দ্যা গিভিং ট্রি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ০৫/০৯/২০১৫ - ২:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

The Giving Tree
by
Shel Silverstein

ছোট একটা বই, নাম The Giving Tree. ছোট হলেও গুডরিডসে দেখা যায় এর অনেক অনেক পাঠক। অনেকগুলো রিভিউ। অনেকেই এর রেটিংও দিয়েছেন কম। যারা কম দিয়েছে যারা বেশি দিয়েছে তারা সবাইই সঠিক। প্রত্যেকেরই নিজেদের দিক থেকে ভালো ভালো যৌক্তিক কারণ আছে। এই বইটা নিয়ে পাঠকদের মন্তব্য খুবই বৈচিত্রময়। নানা দিক থেকে মানুষ এই বইটাকে দেখেছে, বিচার করেছে। নানাজনের মন্তব্যে সাহিত্যের, সমাজের, শিশুদের মনস্তত্ত্বের অনেক কিছু বেড়িয়ে আসছে।

বইটি লিখেছেন শেল সিলভারস্টাইন। ভেতরের ছবিগুলোও এঁকেছেন তিনি। এটি তার সৃষ্টিকর্মের মাঝে সেরা সৃষ্টি। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত বইটি অনেকগুলো ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

বইটিকে আমি ক্রিটিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করতে যাইনি। বইটি পড়ার সময় ও পড়ার পর আমার অনুভূতিকেই প্রাধান্য দিয়েছি। এরকম একটা গল্প খুব দাগ কেটেছিল একটা চলচ্চিত্র দেখার সময়। বইয়ের চরিত্র একটি গাছ আর আকটি ছেলে। বইটিতে দেখা যায় ছেলেটি যাই চায় গাছটি তাই দেবার চেষ্টা করে। গাছটির কাছে যা আছে তা দিয়েই সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ছেলেটিকে খুশি করার।

যে চলচ্চিত্রটি দেখেছিলাম ওটার নাম Short Term 12. ঐ চলচ্চিত্রে সংশোধনাগারে আসে একটি ১৫ বছরের মেয়ে। কিশোরী মেয়েটি এমন একটা সমস্যা নিয়ে বাস করছে যা কারো সাথেই শেয়ার করা যায় না। মা নেই। নিজের বাবার কাছেও না। এতটাই কষ্ট যে তার কষ্টের কথা কাওকে শেয়ার করলে সবাই ছি ছি করবে। সে তার বাবার কাছ থেকে এবইউজের শিকার। কোথাও যাবার রাস্তা নেই। ঐ অবস্থায় থাকা কী যে কষ্টের। আর মানসিকভাবে কী পরিমাণ চাপ যে সইতে হয়। সিনেমায় মেধাবী পরিচালক সেটা ফুটিয়ে তুলেছিলেন।

মেয়েটা কারো কাছে বলতে না পেরে নিজের কাছে নিজে বলার জন্য একটা গল্প বানিয়েছিল। সে ছিল আঁকিয়ে। ভালো আর্টিস্ট। ছবির সাথে কয়েকটা ভাজে ভাজ দেয়া কাগজে তার জীবনের রূপক গল্প।

Once upon a time, somewhere miles and miles beneath the surface of the ocean, there lived a young octopus named Nina. Nina spent most of her time alone making strange creations out of rocks and shells. And she was very happy. But then on Monday the shark showed up.


"What's your name?" said the shark.
"Nina," she replied.
"Do you want to be my friend?" he asked.
"OK. What do I have to do?" said Nina.
"Not much," said the shark. "Just let me eat one of your arms."
Nina had never had a friend before, so she wondered if this was what you had to do to get one. She looked down at her eight arms and decided it wouldn't be so bad to give up one. So she donated an arm to her wonderful new friend.

Every day that week, Nina and the shark would play together. They explored caves, built castles of sand, and swam really, really fast. And every night the shark would be hungry, and Nina would give him another one of her arms to eat.

On Sunday, after playing all day, the shark told Nina that he was very hungry.
"I don't understand," she said.
"I've already given you six of my arms, and now you want one more?"

The shark looked at her with a friendly smile and said, "I don't want one. This time I want them all."
"But why?" Nina asked. And the shark replied, "Because that's what friends are for."
When the shark finished his meal, he felt very sad and lonely. He missed having someone to explore caves, build castles, and swim really, really fast with.
He missed Nina very much. So he swam away to find another friend.

বইটির গল্পও অনেকটা এই মেয়েটির মতো। তবে মেয়েটির বেলায় দেখা যায় শুধু কষ্টের প্রতিফলন আর বইটিতে গাছটির বেলায় দেখা যায় ভালোবাসার প্রতিফলন। গাছটি তার নিজের দেহের একটা অংশ বন্ধু ছেলেটিকে দিয়ে দেয় আর খুশি হয়, নিজের কষ্ট নাহয় হোক, অন্তত ভালোবাসার মানুষটি তো খুশি হচ্ছে। এটাই অনেক। সত্যিকার ভালোবাসা তো এমনই হয়। বইটা ‘স্লাইড শেয়ার’ থেকে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে পড়ে ফেলা যাবে। পড়ে ফেলতে খুব একটা সময় লাগবে না। বইটা ছোট কিন্তু ভাব খুব গভীর। গাছটি দিতে দিতে যখন তার সব দিয়ে দিল, এক পর্যায়ে আর দেবার মতো কিছুই বাকি নেই তখন ছেলেটা তার কাছে এসে যখন আশ্রয় চায় তখন আশ্রয় দিতে পেরেও গাছটি খুশি হয়।

অনেকে এই বইটাকে একটু অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। অনেকটা এমন- ছেলেটা নিষ্ঠুর। সে ভালোবাসার কোনো দামই দিচ্ছে না। এই ব্যাপারটা ছোটদেরকে শেখানো হচ্ছে। ছেলেরা দেখছে দিনের পর দিন ভালোবাসা পাওয়াই যায়, যখন আমি কাওকে প্রতিদান না দিয়েও অন্যের কাছ থেকে পেতে থাকব তখন দিতে যাবো কেন? এই ধারণা নিয়ে ছোটরা বড় হবে এবং এটা ক্ষতিকর।

আমি মূলত বইটাকে এই দিক থেকে দেখছি না। ছোটদেরকে একটা অন্যরকম কিছু দেখালেই যে তারা অন্যরকম হয়ে যাবে তা কিন্তু না। অ-তে অজগর শেখালে যেমন তারা অজগরের আগমনের ভয় পায় না, বড়ং ইন্টারেস্টিং কিছু একটা মনে করে নেয় অনেকটা তেমন। আবার ভিডিউ গেইমে, সিনেমাতে মারামারি কাটাকাটি খুব বেশি দেখে বলে ওরা কিন্তু কাটাকাটিতে ওস্তাদ হয়ে যায় না। ছোটরা খুব সহজে খারাপটা ধরতে পারবে, এবং ঐ অকৃতজ্ঞতার প্রতি ঘৃণা নিয়ে বেড়ে ওঠতে পারে, সাথে সাথে গাছটির প্রকৃত ভালোবাসাকে শ্রদ্ধা করে বড় হয়ে ওঠতে পারে।

আর বইটাকে বেশি নম্বর দিচ্ছি, কারণ বইটার ভেতরের চরিত্রদের বৈশিষ্ট্য দেখে নয়। ধরলাম চরিত্র খারাপ। চরিত্র খারাপ হলেই কি আমি বাজে নম্বর দিবো? নম্বর তো দিবো লেখক কত নিখুতভাবে ভালো কিংবা খারাপ বৈশিষ্ট্যগুলো ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন তার উপরে। এখানে লেখক মর্মস্পর্শীভাবে ভালো, খারাপ ও খারাপ চরিত্রের এক সময় নিজের খারাপটা উপলব্ধি করার ব্যাপারটা দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন।

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন

মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

ইয়ে,,, লেখকের নাম দেবেন পরের লেখায় প্লিজ। আর ছবিগুলোর সূত্র দেয়া জরুরি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি সিরাজাম মুনির। অসতর্কতায় নামটা বসানো হয়নি। আর এডিট করারও তো সুযোগ নেই। সচলায়তনে মেইল করেছি, যেন কষ্ট করে নামটা বসিয়ে দেয়।

ছবিগুলো ওখানে উল্লেখ করা চলচ্চিত্র Short Term 12 থেকে নেয়া স্ক্রিনশট।

-সিরাজাম মুনির (shrabanmonir@gmail.com)

তিথীডোর এর ছবি

ওহো, আপনি গুডরিডসের সিরাজাম মুনির! আমি ভেবেছিলাম ইমতিয়াজ, লেখার ধাঁচ এক রকম অনেকটা।

স্লাইডশেয়ার থেকে নামিয়ে ফেললাম। ৩২ পাতার ছোট্ট বই, পড়ে ফেলবো।

সচলে স্বাগতম। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

আপু, এটা কিছু হল? এত কষ্ট করলাম আমি আর ক্রেডিট চলে যায় ইমতিয়াজ ভাইয়ের কাছে! খাইছে ইয়ে, বইটা মনে হয় পড়ে ফেলেছেন অলরেডি। কেমন লাগলো জানাবেন, গুডরিডসে বা সচলে একটা রিভিউ দিয়েন।

-সিরাজাম মুনির (shrabanmonir@gmail.com)

অতিথি লেখক এর ছবি

রিভিউটি ভালো লেগেছে,আজি পড়ব হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।