আমার ছেলেমানুষি, মলিদিদির লেখা ও মুক্তমনস্কতার আকাশ

হীরক লস্কর এর ছবি
লিখেছেন হীরক লস্কর (তারিখ: মঙ্গল, ২১/০২/২০০৬ - ২:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


শতক হাঁকানোর পর আমি যে লেখা লিখেছিলাম তাতে মলি সমালোচনা করেছিলেন। তো মন্তব্যতে আমি লিখেছিলাম, সমালোচনাটুকু বুঝলাম, কিন্তু ধন্যবাদ দেবেন না। তার উত্তরে মলি আজ একটি লেখা লিখেছেন যার শিরোনাম 'ছেলেমানুষি: হীরকদাদাকে ধন্যবাদ কিন্তুকেন'।

মলির লেখাটা পুরোটা তুলে ধরতে পারছি না। দৈর্ঘবেড়ে যাবে। আগ্রহীরা সেটি পড়ে নিন। আর তার লেখার বিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া দিলাম নীচে:

ধন্যবাদ দিতে কৃপণতা আমি করিনা মলিদিদি। ধন্যবাদ, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকে কারণে ধন্যবাদ, আপনাকে অকারণে ধন্যবাদ। এই যে একই সময়ে 2006 সালে আমরা দুজন একই সাথে এই পৃথিবীর আলো-বাতাস ভোগ করছি, একই সাইটে লিখছি, একই ভাষায় তর্ক-বিতর্ক করছি; এই যে মিলটুকু এই তো অনন্য। কৃপণ হবো কেন? অজস্র ধন্যবাদ আপনাকে।

প্রথমে আপনি লিখেছেন, আমার লেখা আপনি পড়েন না কারণ আমার লেখা আমার লেখা ভালো লাগে না। এই কথাটা অবশ্য আমি বুঝলাম না মলি দিদি। না পড়লে ভালো লাগা বা খারাপ লাগা বুঝবেন কি করে? আগে পড়ুন। পড়ে খারাপ ভালো লাগতে দিন। বিচার করুন। মলাট দেখেই কি বইয়ের ভেতরটা যাচাই করা উচিত?

বোরকা পড়া মেয়েদের কটাক্ষ করেছি বলে কষ্ট পেয়েছেন? আমার মতে মুসলমান ছেলেরাও তো বোরখা পড়ে। আরবের শেখরা যে পোষাক পড়ে তা বোরখার চেয়ে কম কোথায়? ওদের মুখমন্ডল ছাড়া তো আর কিছুই দেখা যায় না। অনেক বোরখা পড়া মেয়েদেরও শরীরের সেটুকু অংশই দেখা যায়। এই পোষাক তো আরব দেশের আবহাওয়ার কারণে। পোষাকের এই বিষয়টি নিয়ে না হয় পরে লিখবো।

নাহ, আপনার দুষ্টুমিতে আমি কিছু মনে করতে পারি কি করে।? আমি যৌক্তিক বাকস্বাধীনতার পক্ষে রক্ত দিতে প্রস্তুত। সুতরাং আপনি অতি অবশ্যই ছেলে-মানুষি বা মেয়ে মানুষি যে কোনোটাই করতে পারেন। সেজন্য প্রয়োজনে বোরখা খুলেও দু-এক পাঁক নেচে উঠতে পারেন। বুঝতে অসুবিধা হলে নবীজি শিশু আয়েশা'র সাথে কি রকম ছেলেমানুষি করতেন তার কয়েকটা উদাহরণ সহিহ হাদিস থেকে দিতে পারি। ছেলেমানুষি করা বিশেষত: কন্যা শিশুদের সাথে সুন্নাতের পর্যায়ে পড়ে (সে শিশু-স্ত্রী হোক বা বন্ধুর শিশু কন্যা হোক)। নাকি এতেও ঝগড়া বাধাবেন?

সবশেষে লিখেছেন শিরোনাম দেখে ভালো লেখা মনে হয়েছে এমন লেখাগুলো পড়েছেন। এজন্য আবারও ধন্যবাদ মলিদিদি।

আর পিচ্চি বা শিশুর সাথে তুলনা করলেন বলে মনে কিছু নিইনি মলি দিদি। শিশুরা তো নিষ্পাপ, অমিয় সুন্দর। বয়সের সাথেই না তারা কলুষিত হতে থাকে।

জেহাদী ইমাম লেখায় কারো উত্তর দিতে বাকী রয়ে গেছে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। পেছনের লেখার মন্তব্য খুঁজে গি েয় পড়া হয় না। অবশ্যই উত্তর দেবো। উত্তর দিতে খুবই ভালো লাগে। সারা জীবনভর কত রকম পরীক্ষা দিয়ে এলাম। খাতা ভরে উত্তর লিখতে লিখতে অভ্যাস হয়ে গেছে। বরং প্রশ্ন করাটাকে কঠিন মনে হয়।

তো মলি দিদি, আরো প্রশ্ন করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্ন আর পছন্দের বিষয়কগুলো নিয়েই নাহয় আরো কয়েকটা ব্লগ লিখি।

সবশেষে আমাকে নিয়েই আপনার দীর্ঘতম লেখাটি লেখার জন্য ও ধন্যবাদ। আমি হয়তো নানাভাবে আপনার মনকে নাড়া দিতে পেরেছি। (হোক তা বিরক্তিসৃষ্টি বা সম্ভ্রম আদায়)।

সত্যিকথা বলতে কি মুক্তিযোদ্ধা শব্দের আগে মেরুদন্ডহীন শব্দ ব্যবহার করতে দেখে আপনার সম্পর্কে একধরনের করুণার দৃষ্টিভঙ্গি জন্মেছে। এই দেশটি যাদের রক্তের অবদান তাদেরকে আপনি মেরুদন্ডহীন ভাবতে পারেন (অথবা সেই শব্দের আগে মেরুদন্ডহীন যোগ করতে পারেন)--তাতে আমি অবাক হইনি। অবাক হয়েছিলাম একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়, রাজনীতিতে, সমাজে কি পরিমাণ ত্রুটি থাকলে উত্তর প্রজন্ম তাদের বীরদেরকে এই চোখে দেখতে পারে। (একটি কথা মলিদিদি, আমার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়, আপনার কোনো কোনো লেখা অন্য কারো লেখা। কারণ আপনার লেখাগুলোয় দুই ধরনের ও বয়সের মানুষের চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন দেখতে পাই।)

মলিদিদি, আমি জানি আপনার মতো আরো ফুলকলিরা এদেশে আছে। এরা থাকে। আপনি অন্তত: মুক্ত আলোচনার ফোরামে এসে অন্যান্য কিছু কথা পড়ছেন। ওরা উটের মত বালিতে মুখ গুঁজে থাকে। এই যে আপনি জানালা খুলে দিয়েছেন মুক্ত বাতাসের জন্য সে কারণেও আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি, সত্য, যুক্তি ও মুক্তমনস্কতার বাতাস আপনার প্রাণকেও একদিন হিল্লোলিত করবে। এই মুক্ত পৃথিবীর জ্ঞান ও চিন্তার মুক্ত উদার বিশাল আকাশে মলিদিদি, আপনাকে স্বাগতম।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।