একুশ শতকের হেমিলিয়নের বংশীবাদক কিংবা সংষ্কারের নামে একটি পাতানো খেলা -১

রাহা এর ছবি
লিখেছেন রাহা (তারিখ: শুক্র, ১৪/০৯/২০০৭ - ৩:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জাতীয় সরকার না সেনাশাসিত সরকার ? সেবিষয়ে মতভেদ আছে । তবে বলা হচ্ছে রাজনৈতিক অচল অবস্থায় পড়ে বাংলাদেশ যখন অবধারিত গৃহযুদ্ধের দিকে এগুচ্ছিল তখন বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহন করে আমাদের চির কৃতজ্ঞ করেছে । এবং সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল না করে বেসামরিক সরকারকে সহযোগিতা করে ১৪ কোটি মানুষকে কৃপা করেছে ।
আমরা চির কৃতজ্ঞ । সরকার ক্ষমতায় এসে তার প্রধান দায়িত্ব নির্বাচন ফেলে দেশের সংস্কারে লেগে গেল , দুর্নীতির মূল উৎপাটনে তৎপর এমন কি রাজনৈতিক দল গুলোরও সংষ্কার করেই ছাড়বে । যেন আমাদের হাটের মুঠোয় চাদ নেমে এলো । আমরা জনগন পরস্পরে চোখাচুখি করি ,বলি তবে এক্ই কি বলে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি ?? আমরা আহ্লাদিত হই , আনন্দে আত্মহারা হই আর সমস্বরে বলি এতদিন কোথায় ছিলে !!??
রাজনৈতিক অস্থিরতায় আমরা যখন ক্লান্ত ঠিক তখনি একটি অরাজনৈতিক সরকার একটি রাজনৈতিক সরকারের চেয়েও বেশী সমর্থন পায় । শুরু হয় সরকারের সংষ্কার । নির্বাচনকে পিছে ফেলে তাদের সংষ্কার জনগন দ্বিধাহীন ভাবে মেনে নেয় । সরকার যখন অবৈধ দখলের নামে বস্তি উচ্ছেদ শুরু করল , ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ তখন উৎখাত হয়ে জনগন সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিল । কেননা তারা জানে সুন্দর কিছু অর্জনের আগে ত্যাগী হতে হয় । সহায়সম্বলহীন হয়েও অনাগত সুন্দরের প্রত্যাশায় তারা ত্যাগী হলো । কিন্তু গোল বাধল তখনি যখন দুই রাজনৈতিক দলের নেত্রীদের বিদেশে নির্বাসনের ব্যবস্থা করা শুরু হলো । আমরা হতভম্ব হয়ে গেলাম । চোখের সামনে এলো পাকিস্থান । সেনা প্রধান যখন রাজনৈতিক সংস্কার আর দুর্নীতি দমনের জন্য পাকিস্থানের উদধারণ দেন তখন আমরা জনগন আবার সেই ম্যাংগ পিপল হয়ে যাই । আমাদের মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ে । আমরা নিজেদের ইন্দ্রিয় গুলোকে আর বিশ্বাস করতে পারি না।
আর দোষ কারো নয় দোষ আমাদের নিজেদের । আমাদের পোড়া কপালের । দোষ রাবণের নয় দোষ আসলে লংকার । যেই সেখানে যাক সেই রাবণ ।
দুর্নিতির অভিযোগে যখন কোকো ধরা পড়ে মুক্তি পায় তখনি আমাদের মনে সংশয় দানা বাধে । পত্রিকার খবর গুলোকে বিশ্বাস করলে খালেদা জিয়া সরকারের প্রস্তাবে বিদেশে যেতে রাজী তাই কোকোকে ছেড়ে দেয়া হয় । আমরা হিসেবে বসে যাই , তবে সংস্কার ফংস্কার সাজানো ?? দুর্নীতি দমনের নামে নাটকের মহড়া ?? হতে পারে !!
জনগন পিছে ফিরে তাকায়, অনেকগুলো প্রশ্ন চলে আসে , তবে এই স্ক্রিপ্ট কার ?? বি এন পি না জামাতের না জলপাইদের ?? ঘটনার বিশ্লেষন করলে কি আসে ?? প্রশ্ন অনেক তকে উত্তরে পাহাড় । সবাই অংক কষে , আমরা নানা রকম ফলাফল পাই , এখন শুধু অপেক্ষার পালা , সবাই মুখিয়ে আছে শেষ কবে ? শেষ কবে ?? তখন উত্তর মেলানোর পালা ।

বিগত জোট সরকারের শাসন আমলেই সরকার নাকি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য কয়েকটি পন্থা বেছে নেয় । প্রথমতঃ বিচারপতি হাসান
দ্বিতীয়তঃ রাষ্ট্রপতি (তৎকালীন রাষ্ট্রপতি যখন ইয়াজউদ্দিন তখন তাকে অসুস্থ বানিয়ে জমিরউদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি বানানোর প্রয়াস নেয় হয়েছিল)
তৃতীয়তঃ বর্তমান সরকার
এই বিষয়ে একরকম নিশ্চিত হওয়া যায় তখনকার বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য । তিনি বলেছিলেন আমাদের বেশ কয়েক স্তরে প্লান সাজানো আছে একটি ব্যর্থ হলে আরেকটি ??
এ বিষয়ে সন্দেহ আরো প্রগাঢ় হয় । কেননা বি এনপি একরকম জেদের বসেই দেশ রাজনৈতিক সংকটে ফেলে দেয় । বিরোধীদলের দাবি না মেনে বরং তারা চক্রান্তের পথ বেছে নিয়ে একটির পর একটি খেলা শুরু করে । বিএনপি কি জানতনা তারা বিরোধী দলের দাবি না মানলে দেশ রাজনৈতিক সংকটে পড়বে ?? তবে কি তাদের সাজানোর খেলার তৃতীয় ধাপ এটি ?? সেক্ষেত্র প্রশ্ন আসে তাততে বিএনপির কি লাভ বরং বি এন পির নেতা নেত্রীরাই তো বেশী কারাগারে । কিন্তু লক্ষ করলেই দেখা যায় তারেক সহ বিএনপির অনেক দুর্নীতিবাজ নেতা যাদের দুর্নীতি লোকচক্ষুর আড়ালে হয়নি তাদের সকলের বিরুদ্ধেই কিন্তু আসল অভিযোগ নেই । সবাই ফাসানোর জন্যে ছোট খাটো ছিচকে চুরির মামলা । অথচ তারেকের মালয়েশিয়ায় কয়েক শত কোটি টাকা আটকে যাওয়া ছাড়াও যখন নানা ভাবে তার উপার্জিত টাকা কয়েক হাজার কোটি টাকার গল্প তখন সরকার তার বিরুদ্ধে এনছে মাত্র ১ কোটি টাকার চাদাঁবাজির মামলা । যা কৃতকর্মের কয়েক শত ভাগের একভাগ ।সেনাপ্রধান বিদেশে পাচার হওয়া কয়েক হাজার কোটি টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার এবং দুর্নীতি করে অর্জিত টাকার হিসাব জনসম্মুক্ষে দেয়ার প্রতিশুতিও ভংগ করেছেন ।তবে কি অর্থ গুলো পকেটে না কথা গুলো লোক দেখানো ?? তেমনি মইনুল সহোদর কিংবা মওদুদ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ কয়েকটি বিদেশী মদের বোতল শুল্কফাকিঁ দিয়ে অবৈধ ভাবে রাখার ।যা প্রশ্ন সাপেক্ষ । আওয়ামীলীগ সহ অনেক দলের নেতা কর্মীই যখন বিচারের মুখোমুখি তখন যুদ্ধাপরাধী , দেশে জংগী মৌলবাদের পৃষ্ঠপোষক জামাতের ব্যাপারে সরকার মৌন সমর্থন । এমনকি তাদের সাফাই গাইছে জামাত হয়ত দুর্নীতিই করেনি । কিন্তু কৃষি, শিল্প কিংবা সমাজসেবা অধিদপ্তরের দুর্নীতি কিন্তু দিবালোকের মত স্পষ্ট । কিন্তু কোন এক অজানা ইংগিতে সরকারের মৌন মুখর নিরাবতা ।
তবে কি সরকার হেমিলিয়নের বংশীবাদক ?? সংস্কারের সূরের মুর্চ্ছনায় জনগনকে ভুলিয়ে অন্য কোন উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় ??
অন্য কারো ?? কি উদ্দেশ্য ??

হতে পারে অনেক কিছুই !!


মন্তব্য

আরিফ জেবতিক এর ছবি

-----------------------------------
ঢাকার ভূমে ফিরেছে একাত্তর/প্রস্তুতি নে,সময় হলো তোর..

রাহা এর ছবি

?

..হৃদি ভেসে যায় অলকানন্দার জলে...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।