দিনমজুরের মিয়ানমার সম্পর্কিত অসম্পুর্ণ ''স্যাফ্রোন বিপ্লবের'' প্রতি বিপ্লব

মির্জা এর ছবি
লিখেছেন মির্জা (তারিখ: মঙ্গল, ২৬/০২/২০০৮ - ৭:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দিনমজুর, বিনয়ের সাথে বলতে চাই মায়ানমার সম্পর্কিত আপনার লেখাটি একপেশে এবং অসম্পূর্ন। যদিও আপনি আপনার সোর্স হিসেবে Anglo-American Oil Politics and the New World Order লেখক William Engdahl-এর মত লেখক এবং Sara Flounders-এর মত Anti War Activist দুইজন নামকরা মানুষের নাম লিখেছেন তারপরও বলতেই হচ্ছে আপনার লেখাটি একপেশে । ব্যাক্তিগতভাবে আমাদের অনেকের মতই আমি আমেরিকা এবং ব্রিটেনের জঘন্য যুদ্ধনিতির তীব্র বিরোধি একজন মানুষ অসুবিধা হল William Engdahl এবং কট্টর বাম্পন্থি Sara Flounders ব্যাক্তিগতভাবে চরম আমেরিকা-ব্রিটেন বিরোধি বলে এদের ভাল কাজগুলোকেও তারা খারাপ বলছেন।

আসুন দেখি কেন।
আপনি কি জানেন পৃথিবীতে বার্মা একমাত্র দেশ যেখানে ধর্মের নামে মানুষকে তার সাধারন অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়? আমরা ইসরাইল আর ঈহুদি অত্যাচারের কথা বলি, কিন্তু ক’জনে খবর রাখি বার্মাতে আপনি যদি মুসলমান ধর্মাবলম্বি হন তবে আপনার চিকিতসা, শিক্ষা,স্বাস্থ্য এমনকি বিয়ে করার অধিকার নেই? মুসলমান মেয়েকে ধর্ষন করা হলে প্রচলিত আইনে তার বিচার পাওয়া প্রায় অসম্ভব কেননা সামরিক জন্তার বিচারে সত্যিকারের বার্মিজ কেউ মুসলমান হতে পারে না।

ব্রিটেন-আমেরিকা সহ আরো অনেক দেশ এর প্রদিবাদ করেছে।

নিঃশ্চই শুনে থাকবেন কিছুদিন আগে ক্যারেন নেতা খুন হয়েছেন থাই-বার্মা সীমান্তে, কিন্তু আমরা কি খবর রাখি সুধুমাত্র ক্যারেন (উপজাতীয় Christian ) হওয়ার কারনে মুসলমানদের পরই সবচেয়ে অত্যাচারিত আর নিকৃষ্ট ‘জাত’ হিসেবে এদেরকে গভীর জংগলের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে!

এর প্রতিবাদও করেছে পশ্চিমা বিশ্ব।

শতকরা আশি ভাগেরও বেশি ভোট পেয়ে জনগনের নির্বাচিত নেত্রি আন সাং সুকি কে এরা আজ এতটা বছর বন্দী করে রেখেছে।
দিনমজুর ভাই, আপনার বা সাধারণভাবে আপনার লেখার বিরুদ্দধে আসলে আমি লিখছি না, বিশ্বাস করুন। আমার তীব্র খোব হয় যখন দেখি নআমি-দামি লেখক আর Political and Human rights activist-রা বার্মার মত একটি দেশের অত্যাচারী মানুষের পেছনে না দাঁড়িয়ে তাদের ব্যাক্তিগত জেদ মেটাতে শুরু করেন।

কিছুদিন আগে বেশ কিছু নির্বাসিত বার্মিজ মানুষের সাথে আমার দেখা হয় লন্ডনের একটি জনসভায়, তারা কোন রাজনৈতিক দলের সাথে নয়, তারা ব্রিটেন-আমেরিকা এবং ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের সমালোচনা করছে বার্মার সামরিক শাষকদের ব্যাপারে আরো কঠিন ব্যাবস্থা কেন নিচ্ছে না সে জন্যে। তাদের ভাষায়ঃ “Over 1 million people have been forced from their homes since 1988. There are currently at least 1100 political prisoners in Burma, many of whom are routinely tortured and as many as 70,000 child soldiers – more than any other country in the world. Rape is used as a weapon of war against ethnic women and children.
Nearly half the government budget is spent on the military and just 19p per person per year on health. One in ten children die before their fifth birthday”
আপনার লেখায় ব্রিটিশ ও আমেরিকার তেল কম্পানীগুলোর কথা লিখেছেন কিন্তু যে গুরুত্বপূর্ন তথ্যটি আসা উচিত ছিল তা হল ব্রিটিশ এবং আমেরিকান তেল কম্পানীগুলো নির্বাসিত বার্মিজ জনগন এবং আমার আপনার মত সাধারণ মানুষের তীব্র আন্দোলন, বিক্ষোভ এবং চাপের কারনেই শুধুমাত্র সেখান থেকে ফিরে আসতে বাদ্ধ হয়। তেল থেকে টাকা এরা ভালই কামচ্ছিল! কিন্তু Human Rights organization এবং Exile Burmese community’র বক্তব্য হল যে পয়সা গ্যাস সহ যে কোন রাষ্ট্রীয় আয় জনগনের কাজে ব্যায় না হয়ে আর্মি জেনারেলরা নিজেদের ভোগ বিলাসে ব্যায় করছে। আর্মি জেনারেল Than Shwe's’র মেয়ের বিয়েতে মোট খরচ হয়েছে $50 million আর সেই দেশে চিকিতসা ক্ষেত্রে প্রতি বছরে মাথা পিছু (মুসলমান জনগোষ্ঠি ছাড়া) ব্যায় করা হয়৩৮ সেন্ট!!! পিশাচ জেনারেলগুলো নিজেদেরকে কমিউনিষ্ট দেশ হিসেবে পরিচয় দিতে চায় কিন্তু এমন পৈশাচিক অবস্থা কমিউনিজমের কোন বইতে তারা পেল?

সে কারনে তীব্র চাপেরমুখে লাভ জনক তেল ব্যাবসা থেকে আমেরিকা-ব্রিটেনের কম্পানিগুলোকে বার্মা থেকে চলে আসতে হয়েছে।

দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের কথা না ভেবে Than Shwe আর তার দোসরেরা ভাগ্যগননাকারী (জ্যোতিষি) এক মহিলার উপদেশমাফিক দেশের নাম করে নিল মায়ানমার আর উপজাতি শিশু-মহিলা-যুবা-পুরুষদেরকে ধরে ধরে নিয়ে গিয়ে সেই একই জ্যোতিষির কথায় জংগলের মাঝখানে নতুন রাজধানী বানিয়ে তার নাম দিল Naypyidaw (এই নামটিও শেষ মুহূর্তে পরিবর্তিত নাম, জ্যোতিষ নাকি স্বপ্ন দেখেছেন অন্যনামটি অকল্যানকর এবং ইহা পুরোপুরি সত্য ঘটনা)
সারারাত সারাদিন ধরে এই মানুষগুলোর কথা বলে যেতে পারি শেষ হবে না। ইসরাইল, অষ্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত কিভাবে এই অত্যাচারের সামিল হছে সেটা আরেক ইতিহাস!!!
কায়মন বাক্যে প্রার্থনা করি বার্মার সামরিক শাষন নিপাত যাক, সাধারণ মানুষের কল্যান হোক!

পরিশিষ্টঃ আমার দেখা সেই বার্মিজ মহিলা সবশেষে শুধু বলেছিলেন গুগল ইমেজ সার্চে Burma Torture দিয়ে দেখ কি আসে! আপনারাও দেখুন! ছবিগুলো এত বিভতস যে সচল-এ আর দিলাম না ইচ্ছে করেই


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

নতুন কিছু জানা হোল। আপনার এধরনের লেখা আরো দিলে ভাল হয়।
...............................
খাল কেটে বসে আছি কুমিরের অপেক্ষায়...

মির্জা এর ছবি

সাধ্যমত চেষ্টা করব।

অতিথি লেখক এর ছবি

**********দিনমজুর************
আপনাকে ধন্যবাদ এ কারণে যে, আপনি আমার উক্ত লেখাটি ধৈর্য ধরে পড়েছেন এবং তার প্রতিক্রিয়ায় এই লেখাটি তৈরি করেছেন- যদিও প্রতি বিপ্লব বলার পরেও পুরো লেখায় আমার লেখাটির কোন কোন জায়গায় আপনি আপত্তি পেলেন তার যুক্তিযুক্ত বিশ্লেষণ খুজে পেলাম না।
আপনার পুরো লেখা জুড়ে মিয়ানমারের বর্তমান অবস্থা, এখানকার শাসন ব্যবস্থার সমস্যা-সংকট, সেখানকার সাধারণ জনমানুষের উপর নির্যাতন-নীপীড়ন এসব লিখেছেন। এসব কি আমার লেখাটিতে কোন জায়গায় অস্বীকার করা হয়েছে? আমার লেখাটির একদম শেষ প্যারাতে দেখলে বুঝবেন, এমনকি শুরুর প্যারাগুলোতেও এসবকেই তুলে ধরেছি।

তবে, আপনার এ লেখা পড়ে, আপনার আপত্তির একটা জায়গা অবশ্য বুঝতে পেরেছি- সেটা হলো আমেরিকা-বৃটেনকে আমার লেখায় তীব্রভাষায় আক্রমণ করার চেস্টা করা হয়েছে। সেটি যদি আপনার আপত্তির মূল কারণ হয়- তবে আমার লেখার পয়েন্ট গুলো ধরে ধরে আলোচনা করাটাই উচিত বলে মনে হয়। আমেরিকা-বৃটেন -এ বার্মায় সংগঠিত বিভিন্ন মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ হয়েছে- শুধু এটা বলে আমেরিকা-বৃটেনের কৃত অপকর্মসমূহ লাঘব করা যাবে?????????

"William Engdahl এবং কট্টর বাম্পন্থি Sara Flounders ব্যাক্তিগতভাবে চরম আমেরিকা-ব্রিটেন বিরোধি বলে এদের ভাল কাজগুলোকেও তারা খারাপ বলছেন"- একথা যখন বলেন, এবং আমার লেখার সূত্র ধরেই যখন বলেন- তখন ধরে নিতে হয়- মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সাফ্রোন বিপ্লবে যুক্তরাষ্ট্রের নানাবিধ উপস্থিতিকে আপনি হয়তো ভালো বলতে চাইছেন!!! এটিকে ভালো আপনি বলতেই পারেন- তবে শুধু এটুকু বলতে পারি- এই ভালো যুক্তরাষ্ট্র করে নিজেরই স্বার্থে, বার্মার জন সাধারণ কেবল খেলার পুতুল!!!

মির্জা এর ছবি

হয়ত সু-লেখক নই বলেই 'দিনমজুর' আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারিনি। তবে ভেবেছিলাম আপনি হয়ত আমকে আমেরিকা বা ব্রিটেন কে ভাল ভাবি সেই পন্থি ভাবতে পারেন তাই আগে ভাগেই বোঝাতেও চেয়েছি আমি মোটেও তা নই। ব্রিটেন বা আমেরিকাকে আক্রমণ করে লেখেছেন তাতে আমি মোটেও আপত্তি করিনি (করবও না) আর তাই আমি দুটো ব্যাপারে আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
এক, আপনার লেখায় আমার কোন আপত্তি নেই, তাই বলেছি অসম্পূর্ণ লেখা।
দুই, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইয়োরপিয় ইউনিয়নের বার্মা বিষয়ের বৈদেশিক নীতির অনেক কিছুই হচ্ছে, আবারো লিখছি, আমার আপনার মত সাধারন মানুষ আর নির্বাসিত বার্মিজ মানুষের চাপ, বিক্ষোভ আর প্রতিবাদের ফসল। অনেক দেশই আছে যারা বার্মাকে নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাতে রাজি না, সেই সব দেশ এবং জি৮-এর দেশগুলো আজ যে বার্মার বিষয়ে কথা বলছে এটা কিন্তু এইসব সরকারের সতঃস্ফুর্ত সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ নয় এটা হচ্ছে দির্ঘদিনের আন্দোলন, চাপ প্রয়োগ, লবিং-এর ফসল। সুতরাং কেউ যদি ঢালাওভাবে এই সবকিছুকে আমেরিকা-ব্রিটেনের স্বার্থ বলে ফেলে, তাতে করে কিন্তু যে মানুষগুলো দিন-রাত অমানবিক কষ্ট স্বীকার করে আজ ‘’ঘার ত্যাড়া’’ স্বার্থবাদি দেশগুলোকে বার্মার মানুষদের কথা ভাবতে বাধ্য করছে তাদেরকে ছোট করা হয়; আর আমার সকল আপত্তি সেখানেই।

অতিথি লেখক এর ছবি

**********দিনমজুর************
মির্জা,
আপনাকে আবারো ধন্যবাদ, আপনার জবাবটির জন্য- কেননা এটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। যাহোক, আপনার সাথে আমার দ্বিমতের জায়গাটি সম্ভবত এরকম যে, আপনি মনে করেছেন- আমি আমার লেখায় সাফ্রোন বিপ্লবটিতে জনসাধারণের ভূমিকাকে খর্ব করে দেখিয়েছি, একে শুধুই আমেরিকার ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখিয়েছি- ফলে তা হয়েছে অসম্পূর্ণ; এবং আরেকটি বিষয় আপনি মনে করেন- আমেরিকা বা বৃটেনের মিয়ানমার কেন্দ্রিক যে বৈদেশিক নীতি তা সাধারণ জনগণের বহু আন্দোলনের ফসল।

এ পরিপ্রেক্ষিতে আমার অবস্থানটি পরিস্কার করছিঃ
১। আমার লেখাটি পড়লে বুঝবেন- আমি কিন্তু এই বিপ্লবে জনসাধারণের ভূমিকাকে ক্ষুন্ন করার চেস্টা করিনি। আমার লেখার শেষ প্যারাটি বা ফিনিশিংটির দিকে আবারো আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তবে এটা ঠিক - পুরো লেখাটিতে সাধারণ জনগণের বিক্ষোভ, তাদের ভূমিকা প্রাধান্য পায়নি। পায়নি কারণ- লেখাটির উদ্দেশ্য বিশ্বরাজনৈতিক পরিস্থিতিটি বিশ্লেষণ করা, এই সাফ্রোন বিপ্লবের অন্তরালের বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা(লেখার শিরোনামও মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সাফ্রোন বিপ্লব ও বিশ্বরাজনীতি)। ফলে- সে লেখায় স্বভাবতই এই বিশ্লেষণই প্রাধান্য পেয়েছে।

২। আমি অবশ্যই মনে করিনা যে, মিয়ানমার কেন্দ্রিক আমেরিকার যে নীতি ও কর্মকাণ্ড তা জনগণের আন্দোলনের ফসল। ঐসব গুপ্ত কর্মকাণ্ড, নীতি সমস্ত কিছুই তার ঐ অঞ্চলে রাজনৈতিক-সামরিক প্রভাব বিস্তারেই পরিচালিত। কিন্তু তাই বলে, আমি দেশে দেশে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিক্ষোভ-প্রতিবাদকে অসম্মান বা অস্বীকার করছি না; বরং মনে করি এ ধরণের ব্যাপকারে বিক্ষোভ-প্রতিবাদই একমাত্র উপায় সমস্ত অন্যায়ের অবসান ঘটানোর। মজার ব্যাপার যে চীন- তার নিজ স্বার্থে মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সমর্থন ও পুষ্ট জুগিয়ে গেছে- সেই চীনেও কিন্তু বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পক্ষে- সামরিক জান্তার বিপক্ষে এমনকি চীন সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণবিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো- যতক্ষণ জনগণের প্রকৃত সরকার গঠিত না হয় ততক্ষণ সরকারগুলো গণমানুষের দাবি-দাওয়া, বিক্ষোভ এসবকে থোড়াই কেয়ার করে!!

অতিথি লেখক এর ছবি

**********দিনমজুর************
মির্জা,
আপনাকে আবারো ধন্যবাদ, আপনার জবাবটির জন্য- কেননা এটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। যাহোক, আপনার সাথে আমার দ্বিমতের জায়গাটি সম্ভবত এরকম যে, আপনি মনে করেছেন- আমি আমার লেখায় সাফ্রোন বিপ্লবটিতে জনসাধারণের ভূমিকাকে খর্ব করে দেখিয়েছি, একে শুধুই আমেরিকার ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখিয়েছি- ফলে তা হয়েছে অসম্পূর্ণ; এবং আরেকটি বিষয় আপনি মনে করেন- আমেরিকা বা বৃটেনের মিয়ানমার কেন্দ্রিক যে বৈদেশিক নীতি তা সাধারণ জনগণের বহু আন্দোলনের ফসল।

এ পরিপ্রেক্ষিতে আমার অবস্থানটি পরিস্কার করছিঃ
১। আমার লেখাটি পড়লে বুঝবেন- আমি কিন্তু এই বিপ্লবে জনসাধারণের ভূমিকাকে ক্ষুন্ন করার চেস্টা করিনি। আমার লেখার শেষ প্যারাটি বা ফিনিশিংটির দিকে আবারো আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তবে এটা ঠিক - পুরো লেখাটিতে সাধারণ জনগণের বিক্ষোভ, তাদের ভূমিকা প্রাধান্য পায়নি। পায়নি কারণ- লেখাটির উদ্দেশ্য বিশ্বরাজনৈতিক পরিস্থিতিটি বিশ্লেষণ করা, এই সাফ্রোন বিপ্লবের অন্তরালের বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা(লেখার শিরোনামও মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সাফ্রোন বিপ্লব ও বিশ্বরাজনীতি)। ফলে- সে লেখায় স্বভাবতই এই বিশ্লেষণই প্রাধান্য পেয়েছে।

২। আমি অবশ্যই মনে করিনা যে, মিয়ানমার কেন্দ্রিক আমেরিকার যে নীতি ও কর্মকাণ্ড তা জনগণের আন্দোলনের ফসল। ঐসব গুপ্ত কর্মকাণ্ড, নীতি সমস্ত কিছুই তার ঐ অঞ্চলে রাজনৈতিক-সামরিক প্রভাব বিস্তারেই পরিচালিত। কিন্তু তাই বলে, আমি দেশে দেশে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিক্ষোভ-প্রতিবাদকে অসম্মান বা অস্বীকার করছি না; বরং মনে করি এ ধরণের ব্যাপকারে বিক্ষোভ-প্রতিবাদই একমাত্র উপায় সমস্ত অন্যায়ের অবসান ঘটানোর। মজার ব্যাপার যে চীন- তার নিজ স্বার্থে মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সমর্থন ও পুষ্ট জুগিয়ে গেছে- সেই চীনেও কিন্তু বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পক্ষে- সামরিক জান্তার বিপক্ষে এমনকি চীন সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণবিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো- যতক্ষণ জনগণের প্রকৃত সরকার গঠিত না হয় ততক্ষণ সরকারগুলো গণমানুষের দাবি-দাওয়া, বিক্ষোভ এসবকে থোড়াই কেয়ার করে!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।