আদিবাসী উচ্ছেদ কি বন্ধ হবে না কখনো !

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ২২/০৬/২০১৩ - ১১:০৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সারি সারি পাহাড়ের সঙ্গম , ঘন অরন্যের নিশ্চুপ পরিবেশ , সৌন্দর্যের লীলাভূমির কথা মনে করলেই আমাদের চোখে ভেষে ওঠে বান্দরবানের চেহারা । বাংলাদেরশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম স্থান , বিদেশী পর্যটকদের পছন্দের জায়গা । বান্দবানের পাহাড়ি সৌন্দর্যের মধ্যে যে সুর বিরাজ করছে সেই সুরের ছন্দ হচ্ছে পাহাড়ের গায়ে গায়ে বসবাস করা আদিবাসী মানুষ ও তাঁদের পাড়া গুলো । পাহাড়ের শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আদিবাসীরা নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বসবাস করে আসছে আনাদিকাল ধরে । আদিবাসী ছাড়া পাহাড়ি সৌন্দর্য যেন প্রান পায় না ।বান্দরবান জেলার দুর্গম ও দূরবর্তী একটি উপজেলার নাম নাইক্ষ্যংছড়ি , এর পাঁচটি মৌজা – ঈদগড়, আলেক্ষ্যং , বাইসারী , বাকখালি ও কোয়াংঝিরিতে বাস করে মারমা , চাক , ম্রো , ত্রিপুরা, চাকমা আদিবাসী ছারাও বাঙালি হিন্দু ও মুসলিম পরিবার । সেখানে আদিবাসী পরিবারের সংখ্যা সাতশ। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আলেক্ষ্যং মৌজার বাদোঝিরিতে সর্বমোট ২১ টি চাক পরিবারের সব কটি পরিবারকে উচ্ছেদ করে দেয়া হয় -------

ব্রিটিশ আমল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা বার বার উচ্ছেদ হয়ে আসছেন । ১৮৮০ এর দশক থেকে সংরক্ষিত বনভূমি স্থাপনের নামে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং এখনও সেই প্রক্রিয়া চলছে ।১৯৬০ সালে কাপ্তাই জল বিদ্যৎ প্রকল্প স্থাপনের সময় বেশকিছু আদিবাসী উচ্ছেদ হয় । পরবর্তী সময়ে সরকারি প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায়, ১৯৮০ সাল থেকে বেশ কিছু বছর, বাঙালি পুনর্বাসন কার্যক্রমের ফলে হাজার হাজার আদিবাসী পরিবার নিজ ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে যায় , সে ঘটনা গুলো যদি আমরা বিচার করি তাহলে অবশ্য ধরে নিতে পারি যে বাদোঝিরির চাক আদিবাসী উচ্ছেদ কোন নতুন ঘটনা নয় । পুরো অঞ্চল জুড়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আদিবাসী উচ্ছেদের করুণ ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত ,২১ টি চাক পরিবার একটি নতুন সংযোজন মাত্র । এদিকে লামা উপজেলার লুলাইং ইউনিয়ানের ২১০ টি মুরং পরিবার উচ্ছেদ আতংকে দিনযাপন করছে , তাঁদের কে নানা ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে , বাড়ীর বৌ ঝিদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে তাদের কে তাঁদের পাড়া ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে । আমরা সমতলের মানুষেরা এই সব অসহায় আদিবাসির কান্না শুনতে পাচ্ছি না তাঁদের খবরও আমরা রাখি না । ২১ টি চাক পরিবার কেন তাঁদের ভিটেমাটি ছেড়ে চলে গেল ?
জেনে নেই তাঁদের করুন কাহিনী ----------------
পূর্বে এই চাক পরিবার গুলো জুম চাষ করে জীবন নির্বাহ করতো । ভালই চলছিল শান্ত নির্বিরোধ আদিবাসীদের জীবন । কিন্তু হঠাৎ করে একটি নতুন বিপদের সম্মুখীন হল , চাক পরিবার এর মানুষ গুলো যখন তাঁদের নিত্যদিনের বাজার , সওদা , নিয়ে বাড়ী ফিরে আসে প্রায়ই পথিমধ্যে তাঁদের বাজার ডাকাতি হয়ে যায় , তারা তাঁদের কোন প্রয়োজনীয় জিনিষ নিয়ে ঘরে ফিরতে পারে না , তাঁদের কোচরে , পকেটে যে সব টাকা পয়সা থাকে তাও ডাকাতেরা নিয়ে যায় । এত কিছুর পরেও এই পরিবার গুলো তাঁদের ভিটেমাটি ছেড়ে যায় না , একদিন হঠাৎ ( ১মারচ ২০১৩ ) চাক পাড়ায় গণ ডাকাতি হয় । আতঙ্কিত হয়ে নিরীহ চাক পরিবার গুলো তাঁদের ভিটেমাটি ছেড়ে পাশের মৌজা বাইসারিতে চলে যায় অর্থাৎ এক প্রকার পালিয়ে বাঁচে । প্রশ্ন হচ্ছে এই গহীন অরন্যে বসবাসরত গরীব চাক পরিবার গুলোকে লুট করে কার কি লাভ ? এরা তো নিতান্তই গরীব মানুষ এদের কাছে এমন কোন মুল্যবান সম্পত্তি নেই যেগুলো লুট করে বিশাল সম্পদের অধিকারী হতে পারবে ডাকাতেরা । তাহলে কেন এই লুটতরাজ ? মনে নিশ্চই প্রশ্ন জাগে ? ২১ টি চাক পরিবারের প্রতিবেশি কারা ?
গহীন অরন্যে , ঘন জঙ্গলের মধ্যে , যেখানে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল করতে পারেনা , দুর্গম পথ পারি দিয়ে , কখনো পায়ে হেটে কখন ভাড়ায় চালিত মটর বাইক দিয়ে পৌছাতে হয় চাক পাড়ায় । অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি চাক পাড়ার পাশেই গড়ে উঠেছে সারি সারি বিশাল সব রাবার বাগান । কিন্তু এই বাগান গুলোর মালিক স্থানীয় কেউ নন । তাহলে কারা এই গহীন অরন্যে এসে একরের পর একর জমি দখল করে রাবার চাষ করছে ? সরেজমিনে তদন্ত্য করে যে সব মানুষের নাম উঠে এসেছে , তা শুনলে সত্যি বোঝা যায় আমরা কি রকম একটি অসুস্থ সমাজে বসবাস করছি , আমাদের শাসকরাই যুগের পর যুগ শোষণ করে আসছে তাঁদের সাথে যুক্ত হয়েছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর প্রভাবশালী ও বিত্তশালী মানুষেরা । তারা সেখানে রাবার বাগান করছে নিজেদের সম্পদের পরিমান বাড়াচ্ছে , ঠাট – বাট বাড়াচ্ছে । প্রথমে কেউ হয়ত ৫ একর জমি লিজ নিল কিন্তু ৫ বছর পড়ে দেখা যাবে সেই পাঁচ একর জমি বেড়ে গিয়ে ৫০ / ১০০ একর হয়ে যাচ্ছে , কিন্তু কথা হচ্ছে এই সকল বাড়তি জমি গুলো কথা থেকে আসছে ? কে এই জমি গুলোর প্রকৃত মালিক ? যারা দখল করছে তারা কি , ভুমিদস্যু? কেউ কি টাকার লোভ দেখিয়ে এই কজা গুলো স্থানীয় মানুষদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে ? আদিবাসীদের জমি দখল হয়ে রাবার চাষ হওয়া মানেই হচ্ছে তাঁদের জুম চাষের জমি কমে যাচ্ছে বা নাই হয়ে যাচ্ছে । তাহলে এই আদিবাসী মানুষ গুলো কিভাবে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করছে ?
প্রথা অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন জমি অধিগ্রহন করতে চাইলে অবশ্যই রাজার অনুমতি লাগবে । আদিবাসী রাজারা তাঁদের খাজনা আদায় করার জন্য প্রতিটি মৌজায় একটি করে ‘হেড ম্যান ‘ নিযুক্ত করেন । এই হেড ম্যানরা বংশ পরম্পরায় রাজা কর্তৃক নির্বাচিত হয়ে আসছে । এক কথায় বলতে গেলে রাজাদের প্রতিনিধি হচ্ছে হেডম্যান, এই হেডম্যানদের সুপারিশেই পাহাড়ে যত নিয়ম কানুন , আইন প্রনয়ন হয় , জমি অধিগ্রহণ ইত্যাদি হয়ে থাকে। জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াটি একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় , এই সিন্ডিকেটে আছে প্রভাবশালী বাগান মালিক , স্থানীয় চেয়ার ম্যান, আদিবাসী হেড ম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গ , বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক স্থানীয় ছাত্র নেতা সহ দাগী আসামিরা । জানা গেছে বাইসরির সাবেক চেয়ার ম্যান ও দাগী আসামী ফারুক চ্যেয়ার ম্যান বাইসরি আওয়ামীলীগের সভাপতি আলম মাঝি , হাবিব মাঝি , শ্রমিক লীগ নেতা জাফর , সাবেক মেম্বার আব্দুল জব্বর ফরাজি , আগে বিএনপি বর্তমানে আওয়ামীলীগ নেতা ইসহাক জমাদার এই কাজে জড়িত , তারা তাঁদের সাথে স্থানীয় প্রশাসন কে নিয়ে নিয়েছে । যেহেতু জমি অধিগ্রহণ করতে হলে হেড ম্যান এর কাছ থেকে রিপোর্ট প্রয়োজন হয় সেহেতু , হেড ম্যানদের বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে, কখনো টাকার লোভ কখনো মদের লোভ দেখিয়ে সিন্ডিকেটের সদস্যরা রিপোর্ট সংগ্রহ করে নেন । এক কথায় হেড ম্যানদের ঘুষ দিয়ে রিপোর্ট সংগ্রহ করে নেয় । এক জন হেড ম্যান চাইলে ৫ একর পর্যন্ত আদিবাসী মালিকানাধিন জমি অধিগ্রহণের নোটিস দিতে পারে , যদিও ১৯৯৭ ও ২০০১ সালে সরকারি প্রশাসনের নোটিশ অনুযায়ী হেড ম্যানদের কে এই ধরনের রিপোর্ট দেয়া বারন করা হয়েছে । কিন্তু অশিক্ষিত এই হেড ম্যানরা অনেক সময় সিন্ডিকেটের ভয়ের কারনেও রিপোর্ট দিতে বাধ্য হয় । বেশির ভাগ সময় দেখা যায় ভুমি দস্যুরা ৫ একর জমির কথা বলে ১০ একর জমি নিয়ে নিচ্ছে , অশিক্ষিত হেড ম্যান ও আদিবাসীরা বুঝতে পারেনা । আশ্রয়হীন মানুষগুলো স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে পারেনা , চা কোম্পানির অধিনে ৩০০০/৩৫০০ টাকা বেতনে চাকরি করতে হয় , কেউ যদি চাকরি করতে রাজি না হয় , তার জীবনে নেমে আসে নানা ধরনে অশান্তি , ভোগান্তি । জুম বাগান পরিনত হয় রাবার বাগানে । স্বাধীন জুমিয়ারা হয়ে যায় রাবার কোম্পানি মালিকদের দাস ।
সাম্প্রতিক কালে ১৩ মার্চ ২০১৩ তারিখে বাদঝিরির ( আলেক্ষ্যং মৌজার ) ২১ টি চাক পরিবার উচ্ছেদের ঘটনায় পাহাড়ি কাপেং ফাউনডেশানের আদিবাসী সদস্যরা উৎকণ্ঠিত হয়ে বিভিন্ন পেশার ,শিক্ষক , রাজনীতিবিদ , গণমাধ্যম প্রতিনিধি ,মানবাধিকার কর্মীদের একটি সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে গত ১৪ জুন ২০১৩ নাইক্ষ্যং ছড়ি যান এবং ১৫ জুন প্রতিনিধি দল ভুক্তভুগি জনগনের সাথে কথা বলেন সে টিমের নেতৃত্ব দেন ন্যাপ ঐক্য এর সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য । বাইসরি থানার এস আই আব্দুল হান্নান প্রতিনিধি দলের কাছে ১৩ মার্চের ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেন । জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন যে তিনি এই বিষয়ে অবগত আছেন এবং আইন গত ব্যাবস্থা নিবেন যদিও তিনি বলতে চাচ্ছেন , বৃষ্টির কারণেই চাক পরিবার গুলো বাদোঝিরিতে ফিরে যাচ্ছে না কিন্তু ভিকটিম আদিবাসীরা বলছে অন্য কথা , তারা বলছে নিরাপত্তার অভাবের কারনেই তারা তাঁদের নিজ ভিটায় ফিরতে পারছেনা ।
বোমাং সার্কেলের চিফ বোমাংগ্রী উ চ প্রু বলেন , সব জমি যদি লিজ নিয়ে রাবার আর তামাক চাষ করা হয় তাহলে জুমিয়ারা কোথায় যাবে , অন্যের কৃতদাস হওয়া ছারা তাঁদের তো কোন পথা খোলা নাই । তিনি আরও বলেন সকল সেটেল ম্যানটের অধিকর্তা জেলা প্রসাসক, তাই ভুমি অধিকারের প্রশ্নে সরকার , আঞ্চলিক পরিষদ , রাজা ও হেডম্যান- কারবারিদের সমন্বয় থাকা দরকার । রাজা দেবাশীষ রায়ের মতে হেডম্যান সব কিছুর জন্য দায়ি নন , গোটা বিষয়টিতে নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত , বেশির ভাগ সময় দেখা যায় হেডম্যানরা নিজের ও পরিবারে রক্ষার তাগিদে এই সব অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যান । রাজা দেবাশীষ রায় আরও বলেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের । পার্বত্য চট্টগ্রাম , বান্দরবান এর প্রতিটি মেয়র বাঙালি , নাইক্ষ্যাংছড়ির সব কয়টি ইউনিয়ান ও উপজেলা চেয়ারম্যান বাঙালি , তাহলে আগামিতে পাহাড়িদের প্রতিনিধিত্ত করবে কারা ? প্রতিনিধি টিম যখন লামা থেকে সরই ইউনিয়ানের দুর্গম পাহাড়ি পথ দিয়ে যান তখন পথে কোন আদিবাসী জনগনের বসতি চোখে পরেনি যা কিনা পাহাড়ী চিত্রের সাথে বেমানান , কোথায় গেল এই মানুষ গুলো ? বরঞ্চ সরই থেকে লুলাংএর দুর্গম পথে চোখে পড়েছে কোয়ান্টাম মেথডের বিশাল সাম্রাজ্য । প্রতিনিধি টিমের প্রধান ন্যাপ ঐক্য সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্যের বলেছেন স্বৈরাচার এরশাদের সময় থেকে গত ২৫/৩০ বছর ধরে ১৬০০ শোষক শ্রেণী নাইক্ষ্যাংছরিতে একরের পর একর জমি লিজ নিয়ে রেখেছে এবং নতুন ঔপনিবেশ তৈরে করেছে , এর মধ্যে আছে – মির্জা আব্বাস , আ স ম রব, ডেস্টিনি গ্রুপ , চিত্র নায়ক সোহেল রানা, পিএইচপির সুফি মিজানুর রহমান, মেরিডিয়ান গ্রুপ, ইউসিবিএল এর জাফর আহ্মমেদ চৌ , বিভিন্ন সাহিত্যিক , সাংবাদিক সহ আরও অনেকেই । এবং এই সকল প্রাজ্ঞ বিজ্ঞ জনেরা শহরে বসে তাঁদের সম্পদের পরিমান বাড়ান , সেই সব সম্পত্তি দেখভালের জন্য নিয়োগ করেন স্থানিয় ছাত্রলিগ , ছাত্রদল সহ বিভিন্ন ধরনের ক্যাডার বাহিনী । যারা কিনা পরবর্তীতে জমির পরিমান আরও বাড়িয়ে দেন , জবর দখলের মাধ্যমে।
নাইক্ষ্যাংছরি থেকে ফিরে এই প্রতিনিধি টিম সংশ্লিষ্ট কর্ত্রীপক্ষের কাছে একটি সুপারিশমালা উত্থাপন করেন ।
১/ নিরাপদ নির্বিঘ্ন স্বাধীন জিবন জাপনের জন্য আদিবাসীদের প্রটেকশান দেয়া হউক ।
২/ অবিলম্বে বাদঝিরির উচ্ছেদকৃত ২১ পরিবার সহ অন্যান্যদের বাস্তু ভিটা ফেরত দেয়া হউক , এবং স্ব স্ব স্থানে পুরনবাসন করা হউক ।
৩/ লামার সরই ইউনিয়ানের ২১০টি ম্রো পরিবারের নিজ বসত ভিটায় থাকার বিষয়টি সুনিশ্চিত করনে অতিদ্রুত কার্যকর প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নেয়া হউক ।
৪/ এইভাবে জমি লিজ নেয়া ঔপনিবেশিক ও অগনতান্ত্রিক আচরন , সেই কারনে এই সকল ইজারা অবৈধ বলে ঘোষণা দেয়া হউক ।
৫ / উচ্ছেদের শিকার প্রত্যেক আদিবাসী পরিবারকে ৫ একর করে জমি দিতে হবে যা কিনা আভ্যন্তরীণ ভাবে হস্তান্তর যোগ্য হবে।
৬/ আদিবাসীদের কার্যকারী শ্রমদেয়ার জন্য প্রশিক্ষন দেয়া হউক ।
৭/ পার্বত্য ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি আইন ৩০ জুন ২০১২ আন্তঃমন্ত্রনালয় ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংশোধনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন করে পাহাড়ে ভুমি সমস্যার নিরসন করা হউক ।
জানিনা , এই সুপারিশমালা আদৌ কার্যকর হবে কি না । এই সব অসহায় মানুষ গুলো সুবিচার পাবে কিনা , তাঁদের পূর্বপুরুষের ভিটামাটি তারা রক্ষা করতে পারবে কি না । যুগের পর যুগ আদিবাসী অসহায় মানুষগুলো যে ভাবে ভুমিহারা , সর্বস্ব হারা হচ্ছে এ জন্য দায়ি কারা ? প্রসাশন কেন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না । পাহাড়ের ভুমিজ সন্তানেরা আজ কোথায় উধাও হয়ে যাচ্ছে ? ভুমি দস্যুদের হাতে চলে যাচ্ছে আদিবাসীদের চিরপরিচিত জুম ভুমি , তাঁদের প্রিয় পাহাড়ের জীবন । এই অসহায় মানুষ গুলো কি কখনো সুবিচার পাবে ?

( তথ্য সুত্র ঃ নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামায় চাক এবং ম্রো গ্রাম উচ্ছেদে বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন এর পর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এর প্রতিবেদন থেকে এবং ন্যাপ ঐক্য সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য )

শায়লা আহম্মেদ লোপা


মন্তব্য

রাহী এর ছবি

খুব জরুরি লেখা। তবে আরও গুছানো হতে পারতো

মন খারাপ এধরনের লেখা পড়লে মানুষ হিসেবে নিজেকে খুব ছোট লাগে। কিছু অসাধু মানুষের কারনে যখন পাহাড়ে যাই, নিজের মধ্যে একটা হীনমন্যতা কাজ করে।

অচল  এর ছবি

মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
এই তো সেই লেখা - যা সাংবাদিকতাকে তুলে আনছে আধুনিক যুগে (একটু আগেই আধুনিক সাংবাদিকতার এই দিকটি নিয়ে পান্থ-র চমৎকার লেখাটি পড়ে এলাম)। এবার দরকার যাদের যাদের দ্বারা সম্ভব এমন মানুষদের এই লেখা নিয়ে খোঁজ-খবর করা আর তার পর যার যার মত করে ছড়িয়ে দেওয়া সেই সব খবর। (তার পর? আগে তো সেটুকুই হোক, তাই না?)
- একলহমা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।