেশ ছোটই হব। তুমি এমনকি তুইও চলতে পারে হাসি

ক্রেসিডা এর ছবি

ছোটদের লাজুক হলে খারাপ লাগে না দেঁতো হাসি ভাই আমার বয়েস ততো বেশী না মন খারাপ

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

কড়িকাঠুরে এর ছবি

ভালৈছে... শেষটা হইয়া গ্যাছে আর কি... চলুক

হিল্লোল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

নিলয় নন্দী এর ছবি

শেষটা একটু বে-লাইনে চলে গেছে মনে হলো।
তবে ফার্স্ট পার্সনে না ভেবে, থার্ড পার্সনে গল্পের শেষটা পড়ে দেখুন স্বাদটা পালটে যাচ্ছে।
গল্প নিয়ে আরো ভাবনা চিন্তা করুন। আপনার হাত থেকে ভালো কাজ বেরোবে।
চলুক

ঈপ্সিত/চম্পাকলি এর ছবি

ভালো লেগেছে। আচ্ছা, শেষটায় সুস্মিতার বদলে যদি বেরোত সুস্মিত, আর সেই জন্যেই উনি 'অকৃতদার', তাহলে কি চমক হিসেবে বেটার হত? 'শেষটা জোলো' - এই নিন্দা হত না এটা ডেফিনিট। হাসি

হিল্লোল এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

হিল্লোল এর ছবি

আসলে ঠিকই বলেছেন। একটু তাড়াহুড়া করে ফেলতেছি আসলে। আরও সতর্ক হওয়ার চেষ্টা থাকবে। পড়ার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ইয়াসির এর ছবি

উৎসাহ দিলাম, আরও লেখেন পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

কি জানেন, লেখার শেষদিকের প্রতি পাঠকের একটা বিশেষ মনোযোগ থাকে, অন্যদিকে লেখকের থাকে শেষ করার তাড়া। এখানে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির বিচ্যুতি যত কমানো যায় ততই ভালো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।