অধিকার

মনামী এর ছবি
লিখেছেন মনামী (তারিখ: রবি, ১৪/০২/২০১০ - ৮:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমেরিকার সবচেয়ে ভালো দিকটা কি জানেন - এই দেশে সবচেয়ে ধনীতে যা কেনে সবচেয়ে গরীবও তাই কেনে – মার্কিন পপ আর্টের প্রবক্তা হিসেবে খ্যাত অ্যান্ডি ওয়ারহল গর্বভরে বলেছিলেন এই কথা। সবচেয়ে ধনী থেকে সবচেয়ে গরীব – একই ভোগপণ্য অর্থব্যায়ের বলয় তৈরি করে সব শ্রেণীর মানুষের চারপাশে।

অই ভালবাসা দিবসে অরে কি দেওয়া যায়?

কি সরল,আবেগঘন প্রশ্ন ! আহা ! ভালবাসা দিবস সবার জন্য।

রিকশায় মাল চড়িয়ে তার ওপর চেপে যেতে যেতে ভাবতে থাকে ছোকড়াটি। বয়স ১৮ – ১৯ আর নায়িকার বয়স ১৩ বা ১৪। সদ্যই ক্লাস নাইনে উঠেছে এবং নিজেকে খুব কম করে হলেও বাংলা নাটকের নায়িকা ভাবতে ভালবাসে – মার্কিন বাণিজ্যবোদ্ধাদের হিসেব অনুযায়ী সবচেয়ে মোক্ষম ক্রেতা –
খাওয়ানো গেলে কিনবেই কিনবে।

অ্যাই ব্যাটা, একটা বুদ্ধি দে না, কি দিমু।

পয়সা আসে সুনা? এত ফাল ফাড়তাসো ক্যা?

আরে ম্যানেজ কইরা ফালামু। পেরেম ফিরিতে করা যায়না মাম্মা।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যালেন্টাইনস ডে’কে কেন্দ্র করে যে ব্যবসাচক্র গড়ে ওঠে তা ভবিষ্যতে বিভিন্ন ‘দিবস’ বাণিজ্যিকীকরণে পাথেয় হিসেবে কাজ করেছে।

তারপর ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে লাল গোলাপ, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভীড় ঠেলে আনন্দময় বিচরণ, ফুচকা ভক্ষণ এবং হুড তুলে রিকশাভ্রমণ।

তারপর মা বলে, এই মাসে ট্যাকা কম দিলি বাপ?

খরচ হইয়া গ্যাসে।

ক্যামনে খরচ করলি। মাইপ্যা মাইপ্যা চলি তুই জানস না?

এত ফ্যাত ফ্যাত কইরো না, ট্যাকা লাগলে কইয়ো আইনা দিমু। এইসব ফ্যাতফ্যাতানি ভাল্লাগেনা।

তারপর বস্তা থেকে একটা দুইটা করে মাল সরানো। মাঝে মাঝে আর কি।
পুঁজির অধিকার দেয় ব্যাক্তিস্বাধীনতা – দেয় কি?

নিম্ন আয়ের স্বাধীনচেতা ছোকড়াটি সন্ত ভ্যালেন্টাইনের নাম না জানলেও এটা জানে যে ভ্যালেন্টাইনস ডে তে উপহার না দিলে তার “পেরেমে”র ওপর কালো দাগ পড়ে যাবে। অগত্যা…

ছবিসূত্র : সুমন ইউসুফের ফ্লিকার


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

পেরেম ফিরিতে করা যায়না মাম্মা

হায়, একারনেই আজি পর্যন্ত কেউ জুটিল না মন খারাপ

কাকুল কায়েশ

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমজনতাকেই খলনায়ক বানিয়ে ফেলেছেন বলে মনে হল।

ব্যপারটাকে গল্প করে তুললে ভালো লাগতো। সেক্ষেত্রে ম্যাসেজটাও ঠিক ঠিক পেয়ে যেতাম। কিন্তু...

আপনার গল্প আমার পছন্দ। কিন্তু এই লেখাটা ভাল লাগেনি। মন খারাপ
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মনামী এর ছবি

গল্প লেখার পরিকল্পনা নিয়েই বসছিলাম, তারপর লেখা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল।যেটা বলতে চাইসিলাম সেটাও ঠিকমত ব্যক্ত করতে পারি নাই। আসলে মোদ্দা কথা হলো, বাজারসংস্কৃতি কাউকেই ছাড় দেয়না।এক্ষেত্রে আমরা পরাধীন এবং সেটা আমরা উপলব্ধিও করতে পারিনা। আর আপনেরে তো মেলায় আর দেখিনা। ঘটনা কি?

অতিথি লেখক এর ছবি

মেসেজটা পেয়েছি।
তবে ... আরো ভাল হতে পারত

বোহেমিয়ান

মনামী এর ছবি

আমিও মেসেজ পেয়ে গেছি যে, লেখাটা জমাইতে পারি নাই। পাইকারি সরি সবাইকে।

তিথীডোর এর ছবি

ভয়, গরাদের পর
এদফায় আশাহত! ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মনামী এর ছবি

গল্পই বোধহয় ভালো লিখতে পারি :(। আর যাতে আপনি আশাহত না হন সেই চেষ্টা করবো।

তিথীডোর এর ছবি

আপনার গল্প লেখার হাত অবশ্যই বেজায় ভালো আপু, কুনু সন্দেহ নাই তাইতো হিংসাই! দেঁতো হাসি
তবে সিনিয়রদের আপনি সম্বোধনও খানিকটা আশাহত করে বৈকি...
ভালো খাকুন আর লিখতে থাকুন!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

আপনার গল্প লেখার হাত অবশ্যই বেজায় ভালো আপু, কুনু সন্দেহ নাই তাইতো হিংসাই! দেঁতো হাসি
তবে সিনিয়রদের আপনি সম্বোধনও খানিকটা আশাহত করে বৈকি...
ভালো খাকুন আর লিখতে থাকুন!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মনামী এর ছবি

শরম পায়া গেলাম তো! আর পরথমেই ক্যামনে তুমি কই। অনুমতি যখন পায়াই গ্যালাম হাসি ...

শাফক্বাত এর ছবি

ভালোবাসা-কে বাণিজ্যকরণ, মা-বাবা র প্রতি একটিদিনে লোক-দেখানো সহানুভূতি...কী চরম হাস্যকর ব্যবস্থা!! এরচাইতে বিশ্ব অফিস-দিবস টাইপের কিছু থাকলে হৈতো। বছরের একটা দিনই অফিস...
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।

অতিথি লেখক এর ছবি

বছরের একটা দিনই অফিস...

সামনের বারের ইলেকশনে আপনাকে আমার ভোটটা অগ্রীম দিয়ে দিলাম! হাসি

কাকুল কায়েশ

মনামী এর ছবি

হাসি)। আমি আপনার সঙ্গে দুইশতভাগ সহমত। আ-হা-রে বছরের একটা দিন অফিস। কি সুউউউখ!

আহির ভৈরব এর ছবি

মনামী

আমার কিন্তু ভালো লাগলো এই লেখাটা। আপনার যতগুলি লেখা পড়েছি (মনে না রাখার মতো সিরিজটা বিশেষ করে) বিষয়বস্তু এবং লেখার ধরণ দুই ভালো লেগেছে। পরের লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।

-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।

নাশতারান এর ছবি

বিষয়বস্তু ভালো লেগেছে। গল্প হিসেবে আপনার অন্য গল্পগুলোর তুলনায় খানিকটা দুর্বল মনে হলো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"পুঁজির অধিকার দেয় ব্যাক্তিস্বাধীনতা"

এই বাক্যাংশটি বুঝতে পারিনি। দয়া করে একটু বুঝিয়ে দিন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মনামী এর ছবি

পুঁজির অধিকার বলতে পুঁজি একাট্টা করার অধিকার বোঝাতে চেয়েছি।আমি মনে করি পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ব্যক্তিস্বাধীনতা বলতে একরৈখিকভাবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকেই বোঝানো হয়। কিন্তু এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতাই কি মানুষকে পুরোপুরি স্বাধীন করে? বাজার সংস্কৃতিতে মানুষকে কি ক্রয় করতে 'বাধ্য' করা হচ্ছে না ? আমি এই প্রশ্নটিই তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার অভিব্যক্তি হয়ত ঠিক ছিল না। তাই বোঝাতে পারিনি। ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ পাণ্ডবদা হাসি

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

চালিয়ে যান হাসি হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লাগলো অনেক কিছু জানতে পারলাম

বাংলা ভাষা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।