এগিয়ে যাচ্ছে স্বদেশ!!!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
লিখেছেন এস এম মাহবুব মুর্শেদ (তারিখ: মঙ্গল, ৩১/০৭/২০০৭ - ২:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মরন খেলা
ঘটনা এক:
টিএন্ডটিতে চাকুরী করেন ফজল সাহেব। ছোট্ট একটি পোস্ট। মাসে বেতন সর্বসাকুল্যে ৫ হাজারের মতো। যখন চাকুরীতে ঢুকেছিলেন তখন কত টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল তা এখন আর নাই তুলি। দেশে বাবা-মা, ভাই বোন মিলিয়ে গোটা বিশ জনের পরিবার। ঢাকায় বউ বাচ্চা। তাদেরও তো বাঁচবার শখ আছে, আছে চাহিদা। ছোট খাট ফোনের লাইনের ব্যাপারে সাহায্য করে কিছু উপরি উপার্জন করতেন। অন্যায়, খুবই অন্যায়।

সরকারের পরিবর্তন হলো। দেশে লাগলো উন্নয়নের জোয়ার। বিশ বছর ধরে যে সিস্টেম নষ্ট হয়েছে একদিনে সেটা ভালো করার জোরাজুরি। ফজল সাহেবের আয় আবার সেই ৫ হাজার। ফলাফল মেট্রিক পরীক্ষার আগে ছেলের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ। বাজার বন্ধ হয় হয়।

তবু আমরা খুশী দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।

ঘটনা দুই:
দরিদ্র বাবার এক সন্তান বাবু। বাবা অনেক কষ্ট করে মেট্রিক পাশ করিয়েছে। ইন্টারমিডিয়েট কোন রকম ঠেলে ঠুলে একবার চেষ্টা করেছিল। ফেল করার পর আর কিছু হয়নি। এযুগে ইন্টারমিডিয়েট ফেল ছেলের কিছু হবার আশা নেই। তবু মামার কল্যানে একটি সরকারী অফিসে নামকা ওয়াস্তে পদে নিয়োজিত ছিল। পরিবারে খাওয়া পরা চলে যেত। খারাপ, খুবই খারাপ।

উন্নয়নের বেচারার চাকরী চলে গেল। হবে, সব কিছু টাইট হবে। বিশ বছরের টাইট একবারে হবে।

তবু আমরা খুশী দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।

ঘটনা তিন:
সরকারী কর্মকর্তা বজলু সাহেব দেদারসে ঘুষ খেতেন। বাড়ি, গাড়ি কি নেই করেন নি। তবু তার ছায়ায় ছিল প্রায় জনা ত্রিশেক কর্মচারী, তিন জন ড্রাইভার। ধান ছড়িয়ে থাকলে অনেকেই খেয়ে যায়। খারাপ খুব খারাপ।

উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেল। আজ যে রামও নেই সেই অযোধ্যাও নেই। শুধু রয়ে গেছে ত্রিশটি ক্ষুধার্ত পেট।

ঘটনা চার: (আপডেট মার্চ ৩০, ২০০৭)
কবির সাহেব বিমানে চাকুরী করেন। সারাজীবন সৎভাবে থেকেছেন। কিংবা বলা যায় অসৎ হবার সুযোগ পাননি। ছোট্ট চাকুরী। দু বাচ্চার সংসারে অর্থের যোগানে তাই তাকে ওভারটাইম সহ হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনী দিতে হয়। খুব খারাপ, কি বলেন?

তত্ত্বাবধায়ক সরকার লাভ দেখতে চায় বিমানের কাছে। দুর্নিতী কারী সব কর্মকর্তাকে ছাটাই করা হয়েছে। এখন আলোচনা হচ্ছে কর্মী ছাটাই হবে ৫০%। গভীর চিন্তায় আছেন কবির সাহেবের মত কর্মচারীরা। সারাজীবন সৎ থেকেও আজকে মাঝ বয়সে এসে আবার চাকুরী টেনশনে পড়তে হয়।

আমরা কিন্তু খুশী। দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে!

পাশ করে দেশের বাইরে চলে এসেছি। কোরাপ্টেড সিস্টেমে কোরাপ্টেড হবার আগেই। এ ব্যাপারে ভাগ্যবান মনে করি নিজেকে। উন্নয়নের জোয়ার দেখে আমি খুশী। মরুক শালার দুর্নীতিবাজ হাভাতেরা। তবু গরম পানির ছিটা আমার গায়েও পড়ে। কেবলই সরে যেতে চাই, পারিনা। আপনি পারেন কি?

সামহোয়্যার ইন ব্লগ ২০০৭-০৩-২৮ ০৩:৩০:১৭


অতিথি লিখেছেন:

২০০৭-০৩-২৯ ০৫:৫৩:১১
মুর্শেদ ভাই:

চমৎকার পোস্টের জন্য অভিনন্দন।

আপনার উল্লেখিত ঘটনাগুলো অবশ্যই জীবনের বাস্তবতার অংশ।

কিন্তু, বজলু সাহেবের ঘুষ খেয়ে ৩০জন কর্মচারী রাখার যৌক্তিকতা কোথায়? মেনে নিলাম - বজলু সাহেবের ঘুষ বন্ধ হওয়ায় ৩০কর্মচারীর পেটে লাত্থি পড়লো। কিন্তু এই ৩০জনের কাজের ব্যবস্থা করা কিন্তু রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব ছিল। রাষ্ট্রের এ ব্যর্থতার পেছনে আছে বড় মাপের দূর্নীতিবাজরা। বজলু সাহেব ঐ সিস্টেমেরই একটা অংশ। সরকারী উদ্দোগে কারখানা স্থাপন করে ঐ ৩০ জন এবং তাদের ৩০টি পরিবারের জীবনের ব্যবস্থা করার কথা ছিল সরকারের, সেটা করা হয় নি। বরং আদমজী পাটকল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বলা যায় - পুরা সিস্টেমটাই নষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

এখন যদি - ধরে নেয়া হয়, উপরি আয় দিয়ে আন্ডারপ্রিভিলেজড মানুষ চলতো, এখন তারা কী করবে! তাহলে কী আমরা বজলু সাহেব কিংবা ফজল সাহেবদের 'টুকটাক' উপরিকে সমর্থন করে যাবো? কতোদিন? এটা কী কোন সমাধান?

ইন্টারমিডিয়েট ফেল বাবু'র জন্য ওরকম চাকরীই কি শেষ ভরসা? অন্য কোন অলটারনেটিভ নেই? জীবন সংগ্রামে মানুষ কী নিজে কিছু করার চেষ্টা একটুও করবে না?

মেনে নিলাম - সব অসহায় মানুষ। কিচ্ছু করার নেই। কিন্তু এভাবে অন্যায় নিয়মের যে চর্চা, তার ক্ষতিটা কে বহন করবে? সমাজের বৃহত্তর অংশ নয় কি? এ চর্চাটা আগামীতে আরো ফজল সাহেব, বজলু সাহেব সৃষ্টি করবে না?

বরং , দূর্নীতি দমনের নামে যদি আসল রাঘব-বোয়ালদের ধরা হয়, তবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষই উপকৃত হবেন বেশী। তখন টুকটাক উপরি আয়ের চর্চা হয়ে উঠবে বিক্ষিপ্ত ঘটনা।

সুতরাং, প্রত্যাশা - প্রথম তীর হর্তাকর্তাদের দিকেই যাক!


মন্তব্য

??? এর ছবি

হা হা হা.... আদার সাইড অব দ্য মুন! কোনটা ভাল, দুর্নীতির উৎপাটন, নাকি ইনস্টিউশনালাইজেশন? তর্ক হৈতে পারে।

শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সামহোয়্যারইনে যখন লিখছিলাম তখন বেশ ভাল আলোচনা হইছিল। কিন্তু কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারে নাই কেউ। আসলে এইটা মাসকাওয়াথ ভাইয়ের একটা লেখা থেকে অনুপ্রানিত ছিল।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি এর ছবি

"পাশ করে দেশের বাইরে চলে এসেছি। কোরাপ্টেড সিস্টেমে কোরাপ্টেড হবার আগেই। এ ব্যাপারে ভাগ্যবান মনে করি নিজেকে।"

কেন গেলেন দেশ ছেড়ে? আপনাদের মত প্রতিভাবান লোকেরা যদি চলে যান তাহলে দেশের সত্যিকারের উন্নয়ন কে ঘটাবে? সিস্টেমটাকে ঠিক করবে কে? কত আর বাইরে থেকে দোষারোপ করবেন?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এ বিষয়ে আসলে আগে লিখেছিলাম। এখানে ধারাবাহিক ভাবে আসেনি লেখাগুলো।

সত্যি বলতে কি বাইরে এসেছি নিজের আখের গুছাতেই। কিন্তু দেশে থাকলে কি করতাম? একটা ছোটমোট চাকরী নিয়ে জীবন পার করতাম। তারচেয়ে কি একটা উচ্চ শিক্ষা আমাকে দেশের জন্যই আরও প্রয়োজনীয় করে তুলছে না?

এখন প্রশ্ন হচ্ছে দেশে ফিরব কিনা। এটার উত্তর আমি আপাতত দিতে পারব না। মার্স্টাস শেষ করে হয়ত বলতে পারব। তখন হয়ত আবার আলোচনা করা যাবে আরেক আসরে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শামীম এর ছবি

সামহোয়্যারে আসা পাল্টা পোস্টটা কে দিয়েছিলো? ওটা আর এটা মিলে ভালো জমেছিলো। হাসি
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

জ্বীনের বাদশা দিয়েছিলেন। পোস্টের সাথের কমেন্টটাও সম্ভবত: তিনিই দিয়েছিলেন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শামীম এর ছবি

সমস্যাটাকে ফোকাস করেছেন আপনারা। আমি সমাধানকে ফোকাস করে একটা পোস্টাইছিলাম। সেটা এখন সচলায়তনেও দিলাম
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পোস্টে সংযুক্ত কমেন্টটি আমার ছিল।
তখন কোনো প্রতিমন্তব্য করেননি দেখে আমি ভেবেছিলাম আপনি ক্ষেপে গেছেন। হাসি
এখন সংযুক্তি দেখে ভালো লাগলো।
_________________________
'আজকে না হয় ভালোবাসো, আর কোন দিন নয়'

অতিথি এর ছবি

আমি বলেছিলাম এটা জানার জন্যই যে আপনারা ফিরবেন কিনা। আখের গুছিয়ে ফিরে এলেই বাংলাদেশের আখেরে লাভ।

মনের কথা

দিগন্ত এর ছবি

আমার মনে হয় আমিও এটার একটা পালটা পোস্ট দিতে পারি। সময় পেলে নিশ্চয় দেব ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমার এই পোস্টটা আসলেই বায়াসড। উদ্দেশ্যই ছিল চিন্তাগুলো উসকে দেয়া। আপনার পাল্টা পোস্টের প্রক্ষিতে একটা ভাল তর্ক হতে পারে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি এর ছবি

অপ্রাসঙ্গিক কথা বলার জন্য ক্ষমা চাই। টি এন্ড টি সম্পর্কে জানতে চাই বিস্তারিত। অবশ্যই অবশ্যই। কৃতজ্ঞ থাকব।

মনের কথা

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

টি এন্ড টি কেন? বড় যেকোন সরকারী সংস্থার বিগ পিকচারটা প্রায় একই রকম। সময় পেলে লিখব।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শামীম এর ছবি

একটু অন্য আঙ্গিকে কথা বলি একটা:

স্ট্রাটেজি গেম খেলতাম পাগলের মত। রাস্ট্র পরিচালনা একটা ব্যবসার মত মনে হয়েছে .... সবার জন্য সুবিধা তৈরী করে দাও... সবাই ট্যাক্স দেবে.. উন্নয়ন হতে থাকবে। ব্যাপারটা গেমের মত অতটা সহজ না হলেও আদতে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।

দেশ পরিচালনায় যারা আছে তাঁরা এই বিগ-পিকচারটা বুঝে না বলেই মনে হয়। যার ফলে সমস্ত কার্যক্রম ব্যক্তিকেন্দ্রীক হয়ে পড়ে। তাই দেশের আগে নিজের পকেট দেখে ... ন ন্...না ... নিজের পকেট দেখে, কিন্তু দেশের পকেট কিভাবে দেখতে হয় সেটা সম্পর্কে কোন ধারণা বা ক্লু-ই মনের মধ্যে নাই।

সকলে বিদেশি মোবাইল ফোন কম্পানিকে গালি দেয়। কিন্তু আমি দেখি যে, এদের কারণে অর্থনীতিতে গতিশীলতা এসেছে। সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে। যখন ৬.৯০ টাকা প্রতি মিনিটে দিতাম, তখন সেই ৯০ পয়সা কিন্তু সরকার ট্যাক্স পেত। আর এভাবে ট্যাক্স আসলেই তো পাবলিক ফ্যাসিলিটি গড়ে উঠবে। (পুজিবাদী সিস্টেম)

ব্যবসা দুই রকমেরই হয়। ১. মানুষ ঠকায় বা ঠেকায় নিজের পকেট ভরানো, আর ২. মানুষকে তাঁর প্রয়োজনীয় সার্ভিস দিয়ে পকেট ভরানো। ২য়টার কয়েকটা উদাহরণ দেশেই আছে .. যার একটা হলো গ্রামীন ফোন (সিটি সেল যেখানে উল্টা কাজ করতেছিলো শুরুতে)। রাজনীতিবিদ নীতিনির্ধারকগণ ২য় এবং দরকারী উপায়টা দেখতে বা খুঁজে বের করতে পারেন না। এর ফলাফলে সকলেই সেটা অনুসরন করেন -- নিজের পকেট ভরাই আগে।

অর্থাৎ সিস্টেমটাকে মাথা থেকে ঠিকমত পরিচালনা না করতে পারলে, আবশ্যম্ভাবী প্রতিক্রিয়া হিসেবে সাধারণ লেভেলে দূর্নীতির জন্ম হবে। এতে ব্যক্তির চেয়ে নীতি নির্ধারক লেভেলে দায়ভারটা বেশী বলেই মনে করি আমি। অবশ্য দুই বার দেশ ভাগের ফলে স্টেবল সামাজিক কাঠামোটা ভেঙ্গে পড়াটাও একটা বড় কারণ এখানে।

অন্য উন্নত দেশেও উচ্চ পর্যায়ে আমাদের দেশের মত বা এর চেয়ে বেশি পরিমানে দূর্নীতি আছে; কিন্তু আমাদের দেশের মত তৃণমূল পর্যায়ে নয়।
(সম্পুর্ন ব্যক্তিগত মতামত - একটানে এলোমেলো লেখা মন খারাপ )
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

টপ ডাউন বিশ্লেষন। সব দোষ নীতি নির্ধারকের, তারপর তার সাবঅর্ডনেটের, ব্লা ব্লা। বটম-আপ কি হতে পারে? এইসব নীতি নির্ধারকের জন্ম কিভাবে, বেড়ে উঠা কিভাবে? কেন তারা এইরকম হচ্ছে? এদের তৈরী করার সেই মেশিনটা কি? রাষ্ট্র?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শামীম এর ছবি

শুধুই একটা পয়েন্ট অব ভিউ। আমাদের ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের বয়স দেশের বয়সের চেয়ে বেশি।

দেশটা অন্য সব দেশের মত স্টেবল অবস্থায় থাকলে এরা নীতি নির্ধারকের আসনে যেতে পারতোনা বলেই মনে হয়। অন্ততপক্ষে ভারতভাগ, আর মুক্তিযুদ্ধ (+পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবি হত্যা)দুটি বিরাট আনস্টেবিলিটির জন্ম দিয়েছে সামাজিক ও রাস্ট্রীয় কাঠামোতে।

গতকালের ফকির বা বখাটে পরদিন বিরাট জমিদারী দখল করে মাথায় উঠে গেছে - সমাজের মাথা হয়ে গেছে। তারপর তাঁর অযোগ্যতাকে ঢাকতে যোগ্য যে কয়জন ছিলো তাঁদেরকে কোনঠাসা করে কিক আউট করেছে। যোগ্যরা নীতি নির্ধারণে যোগ্য হলেও এই কিক-আউটের খেলায় যোগ্য ছিল না, যোগ্য হওয়ার কথাও না - বলাই বাহুল্য।

আবার যে কর্মকর্তার এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য আরও ৫/৬ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা লাগবে, পদ খালি জন্য ১ বছরে দুটো প্রমোশন পেয়ে সে সুপারইন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিয়ারের চেয়ারে চলে গেছেন। তারপর, নিজের দূর্বলতা ঢাকতে চারিদিকে চাটুকার জড়ো করেছেন।

দেশ পরিচালনায় যে সকল কন্ঠসর বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারতো, সরকারকে গাইডলাইন দিতে পারতো, তাঁদেরকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে যুদ্ধে (বুদ্ধিজীবি হত্যা) .. নিঃসন্দেহে হানাদার বাহিনী ও তাঁদের দোসররা খুব জ্ঞানী ছিলো মন খারাপ । জিততে পারেনি তো কি হয়েছে, এক ধাক্কায় দেশটিকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।

কাজেই কারো উপর এককভাবে দোষ দেয়াটা মনে হয় ঠিক হবে না। স্টেবল অবস্থায় আসতে (পানি ঘোলা হয়েছে, ময়লা থিতিয়ে স্বচ্ছ হতে) কিছু সময় লাগবে। সেটা হতে পারে আরো ২৫ বছর।

এর মধ্য থেকেই চেষ্টা করে যেতে হবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অচেনা এর ছবি

আমার এই পোস্টটা আসলেই বায়াসড।

১০০% ভাগ।
এরকম পোস্টের পেছনে কিছুটা গাঁজার অবদান থাকতে পারে ;)।

আর কিছু লিখলামনা। মডুদের ভয় পাই খুব।
সাই থেকে একবার শহীদ হয়ে এখানে এসছি।
আবার শহীদ হওয়ার খায়েশ নাই।


-------------------------------------------------
আমি ভালবাসি বিজ্ঞান
আমি ঘৃণা করি জামাত॥

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

গাঁজা খেয়ে লিখিনি। পিছনের ইতিহাস নিয়ে আরেকটা পোস্ট হতে পারে। যেখানে চমৎকার একটা দুঃখবোধ - ৪০ বছর বয়সী চাচার পরিবার চোখের সামনে ধ্বংস হতে দেখার বেদনা থাকবে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অচেনা এর ছবি

আমি সমষ্টিক ব্যাপারে কথা বলছিলাম বস।

-------------------------------------------------
আমি ভালবাসি বিজ্ঞান
আমি ঘৃণা করি জামাত॥

অতিথি এর ছবি

আমি আমাদের দেশের একটা সমস্যার কথা বলি। আমাদের দেশে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষিতদের বেশীর ভাগই রাজনীতিকে ঘৃণার চোখে দেখে। সেই কারনে রাজনীতিতে তারা অংশগ্রহন করছে না। এমনকি শিক্ষিত মা বাবারা ছেলেমেয়েদের রাজনীতি থেকে দুরে থাকতে বলছেন। তাদের কাছে পড়াশুনা করে বড় মায়নার চাকরী জোগার করাটাই মূল লক্ষ্য। এরা আবার পরবর্তীকালে সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না।

আবার স্বার্থলোভী নেতাদের কাছে দলীয় এবং অ্যাকশন স্কোয়াডের কাজকর্ম চালানোর জন্য বাপে ভুলানো মায়ে খেদানো ছেলেই বেশী লোভনীয়। এরাই তাদের সাথে যোগ দিচ্ছেন, আস্তে আস্তে লোকাল নেতা, এম এল এ, এম পি র জায়গা এমনকি মন্ত্রীর পদ দখল করছেন। এদের কাছ থেকে দেশের উন্নয়নের জন্য কি আশা করা যেতে পারে।

গুছিয়ে লিখতে পারলাম না। বোঝাতে পেরেছি নিশ্চয়ই?

"মনের কথা"

অমিত এর ছবি

আমি অন্যদিকে একটু বলি। ব্যাপারটা হচ্ছে নীতিনির্ধারকরা কারা হচ্ছে ? আরেকটু স্পেস দিতে চাইলে বলি যে কারা হবে ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারক ? এখনকার গভর্নমেন্ট জব কয়জনকে আকর্ষণ করতে পেরেছে ? এই অবস্থাতো মনে হয় ৮০র দশক থেকেই। বাইরে আসার সুযোগ আছে, আছে মাল্টিন্যাশনাল কম্পানিতে কাজের সুযোগ। এই দুই অবস্থার বিপরীতে একজন একজন সরকারি অফিসারের স্টেবল হতে হতে জীবনের আসল সময়টাই পার হয়ে যায়।হাতে গোনা যায়, এরকম কয়েকটা অপশন ছাড়া অন্য সবখানে একজন সরকারি অফিসারের জীবনকে মোটামুটি এনজয় করার অবস্থায় আসতে আস্তে প্রায় মধ্যবয়স হয়ে যায়, আরাম করে তার পোলাপান। তো এরকম যখন অবস্থা, দেশের ভবিষ্যত নীতিনির্ধারক নিয়ে কেউ যদি খুব আশাবাদী হন, আমি তার বক্তব্য শুনতে আগ্রহী।

কেমিকেল আলী এর ছবি

পাশ করে দেশের বাইরে চলে এসেছি। কোরাপ্টেড সিস্টেমে কোরাপ্টেড হবার আগেই। এ ব্যাপারে ভাগ্যবান মনে করি নিজেকে। উন্নয়নের জোয়ার দেখে আমি খুশী। মরুক শালার দুর্নীতিবাজ হাভাতেরা। তবু গরম পানির ছিটা আমার গায়েও পড়ে। কেবলই সরে যেতে চাই, পারিনা।

সৌরভ এর ছবি

আমি একটু উসকে দেই।

নিজের কাছাকাছি কেউ যখন বিসিএস ভাইভা দিতে যায়, তখন আপনি শুভাকাঙ্খী হিসেবে তদবিরের লাইন-ঘাট খুঁজতে যান কি না?
নিজেরা কষ্ট পাবো এরকম প্রিয় কেউ যখন দুর্নীতির জন্যে চাকুরি হারায়, তখন কষ্টটা বুকে লাগে তো?
কারণ ছোটখাটো টুপাইস কামানো লোকটাও হয়তোবা আপনার বোনের জামাই কিংবা মামা-চাচা।

এইরকম একটা অবস্থায় থাকলে ব্যাপারটাকে কীভাবে নেন আপনারা?

আমার বাবা একটা ব্যাংকে ইন্সপেকশন ডিপার্টমেন্টের কর্তা গোছের একটা ছোটখাটো চাকুরি করতেন। ছোটবেলায় দেখতাম, ব্যাংকে মাঠ-পর্যায়ে দুর্নীতির জন্যে যে লোকগুলোর বিরুদ্ধে রিপোর্ট যেত, তারা বউ-বাচ্চাসহ আমাদের বাসায় এসে আমার মায়ের কাছে এসে কান্নাকাটি করতো। কিছুই করার থাকতো না অবশ্য খারাপ লাগা ছাড়া।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

শামীম এর ছবি

এটা ঠিক যে, স্বজনদের মধ্যে কেউ দূর্নীতি করে ফেঁসে গেলে খারাপ লাগে। কিন্তু তাই বলে কি মনের মধ্য বাস করা আদর্শটার সাথে আপোষ করতে হবে?

এটাও ঠিক যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে দূর্নীতি করে। শখ করে কেউ ও পথে পা বাড়ায় না। চারিদিকে দূঃখীমুখগুলোতে হাসি ফোটাতে নিজের মনের শান্তি নষ্ট করেন। তবে, ব্যতিক্রম কি নেই? প্রশ্ন হচ্ছে সেইগুলো ব্যতিক্রমের বা সংখ্যালঘুর দলে পড়ছে কেন?

কিছু লোক তো আপোষ করেনি। সারা মাসে একদিন আমিষ খেয়েছি .. পুরানো কাপড়/বই জোগাড় করে পড়েছি .. মনে মনে বাবাকে গালি দিয়েছি নির্বুদ্ধিতার জন্য - তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তার চারতলা বাড়ী, কার্পেট, রঙীন টিভি, ভিসিআর ... আর আমরা অতিকষ্টে একটা সাদাকালো টিভি, ভাড়া বাসা, শতছিন্ন আসবাব। কিন্তু আজ সেই বাবার আপোষহীনতাকে সম্মান করি ... উনি ঠিক পথেই ছিলেন। আমাদের দূঃখী ও ক্রোধান্বিত মুখের দিকে তাকিয়েও উনি আপোষ করেননি।

সকলে এমন কষ্টে ছিল/থাকে তা তো না। দূর্নীতি না করেও অনেকে ভালো আছে.. থাকে। বিকল্প আয়ের পথটা হয় একটু/বেশ কষ্টকর। হয়তো স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই কাজ করতে হয়। স্ত্রী হয়তো বাসায় সেলাই করে দু-পয়সা উপার্জন করেন। স্বামী হয়তো চাকরীর পাশাপাশি অন্য কাজ করেন, টিউশনি করেন - ন্যায়সংগত পথে উপার্জন করেন। অনেকে পতিত জমি (যাদের আছে)চাষ করেন, ফল বিক্রি করেন। সব্জি উৎপাদন করেন। দূর্নীতির সহজ পথে পা বাড়ান না - আপোষহীনভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যান।

সুতরাং এই ব্যতিক্রমগুলোই স্বাভাবিক হওয়া উচিৎ ছিল। আর ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে, তারপর - গাড়ীর অভাব, সকলকেই তো গন্তব্যে পৌছাতে হবে, তাই সকলকেই নিয়েছি - সত্য হলেও এটা শুনতে ইচ্ছা করে না। গাড়ী যখন নেই কিন্তু গন্তব্যে যেতেই হবে, তখন সাহস করে হেঁটে যাওয়াই ভালো।

একটু একপেশে শোনালো হয়তো। ইয়ে, মানে...

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

হাঙ্গরিকোডার1 এর ছবি

সবগুলো কমেন্ট পড়ার ধৈর্য ও সময় হল না। সাহিত্য হিসেবে লেখাটাকে ভালই মনে হচ্ছে। কিন্তু নির্দেশকের সাথে একমত নই।

প্রথম ঘটনার উত্তরে একটা কথা বলছি। যে ছেলেটা বাবার ঘুষের টাকা প্রাইভেট পড়ছিল ভবিষ্যতে কি সে আপনার সাইটের স্লোগানের সাথে চলতে পারবে?
প্রাইভেট না পড়েও কি অনেকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে নি?

পরিশেষে প্রশ্ন: আপনি কি তাহলে ঐ অবস্থাগুলোকেই সমর্থন করছেন? নাকি বলছেন স্বল্পসময়ে এগুলো ঝেড়ে ফেলা অবাস্তব! প্রথমটা হলে বলার কিছু নেই। দ্বিতীয়টা হলে বলব:
হ্যা, সময়টা তো কমই। কম সময়ে করা ছাড়া উপায় কি? যারা এগুলো করতে চাইছে তাদেরকে কি আমরা এর চেয়ে বেশি সময় দিতে প্রস্তুত? আপনিও কিন্তু তাদের সময় শেষ হওয়ার আগেই সমালোচনার তীর মারতে শুরু করেছেন।

জবর ব্যাপার, আমার নামে কমেন্ট করতে পারছি না। বলছে ইউজার আছে। আবার লগিন করতে গেলে বলে একটিভ নয়। রেগে টং

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।