জীবনের বিছিন্নতাবোধ, হরিপূর্ণ ত্রিপুরা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৮/০১/২০১৭ - ৪:১৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম দিককার ঢাকা শহরের এক বৃষ্টিস্নাত সকাল ৷ আমি বসে আসি রাস্তার পাশের এক খুপড়ি চায়ের দোকানে ৷ কিন্তু চায়ের দোকানে চা ও সিগারেটের তেষ্টা মেটাবো এরকম উদেশ্যে আমার বসা নয় ৷ আসল কারণ হচ্ছে নিজেকে একটু ভদ্রস্থ করার চেষ্টা ৷ দোকান হতে টিস্যু পেপার কিনে তা একটু পানিতে ভিজিয়ে তাই আমার কাদা মাখা জুতা জোড়া পরিষ্কার করার কাজে লেগে গেলাম ৷ টিস্যু প্যাকেটটা প্রায় শেষ হয়ে আসছে তবু জুতা জোড়াটাকে যতই মুছছি ততই টিস্যু পেপারে দবদবে সাদা রং কয়লার কালি দেখা যাচ্ছে ৷

আমার গন্তব্য চায়ের দোকান হতে কিছুদূরে দাঁড়ানো এক সুন্দর উচুঁ বিল্ডিং ৷ সেটি আমি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করি তার প্রধান কার্যালয় ৷ আমার সব কলিগরা একে প্রধান কার্যালয়ের ইংরেজি Head Office এর সংক্ষিপ্ত রূপ H/O নামেই ডাকতে স্বাছন্দবোধ করে এবং শব্দটি তাই বহুল প্রচলিত ৷ তবে হ্যাঁ যারা কিনা একটু বিপ্লবী বুদ্ধিজীবি শ্রেণীর কর্মী তারা একে মাঝে মধ্যে ব্যঙ্গ করে বলে - 'সচিবালয় ' ৷

আমার সাজগোছ সম্পর্কে এমন সচেতনতার বর্ণনা শুনে অনেকে ভাবতে পারেন আমি বুঝি এখানে নতুন কর্মী এবং প্রধান কার্যালয়ে এই আমার প্রথম আগমন ৷ কিন্তু নাহ্, বেশ কয়েক বৎসরের চাকরির জীবনে কখনো মিটিং কখনোবা ট্রেনিং এর জন্য আমি বহুবার এই অফিসে পা দিয়েছি ৷ তাই এই জায়গাটিকে ঘিরে আমার স্মৃতির বহরও বিশাল এবং এই স্মৃতিগুলোই হচ্ছে আমার সাজগোছে সচেতনতা হওয়ার পিছনের কারণ ৷ ঝকঝকে ঐ বিল্ডিং এর দিকে চোখ যাওয়া মাত্র আমার মনের জানালা দিয়ে যে সব স্মৃতিগুলো উঁকি দেয় তার মধ্যে অন্যতম হলো -ঐ বিল্ডিং অপেক্ষামান কিছু মানুষের জটলা ৷ সকাল আটটার আগেই তারা ঐ বিল্ডিং এর সামনে এসে সাধারণত অবস্থান নেন ৷ তাদের অনেকের মিটিং ঐ বিল্ডিং এর ভিতরে সাড়ে ন'টায় বা দশটায় ৷ তবু তাদের আটটার আগে আসা চাই ৷ পাশে ভয়- 'ঢাকা শহরের মতো জায়গায় কোন জ্যামে পড়ে না আবার মিটিংএ ঠিক মতো পৌঁছতে না পারি' ৷ আর তার পরিণতি হতে পারে হয়তো বসের কোপানলে পড়া এবং ভাগ্য খারাপ হলে এর রেশ চাকুরি চ্যুতির দিকেও যাওয়া ৷ তাই তাদের এই আগাম আগমন ৷ একবাক্যে তাদের সকলের পরিচয় - 'মার্ঠ পর্যায়ের কর্মী' ৷

কিন্তু আগে আসলে যে প্রধান কার্যালয়ে তাদের আগে প্রবেশাধিকার হবে তা কিন্তু নয় ৷ কোন এক লিখিত বা অলিখিত নির্দেশ আছে উপরিওয়ালাদের -'কোন মাঠ কর্মী পৌনে ন'টার আগে প্রধান কার্যালয়ে ডুকতে পারবেনা ৷' পৌনে ন'টা পর্যন্ত চলে প্রধান কার্যালয়ের কর্মীদের অফিসের প্রবেশের একেবারে শেষ মুহূর্ত ৷

মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সে অপেক্ষার পালার ফাঁকে তাদের মতো তাদের অফিসের ব্যাগগুলোও সারিবেঁধে থাকে কিছুদূরে ৷ এদের অনেকগুলো বহু ব্যবহারে পুরাতন এবং প্রতিটি ব্যাগের যতনা ধারণ ক্ষমতা তার চেয়ে কয়েকগুন জিনিসপত্র ঠাসা ৷ অফিসের কাজের রিপোর্ট, ডায়রি এবং সার্কুলার সহ হরেক দলিল দস্তাবেজে সেগুলো ভর্তি ৷ একেকটা যেন চলমান অফিস ! বসরা কখন কোন জিনিস চায়, কখন কি জিজ্ঞেস করে কোন ঠিক ঠিকানা নাই ৷ তাই অভিজ্ঞ কর্মী মাত্রই এ রকম আগাম প্রস্তুতিতে অভ্যস্ত ৷

শুধু এই অপেক্ষামান লোকের জটলা আর তাদের ব্যাগের বহর দেখে নয়, অনুসন্ধিৎসু চোখের যে কেউ সহজে ধরে ফেলতে পারে - এই লোকগুলো মাঠ পর্যায়ের কর্মী ৷ অপেক্ষামান লোকদের অধিকাংশের চেহারা মলিন ও তাদের মুখমন্ডলে বাংলাদেশের মানচিত্র ৷ বৎসরের পর বৎসর রৌদ্রে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে বাংলার গ্রামে গ্রামে উন্নয়ন ফেরি করে বেড়ায় এই মানুষগুলো ৷ তার মাঝে উপরওয়ালাদের প্রতিনিয়ত চাপ ও চাকুরি হারানোর ভয় ৷ তাই শুধু বহিরাবরণ নয় অনেক মাঠ কর্মীর ভিতরের সত্তাও যেন জীবনের স্পৃহা হারিয়ে নির্জীব ৷
অন্যদিকে প্রধান কার্যালয়ের কর্মীদের মাঝে ঠিক বিপরীত চিত্র ৷ অফিসে প্রবেশ করার অপেক্ষমান সময়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মীগুলো দেখে- কেউবা অফিসের বাসে, কেউবা অফিসের চকচকে গাড়িতে প্রধান কার্যালয়ের কর্মীরা আসছে ৷ চমৎকার তাদের পোশাক আশাক, ঝকঝক করে তাদের অধিকাংশের চেহারা সুরত ৷ মনে হবে ; কোন এক কাঠের নিপুণ কারিগর যেন তার ফার্নিচারকে দোকানে তোলার জন্য শিরীষ কাগজ দিয়ে তার শিল্পের তুলির সর্বশেষ ছোঁয়াটি দিয়েছে ৷

যে সুউচ্চ বিল্ডিংটি আমার গন্তব্য তার নিরাপত্তা বেষ্টনিও খুবই কড়া ৷ যতবার সেখানে গিয়েছি, প্রতিবারই প্রবেশের সময় একটা বাস্কেটে আমার মোবাইল মানিব্যাগ সব রেখে শুধু পরিহিত বস্র নিয়ে একটা মেশিনে ভিতর দিয়ে যেতে হয়েছে ৷ এক সিকা আদুলিরও ঐ মেশিনকে ফাঁকি দেওয়া অসম্ভব ৷ পকেটে কোন সিকি পয়সা থাকলে সেটি কুঁদ করে বেজে ওঠে ৷ তারপর সেখান হতে আমি যাই রিসেপশন নামক ইন্টারোগেশন জায়গায় ৷ অভ্যর্থনাকারী নামে কিছু গোমরামুখো রমণী সেখানে বসে থাকে ৷ কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে এই রকম বিশদ বর্ণনা তাদের কাছে পেশ করে তবে না তারা খুশি হলে একটা রেজিস্ট্রার বই মেলে ধরে ৷ সেখানে একবার এক কলামের তথ্য আমি ভুল করে অন্য কলামে লিখেছিলাম ৷ ওরে বাবা তাদের কি তেজ প্রদর্শন আমার এই ভুলের জন্য ! 'সূর্যের চেয়ে বালুর উত্তাপ বেশি' এই সত্যবাক্যটি উপলদ্ধির জন্য এটা একটা উত্তম জায়গা ৷

তো উপরে বর্ণিত কিছু অনুগল্প হচ্ছে আমার জুতা পরিষ্কারের পিছনে অন্তর্নিহিত কার্য কারণ ৷ মাঠ পর্যায়ের একজন কর্মী হিসেবে আমার নিজস্ব পরিচয় এবং একে ঘিরে যে বাহ্যিক কিংবা অন্তরগত বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান প্রধান কার্যালয় নামক জায়গায় এলে তা প্রচন্ডভাবে প্রকাশ পায় ৷ সেজন্য প্রধান কার্যালয় মানে আমার কাছে অস্বস্তিকর এক জায়গা ৷ সুবেশি নারীপুরুষদের মধ্যে আমার পোশাক পরিচ্ছদ ও শারীরিক অবয়বের দীনতা এবং ঐখানে অন্যদের দ্বারা আমার অভ্যর্থনা যেন আমাকে আমার চরম অস্তিত্বের মুখোমুখি করায় ৷ তাই কাগজে কলমে এবং অবয়বে এই বিল্ডিংটি সংগঠনের প্রাণকেন্দ্র হলেও আমার মতো অধিকাংশ কর্মী প্রাণে তার ঠাঁই নেই ৷ এটা যেন আমার হয়েও আমার নয়, দূরের কোন এক পরাক্রমশালী রাজার প্রাসাদ ৷

..........................................................................................................
সেদিন সকাল থেকেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ৷ আমার জীবনে বাংলাদেশে শীতকালে এই প্রথম বৃষ্টি দেখা ৷ ঢাকায় এসে ওঠেছিলাম আমার বন্ধু সুমনের বাসায় ৷ নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় সে থাকে ৷ সকালে তার গাজীপুরের অফিসে যাওয়ার আগে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো -'যেতে পারবিতো তো অফিসে ? না পারলে জহিররে বল ৷ ওর অফিসও ঔদিকে ৷ তার মোটর সাইকেলে অফিসে যাওয়ার পথে ড্রপ দিতে পারবে ৷ '

জহির আমাদের বন্ধু, থাকে সুমনের এপার্টমেন্টের কাছাকাছি কোন বিল্ডিং এ থাকে ৷ সুমনের প্রশ্নের জবাবে আমি বললাম-'না লাগবে না ৷ আমি লাইনের বাসে না হয় সিনজি ধরে যেতে পারবো ৷ ' কথাগুলো বললাম আসলে জহিরের হোন্ডায় চড়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ৷

জহির কাজ করে একটি ব্যাঙ্কে ৷ সব সময় ফিটফাট ৷ টিঙটিঙে তার চেহারা ৷ তার ঢাকা শহরে চলাচলের প্রধান বাহন হচ্ছে একখানা ঢাউস সাইজের হোন্ডা ৷ কিন্তু শরীরের চেয়েও বড় গাড়িটাকে জহির ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে এমন নৈপুণ্যে চালায় যে আমার একদিকে বিস্ময় অন্যদিকে আতংক তৈরি করে ৷

সুমনের সাথে বীরত্ব দেখিয়ে আমি রাস্তায় বের হলাম ৷ চারিদিকে দেখি স্কুলগামী অফিসগামী মানুষে গিজ গিজ ৷ বাস-সিনজি মানুষ ভর্তি করে আসে, আরো ভর্তি করে যায় ৷ কিন্তু মানুষের সংখ্যা কমার কোন লক্ষণ নেই ৷ আমি হতাশ হয়ে এদিক সেদিক করি ৷ সাড়ে সাতটা থেকে শুরু করে আধ ঘন্টার উপর যুদ্ধ করে বুঝলাম -ঢাকা শহরে গাড়িতে ওঠা আমার কপালে নেই ৷ উপায় সুমনের উপদেশ ৷ জহিরকে কল দিয়ে বললাম -'আমাকে একটু তোর হোন্ডায় অফিসের দিকে পৌঁছায়া দেয় ৷ ' সে এসে আমাকে তার হোন্ডায় কিছু অলিগলি পেরিয়ে কুড়িল ফ্লাই থেকে শুরু করে বিশ্বরোড হয়ে কতো বাস গাড়িদের চিপে চাপা ফুটপাত দিয়ে, রাস্তায় কতো মানুষ ধমক মেরে পঙ্খীরাজ ঘোড়ার মতো তার হোন্ডাটারে এমনভাবে ছুটালো যে আমার প্রাণ যায় যায় অবস্থা ৷ শক্ত করে তার হোন্ডাকে ধরে মনে মনে শুধু উপর ওয়ালার কাছে প্রার্থনা করছি -'হে ইশ্বর এই যাত্রায় আমাকে বাঁচান ৷' একজন নাস্তিকের এর চেয়ে বড় পরীক্ষা আর কি হতে পারে ! এভাবে চলতে চলতে এই চায়ের দোকানে সামনে আমাকে নামিয়ে তার অফিসে চলে গেলো ৷ সাথে রেখে গেল তার পঙ্খীরাজের রাস্তায় দাপট দেখানোর চিহ্ন হিসেবে আমার জুতা জামায় কাদাচিহ্ন লেপে ৷
.......................................................................................................
আমি ঢাকায় এসেছিলাম মূলত ইন্দোনেশিয়ার ভিসার জন্য এপ্লাই করতে ৷ কয়েকদিন আগে আমার বিগবস ফোন করে বলেছিলেন -'ইন্দোনেশিয়ায় একটা কনফারেন্স আছে ৷ আমি আপনার কথা চিন্তা করছি ৷ যাবেন নাকি হরি ?' চাকুরিতে জয়েন করার কিছুদিনের মাথায় ভাগ্যক্রমে বিগবসের সাথে আমার পরিচয় ৷ নতুন ও পছন্দের কর্মীদের সংগঠনে ধরে রাখার জন্য বসরা সাধারণত যে টোপগুলো দিয়ে থাকেন যেমন চাকুরিতে প্রমোশন, বিদেশ ট্যুর ইত্যাদি পরিচয়ের সে প্রথম থেকে কিন্তু তিনি যথাসাধ্য আমার উপর প্রয়োগ করে আসছেন ৷ এই ইন্দোনেশিয়ার যাওয়ার প্রস্তাবও এরকম একটা প্রণোদনা ৷

বসের এই প্রস্তাবে আমার না করার কোন কারণ ছিলোনা ৷ মনে মনে বরং খুশিই হয়েছিলাম -'একটা দেশ দেখবো কনফারেন্সে অংশগ্রহন নামক কাজের আড়ালে, সাথে ভাগ্য ভালো হলে আয়োজকরা যদি কিছু হাত খরচ দেয় টাতে কিছু টাকাপয়সাও পাওয়া হবে ৷ আমি যে বেতন পাই টাতে আমার চলা মুসকিল হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন৷'
কিন্তু ভিসা এপ্লিকেশনে কিছুটা ঝামেলায় পড়লাম ৷ ফরম জমা দেওয়ার সময় ভিসা অফিসার বললো-'তুমি যে অর্গানাইজেশনে কাজ করো তার একটা ব্যাঙ্ক স্ট্যাটমেন্ট লাগবে ৷' মনে মনে ভিসা অফিসারকে গালি বললাম -'মাথা খারাপ তোমার ৷ শুধু আমার মতো তুচ্ছ কর্মীর তোমাদের মত দেশে যাওয়ার জন্য আমার সংগঠন আমাকে ফাইনান্সিয়াল স্ট্যাটমেন্ট দিবে' ?
যাইহোক অনেক কিছু ভেবে আমার ইমিডিয়েট বসকে ফোন করে বিষয়টি জানালাম ৷ তিনি অত্যন্ত সহৃদয় ব্যক্তি ৷ বলবেন -'কাল সকালে অফিসে আসুন ৷ দেখি কি করা যায় ৷ ' ইন্দোনেশিয়ার ভিসা আবেদনে জটিলতা ও এর প্রেক্ষিতে বসের আশ্বাসই আমার এই বেলার প্রধান কার্যালয় নামক জায়গাটিতে সাহস করে আসার ইতিবৃত্ত ৷

.....................................................................................................
প্রধান কার্যালয়ে কোন কাজ হয়নি ৷ সারাদিন এই বিভাগে সেই বিভাগে কত জায়গায় গেলাম ৷ তার মধ্যে বেশি সময় কেটেছে ফাইন্যন্স এন্ড একাউন্ট নামক বিভাগের বিভিন্ন বসের কাছে ৷ তারা আমাকে আমলাতন্ত্রের ফিতা ধরে ধরে এক বস থেকে আরেক বসের কাছে পাঠায় ৷ সর্বশেষ তাদের সর্বপ্রধান বসের সাথেও দেখা করলাম কিন্তু আমি যে প্রজেক্টে কাজ করি তার বর্তমান কোয়ার্টারের ফাইন্সিয়াল স্ট্যাটমেন্ট দিতেও সে ভদ্দরলোক কোনমতে রাজি না ৷ কি আর করা, শেষে আমার খাগড়াছড়ির কলিগকে অনুরোধ করলাম আমার ব্যাঙ্ক স্ট্যাটমেন্টকে কারোর মাধ্যমে ঢাকায় পাঠিয়ে দিতে ৷ দেখি কি হয় এ্যামবেসিতে !

এখন সুমনের বাসায় ফেরার পালা ৷ বিকাল পাঁচটা ৷ মহাখালী ব্রিজের নিচে উত্তরাগামী বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি ৷ মিনিটে মিনিটে গাড়ি আসছে, যাচ্ছে , যানজট পাকাচ্ছে কিন্তু যাত্রীদের ভীড় ঠেলে কোনমতে যে গাড়িতে ওঠবো সে সৌভাগ্য আমার হয় না ৷ সকাল বেলার সময় একই অবস্থা ৷ এক দু'টা সিনজি মাঝে মধ্যে যা একটু দেখা মেলে তারাও চায় আকাশ ছোঁয়া ভাড়া ৷

জীবনে বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন, আর এই অর্থের সন্ধানে আমাকে বারে বারে জীবনে কতো কি প্রধান কার্যালয়ে ধরনা দিতে হবে ৷ নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে হলেও ৷ তেমনি এই ধরনা দিতে যাওয়া-আসার বেলায় প্রয়োজন হবে বাহনের ৷ তাই এই দুঃসময়ে একমাত্র ভরসা বন্ধু জহির ৷ কল দিতেই সে খুব আনন্দের সাথে বললো -'তুই একটু খাড়া বন্ধু ৷ আসতেছি ৷ কোন চিন্তা নাই ৷' তার এই 'আসতেছি' 'চিন্তানাই' শুনে সকালের আতংক আমাকে যেন আকস্মিক ঘিরে ধরে ৷ কিন্তু আমি নিরূপায় ৷ গন্তব্যে যাত্রায় সে এখন একমাত্র ভরসা ৷ মনে মনে আবার প্রার্থনা করলাম -'হে ইশ্বর এই যাত্রায় আমাকে রক্ষা করো ৷ '
-0-


মন্তব্য

নীড় সন্ধানী এর ছবি

লেখকের নাম কি শিরোনামে?
এটি কি গল্প, অভিজ্ঞতা নাকি কর্মস্থলের ডায়েরি?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

হরি ত্রিপুরা এর ছবি

নাহ এটি গল্প, তবে গল্প আর জীবনের অভিজ্ঞতা, কর্মস্থলের ডায়রি যা বলুক এগুলোকে আমি বিছিন্ন কিছু মনে করিনা ৷ এগুলো সবিই গল্প হতে পারে যদি গল্পের মালমসল্লা থাকে বা কেউ যদি মনে করে এটা গল্প ৷
আমার নাম শিরোনামে কেন ? আমি আসলে ব্লগ বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমের লেখালেখিতে নতুন ৷ তাই অনেক সময় বুঝতে পারি না, 'লেখার শিরোনাম অংশে' আমার নাম না দিলে গল্পের লেখক হিসেবে আমার নাম শুধু কি 'অথিতি লেখক' শো (show) করবে না আমার নামও৷ যদি শুধু 'অথিতি লেখক' শো করলে আমার জন্য একটু সমস্যা বলে মনে করি কারণ ভাল হোক খারাপ হোক ঐটাতো আমার সৃষ্টি ৷ তাই তার মালিকানাও আমার নামের সাথে রাখতে চাই ৷ তাই শিরোনামে সচেতনভাবে নাম লাগানোর কারণ হচ্ছে হয়তোবা কিছুটা আমার লেখক সত্ত্বের জন্য এবং কিছুটা আমার অজ্ঞতা বা ভয়ের জন্য -শিরোনামে আমার নাম না দিলে হয়তোবা 'অথিতি লেখক' নামে আমি যে কেউ হতে পারি ৷
এবং সরি আপনার কমেন্টের সর্বশেষ লাইনটির জন্য ৷ বুঝতে পারছি আপনার ভালো লাগেনি লেখাটি বা গল্পের মধ্যে আমার মেসেজটিকে ৷
ধন্যবাদ ৷

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।