পাঠ প্রতিক্রিয়া: "যখন ক্রীতদাস: স্মৃতি '৭১"

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: বিষ্যুদ, ০২/০৭/২০১৫ - ৩:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আশা মানুষকে শুধু সামাজিক সংকোচেই ফেলে না, তার আত্মাকে সঙ্কুচিতও করে। স্বাভাবিক একটি দিনে মানুষ যতোটা ঋজু, যতোটা প্রসারিত, যতোটা বলিষ্ঠ ও আকাশপ্লাবী, বিপন্ন দিনে আশার ভারে সে ততোটাই ধ্বসে পড়ে ভেতরের দিকে, ততোটাই কুঁচকে যায়, ততোই দুর্বল ও আড়ালকাতর হয়ে ওঠে। বিপদ কেটে গেলে সেই আশাঘটিত অন্তঃস্ফোরণের স্মৃতি মানুষের মনে এক অবাঞ্ছিত ভার হয়ে থাকে। কেউ সে স্মৃতি এড়িয়ে চলেন, কেউ অস্বীকার করেন, কেউ বিকৃতি ঘটান, কেউ মুখোমুখি হন। শেষোক্ত দলের অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে সাহস প্রয়োজন। নাজিম মাহমুদের এই বইটিতে সে সাহসের সরল ও অকপট প্রকাশ আছে।


প্রচ্ছদ

আমরা প্রতিদিনের জীবনে যাদের সান্নিধ্যে আসি, তাদের একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশই হয়তো প্রকৃত বীর। আমাদের বাকিরা হয়তো ভীতু সম্প্রদায়ের লোক, কিন্তু এ সত্যটির মুখোমুখি যাতে হতে না হয়, সে চেষ্টায় আমরা সবসময়ই থাকি। যেমন বলশালী কোনো বেয়াদপ পার্শ্ববর্তী দুর্বলের ওপর চড়াও হলে আমরা সরে গিয়ে তাকে জায়গা করে দিই, যাতে আপন গর্দানটিকে বিপন্ন করে সাহসের অনুপস্থিতির কাঁটাটি আমাদের অন্তরে এসে না বেঁধে। এই ভীরুতা আমাদের দিনান্তের আয়েশ নিশ্চিত করে, নিশ্চিন্তে নিজের বুদবুদের ভেতরে ফিরে আমরা আপন ব্যাঘ্রহীন কোটরের শেয়াল রাজার মুকুটের ভার মাথায় নিতে পারি। এই ভীরুতা আমাদের আপন বাগানের উৎকলিত পুষ্প।

কিন্তু যদি দিনের পর দিন এই ভীরুতায় আমাদের বাধ্য করা হয়, তখন আমাদের আচরণ কেমন হবে? সাহসী হতে না চাওয়া, আর সাহসী হতে না পারার ভেতরে এক ভীষণ দুর্গম প্রশ্নসংকুল ব্যবধান রয়েছে। আমাদের ভেতরে যারা শিক্ষিত কিন্তু পেলব, সামাজিক কিন্তু দায়ভারাক্রান্ত, ইচ্ছুক কিন্তু অসমর্থ, তারা এই বাধ্যতার মূল্য কী করে পরিশোধ করেন?

"যখন ক্রীতদাস: স্মৃতি ৭১" বইটি নাজিম মাহমুদ এই প্রশ্নের উত্তরেই যেন সাজিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আর পূর্ব পাকিস্তানে তাদের বশংবদদের সহিংস নিয়ন্ত্রণে সেনানিবাসে পরিণত হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরের মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত যাপিত সঙ্কুচিত প্রায়বন্দী জীবনের স্মৃতিচারণ উঠে এসেছে বইটির বেশিরভাগ জুড়ে। সে জীবন যেন স্বাভাবিক মনুষ্যত্বের একতলা ছেড়ে বন্দী ও মনুষ্যত্ব-অস্বীকৃত শত্রুর পরিচয়ের পাতালঘরে আশ্রিত, আর আশার দুর্দম ভারে সঙ্কুচিত।

লেখকের কলম যাত্রা শুরু করেছে একাত্তরে বহু বুদ্ধিজীবীর হত্যাকাণ্ডের পেছনে সক্রিয়ভাবে কলকাঠি নাড়া দালাল সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েনের সান্নিধ্যের স্মৃতিচারণ দিয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে লেখক বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য হোসায়েনের রাতারাতি বদলে যাওয়া চরিত্রের ভেতর থেকেই যেন একাত্তরের দেশের রাতারাতি পাল্টে যাওয়াকে বেরিয়ে আসতে দেখেছেন। যে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বাংলা ভাষা প্রবর্তনের উদ্যোগ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচিত হচ্ছেন, রাতারাতি তিনিই পরিণত হচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানী সেনাকর্তা কর্নেল তাজের সুবোধ অনুচরে, পাক সেনাদের কাছে তালিকা করে চিনিয়ে দিচ্ছেন, কে ভাই কে দুশমন। ঢাকায় পঁচিশে মার্চের পৈশাচিক গণহত্যা শুরুর পর প্রায় হপ্তা তিনেক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিকামী বাঙালিদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। মধ্য এপ্রিল থেকে পাকিস্তানি সেনারা সেখানে পাকাপাকিভাবে ঘাঁটি গাড়তে শুরু করে। সাময়িক পলায়নের পর উপাচার্য হোসায়েনের রেডিওবার্তায় বিভ্রান্ত হয়েই লেখক সপরিবারে ফিরে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে, এবং বরণ করেন এক প্রায়বন্দীর জীবন। এক সহকর্মীর মুখে তিনি সে জীবনকে প্রশ্নের আকারে চিনতে শেখেন, এ জীবন মৃত্যুর চেয়েও নিকৃষ্ট।

বাঙালি হয়ে পাকিসেনা শাসিত ও পরিবেষ্টিত সেই জীবনের বর্ণনায় এমন অদ্ভুত সব উপাখ্যান উঠে এসেছে, যার বিশদ বর্ণনায় গেলে হয়তো লেখকের কলম খানিকটা সরসতা হারাতো। হয়তো সে কথা মাথায় রেখেই বেশ কিছু প্রসঙ্গে তাঁর কলম নীরব ছিলো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কোন বাঙালি সক্রিয়ভাবে পাকি সেনাদের সহযোগিতা করেছেন, নামগুলো সব আমরা এ বইতে পাই না। হয়তো মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী জীবন লেখককে এই পরোক্ষ আপোষে প্ররোচিত করেছে। কিন্তু এই অনুল্লেখ বইটিকে খুব বেশি দুর্বল করেনি। জীবনে গল্পের পরিবর্তে সত্যই আগন্তুক হিসেবে বারবার আমাদের সামনে আসে, বইটিতেও সত্য ঘটনাগুলো গল্পের চেয়ে বেশি নাড়া দিয়ে যায়। শিক্ষকতা করতে এসে যে মানুষগুলো পাকি সেনাদের সামনে কুঁচকে ছোটো হয়ে থাকেন, এক একটি অদ্ভুত ঘটনার ভেতরে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষণ আবিষ্কার করতে থাকেন, দালাল সহকর্মীর কাছ থেকে নিজের আশাকে লুকিয়ে রাখতে রাখতে আবার প্রাণরক্ষার তাগিদে তার দুয়ারেই উপস্থিত হন আশার ভেলায় ভেসে, এমনি শ্বাসরূদ্ধকর সব উপাখ্যান বর্ণিত বইটির পাতায় পাতায়। সে সব উপাখ্যান পড়ে আশ্চর্য হয়ে দেখি, চার দশক পরও আমাদের সমাজে একাত্তর অনুরণিত হয়ে চলছে প্রায় একই ছন্দে। যেমন, যে ভাষায় দৈনিক প্রথম আলো জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের "দুর্বৃত্ত" লিখে আবছা করে দেয়, সেই একই ভাষায় একাত্তরের নভেম্বরে রোকেয়া হলে গণধর্ষণ চালানো পাকিস্তানি সেনাদের সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসা উপাচার্য সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন বলেছিলেন, সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারীরা রোকেয়া হলে প্রবেশ করেছিলো। কী অদ্ভুত সাদৃশ্য উভয় ঘটনার দুষ্কৃতী ও তাদের দোসরদের মধ্যে!

একাত্তরের স্মৃতিচারণ পাঠ আমাদের জন্য কেন জরুরি? যে কারণে আয়নায় নিজের ছায়া দেখা জরুরি। নাজিম মাহমুদের একাত্তরের জীবন আমরা বর্তমানে যে যাপন করছি না, সে কথাই কি কেউ খুব জোর দিয়ে বলতে পারি? একবার আপনারে চিনতে পারলে অচেনারে চেনার কাজটা সহজ হয়ে যায়। আর নিজেকে চেনার আয়না অপরের জীবনে খণ্ডিত হয়ে ছড়িয়ে থাকে। সে আয়না সংগ্রহের জন্য গ্রন্থপাঠের চেয়ে উত্তম সুযোগ আর হয় না।

বইটির কলেবর স্ফীত না হলেও তার স্বাস্থ্য অটুট, বাহুল্য নেই বললেই চলে, এক বসায় পড়ে শেষ করার মতো। নাজিম মাহমুদ নিজের সেই বন্দীরূপকে ক্রীতদাস হিসেবে পাঠকের কাছে পরিচয় দিয়েছেন, কিন্তু পাঠক হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে, একাত্তরের নাজিম মাহমুদ এক আশাখনির শ্রমিক। দুর্গম সে খনিতে তিনি প্রতিদিন পর্বত চূর্ণ করছেন কণিকারূপী আশার সন্ধানে। সে শ্রম তাঁকে প্রতিনিয়ত গ্লানি আর শ্রান্তির ভারে ন্যুব্জ করলেও পরাজিত করতে পারেনি। একাত্তরকে আমি যোদ্ধার চোখে দেখেছি, পলাতকের চোখে দেখেছি, দালালের চোখে দেখেছি, কিন্তু আশার ভারবাহী অগণিত প্রায়বন্দী মানুষের চোখে দেখার সুযোগ খুব বেশি হয়নি। এ বইটি সে সুযোগ করে দিয়েছে। সকলকে বইটি সংগ্রহ করে নিজে পড়তে ও অপরকে পড়াতে অনুরোধ করি।

বইটি যারা পড়বেন, একটু কষ্ট করে গুডরিডস.কমে বইটির ভুক্তিতে নিজের পাঠ প্রতিক্রিয়া আর রেটিং যোগ করে দেবেন।


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

একাত্তরের স্মৃতিচারণ পাঠ আমাদের জন্য কেন জরুরি?
যে কারণে আয়নায় নিজের ছায়া দেখা জরুরি।

চলুক চলুক চলুক

বইটি সংগ্রহ করেছি সেই ফাল্গুনেই। বাসায় আনতে না আনতেই আব্বা ছোঁ মেরে দখল করে নিয়েছিলেন। তারপর আর পড়াই হয়নি, ভুলেই গিয়েছিলাম প্রায়। সামনের ছুটিতে বইটা পড়ে আবার আসব।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রানা মেহের এর ছবি

রিভিউ পড়েই বইটাকে ভালো লেগে গেল।
একটা প্রশ্ন,

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কোন বাঙালি সক্রিয়ভাবে পাকি সেনাদের সহযোগিতা করেছেন, নামগুলো সব আমরা এ বইতে পাই না। হয়তো মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী জীবন লেখককে এই পরোক্ষ আপোষে প্ররোচিত করেছে। কিন্তু এই অনুল্লেখ বইটিকে খুব বেশি দুর্বল করেনি।

এই অনুল্লেখ বইয়ের দুর্বলতা মনে হয়নি কেন?

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

হিমু এর ছবি

দুর্বলতা মনে হয়েছে (মনে না হলে প্রসঙ্গটাই আসতো না), কিন্তু খুব বড় দুর্বলতা মনে হয়নি। কেন মনে হয়নি সেটা উপলব্ধি করার জন্য বইটা পড়তে হবে।

এক লহমা এর ছবি

রিভিউ বইটি পড়ার আগ্রহ জাগালো। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

রিভিউ ভাল লেগেছে। সময় করে বইটা পড়ে ফেলার আশা রাখি।

আশা মানুষকে শুধু সামাজিক সংকোচেই ফেলে না, তার আত্মাকে সঙ্কুচিতও করে। স্বাভাবিক একটি দিনে মানুষ যতোটা ঋজু, যতোটা প্রসারিত, যতোটা বলিষ্ঠ ও আকাশপ্লাবী, বিপন্ন দিনে আশার ভারে সে ততোটাই ধ্বসে পড়ে ভেতরের দিকে, ততোটাই কুঁচকে যায়, ততোই দুর্বল ও আড়ালকাতর হয়ে ওঠে।

গত কয়েকদিন ধরে মাথার ভেতর একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে। যে আশার ভারটুকু নিজের উপর চেপে রয়েছে অহর্নিশ, তার কতটুকু আমার নিজের?

আমি তোমাদের কেউ নই -> আতোকেন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের রাজনৈতিক এবং নৈতিক অবস্থান জানার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা বই। রিভিউ ভালো লাগলো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ একটা বই। নাজিম মাহমুদ চাচাকে বাচ্চাবেলা থেকেই চিনতাম, উনার মেহেদি রাঙানো চুলের কারণে ভাবতাম কোন শিল্পী হবেন, অনেক পরে জানলাম একজন সুলেখক এবং আমাদের প্লেটো ভাইয়ের বাবা।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আগ্রহ জাগানিয়া রিভিউ, মূল বইটি অচিরেই পড়ার ইচ্ছা রাখি।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

নাজিম মাহমুদ অসাধারণ গীতিকারও ‌ছিলেন। যতদূর মনে পড়ে ১৯৯৮ এ রাজশাহীতে রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলনের কিছুদিন পরেই তিনি চলে যান। সেই সময় ছায়ানট আর জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ মিলিতভাবে নাজিম মাহমুদের গান নিয়ে চারুকলা ইন্সটিটিউটের বকুলতলায় অনুষ্ঠাণ করেছিল। গানগুলি সতেরো বছর পরেও মনে পড়ে।

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

সিদ্ধার্থ মাঝি  এর ছবি

বইটা পড়ার জন্য কেনা হলেও এখনো পড়া হয়ে উঠেনি। আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়া পড়ে আগ্রহটা বাড়ল। রিভিউটা ভালো লেগেছে।

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

মাঝি বইটি দিবেন তো পড়তে।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

এই ভীরুতা আমাদের দিনান্তের আয়েশ নিশ্চিত করে, নিশ্চিন্তে নিজের বুদবুদের ভেতরে ফিরে আমরা আপন ব্যাঘ্রহীন কোটরের শেয়াল রাজার মুকুটের ভার মাথায় নিতে পারি। এই ভীরুতা আমাদের আপন বাগানের উৎকলিত পুষ্প।

হয়ত আমাদের অনেকের মুখোশ খুলে দিলেন!
খুব সুন্দর রিভিউ। বইটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পড়ে ফেলতে হবে।
।।।।।।।
অনিত্র

মাসুদ সজীব এর ছবি

আশার ভারবাহী অগণিত প্রায়বন্দী মানুষের চোখে দেখার সুযোগ খুব বেশি হয়নি

রাইফেল রোটি আওরাত বোধহয় কিছুটা এই ক্যাটাগরি তে পড়ে মনে হচ্ছে। পড়েছেন নিশ্চয় হাসি

ছোট অথচ আগ্রহ জাগানিয়া রিভিউ। অবশ্যই পড়বো হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

আনু-আল হক এর ছবি

সে সব উপাখ্যান পড়ে আশ্চর্য হয়ে দেখি, চার দশক পরও আমাদের সমাজে একাত্তর অনুরণিত হয়ে চলছে প্রায় একই ছন্দে। যেমন, যে ভাষায় দৈনিক প্রথম আলো জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের "দুর্বৃত্ত" লিখে আবছা করে দেয়, সেই একই ভাষায় একাত্তরের নভেম্বরে রোকেয়া হলে গণধর্ষণ চালানো পাকিস্তানি সেনাদের সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসা উপাচার্য সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন বলেছিলেন, সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারীরা রোকেয়া হলে প্রবেশ করেছিলো। কী অদ্ভুত সাদৃশ্য উভয় ঘটনার দুষ্কৃতী ও তাদের দোসরদের মধ্যে!

চলুক

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

স্পর্শ এর ছবি

হিমু ভাই, রিভিউটা পড়ে আপনি একটা সিরিয়াস উপন্যাস লেখার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত মনে হচ্ছে!
কলম (কিংবা কীবোর্ড) চালান!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

আয়নামতি এর ছবি

চলুক
বইটা সংগ্রহ করে পড়বার সর্বোচ্চ আগ্রহ থাকলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

রিভিউ টা এমন ভাবে লিখেছেন যে বইটা পড়তেই হবে।
“আশার ভারবাহী অগণিত প্রায়বন্দী মানুষের চোখে দেখার সুযোগ খুব বেশি হয়নি। এ বইটি সে সুযোগ করে দিয়েছে “--------অনেক আগ্রহ জাগানিয়া রিভিউ,অবশ্যই বইটি সংগ্রহ করে পড়বো।
Jaraahzabin

মরুদ্যান এর ছবি

পড়বার আশা রাখি।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

যদি দিনের পর দিন এই ভীরুতায় আমাদের বাধ্য করা হয়, তখন আমাদের আচরণ কেমন হবে? সাহসী হতে না চাওয়া, আর সাহসী হতে না পারার ভেতরে এক ভীষণ দুর্গম প্রশ্নসংকুল ব্যবধান রয়েছে। আমাদের ভেতরে যারা শিক্ষিত কিন্তু পেলব, সামাজিক কিন্তু দায়ভারাক্রান্ত, ইচ্ছুক কিন্তু অসমর্থ, তারা এই বাধ্যতার মূল্য কী করে পরিশোধ করেন?

কিছুটা অপরাধবোধ আর বাকীটা আত্মগ্লানি দিয়ে।

বইটার খোঁজ করার তালিকায় রাখলাম।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।