শক্তি ও দুর্বলতা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ২২/০১/২০১১ - ১১:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জহিরুল ইসলাম নাদিম

স্মৃতি যে এক ধরণের শক্তি তা ছোটবেলায় প্রথম টের পাই।
যাই পড়তাম দিব্যি মনে থাকত।
অবন ঠাকুরের বই থেকে শুরু করে সুকুমার রায়
সব লেখাই এক নিঃশ্বাসে উগড়ে দিতে পারতাম
উল্লেখ করার মতো কোনো বিচ্যুতি না ঘটিয়েই।

বাবার সাথে সিনেমা দেখতে গেলে
বাড়ি ফিরে ছবির পুরো কাহিনী গড় গড় করে বলতে পারা
ছিল লুডু খেলার মতো সহজ কাজ।
আরেকটু বড় হলে গোটা রবীন্দ্র সমগ্র
মাথার ভেতর চালান করে দিয়েছি।
প্রয়োজনের সময় সেখান থেকে একটি দুটি সোনার মোহর
তুলে আনতে কখনো কসরৎ করতে হয়নি।

যে শুনেই সব মনে রাখতে পারে তাকে শ্রুতিধর বলে।
তার চেয়ে বেশি, বলতে নেই, একদম ফটোগ্রাফিক মেমোরি ছিল আমার।
এক পলক দেখেই সব মনে রাখার আশ্চর্য্য ক্ষমতা।
কিন্তু হঠাৎ সেদিন আবিষ্কার করলাম যে আমিও ভুলে যাই!
নাকের ডগায় চশমা রেখে কী কেলেঙ্কারি কান্ড
কেবল থানায় ডায়রী করা বাকি রাখলাম সেটা খুঁজে পেতে!
গত সাতদিনে মোট দুবার
ভেতরে চাবি রেখে বাইরে তালা মেরে দিয়েছি।
আর সেদিন আমার প্রিয় মোবাইলের দরকারী কভারটি
কোথায় যে ভুলে রেখে এলাম মনেই করতে পারছি না।

ভয় পেয়েছি খুব।
তুচ্ছ জিনিস-পত্র হারানোর জন্য নয়, হারানোর কারণটির জন্য।
বুড়িয়ে যাচ্ছি নাকি?

এক সময় যা ছিল শক্তি
সময়ের নিমর্ম কারসাজিতে তাই হয়ে গেল দুর্বলতা।
কী অবিশ্বাস্য বৈপরীত্য!


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

নাদিম ভাই, অনেক দিন পরে লিখলেন মনে হচ্ছে। ভালই লাগলো কবিতাটা।

অনন্ত আত্মা

অতিথি লেখক এর ছবি

তেমন কী আর পরে লিখলাম? মাঝে মাঝেই তো লিখি! ভালো লাগার জন্য ভালো লাগছে।
জহিরুল ইসলাম নাদিম

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার এন্ডিং নাদিম ভাই।
শেষটুকুর জন্যেই লিখার রেশ মাথার ভেতর বেশ খানিকক্ষণ রয়ে যায়।
আরো লিখুন।

-------
সাত্যকি

-------

অতিথি লেখক এর ছবি

যদি শেষটুকুর মতো শুরুটুকুও চমৎকার হতো তাহলে না জমতো!
যাই হোক, ধন্যবাদ আপনাকে অসংখ্য।

জহিরুল ইসলাম নাদিম

অতিথি লেখক এর ছবি

এক সময় যা ছিল শক্তি
সময়ের নিমর্ম কারসাজিতে তাই হয়ে গেল দুর্বলতা।
কী অবিশ্বাস্য বৈপরীত্য!

ভাল লেগেছে পড়তে।

বিপ্লবী স্বপ্ন।

অতিথি লেখক এর ছবি

বিপ্লবী স্বপ্নকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিয়ে খাটো করা গেল।

জহিরুল ইসলাম নাদিম

অতিথি লেখক এর ছবি

নাকের ডগায় চশমা রেখে কী কেলেঙ্কারি কান্ড
কেবল থানায় ডায়রী করা বাকি রাখলাম সেটা খুঁজে পেতে!

হো হো হো হো হো হো

ভাই, আমার আরও ভয়াবহ অবস্থা। পরিচিত মানুষের নাম এবং জায়গা ভুলে যাচ্ছি মুড়িমুড়কির মত। সামনে পড়ে বেইজ্জতি অবস্থা। এক পরিচিত বড়ভাই এর সাথে আধাঘন্টা পাশাপাশি আলাপ চালিয়ে ঘুরলাম রাস্তায়। অথচ তার নাম মনে করতে পারছি না এখন পর্যন্ত। ভাগ্যিস জিজ্ঞাসা করেনি। ইয়ে, মানে...

-অতীত

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন থেকে মোবাইলে প্রত্যেকের ছবি তুলে ছবির ক্যাপশন হিসেবে নাম লিখে রাখুন!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।