গানবন্দী জীবনঃ খরবায়ু বয় বেগে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি
লিখেছেন ইশতিয়াক রউফ (তারিখ: বুধ, ১২/১১/২০০৮ - ১১:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২. খরবায়ু বয় বেগে
বাংলায় কিশোর সাহিত্য বেশ অবহেলিত। সবাই শুধু বড়দের জন্য লিখতে চায়, বড়দের কথা লিখতে চায়। বড়দের লেখার মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। বয়সের সাথে সাথে অনুভূতিগুলো গাঢ় হয়, মানুষ অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়। সেই চিন্তাগুলো সাহিত্যে স্থান পেলে সাহিত্যই মহিমান্বিত হয়। পরিণত সাহিত্য তাই খুবই জরুরী। তবে তাই বলে যে কিশোর সাহিত্যকে অবহেলা করতে হবে, এমন তো কথা নেই।

সাহিত্যের কাজ মূলত দু’টি – অভ্যস্ত জীবনের বাস্তবতাগুলো তুলে ধরা, নয়তো কল্পণার কোন জীবনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। অধিকাংশ সাহিত্যিকই কল্পণার রাজ্য নিয়ে লেখেন। দুই বাংলা মিলিয়ে যেই উপন্যাসগুলো সবচেয়ে বেশি পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে, তার সবগুলোই লেখকের নিজের জীবন নিয়ে, অথবা নিজের জীবন থেকে লেখা। বড়দের লেখায় এটি আর দেখা যায় না। সবাই কল্পিত ঘটনা নিয়ে লেখেন। একলা ঘরে একটি নারী কার কথা ভাবে, নিঃসঙ্গ পুরুষ কীভাবে পরনারীতে স্বস্তি খোঁজে, ইত্যাদি বালছাল লেখায় ভরা চারদিক। এই সব প্যানপ্যানে ঘটনার চেয়ে প্রথম কৈশোরের কুকর্মগুলো অনেক উপাদেয় ছিল। স্কুল পালানো, পড়শি মেয়ের দিকে চোখ মারা, রগরগে নীল ছবি দেখা, নিষিদ্ধ বিনোদন, ইত্যাদি নিয়ে অকপটে লিখলে লেখকের সুশীলতা অক্ষুণ্ন থাকে না। কিশোর সাহিত্য অবহেলিত হওয়ার পেছনে হয়তো এটা অন্যতম কারণ।

খোলামেলা লেখার দায়ে ‘সেবা’ প্রকাশনীর বই পড়তে হলে মায়ের কাছ থেকে অনেক ভাবে লুকাতে হত। প্রকাশ্যে পড়ার মত বলতে ছিল সত্যজিৎ রায় আর শাহরিয়ার কবিরের লেখা বই। স্কাউটিং, প্রবাস ভ্রমণ, উঠতি বয়সের কুসুম কুসুম প্রেম, সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন, ইত্যাদি নিয়ে জানতে পারতাম শাহরিয়ার কবিরের বই খুললে। এভাবে কেটেছে আমার প্রথম কৈশোর। সে-সময়ের খুব প্রিয় বইগুলোর একটি ছিল ‘নিকোলাস রোজারিওর ছেলেরা’।

নিজে মিশনারি স্কুলে পড়েছি, তাই বাড়তি আকর্ষণ ছিল বইটির প্রতি। মন যেন হারিয়ে গিয়েছিল সমবয়সী একদল কিশোরের মাঝে। কেউ বাড়ি থেকে অনুমতি পাচ্ছে না, কেউ চাঁদার টাকা জোগাড় করতে পারছে না, কেউ অন্যের ছায়া থেকে বের হয়ে আসতে ছটফট করছে। বুক ভারি হয়ে যেত গল্পের চরিত্রগুলোর কচি সংগ্রামে। হায় সে কী উৎকণ্ঠা!

সম্ভবত সেখানেই পড়েছিলাম, গল্পের কোন এক বখাটে বড় ভাই বছরের পর বছর ধরে স্কাউটিং ক্যাম্পে ‘খরবায়ু বয় বেগে’ গেয়ে যেত। তখন পর্যন্ত শুধু গানটির দু’লাইন জানতাম। বই পড়েই খুঁজে-পেতে পুরো গান শুনেছিলাম। শাহরিয়ার কবিরের বই পড়ার অনুভূতিগুলো যেন সেই থেকেই আটকে গেছে ‘খরবায়ু বয় বেগে’র মধ্যে।

প্রথমে মনে পড়ে ‘নিকোলাস রোজারিওর ছেলেরা’র কথা। এরপর একে একে মনে পড়ে যায় নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়, পাথারিয়ার সোনার খনি, কার্পেথিয়ানের কালো গোলাপ, বার্চবনে ঝড়, সীমান্তে সংঘাত, অনীকের জন্য ভালবাসা, লুসাই পাহাড়ের শয়তান, ব্যাভারিয়ার রহস্যময় দুর্গ, হানাবাড়ির রহস্য।

সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম, দর্শন, ইত্যাদি নিয়ে অনেক তর্ক চলে বড়দের মহলে। খুব বড় একটা ব্যাপার ভুলে যায় সবাই। মানুষের মনন স্থায়ী রূপ নিয়ে ফেলে তার কৈশোরে। শত চেষ্টায়ও এরপর আর তার চিন্তা-চেতনার পরিবর্তণ সম্ভব না। বিশ্বাসের মধ্যাকর্ষণের কাছে জ্ঞানের বহুমুখী বিস্তার মার খেয়ে যায়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তণ, রাজসভায় মিছিল-সমাবেশ, বা মিডিয়ায় জ্ঞানগর্ভ আলোচনা কৈশোরোত্তীর্ণ মানুষের মনের উপর খুব কমই প্রভাব রাখতে পারে।

উঠতি প্রজন্মের কাছে কৈশোরের মৌলিক কিছু অনুভূতি তুলে ধরেছিলেন সত্যজিৎ রায়, শাহরিয়ার কবির, আর মুহম্মদ জাফর ইকবালের মত লেখকেরা। অধীর আগ্রহে তাঁদের নতুন বইয়ের অপেক্ষা, আর বই এলেই গোগ্রাসে গিলে ফেলার সেই সময়টা মনে আটকে আছে ‘খরবায়ু বয় বেগে’র মাঝে। কৈশোরের দ্বন্দ্ব আর ভয়গুলোর শৃঙ্খল বারবার ঝনঝন করে ওঠে এই একটি গানে। নিজের মনে প্রশ্ন জাগে, কতটুকু আসতে পেরেছি সেই দিনগুলো থেকে। স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে গেল। কান পাতলেই ঝন, ঝন, ঝন।

(চলবে)

১. সে যে বসে আছে একা একা


মন্তব্য

পলাশ দত্ত এর ছবি

নিজের মনে প্রশ্ন জাগে, কতটুকু আসতে পেরেছি সেই দিনগুলো থেকে

আমিও খুঁজতেছি এর উত্তর।। পাই না।। পাই না।।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

পান্থ রহমান রেজা [অতিথি] এর ছবি

চলুক চলুক

দ্রোহী এর ছবি

নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়........আহারে ছোটবেলায় কত ভালো ছিলাম।


কী ব্লগার? ডরাইলা?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হ... বাপে কি এমনি এমনি ঠ্যাঙাইতো নাকি তাহলে? খাইছে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

স্মৃতি ভারাক্রান্ত করে দিলেন রে ভাই...

খড় বায়ৃ বয় বেগে চারিদিক ছায় মেঘে, ওগো নেয়ে নাউখানি বাইয়ো...
আহা... গানটার কথা অনেকদিন পরে মনে করালেন...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বাচ্চাদের গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের একটা অ্যালবাম আছে না? নাম খেয়াল নেই। আমি সেই অ্যালবাম থেকে শুনি শুধু। একে পুরনো দিনের কথা মনে করানো গান, তার উপর পিচ্চি গলায় গাওয়া। মন হারিয়ে যায় শুধু।

কীর্তিনাশা এর ছবি

অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তি পর্বের।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নূলিয়াছড়ির সোনার পাহাড় - কি যে প্রচন্ড ভালো লাগার বই ছিলো ওটা । আমি তো সেই বয়সেই নেলী খালার প্রেমে টেমে পড়ে হাত-পা ভেংগে ফেলেছিলাম মন খারাপ

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

শুধু কি আপনি একা? আমি তো প্রতিটা গল্পেই কারো না কারো প্রেমে পড়ে যেতাম।
সময়ের সাথে সাথে বোধগুলো অনেক ভোঁতা হয়ে গিয়েছিল। জোট সরকার যখন শাহরিয়ার কবির'কে আটক করেছিল, সেদিন মনে হয়েছিল যেন অত্যাচারটা আমার নিজের উপর দিয়ে যাচ্ছে। কীভাবে যে আস্ত একটা প্রজন্মকে ধরে রেখেছিলেন এই একজন মানুষ!

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম... অনেক দিন পর নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়ের দেখা পেলাম । ক্লাস ফোরে এই বইটা দিয়ে সম্ভবত আমার কিশোর উপন্যাস এর সাথে পরিচয় । অনেক দিন আগে এই বইটা পড়ে সম্ভবত প্রথম আমি প্রেমে পড়ি তবে নেলী খালার না ঐ যে একটা চশমা পরা শান্ত মেয়ে থাকে না তার , নাম টা এতদিন পরে আর মনে করতে পারছি না । তবে এখন আর ছোটদের তেমন একটা শাহারিয়ার কবীর এর বই পড়তে দেখি না যতটা দেখি জাফর ইকবালের বই পড়তে ।
নিবিড়

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হু, নেলী খালা। তবে এগুলোর খারাপ দিকও আছে।

শাহরিয়ার কবিরের বই পড়ে ভাবতাম, বাইরে এলেই বুঝি কোন একটা ভাল বান্ধবী+ ইয়ে জুটে যাবে। এখন বুঝি, ক্যাম্নে কী! সব বিড়ালের কপালে শিকা ছেঁড়ে না। খাইছে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

চশমা পড়া শান্ত মেয়েটার নাম ছিল ললি



অজ্ঞাতবাস

রানা মেহের এর ছবি

সিরিজটা ভালো লাগছে

নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড় সীমান্তে সংঘাত
খর বায়ু বয় বেগে
আমরা অনেক ভাগ্যবান
আমাদের কৈশোর এক একটা রুপকথা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

রণদীপম বসু এর ছবি

আপনার এ সিরিজটা চলতে থাকুক।
শিশু-কিশোর সাহিত্য নিয়ে মুগ্ধ বাদানুবাদের একটা প্রস্তুতি-স্রোত তৈরি হোক সচলে। প্রতিটা মানুষের বুকেই একটা কিশোর থাকে। এই সাহিত্যধারাটা নিয়ে কোন বাংলা ব্লগই এখনো প্রস্তুত নয়ই মনে হচ্ছে। এখন যে ছড়াসাহিত্যের প্রবল ধারাটা বইছে, এটা কিন্তু মূলতঃ শিশু-কিশোর সাহিত্যেরই অন্তর্ভুক্ত এখনো। তাই এ নিয়েও সবাই এগিয়ে আসবেন এটা আশা করতেই পারি আমরা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

শিশু-কিশোর সাহিত্য নিয়ে মুগ্ধ বাদানুবাদের একটা প্রস্তুতি-স্রোত তৈরি হোক সচলে।

হোক শুরু। আছি আমিও। জীবনের মান নামলেও মনের মান নামতে নেই। সুন্দর একটা কৈশোর ছাড়া এই ব্যাপারটা নিশ্চিত করার উপায় নেই। খুব খারাপ লাগে ইদানিংকার হতচ্ছাড়া অবস্থা দেখলে।

ছড়ার এই গতি আমার কাছেও খুব ভাল লাগছে। তবে হয়তো একে আরেকটু গোছানো রূপ দেওয়া যায়। শিশুদের জন্য বই আকারে, কাহিণীময় করে পরিবেশন করা যায়।

বিগ সি এবং হিমু ভাই ছোটদের লেখায় হাত দিয়েছেন বেশ কিছুদিন আগেই। অনেক শ্রদ্ধা আর আগ্রহ নিয়ে বসে আছে তাঁদের লেখা বই প্রকাশের জন্য।

তারেক এর ছবি

আমি ভেবেছিলাম শাহরিয়ার কবির বেশি পড়ি নাই। কিন্তু আপনার দেয়া নামগুলোর মধ্যে চারটা বোধহয় পড়া দেঁতো হাসি

সুনীলের কাকাবাবু বাদ গেলো কেন? আর অর্জুন?
সেবার অনুবাদ, তিন গোয়েন্দা এসব পড়ছি যখন সেসময়েও আমার দূর্দান্ত লেগেছিলো বিভূতিভূষনের কিশোর উপন্যাস সমগ্র। কী যে অসাধারণ সব উপন্যাস। চাঁদের পাহাড় -এর তো তুলনা হয়না।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

কাকাবাবু শেষ দিকে একেবারে বসে গিয়েছিল। অখাদ্যের পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল। আর অর্জুন। আহা, তৃতীয় পাণ্ডব হতে পারলে দুনিয়াটা দিয়ে দিতাম। কৈশোরের সাথে ওগুলোও মিশে আছে। তবে এই গানটা শুনলে আগে মনে পড়ে শাহরিয়ার কবির, সত্যজিৎ, আর জাফর ইকবালের কথাই।

আমার খালারা 'আনন্দমেলা' পড়তো খুব। সেই ৮০-র দশকের আনন্দমেলাগুলো বাঁধাই করা ছিল বাসায়। সেখান থেকে "রোভার্সের রয়" পড়তাম। সেই কমিক স্ট্রিপটা যে কী অসাধারণ প্রিয় ছিল! সেখানেই "টিনটিন" পড়েছিলাম প্রথম। পরের দিকে নিজেও আনন্দমেলা পড়তাম খুব...

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পুরাতন দিনে ফিরে গেলাম... প্রিয় লেখক, প্রিয় বই... কতো স্মৃতি! মন খারাপ

একটা কথা: পোস্টগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট গানগুলোও দিয়ে দিলে কেমন হয়? হয়তো অনেকেরই পরিচিত এই গানগুলো, হয়তো অনেকের কাছেই আছে, হয়তো অনেকেই খুঁজছে...

সিরিজটা ভালো হচ্ছে। চলুক...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

গান জুড়ে দেওয়ার ইচ্ছা/চিন্তা আছে। কপিরাইটের সমস্যা। "সে যে বসে আছে" সবারই শোনা গান, তাই দেইনি। "খরবায়ু বয় বেগে"টা স্রেফ অলসতার জন্য দেওয়া হয়নি। পরের পর্ব হয়তো আজকালের মধ্যেই আসতে পারে। সেটার সাথে গান জুড়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

অভিজিৎ এর ছবি

হ্যা, সেবা প্রকাশনির বইগুলো - বিশেষ করে তিনগোয়েন্দা সিরিজ গোগ্রাসে গিলতাম একসময়। তারপর জাফর ইকবালের দীপু নম্বর টু, হাতকাটা রবিন... শাহারিয়ার কবিরের কিশোর উপন্যাসগুলোও পড়তাম খুব। সাথে সত্যজিত রায়ের ফেলুদা, শঙ্কু তো ছিলোই। শরদিন্দুর ব্যোমকেশ বক্সী আর নিহারঞ্জনের কিরীটি রায়ের কিছু পেলেও পড়তাম...। সে অনুযায়ী, সুনিলের কাকাবাবু সিরিজে তেমন ঢুকা হয়নি, যদিও বেশ কয়েকটাই পড়া আছে। আর একটা জিনিসের জন্য মুখিয়ে থাকতাম প্রতিবছর ... আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী!

কই যে গেলো সেইদিনগুলা



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমার অবস্থাও একদম একই। নানা আমার জন্য আজও পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা কিনে রেখে দেয়। প্রথমে পড়তাম কার্টুনগুলো, তারপর খেলা নিয়ে লেখাগুলো, তারপর শব্দজটগুলো। অসামান্য রকম রোমাঞ্চকর দিন ছিল! এমনও সময় গেছে, একই বাসায় ৩ কপি পূজাবার্ষিকী রাখা হয়েছে, কেউ কারো জন্য অপেক্ষা করতে নারাজ দেখে।

হোমস/ফেলুদার চেয়ে আমার কাছে ব্যোমকেশ মজা লাগতো বেশি। "সত্যান্বেষী" কথাটার মধ্যেই অন্য রকম একটা ঝংকার ছিল। তার উপর আবার সংসারী গোয়েন্দা! কী অসাধারণ একটা সময় যে পার করে এসেছি, মনে করলে কষ্ট লাগে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সর্বশেষ হাল আমারও জানা নেই। দেশ ছাড়ার আগ পর্যন্ত খুশি হওয়ার মত কিছু দেখিনি।

কিশোরদের আমরা হয়তো একটু বেশিই নাদান মনে করি। সেই জন্যই শিশুদের জন্য লেখা তুলুতুলু লেখার সাথে মিলিয়ে ফেলি। যে-কজন লেখকের কথা উঠে এসেছে, তাঁরা সবাই কিন্তু প্রচলিত সব কঠিন ধারণা কিশোরদের কাছে তুলে ধরেছেন, আমাদের মনকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। আমরা কেউই সেটা করি না।

সচলে একটা কিশোর সপ্তাহ পালন করা যায়? স্রেফ উঠতি বয়সের কিশোর-কিশোরীদের জন্য লেখা/ছবি/ছড়া/গল্প নিয়ে একটা আয়োজন।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

নেলি খালা আমার প্রথম প্রেমগুলির একটা...



অজ্ঞাতবাস

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমি তো সংকোচে থাকতাম... "খালা" শ্রেণির কাউকে ভাল লাগে, তাই। এখন দেখি আমি একা না!!

বিবাগিনী এর ছবি

‌‌আমার লম্বা চুলেও দুইটা খোপা হত টুনির মত। দেঁতো হাসি আবীরকে ভাল লাগত খুবই। খাইছে
দিনগুলো হারায় কেন???
ইশতি মনে করিয়ে দিলা কেন এত কিছু??
(ভাল থেকো)

::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ইশতি কী করবে বলেন, তারও যে যখন-তখন মনে পড়ে যায় অনেক কিছু! বহুদিন পর আপনার দেখা। কোথায় ডুব দিলেন? বিষণ্ণ কাব্যগুলো কোথায়? নাকি বিষণ্ণতা কেটে গেছে আর ভুলে গেছেন আমাদের? হাসি

বিবাগিনী এর ছবি

বিষন্নতা একটি অকাটনীয় বস্তু।

ভোলার প্রশ্নই ওঠেনা। কিন্তু আসতে পারিনা একটুও।সারাদিন পরে বাড়িতে এসে রান্না আর বাকি কাজ সেরে ঘুম ছাড়া কিছুই করার শক্তি পাইনা।তবু দেখি চেষ্টা করব। জীবনটা একটা বিশ্রী ঠেলাগাড়ি।আর ভাল লাগে না।

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

সিরিজটার আইডিয়া দারুণ!
শাহরিয়ার কবিরের বই কিশোর বয়সে গিলেছি গোগ্রাসে। "কতো সুর কতো গান মনে পড়ে গেল..."

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

পথে হারানো মেয়ে এর ছবি

এই মানুষটা (শাহরিয়ার কবির) আর লেখে না কেন? ইয়াত্তা নাই, এই বইগুলো যে কতবার করে পড়েছি...

সবজান্তা এর ছবি

হুম। চিরটা কালই আমি দেরি করে ফেলি। এত সুন্দর একটা লেখা এত পরে পড়লাম, যে নতুন কিছুই বোধহয় আর বলার নেই। সব বলা হয়ে গিয়েছে।

আমাদের সবার কৈশোরই বোধহয় অনেকটা জলরঙের সেই বাক্সের মত, যেখানে অনেক রঙ পাশাপাশি আছে। শুধু তুলিতে ভিজিয়ে একটা ক্যানভাসে আঁকার প্রতীক্ষায় থাকি আমরা...


অলমিতি বিস্তারেণ

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আহা! সেই বইগুলো... শাহরিয়ার কবিরের একেক্টা বই কতবার করে যে পড়েছি...ইশশ! সেইসব ভাল দিনগুলো শুধুই চলে যায়... মন খারাপ

--------------------------------------------------
একটি বাদরে, কি যে আদরে, খাচ্ছিল দোলা, ডাল ধরে ধরে!!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

niloy nandy এর ছবি

ভাই রউফ, আপনার চেহারাটা দেখি বোমকেশ বকসীর মতো !!
14/15 বছর আগে ভারতের ন্যাশনাল চ্যানেলে দেখতাম, রংপুর থেকে দেখা যেত ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।