অন্তর-বাহির

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২১/১০/২০১৯ - ২:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চড়ুই পাখি দু’টো অনেক্ষন ধরে বালিতে গোসল করছে। বাপ্পি মুগ্ধ হয়ে দেখেছে। এই প্রথম সে চড়ুই পাখিকে গোসল করতে দেখেছে। তার আম্মু একদিন বলেছিল, চড়ুই পাখি অন্যদের মতো পানি দিয়ে গোসল করে না। বালি দিয়ে গোসল করতে পছন্দ করে। তার তখন বিশ্বাস হয়নি।

আজ সামনাসামনি দেখি বেশ ভালো লাগছে। সে মনে মনে এই দৃশ্যটা গেথে ফেলে। পরে বাসায় যেয়ে ছবি একে ফেলবে। আজ বাসার সবাই মিলে হাসান আংকেলের বাসায় ঘুরতে এসেছে। হাসান আংকেল তার বাবার বন্ধু।

বাপ্পির ছবি আঁকতে খুব ভালো লাগে। সে আঁকে আর কল্পনা করে। তার মনে হয় সবকিছু ফ্রেমের মাঝে আটকে ফেলতে।

“এই তুমি কি দেখ ওইদিকে?”

তিনা তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তার বাবার বন্ধুর মেয়ে তিনা। বেড়াতে আসার পর থেকেই তাকে জ্বালাচ্ছে। বাবার বন্ধুর মেয়ে বলে বাপ্পি কিছু বলছে না। স্কুলে হলে অনেক আগেই বকা দিয়ে তাড়িয়ে দিত।

বাপ্পি ভ্রু কুঁচকে বলে “কিছু দেকছি না।”
তিনা বলে, “আমি জানি তুমি কি দেখছো। তুমি ওই নোংরা চড়ুইগুলোকে দেখছ।”
বাপ্পি কিছুটা রেগে যেয়ে বলে, “চড়ুই পাখি নোংরা হবে কেন?”
তিনা মুখ ভেংচি কেটে বলে, “ওরা নোংরাই। বালিতে ঝাপাঝাপি করছে। ছি..।”

তিনা দৌড়ে যেয়ে পাখিগুলোকে উড়িয়ে দেয়। তারপর খিলখিল করে হাসতে হাসতে চলে যায়।
বাপ্পির মন খারাপ হয়। বেচারা পাখিগুলো। সারাদিন কত কাজ করে গোসল করে দুপুরে খাবে তার উপায় নেই। তার প্রচণ্ড রাগ হতে থাকে। সে মনে মনে ঠিক করে বাসায় যেয়ে প্রথমেই অন্য একটা ছবি আকবে। যেখানে তিনাকে অনেক চড়ুই পাখি একসাথে তাড়া করবে আর তিনা বালির উপর পরে গড়াগড়ি খাবে।

ব্যাপারটা চিন্তা করেই বাপ্পি হাসতে থাকে।

“একা একা হাসে, পাগল পাগল!”

তিনা আবার এসেছে তাকে জ্বালাতে। এবার আর বাপ্পি ভ্রু কুঁচকায় না। কিছু বলেও না। সে হেঁটে ঘরের ভিতর চলে আসে। তার মাথায় এখন শুধু রংপেন্সিল ঘুরছে।

সে শুধু অপেক্ষা করছে, কখন সে বাসায় যাবে, কখন সে আকবে।

আমিননোমান


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।