পিচ্চিগপ - সাপ পালক

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১৬/০৬/২০১৩ - ৯:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অবশেষে সাপ পালক বালকটি সাপের ছোবলে মারা গেল। তার মৃত্যুতে তার মায়ের কান্না দেখে আমার সাপ পালক হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু! সেই স্বপ্ন পুরনের লক্ষ্যে বাজার থেকে সাপও কিনে আনলাম, সাথে দুধ -কলা। সেই থেকে দুধ-কলা খাইয়ে আমি সাপ পালা শুরু।

আমার সাপ পালার ব্যাপারটা আমার মা মেনে নিতে পারছেন না। আমার মা খুব কান্নাকাটি করেন, এসব তার কাছে পাগলামি লাগে। মা মনে করেন এসব পাগলামির জন্য জীন ভুত দায়ী। তাই তাদের তাড়াতে মাঝেমাঝে বাড়িতে পীর ফকিদের আসর বসে।আমি আবার পীর ফকিরদের খুব ভক্ত। কারণ তাদের কাজকারবার আমারে খুব বিনোদিত করে। এতসব করে যখন মা আমার পাগলামি ছাড়াতে পারেনা, তখন সামনে বিরক্ত হয়ে বলে আমার মৃত্যু নাকি সাপের ছোবলে হবে! আর পিছনে দাদীকে গিয়ে ধন্যা দেন যেন দাদী এসে যেন আমারে বলেন এসব পাগলামি ছেড়ে দিতে।

অথচ আমার মৃত্যু কেমনে হবে সেটা অনেক আগেই একজন ঠিক করে রেখেছে। সে ছিল আমার বিজনেস পাটনার। আমরা একসাথে পাতার ব্যবসা করতাম। সে পাতা কুড়াত আমি সেটা ঝুড়িতে ভরে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতাম! পাতা বিক্রি করা টাকা দিয়ে আমি কিনতাম ফড়িঙ, রংধনু আর অচিন দেশ থেকে উড়ে আশা তুলা। আর সে কিনত বিষ। বিষ কিনে জমিয়ে রাখতো একটা টিনের ট্যাঙ্কে। আমাকে প্রতিদিন একবার করে মনে করিয়ে দিত তার টিনের ট্যাঙ্কে জমানো বিষে আমার মরন হবে।

একদিন ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা খুলে দেখলাম একটা চিরকুট দরজার সমানে ফেলা। চিরকুটটা আমার বিজনেস পাটনারের লেখা। সে লিখছে – সে তুলার সাথে অচিন দেশে উড়াল দিছে, সাথে করে টিনের ট্যাঙ্কটি নিয়ে গেল। আমি যেন ফড়িঙ আর রংধনু নিয়ে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেই।

ফড়িঙ আর রংধনু নিয়ে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে আমার কোন আপত্তি নাই, যদি আমার মরণ হয় বিষে। সে বিষ সাপের হউক আর টিনের ট্যাঙ্কে জমানো বিষ হউক।

----------------------
মাসুম আহমদ


মন্তব্য

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

বাহ!
মনে হল বুঝে গিয়েছি কি বলতে চেয়েছেন।
তখন ভাবলাম, সত্যিই কি বুঝেছি?
তখনই আবার বুঝলাম, কিছুই বুঝিনি।

ফড়িং আর রংধনু নিয়ে কাটানো জীবন কেমন হয় সেটা জানার অনেক সাধ আমার মনের মধ্যে।

মাসুম এর ছবি

ফড়িং আর রংধনু নিয়ে কাটানো জীবন কেমন হয় সেটা জানার অনেক সাধ আমার মনের মধ্যেও আছে!

গপ পড়ার জন্যে ধন্যবাদ

আলতাইর এর ছবি

কিসসু বলার নাই গুরু......... গুরু গুরু

মাসুম এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক এর ছবি

অইব, অইব বিষেই অইব নে, অহন তো বাঁইচ‌্যা থাউক!
ভালা হইসে।
- একলহমা

মাসুম এর ছবি

ধন্যবাদ

স্পর্শ এর ছবি

দারুণ! উত্তম জাঝা!

ঝরঝরে গল্প। আরো লিখুন!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মাসুম এর ছবি

উৎসাহিত হলাম ! ধন্যবাদ আপনাকে

রিক্তা এর ছবি

সহজ ভাষায় এমন জটিল গল্প! ভালো পাইছি।

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

মাসুম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।