রামপালে বামপাল: ০২

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: রবি, ১৪/০৮/২০১৬ - ৫:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্বের পর আবারো বামপালিদের গোড়ালিবন্দী প্যান্ট নিয়ে কথা বলতে ফিরে এলাম।

প্রথম পর্ব লেখার পর আমার পর্যবেক্ষণ, রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা যারা করছেন (এদের সবাই বামপাল নন), তারা তর্কে খুব সক্রিয় হলেও রেফারেন্স যোগাতে উদাসীন/অপারগ। কেউ কেউ একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে জরুরি কাজে বাইরে চলে যান, সেটার সপক্ষে কোনো তথ্যসূত্র হাজির করতে বললে সাড়া দেন না। কিংবা এমন কোনো তথ্যসূত্র দেন, যেটা তিনি নিজেও পড়ে দেখেন নি বলে টের পান না যে ভেতরে তার কথার সপক্ষে কোনো কিছু লেখা নেই, অথবা লেখা আছে তার কথার বিপক্ষে ব্যবহার করা যায়, এমন কিছু।

আমার উপলব্ধি, বেশিরভাগ মানুষ এখন আর তথ্যসূত্র যাচাই করার জন্যে পড়ে না। বামপালও এ কথা জানে, তাই তারা নিজেদের যুক্তি এমনভাবে উপস্থাপন করে, যেন কেউ আর কষ্ট করে সেগুলো যাচাই করে দেখতে না যায়। যদিও যাচাইয়ের অবারিত দুয়ার হিসেবে গুগল খোলা আছে। কিন্তু লোকে যতো বেশি পড়ে, ততো বেশি জানে, ততো কম মানে।

যারা কোনো কিছু না পড়ে "আমার খালু কৈছে" বলে তর্ক করতে চান, এই পোস্ট তাদের মুক্তোবনে উলুর মতো অপ্রাসঙ্গিক। আর মতলববাজদের জন্যে আগাম সতর্কবার্তা, রামপালে নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ক্ষতি করবে কি করবে না, সে ব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নেই। আমি রামপালের বামপালদের প্রচারণার কয়েকটি ভুল এবং/অথবা অসত্য পয়েন্ট ব্যবচ্ছেদ করতে চাই কেবল। কেউ যদি সুন্দরবনের ওপর রামপালের কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে চান, কষ্ট করে তথ্যসূত্রসহ পোস্ট দিন। ধন্যবাদ।


রামপাল ঘোলাপানির প্রথম চাতুর্য হচ্ছে একে সুন্দরবনের মাঝখানে একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে চালিয়ে দেওয়া। সুন্দরবনের প্রান্ত থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে, এই অবিসংবাদিত ফ্যাক্টটা যাতে লোকচ্যাতানোর পথে কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায়, সেজন্যে একে প্রথমেই হাপিস করে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ভিনভাষী পত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে, সবাই এখন জানে, পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনের মাঝে ফ্যাসিবাদী বনখোর সরকার এক গরানযজ্ঞের আয়োজন করছে।

যারা এখনও জায়গা "ক" থেকে জায়গা "খ" এর দূরত্ব ঘরে বসে মাপতে জানেন না, তাদের সে কৌশলটি শেখাতে চাই। maps.google.com এ যান, গিয়ে প্রথম জায়গার ওপর মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করলে পপ-আপ মেনুতে একেবারে নিচে "Measure distance" অপশনটা পাবেন। এতে যে ফল পাবেন, সেটা এরিয়াল ডিসট্যান্স বা সরলরৈখিক দূরত্ব। যদি গাবতলি থেকে জাহাঙ্গীরনগরের দূরত্ব পরিমাপ করেন, দেখবেন সেটাও ১৪ কিলোমিটারের মতোই আসবে। জাহাঙ্গীরগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শ্রদ্ধেয় আনু মোহাম্মদকে যদি এখন কেউ "গাবতলির মাস্টার" বলে, সেটা কি ন্যায্য হবে? ১৪ কিলোমিটার দূরত্বের পার্থক্য আর গুরুত্বটা ধরতে না পারলে, প্রয়োগে অনীহা দেখালে এমন ভুল এবং/অথবা অন্যায় হতে পারে, যেটা কাম্য নয়।

যারা যাচাই করে দেখতে ইচ্ছুক, তাদের জন্যে মাপটা ইমেজ আকারে জুড়ে দিলাম

ইদানীং অনেক রামপাল-সমর্থক বলছেন, সাভার এলাকায় শয়ে শয়ে ইটের ভাঁটা আছে, যেখানে কয়লা পোড়ানো হয়, কেন বামপালিরা ওগুলোর বিপক্ষে বিপ্লব করেন না? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ কিলোমিটারের আশেপাশে এমন ইটের ভাঁটার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়, কিন্তু ওগুলোর হাত থেকে জাহাঙ্গীরনগরের অপূর্ব অমূল্য প্রাকৃতিক পরিবেশ বাঁচানোর ব্যাপারে কারোই (বিশেষ করে জাহাঙ্গীরনগরনিবাসী বামপাল নেতৃত্বের) তেমন মাথাব্যথা নেই, এমন কথাও বলছেন কেউ কেউ। কিন্তু আমি এসব ছেঁদো যুক্তি দেখাবো না, কারণ কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র আর ইটের ভাঁটাকে এক করে দেখানোও এক ধরনের বামপালিতা। তাছাড়া কে না জানে, বিপ্লব সব সময় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে করতে হয়? ইটের ভাঁটার মালিকের বিরুদ্ধে বিপ্লব করতে গেলে সে মাস্তান ডেকে প্রচণ্ড মার লাগাতে পারে, যে মারে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ডের বদলে কেবলই ব্যথা মেলে। তাছাড়া ইটের ভাঁটার মালিক হয়তো কোনো বামপালি বিপ্লবীরই খালু (এ খালু সে খালু নয়")। মংলায় নির্বিঘ্নে কাজ করে যাওয়া বেসরকারি কারখানাগুলোর ব্যাপারেও বামপালিরা হয়তো এ কারণেই চুপ, কে জানে? কিন্তু এ নিয়ে পরের পর্বে নাহয় কথা বলা যাবে।

রামপাল সুন্দরবন থেকে ১৪ কিমি দূরে আর গাবতলি জাহাঙ্গীরনগর থেকে ১৪ কিমি দূরে হওয়ার পরও আমি বামপালিদের প্রিয় ধমক, "দুনিয়ার আর কোথায় ম্যানগ্রোভ বনের মইদ্যে কয়লার প্ল্যান্ট হান্দাইছে, কন দেহি!" নিয়ে দুটো কথা বলতে চাই।

রামপাল তর্কে ম্যানগ্রোভ শব্দটা বামপালি ভাইরা এতো ভক্তি ভরে এস্তেমাল করেন, যে অডিয়েন্স প্রথমেই ঘাবড়ে চুপ করে যায়। ম্যানগ্রোভ, সে তো কিশোরীর ভরসার মতো নাজুক, একটু এদিক-সেদিক হলেই সব চুরমার। কিন্তু বাস্তবেও কি তা-ই?

আমি আবারও শরণ নেবো গুগল ম্যাপের, কারণ রেফারেন্স দিলে তাতে দুর্গম ইংরেজি ভাষায় অনেক কথা লেখা থাকে, যা পড়ে বোঝার ধৈর্য বা সাধ্য অনেক রক্তগরম বিপ্লবীর না-ও থাকতে পারে। ছবি দিলে অনেকে সহজে বুঝতে পারেন, তাই ছবি-ই সই।

প্রথম যে উদাহরণটা দিচ্ছি, সেটা ফ্লোরিডার সাইট্রাস কাউন্টির ক্রিস্টাল রিভার এনার্জি কমপ্লেক্সের। ফ্লোরিডার সাইট্রাস কাউন্টি এর ক্রিস্টাল নদীর মোহনার উত্তরে ও দক্ষিণে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ বনের জন্যে বিখ্যাত। এই প্ল্যান্টটা একেবারে ম্যানগ্রোভ বনের মাঝখানে বানানো, এর চারপাশে ম্যানগ্রোভের বলয় আপনারা নিজেরাই দেখে নিতে পারবেন। এর উত্তরে রয়েছে ওয়াকাসাসা বে প্রিজার্ভ স্টেট পার্ক, দক্ষিণে সেন্ট মার্টিন মার্শ অ্যাকুয়াটিক প্রিজার্ভ আর ক্রিস্টাল রিভার প্রিজার্ভ স্টেট পার্ক। বামপালি ভাইয়েরা পার্ক নাম দেখে লাফিয়ে উঠে এটাকে শিশু পার্কের সমতুল্য কিছু বানিয়ে একটা মনকলা খেয়ে নিতে পারেন, কিন্তু প্রিজার্ভ স্টেট পার্ক মূলত সংরক্ষিত বন।

উইকিপিডিয়া বলছে [সূত্র ১] এই এনার্জি কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়েছিলো ১৯৬৬ সালে, ৩৭৩ মেগাওয়াট কয়লা ইউনিট দিয়ে। ১৯৬৯ সালে ৪৬৯ মেগাওয়াটের আরেকটি কয়লা ইউনিট এতে যোগ করা হয়। ১৯৭৭ সালে এখানে যোগ করা হয় ৮৪২ মেগাওয়াটের একটি নিউক্লিয়ার ইউনিট (চিন্তা করেন, ম্যানগ্রোভ বনের মাঝে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র! আরো চিন্তা করেন, ঐ আমলে বামপালি ভাইরা ফ্লোরিডায় থাকলে কত্তো বিপ্লব করতে পারতেন?), যেটা ৩৬ বছর চলার পর ২০১৩ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় জনাব, ১৯৮২ আর ১৯৮৪তে এই পাষণ্ড বনখোরেরা ৭১৭ মেগাওয়াট করে আরো দুটো ইউনিট এতে যোগ করে। (সংযোজন: আজ অব্দি কয়লাচালিত ইউনিট চারটি চলছে।)

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ১৯৬৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ৫০ বছর ধরে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে দেড়গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লা ইউনিট, আবার গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ৩৬ বছর ধরে ৮৪২ মেগাওয়াটের নিউক্লিয়ার ইউনিটের দুরমুজ সহ্য করে সাইট্রাস কাউন্টির এই ম্যানগ্রোভ বন, এই রিজার্ভ স্টেট পার্ক টিকে আছে কীভাবে? আর যেনতেন ভাবে আঙুলের ওপর ভর করেও এই বন টিকে নেই। এখানে ম্যানাটির অভয়ারণ্য আছে, পর্যটকদের জন্যে নিয়মিত ভ্রমণের বন্দোবস্ত আছে। বামপালি ভাইয়েরা সুন্দরবনের যে অ্যাপোক্যালিপ্সু ভবিষ্যৎ চিত্র আঁকেন, সেটা এই বনের বর্তমান চেহারার সাথে মেলে না কেন?

যেসব রক্তগরম বামপালি ভাই, এবং তাদের চিৎকারে বিভ্রান্ত সাধারণ ভাইয়েরা রক্তচক্ষু করে ধমক দেন, "ম্যানগ্রোভ বনের মইদ্যে কয়লা কই আছে দ্যাহান", তারা এই প্রশ্নের সদুত্তর খুঁজলে সবাই উপকৃত হবেন।

দ্বিতীয় যে উদাহরণটি দিতে চাই, সেটি মালয়েশিয়ার। স্থাপিত ক্ষমতার (installed capacity) বিচারে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমান বা বড় চারটি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র মালয়েশিয়ায় রয়েছে: ১৪০০ মেগাওয়াটের জিমাহ পাওয়ার স্টেশন (ম্যাপ দেখুন), ২১০০ মেগাওয়াটের তানজুং বিন পাওয়ার স্টেশন (ম্যাপ দেখুন), ২৪২০ মেগাওয়াটের সুলতান সালাউদ্দিন আবদুল আজিজ শাহ পাওয়ার স্টেশন এবং ২২৯৫ মেগাওয়াটের মানজুং পাওয়ার স্টেশন। প্রথম তিনটি স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে ম্যানগ্রোভ বনের প্রান্তে। জিমাহ ও তানজুং বিন পাওয়ার স্টেশনের পাশেই ম্যানগ্রোভ বন দেখতে পাবেন। আমি পোস্টে এমবেড করছি সুলতান সালাউদ্দিন আবদুল আজিজ শাহ [সুসাআআশা] কেন্দ্রটির ম্যাপ।

সুসাআআশা কেন্দ্রটি থেকে যথাক্রমে ৬, ৯, ১৩ ও ২০ কিমি দূরত্বে চারটি দ্বীপ রয়েছে, যেটি নিরবচ্ছিন্ন ম্যানগ্রোভে আচ্ছাদিত। ১৯৮৭ সাল থেকে এই কেন্দ্রটি চলছে। আগের প্রশ্নটি বামপালি ভাইদের কাছে আবারো উত্থাপন করছি, এই চারটি দ্বীপে ম্যানগ্রোভ টিকে আছে কীভাবে?

"দুনিয়ার আর কোত্থাও ম্যানগ্রোভের মইদ্যে কয়লা দিয়া বিদ্যুৎ বানায়?" ধমকটা দিয়ে বামপালরা প্রথমেই অডিয়েন্সকে একটা হীনমন্যতার মাঝে ফেলে দেন। কারণ দুনিয়ার কোথায় কোন বিদ্যুৎকেন্দ্র কীসের মাঝে কীভাবে চলে, তার বিস্তারিত আমাদের কারোই জানা নেই। এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগ্রহ/সময়ও অনেকের নেই। তাই ধমকটাই কণ্ঠ থেকে কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হতে হতে এক সময় ফ্যাক্টয়েড হয়ে যায়।

কয়েক দশক ধরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর পরও ক্রিস্টাল রিভারের ম্যানগ্রোভ বন আর মালয়েশিয়ার চারটি দ্বীপবর্তী ম্যানগ্রোভ বন আজ পর্যন্ত অক্ষত থাকলে, সুন্দরবন থেকে ১৪ কিমি দূরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কীভাবে সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে, সে প্রশ্নের জবাব সন্ধান প্রয়োজন (বামপালি ভাইদের জন্যে টিপস: "উহা প্রকৃত ম্যানগ্রোভ নহে", "উহা প্রকৃত কয়লা নহে", "উহা প্রকৃত ইয়ে নহে")

সুন্দরবন ধ্বংস হওয়ার ভৌত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়াটি জানতে চাইলে বামপালি ভাইয়েরা নতুন কোনো ধমক হাজির করেন। ফ্যাক্ট আর উদাহরণসহ একটা প্রাঞ্জল ব্যাখ্যা তাদের কাছ থেকে কাম্য। সেটা না করে হয় তারা ভারতজুজুর ভয় দেখান, নয়তো তহবন খুলে সুন্দরবনের শিশু বানর আর মা হরিণের অশ্রু মোছাতে লেগে পড়েন। সুন্দরবন ধ্বংস হওয়ার ব্যাপারটি যদি এতোই নিশ্চিত হয়, তাহলে তার ব্যাখ্যাটিও হওয়ার কথা স্পষ্ট ও যুক্তিসমর্থিত। ব্যাখ্যার বদলে যখন শিশু বানরের কান্নার আড়ালে দাঁড়াতে হয়, তখন তারা সুন্দরবনের ঢাল, নাকি সুন্দরবন তাদের ঢাল, সে সংশয় ক্রমশ জোরালো হতে থাকে।

আজ এ পর্যন্তই। লেখায় কোনো ভুল করে থাকলে ধরিয়ে দিন তথ্যসূত্রসহ। দয়া করে এমন তথ্যসূত্র দিন, যে সূত্র আপনি নিজে আদ্যোপান্ত পড়েছেন এবং বুঝেছেন। ধন্যবাদ।


মন্তব্য

Emran  এর ছবি

চীন/কিউবা/ভিয়েতনাম/ভেনেজুয়েলা-র উদাহরণ না দিয়ে আমেরিকা-মালয়েশিয়ার মত পুঁজিবাদী-শোষক রাষ্ট্রের উদাহরণ দিলে কি বাম্পালিরা মানবেন?!

ইয়ামেন এর ছবি

ভালো পয়েন্ট ধরেছেন। অনেকের সাথে কথা বললে মনে হয় পিতিমিতে যেন আর কোন ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট নেই, আর অন্য কোথাও এভাবে কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করাও হয়নি। আমার মতে অপপ্রচারের চেয়ে 'অন্যরা রিস্ক নিচ্ছে বলে আমরা কেন নিবো' সেই যুক্তিও বেটার বামপালিরা যেসব আজাইরা কুযুক্তি দেয় সেসবের থেকে|
তবে আমার একটা প্রশ্নের উত্তর জানার খুব ইচ্ছে, এই প্রযুক্তি ভারত নিজেদের দেশে ইমপ্লিমেন্ট করতে দিচ্ছে না, তাহলে বাংলাদেশে কেন হচ্ছে? নাকি আমি কিছু মিস করছি?

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

সাবিহ ওমর এর ছবি

ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৬২% কয়লা থেকে আসে। তবে প্ল্যান্টগুলো বেশ পুরোনো এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। ২০১২ সালের হিসাব নাগাদ গোটা পৃথিবীতে ১২৩১টি নতুন কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা হয়েছে, তার মধ্যে ৪৫৫টি ভারতে। সায়েন্টিফিক আমেরিকানের লিঙ্কঃ http://goo.gl/5Dpb2Q ("India Has Big Plans for Burning Coal")।

তারপরও ভারত সরকার কয়লা থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার কথা বলছে, যার কারণ মূলত আমদানিকৃত কয়লার উপর অতি-নির্ভরতা (সুপারপাওয়ারদের এ মানায় না)। ভারত সরকার একে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরে কিছু পিঠ চাপড়ানিও পাচ্ছে, যদিও বাস্তবে কয়লাবিদ্যুৎ প্রসার পাচ্ছে বিকল্প উৎসগুলো (তেল-গ্যাস-জল-রিনিউয়েবল) থেকে বহুগুণে। ব্লুমবার্গে প্রাসংগিক নিবন্ধঃ http://goo.gl/QqRT4Q ("The Grim Promise of India's Coal-Powered Future")। কয়লা নিয়ে যাদের এলার্জি তারা হয়তো এটা জেনে অবাক হবেন যে, তৃতীয় বিশ্বের সরকারগুলো (ভারতসহ) এখনো কয়লাকে 'দারিদ্র্য বিমোচনের' একটা মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।

হিমু এর ছবি

উইকিপিডিয়া বলছে [সূত্র], ৩১ মে ২০১৬ তারিখ পর্যন্ত ১৮৬,২৪৩ মেগাওয়াট কয়লাচালিত বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা রয়েছে (আমাদের আছে ২৫০ মেগাওয়াট)। যারা বলেন ভারতে এসব নাই বা হতে দেওয়া হচ্ছে না, তারা কিছু না জেনেই বলেন।

দময়ন্তী এর ছবি

ভারতে ফোকাস ধীরে ধীরে পরমাণু বিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ উইন্ডমিল এইসব দিকে সরানোর চেষ্টা চলছে। নিজের বাড়ীতে সৌরবিদ্যুৎ নিলে সরকার থেকে সাবসিডির ব্যবস্থা করছে কোনও কোনও রাজ্য সরকার।
প্রচন্ড বাদ প্রতিবাদ ও বিপ্লব বিক্ষোভের পরে কুড়ানকুলামের নিউক্লীয়ার প্ল্যান্টও টুকটুক করে চালু হয়েছে।

কিন্তু এতকিছুর পরেও কয়লাজাত বিদ্যুতের বিকল্প মানে প্রকৃত অর্থে বিকল্প পাওয়া যায় নি। আস্ত শহর বা মস্ত কারখানা চালু রাখতে কয়লা পোড়ানো ছাড়া খুবেক্টা বিকল্প দেখা যাচ্ছে না।

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

bhuiyan anwar এর ছবি

সুন্দর যুক্তি,ভালো পোস্ট কিন্তু ২০১৩ সালে ওই কারখানা টা বন্ধ করে দেওয়া হইছিলো কেন?

সাবিহ ওমর এর ছবি

ডিউক এনার্জির নিউজ রিলিজ (উইকি'র রেফারেন্স অংশে লিঙ্ক পাবেন) বলছে, ২০০৯-এ ক্রিস্টাল রিভারের নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের দেয়ালে একটা চিড় পাওয়া যায়। সেটা মেরামতের খরচ অনেক বেশি হওয়ায় প্ল্যান্টটি বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার বদলে একটা গ্যাসভিত্তিক প্ল্যান বসানোর চিন্তাভাবনা চলছে। কয়লা-ভিত্তিক প্ল্যান্টগুলো (চারটি) যথারীতি চলছে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ম্যানগ্রোভের ভেতর যে কয়লা বিদ্যুতের উদাহারণ দিলেন সেগুলোর প্রযুক্তি/পরিবেশরক্ষন আর আমাদের এখানে নেয়া প্রযুক্তি/পরিবেশরক্ষন প্ল্যানের ভেতর কি আকাশ পাতাল কোনো তফাত আছে?

...........................
Every Picture Tells a Story

হিমু এর ছবি

এ প্রশ্নের উত্তর আমি এখনও জানি না। রামপাল কেন্দ্র চালাবে যে কোম্পানি, তারা বলছে ধান ভানলে কুঁড়ো দেবে, মাছ কুটলে মুড়ো দেবে, কালো গাইয়ের দুধ দেবে, দুধ খাওয়ার বাটিটাও দেবে। বাস্তবে কী দেবে সেটা ইরেকশন স্পেসিফিকেশনস না দেখে কীভাবে বলি?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

লেখা যথাযথ। কিন্তু বামপালদের প্রতি খোঁচার পরিমাণ আর একটু কম থাকলে বোধহয় লেখা হিসেবে আরেকটু উৎরাতো।

এই নিয়ে ভালো একটা টকশোর লিঙ্ক আছে এখানে। আমি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী লেভেলের লোকদের যত টকশো টাইপ অনুষ্ঠান দেখেছি সেই তুলনায় এনাকে তাঁর কাজের ব্যাপারে তুলনামূলক স্পষ্ট ধারণা রাখেন বলে মনে হয়েছে। তাছাড়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে অধ্যাপক আরশাদ মনসুরের কথাগুলোও বেশ লক্ষ্য করার মতো।

https://www.facebook.com/NasrulHamidMP/videos/935629119879428/

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রাহী  এর ছবি

গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচ ক্রিস্টাল রিভার এনার্জি কমপ্লেক্স যে একেবারে ম্যানগ্রোভ বনের মাঝখানে অবস্থিত তা কিন্তু বলে না। এর উত্তরে আছে একটি ১৭৩ হেক্টরের (IUCN II) ছোট ইয়াঙ্কিটাউন প্রটেক্টেড ফরেস্ট আর প্রায় ১৩ কি মি দক্ষিনে সেন্ট মারটিন মার্শ (১২,৫০১ হেক্টর) (IUCN V ক্যাটাগরি, খুবই গুরুত্বপূর্ণ).
http://i.imgur.com/XzEPfSX.jpg

মালয়শিয়ার জিমাহ পাওয়ার স্টেশনের আশেপাশে খুব অল্প পরিমান ম্যানগ্রোভ আছে। তানজুং বিন পাওয়ার স্টেশন, এবং সুলতান সালাউদ্দিন আব্দুল আজিজ শাহ পাওয়ার স্টেশন এর আশে পাশে বেশ ভালো পরিমানে ম্যানগ্রোভ আছে, কিন্তু এ তিনটির কোনটাই প্রটেক্টেড ফরেস্ট না। খালি চোখে গুগল ম্যাপে সবুজ দেখলেই ম্যানগ্রোভ এনালাইসিস আপনি যেভাবে করেছেন, তা না করে globalforestwatch.org এ গেলে ২০০১ – ২০১৪ ফরেস্ট কভার এবং লস নিজেই দেখতে পাবেন (যদিও এর বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা আমি দিতে পারবো না)।
http://i.imgur.com/1V703QE.jpg

http://rezsid.imgur.com/all/?third_party=1

http://rezsid.imgur.com/all/?third_party=1

অন্যদিকে সুন্দরবন হচ্ছে (৪৯৭, ৭২৫ হেক্টরের) IUCN VI (highest) ক্যাটাগরির প্রটেক্টেড এরিয়া। প্রটেক্টেড ফরেস্ট তখনই করা হয় যখন সেটি ইকোলজিকালি অনন্যসাধারণ, এবং ঝুঁকির মুখে থাকে (মালয়শিয়ার কোনটাই তা না)।
http://rezsid.imgur.com/all/?third_party=1

এই সকল বনের সাথে সুন্দরবনকে তুলনা করা মাইকেল ফেল্পস এর সাথে রবেল কিরোস হাতে’র (Robel Kiros Habte) তুলনা করা সমান। দুজনেই অলিম্পিয়ান, কিন্তু...

আর ফ্লোরিডার ১৯৬৬, ৮২, ৮৪ এর জ্ঞান আর কমনসেন্স দিয়ে যদি ২০১৬ এর উদ্যোগকে বিচার করি, তা হলে কি সেটা ঠিক হবে?

* মাপজোখের সূত্রঃ www.globalforestwatch.org/map

হিমু এর ছবি

আর ফ্লোরিডার ১৯৬৬, ৮২, ৮৪ এর জ্ঞান আর কমনসেন্স দিয়ে যদি ২০১৬ এর উদ্যোগকে বিচার করি, তা হলে কি সেটা ঠিক হবে?

এটা একটা ভালো জিনিস তুলে ধরেছেন। "১৯৬৬, ৮২, ৮৪ তে মানুষের জ্ঞান আর কমনসেন্স এখনকার চেয়ে কম ছিলো" এটা ধরে নিলে বলতে হবে, তখনকার বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনকার বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে বহুগুণে বেশি দূষণ করতো। অর্থাৎ সাইট্রাস কাউন্টির ম্যানগ্রোভ বন আসলে এখনকার বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণের চেয়ে অনেক বেশি মাত্রার দূষণ সহ্য করে টিকে আছে।

আমার প্রশ্ন সেখানেই। কীভাবে?

প্রটেক্টেড ফরেস্ট তখনই করা হয় যখন সেটি ইকোলজিকালি অনন্যসাধারণ, এবং ঝুঁকির মুখে থাকে (মালয়শিয়ার কোনটাই তা না)।

কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিক পাশে কিংবা ৬ কিমি, ৯ কিমি, ১৪ কিমি আর ২০ কিমি দূরত্বে থেকেও মালয়েশিয়ার ম্যানগ্রোভ ঝুঁকির মুখে নেই বলতে চাইছেন? ধন্যবাদ, এটা আমিও খেয়াল করেছি। এবার তাহলে একটু বোঝান রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্র কীভাবে সুন্দরবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। যদি বোঝাতে না পারেন, তাহলে ধরে নিতে পারি আপনি "উহা প্রকৃত ম্যানগ্রোভ নহে" বলে পাশ কাটাতে চাইছেন।

আর যে ঝুঁকির কথা বলছেন, সেটা পরিবেশগত ঝুঁকি নয়, মানুষের হাতে বন উজাড় হওয়ার ঝুঁকি। গুগল ম্যাপে মংলার দক্ষিণে একটু দেখুন, অগণিত লোনাপানির ঘের গড়ে উঠেছে সেখানে। এই জায়গাগুলো এক বা দুই দশক আগেও সুন্দরবনের অংশ ছিলো বলেই জানতাম (ভুল জানলে শুধরে দেবেন)। সুন্দরবন উজাড় করে যখন লোনাপানির ঘের তৈরি হয়, তখন তার "ইকোলজিক্যাল অনন্যসাধারণত্ব" নিয়ে কাউকে রাস্তায় আওয়াজ তুলতে শুনি না। হয়তো আমারই কানে সমস্যা।

চমৎকার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

রাহী  এর ছবি

''কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিক পাশে কিংবা ৬ কিমি, ৯ কিমি, ১৪ কিমি আর ২০ কিমি দূরত্বে থেকেও মালয়েশিয়ার ম্যানগ্রোভ ঝুঁকির মুখে নেই বলতে চাইছেন?'

তাঞ্জুং বিন পাওয়ার স্টেশনের আশপাশে ২০০১-২০১৫ ফরেস্ট কভার হ্রাস ১৭৬ হেক্টর, ফরেস্ট কভার গেইন৭.৪ হেক্টর (প্রায়) (গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচ থেকে পলিগন টেনে হিসেব করা)। ঝুঁকির মুখে কি না, ক্ষতি হয়েছে কিনা হয়নি এটা এখন যে যেভাবে রিপোর্ট করে। আরো ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন, উত্তর বরাবর লাইন ফলো করে ফরেস্ট কভার কমে গেছে, এটা হচ্ছে সড়ক ও তার আশপাশের বনের উপর প্রভাব।

''তাহলে ধরে নিতে পারি আপনি "উহা প্রকৃত ম্যানগ্রোভ নহে" বলে পাশ কাটাতে চাইছেন''

এটা আমি কক্ষনোই বলিনি, দোয়া করে মুখে উত্তর তুলে দিয়েন না। বরং আমার উত্তরে ওগুলা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট তা স্পষ্ট উল্লেখ করেছি। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র এর সাথে সাধারণ ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের তুলনা করে আপনি বিজ্ঞানভিত্তিক ভুল তুলনা করেছেন।

"আর যে ঝুঁকির কথা বলছেন, সেটা পরিবেশগত ঝুঁকি নয়, মানুষের হাতে বন উজাড় হওয়ার ঝুঁকি''

এটা ভুল, দুটোই সুন্দরবন যেভাবে প্রতিনিয়ত যেপরিমান সাইক্লোনের ধাক্কা সামলায়, সেটা সুন্দরবনকে ভয়াবহ ঝুঁকির সম্মুখীন করে। তার সাথে আছে, নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় লবনাক্ততার বিরুপ প্রভাব। এজন্য, মানুষের তত্ত্বাবধানে রিজেনারেশন প্রসেস প্রয়োজন হয়।
http://www.nature.com/articles/srep21234
https://www.researchgate.net/publication/304815340_Examining_the_ecosystem_health_and_sustainability_of_the_world%27s_largest_mangrove_forest_using_multi-temporal_MODIS_products

''সুন্দরবন উজাড় করে যখন লোনাপানির ঘের তৈরি হয়, তখন তার "ইকোলজিক্যাল অনন্যসাধারণত্ব" নিয়ে কাউকে রাস্তায় আওয়াজ তুলতে শুনি না''

আপনি না শুনলেই হয়না, এটা ভাবলেন কিভাবে? সুন্দরবনের উপর লোনাপানির ঘের এর বিরূপ প্রভাব নিয়ে গবেষণা কম নেই। প্রতিবাদের কারনে এডিবি এখন তাঁর পলিসি চেঞ্জ করে চিংড়ি চাষে সহায়তা করা বন্ধ করেছে।

হিমু এর ছবি

আমি সুলতান সুসাআআশা কেন্দ্র থেকে ৬ কিমি, ৯ কিমি, ১৪ কিমি ও ২০ কিমি দূরের চারটি দ্বীপের নিরবচ্ছিন্ন ম্যানগ্রোভ বনের কথা বলছিলাম। কিন্তু আপনি কষ্ট করে তানজুং বিন পাওয়ার স্টেশনের আশপাশে যখন হেক্টর মেপে হিসাব করেছেন, তাহলে পনেরো বছরে ১৭০ হেক্টর নেট বনহ্রাসের হিসাবটাই খতিয়ে না দেখে মেনে নিলাম। এখন একটু বলুন, রামপাল কেন্দ্রের আশেপাশে আদৌ ১৭০ হেক্টর ম্যানগ্রোভ বন আছে কি না। তার সাথে যদি সুন্দরবনের ফরেস্ট কভারটা ২০০১-২০১৫ পর্যন্ত একটু মেপে হ্রাসবৃদ্ধির কথা আমাদের জানান, তাহলে আরো ভালো হয়। রামপালে কিছু হওয়ার আগেই সুন্দরবন কতোটুকু কমলো বা বাড়লো, কোনদিকে কমলো বা বাড়লো, জানা থাকা ভালো। ৪৯৭,৭২৫ হেক্টরের সুন্দরবন আগামী ১৫ বছরে দক্ষিণ দিকে ১৭০ হেক্টর পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে কি না, সেটাও বিবেচ্য।

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র এর সাথে সাধারণ ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের তুলনা করে আপনি বিজ্ঞানভিত্তিক ভুল তুলনা করেছেন।

তাহলে আপনি একটু কষ্ট করে বুঝিয়ে বলুন, কেন অন্যত্র "সাধারণ" ম্যানগ্রোভ ৫০ বছর (ফ্লোরিডায়) বা ৩০ বছর (মালয়েশিয়ায়) ধরে কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে টিকে আছে, আর কেন সুন্দরবন সেভাবে টিকতে পারবে না। আমি এই প্রশ্নের উত্তরটাই খুঁজছি শুধু।

শেষ দুই প্যারায় যে ভুল ধরিয়ে দিলেন, সে জন্যে ধন্যবাদ। কিন্তু এডিবির সহায়তা বন্ধ করা আর চিংড়ি চাষ বন্ধ হওয়া কি সমার্থক? সুন্দরবন সাফ করে কি এডিবির সহায়তা ছাড়া চিংড়ি-কাঁকড়ার ঘের হচ্ছে না?

রাহী  এর ছবি

"কিন্তু আপনি কষ্ট করে তানজুং বিন পাওয়ার স্টেশনের আশপাশে যখন হেক্টর মেপে হিসাব করেছেন, তাহলে পনেরো বছরে ১৭০ হেক্টর নেট বনহ্রাসের হিসাবটাই খতিয়ে না দেখে মেনে নিলাম।"

মিথ্যে তো বলিনি, মানবেন না কেন? কঞ্জারভেটিব হয়ে হিসেব না করলে ডিগ্রেডেশন আরও বাড়ে।
http://i.imgur.com/lPmK7nu.jpg

"তার সাথে যদি সুন্দরবনের ফরেস্ট কভারটা ২০০১-২০১৫ পর্যন্ত একটু মেপে হ্রাসবৃদ্ধির কথা আমাদের জানান, তাহলে আরো ভালো হয়।"

goo.gl/L7MZHA - এটা লেটেস্ট পেপার। দেখুন কিভাবে ম্যানগ্রোভের তুলনা করতে হয়? (ব্লক অনুসারে, একই ইকসিস্টেমের)। লেখক তাসমানিয়া বা মালয়শিয়ার সাথে তুলনা করলে ধোপে টিকতোনা।

আপনি তুলনা করতে ভুল করেছেন, যেটা আপনার লেখার মূল ভিত্তি। আমি সেটায় আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি।

এখানে আপনি যে প্রশ্ন করেছেন, তার উত্তর দিতে গেলে আমাকে তিন দেশের (বাংলাদেশ, আমেরিকা, মালয়শিয়া)পাওয়ার প্লান্টের ধরন, দূষণ, ইকুসিস্টেমে পরিবর্তন, EIA, আর পরিবেশ আইন, এবং আরও অনেক কিছুর তুলনা করতে হবে। যেটা আপ্নার মতো গুগল ম্যাপে সবুজের আধিক্য দেখেই বলা সম্ভব না আমার পক্ষে। মাপ করবেন।

'' কিন্তু এডিবির সহায়তা বন্ধ করা আর চিংড়ি চাষ বন্ধ হওয়া কি সমার্থক?'' এটা উদাহারন। উপকূলীয় উন্নয়নে চিংড়ি ঘেরকে এখন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়।

হিমু এর ছবি

আপনার দেওয়া পেপারটা মনোযোগ দিয়ে পড়বো। লোকজন তো সবসময় মিথ্যা বলে না, মাঝেমধ্যে ভুলও বলে, তাই না? তাই বললেন, আর মেনে নিলাম, এমনটা নাও হতে পারে। আপনিও যেমন আমার ভুল ধরছেন। সেটা করতে গিয়ে বারবার সুসাআআশা কেন্দ্র থেকে যথাক্রমে ৬, ৯, ১৪ ও ২০ কিলোমিটার দূরের চারটি দ্বীপে নিরবচ্ছিন্ন ম্যানগ্রোভ বনাচ্ছাদনের কথা এড়িয়ে তানজুং বিন পাওয়ার স্টেশনের কথা সামনে আনছেন। সম্ভবত দ্বীপগুলোতে বনাচ্ছাদন হ্রাসের যে ডেটা পেয়েছেন, সেটা আপনাকে তর্কে খুব বেশি সুবিধা দেবে না, সে কারণেই। ‌আমিই একটু কষ্ট করে মেপে নেবো পরে। বনাচ্ছাদন মাপার যে টুলটা দিলেন, সেটা বেশ কাজের, আপনার কাছ থেকে এটার সম্পর্কে জানতে পেরে উপকৃত হলাম।

এখানে আপনি যে প্রশ্ন করেছেন, তার উত্তর দিতে গেলে আমাকে তিন দেশের (বাংলাদেশ, আমেরিকা, মালয়শিয়া)পাওয়ার প্লান্টের ধরন, দূষণ, ইকুসিস্টেমে পরিবর্তন, EIA, আর পরিবেশ আইন, এবং আরও অনেক কিছুর তুলনা করতে হবে। যেটা আপ্নার মতো গুগল ম্যাপে সবুজের আধিক্য দেখেই বলা সম্ভব না আমার পক্ষে। মাপ করবেন।

আপনার পক্ষে সম্ভব, এমন যে কোনো একটা নিয়েই আগান। তাড়াহুড়োর কিছু তো নেই। আপনার আর আমার আয়ু যদি সে সুযোগ দেয়, এ আলোচনা আমরা চালিয়ে যেতে পারি। অন্ততপক্ষে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণের পারস্পেকটিভ থেকে সুন্দরবনের সাথে সুসাআআশা কেন্দ্রের নিকটবর্তী ম্যানগ্রোভ বন আর সাইট্রাস কাউন্টির ম্যানগ্রোভ বনের এমন কয়েকটা বৈশিষ্ট্যের মাঝে পার্থক্যের কথা বলুন, যেটা দিয়ে আপনার যুক্তি সাজাতে পারেন। আমি আপনাকে একটা যুগিয়ে দিচ্ছি, পানির পিএইচ হ্রাসের কারণে ক্রাস্টাশিয়ান ফনার জীবনচক্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব। বাকিগুলো আপনি ভেবেচিন্তে যোগ করুন।

আপনি কিন্তু সুন্দরবনের বনাচ্ছাদন হ্রাসের হিসাবটা হেক্টরে দিলেন না।

উপকূলীয় উন্নয়নে চিংড়ি ঘেরকে এখন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়।

এ কথা আর প্রতিবাদের মুখে এডিবির সহায়তা প্রত্যাহারের সমর্থনে কিছু তথ্যসূত্র দিন, প্লিজ। (সচলের মেনুবার কাজ করছে না কয়েকদিন ধরে, আপনি টেক্সটে হাইপারলিঙ্ক দিতে চাইলে একটু কষ্ট করে a href ট্যাগ ব্যবহার করুন।)

হিমু এর ছবি

সুসাআআশা কেন্দ্রের পাশের দ্বীপগুলোয় ২০০১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত আপনার দেওয়া টুল চালিয়ে দেখলাম, বনাচ্ছাদন হ্রাস পেয়েছে ১৪ হেক্টর, আর ২০১২ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ হেক্টর [স্ক্রিনশট]।

আবার জিউধরার কাছে সুন্দরবনের একাংশে টুল চালিয়ে দেখলাম, সেখানেও একই কালপরিসরে বনাচ্ছাদন হ্রাস পেয়েছে ১৪ হেক্টর, কিন্তু বৃদ্ধি ০ হেক্টর [স্ক্রিনশট], বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াই।

রাহী  এর ছবি

"আবার জিউধরার কাছে সুন্দরবনের একাংশে টুল চালিয়ে দেখলাম, সেখানেও একই কালপরিসরে বনাচ্ছাদন হ্রাস পেয়েছে ১৪ হেক্টর, কিন্তু বৃদ্ধি ০ হেক্টর [স্ক্রিনশট], বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াই''

এটা না করে পেপারটা পড়লেই ভালো করতেন।
"Compartments 8, 10, 12, and 15 in the Bangladesh part, in particular, show high degradation, while compartment 48 and the southern edge of 45 show slight increases in PTC or EVI. Forest degradation in the Indian part of the forest is evident in the National Park and Reserve Forest blocks; however, no substantial degradation is evident in the western section." (goo.gl/L7MZHA)
এই পেপারে কিছু ম্যাপ আছে কষ্ট করে দেখেন। আমি একবারও বলিনি সুন্দরবন কমতেছে না বাড়তেছে। এত্ত কঠিন প্রশ্নের সহজ উত্তর খুঁজে পাওয়ার মতো জ্ঞানী এখনো আমি হইনি।
ইন জেনারেল বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে "বনাচ্ছাদন" বেড়েছে, এর কারন হচ্ছে বনবিভাগ কর্তৃক অব্যবহৃত চর আর তীরে বনায়ন। এগুলোও ম্যানগ্রোভ, কিন্তু সুন্দরবন না!

"সুসাআআশা কেন্দ্রের পাশের দ্বীপগুলোয় ২০০১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত আপনার দেওয়া টুল চালিয়ে দেখলাম, বনাচ্ছাদন হ্রাস পেয়েছে ১৪ হেক্টর, আর ২০১২ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ হেক্টর"
যিনি শুধু ম্যানগ্রোভ বনাচ্ছাদন আর ওয়ার্ল্ড মোস্ট কম্লপেক্স ইকসিস্টেম একি কাতারে ফেলেন, তারে বিজ্ঞান বোঝানো আমার পক্ষে সম্ভবনা।

নেন আরেকটা টুল দিলাম (https://www.windyty.com, https://earth.nullschool.net), দেখেন উইন্ড, ওয়াটার ফ্লো বলে কিছু একটা আছে, যেটা প্রভাব রাখে অনেক পলুটেন্ট ক্যারি করতে। মালয়শিয়ার এবং ফ্লোরিডারটা - সবগুলোই সাগরতীরে।

আবারও বলছি, আপনি যত সহজভাবে তুলনা করে ফেলতেছেন, এটা ভুল, ভুল এবং ভুল।

হিমু এর ছবি

আপনি তো এই মোস্ট কমপ্লেক্স ইকোসিস্টেমের দুই একটা জিনিস নিয়ে আলোচনা করলেও একটা কথা ছিলো। সেটা না করে বিশেষণের আড়ালে লুকাচ্ছেন। দুনিয়ার কোথায় ম্যানগ্রোভ বন সিম্পল ইকোসিস্টেম, সেটাও একটু জানায়েন। আর বনাচ্ছাদন তো আপনিই শুরুতে মাপলেন, এখন চ্যাতেন কেন?

দূষণ যে সিএনজি ভাড়া করে বনবাদাড়ে হাজির হয় না, বাতাসে আর পানিতে ছড়ায়, সেটা আমি জানতাম, তারপরও ধন্যবাদ। ফ্লোরিডা আর মালয়েশিয়ার সাগরের পানি বা বাতাস এই দূষণ বহন করতে অক্ষম, এইটা আপনার দাবি?

কেন দুনিয়ার অন্য জায়গায় ম্যানগ্রোভ বন কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশে টিকে আছে, এইটার উত্তর আপনি এতোক্ষণ কথা চালাচালি করে বের করছেন, "উহারা প্রকৃত সুন্দরবন নহে"। ফাইন। প্রকৃত সুন্দরবন তাহলে কীভাবে ধ্বংস হবে, সেই ব্যাখ্যাটাও দিয়েন। আজকে না পারলে কালকে, কালকে না পারলে পরশু দিয়েন।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

লেখা যথাযথ। কিন্তু বামপালদের প্রতি খোঁচার পরিমাণ আর একটু কম থাকলে বোধহয় লেখা হিসেবে আরেকটু উৎরাতো।

যদিও আপনার এই লেখার ফোকাস মূলত বামপালদের দেয়া যুক্তিগুলোর খন্ডন। তারপরেও বিশ্বের অন্য যে কোল-বেজড-পাওয়ারপ্ল্যান্টগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলোতে কী ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে সে ব্যাপারে আলোকপাত করতে পারতেন। কয়েকটা লেখা এবং টকশোতে দেখলাম এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আরশাদ মনসুর বলছেন, সরকার থেকে যে ধরণের প্রযুক্তির কথা বলা হয়েছে তা যদি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয় তাতে এই প্ল্যান্টটি হতে পারে 'ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট অফ ইটস ক্লাস'। বাকি যে প্ল্যান্টগুলোর কথা বলেছেন তার অনেকগুলোই অনেকদিন থেকে চলছে। সেগুলোতে যদি এত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার না করা হয়ে থাকে তাহলে সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

এই নিয়ে ভালো একটা টকশোর লিঙ্ক আছে এখানে। আমি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী লেভেলের লোকদের যত টকশো টাইপ অনুষ্ঠান দেখেছি সেই তুলনায় এনাকে তাঁর কাজের ব্যাপারে তুলনামূলক স্পষ্ট ধারণা রাখেন বলে মনে হয়েছে। তাছাড়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে অধ্যাপক আরশাদ মনসুরের কথাগুলোও বেশ টুকে রাখার মতো।

https://www.facebook.com/NasrulHamidMP/videos/935629119879428/

আমার রামপাল বিষয়ে যেটা সমস্যা মনে হয় সেটা হলো, যে আধুনিক প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে সেসব মেনে তৈরি করা হলেও ঠিকমত অপারেট করা যাবে কিনা। কারণ এরকম একটা প্ল্যান্ট শুধু একবার ভালোভাবে স্থাপন করে ফেললেই হয় না। যতদিন অপারেট করবে ততদিন এটাকে ঠিকভাবে অপারেট করার দরকার হবে। আমরা দেখেছি সুন্দরবনের নিকটস্থ নদীগুলোতে তেল/কয়লাভর্তি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। এধরণের দুর্ঘটনা হয়ত আবার কখনও ঘটতে পারে। এই জিনিসগুলো ভাবার প্রয়োজন আছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হিমু এর ছবি

তারপরেও বিশ্বের অন্য যে কোল-বেজড-পাওয়ারপ্ল্যান্টগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলোতে কী ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে সে ব্যাপারে আলোকপাত করতে পারতেন।

সব আলো এক পোস্টে চলে আসলে তো গরম লাগবে।

আমার রামপাল বিষয়ে যেটা সমস্যা মনে হয় সেটা হলো, যে আধুনিক প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে সেসব মেনে তৈরি করা হলেও ঠিকমত অপারেট করা যাবে কিনা।

এ আশঙ্কা সব ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্যেই খাটে। আমরা যদি নিজেদের সব গ্যাস না পুড়িয়ে আরো আগেই কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতাম, তাহলে এতোদিনে এ ধরনের প্ল্যান্ট চালানোর জনবলগত সক্ষমতা গড়ে উঠতো। দেরিতে শুরু করলে এই আশঙ্কা শুরুতে থাকাই যৌক্তিক।

আমরা দেখেছি সুন্দরবনের নিকটস্থ নদীগুলোতে তেল/কয়লাভর্তি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। এধরণের দুর্ঘটনা হয়ত আবার কখনও ঘটতে পারে। এই জিনিসগুলো ভাবার প্রয়োজন আছে।

মংলা বন্দরে যে একটা জ্বালানি পরিশোধন কেন্দ্র চলছে বহু বছর ধরে, সেটা কি জানেন? রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র না হলেও মংলার চ্যানেলে সেখানকার সিমেন্ট কারখানা, রিফাইনারি আর অন্যান্য কারখানার জন্যে জিনিসপত্র জাহাজে করে পরিবহন করা হবে। জাহাজডুবির চেয়ে অনেক বেশি ফ্রিকোয়েন্ট ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা। কয়টা লোক গাড়িতে চড়া বন্ধ রেখেছে?

তানভীর এর ছবি

ফ্লোরিডার ক্রিস্টাল রিভার কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যে উদাহরণ দেয়া হয়েছে তার দুইটা ইউনিট কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ বন্ধ হয়ে যাবে এবং বিকল্প হিসেবে সেখানে গ্যাস বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। সূত্র: http://jacksonville.com/business/2014-05-14/story/duke-energy-florida-plans-scrap-coal-power-plants-switch-natural-gas

মূলত সিয়েরা ক্লাব এবং পরিবেশবাদীদের চাপে ডিউক এনার্জি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে (সূত্র ১: http://content.sierraclub.org/press-releases/2013/06/sierra-club-and-earthjustice-call-duke-energy-fl-psc-replace-crystal-river

সূত্র ২: http://content.sierraclub.org/press-releases/2014/04/5500-floridians-tell-duke-energy-choose-clean-energy-now

সিয়েরা ক্লাবের রিপোর্ট [১] অনুযায়ী ডিউক এনার্জি ২০২০ সালের মধ্যে ক্রিস্টাল রিভার কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে (Duke Energy has committed to phase out the Crystal River coal-fired power plant by 2020 at the latest, because it is the cheapest option for the company and its customers in Florida.)

আমেরিকায় ষাট কিংবা আশির দশকে অনেক কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন হলেও এখন চিত্র ভিন্ন। শুধুমাত্র ওবামার (২০০৯-২০১৪) আমলে ২৫৬ টা কয়লা বিদ্যুৎ ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে (সূত্র: http://www.cnsnews.com/commentary/h-sterling-burnett/obama-delivers-deathblow-coal-clean-power-plan

আরো অনেক কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের তালিকায় আছে (একটা তালিকা এখানে পাওয়া যাবে: http://www.brainerddispatch.com/content/factbox-coal-fired-power-plants-scheduled-shut-down-us)। যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি (EPA) নতুন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেন না তৈরি হয় সেটা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাকী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যেন ২০৩০ সালের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সূত্র: http://instituteforenergyresearch.org/analysis/as-u-s-shutters-coal-plants-china-and-japan-are-building-them

(মন্তব্যে সম্পাদনা কাজ করছে না, তাই লিংক ঠিকভাবে না আসলে দুঃখিত)।

হিমু এর ছবি

আমাদের যদি ওদের মতো গ্যাস থাকতো। বা ২০৩০ সাল নাগাদ বন্ধ করার জন্য ২ লক্ষ ২৭ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থাকতো।

দীর্ঘশ্বাস।

তানভীর এর ছবি

ফ্লোরিডাতেও গ্যাস নাই। ক্রিস্টাল রিভারের ঐ প্ল্যান্টে আলাবামা থেকে পাইপলাইনে গ্যাস আনা হবে। কয়লা যেখানে সস্তা অপশন ছিলো, সেখানে পরিবেশ দূষণের কারণেই এত খাটনি করে অন্য স্টেট থেকে গ্যাস এনে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হবে। Duke said the new plant would be served by a proposed natural-gas pipeline that is expected to stretch from Alabama to Central Florida.

সূত্রঃ http://jacksonville.com/business/2014-05-14/story/duke-energy-florida-plans-scrap-coal-power-plants-switch-natural-gas

আমাদের গ্যাস নাই, কয়লাও নাই। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লাও যতদূর জানি ভারত এবং বাইরে থেকে আনা হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের অংশীদার যেহেতু ভারতীয় কোম্পানি, তখন পাইপলাইনে ভারত থেকে গ্যাস এনে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোটাও একটা অপশন হতে পারে।

হিমু এর ছবি

ফ্লোরিডাতে কয়লাও নাই, ঐটাও ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার খনি থেকে আনে। আর বন্ধ হচ্ছে ইউনিট ১ আর ২। ৪ আর ৫ (দুইটা মিলে ১৪৩৪ মেগাওয়াট) চলবে। [খবর]

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

টেস্ট।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

টেস্ট। এখনও ঠিক হয় নি। আইকন, ইমোটিকন কিছুই নেই।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সৈকত এর ছবি

হিমু ভাই, আপনার এ পর্যন্ত উল্লেখ করা প্রতিটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই উল্লেখযোগ্য দূষণের দোষে দুষ্ট এবং বেশীর ভাগই বন্ধ হওয়ার পথে। সাইট্রাস কাউন্টির ক্রিস্টাল রিভার এনার্জি কমপ্লেক্সের কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি ফ্লোরিডার সবচেয়ে দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প। অতি দূষণের কারণে এর দুটি ইউনিট ২০১৮'র ভিতরে বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফ্লোরিডা প্রগ্রেস এনার্জির ভাষ্য অনুযায়ী, এর ফলে ফ্লোরিডার রাস্তা থেকে ৮,৩০, ০০০ গাড়ী তুলে নেওয়ার সমতুল্য দূষণ কমবে। http://www.sourcewatch.org/index.php/Crystal_River_Energy_Complex কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি তেজস্ক্রিয় দূষণেরও অন্যতম প্রধান উৎস। আপনার আপনার এই পোস্টে উল্লেখ করা মালয়েশিয়ার ক্যাপারে অবস্থিত সুলতান সালাহউদ্দিন আবদুল আজিজ পাওয়ার প্ল্যান্টের আশেপাশের এলাকায় এবং খাদ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পোলনিয়াম-২১০ পাওয়া গেছে। এছাড়া সীসা, ক্যাডমিয়াম এবং দস্তার মত ক্ষতিকর ভারি ধাতুর দূষণও লক্ষ্য করা গেছে। বিস্তারিত জানতে নীচের সূত্রগুলো দেখুন: http://citeseerx.ist.psu.edu/viewdoc/download?doi=10.1.1.708.3216&rep=rep1&type=pdf https://ehjournal.biomedcentral.com/articles/10.1186/1476-069X-10-43 http://link.springer.com/article/10.1007/s11356-014-3663-4 http://www.nuklearmalaysia.org/nuklearmalaysia_org/media/File/JNRT-2010/JNRT-2010-1_4.pdf অন্য একটি পোস্টে আপনার মন্তব্যে উল্লেখ করা, নটিংহ্যামশ্যায়ারের কটামে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও ইউরোপের সবচেয়ে দূষণসৃষ্টিকারী শিল্পের তালিকাভুক্ত; যার কারণে সার্বিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭১১ মিলিয়ন ইউরো। দূষণের কারণে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আগামী ২০২৩ সালের ভিতরে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। https://www.theguardian.com/news/datablog/2011/nov/24/cost-of-environmental-pollution http://uk.reuters.com/article/britain-power-idUKL5N0LJ0QY20140312 কানাডার অন্টারিও দু'বছর আগেই এর শেষ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করে দিয়েছে। পৃথিবীর বেশীরভাগ দেশই দূষণজনিত ক্ষতি এড়ানোর জন্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে সরে আসছে। এর পিছনে বাঘ, হরিণ, পাখি রক্ষার কোন রোমান্টিসিজম নেই... পুরো ব্যাপারটাই অর্থনৈতিক। এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে প্রাপ্ত লাভের থেকে গণস্বাস্থ্য, কৃষি, জল এবং বায়ু দূষণের সার্বিক গচ্চাটা অনেক বেশি। নিকট অতীতে এর উল্টো পথে হেঁটে চীন এখন তার চড়া মাশুল দিচ্ছে। চীনের প্রায় ৫০০টি গ্রাম এখন 'ক্যান্সার ভিলেজ'। http://www.tandfonline.com/doi/abs/10.1080/00139151003618118 কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিয়ে যাদের এখনো কোন অ্যাপোক্যালিপটু দেখতে না পাওয়ার হতাশা আছে, তারা 'China cancer villages' গুগুল করে দেখতে পারেন। চীনারা এখন দম নেওয়ার জন্য কানাডা থেকে ক্যানে করে বাতাস আমদানি করছে। সারা পৃথিবী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যখন একে একে সরে আসছে তখন আমরা ভূতের পা লাগিয়ে উল্টো দিকে হাঁটছি আর ত্যানা প্যাঁচানোর রাজনীতি ডুবে আছি...

হিমু এর ছবি

হিমু ভাই, আপনার এ পর্যন্ত উল্লেখ করা প্রতিটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই উল্লেখযোগ্য দূষণের দোষে দুষ্ট এবং বেশীর ভাগই বন্ধ হওয়ার পথে।

আমি জানি ভাই। সেজন্যেই এই উদাহরণ দিলাম। এই ভয়ানক দূষণের দোষে দুষ্ট কেন্দ্রগুলো ৫০ বছর চলেছে, ম্যানগ্রোভ বন ধ্বংস হয় নি। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, এই বন টিকে আছে কীভাবে?

যদি ৫০ বছর চলার পর এই কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, আমরাও কি আমাদের কয়লাচালিত কেন্দ্রগুলো ৫০ বছর চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অপশন চিন্তা করতে পারি?

সারা পৃথিবী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যখন একে একে সরে আসছে তখন আমরা ভূতের পা লাগিয়ে উল্টো দিকে হাঁটছি আর ত্যানা প্যাঁচানোর রাজনীতি ডুবে আছি...

আপনি পৃথিবীতে যেসব কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার উদাহরণ দেখছেন, লক্ষ্য করলে দেখবেন তারা ইতিমধ্যে কয়েক দশক (কেউ কেউ শতক) ধরে কয়লা পুড়িয়ে সস্তায় বিদ্যুৎ খেয়ে নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কয়লার বদলে গ্যাসে যাচ্ছে, কারণ তাদের দুটোই আছে (২২৭,১০০ মেগাওয়াট স্থাপিত ক্ষমতার কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র ওখানে), আমাদের বিকল্প হিসেবে গ্যাস নেই। চীনে এতো দূষণের পরও কয়লাকেন্দ্র কি থেমে আছে? ভারতের কয়লা আহরণের হাব ঝাড়খণ্ড-ছত্তিশগড়, তাই উড়িষ্যায় হাজার হাজার মেগাওয়াট কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিকল্পনা আর বাস্তবায়ন ফেজে আছে এখন [সূত্র]। জার্মানিতে নবায়নযোগ্য শক্তি এখন বিদ্যুৎমিক্সে ৩০%, কিন্তু কয়লা এখনও ৪২%।

পৃথিবীতে কয়লার রিজার্ভ বর্তমান হারে খরচ করলে আরো দুইশো তিরিশ বছর চলবে। যারা ইতিমধ্যে কয়লা পুড়িয়ে উন্নত হয়ে উঠেছে, তাদের হাতে কয়লার বদলে অন্যকিছুতে (নিউক্লিয়ার বা বায়ু-সৌর) যাওয়ার সামর্থ্য আছে (তারপরও ভারত বা চীন সে পথে যাচ্ছে না)। আমাদের সেই সামর্থ্য নাই।

মাথাপিছু শক্তিব্যয়ে আমরা কোথায় আছি, একটা লেখচিত্রে তার তুলনা দেখাই। আপনিই তারপর বিবেচনা করুন, আমরা কোথায় আছি।

আর আমার ধারণা আপত্তির জায়গাটা কয়লা নিয়ে নয়, বরং রামপালে কয়লা পোড়ানো নিয়ে। তাই পোস্টের প্রশ্নের উত্তর আবারো খুঁজছি।

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

রাহী  এর ছবি

"এই ভয়ানক দূষণের দোষে দুষ্ট কেন্দ্রগুলো ৫০ বছর চলেছে, ম্যানগ্রোভ বন ধ্বংস হয় নি। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, এই বন টিকে আছে কীভাবে?"

৫০ বছরের এই এনালাইসিসের সুত্রটা দিবেন প্লিজ? অর্থাৎ আপনি কিভাবে জানলেন ফ্লোরিডার ম্যানগ্রোভ এবং প্রানিজ সম্পদ ৫০ বছরেও এও কোন ভাবে পরিবর্তিত হয়নি?

হিমু এর ছবি

"পরিবর্তন হওয়া" আর "টিকে থাকা"র মধ্যে পার্থক্য আছে তো। যেমন সুন্দরবনের একাংশ সাফ করে চিংড়ি-কাঁকড়ার ঘের করার পরও সুন্দরবন টিকে আছে, কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে। আর তাবত ফ্লোরিডার ম্যানগ্রোভ আর প্রাণিজ সম্পদ নিয়ে কথাও হচ্ছে না এখানে, কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশের ম্যানগ্রোভ বনটাই আলোচ্য।

এইবার একটু বলেন, এই বন টিকে আছে কীভাবে? এটারে আবার সিম্পল ইকোসিস্টেম হিসাবে বেচে দিয়েন না।

রাহী  এর ছবি

তাঁর মানে আপনি রেফারেন্স ছাড়াই বলে যাবেন ? বাড়া, কমা, টিকে থাকা, পরিবর্তন হওয়ার রেফারেন্স দেন প্লিজ?

হিমু এর ছবি

বাড়া-কমা-পরিবর্তন নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই, এটা আপনার মাথাব্যথা। এই ম্যানগ্রোভ বন কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে টিকে আছে কীভাবে, সেটাই জানতে আগ্রহী। এই ম্যানগ্রোভ বনের অস্তিত্বের রেফারেন্স চাইলে ফ্লোরিডা ডিপার্টমেন্ট অফ এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশনের ওয়েবসাইট দেখেন।

এইবার উপরে যে বললেন প্রতিবাদের মুখে এডিবি চিংড়ি প্রকল্পে সহায়তা বন্ধ করেছে, আর উপকূলীয় অঞ্চলে ঘের নির্মাণ নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, সেইটার রেফারেন্স দেন।

রাহী  এর ছবি

"বাড়া-কমা-পরিবর্তন নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই, এটা আপনার মাথাব্যথা।"

বাহ, দারুন। তা, ১৫ বছর পর, কতটা সুন্দরবন থাকলে আপনি তারে টিকে থাকা বলবেন?

"প্রতিবাদের মুখে এডিবি চিংড়ি প্রকল্পে সহায়তা বন্ধ করেছে, আর উপকূলীয় অঞ্চলে ঘের নির্মাণ নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে,"

- আমি জানি। তাই এটার সুত্র আপনার মাথাব্যাথা।

হিমু এর ছবি

আগে সাইট্রাস কাউন্টির ম‍্যানগ্রোভ বন আর সুসাআআশা কেন্দ্রের কাছের ম‍্যানগ্রোভ বন কীভাবে টিকে আছে, সেটার সদুত্তর পাই, তারপরে নাহয় ভেবে দেখবো। সুসাআআশা কেন্ত্রের কাছের ম‍্যানগ্রোভ বন ২০০১-২০১৪ সালের মধ‍্যে নেট ১১ হেক্টর কমেছে, কিন্তু আপনার জন‍্য এক তাম ১৪ হেক্টরই সই। সুন্দরবন আগামী ১৫ বছরে ১৪ হেক্টর কমলে হয়তো তেমন কষ্ট পাবো না। ১৫ হেক্টর কমলে আপনারে ডেকে এনে ঝগড়া করবো।

আপনি এই কথার জবাবে সুন্দরবন যে খালি হেক্টরে মাপা যায় না, ঐটা নিয়ে কিছুক্ষণ রাগারাগি করতে পারেন। তারপর সুন্দরবনের বাকি প‍্যারামিটারগুলি অন্তত একটা নিয়ে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করতে পারেন, কীভাবে সেটা ধ্বংস হবে। একের পর এক টুল না দিয়ে, দুই কথা কষ্ট করে লিখেন। লিখতে না পারলে ধরে নিবো আপনি ব‍্যাপারটা বোঝেন না। সেক্ষেত্রে আপনি আমি দুইজনই সমান সুন্দরবনমূর্খ।

এইবার আবারো আগের প্রশ্ন। সাইট্রাস কাউন্টি আর সুসাআআশা কেন্দ্রের কাছের ম‍্যানগ্রোভ বন টিকে আছে কীভাবে?

রাহী  এর ছবি

"লিখতে না পারলে ধরে নিবো আপনি ব‍্যাপারটা বোঝেন না। সেক্ষেত্রে আপনি আমি দুইজনই সমান সুন্দরবনমূর্খ।"

আপনি জানেনই না, টিকে থাকার মানে কি? বলতে পারছেন না আপানার আদরে সাইট্রাস কাউন্টির ম‍্যানগ্রোভ বন কি অর্থে 'টিকে' আছে? ডিগ্রেডেড হয়েছে নাকি বেড়েছে গত ৫০ বছরে? আপনি টিকে থাকা বুঝেন না, কিন্তু প্যরামিটার বুঝতে চান।

আমি যতটুকু জানি, লিখি। কিছু না জেনেই পাতার পর পাতা লেখার মত আর প্রশ্ন এভয়েড করার মতো এত জ্ঞান আমার নাই।

ADB সূত্রঃ দেখবেন এখানে মেরিন শ্রিম্প ডিমরালাইজড করার পলিসি বলা হয়েছে।
http://www.eldis.org/vfile/upload/1/document/0708/DOC21070.pdf

হিমু এর ছবি

গত ৫০ বছরে সুন্দরবন কি ডিগ্রেডেড হয়েছে নাকি বেড়েছে? সুন্দরবন কি টিকে আছে? রেফারেন্সসহ ব্যাখ্যা করুন প্লিজ। আপনার মেথডোলজি দিয়ে তারপর আমি সাইট্রাস কাউন্টির ম্যানগ্রোভ বন আর সুসাআআশা কেন্দ্রের পাশের ম্যানগ্রোভ বন বিশ্লেষণের চেষ্টা করবো। কারণ এ ছাড়া আপনি "ইয়ে ম্যানগ্রোভ ঝুটা হায়" বলে রাগারাগি করবেন।

রাহী  এর ছবি

HC asks govt to save agri-farm, forest lands "http://www.thedailystar.net/news-detail-220894"

Example of couple of iNGO projects for sustainable coastal farming:

https://www.academia.edu/7585428/Brackish_Water_Shrimp_Farming_and_the_Growth_of_Aquatic_Monocultures_in_Coastal_Bangladesh

হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই এডিবি'র একটা পলিসি পেপার ছিল নট টু প্রমোট আনসাসটেইনবল শ্রিম্প ফারমিং, খুঁজে পেলে দিয়ে দিব।

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্যে একটা জরূরী প্রশ্ন উঠে এসেছে---রামপালের সম্ভাব্য দূষণ পরিমাণ আর আমেরিকার কয়লাখনির দূষণের পরিমাণ কি তুলনীয়? এটা নিয়ে কিছুটা ঘাঁটাঘাঁটি করে যা ধারণা করছি, তা হলো:

দুটারই দূষণের পরিমাণ "মোটামুটি" একই রকমের হবে।

কয়লা বিদ্যুতের সবচেয়ে বড় ২টা ক্ষতিকর বর্জ্য ধরা হয় সালফার ডাই অক্সাইড আর নাইট্রাস ডাই অক্সাইডকে (কার্বন ডাই অক্সাইড আপাতত বাদ রাখছি, এটা দূষণে তুলনামূলকভাবে পরোক্ষ-আর-লংটার্ম ভূমিকা রাখে)। আমেরিকার ক্রিস্টাল রিভার কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরীতে:
সালফার ডাই অক্সাইড উতপন্ন হয়: ৬ কেজি (আমেরিকায় অন্যান্য কয়লাকেন্দ্রে এটা কেন্দ্র ভেদে ৩ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত হয়)
নাইট্রাস ডাই অক্সাইড হয় উতপন্ন হয়: ২ কেজি (আমেরিকায় অন্যান্য কয়লাকেন্দ্রে এটা কেন্দ্র ভেদে দেড় থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত হয়)

রামপালেরটা জানিনা, তবে তুলনীয় দেশ হিসাবে ভাবলাম ভারতেরটা হিসেবে নেওয়া যায়। ভারতে কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরীতে
সালফার ডাই অক্সাইড উতপন্ন হয়: গড়ে ৭ কেজি ( কেন্দ্রভেদে ২ থেকে ১৩ কেজি পর্যন্ত হয়)
নাইট্রাস ডাই অক্সাইড হয় উতপন্ন হয়: গড়ে ৪ কেজি ( কেন্দ্র ভেদে ২ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত হয়)

আমেরিকার রেফারেন্স : http://goo.gl/7R8yhD
ভারতের রেফারেন্স: https://goo.gl/JcrIjU

---কৌতুহলী

হিমু এর ছবি

এককটা কেজি/মেগাওয়াট-ঘণ্টা হবে, কেজি/মেগাওয়াট নয়।

সাফি এর ছবি

এই সিরিজ পরে হতাশ হলাম। আনুদাস পাল আর তার ল্যাংবোটদের ডিস্ক্রেডিট করার চেয়ে জরুরী ছিলো মনে হয় রামপাল বা এর পরিবেশগত ভবিষ্যতের প্রতি সময় এবং শ্রম দেওয়া।

হিমু এর ছবি

আয় একসাথে ঐ সময় আর শ্রম দিই। তুই একটা পোস্ট দিয়ে শুরু কর।

মাসুদ সজীব এর ছবি

১। ”রামপালে নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ক্ষতি করবে কি করবে না, সে ব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নেই। “

দ্বিতীয় পর্বের সূচনাতে আপনি যে ঘোষনা দিয়েছেন নানান আলোচনায় আপনি সেটি থেকে সরে এসেছেন। যেমন মন্তব্যে আপনি বলছেন ফ্লোরিডায় ৫০ বছর চলতে পারলে রামপালে বিদুৎ কেন্দ্র ৫০ বছর চালিয়ে নিলে কেমন হবে, অর্থাৎ ক্ষতির পরিমানের (কম) উপর নির্ভর করে আপনি রামপালে বিদুৎকেন্দ্রের পক্ষে আছেন।

২। সিরিজটির প্রথম পর্বে বলেছেন, “সুন্দরবনের ওপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব বিশ্লেষণও এই লেখার আধেয় নয়। আমি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে একটি মহলের প্রচারণার পেছনে কয়েকটি ভুল ধারণা এবং/অথবা মিথ্যাকে ধরিয়ে দিতে চাই কেবল। “

দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় বলছেন সাধারণ" ম্যানগ্রোভ ৫০ বছর (ফ্লোরিডায়) বা ৩০ বছর (মালয়েশিয়ায়) ধরে কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে টিকে আছে, আর কেন সুন্দরবন সেভাবে টিকতে পারবে না। আমি এই প্রশ্নের উত্তরটাই খুঁজছি শুধু। “

দুই পর্বে আপনার অবস্থান একে অপরের বিপরীত। দ্বিতীয় পর্বের এ প্রশ্নের উত্তর সুন্দরবনের ওপর রামপাল বিদুৎকেন্দ্রের দূষনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানতে বলা হচ্ছে, অথচ আপনি পোষ্টের সূচনাতে বলছেন আপনার আগ্রহ সাম্ভব্য ক্ষতি বিশ্লেষণ নয়, বামাতিদের মিথ্যে প্রচারণাগুলো ধরিয়ে দেওয়া।

আমার মনে হচ্ছে আপনি ধ্বংস হয়ে যাওয়া কিংবা টিকে না থাকা বলতে একমাত্র অর্থ নি:শেষ হওয়া যাওয়া কে বুঝতেছেন। বিষয়টা এমন নয়, বুড়িগঙ্গা কি ধ্বংস হয়েছে নাকি টিকে নেই? বুড়িগঙ্গা ধ্বংস হয়নি বরং এখনো টিকে আছে, তবে একে স্ব-মহিমায় টিকে থাকা বলে না, অর্থাৎ পরিবেশের উপর এর যে উপকারী প্রভাবগুলো ছিলো তা এখন নেই। বুডিগঙ্গা নদী তার সব স্বাভাবিক গুণাগুন হারিয়েছে, সেখানকার পানি মারাত্নকভাবে দূষিত ফলে নদীতে কোন জলজ প্রাণী নেই, ময়লা-আবর্জনায় নদীর তলদেশের উচ্চতা বাড়ছে। এখন আপনি যদি বলেন নদীর জায়গায় তো নদী আছে, ধ্বংস হয়নি টিকে আছে তাহলে আর কিছু বলার নেই।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

হিমু এর ছবি

দ্বিতীয় পর্বের সূচনাতে আপনি যে ঘোষনা দিয়েছেন নানান আলোচনায় আপনি সেটি থেকে সরে এসেছেন।

মন থেকে প্রেজুডিস সরায় পড়লে টের পেতেন যে সরে আসি নি। সুন্দরবনের ক্ষতি হবে কি হবে না, বা কতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই। যারা বলছে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে, তাদের কাছে আমি ব্যাখ্যা শুনতে চাই, কীভাবে পৃথিবীর আরো দুই দেশে দুটি ম্যানগ্রোভ বন কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে টিকে আছে।

আপনি যদি দাবি করেন, সুন্দরবন বুড়িগঙ্গা হয়ে যাবে, সেটার সপক্ষে যুক্তি, তথ্য আর ব্যাখ্যা দিন, মেনে নেবো।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

মন্তব্যগুলো পড়ছি, আর মিটিমিটি হাসছি। আগেই বলেছিলাম, বামপালী গোষ্ঠী বেশ সার্থকতার সাথে আমাদের শিক্ষিত জনদের অনেকের মাঝে একটি ধারনা বদ্ধমুল করে দিতে পেরেছে- রামপালে বিদ্যুতকেন্দ্র মানেই সুন্দরবন ধ্বংস! সেই সাথে এ বনের বাঘ শেষ, হরিণ শেষ, বানর কুমির অজগর মদনটাকও শেষ। ফেসবুকে পোষ্টারে দেখলাম বাঘ হরিণের সাথে সাথে হাতি গন্ডার জিরাফ সিংহ এমনকি জেব্রা পর্যন্ত গলাগলি ধরে মরে পড়ে আছে, নীচে ক্যাপশন- সুন্দরবন বাঁচান, বাংলাদেশ বাঁচান।

রামপালে বিদ্যুতকেন্দ্র হলে কি ক্ষতি হবে, কতটুকু ক্ষতি হবে, কি ভাবে হবে, সে বিষয়ে আপনি যদি কোন যৌক্তিক প্রশ্ন করেছেন, কিংবা প্রমান চেয়ে বসেছেন, তাহলেই হয়ে গেল। ভাবটা এমন- কি সর্বনাশ! প্রশ্নও করতে আছে? কিংবা উল্টাপাল্টা কোন লিঙ্ক ধরিয়ে দিয়ে সবজান্তা মন্তব্য প্রদান, সেটার ত্রুটি নির্দেশ করলে আরেকটা উল্টাপাল্টা লিঙ্ক ধরিয়ে আবার সবজান্তা মন্তব্য প্রদান। প্রথমে ইস্যুটা ছিল "রামপাল কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র", এখন সেটা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত "হয়ে কয়লা" বিদ্যুতকেন্দ্র হয়ে যাচ্ছে। বাঁশখালির চেয়ারম্যান সাহেবের মত অনেককেই এখন বলতে শুনছি- কয়লা বা নিউক্লিয়ার ছাড়া পানি, গ্যাস, সৌর, বায়ু কিংবা ঢেউ চালিত বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন করুন, আমাদের কোন আপত্তি নাই। শুনে হাসবো না কাঁদবো ভেবে পাচ্ছি না। আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে সমরজিত কর দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে লিখেছিলেন- "দুই দেশঃ শক্তি ও মানুষ"। সেটা পড়ে মনে হয়েছিল জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত বিদ্যুতশক্তির যুগ বোধ হয় দু-চার বছরের মধ্যেই শেষ হতে চলেছে। কিন্তু এত বছর পড়েও সেটা ব্রিটেন বা জার্মানিতেই হয় নি, আমাদের এখানে হতে আরও দেরী হবে এটাই স্বাভাবিক।

ইয়ামেন এর ছবি

আমার কাছে একটা জিনিস খুবই ফ্যাসিনেটিং লাগে, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ রক্ষা কমিটির মুখপাত্র বা কর্ণধারদের মধ্যে অর্থনীতির প্রফেসর আছেন, সমাজ বিজ্ঞানের প্রফেসর আছেন, বাম-ঘরানার রাজনীতিক আছেন, কিন্তু কন পরিবেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ/প্রকৌশলী/বিজ্ঞানি দেখি না। অথচ রামপালের বিপক্ষে যৌক্তিক প্রচারনা চালানোর জন্য তাদেরকেই আগে দরকার ছিল না? তা না করে আমি দেখছি কেবল এক দল বামপালি নিজেরাই মাতব্বরি মেরে যাচ্ছে, মানুষের আবেগ এক্সপ্লয়েট করে যাচ্ছে। এ থেকে যৌক্তিক কিছুই হচ্ছে না, সরকারের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করা ছাড়া।
কয়েক দশক পরে রামপাল সফল হলেও কলুষিতই হয়ে থাকবে, কিন্তু কেউ বলতে পারবে না ঠিক কি কারনে কিভাবে রামপাল সুন্দরবনের কি ক্ষতিটা করেছে। অনেকটা 'শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাত' সবাই বলে, কিন্তু কোন ব্যাঙ্কে ডাকাতি করেছিল সেটা না কেউ বলতে পারে, না কোন প্রমান দেখাতে পারে, সেইরকম। দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

ঈয়াসীন এর ছবি

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় নিচের লিঙ্কদুটি রেখে গেলাম।
১।http://tinyurl.com/hjm6whq
২।http://tinyurl.com/zyg95ce

মুসা এর ছবি

আপনার তথ্য সমৃদ্ধ লেখা পড়ে ভালো লেগেছে । রামপালের অর্থনৈতিক দিক নিয়ে যদি কিছু লিখতেন,আমার কাছে এই পরিবেশ নিয়ে রশি টানাটানির চেয়ে এই দিকটা বেশি গুরুত্পূর্ণ মনে হয়েছে । আমাদের কি লাভ বা পরবর্তীতে এসব ক্ষেত্রে কি করা উচিত , লেখলে ভালো হত ।

অনুসন্ধানী আবাহন এর ছবি

চা খাচ্ছেন, হিমু ভাই?

KiHonu এর ছবি

measure distance, অপশনটা ইউনেস্কো না ফিউনেস্কো ওদের ও এট্টু মেইল করে দিয়েন। ওনারা কনফুজ হয়ে গেসে, অল্প বিদ্যে লয়ে যা হয় আর কি। দূরত্ব মাপ্লে ঝামেলা বাধাবেনা আর। গুরু গুরু

হিমু এর ছবি

ক্যানো, ওনারাও কি আনু ছারকে গাবতলির মাষ্টার ডাকা শুরু কর্ছেন? খুপ খ্রাপ হয়েছে সেটা। প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে ইউনেস্কো না ফিউনেস্কো বরাবর লংমার্চে গেলাম।

KiHonu এর ছবি

জানেননা মনে হয়, ওনারা কেন যেনো বারবার সরকারকে ওয়ার্নিং পাঠাচ্ছেন। আপনার জ্ঞ্যান-এর ধারক ওয়েবপেজ গুলাই না হয় ইমেইল করেননা ওদের প্লিজ। লংমার্চে কি হয় বলুন! উত্তম জাঝা!

হিমু এর ছবি

আল্লা তাই?! ইউনেস্কো না ফিউনেস্কো ওয়ার্নিং পাঠিয়েছে যখন, সরকার নিশ্চয়ই প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলেছে। আপনি বরং সরকারকে নতুন একটা প্যান্ট কিনে দেননা প্লিজ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।