সুবিধাবাদের বিশ্বরূপ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৫/০৮/২০১৪ - ৪:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


আমার ছেলেবেলার একটা ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে। আমার সাথে বিকেলে এক মাঠে খেলতো পিঠাপিঠি দুই ভাই। প্রতিদিনই খেলতে আসতো । একদিন বিকেল বেলার পর থেকে আর কোনদিনই খেলার মাঠে ফিরে আসতে পারে নি তারা। কারণ আগের দিন রাতে হাসপাতালে তাদের মা মারা গেছে। যদিও বিশ্বাসীর বলবে, আয়ু ঈশ্বরের হাতে। কিন্তু আমার প্রবল আপত্তি আছে এই বিশেষ মৃত্যুটিতে। সামান্য ডায়রিয়া থেকে পানি শূণ্যতা। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। কিন্তু হাসপাতালে যথেষ্ট স্যালাইন না থাকায় , আমার খেলার সাথীর বাবাকে বলা হয়েছিল বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে আনতে। টাকার অভাবে স্যালাইন কিনতে দেরী হয়েছিল তাঁর। তীব্র পানিশূণ্যতা থেকে মৃত্যু হয় আমার খেলার সাথীদের মায়ের। অনেকদিন আগের কথা। ছেলেদুটিকে আমি তাদের বাবার দোকানে কাজ করতে দেখতাম। এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আমি জীবনে কত শত বার হাতে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ভিক্ষা করতে দেখেছি, তা আমি গুণে রাখি নি। কত জন মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যায়, তার কোন ইয়ত্তা নেই।

বাংলাদেশো ওষুধের বাজার মোটামুটি ১২ হাজার কোটি টাকা। যা তৈরী করতে যে পরিমান খরচ হয়, তা সম্ভবত: চার হাজার কোটি টাকার বেশী নয়। টেকনিক্যালি বাংলাদেশ সরকার যদি সুস্থ ব্যবস্থাপনা করে তবে স্বাস্থ্যখাতে বাজেটের দুই-শতাংশ খরচ বৃদ্ধি করে, তবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে বিনা পয়সায় অষুধ বিতরণ করতে সক্ষম হবে, এমনকি ক্যান্সার রোগের ওষুধসহ। এমন অনেক খাত আছে , যেখান থেকে সহজেই এই পরিমাণ অর্থ বের করা সম্ভব। (বাংলাদেশে ব্যক্তিগত খাতের সর্বোচ্চ কর মাত্র ২৫% (?), তা শুনে আমেরিকার মত পুঁজিবাদী রাষ্ট্র তা শুনেও লজ্জায় মুখ লুকাবে। কর্পোরেট কর বেশী হলেও, বিভিন্ন জটিল উপায়ে কর্পোরেশান সমূহ তা থেকে মুক্তি পেয়ে থাকে।) যাহোক সরকার এখাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না। কারণ কোন না কোন ভাবে, এই দু:শাসনের সুবিধাবাদী বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ।
১. ওষুধ শিল্পের পুঁজিপতিরা: আমি ব্যক্তিগত এদরে অনেককেই চিনি। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প গড়ে তোলার ব্যাপারে এদের অবদান অনস্বীকার্য। এবং ওষুধ ব্যবসার সাথে জড়িত অনেক শ্রদ্ধেয় নাম বর্তমান।( স্যামসন এইচ চৌধুরী, হামিদুর রহমান সিনহা)। কিন্তু দু:খ জনক হলেও সত্য বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের সবচেয়ে বড় বাধা তাঁরাই। তারা তাঁদের সর্বোচ্চ সামর্থ নিয়োগ করবে, যাতে সরকার এধরণের কার্যক্রম হাতে না নিতে পারে। ‌ব্যবসা করার অধিকার নিয়ে অনেক তর্ক হতে পারে , আমি সেদিকে যাচ্ছি না।
২. ওষুধ শিল্পের কর্মকর্তারা: বাংলাদেশের ওষুধ বিপণনের যে ধারা , তার দুটি প্রধান দিক আছে। একটি হচ্ছে, অপেক্ষাকৃত বেশী লাভ এবং রেভেন্যু যে সব সব ওষুধ দেয় সেগুলো মৃতসঞ্জীবনী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা। যেমন- যেখানে কম দামের ওষুধ কাজ করে, সেখানে বেশী দামের ওষুধ ভালো বলে প্রচার করা। অন্য দিকটির রঙ আরো নিকষ কালো। তা হলো চিকিৎসকদের অর্থ ও সম পরিমাণ দ্রবাদি দিয়ে তাঁদের ব্রাণ্ড প্রামোট করা।
৩. ডাক্তার: তাঁরা সমাজের মেধাবী অংশ। যদিও আমি অনেক অসাধারণ সৎ ডাক্তারও দেখেছি। কিন্তু তাঁরাও এর সঙ্গী।
৪. ওষুধ ব্যবসায়ী
৫. পুঁজিপতিরা যাঁরা কর ফাঁকি দিচ্ছেন।
৬. যে শ্রেণীটি বাজেটে দৃষ্টিকটু ভাবে ভাগ বসাচ্ছেন।
৭. সরকার প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যে দায়্ত্বি যাঁদের হাতে।
বলা যায় বাংলাদেশের বিরাট একটা অংশের সুবিধাবাদের শৃঙ্খল পূর্ণ করার নিমিত্তেই, বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে অথবা ধুঁকছে অসংখ্য মানুষ। তাহলে তারা আমরা কি প্রকারান্তরে খুনী নয়। বাংলাদেশে অন্তত: এই বিষয়ে সুব্যবস্থাপনা থাকলে, কত গুলো মানুষের মৃত্যু বা কান্না ঠেকানো সম্ভব ছিল, তার কোন হিসেব নেই। অমর্ত্য সেন যেমন অংক কষে দেখিয়েছেন , বাংলাদেশের দূর্ভিক্ষে অগণণ মৃত্যুর পেছনে পেছনে দায়ী ততকালীন বৃটিশ রাষ্ট্র যন্ত্র। এতো জ্ঞান আমার পেটে নেই। তবে বলতে পারি, আমরা অনেক মৃত্যু হয়তো ঠেকাতে পারতাম।


পৃথিবী সবচেয়ে বেশী আয় করা কোম্পানীর প্রথম দশটির মধ্যে সাতটি কোম্পানী তেল নিয়ে ব্যবসা করে। সাতটি কোম্পানীর মিলিত রেভেন্যু ৩০০০ বিলিয়ন ডলার (উইকিপিডিয়া)। তিন লক্ষ্ কোটি ডলার। ২,২৫,০০,০০০,০০,০০,০০০ কোটি টাকা। এ টাকা ঘরে তুলতে খরচও হয়। তেলের দাম কমে গেলে এই বৃহৎ বেনিয়াদের ক্ষতি হয়ে। তাই তেলের দাম বাড়াতে হবে, প্রধান উপায়-সাপ্লাই কমিয়ে দেয়া। সাপ্লাই কমাবার ভালো পথ হচ্ছে-মধ্য প্রাচ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়া। ফলশ্রুতিতে ফিলিস্তিনে শিশু মরবে- কিন্তু হৃদয়হীন কর্পোরেট দানব নির্বিকার। ফিলিস্তিনে শিশু মরবে, তবেই অস্ত্র ‌ব্যবসায়ীদের নৌকা ভরে উঠবে সোনালী ধানে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বাঁধানো ভীষণ সহজ। বারুদ তৈরী করাই আছে। শুধু আগুন কাঠির প্রয়োজন। বারুদ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ডগমাটিক অসহিষ্ণু মতবাদ সমূহ।
বাংলাদেশের একশ্রেণীর সুবিধাবাদী মানুষের জন্য বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেও সুবিধাবাদীদের কিছু যায় আসে না। তেমনি ফিলিস্তিনে শিশু মারা গেলে কর্পোরেট দুনিয়ার কি যায় আসে। সুবিধাবাদের কোন ধর্ম নেই , দেশ নেই।


পুতিন সাহেব ইসরায়েলকে হুমকি দিয়েছে, আমার ফেসবুক বন্ধুরা পুলকিত। রাশিয়ায় চেচেন মুসলিমদের ক্ষেত্রে পুতিেনর মানবিকতা কোথায় ছিল? পৃথিবীর এক নম্বর ব্যাংক হিসেবে সিটি ব্যাংকের নাম শুনতাম। আজ দেখলাম তা একুশ নম্বরে। চীনের ব্যাংকগুলো সে স্থান দখল করে নিয়েছে। ব্রিক ব্যাংকের যাত্রা শুরু হলো। ভারত পুতিনের পদাংক অনুসরণ করেছে। পশ্চিমা বিশ্ব আরো অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেই যাচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। যেন ঠাণ্ডা যু্দ্ধের উষ্ণতা ফিরে ফিরে আসছে। রাশিয়ায় আগামী বিশ্বকাপ পশ্চিমা বিশ্ব বর্জন করলেও আমি অবাক হবো না।

হলদে ঘাস
টরোন্টো, ৩১শে জুলাই ২০১৪


মন্তব্য

ধ্রুব আলম এর ছবি

লেখার পরিষ্কার উদ্দেশ্য খুজে পেলাম না। কি বলতে চেয়েছেন? ঔষধশিল্প? বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ? চিকিৎসাসেবা? তেলের দাম? মধ্যপ্রাচ্য? বাই-পোলার বিশ্ব?

যা লিখেছেন, তার কম-বেশি আমাদের জানা, এ সকল বিষয়ে আপনার বক্তব্য বোঝা গেলো না।

আর তেলের রিজার্ভ কমে আসছে, ব্যবহার বাড়ছে, দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে, বাড়বে। এতে যুদ্ধ লাগাতে হয়না। তেলের দাম বাড়াতে যুদ্ধ, এমন অদ্ভুত সরলীকরণ আগে দেখিনি। তাও আবার ফিলিস্তিনে, যে কিনা তেল উৎপাদনই করে না। বরং তেলের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের জন্যে যুদ্ধ লাগিয়ে তেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এই কন্সপিরেসি থিওরিটা বাজার পেয়েছে।

সচলে এমন লেখা দেখে, একটু অবাক হয়েছি (মডদের কাজের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখেই বলছি)

দীনহিন এর ছবি

তেলের দাম বাড়াতে যুদ্ধ, এমন অদ্ভুত সরলীকরণ আগে দেখিনি।

আপনি দেখেননি? আমি তো প্রতিদিন, প্রতিস্থলে, সামনে, পিছে, ডাইনে, বামে - এমন সরলীকরণ দেখেই যাচ্ছি!

তেলের যুক্তিটি এতই তেলতেলে যে, অধিকাংশ মানুষই পেটভরে খায়! তাছাড়া, এথনিক ক্লিন্সিং যুক্তি, তাও চলে দেদারসে!

অথচ ক্ষমতা ও রাজনীতিই যে সবকিছুর নিয়ন্ত্রক, সব ঘটনার নিয়ামক, একটু ইতিহাস ঘাঁটলেই তা বেরিয়ে পড়ে!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

ধ্রুব আলম এর ছবি

চিন্তিত গভীরভাবে চিন্তার বিষয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি কয়েকদিন ভীষণ ব্যস্ত ছিলাম ধ্রুব আলম ভাই। তাই এখন লিখছি। প্রথমত: আমি মনে করে কোন কমিউনিকেশন যদি ব্যর্থ হয় , তবে তার জন্য নব্বই ভাগ ক্ষেত্রে দায় যে বিষয়টি কমিউনিকেট করছে তার। তাই ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছি। তেল নিয়ে মধ্য প্রাচ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। এটা কোন ভাবে কোন আদালতেই প্রমাণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যাঁরা ভূ-রাজনীতি নিযে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করেন, তাঁরা এমনটা সন্দেহ পোষণ করেন। ফিলিস্তিনে কোন তেল নেই কথাটা সত্য ।কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের অবস্থান সম্ভবত প্রোথিত যুদ্ধাবস্থার সবচেয়ে বড় নিয়ামক।
মানুষের মতামত প্রকাশের অধিকার আছে। তা প্রকাশের বিভিন্ন পদ্ধতিও আছে। তবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন যেন মতামত অন্যকে যেন অাঘাত না করে। ধরুণ আপনার একটি লেখা আমার কাছে উদ্দেশ্যহীন দূর্বল বলে মনে হলো, কিন্তু মডরা এটিকে নীড় পাতায় প্রকাশ করলো হয়তো ভুল করে। আমি ইগনোর করতে পারি ইচ্ছে করলেই । অথবা দূর্বল দিকগুলো ধরিয়ে দিতে পারি। কিন্তু দূর্বল লেখা কেমন করে প্রকাশ হয়, তা নিয়ে মডদের পূর্ণ সমর্থন রেখে কটাক্ষ করাটা কি ঠিক। আপনি কি কোন কারণে আমার লেখায় বিব্রত বোধ করেছেন ? অথবা মডদের উপর বিরক্ত?

ধ্রুব আলম এর ছবি

লেখাটির দূর্বলতা কোথায় সেটি নিয়ে বাকিরাও মন্তব্য করেছেন, অনুরোধ রাখছি, পড়ে দেখবেন। আর আমি মডদের উপর বিরক্ত নই। তারা আপনার লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উদারতা দেখিয়েছেন। হয়তো আপনাকে আরেকটু গুছিয়ে লেখার উপদেশ দিয়ে, সাজিয়ে নিয়ে লেখাটা প্রকাশ করলেই ভালো হতো। আপনি লেখাটি সাজিয়ে দেননি, সারসংক্ষেপও নেই।

আপনি কি কোন সমালোচনাকেই গঠনমূলকভাবে নিতে পারেন না। জনাব মাসুদ সজীবের মন্তব্যেও দেখলাম বেশ রূঢ় জবাব দিয়েছেন।

আপনি ঢালাও মন্তব্য করেছেন, কিছু পেশা ও ব্যবসা নিয়ে, যা আমি বলেছি পরের মন্তব্যে। এ ধরণের ঢালাও মন্তব্য সব পেশা ও ব্যবসাকে নিয়েই করা যায়। প্রমাণ ছাড়া অনেক কিছুই বলে গেছেন, কোথাও বলেননি, ব্যাপারগুলো আপনার ধারণা অথবা প্রমাণিত সত্য।

যে দেশে সবখানেই দুর্নীতি, সেখানে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে দোষারোপ কি ঠিক? যদি কিছু জেনেই থাকেন, তবে একটু বিশদ লিখুন। জনাব মাসুদ সজীব কিন্তু খুবই ভাল লিখছেন। পড়ে দেখেছেন কি?

তেল নিয়ে মধ্য প্রাচ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। এটা কোন ভাবে কোন আদালতেই প্রমাণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যাঁরা ভূ-রাজনীতি নিযে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করেন, তাঁরা এমনটা সন্দেহ পোষণ করেন। ফিলিস্তিনে কোন তেল নেই কথাটা সত্য ।কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের অবস্থান সম্ভবত প্রোথিত যুদ্ধাবস্থার সবচেয়ে বড় নিয়ামক।

এগুলো কারা বলেন, বা আপনারই কেন এমন ধারণা, প্রমাণ পাবার চেষ্টা করেছেন কি, বিশদ জানতে আগ্রহী।

এক লহমা এর ছবি

চলুক
একটি কথা - দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের শেষ বাক্যে এবং পরেও যেখানে যেখানে শব্দটি এসেছে, "সুবিধাবাদী" কথাটির বদলে "সুবাধাভোগী" বসালে সম্ভবতঃ ঠিক হত।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

বাংলাদেশের চারিদিকে অসততার জয় উৎসব চলছে, প্রতিযোগিতা দিয়ে এখানে দুর্নীতি করা হয়। চিকিৎসা কিংবা ওষুধ শিল্পও তার বাইরে নয়।

মাসুদ সজীব

ধ্রুব আলম এর ছবি

উনার লেখা পড়ে কেন জানি ডাক্তার ও সেই পেশার সাথে জড়িত এমন কিছু ব্যবসার বিরুদ্ধে একটু ঢালাও মন্তব্য ও সরলীকরণের মত মনে হলো। আপনার লেখাটি কিন্তু অনেক অনেক বেশি তথ্যবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। এটাকে 'বিটিং এরাউন্ড দ্যা বুশ' বলা যেতে পারে।

বাংলাদেশের বিরাট একটা অংশের সুবিধাবাদের শৃঙ্খল পূর্ণ করার নিমিত্তেই, বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে অথবা ধুঁকছে অসংখ্য মানুষ। তাহলে তারা আমরা কি প্রকারান্তরে খুনী নয়। বাংলাদেশে অন্তত: এই বিষয়ে সুব্যবস্থাপনা থাকলে, কত গুলো মানুষের মৃত্যু বা কান্না ঠেকানো সম্ভব ছিল, তার কোন হিসেব নেই।

খুব বেশি জেনারালাইজেশন এবং আবেগধর্মী কথা হয়ে গেলো না? এগুলো তো সভা-সেমিনারে প্রায়ই বক্তাদের বলতে শুনি। "সুবিধাবাদের শৃঙ্খল পূর্ণ করার নিমিত্তেই"- কিভাবে? তার জবাবটাই আশা করেছিলাম এখানে।

অতিথি লেখক এর ছবি

উনি অনেক কিছু একলেখায় স্থান দিয়েছেন, আমি শুধু মূল থিমটার(দুর্নীতি) সাথে সহমত পোষন করেছি। ওষুধের মান নিয়ে সচলে আলোচনা করেছি বলে এই পোষ্টে সেটা আর করিনি। সরকারী ওষুধ কিভাবে কোথায় উৎপাদন হয় সেটি সম্পর্কে উনার খুব সম্ভব তেমন কোন ধারণা নেই। আবার সেটি বিতরনে কি পরিমান দু্র্নীতি হয় সেদিকে না গিয়ে উনি দোষের সবটুকু ডাক্তার আর ওষুধ প্রতিষ্ঠানের মালিকদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। এটি জেনারালাইজড হয়ে গেছে অনেকটা। আগামী লেখাতে এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করবো আশা করছি।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

জনাব মাসুদ সজীব সাহেব, আপনি কেমন করে বুঝলেন সরকারী ওষুধ প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই? কারো সম্পর্কে না জেনে এমন মন্তব্য করা কতটা সমীচীন? ধরুন আপনি কিছু নিয়ে লিখলেন, আমি কিছু নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছি। তাহলে আমি যুক্তি উপস্থাপন করব। কিন্তু আমি কখনোও বলবো না , আপনার এই বিষয়ে আপনার কোন ধারণা নেই। ২০০৯ সালের আগে জেলার সিভিল সার্জন অফিসগুলো থেকে ওষুধ সংগ্রহ করা হতো। থার্ড পার্টি নামের স্থানীয় প্রতারক শ্রেণী সিভিল সার্জন সহযোগে কি হরিলুটটা করতো তা দেখার মত। পরবর্তীতে সেন্ট্রালি প্রকিউর করার ফলে সম পরিমাণ টাকা দিয়ে অনেক বেশী পরিমাণ ওষুধ কেনা সম্ভব হয়েছিল। এখন কি অবস্থা আমি জানি না। তবে সেই সময় সব মিলিয়ে মোট বাজেট তিনশ' কোটির বেশী বলে আমার মনে হয় না। যা আমার কাছে অপ্রতুল মনে হয়েছে। খুব সুচিন্তিতভাবে সময় নিয়ে আমি লেখাটি লিখি নি। তবে আমি যা বলতে চেয়েছি-তা হচ্ছে , আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের সীমিত সম্পদের মাঝেও বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব। কিন্তু ব্যাপারটি ঘটছে না তার কারণ একশ্রেণীর মানুষের সুবিধাবাদ। এই চক্রের মাঝে ওষুধ প্রতিষ্ঠানের মালিক, ডাক্তার , প্রোফেশানাল, রিটেইল ওষুধ সরবরাহকারী, সরকারী কর্মকর্তা , রাজনৈতিক নেতা সবাই জড়িত। মানুষের চরিত্রের এই অসীত বর্ণের জন্যই বাংলাদেশে যেমন মানুষ বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যাচ্ছে। ঠিক একই কারণে তেল ও অস্ত্র ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা। মধ্য প্রাচ্যে ইসরায়েলের শক্ত অবস্থানের পেছনেও এটিই দায়ী। ব্যক্তিগত ভাবে যদি কোন কিছুতে আপনি কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে আমি ক্ষমা প্রার্থী।

ধ্রুব আলম এর ছবি

সেটি সম্পর্কে উনার খুব সম্ভব তেমন কোন ধারণা নেই।

এটি কি ব্যক্তিগত আক্রমণ হলো? উনি যথেষ্ট ভদ্র ভাষায় আপনার সম্পর্কে একটা ধারণা প্রকাশ করেছেন।

তবে আমি যা বলতে চেয়েছি-তা হচ্ছে , আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের সীমিত সম্পদের মাঝেও বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব। কিন্তু ব্যাপারটি ঘটছে না তার কারণ একশ্রেণীর মানুষের সুবিধাবাদ।

১৬ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ কি টেঁকসই (সাস্টেইনেবল) একটি ব্যাপার হলো? আমরা কি 'সোসাল ওয়েলফেয়ার স্টেট' ঘোষণা করার মত অবস্থায় পৌছেছি?

অতিথি লেখক এর ছবি

ছোট পরিসরে বেশি জিনিস নিয়ে আলোচনা করে ফেলেছেন। নামের সাথে মিল পেতে একটু সমস্যা হলো তাই।লেখার ৫০ভাগের উপর জায়গা নিয়েছে 'আমাদের ঔষধ শিল্প ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরন' টপিকটি,সেটি ত "বিশ্বরূপ" না।যে কোনো একটা ব্যাপার নিয়ে ডিটেইল আলোচনা হলে আরো উপকৃত হতাম।

নিজের ভিউ বলি একটু, বিনামূল্যে ঔষধ বিতরনের পিছনে সরকারী বরাদ্দ বৃদ্ধি না করার পিছনে আপনি অনেকগুলো কারন দেখালেন কিন্তু আমার কাছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কারন মনে হয় "দূর্নীতি", "অব্যবস্থাপনা"। যে ফ্রী ঔষধগুলো হাসপাতালে বরাদ্দ থাকে সেগুলোও কিন্তু ফ্রী দেয়া হয়না। আমি নিজে একবার এ্যজমার কারনে হাসপাতালে যাওয়ার পর একটি ইনজেকশন আমাকে কিনে আনতে বলা হয় যেটা তাদের রিজার্ভে ছিলো (আমার এক ডাক্তার বন্ধুই বলেছে যে ঐ হাসপাতালে ডিউটি করে)। পরে আমি আমার বন্ধুর নাম বলার পরে ইনজেকশন আসে। এই যে অব্যবস্থপনা সেটিও কিন্তু একটি বড় কারন। সকল ঔষধ ত দূরের কথা জীবন বাচানোর ঔষধটিও দেয়া হচ্ছেনা অথবা টাকার বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে। তাই আমার মনে হয় সরকারী দূর্নীতি কমালেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

-------------------------------
আশফাক(অধম)

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

অবতারণা করা প্রতিটি বিষয়েই অনেক কিছু লেখার অবকাশ ছিল - বেশীরভাগ বিষয় নিজেই আখাদা পোষ্ট দাবী করে। এর সাথে দরকার ছিল লেখকের নিজের চিন্তাভাবনা, বিশ্লেষণ - তাহলে লেখাটা একটা রূপ পেত।

মূল বক্তব্য ঠিক আছে, কিন্তু লেখাটা অগোছাল। অনেকটা ১ কেজি ১কেজি করে ১০ রকম মিষ্টি েক জায়গায় করে সেখান থেক এক চামচ তুলে দেয়ার মতো।

তবে আপনার লেখার ধার আছে - আরো লিখুন।

____________________________

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।