আ লেটার টু বিএনপি এন্ড আওয়ামী লীগ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১০/০২/২০১৩ - ১১:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গতকাল শাহবাগ থেকে আসার পর সবগুলো পেপার পড়লাম। আর সাথে মিডিয়াতে খবরগুলো দেখলাম। শাহবাগের গণজাগরন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর টানা হেচরা ছিল চোখে পড়ার মতন।
মির্জা ফখরুল সাহেব জেল থেকে বের হয়ে বললেন এটা নাকি "তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন", বিএনপি পন্থি কিছু ব্যারিস্টার বললেন ট্রাইবুনাল ভেঙ্গে দিতে আর খালেদা জিয়া ম্যাডাম তো পুরাই চুপ।
আবার পক্ষান্তরে অর্থমন্ত্রী সাহেব বললেন "আমরা সন্তুষ্ট"। আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ সাহেবও কিছু জায়জায় বেশ কয়েকবার বক্তৃতা দিয়েছেন এ ব্যাপারে যে তারা খুবই খুশি। আবার গতকাল সৈয়দ আশরাফ সাহেবও একই ধরনের কথা বলেছেন। আমি এই দুই রাজনৈতিক দল এবং তাদের সদস্যদের প্রতি কিছু কথা লিখতে চাই,

টু বিএনপিঃ এখনো সময় আছে আপনারা নিজেদের সেন্স-এ আসেন। শাহবাগের এই আন্দোলনকে অন্য কোন দিকে নেয়ার চেষ্টা করবেন না। সারা বাংলার মানুষ আপনাদের মত ঘাস খায় না। মিস লীড করার চেষ্টা করলে সেটার ফলাফল আপনাদের জন্যই খারাপ হবে। আর জামাত ছেড়ে দিয়ে নরমাল রাস্তায় হাটেন। নাহলে আপনাদের গায়ে পারমানেন্ট ভাবে "মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি" তকমা টা লেগে যাবে। মনে রাখবেন ইটস অলরেডী লেইট ফর ইউ।

টু আওয়ামী লীগঃ আপনারা যদি মনে করে থাকেন এই গনজাগরনের মাধ্যমে আপনাদের প্রতি সাধারন মানুষের সমর্থন প্রকাশ পাচ্ছে, তাহলে সেটা ভাবা হবে চরম ভুল। এটা আপনাদের প্রতি সমর্থন নয়। এটা আপনাদের মনে করিয়ে দেয়া যে, পরিস্থিতি যে দিকেই যাক না কেন রাজাকার বিচারের ব্যাপারে সারা বাংলার মানুষ এক কাতারে। সুতরাং জামাত-শিবিরের ভয়েই হোক আর রাজনৈতিক চাল হিসাবেই হোক, রায় ম্যানিপুলেট করার কোন অধিকার আপনাদের দেই। রাজাকার বিচারের পক্ষে আমাদের কারো মনে কোন সন্দেহ থাকার কোন সুযোগ নাই। আপনারা কিছু ক্ষেত্রে গুটি কয়েক সাফল্য দেখাতে পারলেও সামগ্রীকভাবে সরকার পরিচালনায় ব্যার্থতার ছাপ রেখেছেন। ইন্টারনেট, ব্লগ, মিডিয়ার কল্যাণে সাধারন মানুষের কাছে সবধরনের ইনফরমেশন আছে। আপনারা চাইলেও আপনাদের ব্যার্থতা ঢাকতে পারবেন না।

সামগ্রীকভাবে জামাত নিয়ন্ত্রিত পত্রিকাগুলো যেভাবে ভুয়া রিপোর্ট ছাপাচ্ছে তাতে কিছু মানুষ বিভ্রান্তও হচ্ছে। যেমন আমার গ্রামের বাড়ী থেকে এক বন্ধু আমাকে ফোন করে বললো যে আসলে কি হচ্ছে ওখানে, ওখানে নাকি লীগের মানুষে ভরা।এই সেই। তারপর আমি তার ভুল ভাংগালাম। সুতরাং জামাতের এইসব পত্রিকা ও মিডিয়ার বিরুদ্ধে একটা স্টেপ নেয়ার এখনি সময়। কারন দেরি হয়ে গেলে সমস্যাটা বাড়বে।

ধন্যবাদ
‌Y


মন্তব্য

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

"দেরি হয়ে গেলে সমস্যা বাড়বে"

চলুক

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

দৃশ্যতঃ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ বেশ কিছুটা ডিফেন্সিভ অবস্থানে চলে গিয়েছিল, হয়তো তার বাস্তব কারনও ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ছাড়াও নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য আরও কয়েকটি বড় মাপের দায়বদ্ধতা ছিল, যেমন-
১. বিদ্যুত, গ্যাস, পানি সমস্যার সমাধান
২. পদ্মা সেতু নির্মান সহ ঢাকা এবং সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন
৩. আইন শৃঙ্খলা এবং দুর্নীতি পরিস্থিতির উন্নয়ন
৪. কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি সহ দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা
৫. ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মান
ইত্যাদি।

এ বিষয়গুলোর কতটুকু অর্জিত হয়েছে, কতটুকু ব্যর্থতায় পর্যবাসিত হয়েছে সে বিষয়ে কম বেশী সবাই অবহিত আছেন। সেই সাথে এ বিষয়টিও সবার জানা আছে যে সাফল্য কম বেশী যাই থাক, প্রথম তিনটি বিষয় নিয়ে সরকার লেজেগোবরের চুরান্ত করেছে। তার সাথে ফাও কিছু বিষয় যেমন বিডিআর কান্ড, ইউনুস ইস্যু, আড়িয়াল বিল, শেয়ার বাজার, ডেসটিনি কান্ড, হলমার্ক কান্ড, ইত্যাদি যুক্ত হয়ে সরকারের সব রস নিংড়ে নিয়েছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার সংগঠনের জন্য যে পরিমান দৃঢ়তার প্রয়োজন ছিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য প্রয়োজন ছিল তার চেয়ে বেশী দৃঢ়তার। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এ বিষয়েও সরকারের কাজে কর্মে নানা অদক্ষতা প্রকট হয়ে ওঠে। বিচার প্রকৃয়ার প্রথম থেকেই বিএনপি'র বিচার বিরোধী অবস্থান এবং শেষ পর্যায়ে এসে পর্যায়ে এসে জামাত শিবিরের মিলিটান্ট অবস্থানের বিপরীতে সরকারের রক্ষনাত্মক রুপটি পরিস্কার ফুটে ওঠে। তরুন প্রজন্ম আরও আগে জামাতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে বিচারের রায় অন্যরকম হতে পারতো, হানিফের এই বক্তব্যও যথেষ্ট প্রনিধানযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির প্রকৃত শক্তি এবং বিচার ইস্যুতে তাদের নৈতিক সমর্থনের বিষয়টি হয়তো আওয়ামী লীগ অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

তবুও যত যাই হোক, বিচারের কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে হলে আপাততঃ এই সরকারই ভরসা। চুরান্ত সাফল্য অর্জনের জন্য সরকারের অন্তর্নিহিত দুর্বলতার পরিপূরন এবং বহিস্থঃ বিরোধীতা ও ষঢ়যন্ত্রকে চুর্ন বিচুর্ন করনের কাজটি সমানভাবে চালিয়ে যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ন।

অতিথি লেখক এর ছবি

যতার্থ বলেছেন ভাই।

অমিত এর ছবি

সহমত।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।