ফ্রিজ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৭/০৭/২০১৪ - ৬:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


রাহিল,এখনও ফোনে কথা বলছিস? কখন বলে গেলাম গোসল করে আয়,ভাত খাবো একসাথে!
দাঁড়াও আপু, এক মিনিট।ফোনের স্পিকারে হাত রেখে বলল রাহিল।
সেই একঘন্টা ধরেই ত এক মিনিট একমিনিট শুনে আসছি। তা তোদের এক মিনিট হতে কয়ঘন্টা লাগে?জার্নি করে এসেছে,গোসল করবে ,খাবে ,আমার সাথে গল্প করবে, আম্মু কী দিলো দেখাবে......
ধুর। তোমরা এত কথা একসাথে কিভাবে বলো আপু?মাঝেমধ্যে দম নিতে হয়তো।পরে দম বন্ধ হয়ে মরে গেলে মানুষজন কি বলবে? রাহিলের আপু কথা বলতে বলতে মারা গেছে। ফোন নিয়ে বের হয়ে হাঁটা ধরলো রাহিল। এখন আপুর সামনে থাকা আর ড্রিল মেশিনের সামনে থাকা এক কথা।
হ্যা।সারাদিন কানের কাছে ফোন নিয়ে ত তোরা ত গান শুনিস। কথা শুনিস না। আম্মু ঠিকি বলে... আবার কোথায় যাস?

ছাদে।

আজকে অনেক গরম। ছাদে যাসনে। পিছন থেকে আপুর গলা শোনা যাচ্ছে।অন্যদিন আপু পিছন পিছন চলে আসে।আজ আসলোনা। আজ গরমটা অবশ্য একটু বেশিই। রাহিলও তাই চাচ্ছিলো।ছাদে উঠে আবার ফোন কানে দিলো।

আপু চেঁচাচ্ছে সুইটহার্ট।গোসল করে খেতে বসতে হবে।সিগারেট ধরাতে ধরাতে ফোনে বলে গেলো রাহিল।
'চেঁচাবেই ত।আচ্ছা কতদিন থাকবে বললেনা ত।'
তিনদিন থাকার প্ল্যান আছে।তিনদিনের ছুটি দিয়ে এসেছি দোকানে। আগে গেলে ত লাভ নেই।তুমি ত আর আসবানা।আমি কাল আসব নাকি পৌরসুদিন?
'পরীক্ষা না থাকলে ত আমি আসতামই।তুমি কবে আসবে তা আমি আজ রাতে জানাব।আর আসার আগে ভাইয়া-ভাবীকে কি বলবে সেটাও ঠিক করো।ধরতে পারলে আমার ভাইয়া দুইজনকেই এক দড়িতে ফাঁসি দিবে এইটাই মাথায় রেখো কিন্তু।'
জি হুজুর। ভেবে রেখেছি। আচ্ছা যাই এখন। পরে কথা হবে। লাভ ইউ। বলে উত্তর না শুনেই ফোন রেখে দিলো রাহিল। সিগারেটটা এতক্ষন আরাম করে টানতে পারেনি। কথা বলার সময় সিগারেট খেলে আবারা সে রাগ করে।তার নাকে নাকি গন্ধ লাগে।আজব সব কথা বলে মেয়েরা,আদ্ভুত সব আবদার করে।কথা বলার সময় তাই সাবধানে সিগারেট টানতে হয়,যেনো শব্দ না যায়। দাঁড়িয়ে বাসার চারপাশটা দেখতে লাগল রাহিল।বাসার ছাদ থেকে খেলার মাঠ দেখা যায়। একপাশে ঘন জংগলের মতো গাছে ভরা। নারিকেল-আম-কাঠাল আরো নাম না জানা গাছ।দিনের বেলাতেই সেখানে অন্ধকার যেনো। চমৎকার জায়গা এই চিতলমারি।বাগেরহাটের ছোট্ট একটা উপজেলা।মাঝে বিশাল একটা নদী। সেই নদীকে ঘিরেই এখানকার মানুষের জীবিকা।বেশিরভাগই মাছের ব্যবসা করে।পেটভরে মাছ খাওয়া যায় এখানে আসলে। আসাটা অবশ্য অনেক কষ্টের। বাগেরহাট নেমে আবার মাটির রাস্তা ধরে আসতে হয়।রাহিলের দুলাভাই এখানকার টিএনও।তিনি গাড়ি পাঠিয়ে রাহিলকে নিয়ে আসেন।আজ অবশ্য গাড়ি পাঠাতে পারেন নি। সারাদিনে ৩ বার বাস চলে। ৪ঘন্টা ওয়েট করে যে বাসটি করে আসতে হয়েছে এর চাইতে হেঁটে আসাটাই হয়ত ভালো হত কিন্তু দূরত্বটা ঠিক ওয়াকিং ডিসটেন্স না হওয়াতে ইঞ্জিনের ঠেলা গাড়িতেই আসতে হলো। মোবাইল বেজে উঠল হঠাৎ।আপু ফোন দিচ্ছে। আপুর বোধহয় আজকে বেশিই গরম লাগছে। ছাদে না উঠে ফোন করে নিচে ডাকছে। সিগারেটে কড়া দুটি টান দিয়ে নিচে ফেলে একটা চুইংগাম মুখে ঢুকিয়ে নিচে নেমে গেলো রাহিল।


দুইঘন্টা ধরে থেকে ফোনের পর ফোন করে যাচ্ছে মৌমিতা।ভাইয়া,ভাবী কেউই ফোনই ধরছেনা।বাসার ল্যান্ডফোনেও এ্যাংগেজ টোন আসছে ।কিছুই বুঝতে পারছেনা মৌমিতা।অফিসে কল দিয়ে জানল অফিসেও যায়নি এখনও।শনিবারে অবশ্য ভাইয়া সবসময় অফিস করেন না।ঘুরতে গেলো কোথাও? অসুস্থ হলো না ত?অসুস্থ হলে বা ঘুরতে গেলে বুঝি ফোন ধরতে নাই? সারপ্রাইজ দিতে দুপুর বেলা ভাইয়ার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে মৌমিতা।ভেবেছিলো কাছে এসে পরে ভাইয়াকে ফোন দিবে কিন্তু এখন ত দুইঘন্টা ধরে ফোনই ঢুকছেনা।কী দরকার ছিলো তার এই সারপ্রাইজ ভনিতার? নিজের উপর রাগ হচ্ছে এখন মৌমিতার। ভাইয়াকে আগেই বলে রাখলে ত এই উটকো ঝামেলাতে পরতে হয়না তার। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, সে কিভাবে যাবে?


গোসল করে খেতে বসেছে রাহিল।আপুও বসেছে।দুলাভাইয়ের সাথে বিয়ের পর থেকে আপু একটু বেশি আয়েসি হয়ে গিয়েছে,কাজ বলতে খালি খবরদারি। দুলাভাই সারাদিন পরে থাকে অফিসে।যতক্ষন বাসায় থাকে ততক্ষনও লোকজন নিয়ে নিজের প্রাইভেট অফিসে এই মিটিং সেই মিটিং নিয়ে ব্যাস্ত।আপুর সময় কাটে বাসার কাজের লোকদের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে। তিনবছর ধরে অবশ্য আমাদের এ্যাঞ্জেল রানী আপুকে ব্যাস্ত রেখেছে।
চিংড়ি মাছটা আগে খা। তোর দুলাভাই তোর জন্য আনিয়েছেন।

দাড়াও,আগে মাছের ডিম খেয়ে নেই।একগাদা ডিম তখন রাহিলের প্লেটে। দুলাভাই কখন আসবে?এ্যাঞ্জেলকে নিয়ে এতক্ষন বাইরে থাকে?
কখন যে আসে। সকাল থেকেই উনার মেয়ে বায়না ধরেছে মেলা দেখতে যাবে।আজকে শনিবার কিন্তু আবার ডিসি অফিসে মিটিং আছে। মেয়েও তাকে ছাড়েনা।মেয়েকে নিয়ে বাপ সেই সকাল বেলা বেড়িয়েছে।মিটিং করে , মেলা দেখে তারপর আসবে। সন্ধ্যা হবে বোধহয়।

তুমি খাবানা নাকি? তখন থেকে প্লেটে ভাত নিয়ে নাড়াচাড়া করে যাচ্ছো।দুটি চিংড়ি মাছ প্লেটে তুলে নিতে নিতে বলল রাহিল।
ভাল্লাগছেনারে। তুই খা আরাম করে। খেয়ে ঘুম দে।কিছু লাগলে আমাকে ডাকিস। বাসায় ত কেউ নেই।রহিমার মা হঠাত আসুস্থ হয়ে গেলো,ঐদিকে যে কনস্টেবলটা ডিউটি করত সেও ছুটি নিয়েছে কাল থেকে। বেডরুমের দিকে হাঁটা ধরলেন স্নিগ্ধা।


ভয় ভয় লাগছে মৌমিতার।প্রায় আধাঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছে সে সোনাপুর বাজারে।এখানে রিক্সা পাওয়া যায়না,ভ্যানগাড়ি চলে। আজকে যে কী হলো ভ্যানগাড়িরও দেখা নাই।প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। বাজার ভেংগে যাচ্ছে। মানুষজন বাড়ির দিকে হাঁটা ধরছে।ভাইয়া-ভাবীর ফোন এখনও অফ দেখাচ্ছে।আতংকে কান্না চলে আসছে মৌমিতার।আর কিছুক্ষনের মাঝে যদি একটা ভ্যান না পাওয়া যায় বা ভাইয়া-ভাবীর ফোন না লাগে তাহলে কি করবে সে? বাসায় বলার সাহসও হচ্ছেনা। আব্বু যদি জানতে পারে সে এই কাজ করেছে তাহলে আর বাসামুখো হতে হবেনা।জট পাকিয়ে যাচ্ছে চিন্তাগুলো।ধীরে ধীরে বাজার আরো খালি হতে লাগল।প্রতিটি বাড়িমুখো মানুষের সাথে সাথে মৌমিতার বুকের ভীতর বাজতে থাকা যুদ্ধের দামামার শব্দ যেনো তীব্রতর হচ্ছিলো।গলার উপরের দিকে কান্নাটা দলা পেকে আছে।

আপনি মৌমিতা আপা না?আমাদের স্যারের ছোট বোন।একটি মোটরসাইকেল এসে দাঁড়ালো মৌমিতার পাশে।মৌমিতার মনে হলো সে যেনো ঘন জংগলে হারিয়ে গেছে,চারিদিকে হায়না-শিয়াল আর নাম না জানা পশুদের শব্দের মাঝে সে যেনো কোনো মানুষের আওয়াজ শুনতে পেলো।ঘাড় ঘুরিয়ে লোকটিকে দেখে নিলো সে একনজর। আগে দেখেছে বলে ত মনে হচ্ছেনা।

আপনাকে ত ঠিক চিনতে পারলাম না। নিজের গলার স্বরটা নিজের কাছেই কেমন যেনো অপরিচিত লাগছিলো মৌমিতার।
আমার নাম বিদ্যুৎ। আপনি আমাদের বাসায় এসেছিলেন একদিন স্যারের সাথে।আমার মেয়ের জন্মদিন ছিলো। আপনি,স্যার,ম্যাডাম আর সুপ্তি আপুও ছিলেন। মনে পরেছে আপা?

হ্যা মনে পরেছে।গতবছর ফেব্রুয়ারী মাসে গিয়েছিলাম। আপনার মেয়ে গান করেছিলো অনুষ্ঠানে।খুব মিষ্টি গলা আপনার মেয়ের। কেমন আছে সে?মৌমিতা কিছুটা সাহস সঞ্চয় করার চেষ্টা করছে। লোকটাকে আসল ঘটনা বলা ঠিক হবে?
আপনাদের দোয়ায় মেয়ে আমার ভালো আছে। তা আপা এইখানে কতক্ষন ধরে? বাড়ি থেকে আসলেন?স্যার গাড়ি পাঠায় নাই?

লোকটি বুদ্ধিমান। শুধু বুদ্ধিমানই না,অবজার্ভেশন ক্ষমতাও ভালো।মৌমিতার হাতে ছোট্ট একটা ব্যাগ। পরা থ্রিপিসটা সদ্য ভাঁজ খোলা।আর এই বাজারটা তাদের বাড়ির পথেই পরে। সবকছু জেনেই বলেছে সে।লোকটিকে কি সব বলে দেয়া উচিৎ?নারীমন সহজে বিশ্বাস করতে চায়না।কিন্তু অবিশ্বাস করার মতো বা অন্যকিছু বলার মতো পরিস্থিতিতেও সে নাই এখন। বিশ্বাস না করতে পারলেও সমূহ ঝুঁকিটা তাকে নিতে হবেই।ভাইয়ার আন্ডারে চাকরি করলে উলটাপালটা কিছু করার সাহস ত হবার কথা না।তার উপর আবার বউ-বাচ্চা আছে। নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকল সে।কিন্তু পুরুষদের এইভাবে বিশ্বাস করতে নাই। যদি মাঝরাস্তায় কিছু করে বসে?

আপা সন্ধ্যা হয়ে আসতেছে।স্যারের গাড়ি আসতে যদি দেরী হয় তাইলে আমার বাইকে উঠতে পারেন। আমিও ত বাসায়ই যাইতেছি।আপনাকে নামায়ে দেবো। দাঁড়ান স্যাররে একটা ফোন করে বলে দেই যে আপনে আমার সাথে আছেন।বলেই ফোন বের করতে চলল লোকটি।
থাক। দরকার নেই। আমি মেসেজ করে দিচ্ছি। আপনার নামটা যেনো কী?
আমার নাম বিদ্যুৎ।

মোবাইলের স্ক্রিনে কিছুক্ষন নাড়াচাড়া করে মোটরবাইকে চড়ে বসল মৌমিতা।ভাইয়াকে আমি মেসেজ করে দিয়েছি।গাড়ি আসতে দেরী হবে। আপনি আমাকে নামিয়ে দিন। বলে বাইকে চড়ে বসল মৌমতা।ভাইয়ার ফোন যে বন্ধ এই ব্যাপারটি কোনো অবস্থাতেই যেনো বিদ্যুৎ সাহেব জানতে না পারে সেটা তাকে নিশ্চিত করতেই হবে।


ঘুম ভাঙল নবাবজাদার? দিনের বেলা মানুষ এতক্ষন ঘুমায় কী করে।আপু ডেকে চলছে।
কয়টা বাজে?
সাড়ে ছয়টা বাজে। আযান পরে গেলো। জলদি উঠ। চা বানানো আছে টেবিলে। খেয়ে তারপর আম্মু কি কি পাঠালো বের কর। চালের গুড়া পাঠাতে বলেছিলাম,দিয়েছে নাকি?
জানিনা।তোমদের চালের গুড়া,ডালের হাঁড়ির খবর তোমরা রাখ।আমাকে ব্যাগ দিয়েছে আমি ব্যাগ নিয়ে এসেছি,ব্যাস , বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো রাহিল।হাতমুখ ধুয়ে রুমে এসে মোবাইল হাতে নিলো।ফোন ধরছেনা কেনো। সন্ধ্যাবেলায় তার ঘুমানোর অভ্যাস আছে।হয়ত উঠেনি এখনও।
আপু চায়ের সাথে টা কিছু আছে? ডাইনিং রুমে ঢুকতে ঢুকতে জিজ্ঞাস করলো রাহিল।
নে, এখানে কাবাব আছে । এটা গরুর মাংসের আর ছোট বাটির ঐটা চিংড়ি মাছের। বেশি খিদে লাগলে ফ্রিজে মোগলাই পরোটা আছে। নিয়ে আয়।ওভেনে গরম করে দিচ্ছি।

টেবিলে না বসে সরাসরি ফ্রিজের দিকেই হাঁটা ধরলো রাহিল।এই গাধা, ডীপ ফ্রিজে কি করতে যাস? নানরুটি কি ডীপে থাকে গাধা? আল্লাহ্‌ কি দিয়ে বানাইলো যে এই ছেলেকে। তোকে বিয়ে দেয়া ফরজ হয়ে গেছে। বউ যখন পিঠে দু ঘা দিবে তখন সব মনে থাকবে।

বিয়ে করতেই ত এসেছিলাম।মনে মনে কথাগুলো বলে দিক পরিবর্তন করে নরমাল ফ্রিজ থেকে মোগলাই পরোটা নিয়ে আপুর দিকে এগিয়ে দিলো রাহিল।খেতে খেতে অনেক কথা হলো। কিন্তু যে কথাটা বলতে এসেছিলো সে কথাটা কোনোভাবেই মুখ থেকে বের হচ্ছেনা রাহিলের।এইবার আসার আগে অনেক করে ভেবে এসেছিলো। হয় এসপার নয় ওসপার, কিন্তু কথাটা সে বলবেই। কিসে যে বাধো বাধো ঠেকছে এটাই বুঝতে পারছেনা। অবশেষে সাহস সঞ্চয় করার জন্য চায়ের কাপ নিয়ে ছাদের দিকে রওনা করল। একটা সিগারেট খেলে যদি সাহস হয় সেই আশায়।পিছন থেকে ফোঁড়ন কাটল আপু, বিড়ি খেতে যাস, না? দাড়া তোর বিড়ি খাওয়া বের করছি এইবার।রাহিল উত্তর না দিয়ে ইশারাতে আপুকে ডাকল ছাদের দিকে।

নাহ। আজকে অনেক গরম। একটু এসিটা বাড়িয়ে দে না যাবার আগে।


লোকটা সম্বন্ধে কী সব যা তা ভাবছিলো মৌমিতা। মানুষকে এভাবে অবিশ্বাস করতে নেই।আধাঘন্টার মধ্যে তাকে ভাইয়ার বাসায় এনে পৌঁছিয়ে দিলো বিদ্যুৎ।রাস্তায় তেমন কোনো কথাও বলেনি। এক/দুইবার খালি জানতে চেয়েছিলো কোনো অসুবিধা হচ্ছে নাকি?এর বাইরে কোনো কথা বলেনি,হার্ডব্রেক চেপে নারীদেহের ফায়দা নেয়ার প্রচেষ্টাও দেখা যায়নি। অতিরিক্ত মাত্রায় ভদ্রলোক।বাসার সামনে এসে তাই চায়ের আমন্ত্রন জানিয়ে নিজের অপারাধবোধ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করলো মৌমিতা।না,আজকে এমনিতেই রাত হয়ে গেলো।আপনি যান, দেখা হবে পরে বলে গেটের সামনে এসে মজনু মজনু বলে কয়েকবার হাঁক দিলো বিদ্যুৎ। কেউ সাড়া দিলোনা।ফোনের ব্যাপারটা বিদ্যুৎকে এখনও বলেনি মৌমিতা। বলতে ইচ্ছে করছেনা।

কেউ নেই নাকি?গেটের সামনে এসে উঁকি দিয়ে দেখে গেটে কেউ নেই,ধাক্কা দিতেই খুলে গেলো।মনে হয় কোথাও গিয়েছে মজনু। ভিতরে ত লাইট জ্বলছে। আপনি ঢুকে যান। স্যারকে ফোন করে দিই না হয়।

লাগবেনা। বলে গেট খুলে ভিতরে ঢুকে গেলো মৌমিতা।
***********
বাসার ভেতর লাইট জ্বলছে কিন্তু সাড়াশব্দ নেই।কেমন যেনো একটা অস্বস্তি হচ্ছে মৌমিতার। ভাইয়ার বাসায় সারাদিন হট্টগোল থাকে। এমন নীরবতা ত কখনই দেখেনি এর আগে।কলিং বেল চাপতেই অবশ্য অস্বস্তিটা নেমে গেলো তার। ভাইয়া নিজেই দড়জা খুললেন।মৌমিতাকে দেখে যেনো ভূত দেখলেন তিনি।
কিরে? তুই? বলা নেই কওয়া নেই,এই সন্ধ্যাবেলায় কিভাবে আসলি?আগে বলবিনা,গাড়ি পাঠিয়ে দিতাম। একদমে কথাগুলো বলে গেলেন মৌমিতার ভাই।
বলব কিভাবে?চিৎকার করলে শুনতে পেতে? ফোনটা যে অফ করে রেখেছো সেই খেয়াল আছে?ভাবীর ফোনও সুইচড অফ। ল্যান্ড ফোনও এ্যাঙ্গেজ টোন। ভাগ্যিস তোমাদের অফিসের বিদ্যুৎ সাহবের সাথে দেখা হয়ে গেলো বাজারে। না হলে আজকে যে কী হতো আল্লাহ্‌ মাবুদ জানেন।এমন করে কেউ,যত্তসব। একদমে কথাগুলো বলে ঘরে ঢুকল মৌমিতা।

ঐটা আমার দোষ না রে। তোর ভাবীর কাজ।সবসময় বাইরে কাটাই।ছুটির দিনেও এর ফোন,তার ফোন আসে আর বের হতে হয় তাই আজকে সে বাসার সকল ফোন অফ করে রেখেছে।একদিন পৃথিবী থেকে ছুটি নিয়ে তাকে আর সুপ্তিকে সময় দিতে হবে,এই আবদার।দড়জা লাগানোর শব্দ শুনে রুমে ঢুকলেন ভাবী। আরে মৌমিতা,তুমি কীভাবে?

উড়ে এসেছি। গজগজ করে বলতে লাগল মৌমিতা। প্রেম করবে ভালো কথা। তোমাদের প্রেমের আগুনে মানুষ মরে গেলে তার দায় কার?
এসিটা বাড়িয়ে দিয়ে হাসতে হাসতে মৌমিতার হাত ধরল ভাবী। রাগ করেনা বোন। আমি কি জানি যে আজ তুমি আসবে।তোমার ভাইয়াও ত কিছু বলেনি।রোজকার সেই অফিস আর এলাকার মানুষের বিচার আচার করতে করতে ঘরে যে জীবন্ত দুইজন মানুষ আছে সেই খবর আছে তার। এইজন্যে আজকে তাকে একটু শিক্ষা দিলাম। বস, আমি তোমার জন্য ড্রিংকস নিয়ে আসছি।

লাগবেনা। আমার সুপ্তি সোনামনি কই? তাকে ডাক। তোমাদের সাথে কথা নেই।তোমরা কপোত-কপোতি প্রেম করে যাও।আমি কথাই বলবোনা। এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খেয়ে কথাগুলো বলল মৌমিতা। রাগ তার এখনও পরেনি। ভাইয়ার কোনো আইডিয়া আছে যে সে কিরকম ভয়ংকর অবস্থায় পরেছিলো। সারপ্রাইজ দিত এসে নিজেই শকড হয়ে যাওয়াটা মোটেও আনন্দের ব্যাপার না।

হেসে মৌমিতাকে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে ভাবী কিচেনের দিকে গেলো। আচ্ছা, কথা বলতে হবেনা। বস। তোমার জান সুপ্তি ড্রাইভারের সাথে বেড়িয়েছে মেলা দেখতে। আসলে পরে জানের সাথে কথা বলো। এখন কিছু খেয়ে আগে ঠান্ডা হও। বাইরে অনেক গরম না আজকে?

শেষ
ছাদে উঠে বাসার পিছন দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় সিগারেটটা ধরালো রাহিল।পিছন দিকটা জংগলের মতো। কয়েকটা টিউবলাইট বসিয়েছে দুলাভাই। দেখতে মন্দ লাগছেনা। আকাশে চাঁদ নেই।অজস্র তারা ছড়িয়ে, যেনো কারো জন্মদিনে সাজানো বাসার ছাদ।তারার দিকে তাকিয়ে হঠাত মৌমিতার কথা মনে হলো তার। কথাটা আজকে বলতেই হবে আপুকে। এভাবে আর হয়না।কিন্তু কীভাবে বলবে,শুরুটা কীভাবে হবে সেইটাই চিন্তা করে পাচ্ছেনা। একবার শুরু করতে পারলে বাকিটা এমনিতেই হয়ে যাবে,কিন্তু শুরুটাই যে গোলমেলে।বেশ কয়েকটা দৃশ্যপট মাথায় আসছে। কোনটা সবচাইতে ভালো সুট করবে ভেবে পাচ্ছেনা।চিন্তায় ছেদ পরল কুকুরের চিৎকারে।নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে ওয়াচি চিৎকার করছে। গতবছর এই কুকুরটি উপহার পেয়েছিলো দুলাভাই।ট্রেইনড জার্মান শেফার্ড। সচিবালয়ে কাকে বলে যেনো আনিয়েছিলো দুলাভাই। সরকারী চাকরি করার এই সুবিধাটা বেশ চমৎকার। কিছু কিনতে হয় না। নিচের পদের একজনের কাছে মনের ইচ্ছা ব্যাক্ত করলেই চলে,জিনিস হাজির। কিন্তু ওয়াচি এই বেলায় ঐ জংগলে কেনো? ল্যাম্পপোস্টের বাতিতে ভালো দেখা যাচ্ছেনা। ওয়াচি একটা গাছ ধরে ঘুরছে আর ঘেউ ঘেউ করেই যাচ্ছে। জার্মান শেফার্ড এমনিতেই এমন করার কথা না। নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে।কী হতে পারে। উপর থেকে বার কয়েক 'ওয়াচি' ওয়াচি' করে আওয়াজ দিলো রাহিল। কোনো ব্যত্যয় হলোনা তাতে। ওয়াচির আওয়াজ বেড়েই চলছে।বাড়ির পিছনে কোনো গার্ড থাকেনা।শিয়াল টিয়ালের উৎপাতের মাঝে কে যায় রাতের বেলা।একবার ভাবল আপুকে ডেকে বলে। থাক,আপু কি করবে, যেতে হবে ত তাকেই।ঘটনা দেখার জন্য নিচেই নেমে গেলো রাহিল।
****************************
ওয়াচি ওয়াচি এইদিকে,এই যে। এইদিকে আয়,গুডবয়।

না কোনো কথাই কানে যাচ্ছেনা ওয়াচির।একটা বেল গাছ ধরে ঘুরছে আর চিৎকার করেই যাচ্ছে।মোবাইলের টর্চটা সেইদিকে ধরে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো রাহিল।কাছে আসতেই ওয়াচি যেনো তেড়ে আসলো তার দিকে।নাহ কামড়াতে না,তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যেতে এসেছে,বোঝা যাচ্ছে। প্রশিক্ষিত কুকুরগুলোর এই সুবিধা।ভয় পেলেও এরা যুক্তিবোধ হারায় না। কি করতে হবে তা বিপদের সময় মানুষের চাইতে এই কুকুরগুলো বেশি বুঝে।ওয়াচি রাহিলের সামনে এসে বারকয়েক ঘেউ ঘেউ করে সেই বেলগাছটার দিকে হাঁটা ধরল। রাহিলও ওয়াচিকে লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলো। গাছের কাছে এসে প্রথমে কিছুই বুঝতে পারলোনা রাহিল।গাছের নিচটা একদম পরিষ্কার।এখানে বিপদের কী গন্ধ পেলো ওয়াচি? কিছুক্ষন পর বুঝতে পারলো রাহিল। পাশের ঝোপটার দিকে দৌড়িয়ে যাচ্ছে আবার কাছে আসছে ওয়াচি।ভয়ে ভয়ে ঝোপের কাছে গেলো রাহিল। ল্যাম্পপোস্টের আলো এখানে আসছেনা। মোবাইলের আলোটা ধরে ঝোপটাকে ভালো করে দেখলো রাহিল।ঘন ঝোপে প্রথমে কিছুই নজরে আসছিলোনা।ওয়াচির উত্তেজনা এখন রাহিলের উপরও ভর করেছে। কিছু একটা নিশ্চয়ই আছে এখানে।হঠাত একটা জুতা দেখতে পেলো রাহিল। জুতাটা দেখে গলাটা যেনো এক ঝটকায় শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো রাহিলের। এ্যাঞ্জেল!!এ্যাঞ্জেল এ্যাঞ্জেল চিৎকার করতে করতে ঝোপের ভিতরে হাতড়াতে লাগল রাহিল। হাত থেকে ফোন পরে গেলো তার। হঠাৎ একটি ছোট্ট শরীর হাতে লাগলো।ঝোপের গভীর থেকে টেনে আনল এ্যাঞ্জেলের শরীরটা।কিছুই বুঝতে পারছেনা রাহিল। এ্যাঞ্জেল ত দুলাভাইয়ের সাথে বেড়িয়েছে। এখানে এলো কিভাবে? আর এ্যাঞ্জেলের কি হয়েছে? এ্যাঞ্জেল , মামুনি বলে বারবার এ্যাঞ্জেলের মুখ ধরে নাড়া দিতে লাগল রাহিল। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ নেই। শরীরটা যেনো বরফের মতো ঠান্ডা। অজানা আশংকা ভর করলো রাহিলের বুকে। এ্যাঞ্জেলের বুকে মাথা দেয়ার সাহস হচ্ছেনা তার। যদি কিছু শুনতে না পায় তাহলে কি হবে? উত্তেজনা আর ভয়ে দিকভ্রান্ত হয়ে গেলো রাহিল।ওয়াচি চিৎকার করেই যাচ্ছে।এ্যাঞ্জলের শরীরটাকে বুকে ধরে বাসার দিকে দৌড় লাগালো রাহিল।

কতক্ষন লাগলো দড়জার সামনে আসতে জানেনা সে। মনে হচ্ছিলো যেনো অনন্তকাল।চিৎকার করে আপুকে ডাকতে লাগল রাহিল।দড়জা খুললেন দুলাভাই।হতভম্ব রাহিল কিছু বুঝে উঠতে পারলোনা।দুলাভাই না সকাল বেলা বেড়িয়ে গিয়েছে , আসল কখন? অবশ্য অতশত চিন্তা করার সময় নেই রাহিলের। ঘরে ঢুকে চিৎকার করতে লাগল সে, আপু এ্যাঞ্জেল এ্যাঞ্জেলের কি হয়েছে দেখো। ঝোপের পাশে পরেছিলো।ভিতরের রুম থেকে ছুটে আসলেন স্নিগ্ধা। কি হয়েছে আমার সোনামনির? এ্যাঞ্জেলকে কোলে নিয়ে দৌড়িয়ে ডাইনিং রুমে গেলো রাহিল। টেবিলের উপর এ্যাঞ্জেলকে শুইয়ে দিয়ে একটা পরিচিত কন্ঠ শুনতে পেলো। সুপ্তি সুপ্তি জান আমার বলে রুমে ঢুকলো মৌমিতা। হচ্ছে কি এসব? দুলাভাই কখন এলো, মৌমিতাই বা কোথা থেকে এলো? স্বপ্ন দেখছে নাকি কোনো? দুপুরে মৌমিতা বলল যে তার পরীক্ষা,সে আসতে পারবেনা।এখন সে কোথা হতে টপকালো?দুলাভাইয়ের কাছে এইবার সবকিছু খুলে বলার জন্যই এসেছিলো রাহিল। মৌমিতার সাথে তার তিনবছরের প্রেমের ব্যাপারটাকে এইবার জানাবেই ,এই ইচ্ছা ছিলো তার। তবে কি মৌমিতা তাকে বোকা বানানোর জন্য বলেছিলো যে সে আসবেনা।কিন্তু কখন ঢুকল সে বাসায়? দুলাভাই কখন ঢুকল?গাড়ির আওয়াজ ত আসেনি কোনো। প্রশ্ন করার সুযোগ নেই কারন ততক্ষনে মৌমিতা সুপ্তির মাথা কোলে নিয়ে কান্নায় অস্থির। আপুও চিৎকার করে যাচ্ছে অনবরত। ডাক্তার ডাক,ডাক্তার ডাক ভাইয়া। চিৎকার করে বলল মৌমিতা।ভাইয়ার কানে কথা গেলো কিনা ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা কারন তিনি বোকার মতো দাঁড়িয়েই আছেন। এই তুমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছ ক্যান,ডাক্তার ডাকোনা এইবার রাহিলকে উদ্দেশ্য করে বললো মৌমিতা। বিপদের মানুষের বোধ লোপ পায়। সবার সামনে যে রাহিলকে 'আপনি' ছাড়া সম্বোধন করেনা মৌমিতা সেই রাহিলকে এখন প্রবল অধিকারের সাথে 'তুমি' বলে যাচ্ছে সে।বরফ দাও, বরফ দাও মাথায় বললেন স্নিগ্ধা, রাহিলের আপু। হ্যা, বরফ আনো। বলে সুপ্তির মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে ইশারাতে মৌমিতাকে ফ্রিজের দিকে যেতে বললো রাহিল।মৌমিতা দৌড়ে গিয়ে ডীপ ফ্রিজ খুলে দাঁড়িয়ে রইল বরফের মতো।

এই বরফ খুঁজে দেখোনা। দাঁড়িয়ে রইলে ক্যান? চিৎকার করে বলে গেলো রাহিল। আশ্চর্য ত! বরফ আনো। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কী দেখছো?
কথাগুলো মৌমিতার কানে গেলো না হয়ত। না হলে এমন চিৎকারের পরও কেউ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে! ফ্রিজের ভিতর উঁকি দিয়ে আর পিছন ফিরছেনা মৌমিতা। ফ্রিজের সামনে যেনো ফ্রিজের মতোই দাঁড়িয়ে আছে।ভীতরে হাতও দিচ্ছেনা।

করছ কি তুমি? দাঁড়িয়ে আছো কেনো? বরফ না থাকলে বন্ধ করে পাশের ফ্রিজটায় দেখোনা।মৌমিতা,মৌমিতা কয়েকবার চিৎকার করে ডাকল রাহিল। কিন্তু মৌমিতা বরফের মতো স্থির।পিছনে তাকাচ্ছেনা সে। ফ্রিজের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়েই আছে সে।

উত্তেজিত হয়ে সুপ্তির মাথাটা টেবিলে রেখে মৌমিতার দিকে এগিয়ে গেলো রাহিল।কি হয়েছে তোমার,এইভাবে দাঁড়িয়ে রইলে কেনো? ফ্রিজের ভেতরে উঁকি দেয়ার আগে বললো রাহিল।কাছে যেতেই বোটকা একটা গন্ধ নাকে আসলো রাহিলের। একদম অপরিচিত না এই গন্ধ।কুরবানির সময় একবার তিনদিন কারেন্ট ছিলোনা তাদের বাসায়। তখন ফ্রিজের সকল মাংস পচে এই গন্ধটা বের হয়েছিলো।এখানে অবশ্য কুরবানীর মাংস ছিলোনা। ফ্রিজের ভীতরে স্নিগ্ধা আর তার স্বামীর মৃতদেহ অর্ধগলিত অবস্থায় পরে ছিলো।দুইজনের গায়েই অসংখ্য কোপের দাগ।স্নিগ্ধার গলা অর্ধেক কাটা। স্নিগ্ধার স্বামীর পেট চিড়ে পাকস্থলিটা কিছু বের হয়ে আছে। সেইখান থেকেই বোধহয় এই গন্ধটা আসছে। দুইজনকে চাপাচাপি করে রাখা হয়েছে ফ্রিজের ভেতর। একটা পলিথিন দিয়ে মোড়ানো। একবার দেখে চোখ তুলে মৌমিতার দিকে তাকালো রাহিল। মৃত মানুষের মতো ফ্যাকাশে সেই মুখ।পিছনে কান্নার শব্দটা থেমে গেলো হঠাৎ। কেমন যেনো গোঙানির মতো শব্দ হচ্ছে এখন।পিছন ফিরে দেখার চেষ্টা করলো রাহিল কিন্তু মৌমিতা তাকে বাঁধা দিলো।ওয়াচি আবার শব্দ করা শুরু করেছে। এবার সেটা উত্তেজনার না, ভয়ের। অনেকটা কুই কুই করে শব্দ বের হচ্ছে বীর জার্মান শেফার্ডের গলা থেকে। কিছুক্ষন পরে সেই শব্দটাও আটকে আটকে আসতে লাগল। কেউ গলা চেপে ধরলে যেমন শব্দ হয় তেমন শব্দ হলো কিছুক্ষন। এরপর সব চুপ, কবরের মতো শান্ত।
****************************
কতক্ষন হয়েছে জানেনা রাহিল। পিছন ফিরে তাকানোর সাহস হচ্ছেনা। তার বা হাত ধরে রেখেছে মৌমিতা। তার চোখে পানি।শব্দহীন কেঁদে যাচ্ছে মৌমিতা। হাতটি চেপে করে ধরল রাহিল। কিছু হবেনা, কিছু হবেনা, আমি আছি। ধীরে ধীরে কথাগুলো বললো রাহিল। মৌমিতার কান্না যেনো বেড়ে গেলো এটা শুনে। ভড়কে দিবে ভেবে সে দুপুরে রাহিলকে বলেনি যে সে আসবে আজকে। মাত্র তিন ঘন্টাইত ত লাগে আসতে। তাই ভাবছিলো একবারে বাসায় গিয়ে উপস্থিত হবে আর রাহিলের বোকা বনা দেখবে।বেচারা তার আপুকে তাদের সম্পর্কের ব্যাপারটা বলতে ভয় পাচ্ছে। এইবার তাই সে নিজেই ভাইয়াকে বলে দিবে এই ভেবেই এসেছিলো সে। রাহিলের চেহারাটা কেমন হবে যখন ভাইয়া তাকে ডেকে জিজ্ঞাস করবে সেটা ভেবে ভেবেই উড়ে চলে এসেছে ।কিন্তু কোথায় তার ভাইয়া? রাহিল, রাহিল আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো।খুব আস্তে আস্তে কথাগুলো বললো মৌমিতা। হ্যা যাবো, আমরা এখান থেকে বের হয়ে যাবো নিজেকে হয়ত সাহস যোগাচ্ছিলো সে। পিছনের গোঙানির শব্দটা ধীরে ধীরে নিকটতর হচ্ছে। কিন্তু পিছন ফিরে তাকানোর সাহস করতে পারছেনা কেউই।রাহিলের হাতটা আরো জোরে আঁকড়ে ধরলো মৌমিতা। ঠিক তখনি রাহিলের কাঁধে একটা দায়ের কোপ পরল,রক্ত ছিটে মৌমিতার গাল আর মুখে লাগল। নোনতা আর গরম রক্ত। চিৎকার করে পিছন ফিরল মৌমিতা। কিছু বোঝার আগেই তার মাথার মাঝ বরাবর কুড়ালের কোপ দিলেন স্নিগ্ধা।

****************************
বেল বেজে যাচ্ছে।একবার দুইবার তিনবার।দড়জা খুললেন স্নিগ্ধা।
মৌমিতা ম্যাডাম এসেছেন না বাসায়?

আরে বিদ্যুৎ যে!স্নিগ্ধার পিছন এসে দাড়ালেন সুপ্তির বাবা।
উনি আমার বাইকের সামনে উনার এই হ্যান্ডব্যাগটা রেখেছিলেন। নামার সময় ভুলে গেছেন হয়ত।
ও,হবে হয়ত। তার যে ভুলো মন। বলে হাত বাড়িয়ে ব্যাগটি নিলেন।

আপনার হাতে রক্ত স্যার।

হ্যা। ফ্রিজে কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে।ট্যাম্পারেচর বেড়ে গেলো কিভাবে কে জানে। মাংস থেকে পানি আর রক্ত বের হয়ে পুরো বাসা ভরে গিয়েছে। কেউ নেই যে পরিষ্কার করবে। আমি আর আপনার ভাবী মিলেই করছি তাই।

স্যার , আমি থাকতে আপনাকে এই কাজ করতে হবেনা বলে দড়জা ঠেলে ভীতরে ঢুকে গেলেন বিদ্যুৎ সাহেব। দড়জাটা লাগিয়ে শাড়ির মাঝ থেকে কুড়োলটি বের করলেন স্নিগ্ধা।

আশফাক (অধম)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অপেক্ষা করছিলাম কখন এটা প্রকাশিত হবে, শেষ প্যারার সাসপেন্সটা এঞ্জয় করেছি, আরও এরকম লেখা চাই!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্পটা একটু ইনকোহেরেন্ট লাগলো, আর মনে কিছু প্রশ্নও জাগলঃ

১। সুপ্তি আর অ্যাঞ্জেল কি একই ব্যক্তি?

২। স্নিগ্ধা আর তার স্বামীর (যথাক্রমে রাহিলের বোন এবং ভগ্নিপতি) গলিত মৃতদেহ ডীপফ্রিজে আবিষ্কার করলো মৌমিতা আর রাহিল। অথচ তার কিছুক্ষণ পরেই দা দিয়ে কুপিয়ে রাহিল আর মৌমিতাকে হত্যা করলো স্নিগ্ধা। এমনকি দরজা খুলে বিদ্যুতের সঙ্গে দেখাও করল স্নিগ্ধা আর তার স্বামী। তাহলে ফ্রিজে যাদের মৃতদেহ পাওয়া গেলো, তারা কে?

৩। ডীপফ্রিজে রাখা মৃতদেহ যদি অর্ধগলিতই হয়ে থাকে, তার মানে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল আরও আগে। জীবিত স্নিগ্ধা আর তার স্বামী যদি ভেজালই হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে চিনতে কুকুরের কেন এত সময় লাগলো?

আপনার লেখার হাত ভাল। লিখতে থাকুন।

Emran

অতিথি লেখক এর ছবি

উত্তর যথাক্রমেঃ

১।জ্বী সুপ্তি আর এ্যাঞ্জেল একই ব্যাক্তি(বাচ্চা আর কী হাসি )

২। মৃতদেহ ফ্রিজে ছিলো আর বাইরে যারা ছিলো তারা প্যারানরমাল কিছু।গল্পটা ত সাজিয়েইছিলাম এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে।

৩। কুকুর চিনবে কিভাবে? আগে ত রাহিল-মৌমিতাই চিনিতে পারেনি। তারা ত স্বাভাবিকই ছিলো। জাস্ট ডেডবডি গুলো রিভিল হবার পরেই তারা অশরীরীতে পরিনত হয়। কুকুর তখন তাদের আইডেন্টিফাই করে। ফ্রিজের ট্যাম্পারেচরটা হয়ত দুইটা মানুষ প্রিজার্ভ করার মতো ছিলোনা। তাই একটু গলে গিয়েছে আরকি ডেডবডি।

নরমাল্লি ভৌতিক বা প্যারানরমাল গল্পে পশুপাখিদের কিছু অতি-ক্ষমতা প্রদর্শন করে। আমি সেটি না করার চেষ্টা করেছি। আদিভৌতিক ব্যাপার যদি আমাদের দৃষ্টিগোচর না হয় তাহলে কম বুদ্ধির প্রানীর কাছে কেনো দৃষ্টিগোচর হবে?জানি লজিক দেয়াটা হাস্যকর।প্যারানরমাল স্টোরিতে লজিক থাকেনা।

এটি আমার লেখা প্রথম প্যারানরমাল স্টোরি। এর আগে গল্প লিখেছি অন্য প্লটে। আমি যুক্তিবাদি মানুষ কিন্তু আদিভৌতিক সিনেমা,কাহিনীতে কিছুটা প্যাশন আছে,ঐ রাশিফলের মতো আর কী,পড়ি কিন্তু মানিনা টাইপ লইজ্জা লাগে । গল্পে অনেক ফাঁক থাকতে পারে। কিছু ডেসক্রিপশনে ফাঁক থাকতে পারে। চেষ্টা করব যেনো পরে আরেকটু ভালো হয়।

ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

কুকুর চেনে গন্ধ দিয়ে। কুকুরের নাকে ওলফ্যাক্টরি (গন্ধ) রিসেপ্টরের সংখ্যা মানুষের নাকের তুলনায় ৫০ গুন বেশী; কুকুরের মস্তিষ্কের যে অংশ গন্ধ বিশ্লেষণ করে, তা' আয়তনে মানুষের মস্তিষ্কের সমতুল্য অংশের চেয়ে ৪০ গুন বড়। কোন দুজন মানুষের শরীরের গন্ধ কখনও অভিন্ন হয় না। গন্ধের ভিত্তিতে মানুষকে পৃথক করার জন্য কুকুরের কোন অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার দরকার নাই, কারণ এটা তার প্রকৃতিদত্ত এবং জন্মগত ক্ষমতা। প্যারানরমাল গল্পে লজিক না থাকার যুক্তি তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম, কিন্তু বেসিক বায়োলজিকে ইগনোর করার সপক্ষে আপনি যে যুক্তি দেখাচ্ছেন, সেটা মেনে নেওয়া একটু কঠিন। সত্যি কথা বলতে আপনার গল্পে যদি কুকুরটা না থাকতো, তাহলে এই ফাঁকটাও থাকতো না, আর "সাস্পেন্সন অফ ডিসবিলিফ"-টাও অনেক সহজ হত।

Emran

অতিথি লেখক এর ছবি

কোন দুজন মানুষের শরীরের গন্ধ কখনও অভিন্ন হয় না

এরা অভিন্ন নাও ত হতে পারে। শরীরের সাথে সাথে গন্ধটাও ত একই হতে পারে।

আপনার গল্পে যদি কুকুরটা না থাকতো, তাহলে এই ফাঁকটাও থাকতো না

কুকুর ছাড়া কি প্যারানরমাল স্টোরি জমে ভাই? শয়তানী হাসি

তবে আপনার লজিকের জন্য ধন্যবাদ। মনে রাখব।

------------------------
আশফাক (অধম)

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার সাথে কথা বলে মনে হচ্ছে একটা বৃত্তের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছি। একবার বললেন, নকল স্নিগ্ধা আর তার স্বামী অশরীরী; আবার এখন বলছেন "শরীরের সাথে সাথে গন্ধটাও তো একই হতে পারে"। তারা যদি শারীরিকভাবে পৃথক হয়, তাহলে তাদের শরীর থেকে নির্গত গন্ধ পৃথক হতে বাধ্য। আর যদি বলেন যে তারা আসল স্নিগ্ধা আর তার স্বামীকে খুন করে তাদের শরীরে ভর করেছে, সেটাও মেনে নেওয়া কঠিন, কারণ জীবিত অবস্থায় একজন মানুষের শরীর থেকে যে গন্ধ বের হয়, মৃত্যুর পর সেই একই ব্যক্তির শরীর থেকে কখনও সেই গন্ধ বেরুবে না - এটা physiologically এবং biochemically impossible।

কুকুর ছাড়া কি প্যারানরমাল স্টোরি জমে ভাই?

আপনার এই রেটরিকাল প্রশ্নের সহজ উত্তরঃ জমে। বাংলা সাহিত্য এবং সচলায়তনেই একাধিক উদাহরণ আছে। আপনার এই গল্পে কুকুরটা একটা lazy plot device, না থাকলেও কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি হত না।

যাই হোক, এই গল্প নিয়ে আমার মন্তব্যের এখানেই ইতি। নীচে মরুদ্যান আরও কিছু প্রশ্ন করেছেন, সেগুলি নিয়ে চিন্তা করতে পারেন। আপনার কাছ থেকে ভবিষ্যতে আরও গল্প আশা করি। ভাল থাকবেন। ঈদ মোবারক!

পুনশ্চঃ আপনি কি রে ব্র্যাডবেরি রচিত "মার্স ইজ হেভেন" গল্পটা পড়েছেন (সত্যজিৎ রায় এর অনুবাদ করেছিলেন "মঙ্গলই স্বর্গ" নামে)। সেই গল্পের সঙ্গে আপনার গল্পের কিছুটা মিল আছে।

Emran

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি অশরীরী কিছু একটার সাথে ফিজক্স,ক্যামেস্ট্রি মিলাচ্ছেন দেখে একটু অবাক লাগছে। কেউ যদি মরে গিয়ে আবার শরীর ধারন করতে পারে তাহলে তার গন্ধ ধারন করতে সমস্যা কি? গন্ধ ত শরীরের সাথেই যুক্ত,বাহির থেকে ত আসেনা। এখানে মানুষ যদি পৃথক না হয় তাহলে গন্ধ পৃথক ত নাও হতে পারে। এখন আমি যদি পালটা প্রশ্ন করি যে আপনি একটু টাইপড চিন্তা করছেন। যেভাবে প্রচলিত সিনেমা বা স্টোরি দেখছেন তার বাইরে আপনি যেতে চাচ্ছেন না,সেটি কি ভুল বলা হবে?

"মার্স ইজ হেভেন" আমি পড়িনি।কিছু মিল থাকলে সেটি নিতান্তই কাকতালীয়। হরর স্টোরি কিছুটা মিলে যাওয়া হয়ত অসম্ভব না। তবে যদি আপনি মনে করেন যে থিমেটিক মিলটা অত্যন্ত বেশি তাহলে সেটি আমার কাছে প্যারানর্মাল ব্যাপারই মনে হবে।

আপনাদের এমন সহযোগীতা(যেভাবে চাইপ্পা ধরছেন আর কী ইয়ে, মানে... ) পেলে অবশ্যি লিখব।

ঈদের শুভেচ্ছা

পুনশ্চঃ কুকুর দিয়ে জমানোর ব্যাপারটা আসলে রসিকতা ছিলো। পাশের ইমোটা খেয়াল করেন নি হয়ত।

মরুদ্যান এর ছবি

এত কথা না বলে কুকুর প্লটে থাকাটা যে গল্পকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে সেটা স্বীকার করলেই পারেন। আর কেউ আপনারে হুদাই চাইপ্যা ধরেনাই, সহজ স্বাভাবিক সুন্দর যুক্তিযুক্ত সমালোচনার উত্তরে উল্টা পাঠকরে স্টেরিওটাইপড করলে কিছু চাপ তো খাবেনই তাই না?

দুনিয়ার আপনি তো আর প্রথম অশরীরী গল্প লেখক না!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

সবজান্তা এর ছবি

দারুণ। অধিকাংশ ভূতের কিংবা প্যারানর্মাল গল্পে যে সমস্যাটা হয়- শেষের আগেই অনুমান করে ফেলা যায়। আপনি মোটামুটি সফলভাবেই আমাকে তেমন একটা অনুমান করতে দেননি, যদিও ভাই-ভাবী ফোন না ধরায় একটু সন্দেহ হচ্ছিলো।

এই গল্পটা সম্ভবত একটা নাটক হিসেবে বেশ জমে যাবে। লিখতে থাকুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

জান ধরে দিছি যেনো কেউ অনুমান করতে না পারে। খাইছে

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

------------------------

আশফাক(অধম)

মরুদ্যান এর ছবি

আমমমমম………….

বিল্ডাপটা ভাল ছিল, কিন্তু কিছু জিনিস মিলল না। খুনগুলা কখন হয়েছে বুঝলাম না। স্নিগ্ধার দুপুরের (আসল না নকল?) আচরণ মানবীয় মনে হয়েছে, শেষে এসে কেন জানি মিলাতে পারলাম না। কুকুরের ব্যাপারটা যা এমরান বলেছেন তার সাথে একমত।

এই খুনীদের কোপাকুপি তে আগ্রহ, কিন্তু বাচ্চাটা (গলা টিপে খুন?) অক্ষত কেন? কুকুর টা কোথায় ছিল সারা সকাল বা সারা দুপুর? খুনীরা তো জানতো না (ধরে নিলাম) প্রেমিক প্রেমিকা এক জায়গায় আসবে, তাহলে সারা দুপুর তারা রাহিল কে ছেড়ে দিল কেন?

অনেক অনেক প্রশ্ন, কিন্তু তাও লেখার জন্য ধন্যবাদ। চালায় যান।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

খুনগুলা কখন হয়েছে বুঝলাম না।

আপনি ধরেই নিলেন কেনো যে খুনগুলো নকল স্নিগ্ধা আর হাজব্যান্ড করেছে? খুনগুলো কখন হয়েছে সেটাও ত গল্পে নেই। আর খুনগুলো কারা করেছে সেটাও ত গল্পে কোথাও উল্লেখ করা নেই। তারা হয়ত অন্য কারো মাধ্যমে খুন হয়েছেন পরে তারাই অশরীরী হয়ে বেঁচে থাকতে চাইছেন , এইভাবে দেখা যায় না কী?

এই খুনীদের কোপাকুপি তে আগ্রহ, কিন্তু বাচ্চাটা (গলা টিপে খুন?) অক্ষত কেন?

একই কথা বলব। আপনি ধরেই নিয়েছেন যে সকল খুন এরাই করছে। এরা নিজেরাই হয়ত আগে খুন হয়েছেন।
খুনোখুনির প্রতি তাদের হয়ত তেমন কোনো আগ্রহ ছিলোনা। তারা হয়ত বেঁচে থাকতেই চেয়েছিলো কিন্তু ডেডবডিগুলো বের হয়ে যাবার পর তাদের বেঁচে থাকার জন্য খুনগুলো করা প্রয়োজন হয়ে গিয়েছিলো।

আশা করি আপনি যে এ্যাংগেল থেকে দেখছেন তার বাইরে এই এ্যাংগেল থেকেও দেখা যেতে পারে।

ধন্যবাদ।

মরুদ্যান এর ছবি

অশরীরী মানে হচ্ছে যার শরীর নাই, তাহলে তারা আবার দা দিয়ে কুপাকুপি করে কেমনে?

তারা হয়ত অন্য কারো মাধ্যমে খুন হয়েছেন পরে তারাই অশরীরী হয়ে বেঁচে থাকতে চাইছেন , এইভাবে দেখা যায় না কী?
//আপনার গল্প পড়ে এই এ্যাঙ্গেল অন্তত আমার মাথায় আসতনা।

অনেক কথা বলা যেত, বলব না, কারণ ভালই বুঝা যাচ্ছে সমালোচনা শুনার আপনার কোন আগ্রহ নাই। গল্পের লুজ এন্ড যখন অনেক বেশি হয় তখন সেটা তার মান হারায়। যা খুশি একটা কিছু বলে তারপর যদি বলি অলৌকিক তাই সব সম্ভব তাইলে কেমনে কি?

ভাল থাকেন।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

ঈদের শুভেচ্ছা নিবেন। হাসি

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখক লাশের যে বর্ণনা দিসেন, তার উপরই আপনার প্রশ্নের বাইরেও একাধিক প্রশ্ন করা যায়। কিন্তু সেই প্রশ্ন করতে গেলে আবার একটু ফরেন্সিক সাইন্স নিয়ে আসতে হয়। সুতরাং প্রশ্ন কইরে লাভ নাই, কারণ (১) উনার মতে প্যারানরমাল গল্পে নরমাল কোন কিছু ঘটতে পারে না; এবং (২) এক কুকুরের অঙ্ক মিলাইতে যায়েই উনি চাপে থাকার দাবী করতেসেন। এর উপরে ফরেন্সিক দিয়ে উনারে আরও মাইঙ্কাচিপায় ফেলা মনে হয় ঠিক হবে না। সামনে আবার ঈদ!

Emran

অতিথি লেখক এর ছবি

লইজ্জা লাগে

----------------------------
আশফাক(অধম)

গান্ধর্বী এর ছবি

গল্পটা আমি ঠিক বুঝি নি, হয়ত আমার অক্ষমতা। বেশ কিছু প্রশ্ন থেকে গেছে, অন্যেরা সেসব করে ফেলেছেন।
যাকগে, আপনার লেখার হাত ভাল, ভবিষ্যতে আরো লিখবেন আশা করি।

শুভ কামনা।

------------------------------------------

'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। চেষ্টা করব

_____________
আশফাক(অধম)

মেঘলা মানুষ এর ছবি

এইতে একে একে ছক্কা আসছে হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ছক্কাটা মাথার উপ্রে দিয়া গেলোগা।

-----------------
আশফাক(অধম)

Sohel Lehos এর ছবি

গল্প ভাল লেগেছে। মাঝে মধ্যে একটু বুঝতে কষ্ট হয়েছে। আরেকটু বর্ণনা করে লিখলে আমার মত স্লো মানুষদের বোধ হয় বুঝতে সুবিধা হত।

আপনার লেখার হাত ভাল। চলুক

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ
----------------
আশফাক(অধম)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।