দ্য বেট (সম্পূর্ণ)

খেকশিয়াল এর ছবি
লিখেছেন খেকশিয়াল (তারিখ: শনি, ১১/০৭/২০০৯ - ১২:৫২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দ্য বেট
আন্তন চেকভ

শরতের এক অন্ধকার রাত। বুড়ো ব্যাঙ্কার হাঁটছিলেন তার পড়ার ঘরে আর মনে করছিলেন ঠিক পনের বছর আগের এক শরতের সন্ধ্যার কথা। সে সন্ধ্যায় পার্টি দিয়েছিলেন তিনি। অনেক জায়গার থেকে অনেক জ্ঞানী গুনী মানুষ ভিড় করেছিল সেদিন। অনেক মজার বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল আড্ডায়। একসময় কথা উঠে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট নিয়ে। অতিথিদের বেশিরভাগই ছিলেন এর বিপক্ষে। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন সাংবাদিক আর বুদ্ধিজীবী ধরনের লোক। তারা সবাই বলেছিলেন এ ধরনের শাস্তি অনেক সেকেলে, অনৈতিক আর ক্রিশ্চান দেশের জন্য অনুপযুক্ত। তাদের মধ্যে অনেকেরই মত এমন ছিল যে সবখানেই মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের প্রচলন করা উচিত।

“দেখুন আমি আপনাদের সাথে একমত হতে পারলাম না,” বলেছিলেন সেই নিমন্ত্রক ব্যাঙ্কার।
“মৃত্যুদণ্ড কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কোনটাই আমি হয়ত চেষ্টা করে দেখিনি, কিন্তু যদি এই দুটির মধ্যে তুলনা করতে বলা হয় তাহলে আমি বলব, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থাকে মৃত্যুদণ্ড অনেক বেশী নৈতিক এবং মানবিক। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত কোন আসামী এক নিমিষেই মরে যায় কিন্তু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামীর মৃত্যু হয় খুব ধীরে। কোন জল্লাদ আপনাদের কাছে বেশী মানবিক? যে আপনাকে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মেরে ফেলবে, সে?.. নাকি যে তিলে তিলে বছরের পর বছর ধরে আপনার সবটুকু প্রাণশক্তি নিঃশেষ করে ফেলবে, সে?”

“দুটোই সমানভাবে অনৈতিক,” অনেকক্ষণ ধরে শুনছিলেন একজন অতিথি, বললেন তিনি।
“এই কারনে যে এদের দুটোর উদ্দেশ্য একটাই- মেরে ফেলা। দেশ কোন ঈশ্বর নয়। যে জিনিস সে চাইলেই গড়তে পারে না, সে জিনিস ধ্বংসে তার কোন অধিকার নেই।”

অভ্যাগতদের মধ্যে একজন তরুণ আইনজীবীও ছিলেন, বয়স পচিশের মত হবে। এই ব্যাপারে যখন তার মত চাওয়া হল, তিনি বললেন:

“মৃত্যুদন্ড আর যাবজ্জীবন কারাদন্ড উভয়েই অনৈতিক, কিন্তু আমাকে যদি এদের মধ্যে থেকে কোনটিকে বেছে নিতে বলা হয় তবে আমি দ্বিতীয়টিকেই বেছে নেব। একেবারে মরে যাবার চেয়ে কোনভাবে বেঁচে থাকা অনেক ভাল।”

তার কথায় আবারও আড্ডা সরব হয়ে উঠল। ব্যাঙ্কার, সে সময় তার বয়সও ছিল কম, তর্ক করতে করতে একসময় উত্তেজিত হয়ে গেলেন। তিনি টেবিলে ঘুসি মেরে চেঁচিয়ে সেই যুবককে বললেন:

“উহু! মানতে পারলাম না! দুই মিলিয়ন টাকা বাজি, আপনি এরকম কোন নিঃসঙ্গ কারাগারে পাঁচ বছর থাকতে পারবেন না!”

“আপনি যদি সত্যিই বাজি ধরতে চান তাহলে আমিও রাজি,” বললেন সেই আইনজীবী, “কিন্তু আমি তাহলে শুধু পাঁচ বছর নয় পনের বছরের জন্য বন্দী থাকবো।”

“পনের? বেশ!” চেঁচিয়ে বললেন ব্যাঙ্কার, “সুধীবৃন্দ, আপনাদের সবার সামনে আমি আমার দুই মিলিয়ন টাকা বাজি রাখলাম।”

“আমি রাজি। আপনি বাজি ধরলেন আপনার দুই মিলিয়ন টাকা আর আমি আমার স্বাধীনতা।” বললেন তরুণ আইনজীবী।

এর এভাবেই এই অর্থহীন বাজির শুরু হয়েছিল। সেই ব্যাঙ্কার, যিনি তার কামানো অঢেল টাকার দাপটে কোনকিছুতেই তেমন গুরুত্ব দিতেন না, খুশি হয়েছিলেন বাজির ব্যাপারটায়। রাতে খাবারের সময় তিনি রসিকতা করছিলেন তরুণকে নিয়ে, বলেছিলেন :

“এখনো ভেবে দেখুন তরুণ বন্ধু, এখন সময় আছে। আমার কাছে এই দুই মিলিয়ন কিছুই না, কিন্তু আপনি হারাতে চলছেন আপনার জীবনের সেরা তিন কিংবা চারটি বছর। খেয়াল করবেন আমি তিন বা চার বছর বলেছি, কারন আমি মনে করি না এর বেশী সময় আপনি টিকতে পারবেন। ভুলে যাবেন না যে আইনত কারাদণ্ডের চাইতে স্বেচ্ছায় কারাবাস মেনে নেয়া আপনার কাছে অনেক কষ্টকর হবে। অন্যান্য সাধারণ মানুষের মত স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের অধিকার যে আপনারও আছে, সে চিন্তাই আপনার কারাবাসের দিনগুলোতে আপনাকে কুড়ে কুড়ে খাবে। আপনার জন্য আমি সত্যিই অনেক দুঃখিত বোধ করছি...”

আর আজ এখন হাঁটতে হাঁটতে, সেইসব কথা মনে করতে গিয়ে ব্যাঙ্কার প্রশ্ন করলেন নিজেকে: “আচ্ছা সেই বাজির উদ্দেশ্য আসলে কি ছিল? সেই তরুণের পনেরটি বছর নষ্ট করা আর আমার দুই মিলিয়ন টাকা ছুড়ে ফেলে দেয়া থেকে ভাল কিছু কি-ই বা হতে পারত? এটা কি আদৌ প্রমাণ হতো যে মৃত্যুদণ্ড আসলে কারাদণ্ডের থেকে ভাল বা খারাপ? কখনোই না! আসলে সম্পূর্ণ ব্যাপারটাই ছিল এক অর্থহীন পাগলামী। আমার পক্ষ থেকে ছিল টাকার গরমে বখে যাওয়া এক ধনীর সাময়িক খেয়াল আর তার কাছে ছিল শুধুই টাকার লোভ...”

তিনি মনে করতে লাগলেন সেই সন্ধ্যার পরবর্তী ঘটনাগুলি। ঠিক হয়েছিল সেই যুবক সেই ব্যাঙ্কারেরই বাগানের এক বাড়িতে অত্যন্ত কঠোর পর্যবেক্ষণে পার করবেন তার নির্জন বছরগুলো। নিয়ম করা হয়েছিল এই পনের বছরের মধ্যে তিনি কখনো সেই বাড়ির চৌকাঠ পেরুতে পারবেন না, কারও সাথে দেখা করতে পারবেন না, কারো কন্ঠস্বর শুনতে পারবেন না, কোন চিঠি এমনকি খবরের কাগজও পড়তে পাবেন না। তিনি চাইলে তাকে যেকোন বই বা বাদ্যযন্ত্র দেয়া হবে। তিনি চিঠি লেখতে পারবেন, মদ্যপান আর ধূমপানও করতে পারবেন। শর্ত মোতাবেক বাইরের জগতের সঙ্গে তার সংযোগ হবে শুধুমাত্র একটি জানালা, যা দিয়ে তার চাহিদা মোতাবেক বই, মদ সবই তাকে পৌছে দেয়া হবে। এইভাবে সব শর্ত আর নিয়ম দিয়ে তার কারাবাসের ব্যাপারটা একদম নিখুত করে ঠিক করা হল যে পনের বছরের জন্য, ১৮৭০ এর ১৪ই নভেম্বরের রাত বারোটা থেকে শুরু করে ১৮৮৫’র ১৪ই নভেম্বর রাত বারোটা পর্যন্ত তাকে বন্দী করে রাখা হবে। তিনি যদি এর মধ্যে কোন শর্ত ভাঙ্গার চেষ্টা করেন এমনকি শেষ সময়ের হয়ত দুই মিনিট আগেও.. তিনি হেরে যাবেন। আর ব্যাঙ্কারের দুই মিলিয়ন টাকাও আর পাবেন না।

তার বন্দীজীবনের প্রথম বছর, তার লেখা ছোট ছোট নোটগুলো থেকে যতটুকু বোঝা যায়, তিনি ভুগছিলেন একাকীত্ব আর হতাশায়। তার বাড়ি থেকে দিন রাত পিয়ানোর সুর শুনতে পাওয়া যেত। তিনি মদ কিংবা ধুমপানে বিরত ছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, মদ মনের বাসনা বাড়িয়ে দেয়, আর বাসনা একজন বন্দীর সবচাইতে বড় শত্রু। তাছাড়াও কাউকে না দেখে, নিঃসঙ্গ মদ পান করার চাইতে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। আর তামাক তো আরো নয়, কারন এর ধূঁয়া ঘরের বাতাস দূষিত করে। প্রথম বছরে তিনি যে বইগুলো চেয়ে পাঠালেন তা ছিল মোটামুটি কিছু হালকা গোছের বই। বেশীরভাগই ছিল প্রেমের জটিলতা নির্ভর কিছু উপন্যাস, উত্তেজক এবং মজার মজার গল্পের কিছু বই।

দ্বিতীয় বছর তার ঘর থেকে আর পিয়ানো শোনা গেল না। আর এবার তিনি চাইলেন শুধুই ক্লাসিক যত বই। পঞ্চম বছরে তার ঘর থেকে আবারো সুর শোনা যেতে লাগলো আর এইবার তিনি মদ চেয়ে পাঠালেন। সেইসময় যারা তাকে জানালা দিয়ে তার অগোচরে তাকে দেখত, বলেছিল যে বছরজুড়ে তিনি খাওয়া, মদ্যপান করা, বিছানায় শুয়ে থাকা, মাঝে মাঝে সশব্দে হাই তোলা আর রাগী গলায় নিজের সাথে কথা বলা ছাড়া তিনি আর কিছুই করতেন না। তিনি বই পড়তেন না। কখনো হয়ত রাতে লেখতে বসতেন। ঘন্টার পর ঘন্টা লিখে যেতেন। আর সকাল হলেই নিজেই ছিড়ে টুকরো টুকরো করতেন সেইসব কাগজ। এইসময় কয়েকবার তাকে কাঁদতেও শোনা যায়।

তার ষষ্ঠ বছরের দ্বিতীয়ভাগে তিনি অনেক আগ্রহভরে ভাষা, দর্শন, ইতিহাস নিয়ে পড়তে শুরু করলেন। তিনি তার পড়াশুনায় এতটাই ডুবে গেলেন যে তার এইসব বইয়ের চাহিদার যোগান দিতে ব্যাঙ্কারকেও বেশ কষ্ট করতে হল। তিনি চার বছরের মধ্যে ছয়শ ভল্যুমের মত বই পড়লেন। সেই সময় ব্যাঙ্কার তার কাছ থেকে একটা চিঠি পেয়েছিলেন, যাতে লেখা ছিল:

“ প্রিয় জেলার, আমি আপনাকে এই লেখাটা ছয়টা ভাষায় লিখছি। দয়া করে যারা এই ভাষাগুলো জানে তাদের এই চিঠিটা দেখাবেন, তাদের পড়তে বলবেন। যদি তারা এর মধ্যে কোন ভুল না পেয়ে থাকেন, আমার অনুরোধ থাকবে আপনি যেন তখন বাগানে এসে বন্দুকের একটা গুলি ছুড়েন। সেই গুলির শব্দ শুনলে আমি বুঝতে পারব যে আমার এতদিনের কষ্ট বিফলে যায়নি। সকল যুগের আর বিভিন্ন স্থানের তুলনাহীন প্রতিভাধর ব্যক্তিরা বিভিন্ন ভাষায় কথা বললেও তাদের সবার ভিতর জ্বলত একই আগুন। ওহ! আপনি যদি জানতেন তাদের বুঝতে পেরে আমার কি যে এক অপার্থিব আনন্দ হচ্ছে!” তার সেই ইচ্ছা পূরণ করা হয়েছিল। ব্যাঙ্কার বাগানে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

দশম বছর শেষে বন্দী অনড় হয়ে বসে টেবিলের উপর শুধু ধর্মীয় গসপেল রেখে পড়তে লাগলেন। ব্যাঙ্কারের কাছে অবাক লাগলো এই ভেবে যে লোক চার বছরে ছয়শ ভল্যুম বই শেষ করে একজন পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন তিনি কিনা একবছর এইসব ধর্মীয় সহজ সরল বই পড়ে কাটিয়ে দিলেন। গসপেল শেষ হলে তিনি ধর্মীয় দৈবত্ব আর ইতিহাস নিয়ে পড়লেন।

তার বন্দী জীবনের শেষ দুই বছর তিনি কোনরকম বাছবিচার ছাড়াই অজস্র পরিমাণ বই পড়ে গেলেন। কোন সময় হয়ত তাকে দেখা গেল বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে থাকতে আবার তার পরেই হয়ত তিনি চেয়ে বসলেন বায়রন অথবা শেকসপিয়ার। তার লেখা কোন একটা নোট ছিল এমন, যেখানে তিনি একইসঙ্গে চেয়েছিলেন কিছু রসায়নের আর ঔষধ বানাবার বই, একটি উপন্যাস, আর দর্শন আর দৈবত্ব নিয়ে বিশ্লেষণমূলক কিছু বই। তার বইপড়া দেখে মনে হচ্ছিল সমুদ্রে ভাঙ্গা জাহাজের এটা ওটা ধরে ভেসে সাঁতার কেটে নিজেকে জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছে যেন কোন নাবিক।

বুড়ো ব্যাঙ্কারের মনে পড়ল সবকিছুই, ভাবলেন:

“ আগামীকাল বারোটায় সে বেরিয়ে আসবে। চুক্তি অনুযায়ী আমাকে দিতে হবে দুই মিলিয়ন টাকা। আর টাকাগুলো চলে গেলেই আমি হয়ে পড়বো সর্বসান্ত ।”

এই দীর্ঘ সময়ে ব্যাঙ্কারের জীবনেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। পনের বছর আগের সেই মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা এখন তার কাছে চিন্তারও বাইরে। এখন তিনি নিজের কাছেই প্রশ্ন করতে ভয় পান যে কোন জিনিসটা তার কাছে বড়.. তার দেনা? ..নাকি তার সম্পত্তি? স্টক এক্সচেঞ্জের বেপরোয়া চাল, চিন্তা ভাবনাহীন যত খামখেয়ালী সিদ্ধান্ত তার ভাগ্যকে কোনঠাসা করে ফেলেছে। এককালের দুর্ধর্ষ, গর্বিত, আত্মবিশ্বাসী মিলিয়নিয়ার আজ শুধুই একজন সাধারণ ব্যাঙ্কার। সংসারের টানাপোড়েনে, ছোটখাট বিনিয়োগে সদা কম্পমান একজন মধ্যবিত্ত মানুষ আজ তিনি।
“কচুর বাজি!” মাথা ধরে বিড়বিড় করে উঠলেন তিনি একরাশ হতাশায়,
“ব্যাটা মরলো না কেন?.. বয়স কত হবে তার এখন?.. চল্লিশের মত?..
আমার শেষ সম্বলটুকুও নিয়ে যাবে সে.. বিয়ে করবে.. জীবনটাকে উপভোগ করবে.. এক্সচেঞ্জে জুয়া খেলবে; আর সবই আমি দেখবো, একটা হিংসুটে ভিক্ষুকের মত.. আর প্রতিনিয়ত তাকে বলতে শুনবো সেই কথাগুলি: ‘আমার এই সুখী জীবনের জন্য আমি আপনার কাছে চিরঋণী, আমাকে আপনার সাহায্য করতে দিন!’ ...নাহ! চিন্তা করা যায় না!.. সর্বসান্ত হয়ে এই অপমানের হাত থেকে বাঁচার এখন শুধুমাত্র একটাই উপায় .. সেই ব্যক্তির মৃত্যু!”

ঘড়িতে তিনটার ঘন্টা বাজলো, ব্যাঙ্কার শুনলেন। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, বাইরের হিমে ধরা গাছেদের খসখসে শব্দ ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না। টু শব্দটি না করে ফায়ারপ্রুফ একটি সেইফ থেকে তিনি সেই দরজার চাবিটা নিলেন, যে দরজা খোলা হয়নি পনের বছর ধরে। ওভারকোট গায়ে চাপিয়ে বেরিয়ে গেলেন সেই ঘরের দিকে।

বাগানে ছিল কনকনে ঠান্ডা আর গাঢ় অন্ধকার। বৃষ্টি পড়ছিল। আর্দ্রতা চিরেফুড়ে দৌড়াচ্ছিল এক শীতল বাতাস, বাগানের গাছগুলোকে অস্থির করে দিয়ে খেউড়ে ঘুরছিল যেন ওটা। ব্যাঙ্কার চোখ মেলে তাকালেন, কিন্তু দেখলেন না কিছুই.. না পায়ের তলার মাটি না সেই সাদা মূর্তি না সেই বাড়ি না কোন গাছপালা। যেখানে সেই বাড়িটি সেখানে পৌছে তিনি তার দারোয়ানকে ডাকলেন, দুইবার। কোন উত্তর এলো না। নিশ্চয়ই এই আবহাওয়ায় সে আর বাইরে বসে নেই, আশ্রয় নিয়েছে হয়ত অন্য কোথাও.. রান্নাঘরে বা গ্রীনহাউজে।

“যা ভেবেছিলাম, তা করার যদি সাহস থাকে আমার..” ভাবলেন ব্যাঙ্কার, “ তাহলে সবাই প্রথমে দারোয়ানকেই সন্দেহ করবে..”

অন্ধকারে একসময় তিনি বাড়িটার সিঁড়ি খুঁজে পেলেন। দরজা পেরিয়ে ভিতরে ঢুকলেন। অন্ধকারে হাঁতড়ে পৌছলেন একটা সরু গলিতে.. দিয়াশলাই জ্বালালেন তিনি। কেউ ছিল না সেখানে। এককোনে বিছানাবিহীন একটা খাট.. আরেক কোনে একটা মিশ কালো স্টোভ ছাড়া আর কিছুই ছিল না জায়গাটায়। বন্দীর ঘরের দরজার সিলটা ছিল অক্ষত।

দিয়াশলাইটা নিভে গেলে উত্তেজিত হয়ে পড়লেন বৃদ্ধ ব্যাঙ্কার, উঁকি দিলেন ঘরের সেই ছোট জানালাটি দিয়ে। ঘরে টিমটিম করে জ্বলছিল একটি মোমবাতি। বন্দী বসেছিলেন টেবিলের সামনে, তার পিঠ, মাথা আর চুল আর হাত ছাড়া দেখা যাচ্ছিল না আর কিছু। টেবিলে, দুটো ইজি চেয়ারে, কার্পেটে চারদিকে শুধু খোলা যত বই।

পাঁচ মিনিট চলে গেল, বন্দী একটুও নড়লেন না। পনের বছরের কারাজীবন তাকে শিখিয়েছিল কিভাবে স্থির হয়ে বসতে হয়। ব্যাঙ্কার জানালায় আঙ্গুল দিয়ে শব্দ করলেন, উত্তরে বন্দী নড়লেন না একচুল। ব্যাঙ্কার তখন সাবধানে সিল ভাঙ্গলেন আর চাবির ফুঁটোয় রাখলেন চাবি। জংধরা কিচকিচে একটা শব্দ করে খুলে গেল দরজা। ব্যাঙ্কার ভাবছিলেন এখনই হয়ত তিনি শুনবেন পায়ের শব্দ, উৎফুল্ল চিৎকারে ফেটে পড়বে হয়ত বন্দী। কিন্তু তিন মিনিট কেটে গেল। ঘরে সেই আগের মত নিঃশব্দতা। ভিতরে ঢুকলেন তিনি।

টেবিলের ধারে অটল, অনড় যে লোকটি বসে ছিল তাকে দেখে কখনোই সাধারণ মানুষ বলে মনে হবে না। বলতে গেলে সেটা ছিল একটা কঙ্কাল, যার গায়ে টানটান লেগে ছিল কিছু চামড়া। মাথায় মেয়েদের মত বড় কোকড়ানো চুল, গালে লম্বা ভুসভুসে অবিন্যস্ত দাড়ি। তার মেটে ফ্যাকাশে মুখে গালদুটো বসে গিয়ে গর্ত হয়ে আছে, পিঠ সরু.. লম্বা । তার হাতদুটো, যার উপর বসানো ছিল তার অবিন্যস্ত চুলো মাথাটা, ছিল শীর্ণ.. দুঃস্থ, মলিন। চুলগুলো রুপালী হয়ে গেছে সব। জরাগ্রস্ত তার এই রূপ দেখে কেউ চিন্তাই করতে পারবে না যে এই লোকটার বয়স মাত্র চল্লিশ। সে ঘুমাচ্ছিল। তার ঝোকানো মাথার ঠিক সামনেই পড়ে ছিল এক চিলতে কাগজ যাতে খুবই সুন্দর হাতের লেখায় দেখা যাচ্ছিল কিছু লাইন।

“বেচারা..” ভাবলেন ব্যাঙ্কার, “ও মনে হয় ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মিলিয়ন টাকার স্বপ্ন দেখছে। আমাকে এখন আর কিছু না.. শুধু এই অর্ধ-মৃত লোকটাকে নিয়ে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিতে হবে, বালিশ নিয়ে নাকেমুখে চাপা দিতে হবে, আর সবচেয়ে ছোকছোকে ঝানু লোকও খুনের কোন আলামতই পাবে না। কিন্তু তার আগে পড়ে দেখি ব্যাটা কি লিখেছে...”

ব্যাঙ্কার চিরকুটটা তুলে নিলেন আর পড়তে লাগলেন:

“আগামীকাল বারোটায় আমি আবার আমার স্বাধীনতা ফিরে পাব, ফিরে পাব অন্য সব মানুষের সাথে চলাফেরার অধিকার। কিন্তু এই ঘর থেকে বেরোনোর আগে, সূর্যোদয়ের আগে, আমার মনে হয় কিছু কথা বলা দরকার। একদম ঠান্ডা মাথায় আজ আমি তোমাদের সবার কাছে, আমার ঈশ্বরের কাছে, অস্বীকার করলাম এই স্বাধীনতা, জীবন, সুস্বাস্থ্য,.. আর তোমাদের বইয়ে লেখা জাগতিক যত মঙ্গলময় বস্তুকে।

পনের বছর ধরে আমি মনোযোগ দিয়ে গবেষণা করছিলাম জাগতিক যাপিত জীবন নিয়ে। এটা সত্য যে এইসময়ে আমি এই জগৎ বা মানুষ কারোই সংস্পর্শে আসিনি, কিন্তু তোমাদের দেয়া বইয়ে আমি পান করেছি যত রাজসিক মদ, গেয়েছি কত গান, জঙ্গলে গিয়ে করেছি হরিণ আর বুনো শুয়োর শিকার। আমি নারীর প্রেমে পড়েছি। তোমাদের কবি আর প্রতিভাবান যত মানুষের তৈরী মেঘের মত বাষ্পীভূত সূক্ষ্ম সৌন্দর্য্যরা দেখা দিয়েছে আমায় এসে, আমার নিঃসঙ্গ রাতগুলোতে। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলা সেই অবাক অদ্ভুত গল্পগুলো মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে আমার। আমি বইয়ে বইয়ে আরোহনে করেছি এল্বার্জ, মাউন্ট ব্ল’র শিখরে, দেখেছি সুর্যোদয় আর সন্ধ্যায় দেখছি তার সেই সোনালী বান, কিভাবে আকাশ, সাগর ছুঁয়ে যায়, গিয়ে জমে সিঁদূরসোনা ওই পর্বত শিখরে। আমি সেখান থেকে দেখতাম আকাশ জোড়া বজ্রমালার ঝলকানি, তোলপাড় তোলে যারা.. যত ঝোড়ো মেঘে। আমি দেখতাম চিরহরিৎ বনানী, শস্যক্ষেত্র, নদী, হ্রদ, শহর। আমি শুনেছি সাইরেনদের গান, মেষপালকের বাজানো বাঁশি, ছুঁয়েছি শান্ত সেই শয়তানের পাখা, যে উঁড়ে কথা বলতে এসেছিল আমার সাথে, ঈশ্বরের হয়ে...। তোমাদের বইয়ে আমি নিজেকে ছুঁড়ে ফেলেছি অতল যত গুপ্তকূপে, জন্ম দিয়েছি অলৌকিকের, হত্যা করেছি, প্রচারণা করেছি নতুন ধর্মের, জয় করেছি গোটা কোন মুলুক..

তোমাদের বই আমাকে দিয়েছে জ্ঞান। মানুষের অস্থিতিশীল যত চিন্তা.. জন্ম নিয়েছে যুগে যুগে, তারা সব যেন মিলেমিশে আমার মস্তিষ্ককে পরিণত করেছে একটা দিকযন্ত্রে। আমি জানি আমি তোমাদের সবার থেকে জ্ঞানী।

আর আজ আমি ত্যাগ করলাম তোমাদের যত বই, অস্বীকার করলাম তোমাদের যত জ্ঞান, জাগতিক যত আশীর্বাদ। এ সবই অর্থহীন.. দ্রুত ধাবমান মায়া, আলেয়ার মত যত ছল। তোমাদের হয়ত অনেক গর্ব, তোমরা হয়ত অনেক জ্ঞানী আর সুখী। কিন্তু একদিন মৃত্যু তোমাদের এই পৃথিবীর বুক থেকে মুছে দেবে, যেমন করে কেউ সমূলে বিনাশ করে মাটির নিচের গর্ত কর থাকা ইঁদুরদের। আর সেদিন তোমাদের যত উন্নতি, গরিমা, ইতিহাস, অমর যত প্রতিভাধরেরা সবাই হয়ত পুড়বে অথবা একসাথে জমে তুষারবৎ হয়ে পড়ে থাকবে সব, এই পৃথিবীরই সাথে।

তোমরা তোমাদের কার্যকারণ বিস্মৃত হয়েছ আর বেছে নিয়েছ ভুল যত পথ। তোমরা মিথ্যাকে সত্য বলে মেনে নিয়েছ, ভয়ংকর'রে নাম দিয়েছ সুন্দর। তোমরা অবাক হও আপেল বা কমলা গাছে ফলের বদলে টিকটিকি, ব্যাঙ গজানোর মত, গোলাপ ফুল থেকে ঘোড়ার ঘামের কটুগন্ধের নিঃসরণের মত যত অভূতপূর্বে। আর আমি অবাক হই তোমাদের দেখে, তোমরা যারা স্বর্গের বদলে বেছে নাও এই মর্ত্যরে। আমি তোমাদের বুঝতে চাই না।

তোমাদের জীবনধারণের এই সকল জাগতিক যত বস্তুকে ত্যাগ করতে আজ আমি তাই অস্বীকার করলাম আমার প্রাপ্য সেই দুই মিলিয়ন টাকা, যার স্বপ্নে একসময় আমি গড়ে তুলেছিলাম আমার সাজানো স্বর্গ, সবই অস্বীকার করলাম আমি আজ। এই অবস্থা হতে নিজেকে সরিয়ে নিতে তাই আমি এই ঘর থেকে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ ঘন্টা আগেই বেরিয়ে যাবো, ভেঙ্গে দেব সেই চুক্তির শর্ত...”

ব্যাঙ্কার পড়লেন। কাগজটা রেখে দিলেন টেবিলে। আর সন্তর্পণে বন্দীর মাথায় চুমু দিয়ে বেরিয়ে এলেন সেই ঘর থেকে। তিনি কাঁদছিলেন। তার নিজেকে কখনো.. এমনকি স্টক একচেঞ্জে বড় কোন ক্ষতির পরও এমন নিঃস্ব, ক্ষুদ্র মনে হয়নি। তিনি নিজের বাড়িতে আসলেন, শুয়ে পড়লেন বিছানায়। কিন্তু তার কান্না আর অনুভূতিরা তাকে জাগিয়ে রেখেছিল অনেকক্ষণ।

পরদিন দারোয়ান দৌড়ে এসে খবর দিল- তারা দেখেছে সেই বাগানবাড়ির লোকটাকে বেরিয়ে আসতে। ..তিনি জানালা বেয়ে নেমে আসেন বাগানে, দরজায় পৌছান আর পেরিয়ে চলে যান বাইরে। ব্যাঙ্কার তখনি তার ভৃত্যদের সাথে বাগানবাড়ির দিকে যান আর দেখেন সত্যিই তিনি নেই আর সেখানে। তিনি সেই কাগজখানা তুলে নেন, যাতে বন্দী অস্বীকার করেছিলেন সেই দুই মিলিয়ন টাকা, আর বাড়িতে গিয়ে সেটা পুরে ফেলেন তার অগ্নি-নিরোধক সুরক্ষিত সিন্দুকে.. মানুষের অযথা অহেতুক যত কথা এড়াতে ।

[গল্পটি কেমন অনুবাদ করলাম জানি না, সে আপনারা বলবেন। আমার কথা অন্য জায়গায়। গল্পের মোরাল নিয়ে। আমি আর আমার বন্ধু অবনীল আলোচনা করছিলাম এখানে বন্দীর চিঠির কথাগুলো নিয়ে, তার এই অস্বীকার করা নিয়ে। আপনারা কি মনে করেন? শুধু বই পড়েই কি সব বুঝে ফেলা যায়, মৃত্যুচিন্তায় কি অস্বীকার করা যায় সবকিছু? আমি বা অবনীল মানতে পারিনি, কারন 'বাকির লোভে নগদ পাওনা' তো আর ছাড়া যায় না তাই না?]


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ভালো অনুবাদ করেছেন। গল্প থিম ও ভালো।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

লগাউট করে লেখাটা দেখে পড়ে আবার লগিন করলাম নিচের কথাটা দেখে কমেন্টাইতে

০২


এখানে বন্দীর চিঠির কথাগুলো নিয়ে, তার এই অস্বীকার করা নিয়ে। আপনারা কি মনে করেন?

পাগলে কী না কয়?

খেকশিয়াল এর ছবি

হাহাহাহা এগজ্যাক্টলি!

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

জাহিদ হোসেন [অতিথি] এর ছবি

চেখভের এই গল্পটি অনেকদিন আগে একবার পড়েছিলাম। আবার পড়লাম আপনার কল্যাণে, তার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। যদি পারেন তো শীর্ষেন্দুর একটি ছোটগল্প আছে "কৃষ্ণপক্ষ" (নাকি শুক্লপক্ষ?) নামে। অনেকটা একই রকমের থীমে লেখা। সে গল্পটিও আমার খুব প্রিয়।

হিমু এর ছবি

ঝরঝরে হয়েছে অনুবাদ। ইংরেজিটা পড়েছিলাম অনেক আগে, পাঠ্য ছিলো বোধহয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সচল জাহিদ এর ছবি

বুয়েটে লেভেল ১ টার্ম ১ এ পাঠ্য ছিল।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

খেকশিয়াল এর ছবি

ধন্যবাদ। দাড়ান গল্পগুলা পড়ি।

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

বুয়েটে পাঠ্য ছিলো। অনেক ভালো অনুবাদ করেছেন।
মানুষের এত কাজকর্ম এক অর্থে অর্থহীনই। আবার অন্যভাবে দেখলে জ্ঞানের প্রয়োজন আছে, বর্তমানাবধি মানুষের জ্ঞান হয়তো একেবারেই অনুল্লেখযোগ্য; কিন্তু এই চর্চা অব্যাহত না রাখলে আমাদের অস্তিত্ব একেবারেই মূল্যহীন হয়ে যায়। মৃত্যু মানুষের একটা বড়ো সীমাবদ্ধতা। তবে জ্ঞানের চর্চার ফলে একসময় সে সীমাবদ্ধতাও হয়তো জয় করা যাবে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

খেকশিয়াল এর ছবি

ধন্যবাদ, হয়তো মৃত্যু কোন সীমাবদ্ধতা আবার হয়ত রবিঠাকুরের 'সীমার মাঝে অসীম' কোন কেস, হাহা.. কি বলেন?

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

নিলগ এর ছবি

শঙ্করাচার্যের মোহমুদ্গর আর কি!
" ইতি পরিভাবয় সর্বম্‌ অসাড়ম্/ বিশ্বং ত্যক্তা স্বপ্নবিকারম্‌।"
জগৎ মায়ামাত্র, তুমি কার কে তোমার? জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে?

তবু যদি মৃত্যু না থাকতো? কী ভয়ংকর হতো তবে! মুক্তির পথ বন্ধ? কী দীর্ঘ কী ক্লান্তিকর জীবন!

ব্যক্তিগতভাবে এই জগতই ভালো লাগে আমার কাছে, আছে জন্ম আছে মৃত্যু, আছে বলেই জীবন সুন্দর ও তাজা, দুঃখ অশেষ নয়, সুখও নয় দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর! পরম শান্তি হয়ে রয়ে গেছে মৃত্যুর আশ্বাস। পুরানোর চলে যাওয়া, নতুনের আসা- অনিঃশেষ এ খেলা।

খেকশিয়াল এর ছবি

সহমত

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মূলত পাঠক এর ছবি

চমৎকার অনুবাদ।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

কথা কইলেই বিপদ... দেঁতো হাসি

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

খেকশিয়াল এর ছবি

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

তুলিরেখা এর ছবি

অনুবাদ খুব চমৎকার হয়েছে! মূল কাহিনিও খাসা।
চেকভের আরও কিছু গল্প অনুবাদ করবেন নাকি?
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।