ইকোনমিস্ট-আমার দেশের অপপ্রচারণা : ষড়যন্ত্রের নতুন ফ্রন্ট

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম এর ছবি
লিখেছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৯/১২/২০১২ - ৪:৪৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল শুরু থেকেই নানা ধরণের শত্রুর মোকাবেলা করে কাজ করছে। দেশে এবং বিদেশে, মিডিয়ায় অথবা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিরামহীনভাবে চলছে অপপ্রচারণা, ট্রাইবুনালের ইমেজ ধ্বংস করার চেষ্টা, ট্রাইবুনালের কাজকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা।

আমরা দেখেছি বহির্বিশ্বে টবি ক্যাডম্যানের মতো লোকেরা কীভাবে ট্রাইবুনাল সম্পর্কে মিথ্যাচার করে বেড়িয়েছে, দেখেছি আলি আলগামদির মতো মিডিয়াবাজেরা সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকায় বাংলাদেশ এবং ট্রাইবুনাল সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়েছে, এমনকী বাংলাদেশ সরকারকে নানা ভাবে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেয়ার নিদর্শনও মিলেছে। ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যাগুলোর একটির খলনায়কদের বিচারের আওতায় আনার এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রক্রিয়াটিকে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলে অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। সুদূর তুরস্কের একটি রাজনৈতিক দল সাদেত পার্টির উদ্যোগে ইস্তাম্বুলে গোলাম আযম সহ এসব অপরাধের দায়ে আটক ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে সমাবেশ হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় সর্বশেষ সংযোজন লন্ডন থেকে প্রকাশিত পত্রিকা দি ইকোনমিস্ট, এবং তাদের ল্যাজ ধরে ধরে বাংলাদেশের আমার দেশ।

মূল ঘটনাটুকু এই কয়দিনে সবাই জেনে গেছেন মনে হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের সাথে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের স্কাইপ কথোপকথনের একটি রেকর্ড ইকোনমিস্টের হাতে এসেছে। আরো এসেছে নিজামুল হক নাসিমের ইমেইল একাউন্টের তথ্য। এই কথোপকথনে নাকি ট্রাইবুনাল সম্পর্কে বিস্ফোরক সব তথ্য রয়েছে, সম্পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়াটিই যে একটি সাজানো ব্যাপার স্যাপার এমন সব প্রমাণ রয়েছে। ইকোনমিস্টের পক্ষ থেকে নিজামুল হক নাসিমকে ফোন করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আর গতকাল ৮ ডিসেম্বর, ২০১২ আমার দেশ পত্রিকায় এই কথোপকথনের একাংশের ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশিত হয়েছে।সংক্ষেপে এই হলো ঘটনা।

এবার একটু ভালো করে পুরো ঘটনাটির দিকে আমরা তাকাবো। প্রথমেই আসা যাক আমার দেশের প্রতিবেদনটির ব্যাপারে। একেবারে শুরুতেই একটি মারাত্মক ভুল করেছেন আমার দেশের প্রতিবেদক। সেখানে নিজামুল হক নাসিমকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত এই নামে কোন ট্রাইবুনালের অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশে যে দু'টি ট্রাইবুনাল চলমান তাদের নাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এক এবং দুই। গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্যগত ভুল দিয়ে শুরু হয়েছে আমার দেশের প্রতিবেদন।প্রতিবেদনের বাকি অংশটুকু লিঙ্ক থেকে পড়ে নিতে পারেন। আমরা সরাসরি আলোচনায় চলে যাবো।

প্রথমত, বিশ্বে এই ধরণের বিচার যখনই হয়েছে, যেটি যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো গুরুতর অপরাধ নিয়ে কাজ করে এবং যার আন্তর্জাতিক গুরুত্ব অপরিসীম, তখনই বিচারকেরা বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন সোর্স থেকে সাহায্য নিয়েছেন, নিয়ে থাকেন। এর জন্য নিয়োজিত থাকে গবেষক টিম, কপি এডিটর, প্রুফ রিডার, নিয়োজিত থাকে ইন্টার্নদের একটি টিম। একটি বিশাল ওয়ার্কফোর্স কাজ করে এরকম একটি বিচার প্রক্রিয়ার পেছনে। বাংলাদেশে সেটি হয়নি নানা জটিলতায় - আমাদের দেশটি দরিদ্র, আমাদের ভেতরে বাইরে শত্রু অসংখ্য, আমাদের নিয়মতান্ত্রিক জটিলতা প্রচুর। আমাদের সামর্থ্য হয়নি এটি করার জন্য, আবার সে কারণে সমালোচকরাও বসে থাকেননা। সেই অবস্থায় এই কাজটি বিনে পয়সায় করে দিতে এগিয়ে এসেছেন কয়েকজন মানুষ। তারা কী করেছেন? গবেষণা, ড্রাফটিং আর এডিটিং সহায়তাটুকু দিয়েছেন। সেটিও করেছেন বিচারকের অনুরোধে, বিচারকের বেঁধে দেয়া নির্দেশনা অনুসারে। এই প্রসঙ্গে নিজামুল হক বৃহস্পতিবার আদালতে তিনি বলেছেন,

আমরা আগেই বলেছি ট্রাইব্যুনাল সম্পূর্ণ নতুন একটি আইনে তার বিচার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশের জন্য কাজটিও নতুন। সে কারণে এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ হিসেবেই আমি আহমেদ জিয়া উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেছি। যা ছিলো একান্তই নিজস্ব আলোচনা।

বইয়ের প্রুফ দেখলেই নিশ্চয়ই কেউ লেখক হয়ে যান না। এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে কোন অংশই অস্বচ্ছ বা বেআইনী ভাবে করা হয়নি।

দ্বিতীয়ত, আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সাথে নিজামুল হক নাসিমের যে আলোচনা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ অনানুষ্ঠানিক আলোচনা, আগ্রহী পাঠক উপরের লিঙ্কে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। আলোচনাগুলো হয়েছে বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে চলছে, কেমন অগ্রগতি হয়েছে, দেশের মানুষ এবং সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং আগ্রহ কীরকম এইসব নিয়েই। এটি মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়, মানুষ খুব স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ অন্তরঙ্গ আলোচনায় চলমান বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করে। বাংলাদেশে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা ঘটছে সেটি নিয়ে দু'জন মানুষ ঘরোয়া আলোচনা করে নিশ্চয়ই মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেননি। আমরা দেখেছি সেখানে হজ্ব যাত্রা নিয়ে কথা আছে, দু'জনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে কথা আছে, প্রতিবেশীদের সামাজিক অনুষ্ঠান নিয়ে কথা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে ট্রাইবুনাল নিয়ে কথা। খুবই স্বাভাবিক, তারা আইনের লোক, চলমান বিচার প্রক্রিয়ার সাথে একজন জড়িত আছেন কাজেই সেটি নিয়েই বেশিরভাগ আলোচনা হবে এটিই স্বাভাবিক। আসামী পক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক কিংবা তাজুল ইসলাম নিশ্চয়ই তাদের বন্ধুদের সাথে পদ্মার পানি শুকিয়ে যাওয়া কিংবা শ্রীমঙ্গলের বৃষ্টিপাত নিয়ে ঘরোয়া আলোচনা করেন না।

তৃতীয়ত, আমারদেশে যা এসেছে সেটি দু'জনের কথোপকথনের একটি অংশ। আমরা জানি না এই যে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির জাল এটি কতদূর বিস্তৃত। একজন সম্মানিত বিচারপতির ব্যক্তিগত আলাপচারিতার গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়েছে, বেআইনীভাবে। যেহেতু ট্রাইবুনালের বিচারকের উপরেই সাক্ষীদের সুরক্ষার চূড়ান্ত বর্তায় যেহেতু এই পরিস্থিতিতে সাক্ষীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কতখানি সুরক্ষিত রয়েছে সেটিই এখন প্রশ্নের মুখোমুখি। বরং, এই প্রশ্ন করা যেতে পারে, সাক্ষীদের ব্যক্তিগত তথ্য এভাবে বেআইনীভাবে সংগ্রহ করে সেটি যে তাদের বিরুদ্ধের ব্যবহার করা হয়নি তার নিশ্চয়তা কী? একের পর এক সাক্ষীরা যে আদালতে হাজির হতে সংশয় প্রকাশ করেছে, এসবের পেছনে এই ধরণের কোন ষড়যন্ত্র থাকার সম্ভাবনা চলমান পরিস্থিতিতে বাদ দেয়া যাচ্ছে না একেবারে। এই বিষয়টি নিয়েই বিস্তারিত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

চতুর্থত, প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়েছে গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া গেছে তারা একটা রায় চায়। খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম বিচারের ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি, বাংলাদেশে ঘটছে। রায়ের ব্যাপারে দেশের মানুষ দারুণ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। এর পেছনে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, লোকবল ব্যয় হচ্ছে। সেটি নিয়ে সরকারের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের চিন্তা থাকাই স্বাভাবিক।

পঞ্চমত, আমরা জেনেছি ইকোনমিস্টের পক্ষ থেকে নিজামুল হক নাসিমকে ফোন করে এই রেকর্ডের কথা প্রথম জানানো হয়। এর পর ট্রাইবুনাল-১ যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ এনে তার কারণ জানাতে নোটিশ দেয় ইকোনমিস্টকে। এছাড়াও বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রীতিবিরুদ্ধ ও তা বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে মত দিয়ে নিজামুল হক ইকোনমিস্ট কর্তৃপক্ষকে ওই কথোপকথন প্রকাশ না করার নির্দেশ দেন। তাহলে এই কথোপকথন আমার দেশ পেল কী করে? এই সুস্পষ্টভাবে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন।

এবার ইকোনমিস্টের দিকে চোখ দেই। এটি মূলত কোন প্রতিবেদন নয়, একটি ব্লগ। যাই হোক, এখানে প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন এই কথোপকথনের কথা ৬ তারিখের আগে বিচারপতি জানালেন না। টেলিফোনে অন্য কারো সাথে কথা বলার কথা বিচারপতি বলেননি। এটি খুব হাস্যকর প্রশ্ন।প্রথমত, বিচারপতি কাউকেই কিছু বলতে বাধ্য নন, ইকোনমিস্ট অথবা ব্লগার বেনিয়ান এমন কোন অথরিটি নয় যার কাছে তাকে মুখ খুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, একজন বিচারপতি পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষকে ডেকে ডেকে বলবেন জীবনে কবে কার সাথে কী বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন - এটা বাড়াবাড়ি ধরণের অতিকল্পনা। তৃতীয়ত, যেখানে স্পষ্টত একটি বেআইনী উপায়ে তার ব্যক্তিগত নিরাপতা বিঘ্নিত করা হয়েছে সেখানে নিজের নিরাপত্তাকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়ে তিনি কেন এটি নিয়ে কথা বলতে যাবেন? এবং চতুর্থত, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, ইকোনমিস্টের পক্ষ থেকে তাকে যেভাবে ফোন করা হয়েছে সেই প্রক্রিয়াটিই বেআইনী।

দেখা যাক বাংলাদেশের আইন এই ব্যাপারে কী বলে। ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে এই ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কয়েকটি ব্যাপার বলা আছে। আইনের কম্পিউটার সিস্টেমের হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও তার দণ্ড সম্পর্কিত ৫৬(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে -

কোন ব্যক্তি যদি-

(ক) জনসাধারণের বা কোন ব্যক্তির ক্ষতি করিবার উদ্দেশ্যে বা ক্ষতি হইবে মর্মে জ্ঞাত হওয়া সত্ত্বেও এমন কোন কার্য করেন যাহার ফলে কোন কম্পিউটার রিসোর্সের কোন তথ্য বিনাশ, বাতিল বা পরিবর্তিত হয় বা উহার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাস পায় বা অন্য কোনভাবে উহাকে ক্ষত্রিগ্রস্থ করে;

(খ) এমন কোন কম্পিউটার, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করার মাধ্যমে ইহার তগতিসাধন করেন, যাহাতে তিনি মালিক বা দখলকার নহেন;

তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি হ্যাকিং অপরাধ৷

আরো দেখতে পাই সংরক্ষিত সিস্টেমে প্রবেশ সংক্রান্ত অপরাধ তার দণ্ড সম্পর্কিত ৬১(১) অনুচ্ছেদে,

নিয়ন্ত্রক, সরকারী বা ঐচ্ছিকভাবে ইলেক্ট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে একটি সংরতিগত সিস্টেম হিসাবে ঘোষণা করা সত্ত্বেও যদি কোন ব্যক্তি উক্ত সংরক্ষিত কম্পিউটার, সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ করেন, তাহা হইলে তাহার এই অননুমোদিত প্রবেশ হইবে একটি অপরাধ৷

এবং গোপনীয়তা প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ ও তার দণ্ড সংক্রান্ত ৬৩(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,

এই আইন বা আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনে ভিন্নরূপ কোন কিছু না থাকিলে, কোন ব্যক্তি যদি এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের কোন বিধানের অধীন কোন ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড, বই, রেজিস্টার, পত্রযোগাযোগ, তথ্য, দলিল বা অন্য কোন বিষয়বস্তুতে প্রবেশাধিকারপ্রাপ্ত হইয়া, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্মতি ব্যতিরেকে, কোন ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড, বই, রেজিস্টার, পত্রযোগাযোগ, তথ্য, দলিল বা অন্য কোন বিষয়বস্তু অন্য কোন ব্যক্তির নিকট প্রকাশ করেন, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ৷

বস্তুত ইকোনমিস্ট এবং আমার দেশ উভয়ই গুরুতর ধরণের একটি অপরাধ সংঘটিত করেছে।

এবার দেখা যাক, পূর্বোক্ত স্কাইপ কথোপকথনের ট্রান্সক্রিপ্ট থেকে আমরা আসলে কী দেখতে পাই।

১) সরকারের তরফ থেকে রায়ের ব্যাপারে তাগাদা দেয়া হয়েছে। দেশের জনগণও দ্রুত রায় চায়, গত কয়েকমাসের পত্র-পত্রিকা দেখলে সেটি পরিস্কার হবে। কাজেই সরকারও জনমতের সাথে মিল রেখে ব্যাপারটি দীর্ঘসূত্রিতার প্যাঁচে না ফেলে দ্রুত শেষ করতে চায়। এটি আসলে বিচার কার্য শেষ করার প্রশ্নে সরকারের আন্তরিকতাই প্রকাশ করে।

২) আহমেদ জিয়াউদ্দিন এবং নিজামুল হক নাসিম দুইজনেই চাইছেন সরকারের তাগাদা অনুযায়ী তাড়াহুড়ো না করে একটু সময় নিয়েই কাজ শেষ করতে। একাধিকবার তারা 'ফেয়ার ট্রায়াল' নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করেছেন।

৩) বাংলাদেশের মানুষ শুধু একটি রায় শুনতে চাইলেও আইনী বিচারে তা যথেষ্ট না। এই ব্যাপারে বারবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যেন বিস্তারিত রায় দেওয়া হয়, এবং বিচারকও সেই প্রসঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।

৪) বাংলাদেশে বিচারক ও বিচার প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রেই অযাচিত হস্তক্ষেপ করে, কিন্তু এই ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করা হচ্ছে আদালত কতটুকু পর্যন্ত জড়িত হতে পারেন।

৫) পরামর্শদাতার কাছ থেকে কোনো 'রায়' দেওয়া হচ্ছে না, শুধু রায় লেখার একটি সর্বজনস্বীকৃত কাঠামো সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে।

এর মধ্যে আপত্তিকর অংশটি ঠিক কোনটুকু?

সবশেষে আমরা এই সিদ্ধান্তেই আসতে পারি, খুব বড় ধরণের একটি ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হয়েছে এই বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য। এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কতখানি মরিয়া। এখানে আরো একটি সম্ভাবনা উঁকি দিয়ে যায় আমাদের মনে। ইকোনমিস্টের কাছ থেকে আমার দেশ কীভাবে এই আলোচনার ট্রান্সক্রিপ্ট পেল? তাহলে কি মূল কারিগর আমার দেশ? তারাই কি এই সব তথ্য বেআইনীভাবে সংগ্রহ করে ইকোনমিস্টের কাছে পাচার করছে?

আমরা যারা ইতিহাসের এই জঘন্য গণহত্যার বিচার চাই, তারা জোর গলায় এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমরা চাই ট্রাইবুনাল বিরোধী সব ধরণের ষড়যন্ত্র সমূলে উৎপাটন করা হোক। দেশে বিদেশে ট্রাইবুনাল বিরুদ্ধে যে অপপ্রচারণা চলছে তার উপযুক্ত জবাব দিতে সরকারকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করি আবারও। বিচারক, সাক্ষী সহ এইবিচার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত প্রত্যেকের সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

এবং, বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা ট্রাইবুনালের পাশে থাকুন। ভয় পাবেন না, বিভ্রান্তও হবেন না। আমাদের ট্রাইবুনাল সঠিক পথেই আছে। তার যা দরকার তা হলো আপনার সহযোগিতা। আপনিও এগিয়ে আসুন, ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দিন, এইসব অপপ্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব আপনিই দিতে পারেন। আপনি এক পা এগিয়ে আসুন, শত্রু পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবেই।


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সুদূর তুরস্কের একটি রাজনৈতিক দল সাদেত পার্টির উদ্যোগে ইস্তাম্বুলে গোলাম আযম সহ এসব অপরাধের দায়ে আটক ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে সমাবেশ হয়েছে।

- এই তথ্যটি সম্ভবত সঠিক নয়। এই ব্যাপারে দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত খবর ও জামায়াতের ওয়েব সাইটে দেয়া খবর মিথ্যাচারে পূর্ণ। এই সমাবেশটির খবর পড়তে পারেন এখানে বা এখানে। সেখানে দেখতে পাবেন জামায়াতের নেতাদের ব্যাপারে কোন কথা নেই। সমাবেশটি ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক তৎপরতার বিরুদ্ধে হয়েছিল।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আলী হায়দার এর ছবি

ইকনমিস্তের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বিরোধী প্রোপাগান্ডার প্রতি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

স্যাম এর ছবি

আমার দেশ এর মিথ্যাচার - গতকাল ইকোনমিস্টের অনলাইন সংস্করণে ‘বাংলাদেশ : ডিসক্রিপ্যানসি ইন ঢাকা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব মন্তব্য করা হয়েছে। -
এটা ইকোনমিস্টের কোন প্রতিবেদন নয়, একটি ব্লগ ।

হিমু এর ছবি

ইকোনমিস্টের এই ব্লগটিতে (যেটি প্রথমআলোব্লগ বা বিডিনিউজব্লগের সমতুল্য) জামাতশিবিরের লোকজন একাধিক নিক তৈরি করে সমানে বাহ্বা দিচ্ছে ইকোনমিস্টকে। যেহেতু ইকোনমিস্টের অজুহাত হচ্ছে "পাবলিক ইন্টারেস্ট", তাই পাবলিক ইন্টারেস্ট ম্যানুফ্যাকচার করার জন্য জামাতের সক্রিয় অনলাইন ছাগুরা সমানে কমেন্ট দিচ্ছে ওখানে। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে ঐ পোস্টে গিয়ে ইকোনমিস্টের এই হ্যাকিংকে নিন্দা জানানো। সবাই কিছুক্ষণ পর পর গিয়ে মন্তব্য করে আসি, আসুন।

অরফিয়াস এর ছবি

কিছু নির্দিষ্ট নিক থেকে বারবার মন্তব্য করে কাজটা করা হচ্ছে। বোঝাই যায় কাদের কাজ!! আমি প্রতিবাদ করে আসলাম, সবার করা উচিত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

সব সক পাপেট। পেইড জামাতি ব্লগারদের কাম। এরা এদের সন্ত্রাসী গ্রুপ বাঁশের কেল্লাতে বসে সামু আর সোনাব্লগে লাদি ছড়ানোর জন্য নতুন এক হাজার অ্যাকাউন্ট খুলেছে, সেটার স্ক্রিনশট আবার লিক হয়ে গেছে।

আধ ঘন্টা পর পর একটা করে ঝাড়ি দিয়াসেন, তাতেই হবে। ওরা ভাবছে ওরা ফাঁকা মাঠে গোল দিবে আর কি।

অরফিয়াস এর ছবি

হাস্যকর ইংরেজিতে একই মন্তব্য বারবার করে আমাদের করা মন্তব্যগুলো সড়িয়ে দিচ্ছে প্রথম পেইজ থেকে। তবে এদের ভাষা আর জ্ঞানের বহর দেখে, মন্তব্য করার আগে আধাঘন্টা হাসতে হচ্ছে। গড়াগড়ি দিয়া হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তানিম এহসান এর ছবি

সত্য।

স্যাম এর ছবি

আমিও--

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ছাগু মন্তব্য দিয়ে ব্লগ ভরা। আমার কমেন্ট দিয়ে আসলাম, দেখি কতক্ষন থাকে

সাইদ এর ছবি

এইমাত্র একটা মন্তব্য দিয়া আসছি।

হিমু এর ছবি

আধ ঘন্টা পর পর একটা করে দিতে পারবেন না সাইদ? বন্ধুদেরও বলেন ঝাড়ি দিয়ে আসতে।

নীলচাষের যুগ শেষ।

সাইদ এর ছবি

১০ মিনিট পর পর যেয়ে দিয়ে আসব। বন্ধু বান্ধবের মধ্যে বেশিরভাগই উদাসীন আর না হয় ছাগু।

মারুফ এর ছবি

আপনার বন্ধু বান্ধবের মধ্যে বেশিরভাগই উদাসীন অথবা ছাগু? কী করলেন তাইলে এদ্দিন ব্লগিং কইরা? ওদের মতাদর্শ চেঞ্জ করতে পারলেন না? না পারলে অন্ততঃ তাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করতে পারতেন। সেটাও করলেন না। ছাগু বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করেন? আপনে তো তাইলে ছাগ-বান্ধব হয়্যা গেলেন রে ভাই ! আজকেই পরিত্যাগ করেন ওদের।

তারেক অণু এর ছবি

আমাদের ট্রাইবুনাল সঠিক পথেই আছে।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল...

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

রণদীপম বসু এর ছবি

ট্রাইবুনালের আন্তরিকতা ও নীতিবোধ নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশই নেই।
তবে বাঙালির ইতিহাসের আরেকটি মিরজাফরের নাম যুক্ত হলো- 'দৈনিক আমার দেশ' পত্রিকা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তিথীডোর এর ছবি

আমরা চাই ট্রাইবুনাল বিরোধী সব ধরণের ষড়যন্ত্র সমূলে উৎপাটন করা হোক। দেশে বিদেশে ট্রাইবুনাল বিরুদ্ধে যে অপপ্রচারণা চলছে তার উপযুক্ত জবাব দিতে সরকারকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করি আবারও। বিচারক, সাক্ষী সহ এইবিচার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত প্রত্যেকের সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাইদ এর ছবি

এসব আর্টিকেলের কমেন্টগুলার বেশির ভাগ দেখলে মনে হয় বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ছাগু। আসলে কয়েকটা ছাগু অনেকগুলা নিক নিয়া কমেন্ট করে

সত্যপীর এর ছবি

হ্যাঁ।

..................................................................
#Banshibir.

তানিম এহসান এর ছবি

এবং, বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা ট্রাইবুনালের পাশে থাকুন। ভয় পাবেন না, বিভ্রান্তও হবেন না। আমাদের ট্রাইবুনাল সঠিক পথেই আছে। তার যা দরকার তা হলো আপনার সহযোগিতা। আপনিও এগিয়ে আসুন, ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দিন, এইসব অপপ্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব আপনিই দিতে পারেন। আপনি এক পা এগিয়ে আসুন, শত্রু পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবেই।

সাথে আছি।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

কিছুক্ষন আগে চ্যানেল-আই তে আচিপ নরজুলের মূল্যবান বক্তব্য শুনলাম। ছাগলটা বললো- সমস্ত বিচার প্রকৃয়া এখন মারাত্মক প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। সবকিছু নাকি আবার নতুন করে শুরু করা দরকার। তবে অন্যের কথপোকথন হ্যাক করার ব্যাপারে কোন সুশীলীয় বক্তব্য নাই।

আব্দুল্লাহ এ.এম.

সুমন  এর ছবি

ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।

আমার মনে হয়, এসব লেখা বাংলায় প্রকাশ করার পাশাপাশি ইংরেজিতেও প্রকাশ করা প্রয়োজন যেন লিখিত প্রতিবাদের ভাষা আন্তর্জাতিক মহলের আগ্রহী মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

১) এবার সরকারের উচিত আমারদেশের মাহমুদুর রহমানকে ডিম থেরাপি দিয়ে তথ্য চুরির ইতিবৃত্ত বের করে নেয়া।

২) এরকম হ্যাকিং নিশ্চয়ই সরকারের আরো দপ্তরে ঘটে যাচ্ছে কিংবা ঘটে গেছে। তথ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার বা সরকারী লোকজন দুর্বল বলে আবারো প্রমাণিত হলো। স্কাইপের তথ্য বাইরে থেকে চুরি করা সম্ভব বলে মনে হয় না। পাসওয়ার্ড হ্যাক করলেও অন্য লোকেশান থেকে লগ ইন করে এই তথ্যগুলো দেখতে পাবার কথা না। কারন স্কাইপে তথ্য সংরক্ষণ করে সেই পিসিতে যেখান থেকে কথোপকথন হয়েছে। এক্ষেত্রে হয় নিজামুল হক অথবা জিয়াউদ্দিনের পিসি থেকে তথ্যগুলো চুরি হয়েছে। এটা এমন কেউ করেছে যার এই দুটো পিসিতে এক্সেস আছে। এক্ষেত্রে এমন কেউ কাজটা করেছে যারা নিজামুল হকের আশেপাশে আছে। এটাতে আরো প্রমানিত হয় সরকারের অনেক জায়গায় জামাতিরা ফুটো তৈরী করে ফেলেছে।

৩) এটা শুধু সাইবার অপরাধ নয়, এটা একটা জাতীয় পত্রিকার দেশের শত্রুদের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান। এটার জন্য কঠোর শাস্তির সুপারিশ করা উচিত।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

সত্য সমাগত মিথ্যে দুরীভুত হোক
মিথ্যে দুরীভূত হওয়াই যোগ্য।

এদেশে মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই হবে ইনসাল্লাহ।
যতই বাঁধা-বিপত্তি আসুকনা কেন।
তুহিন সরকার

অতিথি লেখক এর ছবি

সাথে আছি। -রু

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমি বোকাসোকা মানুষ। অতশত বুঝিনা, একটাই কথা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতেই হবে।

মিশু এর ছবি

মন খুলে না পারলেও কিছুটা ঝাল মিটিয়ে আসলাম কমেন্ট করে। আরো করব।

রানা মেহের এর ছবি

শুধু ঐ লেখাটাতেই মন্তব্য করে নয়। আমাদের এখন এগিয়ে আসতে হবে সব দিক থেকেই।
ফেইসবুক টুইটার ব্যক্তিগত যোগাযোগ সব খানে কথা বলতে হবে এই বিচার নিয়ে এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।
এটা আমাদের আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

স্যাম এর ছবি

ট্রাইব্যুনালের গতিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য জামায়াত-শিবির মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই সময়ে এসে জামায়াত-শিবির এত বেপরোয়া হয়ে ওঠার কারণ কী? তারা এত শক্তি হঠাৎ পেল কোথায়? নেতাদের গ্রেপ্তারের পর তো তাদের তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। সরকার ঠিকভাবে জামায়াত-শিবিরকে মোকাবেলা করছে না, এটা খুব আলোচিত হচ্ছে।

উত্তরে তিনি বলেন, তারা শক্তিশালী হয়নি। তারা তাদের অসভ্য চেহারাটা দেখাচ্ছে। সভ্য রাজনৈতিক আচরণ করাটা তাদের স্বভাবে নেই। এতদিন তারা ভেবেছিল শেষ পর্যন্ত হয়ত বিচার হবে না। এখন রায়ের প্রাক্কালে এসে তারা স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছে। যারা অসভ্য, তারা অসভ্য আচরণ করবেই

আর এটাকে মোকাবেলা করার কিছু নেই। আইন, বিচারব্যবস্থা দিয়ে এই অসভ্যতাকে মোকাবেলা করা যায় না। একজন লোক বন্দুক নিয়ে রাস্তায় গুলি ছোড়া শুরু করল। ২০-২৫ জন পথচারী তাতে নিহত হলো। এরকম খবর তো আমরা দেখি। এটাকে মোকাবেলা করবে কিভাবে? সমাজ ধরেই নেয় যে মানুষ সভ্য আচরণ করবে

যুদ্ধাপরাধের বিচার, সাম্প্রতিক ইস্যু : আইনজীবি ড. শাহদীন মালিকের সঙ্গে কথোপকথন

তানিম এহসান এর ছবি

সমাজ ধরেই নেয় যে মানুষ সভ্য আচরণ করবে।

অসভ্য, অন্ধ আর আপাদমস্তক ভণ্ড মানুষে ছেয়ে যাওয়া এই সমাজ মানিনা। এই সমাজের প্রায়ান্ধ সদস্য হিসেব বড় হইনি, আশৈশব স্বপ্ন দেখেছি সবকিছু বদলাবে, বরং যা-কিছু বদলে দেয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা ছিলো তাতে ব্যর্থ হতে হতে নিজেকেই আর চিনতে পারিনা এখন, বয়সের চাইতে বয়স বেড়ে গেছে! এই কুলাঙ্গার সমাজ মুক্তিযুদ্ধে কত লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিলো তাই নিয়ে এখনও তর্ক করে, এখনও জাতি’র কন্যা-জায়া-জননীর স্বীকৃতি দেয়ার মত মানসিকতা ধারণ করেনা -- এই সমাজ নিজে কোনদিন সভ্য ছিলোনা। এই সমাজ প্যালেস্টাইনের মানবিকতার জন্য কেঁদে বুক ভাসায়, নিজস্ব স্বাধীন পতাকায় বসে থাকা শেয়াল-শকুন-হায়েনা’কে মেনে নেয়। এই ইতর, কুলাঙ্গার আর চরিত্রহীন সমাজ’কে স্বীকৃতি দিতে ইচ্ছা করেনা আমার।

একজন বিশ্বজিৎ এর মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারিনা কিন্তু যখন দেখি এই একটা হত্যা’র দায় দিয়ে একজন যোবায়ের হোসেন রিমু সহ বেজন্মা শিবিরের হাতে আরও বেশি নির্মমতায় খুন হওয়া দেশের জাগ্রত তারুণ্যকে ভুলে যায় এই সমাজ তখন আমার কেন যেন কোনভাবেই বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করেনা আমি এই সমাজের একজন। আমরা খুব বেশি ঠকে গেছি সমাজের চরিত্রের কাছে।

বাংলাদেশের মানুষ আসলেই শক্তের ভক্ত, নরমের যম। এই শালাদের পাছায় বাঁশ না আসা পর্যন্ত এরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলতেই থাকবে, ‘বাঁশ তুমি রাস্তায় কেন, নিকটে আইস’। বাঁশবন উজাড় হয়ে গেছে কিন্তু বাঙ্গালী’র সামাজিক চৈতন্য ধর্মভীরুতার কাছে বন্দি। আজকাল আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করেনা, চার-পাঁচটাকে সঙ্গে নিয়ে মরে যেতে ইচ্ছে করে। হাওয়াই-মিঠাই খেয়ে বেঁচে থাকার চাইতে মরে যাওয়া ভালো।

ধুসর জলছবি এর ছবি

মন খারাপ হুম

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ধুসর জলছবি এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

এইমাত্র ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির খবরে দেখলাম বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করেছেন। আমরা এভাবে আর কত পিছিয়ে যাবো?? মন খারাপ

ফারাসাত

আলী হায়দার এর ছবি

বিচারপতি নিজামুল হক একটি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। উনি ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করতে চাননি। এজন্য ওনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। আর এতে বিচার বিলম্বিত হওয়ারও কোন সম্ভাবনা নেই। কারন সরকার শীঘ্রই একজন নতুন বিচারপতি নিয়োগ দিবেন এবং নতুন বিচারপতি মামলাগুলো যে অবস্থায় আছে সেখান থেকেই শুরু করবেন।

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

আমরা যেন কোনোভাবেই হাল ছেড়ে না দেই। এইসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ প্রয়োজন।

নতুন পাঠক এর ছবি

আমার মনটা আজকে খুব খারাপ। এই হায়েনাদের বিচার কি এই জীবনে দেখে যেতে পারবনা? কেউ কি মন ভাল হওয়া একটা কিছু বলতে পারেন, প্লিজ?

নতুন পাঠক।

স্যাম এর ছবি

অনেক আগের প্রবাদ নতুন পাঠক --
[img][/img]
মন খারাপ এর কিছু নাই - মুক্তিযোদ্ধাদের কথা মনে রাখেন - শক্তি এম্নিই পাবেন...

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

উত্তম জাঝা!

নতুন পাঠক এর ছবি

চোখে পানি চলে এসেছে, স্যাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

নতুন পাঠক।

ধুসর জলছবি এর ছবি

হাততালি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হাততালি উত্তম জাঝা!

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

ঐ ইকোনমিস্টের ঐ লেখায় কষে কয়েকটা ঝাড়ি দিয়ে আসলাম -- জানিনা কি লাভ হবে।

কিন্তু দেখে যা মনে হচ্ছে ছাগুদের ষড়যন্ত্রের হাত আরো বিস্তৃত, এরা আট-ঘাট বেঁধেই নেমেছে। এই লিঙ্কটা দেখেন।

"ট্রাইবুনাল লিক্স" নামে উইকি লিক্সের মত প্ল্যাটফর্ম নিয়ে তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে অলরেডি। এই পর্যায়ে এদেরকে "ছাগল" ভাবলে পুরাই বোকামি -- এদের "হাস্যকর" ইংরাজী নিয়ে হাসাহাসি করার দিন মনে হয় আর নাই, এরা ট্রাইবুনাল বানচাল করার জন্য সমস্ত শক্তি দিয়েই মাঠে নেমেছে।

ছাগুদের নিজেদের মধ্যেকার কেমিস্ট্রি অনেক মজবুত -- এই সত্যটা আমরা যতদিন না বুঝব, ততদিন এরকম ষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে। ঐ সাইটে তারা কিভাবে নিজেদেরকে পরিচয় দেয় সেটাও দেখেন --

Who we are

We are based around the world and our sole purpose is to ensure that a travesty does not take place in the name of justice. We will not offer any comment on the rights and wrongs of 1971, that issue is far too polarised. What is clear however is that this Tribunal process offers no comfort for the victims, and no assurances that the innocent will not be persecuted. We will remain anonymous, and will gladly take tip-offs information that reveal the truth.

দুঃখের বিষয় হল, দলের মূর্খ লোকজন মূল ইস্যু থেকে সরে গিয়ে রাস্তা ঘাটের গোবেচারা টাইপের পাব্লিকরে কুপাইতে ব্যস্ত -- যেখানে শক্তি প্রয়োগ করা দরকার সেদিকে কারোরই কোন মনোযোগ নাই।

আর ইকোনমিস্ট ম্যগাজিনের এই নতুন লেখার মধ্যেও লাদির গন্ধ পেলাম।

শুধু তাই না, ছাগুরা টুইটারেও বেশ সক্রিয় -- এখানে দেখেন।

-- রামগরুড়

রাব্বানী এর ছবি

আমি একাই তো সব জামাতিকে সামলাচ্ছি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা ট্রাইবুনালের পাশে থাকুন। ভয় পাবেন না, বিভ্রান্তও হবেন না। আমাদের ট্রাইবুনাল সঠিক পথেই আছে। তার যা দরকার তা হলো আপনার সহযোগিতা। আপনিও এগিয়ে আসুন, ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দিন, এইসব অপপ্রচারণা এবং ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব আপনিই দিতে পারেন। আপনি এক পা এগিয়ে আসুন, শত্রু পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবেই।

সাথে আছি, থাকব। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতেই হবে।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

ছাগুরা দেখি আজকাল রূপকধর্মী প্রোপাগান্ডা মুভিও বানাইতে শিখে গেছে, এদের লার্নিং কার্ভ দেখলে আজকাল তাজ্জব বনে যাই।
মুভির প্রোটাগনিষ্ট হইল দেইল্ল্যা রাজাকার, আর এন্টাগোনিষ্ট হইল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। এখানে দেখুন --

http://theblack.biz/

যদিও খুবই কাঁচা হাতের তৈরি, তবে এরা যে মেসেজ দিতে চায়, সেইটা পুরাপুরি ভাবেই দেওয়ার চেষ্টা করছে। সব ষড়যন্ত্রের বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

-- রামগরুড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।