মজিদ এবং তার বিশ্বাস (শেষ অংশ)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১৩/০৪/২০১৪ - ১২:৩৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম অংশ
-----------

‘এইডা আপনে কি কন সোলিমান ভাই?’ গ্যারেজ মালিক সোলাইমান মুন্সি নিয়মিতের চেয়ে পঞ্চাশ টাকা বেশি দাবি করায় মজিদ আঁতকে উঠে। সকালের ঝামেলার কারণে আয় কম হওয়ায় মজিদ একটু বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেছে সেটা পুষিয়ে নিতে। কিন্তু তাতেও তার দেড় দুইশ’ টাকা কম আয় হয়। কিন্তু গ্যারেজ মালিক কিছুতেই সেটি বিবেচনায় নিতে রাজী নয়।

‘তুমি মনে হয় নয়া আমার গ্যারেজে আইছ? এই নিয়মতো আইজকারনা? তোমার রিস্‌কা জমা দেওনের কথা সন্ধ্যা সাতটার সময়, তুমি আইছ নয়টার সময়, হিসাবে তোমার আশি টেকা বেশি দেওনের কথা। আমি তিরিশ টেকা কম লইতাছি এইডা আমার অপরাধ হইছে?’

‘আপনেরেত কইলাম সোলিমান ভাই। আমারও ত সংসার চালাইতে হয়, নাকি? একটু বিবেচনা করেন?’

‘আইজ এই গফ, কাইল ঐ গফ এইগুলা হবেনা মজিদ মিয়া। তোমার পোষাইলে আইবা, না পোষাইলে নাই। গ্যারেজেরত অভাব নাই, নাকি আছে?’

মজিদ আর কথা বাড়ায়না। সোলাইমান মুন্সিকে কষে একটা গালি দিয়ে হাঁটা শুরু করে সে। সকালের সেই লোকটি গালি দিতে গিয়েও আটকে যায় তার। যাবে নাকি লোকটাকে দেখতে? ভাবে সে। কিন্তু পুলিশের ভয়ে আর যাওয়া হয়না। কী দরকার মিছেমিছি ফ্যাসাদে জড়ানোর? মনে মনে একটা লোভও যে মজিদের কাজ করেনা তা নয়। যদি লোকটা বেঁচে থাকে তাহলে কিছু বকশিস সে নির্ঘাত পাবে। কিন্তু যাওয়া হয়না। বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে রাস্তার টং দোকানে বসে চা খায় সে।

‘আপনে এতো দেরি কইরা আইলেন ক্যান?’ বস্তিতে ঢুকতেই রাহেলা খাতুনের অভিযোগ। মজিদ পাত্তা দেয়না খুব একটা। গামছা নিয়ে কল পাড়ে যায়। হাত পা ধুয়ে ভেজা গামছা দিয়ে ভালো করে মুছে নেয় শরীরটা। গোসল করতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু তীব্র ঠাণ্ডায় সেটা আর করা হয়না মজিদের। বস্তিতে ঢুকেই আবার বিড়ি ধরায় সে।

‘আপনে কিছু কন না ক্যা? আমার ডর করতাছে’।

রাহেলা বেগমর আতঙ্কিত কণ্ঠ শুনে মজিদ চোখ তুলে দেখে তাকে। ‘ক্যান? কী হইছে?’

‘রক্ত যাইতাছে সকাল থেইক্যা’।

মাজিদ হকচকিয়ে জিজ্ঞেস করে ‘মায়ের কাছে কইছস?’ এই ব্যাপারগুলো সে ঠিক বুঝেনা। মা’ই একমাত্র ভরসা। সে মা’কে ডাকে ‘আম্মা? ও আম্মা?’

ফুলবানু বেগম পাশের বস্তি থেকেই মজিদের গলা শুনে ঘরে আসে। ‘কি হইছে মজিদ? ডাকছ ক্যা?’

‘তুমার বউয়ের কী হইছে? ডাক্তার বৈদ্য করণ লাগব নাকি আবার?’ মজিদ উৎকণ্ঠিত ভাবে মাকে জিজ্ঞেস করে। একেতো আয় কম হয়েছে, তার উপরে রাহেলা খাতুনের কথা শুনে সে একই সাথে বিরক্ত এবং উৎকণ্ঠিত হয়।

‘আরে কিচ্ছু হয়নাই। বাচ্চায় গোসল দিছে, আল্লাহপাক তোর পোলারে পবিত্র করছে। তোর এত ভাবন লাগব না। তয় সমুইডা খারাপ, তুই একবার হুজুরের কাছ থেইক্যা তেল পরা আর একটা তাবিজ লইয়া আহিস কাইল। এইসমুই খারাপ জ্বিন ভুতের আছর লাগে’।

সারারাত রাহেলা খাতুনের গোঙানির কারণে মজিদের ঘুম হয়না। রাত না পোহাতেই সে মায়ের কথামত হুজুরের মাজারের দিকে রওনা হয়। সাত তাড়াতাড়ি তাবিজ আর তেল পড়া এনে মায়ের হাতে দিয়ে বের হয় রিক্সা নিয়ে। নিজের ভিতর একধরণের উৎকণ্ঠা কাজ করে পোয়াতি বউয়ের জন্য। কিন্তু বের না হয়ে উপায় নেই। নিজাম উদ্দিন রোডে নীরব হোটেলের খেপ ছেড়ে সে চংখার পুল এসে থামে। পেট্রোল পাম্পের কাছে রিক্সার মিস্ত্রির জিম্মা রিক্সাটা রেখে সে কৌতূহল বসত ইমার্জেন্সির গেইটে যায়। একটু খানি উঁকি দিতেই গতকালের ওয়ার্ড বয়ের সাথে চোখা চোখি হয়ে যায়। মজিদ পাশ কাটানোর চেষ্টা করলেও ওয়ার্ড বয়টি ঠিক চিনে ফেলে মজিদকে। মজিদ দ্রুত বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করলেও ওয়ার্ড বয়টি ধরে ফেলে মজিদকে।

‘তুমি যাও কই? তোমারে হেই লোক খুঁজতাছে গতকাল রাত থেকে! তুমি মিয়া হাওয়া হই গেলা ক্যান?’

‘উনি বাইচ্যা আছে?’

‘তুমি কি ভাবছ? মইরা যাইব? তুমি ঠিক সময় হসপিটালে না আনলে অবশ্য কি হইত কওন যায়না। জ্ঞান ফিরার পর থেইকাইত তোমারে খুঁজ করতাছে মিয়া’।

মজিদ হালকা বোধ করে নিজেকে। যাক! পুলিশের ঝামেলা হবেনা মনে হয়। সে ওয়ার্ড বয়ের সাথে লোকটির শয্যা পাশে যায়। মজিদ চিনতে পারলেও লোকটি তাকে চিনতে পারেনা। পাশে একটি পাঁচ সাত বছরের ছেলে ও এক মহিলা বসা। স্ত্রী সন্তান বলেই বুঝে নেয় মজিদ। গামছা দিয়ে মুখটা মুছে নিজের পরিচয় দেয় মজিদ। লোকটি উঠে বসার চেষ্টা করে, কিন্তু মহিলাটি নিষেধ করেন। মজিদও নিষেধ করে। গোটা পেট জুড়েই ব্যান্ডেজ। জানা যায় লোকটির নাম সিরাজুল ইসলাম। তিনি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের একাউন্টেন্ট। বেশ কৃতজ্ঞতার সুরেই কথা বলেন মজিদের সাথে। মজিদের ভালো লাগে। সে হাসি মুখে বলে ‘সব আল্লার ইচ্ছা, আমি উছিলা মাত্র’।

মজিদের বউ অন্তঃসত্ত্বা জেনে সিরাজ সাহেব জিজ্ঞেস করেন ডাক্তার দেখিয়েছে কিনা। দশ পনের দিন পরে তিনি সুস্থ হলে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গেলে উনি নিজেই সব ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। মজিদও খুশি হয় । বলে-‘আলহামদুল্লিলাহ্‌। ডাক্তার এখনো দেখাই নাই স্যার। বাচ্চা গোসল দিছেতো তাই যাই নাই। যাবো সামনে।’

সিরাজ সাহেব হকচকিয়ে জিজ্ঞেস করেন ‘এইমাত্রনা বললে সাড়ে তিনমাস? গোসল দিছে মানে কী’?

‘স্যার দেহি কিছু জানেন না এই বিষয়ে!’ মজিদ হেসে বলে। ‘বাচ্চা পেটে থাহার কালে ধরেন আল্লাহ্‌ যদি মনে করে যে বাচ্চারে পবিত্র করন দরকার, তাইলে পেটের ভিতরেই গোসলের ব্যবস্থা করে আল্লাহ'।

‘তোমাকে এইসব আজগুবি কথা কে বলেছে বলতো? সব বাচ্চাই পবিত্র। নতুন করে পবিত্র করার কিছু নেই’। কথা শুনে মজিদ হাসে আবার। সিরাজ সাহেব আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করেন -‘তা তুমি বুঝলে কীভাবে বাচ্চা গোসল দিয়েছে?’

‘স্যার মুরুব্বিদের কাছে শুনছি বাচ্চা গোসল দিলে মায়ের রক্তপাত হয়। আমার মায়েরও নাকি হইছিল। মাইয়াগো একটু কষ্ট হয় এইসম। তয় চিন্তার কুন কারণ নাই। হুজুর কাছে গেছিলাম, তাবিজ নিয়া আইছি। এইসময় আবার খারাপ আসর লাগেত তাই।' মজিদ হাসিমুখে ইতিহাস জানায়।

সিরাজ সাহেব বিস্ফোরিত চোখে মজিদকে ধমক দেন। ‘তুমি এক্ষণ এখান থেকে যাবে। আমি টাকা দিচ্ছি। সোজা গিয়ে এখানের ইমার্জেন্সিতে আনবে, বাকিটা আমি দেখছি’।

সিরাজ সাহেবের কথায় মজিদ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। তার মুখটা হা হয়ে যায়। এতো জোর দিয়ে সিরাজ সাহেব কথাটা বলেছেন যে মজিদ ভয় পেয়ে গিয়েছে। সে তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে পড়ে হাসপাতাল থেকে।

সিরাজ সাহেব হতভম্ব হয়ে ভাবতে থাকেন এদের কুসংস্কারের কথা। প্রেগনেন্সি পিরিয়ডের ভয়ঙ্কর এই সিগন্যালকে অবলীলায় এরা এড়িয়ে যাচ্ছে দেখে খারাপ লাগে তাঁর। এইসব কুসংস্কারের কারণে এই শ্রণিটাতে শিশু মৃত্যু হার এখনো বেশি। মেডিক্যালে চাকুরী করার সুবাদে সিরাজ সাহেব মোটামুটি জানেন সব প্রেগন্যান্সি ব্লিডিং ভয়ঙ্কর না হলেও এটি রিমার্কেবল সিগন্যাল বটে। মেডিক্যাল পরিভাষায় স্পটিং এবং ব্লিডিং এর পার্থক্য আছে। স্পটিং বিপদজনক না হলেও ব্লিডিং বিপদের কারণ হতেও পারে। ব্লিডিং এর সাথে লোয়ার এবডোমেন পেইন যদি তীব্র হয় এবং যদি ব্লিডিয়ের সাথে ব্লাডটিস্যু বেরিয়ে আসে এবং এটি যদি হয় ফার্স্ট টেমিস্টারে, তাহলে বুঝতে হবে থ্রেটেন্ড টু মিস্‌কারেজ। হরমোন জনিত সমস্যার কারণেও এটি হতে পারে, আরো বিভিন্ন কারণ আছে কিন্তু ফার্স্ট টেমিস্টারে ব্লিডিং খুব কমন হলেও কোনভাবেই অবহেলা করার সুযোগ নেই। যদিও মজিদের হিসাব অনুযায়ী তার স্ত্রী সেকেন্ড টেমিস্টারে পড়েছে, রিস্ক খানিকটা কমে এসেছে তবুও ঝুঁকি থেকে যায়। এরা হিসাবটা ঠিক মতো করেছে কিনা সেটাও ভাবায় সিরাজ সাহেবকে। নিজের জীবন রক্ষাকারী এই ছিন্নমূল রিক্সা চালকটির জন্য তিনি কিছুটা বিচলিত বোধ করেন। কিন্তু সারারাত মজিদের আর দেখা মেলেনা।

পরের দিন সকালে মজিদ যায় সিরাজ সাহেবের বেদে। গতকাল রাত হয়ে যাওয়ায় এই ওয়ার্ডে সে আর ঢুকতে পারেনি। তাকে দেখেই উৎকণ্ঠিত স্বরে সিরাজ সাহেব জিজ্ঞেস করেন –‘কি খবর মজিদ? তোমার স্ত্রী কেমন আছে?’

‘খারাপ বাতাস লাগছিল স্যার। ডাক্তারও কিছু করতে পারে নাই। অপারেশন হয়ে গাছে, কাইল ছাড়ব মনে হয়, এখনো হসপিটালেই আছে। সব আল্লাহ্‌র হাতে স্যার, সব আল্লাহ্‌ পাকের ইচ্ছা।'

------------------------------

-দেব প্রসাদ দেবু


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

দেবু,

ভালোই তো চালচ্ছিলেন। গল্পটা তাড়াহুড়োয় শেষ করে দিয়েছেন বলে মনে হল। আরেকটু টেনে নিয়ে জেতে পারলে আরও ভালো লাগতো। তাছাড়া ছুরিকাহত পেটে ব্যান্ডেজ নিয়ে সিরাজ সাহেবের মজিদের সাথে কথোপকথনের অংশটুকু খানিকটা বেখাপ্পা লাগছে। যদি সুস্থ সিরাজ সাহেব কথাগুলো বলতেন তাহলে সেটা ঠিক ছিল।

আমি মোটেও বোদ্ধা শ্রেণীর কেউ নই, একজন সাধারণ পাঠক হিসাবে মতামত জানালাম।

নির্ঝরা শ্রাবণ

অতিথি লেখক এর ছবি

নির্ঝরা শ্রাবণ,
অনেক ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য।
খেয়াল করবেন সিরাজ সাহেব ছুরিকাহত হলেও ধটনাস্থল থেকে ঢাকা মেডিক্যালে রিক্সায় বসে গিয়েছেন দ্বিতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি ছাড়া। রক্তক্ষরণ এবং মলম লাগানো চোখের যন্ত্রণায় তিনি আতংকিত ছিলেন ফলে নার্ভাস ব্রেক ডাউনে জ্ঞান হারিয়েছিলেন নিশ্চিত পরিবেশে যাবার পর। ঘটনার তৃতীয় দিনে এসে মূল কথোপকথন অংশটা এসেছে। গল্পের খাতিরে খুব বেমানান বানিয়ে ফেললাম কি?
তাড়াহুড়ার ব্যাপারটি নিয়ে ভবিষতে আরো যত্নবান হবার কথা দিচ্ছি।আবারো ধন্যবাদ আপনাকে।

- দেব প্রসাদ দেবু

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

প্রথম পর্বের লেখার সাথে এই পর্বটা খাপছাড়া লাগলো। প্রথম পর্বে গল্প এগোচ্ছিল তরতরিয়ে, এই পর্বে এসে মার খেয়ে গেলো! একটা টুইস্টের ইঙ্গিত ছিল, যেটা এই পর্বে অনুপস্থিত। আর গল্পের সমাপ্তিটাও কেমন যেন দায়সারা ভাবে করা হয়েছে মনে হলো। মূলকথা প্রথম পর্ব পড়ার পর যেরকম আগ্রহ জন্মেছিল, এই পর্ব সেটাতে জল ঢেলে দিল।

তবে, যেমনটি বলেছি আগে, আপনার লেখার হাত সুন্দর। লিখে যান।

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রোফেসর, ব্যর্থতা মাথা পেতে নিয়েই বলছি, গল্পের নামেই ইঙ্গিত ছিলো গল্পটি কোন পথে এগুবে। সিরাজ সাহেবের ঘটনাটা তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে ফ্যাক্টগুলো বলার জন্য আনা হয়েছে এবং প্রসঙ্গিক ভাবে একটি দুর্ঘটনা নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। কাঁচা হাতে পাকামো করতে গেলে যা হয় আরকি! লেজেগোবরে করে ফেলেছি হয়তো। উদ্দেশ্য ছিলো নিম্নবিত্তের ঘরে যে কুসংস্কার দৈনন্দিন জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে সেটিকে নোটিশ করা। আজ পারিনি হয়তো, একদিন নিশ্চয়ই পারবো। হাল ছাড়ছিনা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

-দেব প্রসাদ দেবু

এক লহমা এর ছবি

গল্পের উদ্দেশ্য খুব-ই ভালো। লিখতে থাকুন। আস্তে আস্তে আরো পরিণত হবেন বলেই আশা রাখি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

দেব প্রসাদ দেবু এর ছবি

অনেক ধব্যবাদ আপনাকে।

অর্বাচীন এর ছবি

আবারো তাড়াহুড়ো করলেন দেবু’দা। প্রসব বেদনা আসলেই প্রচণ্ড কষ্টকর। সময়টাকে বড় দীর্ঘ মনে হয়; তাই তাড়াহুড়ো হয়ে যায়। তবে গল্পটা দারুণ! চলুক

দেব প্রসাদ দেবু এর ছবি

হাসি ঘটনা বুইঝ্যালাইছেন আপনে!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।