অশ্লীল অভিভাবক তুমি “Mother fu***r

মির্জা এর ছবি
লিখেছেন মির্জা (তারিখ: মঙ্গল, ১৪/১২/২০১০ - ১২:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই লেখাটি শুধুমাত্র Boiogocal and mental বয়স যাদের ২১-এবং এর উপরে তাদের জন্যে লেখা। লেখাতে কাতু-কুতু পাওয়ার মত কিছুই নেই তাই অনুরোধ করছি যাদের বয়স অন্তত ১৮-এর নীচে, তাদের কেউ লেখাটা না পড়লেই হয়তো ভাল)

বেশ একটা আত্নতুষ্টির হাসি হেসে আমার উচ্চ শিক্ষিত এই ভাই ওনার মেয়ের রুম থেকে ভেসে আসা গানের দিকে আমার দৃষ্টি আকর্ষন করে বললেন, ‘’আজকালকার ছেলে-মেয়েরা বাংলা গান শুনতেই চায় না, আর কি যে ইংরেজি গান শোনে কিচ্ছু বুঝিন না! অথচ এই ব্যাক্তির ইংরেজী জ্ঞান আমদের অনেকের চেয়ে ভাল, তাই আমি বুঝতে পারলাম না Eminem-এর গানটিতে বারবার বলা ‘fuck’ কিংবা “motherfucker’’- শব্দগুলোর কোন অংশটি তিনি বুঝতে পারছেন না। যে গানটি শুনতে পাচ্ছিলাম সেটা ছিল ‘Marshall Mathers’ এই গানটির লিরিক খেয়াল করলে দেখবেন সেখানে মোট ১৭ বার ‘Fuck’, একবার ‘motherfucker’ বলা আছে এবং গানের মধ্যে বার-বার এই কথাগুলো repeat হচ্ছে!!! যে বাবা-মায়েরা এতই ভদ্র এবং নিঃস্পাপ যে বার-বার ‘fuck’ শব্দটা শুনেও তারা এর অর্থ বোঝেন না, তারা বাবা-মা হলেন কিভাবে আমি সেটাই ভেবে পাই না!!!

ইয়োরপে থাকাকালীন আমার সৌভাগ্য হয়েছে বাচ্চা এবং তরুন- তরুনিদের সাথে কাজ করার, আমার সেই ক্ষুদ্র অভিগ্যতায় কোনদিন কোন ভদ্র পরিবারে এভাবে খোলাখুলি ভাবে ‘motherfucker’-এর গান শোনার অভিগ্যতা তো আমার কোনদিন হয়নি! এ কোন ইংরেজ হওয়া তবে? কি ধরনের সভ্যতা? কেমনতর স্মার্টনেস্?

বাঙ্গালীর ইংরেজ হওয়ার খায়েস অসুস্থ্যতার পর্যায়ে চলে গিয়েছে বহুদিন আগেই, আর মধ্যবিত্ত সমাজে এটাতো ছড়িয়েছে এইড্স-এর মত। রোগ ভাল করা আমার পেশা বা অভিপ্রায় নয়, সে ধরনের কোন যোগ্যতাও আমার নেই। তার পরও একান্ত ব্যাক্তিগত ফ্রাস্ট্রেশন থেকে এই ব্যাপারগুলো শেয়ার না করে পারছিনা।

আমার এক বোনের ছেলেকে নিয়ে গিয়েছি ইষ্টার্ন প্লাজায় খেলনা কিনে দেব বলে। বিভিন্ন জিনিস দেখার পর ১০ বছর বয়সি বাচ্চাটা ‘Grand Theft Auto Vice City’ –নামে একটি গেইম আমাকে কিনে দিতে বলল!!! আমি আতঙ্ককিত হয়ে উঠলাম, অনেক কষ্টে, যতটা সম্ভব ভদ্রভাবে ওকে বোঝালাম কেন এই গেইম ওর জন্যে ঠিক না! বেচারা বেশ বিরক্ত হয়ে আমাকে বলল, কিন্তু আমার মাতো আমাকে এইসব গেইম চাইলেই কিনে দেয়! অভিমান করে বাচ্চাটা আমার কাছ থেকে আর কিছুই নিল না। বাসায় ফিরে ওর মা এবং বাবাকে আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে বললাম কেন তাদের এই গেইম বা এই ধরনের গেইম বাচ্চাদের কিনে দেয়া উচিত না।

যারা গেইমিং জগতের সাথে পরিচিত তারা সবাই ‘Grand Theft Auto’ বা ‘GTA’- সিরিজের গেইমগুলোর সাথে পরিচিত। ‘Grand Theft Auto-এমনিতেই 18 Rated game, স্পস্ট লেখা আছে ‘এক্সপ্লিসিট, সেক্সুয়াল অ্যান্ড ভায়োলেন্ট কনটেন্ট’ আর ‘Grand Theft Auto Vice City’ গেইমে-এ প্রথমবারের মত আর রাখ ঢাক না করে সরাসরি Prostitution, sexual intercourse-ইত্যাদি-ইত্যাদি জুড়ে দেয় গেইমের নির্মাতারা। সারা বিশ্বে, এমনকি খোদ আমেরিকা-ব্রিটেনেও এই নির্দিষ্ট ভার্শানের গেইমটা ডিস্ট্রিবিউশন বন্ধ করে দেয় নির্মাতা-পরিবেশকরা। বাংলাদেশে কিন্তু এই ভার্শান পাওয়া যায় যেখানে-সেখানে। তাতে আমার কিছু করার নেই। কিন্তু ইংল্যান্ডে ফিরে যাবার আগের রাতে দাওয়াত খেতে গিয়ে যখন দেখি আমার সেই ভাগ্নে মনের সুখে ‘Grand Theft Auto Vice City’- খেলছে, তখন আর মাথা ঠিক রাখতে পারি না, শুধু নিজেকে বোঝাই এর বেশি তোমার আর কিছুই করার নেই, তুমি কালকে চলে যাবে, সিন ক্রিয়েট করনা, তোমার আত্নীয়ের বাচ্চা তোমার এর বেশি অধিকার নেই, তোমার আর কিছুই করার নেই............

কি সুন্দর পুরো পরিবার একসাথে বলিউড সিনেমার নামে কামসূত্রের ভঙ্গিমায় রাঙ্গানো নাচ দেখছে, শুধুমাত্র কয়েকটা পয়সা গায়ে জড়ানো ‘কনজারভেটিভ’ বাঙ্গালী মেয়ে কোয়েনা মিত্রের নাচে দুলছে, এশার নামাজ আদায় করে ফুট ফেটিশ পর্ণগ্রাফি থেকে বানানো ‘বাবুজি যারা ধিরে চল দেখছে’ সেখানে আমিই হয়তো বেমানান, বড্ড বেশী “Old school”

কথায় কথায় ‘শীট’ আর “LOL”- বলার মতই “fuck your ass motherfucker”- এই গানগুলো হয়ত আসলেই এখন সাদামাটা হয়ে গিয়েছে; সেকারনেই হয়ত ১লা বৈশাখে পান্তা খাওয়া বাঙ্গালির চোখে-কানে এইসব গান বা নাচ আর খুব একটা খারাপ লাগে না এখন!

পাদটীকাঃ আমি চাইলেই লেখার প্রতিটি গালি পুরো না লিখে ** দিয়ে দিতে পারতাম কিন্তু ইচ্ছে করেই সেটা করিনি যাতে রাখ-ঢাকের কিছু এখানে না থাকে এবং কেউ যদি ধাক্কা খায়ই, সেটা যেন বেশ বলশালী ধাক্কা হয়। ক্ষ্মমা চাইছি এই অভদ্র-রুঢ়তা দেখানোর জন্যে


মন্তব্য

হিরামন [অতিথি] এর ছবি

ভাই,
বন্ধু মহলে অথবা জায়গা বোঝে এডাল্ট মহলে আমি কথাবাত্রায় যথেষ্ট এর চাইতেও বেশী পরিমান খোলামেলা।

কিন্তু, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বড়ই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যাই। যেমনটা আপনি বলেছেন।

খুব ভালো লাগলে আমি লেখায় মনেমনে পাঁচ তারা দেই, আপনারটায়ো দিলাম। দেঁতো হাসি

-হিরামন

অতিথি লেখক এর ছবি

একদম আমার মনের কথাটাই বললেন। বছর দুয়েক আগে আমার এক বন্ধুকে সরাসরি মানা করেছিলাম ছোট বাচ্চা নিয়ে হিন্দি চ্যানেল না দেখতে। উত্তরে আমাকে নতুন যুগের নতুন হাওয়ার প্রয়োজনীয়তাটা বোঝানোর ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছিল।
-রু

তারানা_শব্দ এর ছবি

মানা করেছিলাম ছোট বাচ্চা নিয়ে হিন্দি চ্যানেল না দেখতে।

না দেখতে? নাকি দেখতে? হাসি

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

অতিথি লেখক এর ছবি

দেখতে মানা করেছিলাম। বাঁচালেন, ধন্যবাদ।
-রু

ফেরদৌস ৬৯ [অতিথি] এর ছবি

F**K বললে গালি মনে হয়না, কিন্তু এটার অনুবাদ করে বললে অনেক খারাপ মনে হয়। কেননা আমাদের জন্মের পরই কিছু শব্দ ব্লক করে দেয়া হয়েছে, সেই শব্দের মাঝে F**K শব্দটি ছিলনা। অবশ্য F**K বলাটাকে অনেকে স্মার্টনেসের অংশ হিসেবে দেখে। অনেক অভিভাবকই এর মানে বুঝেন না বা বুঝতে চান না। একদম মনের কথা কিন্তু যে কথাটি কউকে বলা হয়না।

ফেরদৌস ৬৯

সাইফ তাহসিন এর ছবি

সারা বিশ্বে, এমনকি খোদ আমেরিকা-ব্রিটেনেও এই নির্দিষ্ট ভার্শানের গেইমটা ডিস্ট্রিবিউশন বন্ধ করে দেয় নির্মাতা-পরিবেশকরা।

একটু ভুল বললেন, GTA এর কোন PG ভার্ষন নেই, তবে ভাইস সিটিতে গেমের ভিতর থেকে এক্সপ্লিসিট কন্টেন্ট লক করে দেওয়া যেত। স্যান আন্ড্রিয়াস থেকে সেগুলোর অস্তিত্বই নেই। আর গালাগালি আরো উপরে নিয়ে গেছেন নির্মাতার। কিন্তু রেস্ট্রিকশন করা হয়েছে বিক্রি স্থলে। ১৮ বছর বয়ষ্ক কাউকে থাকতে হয়, এবং আইডি দেখিতে কিনতে হয় আমেরিকায় যেকোন M (ম্যাচিওর ১৮+) গেম কিনার জন্যে। স্যান আন্ড্রিয়াসের একটা গালির কথা বলি, তাহলে যারা খেলেননি, তারাও বুঝে যাবেন কিছুটা, এক মেক্সিকান লোককে দেখে আরেকজন গালি দিচ্ছে, 'ইউ টাকো ফাক'!!

আপনার লেখাটা খুবই বাস্তব চিত্র, আর একটা জিনিসই প্রমাণ করে যে আমাদের কান্ডজ্ঞানের কতখানি অভাব। গতকালকেই টারগেটে এক বাচ্চা তার আন্টিকে বায়না করছিল M সিরিজের একটা গেম কিনে দেবার জন্যে, সে মহিলা সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন, ওটা তো M রেটিং এর গেম, ঐ গেমের নাম তুমি কেন সাজেষ্ট করছ, তখন ছেলেটে কয়েকবার কথা ঘুরিয়ে যখন বুঝলো এভাবে চিড়া ভিজবে না, তখন অন্য গেম দেখা শুরু করল। আমাদের দেশের দোকান গুলোতে তো বয়স দেখে গেম বিক্রি করেনা কেউ, বেহসির ভাগ সময় বড় কেউ থাকাও লাগে না ম্যাচিওর কন্টেন্ট কিনতে। আর বড় কেউ থাকলেও তারা গা করেন না। গনসচেতনতা না বাড়াতে পারলে এরকম হবেই।

আর র‍্যাপের কথা তো বাদই দিলাম, ঐ মহার্ঘ্য বস্তু না শুনলে যেন জাতে উঠা যায়না, এমন মনোভাব বেশ প্রকট! আমি নিজে যে কখনো শুনি না, তা না। আর হিন্দিতে আমার সরাসরি অ্যালার্জি আছে! তাই ঐ বিষয়ে কথা না বলাই ভালো, বলতে গেলে খালি খিস্তি আসে!

অনেক সাধুবাদ লেখাটার জন্যে। আপনার কোন লেখা পড়িনি আগে, আশাকরি ভবিষ্যতে আরো লিখবেন! গনসচেতনতা বাড়ানোর দায়িত্ব কিন্তু আমাদের সবার!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

দুর্দান্ত এর ছবি

ঠিক তাই। দেশী নাটকের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। শিশুদের টেলিভিশন দেখার সময়ে দেশী নাটকের মোবাইল টেলিফোন-প্রেম দেখানোর কথা বলছি।
--
প্রথম উদাহরনটি ঠিক বুঝতে পারিনি। যে মেয়েটে এমেনেম শুনছে সে যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তাহলে অসুবিধা কোথায়?

মাহফুজ [অতিথি] এর ছবি

খুবই কার্যকরী লেখা, এটা সত্যি উদ্বেগজনক যে, আজকালকার অভিভাবকরা বুঝেও অনেক বিষয়ে না বুঝার ভান করে থাকে। আর আমার মনে হয় আমরা অনেক বিষয়েই কনফিউস্‌ড, আমরা এত বেশী সেটেলাইট নির্ভর হয়ে গেছি যে, নিজেদের সভ্যতা ভদ্রতা জ্ঞানটুকুও বিসর্জন দিয়ে বসে আছি ওই সেটেলাইটের কাছে।

মির্জা এর ছবি

মতামত শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ সবাইকে।

সাইফ তাহসিনঃ আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ বুঝিয়ে বলার জন্যে, আমি 'লক' করে দেয়ার ব্যাপারটাই সরল করে বোঝাতে চেয়েছি (অস্ট্রেলিয়াতে অবশ্য রকস্টার বলেছিল কনটেন্ট-এ কোন পরিবর্তন আনবে না, সরাসরি ''ব্যান করে দিবে'' এই থ্রেট খাওয়ার পর অবশ্য পুরো সেন্সরড এক ভার্শান বাজারে ছাড়ে, আহা রেয়ামাদের দেশে যদি এই সচেতনতাটুকু থাকতো!)

দুর্দান্তঃ মেয়েটির বয়স তখন ছিল ১৪ কি ১৫। কিন্তু প্রাপ্ত বয়ষ্ক হলেই কি এই গান বাব-মায়, চাচা-চাচীর সাথে একসাথে শুনতে হবে? কিংবা তাদের শোনাতে হবে?

বাংলার পরে ইংরেজী, হিন্দি, আরবি, আলজেরিয়, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ কোন গান/সাহিত্য বা ভাষাতেই আমার কোন আপত্তি নেই, বরং রয়েছে সমান শ্রদ্ধা, কিন্তু এই 'আলগা স্মার্টনেস' যেটাকে বাবা-মায়েরা প্রশ্রয় দিচ্ছেন, সেখানেই আমার ঘোর আপত্তি!

দুর্দান্ত এর ছবি

মেয়েটির বয়স তখন ছিল ১৪ কি ১৫। কিন্তু প্রাপ্ত বয়ষ্ক হলেই কি এই গান বাব-মায়, চাচা-চাচীর সাথে একসাথে শুনতে হবে? কিংবা তাদের শোনাতে হবে?

এর বিপক্ষের যুক্তিটি কি?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

হোয়্যাট দ্য ফাক ইউ আর সেয়িং মাদারফাকার ড্যাড!
— খাবার টেবিলে বসে যাতে খুব স্বাভাবিক কথোপকথনের সময় মেয়ের মুখে বাবার এই রকম সম্বোধন শুনতে না হয়, এইটাই কি একটা যুক্তি না? যে কথাবার্তা বাপ-মেয়ে একসাথে শুনছে গানের কথায়, সেই একই কথা নিজেদের কথোপকথনেও তো চলে আসা স্বাভাবিকই হবে।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

দুর্দান্ত এর ছবি

ধুগো, আমরা একই বিষয় নিয়ে কথা বলছিনা। শিশুদের কাছ থেকে যা কিছু আড়াল করার প্রয়োজন থাকে, তার সবটুকু ১৪-১৫ বছরের ছেলেমেয়ের কাছ থেকে আড়াল করার কোন যুক্তি দেখিনা। তাই গানে (সেটা বাংলা গানেও হতে পারে) কটুক্তি শুনতে শুনতে খাবার টবিলে বাবা-মা'র সাথে কটুক্তিসহ কথা বলতে শিখে যাচ্ছে, এটাকে কষ্টচিন্তা মনে হচ্ছে। তুমি কৈশোরে যা যা দেখেছো, শুনেছো, তার সবগুলোই খাবার টেবিলে বসে বাবা মায়ের সাথে ব্যাবহার করেছো?

আমার তো মনে হয় না বুঝে নামাজ আওড়ানো শেখানোর মতই না বুঝে গান শুনতে শেখানোটাও বিপদজনক।

শেষপর্যন্ত একটি পরিবারের বয়োপ্রাপ্ত সদস্যরা কি গান শুনবে, তারা নিজেদের মধ্যে কি কি বিষয় নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে, এবং সেই কথাবার্তায় উভয়পক্ষ কটুক্তি ব্যাবহার করবে কিনা, সেটা সেই পরিবারের নিজস্ব ব্যাপার। লেখক নিজের মতামত দিতেই পারে। কিন্তু একটি পরিবার কিভাবে চলবে, সেটার সিদ্ধান্ত নিতান্তই সেই পরিবারের। বাইরের লোকের এখানে কিছুই বলার নেই।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

দুর্দান্ত'দা, কটুক্তি ব্যাপারটা তখনি কটুক্তি হিসেবে বাচ্চা/শিশুদের কাছে পরিচিত হবে যখন তাদের কাছে সেভাবে পরিচিত করা হবে। কিন্তু বাপ-মা যদি এ ব্যাপারে মুখ না খোলে, মৌনতায় কোনো 'কটুক্তি'কে সম্মতি দিয়ে যায় তাহলে একজন শিশু/বাচ্চা কী করে বুঝবে যে ঐটা আসলে কটুক্তি, এবং এটা বাবা-মার সামনে ব্যবহার করা যাবে না! যেহেতু বাবা-মা এ ব্যাপারে কিছু বলছে না, সুতরাং বাই ডিফল্ট ধরেই নেয়া হবে এটাও অন্যান্য শব্দগুচ্ছের মতোই স্রেফ আরেকটা শব্দ।

আর হ্যাঁ, আমি অবশ্যই কৈশোরে যা শিখেছি তার সব বাবা-মা'র সামনে ব্যবহার করি নি। কারণ কোনটা কটুক্তি আর কোনটা সুউক্তি, এই ব্যাপারে বেশ স্পষ্ট একটা ফাইন লাইন টানা ছিলো বাবা-মা'র তরফ থেকে। আমাদের ঘরে "ফাক ইউ মাদারফাকার" গান শুনলে এইটা হলফ করে বলতে পারি আমার বাবা-মা চুপচাপ থেকে আমাদেরকে সেটা শুনতে দিতো না। এমন কি তখন ভারতীয় চ্যানেল ডিডি ওয়ানে চিত্রহার দেখার ব্যাপারেও কড়া সেন্সর জারি ছিলো আমাদের বাড়িতে। সেন্সরটা কিন্তু টিভি বন্ধ করে দিয়ে বা সেখান থেকে কান ধরে উঠিয়ে দিয়ে না। বরং সেই সময়েই খুব স্পষ্ট করে কানের কূহরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, "ইহা কটু জিনিস" কিংবা "ইহা কটুক্তি"। সেই সব কৈশোরের সময় থেকেই শিখে গেছি (বা শিখতে বাধ্য হয়েছি) ঠিক কোন জিনিসটা বাবা-মা'র সামনে দেখার মতো, কোন শব্দ তাদের সামনে ব্যবহার করার মতো।

তবে, শেষ বিচারে আপনার কথাই ঠিক। এইটা আসলেই একটি পরিবারের নিজস্ব ব্যাপারে যে সে পরিবারে বাবা-মা তাদের ছেলে মেয়েদের মুখে মাদারফাকার সম্বোধন শুনতে স্বচ্ছন্দবোধ করবে কি-না! বাইরের লোকের আসলেই এখানে কিছু বলার নেই। তবে এই চর্চাটা বাইরের লোকের সাথেও অহরহ হতে শুরু করলে তখন হয়তোবা কিছু বলার থাকলেও থাকতে পারে।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

মির্জা এর ছবি

দুর্দান্ত, আমি এখন আর আপনার পয়েন্টটা আসলে ধরতে পারছি না। আপনি নিশ্চই বলতে চাইছেন না ১৪/১৫ বছরের বাচ্চারা যেহেতু ঐ গালিগুলো জানেই তাই তাদেরকে মেহমান কিংবা বড়দের কিংবা বাবা-মায়ের সামনে সেগুলো ব্যাবহার করতে দিতে কোন আপ্ততি নেই? আমার কানে বার-বার ইংরেজিতে বলা ‘’চুত……নী’’ গালিগুলো ভেসে আসছে কিন্তু এতে বাবা-মায়েরদের বাধা দেয়া উচিত না?

মুরাদ খান [অতিথি] এর ছবি

দুঃখ কুনোটাই উপভোগ করতে জানিনা। না পর্নোগ্রাফী না মন দিয়ে ধর্ম পালন। দোস্ত বন্ধু চাচা খালার বাসায় প্রায়ই দেখি উদার ভাবে বাচ্চাদের নিয়ে যৌন উত্তেজক হিন্দি গান শুনতে আর হা করে দেখতে। আমার অনেক সেমি-ক্লোস বন্ধু অবলীলায় কথা শুরু করেন ‘অমুক নায়িকা দেখছো?’ ‘আমার খুব প্রিয়’। কথা খুজে পাই না, কি বলবো? বলবো অই নাইকার বুক সুন্দর? আর তার পিছন সুন্দর?..... টিভি চ্যানেলে দেখি বাচ্চাদের দিয়ে বুড়োদের প্রেমের গান গাওয়ানো হচ্চে। সাথে নাচ। “নানীগো নানী.......”। দেশের বরেন্য লোকেরা বিচারক, বিচার করছেন শিশুটি কতোটা যৌন আবেদন নিয়ে গান আর নাচটা ফুটিয়ে তোলে.... পারভারশন বলে একটা শব্দ আছে তা আমার কাছে ১০০% এখানে মানানসই মনে হয়। অবাক !!!!!!!!! কারো তা মনে হয় না। ধন্যবাদ মির্জা সাহেব।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক সাধুবাদ লেখাটার জন্যে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কিছু মানুষের ধারনা আধুনিকতার সাথে অশ্লীলতার একটা ধনাত্মক সম্পর্ক আছে। তাদের আধুনিকতা তাই আপোষ করে অশ্লীলতার সাথে।

ভারতীয় চ্যানেলে বাচ্চাদেরকে অশ্লীল নাচের প্রতিযোগিতায় পাঠানো উল্লসিত পিতামাতাও সেই মাত্রার আধুনিক। তার এদেশীয় মনোযোগী দর্শকও।

আজকাল আন্তঃদেশীয় সংস্কৃতি বিনিময়েও চলে আসে এইসব উপযোগ। শাহরুখ খানের কনসার্টের ভীড়ের ২৫ হাজার তাদের প্রতিনিধি।

এটা একটা সরব আগ্রাসন যা থামানোর সাধ্য সময়েরও নাই।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমাদের কালে সবুজ চাষার দল
ঝানু চাষী বেশে ফার্মভিল যায় খেলে
দাড়িয়াবান্ধা গোল্লাছুটের মাঠ
গেমিং জগতে ধর্ষিত দেহ মেলে!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

মির্জা এর ছবি

আমার যা বলতে পুরো ব্লগ লাগলো, আপনি বলে দিয়েছেন চার লাইনে

ব্লগ পাঠক এর ছবি

১৮ নং কমেন্টের ( ১১ | রোমেল চৌধুরী) জবাবে

বাংলাদেশের কবিতা লেখকদের বেশী বেশী টেডের ভিডিও দেখা উচিৎ। অন্য পার্সপেক্টভ বুঝতে সুবিধা হবে। আর ফিউচার নিয়েও একটু পড়াশুনা প্রয়োজন।

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

স্কুলে যখন পড়তাম তখন একটি হিন্দি গান বেরিয়েছিল সবারই মনে আছে বোধহয় "সেক্সি সেক্সি সেক্সি মুঝে লোক বলে, হাই সেক্সি, হ্যালো সেক্সি কিউ বলে" তখন না বুঝেই গানটা বাসায় শুনতাম এবং এর জন্য বাবার হাতে দু একদিন মার খেতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বাবা সেই ক্যাসেটটাই ভেঙ্গে ফেলেছিলেন।

ট্যালেন্ট হান্টের নামে বাচ্চাদের দিয়ে বড়দের গান গাওয়ানো ঘৃণা করি। হিন্দি ছবি দেখিনা, তাই অনেক নায়িকাদেরই চিনিনা।

বুঝিনা অভিবাবকরা কেন ছেলেমেয়েদেরকে বাংলা গান শোনাতে উৎসাহিত করেননা।

রনিভাইকে ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।

অতিথি লেখক এর ছবি

সময়োপযোগী এবং সাহসী লেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আসলে তথাকথিত শিক্ষিত সমাজেই এই সমস্যা বিশেষ করে যেখানে বাবা-মা উভয়েই বহিরাংগনে জড়িত, সন্তানদের প্রাপ্য সময় দেন না এবং সো-কলড সোসাইটির দোহাই দেন। আজ কাল বহুল আলোচিত । ঈভ টিজিং এর অন্যতম কারন এটি। আমার মনে হয় নতুন বাবা-মা রা এখন থেকে সচেতন হলে কিছুটা হলেও সমস্যা লাঘব হবে।
কীরণ

অতিথি লেখক এর ছবি

লন্ডনী আধ্যুষিত সিলেটে দন্তচিকিৎসক পেশায় থাকায় প্রায়ই এমন তথাকথিত স্মার্ট মানুষ/ বাচ্চাদের কমকান্ড দেখার দূভাগ্য হয়। দাঁতে দাত চেপে সয়ে যাই বেশিরভাগ সময়। শুধু একবার বাবা-মার কাছে খুব বেশি আস্কারা পাওয়া ৭-৮ বছর এর এক লন্ডনী ছেলের রুট কেনেল চিকিৎসা করার সময় প্রতি session এ বার বার "Shit.. Shit" বলাতে তাকে বলেছিলাম "don't worry I'll not put shit on u'r mouth " খাইছে

রাজকন্যা [অতিথি] এর ছবি

হা হা হা। ভাল বলেছেন। এর পরে সেই রোগী কী বলল আপনাকে?

জি.এম.তানিম এর ছবি

এদেশের ডিভিডির দোকানে রেটিং দেখে কেউ গেইম বিক্রি করে না। আমার দশ বছরের কাজিনকে দেখেছি নিয়মিত এম রেটিংয়ের গেইম খেলতে। সেক্ষেত্রে বিক্রেতা এবং অভিভাবক উভয়পক্ষের ঘাড়েই দোষটা পড়ে।

একটা প্রশ্ন, শেষ প্যারার আগের প্যারা সম্পর্কে, শিট বা ফাক না হয় আপত্তিকর শব্দ, কিন্তু LOL ও কি এদের পদবাচ্য? নাকি আপনার কথার ভুল ব্যাখ্যা করলাম?
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

মির্জা এর ছবি

তানিম, আমি বলতে চেয়েছি, Lol-এর মতনই বুঝে না বুঝে আমরা অনেক অশ্রাব্য ইংরেজি-হিন্দি শব্দ ব্যবহার করি আর এভাবে চলতে থাকলে একদিন হ হয়ত ''লোল'' -এর মত গালিগুলোর ব্যবহারও খুব সাধারন হয়ে উঠবে; (এটি একটি খারাপ শব্দ সে হিসেবে বলছি না, আশা করি বোজাতে পেরেছি।

জি.এম.তানিম এর ছবি

ধন্যবাদ, বিভ্রান্তি দূর করার জন্যে।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

কলি এর ছবি

একেবারে ঠিক একটা লেখা, যা পুরোপুরি আমার মনের কথা বলেছে। এখনকার যুগে অশ্লিলতাই যেন স্মার্ট হবার মুল্মন্ত্র।বাবা মা দেখেও না দেখার ভান করে। পাঁচ তারা দিলাম।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ইংরেজি মিডিয়াম অনেক অভিভাবকের কাছেই আভিজাত্যের প্রতীক। মিডিয়ামে সমস্যা নেই, সমস্যা ভুল শিক্ষা গ্রহণে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি মানেই অনেক ছাগুর কাছে সেক্সে ভরপুর চাইলাম আর শুয়ে পড়লাম জীবন। আধা পাছা বের করে ইয়ো ইয়ো ঢোলা জিন্সের সাথে নাক-কানের দফারফা করে পিয়ার্সিং আর চামড়া পুঁড়িয়ে উলকি আঁকা স্মার্টনেসের পরিচয়। অনেক অভিভাবকই নিজেদের স্মার্টনেস নিয়ে হীনমণ্যতায় ভোগেন এবং সেটাকে পূরণ করার মরিয়া চেষ্টায় প্যানা সংস্কৃতিকে পাশ্চাত্য তথা আধুনিক সংস্কৃতি বলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ক্ষতিটা হয় বাচ্চার।

পুরো পরিস্থিতি হয় নিচের বিজ্ঞাপনের মতো:

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

অনেক বছর আগে এমটিভিতে একটা জিনিস দেখাতো। টিচার একটা খরগোসের ছবি দেখিয়ে বাচ্চাদের কাছে এটা কি তা জানতে চাইলে এক পোঁদপাকা বাচ্চা চেঁচিয়ে উঠে বলে "প্লেবয়"। ঠিক পরের দৃশ্যে যেইনা একটা মোরগের ছবি আসলো, তো টিচার ছবিটাকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের থেকে আড়াল করার চেষ্টা করলেন।

কথা সত্যি, আজকাল হিড়িক পড়েছে বাচ্চাদের স্মার্ট বানানোর। ভূল হিন্দি এবং ইংলিশ বলাটাতো বিরাট ফ্যাশন এবং স্মার্টনেস। তবে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে শিশুতোষ বিনোদনের বিরাট অভাব। আর এই সুযোগে ইনডিয়ান চ্যানেলগুলো সিএন, পোগো, এইসব চ্যানেলে প্রচুর হিন্দি কার্টুন চালাচ্ছে।

তাহলে শোনেন একটা নিউ জেনারেশন রাইম-

Jack and Jill
Went up on the hill
to make their sex more hotter,
Jack filled Jill
and broke her seal
and they came down with a daughter.

বাচ্চায় পড়ে আর বাপ-মায় তালি দেয়। বাবুসোনা আমার অনেক ইংরেজি জানে। আমাগো বাবু খুউউউউউব স্মার্ট বাবু।

বাবু কইছে চুদিরভাই
আনন্দের আর সীমা নাই।

======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পশ্চিমা সংস্কৃতির এই অংশটুকু অধিক বাজারজাত হয় এবং পূর্বের মানুষ প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই পশ্চিমকে গ্রহনের প্রতীক মেনে নিয়েছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম সবই গৃহীত হয়েছে পশ্চিম থেকে( আরব ও আমাদের জন্য পশ্চিম)

কিন্তু পশ্চিমের বাজারজাতকৃত এই এতোটুকুই যে তার সবটুকু নয়, কসমোপলিক গার্বেজের বাইরে পশ্চিমের অন্য একটা চেহারা আছে- সেখানে পরিবার আছে, পারিবারিক মুল্যবোধ আছে, ছুটির দিনে দাদা-দাদী মা-বাবা বাচ্চা-কাচ্চা মিলে একসাথে হোটেলে খেতে যায়, মায়েরা ধমক দিয়ে বাচ্চাদের শেখায় কিভাবে নীচু গলায় ভদ্রভাবে কথা বলতে হবে, মাতলামী কিংবা অশ্লীলতা সেখানেও নিন্দনীয়, সেখানে স্কুলের বাচ্চারা টিফিনের পয়সা জমিয়ে আফ্রিকার কোন দরিদ্র দেশের শিশুদের খাবার কিনে দেয়।

৬০ এর দশকে বিশ্বনাথের গ্রাম থেকে যে অশিক্ষিত লোক ব্রিকলেনের বস্তিতে অভিবাসী হয়েছিলো, তার ছেলে একটু বড় হয়ে যখন পূর্ব লন্ডনের মাতাল আর ভ্যাগাবন্ডদের সাথে মাদক নিয়ে ছুরি চালাচালি করেছে, তখন গর্বিত পিতা তার আত্মীয় স্বজনকে বলেছে- 'আমার ফুয়ায় বা গোরার লগে টক্কর মারে'
ঐ অশিক্ষিত প্রজন্মকে তবু ক্ষমা করা যায়, কিন্তু যে শিক্ষিত মা-বাবা পশ্চিমের কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ বুঝতে পারেনা এই একুশ শতকেও-তাদেরকে কি বলা যায়?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মির্জা এর ছবি

মোর্শেদ, অনেক-অনেক ধন্যবাদ পয়েন্টটা লেখার জন্যে, পশ্চিমে থেকে ভাল-ভাল অনেক কিছু যে শেখারও আছে, এমনকি আমাদের মত পরিবার তান্ত্রিক সমাজে, সেটা না বলা হলে পশ্চিমের প্রতি অবিচারই হয়।

মির্জা এর ছবি

ধুসর গোধূলি লিখেছেন:
তবে, শেষ বিচারে আপনার কথাই ঠিক। এইটা আসলেই একটি পরিবারের নিজস্ব ব্যাপারে যে সে পরিবারে বাবা-মা তাদের ছেলে মেয়েদের মুখে মাদারফাকার সম্বোধন শুনতে স্বচ্ছন্দবোধ করবে কি-না! বাইরের লোকের আসলেই এখানে কিছু বলার নেই।

সেটাই, তাই আমিও একমত

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

তাই কি ? কোন গালি বা কটুক্তি বা এমনকি শব্দও, স্রেফ একটা গালি বা শব্দ মাত্র নয়। এর মধ্যে অনেক সময়ই একটা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি, মনোভঙ্গি, দর্শন বা রাজনীতি সুপ্ত থাকে। এরকম শব্দ যখন কেউ ছোটবেলা থেকে অবাধে চর্চা করে, ইন্টার্নালাইজ করে, তখন ঐ মনোভঙ্গিটাও সঙ্ক্রমিত হওয়ার - ইন্টার্নালাইজ করে ফেলার একটা সমূহ আশঙ্কা থাকে। আর সেটা যদি নেতিবাচক বা ক্ষতিকর কিছু হয়, তখন ঐ মনোভঙ্গি ইন্টার্নালাইজ করে বেড়ে ওঠা শিশু প্রাপ্ত বয়সে সমাজের জন্য একজন অস্বাস্থ্যকর, ক্ষতিকর সদস্য ও লায়াবিলিটিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আর কোন পরিবারই শূণ্যের মধ্যে জীবনযাপন করে না, সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে অনেক কিছু নিয়েই একটা যূথবদ্ধ সমাজের বলয়ে, কনটেক্সটে বাস করে। সেখানে তার কিছু দায়বদ্ধতা আছে বলেই আমি মনে করি। গিভ এন্ড টেক। তার একটা হলো, যুক্তিসঙ্গত সাধ্যে কুলোলে, সমাজের নতুন সদস্য হিসেবে দেহে-মনে কোন অসুস্থ বা স্বাস্থ্যহীন সন্তান অন্ততঃ উপহার না দেয়া। অসুস্থ সমাজ না চাইলে (এমনকি চাইলেও- কারন অন্যরা চায় না) এই দায়টা গ্রহণ করতেই হবে। এই প্রেক্ষিতে সব কিছু পরিবারের একদম নিজস্ব ব্যাপার না-ও হতে পারে। তবে, অবশ্যই মাত্রাটা বিবেচ্য।

ফা*..., মাদা...*ত/*কার, চু*..., বা এই জাতীয় শব্দ/কটুক্তিগুলির মধ্যে আমার মনে হয় একধরণের ধর্ষকামী (sadistic), লৈঙ্গিক বৈষম্যবাদী ও মানুষকে অব্জেক্টিফিকেশনের/অবমূল্যায়নের মনোভঙ্গি অন্তর্নিহিত আছে, অতিব্যবহারে শব্দগুলি জীর্ণ হয়ে সেটা আপাতঃদৃষ্টিতে আর সবসময় চোখে না পড়লেও বা সতর্ক বোধের সীমায় না আসলেও, ভেতরের ব্যাপারটা আমার মনে হয় মোটেই নিরীহ বা নির্বিষ হয়ে যায় না তাতে করে। বরং তখন অবচেতনে সংক্রমণ বা স্লো-পয়জনিং ঘটে। এটা রোধ করা জরুরী বলেই মনে হয়।

মির্জা এর ছবি

মনমাঝি, আমার মূল কথাটা এই যে, বাচ্চাগুলোর পরিবার যেখানে ব্যাপারটা মেন নিচ্ছে সেখানে নিছক আত্নীয়তার বাধনে তাদের ছেলে-মেয়েকে আমি/আমরা আসলে কতটুকু শাসন করতে পারি?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

একটু দ্বিমতের সুযোগ আছে মির্জা।
একটা শিশু কেবল তার মা-বাবা কিংবা পরিবারের নয়, আরেকটু বড় হয়ে সে পরিবারের বৃত্তের বাইরে আসবে, সমাজ এবং রাষ্ট্রে তার অংশদারীত্ব তৈরী হবে। সুতরাং একটা শিশুর বেড়ে উঠা, তার তৈরী হয়ে উঠা মানসিকতা ও আচরন শেষ পর্যন্ত সমাজ ও রাষ্ট্রকে প্রভাবিত করে।
সে কারনেই হয়তো দূরদর্শী পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো অনেক ক্ষেত্রে মা-বাবার চেয়ে ও বেশী দায়িত্ব নেয় শিশুর।

তবে এটা ঠিক, আমাদের বাস্তবতায় খুব বেশী কিছু করার নেই। মানুষে মানুষে এতো দেয়াল তৈরী হয়ে গেছে নিজের ভাইয়ের বাচ্চাকে শাসন করতে গেলেও সেটা 'নাক গলানো' হয়ে যাবে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রিমন এর ছবি

ভাইস সিটির অভিজ্ঞতাটা আমার প্রায় একই রকম

এস এম সাকিব এর ছবি

আমি প্রথমবারেরমতো এখানে আসলাম। এই লেখাটি পড়ে একটু অবাকই হলাম! আপনারা কতো সুখী! কোনো চিন্তা নেই আপনাদের। আর বেশিরভাগই মনে হয় প্রবাসী বাংলাদেশী। এ জন্যই বাংলাদেশে যারা থাকেন তাদের কর্মকান্ড দেখে এতোটা অবাক হোন। দেখুন ভাই, যারা দেশের বাইরে থাকেন আপনাদের মতো এতো নিরাপত্তা, নিয়ম-কানুনের মাঝে আমাদের সময় কাটেনা। বাসা থেকে বের হলে ফিরে আসার কোনো নিশ্চয়তা নাই। আপনার সারাজীবনের উপার্জন সে জীবনের শেষভাগে আপনিই ভোগ করবেন তারও কোনো নিরাপত্তা নেই। যেখানে সততা ধরে রাখতে গিয়ে এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কর্তা হিমশিম খান, সেখানে ছেলেমেয়ে কি করছে এটা দেখার এতো সময় কার আছে। পরিবেশ-পরিস্থিতি যেমন তাতে করে কেউই তাদের সন্তানদের আপনাদের দেওয়া পরামর্শ বা সচেতনতা বৃদ্ধির যেসব উপায়ের কথা বলেছেন সেসব মেনে চলতে পারবে না। কারণ, যেকোনো ছেলে বা মেয়ে দিনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে। দিনের বেশিরভাগ সময যাদের সঙ্গে কাটাবে তারা তাদের থেকে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পরিবারের মানুষের কথার যে থাকবে না এটা নিশ্চই তর্কের বিষয় না। আর যারা পরিবারের কর্তাব্যাক্তি আছেন তারা তো শৈশবে আরো বড় বড় কান্ড ঘটিয়ে এসেছেন, তাই তাদের কাছে এটাতো কিছুই না। আমার তো মনে হয় দিনদিন সভ্যতার দিকে এগুচ্ছি আমরা। কারণ, গ্রামে বা শহরে যেখানেই হোক না কেন সেকালের পাটখেত থেকে শুরু করে গোয়াল ঘরে পর্যন্ত নিজেদের পরিবারের মানুষ জনের সঙ্গেই অনেক আজে বাজে সর্ম্পকের কথা শুনিয়ে নিজেদের বাহাদুর বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা চালান। এই মানুষগুলোর ছেলেমেয়েরা তো এখন হোটেল, বন্ধুর বাসা এসব জায়গায় যাচ্ছে। অন্ততপক্ষে চক্ষুলজ্জা আছে যা তাদের পিতা-মাতাদের মতো অন্ধকারে আলোতে নিশ্চুপ জায়গায় খেতে-খামারে যায় না। আর সেসময়কার খেতে-খামারে খেটে খাওয়া কৃষকরাইতো আজ এই আধুনিক তরুণ সমাজের পিতা-মাতা। এদের থেকে এর চেয়ে ভালো আর কি আশা করবেন ভাই। যেখানে আছেন ভালো আছেন, ভালো থাকেন দোয়া রইলো। বাংলাদেশে থাকারমতো কষ্টকর আর কিছুই হতে পারে না। এই দেশে থেকে ছেলে-মেয়ে পরাশোনা শেষ করে একটা ভালো চাকরী পেলেই বাবা-মায়ের জীবন স্বার্থক। এখানে এম প্লাস, এক্স রেটেড এসব চিন্তা করে কি আয়ু কমাবে নাকি লোকজন? আপনার লেখা পড়ে মনে গেলো একটা কথা---সুখে থাকলে যে ভূতে কিলায় কথাটা আসলেই সত্যি।

এসএম সাকিব।

মির্জা এর ছবি

সাকিবকে ধন্যবাদ মতামত দেওয়ার জন্যে। কিন্তু ভাই বিদেশে কিংবা দেশে, জানের নিরাপত্তা থাক বা না থাক, আমার বাচ্চা, আমার ভাইয়ের বাচ্চা আমার সামনে motehrfu***r গালি দিলে আমি চটকনা মারবই। বুঝতে পারছি আপনার বাচ্চা এইসব গান কিং বা গালাগাল চর্চা করলে আপনার কাছে তাদের স্বপক্ষে লড়ে যাওয়ার জন্যে অনেক কঠিন-কঠিন সব যুক্তি আছে!!!

আর আপনাকে মনে করিয়ে দেই, পশ্চিমা বিশ্বে, খুব দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাচ্চারা কিন্তু জীবনের প্রথম দু'দশকের মত কাটায় নার্সারীতে, চাইল্ড মাইন্ডারের কাছে কিংবা ডে কেয়ারে তাই বলে সেই সব বাচ্চাগুলোই কিন্তু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে না।

আমার শিশু Vice City Game-prostitute-দের সাথে ঘুরে বেরাবে আআর আমি তাতে চিন্তিত হয়ে যদি একটু আয়ু না কমাই শেষেতো বাচ্চাটা বাস্টার্ড হয়ে যাবে, বিদেশে থাকি বলেই এটা কি হতে দিতে পারি?

All the ebst to your kids

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো
____
রুদ্র

এস এম সাকিব [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ আমার সন্তানের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আরো বছর খানেক পর হয়তোবা পিতা হবো। কিন্তু আপনি আমাকে ভুল বুঝেছেন জনাব। আমি একবারও কোথাও উল্ল্যেখ করিনি ছেলে-মেয়েরা খারাপ হয়ে যাক। আমি বলেছি আপনি যাদের কথা বলছেন যে তাদের এসবের প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিৎ তাদের কথা। তারা কেন ব্যর্থ আমার লেখার যুক্তি ছিলো সেটা। যাইহোক, অবশ্যই আপনি আপনার সন্তানকে প্রয়োজনে প্রহার করতে পারেন পিতা হিসেবে সেই অধিকারটা হয়তোবা আপনার আছে বা আপনি প্রয়োগ করবেন। কিন্তু এখন আমি জানি না এটা করলে আপনার সন্তান ৯১১ এ কল করবে কিনা। আশাকরি আপনার মতো বিবেগবান একজন মানুষের সন্তান অবশ্যই বিবেগবানই হবেন। কোনো ডাক্তার যদি অপারেশন করার সময় দুর্ঘটনাবশত কোনো রোগীর মৃত্যুর কারণ হোন তাকে কি ফাঁসি দেওয়া হয়? ঠিক তেমনি যদি আপনার ভাগ্নি বা যার উদাহরণ টেনেছেন আপনি আপনার লেখায়। গানটা শোনে কিন্তু আপনার সামনে আপত্তিকর শব্দগুলো ব্যবহার না করে তাহলে? আপনিতো চান যেন তারা এসব শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকে তাইনা। তাহলে, আমার একটা সোজা কথার উত্তর দিন, আপনার সন্তান যদি কম্পিউটার গেমসে প্রস্টিটিউটের সঙ্গে না ঘুরে বাস্তবে ঘুরে বেড়ায় আর তা আপনার থেকে গোপন রাখেন, তাহলে নিশ্চই আপনার আপত্তি থাকবে না বোধকরি। কারণ, আপনার তো আদব-কায়দা সহ সন্তান প্রয়োজন তাই না?? আপনার আড়ালে সে কি করলো না করলো আপনি জানবেনও না। তার থেকে বড় কথা ভাইস সিটিরমতো জনপ্রিয় একটা গেম এসব ব্লগিং করে বাজারজাত করাও বন্ধ করা যাবে না, সচেতনতাও বৃদ্ধি করতে পারবেন না। আমি জানি না আপনার বয়স কেমন হবে। কিন্তু দিন পাল্টেছে, নিজেকে পাল্টাতে না পারেন অন্যদের পৃথিবীর গতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাধা দেবেন না দয়া করে। এতে কিন্তু বিপরীত কিছুও হয়ে যেতে পারে। জানেন নিশ্চই লেবু বেশি চিপলে তিতা হয়ে যায়। শুভকামনা রইলো আপনার প্রতি।

আর দেখলাম দুজন আমার যুক্তি অপছন্দ করেছেন, কারণ দর্শাইলে ভালো লাগতো। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা রইলো সবার প্রতি।

এসএম সাকিব।

রু [অতিথি] এর ছবি

ঠিক তেমনি যদি আপনার ভাগ্নি বা যার উদাহরণ টেনেছেন আপনি আপনার লেখায়। গানটা শোনে কিন্তু আপনার সামনে আপত্তিকর শব্দগুলো ব্যবহার না করে তাহলে? আপনিতো চান যেন তারা এসব শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকে তাইনা। তাহলে, আমার একটা সোজা কথার উত্তর দিন, আপনার সন্তান যদি কম্পিউটার গেমসে প্রস্টিটিউটের সঙ্গে না ঘুরে বাস্তবে ঘুরে বেড়ায় আর তা আপনার থেকে গোপন রাখেন, তাহলে নিশ্চই আপনার আপত্তি থাকবে না বোধকরি। কারণ, আপনার তো আদব-কায়দা সহ সন্তান প্রয়োজন তাই না?

একটু অযাচিতভাবে নাক গলাই, আশা করি কিছু মনে করবেন না। আমার ভাগ্নাভাগ্নিদের ক্ষেত্রে চাই ওরা যেন আদব কায়দা অন্তরে ধারণ করে, শুধু বাসার মুরুব্বিদের সামনে প্রদর্শন না করে। আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালায় যাচ্ছি, ভবিষ্যতের কথা শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন। ঠিকমত শিক্ষা দিতে পারলে আশাকরি ওরা সৎসঙ্গ চিনে এবং বেছে নিবে।

এস এম সাকিব [অতিথি] এর ছবি

আমিও দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনার দোয়া কবুল করেন। কিন্তু জনাব, দোয়া আর বাস্তব তো এক নয়। আপনি এটা কেন মানতে পারছেন না যে, সময় বদলেছে তার সাথে সংস্কৃতি এবং তার উদযাপনও। আগে শীতকালে শীত আর বর্ষায় বর্ষা-এমনই ছিলো প্রকৃতির নিয়ম। এখন কোনো কিছুর ঠিক থাকেনা। প্রকৃতির এই পরিবর্তন যদি আপনি মেনে নিতে পারেন সংস্কৃতির বা মানষিকতার কেন নয়? পেশায় আমি একজন সাংবাদিক। বিভিন্ন মনমানষিকতার মানুষের সঙ্গে পেশাগত কারণে উঠা-বসা করতে হয়, আমি অনেক কাছ থেকে দেখেছি সময়ের এই পরিবর্তনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি। সবাই মেনে নিতে পারেনা, আপনিও পরিবর্তনকে অধঃপতন হিসেবে দেখছেন। নিজেরমতো চিন্তা করার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে আপনার, তার মানে তো এই না যে আপনি নিজের স্বাধ, স্বপ্ন নতুন প্রজন্মের ওপর জোড় করে চাপিয়ে দেবেন! এটা মেনে নেওয়ার মতো না। আপনার পরিবারের ভালো-মন্দ অবশ্যই আপনি আমার থেকে বেশি বুঝবেন। শুভকামনা রইলো আপনার প্রতি। একটা কম্পিউটার গেমসে কি দেখালো না দেখালো এটা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যদি আপনি সভ্যতা ধরে রাখতে চান, তাহলে ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করুণ কারণ এখানে নিয়ন্ত্রণ তো দূরে এটার কথা ভাবাও অনুচিত।

এসএম সাকিব।

শিশিরকণা এর ছবি

আশে পাশে অনেক বাবা-মা কে দেখছি যাদের কাছে শব্দ "fuck" বা তার consequence হিসেবে যে বাচ্চাটি তারা পয়দা করেছেন, কোনটিরই কোন গুরুত্ব নাই। বাচ্চা গুলার জন্য খারাপ লাগে। নির্বোধ বাপ মা গুলার পাল্লায় পড়ে কত সম্ভাবনা নষ্ট হচ্ছে। একটা শিশুকে মানুষে পরিণত করার গুরু দায়িত্বটা সমন্ধে এসব বাপ মা পুরাপুরি অজ্ঞান বা অলস। যেন বাচ্চাটাও হঠাৎ মুখ ফস্কে বলে ফেলা shit, fuck এর মত just a word.

একদম
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরো লেখাটাই ভালো লাগলো। নিজের মুল্যবোধ কে আরেকটু শানিত করে নেওয়ার সুযোগ পেলাম, দিনে রাতে সময়ের সাথে তা প্রায় হারানোর পথে চলে যাচ্ছে।

একটু খানি দ্বিমত পোষন করছি শিরোনাম নিয়ে। আর সেখানেই হয়তো সাকিব দা'র সাথে আমার চিন্তার মিল পাওয়া যেতে পারে। শিরোনামটা যদি সব অভিভাবক দের প্রতি হয়ে থাকে যারা তাদের সন্তানকে মুল্যবোধ শেখাতে ব্যর্থ হচ্ছেন তাহলে বলবো আপনি তাদের পরিবেশ পরিস্থিতির প্রতি সুবিবেচক এর দৃষ্টিতে তাকাননি।

কোয়েনা মিত্রের নামের আগে 'বাঙালি' জুড়ে দেয়াটা অসংগত মনে হলো। আপনি যা কিছু অশ্লীল বলতে চাইছেন মোটামুটি (প্রতিষ্ঠিত সব) কালচারেই তা অসভ্যতা। তাই এখানে অহংবোধ এর গন্ধ পাই। সেটা কি কাম্য হতে পারে?
বলিউড, হলিউড, ঢালিউড, টালিউড সব জায়গাতেই অশ্লীলতা তার জায়গা করে নিয়েছে। কোনোটার নাম আলাদা করে নেওয়ার আসলেই প্রয়োজন আছে কি?

আমার কথা গুলো অসঙ্গত মনে হলে ঝেরে বকে দেবেন। ছোট মুখে হয়তো বড় কথা বলে ফেলেছি...

--------------------------------------------------------------------------------

উদ্ভট রাকিব

সময়ের স্রতে ভাসতে ভাসতে উদ্ভ্রান্ত হলেম...

guest_writer rajkonya এর ছবি

আপনার সময় উপযোগী লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল। একজন দেখি বলেছেন,

একটা কম্পিউটার গেমসে কি দেখালো না দেখালো এটা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যদি আপনি সভ্যতা ধরে রাখতে চান, তাহলে ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করুণ কারণ এখানে নিয়ন্ত্রণ তো দূরে এটার কথা ভাবাও অনুচিত।

আমি মনে করি, বয়স উপযোগী গেমস বা সাইট সে ব্যবহার করছে কি না সেটা অভিভাবকদের নজরে রাখা উচিত। ৬ মাসের বাচ্চাকে পোলাও কোরমা খাওয়ালে , না সে এটা হজম করতে পারব, না এটা তার জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে। ৬ মাসে বাচ্চার জন্য তার উপযোগ্রর খাবারই দিতে হবে। আবার ২৬ বছরের একজনকে ৬ মাসের বাচ্চার খাবার দিলেও চলবে না। আমি একটা সাধারণ খাবারের উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা ব্যাখায় করতে চাইলাম।

ছোট একটা ছেলে পিসি ব্যবহার করছে, গেইমস খেলছে। কিন্তু সেটা যদি তার বয়স উপযোগী না হয়, এক্স রেটেড হয়, তবে সেটা তার জন্য যে ক্ষতিকর সেটা না বলে দিলেও চলবে। সে জন্যই বাইরের দেশে বিভিন্ন রেট দিয়ে ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়, বয়স অনুযায়ী। ব্যবহার বন্ধ কিন্তু করা হচ্ছে না।

শ্রীকৃষ্ণ এর ছবি

সাকিব ভাই, আপনি পরিবর্তন আর অধঃপতন কে এক করে ফেললেন ...সেটা বোধকোরি ঠিক না। যেটা খারাপ সেটা সবসময়ই খারাপ, আধুনিকতা দিয়ে যদি আমরা শিক্ষিত মানুষরা খারাপকে হাল-যুগের হাওয়া বা পরিবর্তন হিসাবে চালায়ে দিই তাইলে তো সূমুহ বিপদ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যা করছে সেটা সে বুঝে-শুনে করছে কিন্তু একটা বাচ্চাকে যদি সময় না দিতে পারেন বা গাইড না করতে পারেন সেটার দায়ভার অভিভাবকের, পারিপার্শ্বিকতার দোষ পরে আসে। সুতরাং আভিভাবক নিজের দায়িত্ব অবহেলা করে বলতে পারেন না বাচ্চাটা যুগের হাওয়াতে বদলে গেছে। আমার এক কাজিন (১০/১১ বছর) Black-Ops নতুন ভার্সন খেলার জন্য পাগল, কিন্তু চাচা কিনে দেবে না কারন সেটা M-rated, সে কান্নাকাটি করে বাসা মাথায় তুলল কিন্তু চাচা তার অবস্থানে অনড়। শেষে সে আমার কাছে এল, কারণ তার সব আবদার রক্ষা করার দায়িত্ব আমার, কিন্তু আমি তাকে সুন্দর করে বোঝালাম কেন সে এই গেমটা খেলতে পারবে না, যদিও তার অনেক বন্ধু খেলে তার এই যুক্তিটা খণ্ডন করার পর সে বুঝল। সুতরাং এই ছোটো ছোটো সময় গুলো যদি আমরা দিতে না পারি তাইলে বাচ্চা বড় হয়ে সবার সামনে "Motherfucker" জাতীয় গান শুনবে আর আমাদেরকে দাঁত বের করে বলতে হবে- পরিবর্তন, যুগের হাওয়া......, তাই না???

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মির্জা, অনেক দারুন পোস্টের জন্য।
অনেক কিছু জানলাম গেম নিয়ে। যদি এই বিষয়ে সচেতন কেউ নিয়ন্ত্রণ না করতে চায়, না চাক। কিন্তু আমরা যারা এইসব অত্যাধুনিক পারভার্টেড বস্তুর অস্ত্বিত্ব সম্পর্কে নাদান, তাদের জন্য খুবই উপকারী পোস্ট। ভালো লাগলো।

মিনাশিক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।