মার্কিন গণতন্ত্র এবং বার্নি স্যান্ডার্সের টাইম মেশিন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১১/০৪/২০১৬ - ৩:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বর্তমান মার্কিন সরকার ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক না বলে গুটিকয় ক্ষমতাবানের শোষণ ব্যবস্থা বলাই অধিকতর যুক্তিসংগত। আমার ধারণা সমগ্র রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আদর্শ আর নৈতিকতার এতখানি অধঃপতন আমি আমার জীবদ্দশায় দেখিনি। -- প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টার (সেপ্টেম্বর ২০১৫, টম হার্টম্যান প্রোগ্রাম)

বিশ্ব জুড়ে সংবাদ-প্রেমীদের দৃষ্টি এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচনের দিকে। এবারের প্রাইমারী রাজনীতি-বোদ্ধাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে নানা কারণে। ধর্ম, বর্ণ, অভিবাসন ও পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থীদের কট্টর অবস্থান যোগাচ্ছে হাসির খোরাক অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীদের মধ্যে গতানুগতিক আর প্রথাবিরোধীর সংঘাতের মাধ্যমে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে এক অন্য ধারার বিপ্লব। রিপাবলিকান প্রার্থীদের নির্বাচনী আশ্বাস, কথাবার্তা, একে অন্যকে আক্রমণে বালখিল্য আচরণ এসব কারণে লেইট নাইট টক শো গুলোতে এখন বিনোদনের কোন কমতি নেই। ওদিকে ডেমোক্র্যাট শিবিরের চিত্রটা সম্পূর্ণ উল্টো। পার্টি নেতৃত্বের পছন্দসই প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে বসলেন সম্পূর্ণ প্রথাবিরোধী একজন রাজনীতিবিদ। ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের বার্লিংটন শহরের প্রাক্তন মেয়র বার্নি স্যান্ডার্স, যিনি নিজেকে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট বলে পরিচয় দেন, ২০১৫ এর মে মাসের শেষ সপ্তাহে ডেমোক্রেট দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রচারাভিযান শুরুর ঘোষণা দেন। সবাই ধরেই নিয়েছিল প্রাইমারীতে একজন বিশেষ প্রার্থীর বিজয় অবধারিত। নির্বাচনী মঞ্চ থেকে বার্নি স্যান্ডার্স, মার্টিন ও’ম্যালী, লিংকন শেফী এদের বিদেয় হওয়াটা সময়ের ব্যাপার ছিল মাত্র। হিসেবে খানিকটা ভুলই করেছিলেন ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির হর্তা কর্তারা। ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬-তে আইওয়া অঙ্গরাজ্যের প্রথম ক’কাস টনক নড়িয়ে দিয়েছে পার্টি নেতৃত্ব আর মিডিয়া সাম্রাজ্যের। আধুনিক পুঁজিবাদের বাতিঘর যুক্ত্রাষ্ট্রে একজন ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট কিনা প্রায় হারিয়েই দিয়েছিলেন তাঁর প্রতিপক্ষকে। সেই বার্নি স্যান্ডার্সকে রুখতে গিয়েই খসে পড়ছে মার্কিন গণতন্ত্রের মুখোশ।

যেসব অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেট প্রাইমারী এবার বিতর্কের সৃষ্টি করেছে সেগুলো একনজরে একটু দেখে নেয়া যাকঃ

আইওয়া ক’কাসঃ ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৬
- ৬ টি কেন্দ্রে কয়েন টস করে বিজয়ী একজন বিশেষ প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা।
- পোক কাউন্টির ভোট গণনায় কারচুপি।
- বার্নি স্যান্ডার্সের ক্যাম্পেইনকে ভোট গণনার টালির হিসেব না দেয়া।

নেভাডা ক’কাসঃ ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
- ক’কাস প্রক্রিয়া ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘায়িত করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে।
- ক’কাস ফর্ম পূরণে ইচ্ছাকৃত ত্রুটি এবং গাফিলতি
- নার্সদের পেশাজীবী ইউনিয়ন বার্নি স্যান্ডার্সকে সমর্থন দিয়েছিল। নার্সরা লাল পোষাক পড়ে ক’কাস কেন্দ্রে গিয়ে লাল পোষাকের অন্য নার্সদের সঙ্গে বসে হিলারী ক্লিনটনের পক্ষে ফর্ম পূরণ করে বেড়িয়ে যাবার সময় বুঝতে পারে যে তাদের ধোঁকা দেয়া হয়েছে। যারা লাল পোষাক পড়ে বসে ছিল তারা আসলে নার্স ছিল না, ছিল হিলারী শিবিরের কর্মী।
এপ্রিলের ২ তারিখে ক্লার্ক কাউন্টিতে ডেলিগেটদের ফিরতি ক’কাসে অনেক ডেলিগেট বার্নির পক্ষে ভোট দেয়ায় শেষ পর্যন্ত বার্নিরই জয় হয়।

ম্যাসাচুসেটস প্রাইমারীঃ মার্চ ১, ২০১৬
- বিল ক্লিনটন একাধিক ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে যান এবং ভোটার সংগে হাত মেলান। অথচ ম্যাসাচুসেটসের আইন অনুযায়ী ভোটের দিন কেন্দ্রের ১৫০ ফুট এলাকার মধ্যে কোন নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে না।

অ্যারিজোনা প্রাইমারীঃ মার্চ ২২, ২০১৬

- এবারের প্রাইমারীর সবচেয়ে ন্যক্কারজনক নির্বাচন মঞ্চস্থ হয় অ্যারিজোনার মারিকোপা কাউন্টিতে। ২০১২ সালে ৩ লক্ষ ভোটারের জন্য যেখানে ছিল ২০০টি ভোটকেন্দ্র, সেখানে ২০১৬ সালে ৮ লক্ষ ভোটারের জন্য করা হয়েছে ৬০টি কেন্দ্র। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ভোট দিতে না পেরে অনেকেই চলে গেছেন।
- যে সমস্ত ইন্ডিপেনডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেট হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছিলেন তারা ভোট দিতে পারেননি। তাদেরকে বলা হয়েছে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে সফটওয়ার জনিত ত্রুটির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
- ভোট গ্রহণের নির্ধারিত সময় শেষ হবার কিছুক্ষণের মধ্যেই বার্তা সংস্থা এপি একজন বিশেষ প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে, যদিও সে সময় হাজার হাজার মানুষ ভোট দেবার অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে।

এ তো গেল মার্কিনী গণতন্ত্রের বাহ্যিক রূপ, উন্নয়নশীল বিশ্বের সাথে তুলনা করলে এ আর এমনকি! কিন্তু পর্দার আড়ালে গণতন্ত্রের এই পুতুল নাচ নিয়ন্ত্রণ করে এক প্রচন্ড পরাক্রম দানব। যার দুটি হাতের একটি হল অর্থ আর অন্যটি মেইন স্ট্রীম মিডিয়া। আমেরিকার এই মুদ্রা চালিত গণতন্ত্রে সরকারের প্রতিটি স্তর নিয়ন্ত্রণ করে Special Interest Group, যার কাজ করে মূলত বিগ বিজনেস এবং ধনিক গোষ্ঠীর হয়ে। এরাই নির্ধারণ করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আর মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের মন। একজন ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় একজন প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ২৭০০ ডলার দিতে পারে কিন্তু Special Interest Group দ্বারা সৃষ্ট Super PAC এর জন্য কোন সর্বোচ্চ মাত্রা বেঁধে দেয়া নেই। দুটি মাত্র দলের ওপর ভিত্তি করে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত, সেখানে ঐ Special Interest Group এর জন্য দুটি দলকেই পকেটস্হ করার কাজটা খুব কঠিন কিছু নয়। তৃতীয় কোন শক্তি এখানে মাথা তুলে দাঁড়াতে চেষ্টা করলেই তাকে দমনের কাজটা বাকী সবাই একজোট হয়েই করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে রালফ নেডারের কথা। ডেমোক্রেটদের কাছেও যিনি সৎ ও প্রগতিশীল বলে পরিচিত, ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ২০০৪ সালে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন (এর আগে ১৯৯৬ ও ২০০০ সালে চেষ্টা করেছিলেন গ্রীন পার্টির হয়ে)। ভোটের হিসাব করতে গিয়ে নেডারকে ঠেকাতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল ডেমোক্রেটরাই। ৫০টি ল’ ফার্মের প্রায় ১০০ জন আইনজীবী মাধ্যমে ১৮টি অঙ্গরাজ্যে ২৯টি অভিযোগ দাখিল করা হয় Federal Election Commission-এ। বেচারা নেডার তাঁর নির্বাচনী প্রচারের সামান্য অর্থ সম্বল ঐসব অভিযোগ খন্ডনেই ব্যয় করেন। নেডার তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে মনে করেন, দুই দল ভিত্তিক এই গণতন্ত্র মানুষের অধিকার ও দাবী-দাওয়ার প্রতি যত না আন্তরিক, তার চাইতে অনেক ব্যাসই সক্রিয় কর্পোরেট অ্যামেরিকা ও বিত্তবানদের চাহিদা পূরণের কাজে। রাল্ফ নেডার এবং বার্নি স্যান্ডার্সের মধ্যে আদর্শিক মিল অনেক। দুজনই মনে করেন যে মার্কিন গণতন্ত্র Special Interest Group বা বিত্তবানদের হাতে জিম্মি এবং এখানে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীটি অনৈতিক নিষ্পেষণের স্বীকার। বার্নি স্যান্ডার্স ক্যারিয়ার পলিটিশিয়ান, সারা জীবন ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসেবেই রাজনীতি করেছেন। প্রথমে বার্লিংটনের মেয়র, তারপর কংগ্রেসে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচিত হওয়া এবং শেষে দুই টার্ম সিনেটে নির্বাচিত হওয়া, এসব ঐ ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসেবেই। নির্বাচনে প্রার্থীতে ঘোষণার প্রায় মাস ছয়েক পর তাঁর উপলব্ধি হয় যে এই তথাকথিত গণতন্ত্রকে মেরামত করতে হলে সেটা করতে হবে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেই, তাই ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নিজেকে ডেমোক্রেট হিসেবে নিবন্ধিত করেন। এই দ্বি-মেরুক এবং সুবিধাবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সরকার ব্যাবস্হায় নির্বাচন বিমুখ এক বিরাট জনগোষ্ঠীকে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে তাঁর উদ্দেশ্য সফল হাবার একটা সম্ভাবনা অবশ্য রয়েছে।

পৃ্থিবীর অন্যান্য উন্নত এবং গণতান্ত্রিক দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ আশংকাজনক ভাবে কম। Organization for Economic Cooperation and Development (OECD) এর সদস্য দেশগুলোতে চালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে সাধারণ ভোটার অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সদস্য ৩৪টি রাষ্ট্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্হান ৩১।

এক্ষেত্রে তরুণ অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৯ এর মধ্যে তাদের অংশগ্রহণের চিত্রটি বড়ই করুণ। ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫১% তরুণের ভোট পড়ে। যেটি ছিল তার আগের আটটি নির্বাচনের মধ্যে সর্বোচ্চ। কিন্তু চার বছর পরই ২০১২ তে সেই সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় ৪১% এ। মধ্যবর্তী নির্বাচনগুলোতে তরুণদের অংশগ্রহণ কখনই ২০% এর ওপরে ওঠে না। অথচ সমস্ত বয়স শ্রেণির মধ্যে তরুণদেরই বেশি রাজনীতি সচেতন হবার কথা ছিল, নীতি, আদর্শ আর সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তাদেরই আড্ডা-তর্কে মেতে থাকার কথা ছিল। আসলে রাষ্ট্রযন্ত্রই যেন তার নাগরিকদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হতে অনুৎসাহিত করে। বেশকয়টি অঙ্গরাজ্যে প্রবর্তন করা হয়েছে বাধ্যতামূলক ভোটার পরিচয় পত্রের বিধান। কেউ যদি অজ্ঞতা বা অসাবধানতা বশত ঐ পরিচয় পত্র তৈরি না করে থাকে তবে সে ভোট দেবার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হবে। স্বল্প শিক্ষিত এবং নিম্নবিত্ত জনগোষ্ঠী এর দুর্ভোগ পোহাবে। ১১টি অঙ্গরাজ্যে Closed Primary প্রক্রিয়ায় প্রার্থী বাছাই করা হয়। অর্থাৎ ডেমোক্রেট হিসেবে নিবন্ধিত ভোটার কেবল প্রাইমারীতে ভোট দিতে পারবেন, রিপাবলিকান ভোটার ভোট দেবেন রিপাবলিকান প্রাইমারীতে। ওদিকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ ভোটার যারা নিজেদের ইন্ডিপেনডেন্ট হিসেবে নিবন্ধিত করেছেন তাদের প্রাইমারীতে ভোট দেবার অধিকার নেই। ডেমোক্রেট প্রাইমারীতে ৭১২ জন Super Delegate প্রার্থী বাছাইয়ে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং এরা ভোটারদের কাছে দ্বায়বদ্ধ নন। Super Delegate –এর এই ধারণাটা কতখানি গণতান্ত্রিক, সেটা এবারের প্রাইমারীতে একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের মত গুরুত্বপূর্ণ দিনেও সরকারী ছুটি নেই। এর ফলে ঘড়ির কাঁটা ধরে যাদের রুটি-রুজি নির্ভর করে তাদের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করাটা কঠিন হয়ে পড়ে।

গণতন্ত্রের প্রচারে ও প্রসারে যারা বাণী দিয়ে বান ভাসায়, যাদের সৈনিকের পদভারে অজানা অচেনা ভূমি পুণ্য হয়, যুদ্ধবিমান আঁধারে ঢাকা নগরালয়ে আতশবাজির খেলায় মাতে শুধু গণতন্ত্রের জন্য, সেই গণতন্ত্রের ওপর নিজেদের মানুষদের আস্হা কতখানি? ‘পপুলার রেজিস্টেন্স ডট অর্গ’ এর এক জরিপে দেখা যাচ্ছেঃ
- মার্কিন ভোটারদের ৮৬% মনে করেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব মানুষের কল্যাণ সাধনের চাইতে নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার কাজেই বেশি উৎসাহী।
- ৮৩% ভোটার বিশ্বাস করেন রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে স্বার্থান্বেষী রাজনীতিবিদ, লবিং গ্রুপ, মিডিয়া এবং বিত্তবানদের একটি জোট দ্বারা।
- উপরন্তু, ৭৯% বিশ্বাস করেন যে কর্পোরেশন, Super PAC এবং ওয়াল স্ট্রিট ব্যাংক নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থ ঢেলে রাষ্ট্র ব্যবস্থার দুর্নীতিকে বৈধতা দিয়েছে।
অন্যের গণতন্ত্রের ওপর মোড়ল-গিরি করতে গিয়ে কখন যে নিজের গণতন্ত্রের ছাতাখানি ভেঙে গেছে সে খবরটুকুও তাদের কাছে নাই।

আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, যা Declaration of Independence নামে পরিচিত, সেটিকে শুধুমাত্র ঘোষণাপত্র বললে এর তাৎপর্যকে কিছুটা খাটো করা হয় বৈকি। রাষ্ট্রের ক্রান্তি লগ্নে জনগণের কি করনীয় তার কিছু দিকনির্দেশনাও তাতে রয়েছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা যখন তার নাগরিকদের অধিকার সংরক্ষণ ও সেবা প্রদানে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বলা হয়েছে –
“জনগণেরই সেই ক্ষমতা রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা সরকার ব্যবস্থার পরিমার্জন অথবা পরিবর্তন করতে পারে এমনভাবে যাতে নাগরিকদের সুখ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।“ এই পরিবর্তনের তাগিদ নিয়েই যেন এসেছেন বার্নি স্যান্ডার্স। বলে যাচ্ছেন সেই ‘দ্যা টাইম মেশিন’ এর গল্প প্রতিটি মিছিলে মিটিঙে। সমাজের উচ্চশ্রেণীর ১% Eloi শোষণ করছে নিচের ৯৯% Morlock দের। মেকী গণতন্ত্রের খোলস ভেঙ্গে, ৯৯%-এর আলোতে আসার এটাই সময়।

-- আহসান অপু

তথ্য সূত্রঃ
https://www.popularresistance.org/americans-consensus-fix-the-corrupt-system/
http://www.electproject.org/home/voter-turnout/demographics
http://www.pewresearch.org/fact-tank/2015/05/06/u-s-voter-turnout-trails-most-developed-countries/
http://www.fairvote.org/voter_turnout
http://www.electproject.org/home/voter-turnout/demographics
http://www.c-span.org/video/?c4578575/clinton-voter-fraud-polk-county-iowa-caucus
https://www.youtube.com/watch?v=kTwXvRt6tyM
https://www.youtube.com/watch?v=GgylBANSu7E&nohtml5=False
http://www.bostonmagazine.com/news/blog/2016/03/01/bill-clinton-massachusetts-voting-laws/
https://www.youtube.com/watch?v=nWPEC6tQ_7o
https://www.youtube.com/watch?v=L6uAlSsflpw
https://www.youtube.com/watch?v=XG4AAEQj9LA&nohtml5=False
https://www.youtube.com/watch?v=orWldii1ikw
http://video.sfexaminer.com/FEEL-THE-BERD-Little-Bird-Endorses-Bernie-Sanders-During-Portland-Rally-30538354

ছবি: 
01/06/2007 - 1:46পূর্বাহ্ন

মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চমৎকার শ্রমসাধ্য লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ! মার্কিন নির্বাচন নিয়ে যে নাটক চলছে তার একটা পরিষ্কার চিত্র পাওয়া গেলো আপনার লেখায়। এ বিষয়ে আরো আপডেট আশা করছি। আর পাঠক যেনো লেখাটি পড়ে সেই কামনা করছি।

আহসান অপু এর ছবি

ধন্যবাদ। চলতি সপ্তাহে কলোরাডোর ক'কাস নিয়েও আরেক কান্ড হয়ে গেছে। ডেনভারের ১০টি কেন্দ্রে ভুল ভোট গণনার কারণে বিজয়ী প্রার্থী ৪% কম ভোট পেয়েছে। এতে তার কপালে ১ জন ডেলিগেট কম জুটেছে। এই হতভাগ্য প্রার্থীটিও ঐ বার্নি স্যান্ডার্স। কিভাবে এই ভুল ধরা পড়ল সেটা খোলাসা হয়নি এখনো। ডেনভার পোস্টে এই ভুলের খবর প্রকাশের আগ পর্যন্ত কলোরাডো ডেমোক্রেটিক পার্টি ব্যাপারটা বেমালুম চেপে গিয়েছিল। এছাড়া এই তথ্যগুলো হিলারীর সংগে শেয়ার করলেও বার্নিকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত কিছুই জানানো হয়নি।
http://dptv.denverpost.com/2016/04/12/colorado-democratic-leaders-admit-to-mistake-on-caucus-vote-count/

অতিথি লেখক এর ছবি

তথ্যবহুল লেখা। ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।