সোফির জগৎ

শিক্ষানবিস এর ছবি
লিখেছেন শিক্ষানবিস (তারিখ: রবি, ১৭/০৮/২০০৮ - ২:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto
সোফির জগতের কথা প্রথম শুনেছিলাম ২০০৪ সালে। এক শনিবার, এসেম্বলিতে প্রিন্সিপাল তার বক্তৃতায় বলেছিলেন। নরওয়েজীয় ভাষায় মূল বইটির নাম "সোফিস ভার্ডেন", লেখক ইয়স্তেন গার্ডার। পলেট মোলারকৃত ইংরেজি অনুবাদের নাম "সোফিস ওয়ার্ল্ড"। আর ইংরেজি থেকে বাংলা করেছেন জি এইচ হাবীব, নাম দিয়েছেন "সোফির জগৎ"। জি এইচ হাবীব আমাদের কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, প্রথমে মনে হয়েছিল বিশেষভাবে এই বইয়ের নাম বলার কারণ বোধহয় এটাই। পরে কলেজ লাইব্রেরিতে বই হাতে নিয়ে দেখি, অন্য কারণও আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক জি এইচ হাবিব বইয়ের ভূমিকায় মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ "কমলপুরাণ" ও "তিন পুরুষের রাজনীতি" খ্যাত রফিকুল ইসলামকে (রফিক কায়সার) বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিয়েছেন, প্রকাশের আগেই বইটি পড়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ার জন্য। কলেজ ভাইয়ের অনুবাদ দেখে, পড়ার উৎসাহ বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, ৫০ পৃষ্ঠা পড়ার পরই পাঠকের মৃত্যু হল। কারণ জানি না। খাবার টেবিলে আমার পাশে বসতেন শাহরিয়ার ভাই। অনেক করে বললেন, প্রথম থেকে আবার পড়তে। তারপরও পড়া হয়নি।

প্রায় চার বছর পর, এই সেদিন কিনে পড়া শুরু করলাম। এবারে দর্শনের প্রতি বিশেষ আগ্রহ থেকে। পড়তে গিয়ে প্রথমে খুব ভাল লাগে। রহস্য দিয়ে উপন্যাসের শুরু। সোফি নামের ১৪ বছরের এক নরওয়েজীয় কিশোরী তার বাসার মেইল বক্সে স্বাক্ষরবিহীন চিঠি পেতে শুরু করে। প্রথম চিঠিতে কেবল একটি বাক্য লেখা, তুমি কে? এই প্রশ্নই সোফিকে দ্বিধায় ফেলে দেয়। আমি সোফি আমুন্ডসেন, এই উত্তর তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। পরের চিঠিতে লেখা, বিশ্বটা কোত্থেকে এল? নিজে নিজেই আকাশ-পাতাল ভাবতে থাকে। কোন হদিস পায় না। তবে এটা বুঝতে পারে যে, প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবতে তার ভাল লাগছে। এর পরই শুরু হয় দর্শনের কোর্স। তৃতীয় চিঠি হিসেবে পায় টাইপ করা তিনটি পৃষ্ঠা। এভাবেই প্রাক-সক্রেটীয় যুগ থেকে দর্শন শিক্ষার সূচনা ঘটে, শেষ হয় আধুনিক যুগে জঁ-পল সার্ত্র্-এর অস্তিত্ববাদে এসে।

সোফিকে দর্শন শেখাচ্ছিলো আলবার্তো নক্স নামের এক প্রৌঢ় দার্শনিক। নক্স তাকে বলে, দর্শনের ইতিহাস যেন এক গোয়েন্দা গল্প। এভাবে সোফির গোয়েন্দাগিরির পরিসর আরও বৃদ্ধি করা হলো। কারণ, সোফিকে প্রথমেই অনুসন্ধান করতে হচ্ছিল, কার কাছ থেকে এই বেনামী চিঠিগুলো আসছে? অচিরেই এই রহস্যের সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু তখনই এক অদ্ভুত সমস্যা দেখা দেয়। সোফি এবং নক্সের জগতে এমন কিছু ঘটনা ঘটতে থাকে যার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই, নিছক অলৌকিক। আলবার্তো ন্যাগ নামের কেউ তাদের সাথে এই অলৌকিক-অলৌকিক খেলা খেলছে। দেখে মনে হয়, ন্যাগের কোন ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে। এটুকু তারা প্রথমেই বুঝতে পারে যে, আলবার্তো ন্যাগের মেয়ের নাম হিল্ডা মোলার ন্যাগ যার বয়স সোফির সমান অর্থাৎ ১৪ বছর। এটাও বুঝতে পারে, হিল্ডার বাবা সোফির বাবার মত বাসার বাইরে থাকে। তবে সোফির বাবা মেরিন অফিসার, আর হিল্ডার বাবা জাতিসংঘ শান্তি রক্ষী মিশনের মেজর যার পোস্টিং বর্তমানে লেবাননে। আলবার্তো ন্যাগ কিভাবে তাদের নিয়ে খেলা করছে, দর্শন কোর্সের পাশাপাশি এটা নিয়েও চিন্তা করতে হয় সোফি ও আলবার্তো নক্সকে। তাদের সূত্র হিসেবে থাকে হিল্ডার জন্মদিনকে উদ্দেশ্য করে সোফির প্রযত্নে হিল্ডার কাছে পাঠানো আলবার্তো ন্যাগের পোস্টকার্ডগুলো।

সোফি এবং আলবার্তো নক্স দর্শনের ইতিহাসে অভিযান চালানোর পাশাপাশি নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে চেষ্টা করে। এক হিসেবে বলা যায়, অস্তিত্ব অন্বেষণের এই প্রচেষ্টা না থাকলে, সোফির জগৎ কেবলই দর্শনের এক পাঠ্যবই হতো। তার মানে, সোফি ও আলবার্তো নক্সের অস্তিত্বের সন্ধানই উপন্যাসের কাহিনী তৈরী করেছে। কাহিনী বিচারে একে অধিসাহিত্য (মেটাফিকশন) বলা যায়, অর্থাৎ পাঠক একসময় বুঝে যাবেন যে তিনি একটি উপন্যাস পড়ছেন। অধিসাহিত্য আগে কখনও পড়িনি। "অ্যাটোনমেন্ট" সিনেমাটি অধিসাহিত্য থেকে করা। কিন্তু, অ্যাটোনমেন্ট উপন্যাস তো আর পড়া হয়নি। সে হিসেবে অন্য ধরণের এক মুগ্ধতা কাজ করেছে। সোফির জগৎ আধুনিক "থ্রো দ্য লুকিং গ্লাস"-এর মোড়কে শিক্ষণবিজ্ঞানের এক সফল সৃষ্টি। সাহিত্য হিসেবে সফলতা যদিও খুব বেশি না। টাইম ম্যাগাজিনের সমালোচক জন ইলসন তো বলেই দিয়েছেন,

As fiction, Sophie's World deserves no better than a D+. But as a precis of great thought, Gaarder's tour de force rates a solid B.

আমি অবশ্য সাহিত্য বিচারে একে ডি+ দেব না। আমার কাছে সোফির জগৎকে "এ-" এর যোগ্য বলে মনে হয়েছে। এন্টারটেইনমেন্ট ডেইলিতে "এ-" দেয়া হয়েছে।

উপন্যাসের নামের নিচেই লেখা, দর্শনের ইতিহাস বিষয়ক একটি উপন্যাস। বইয়ে পাশ্চাত্য দর্শনের কোন কিছুই বাদ পড়েনি। তবে এক গৌতম বুদ্ধ ছাড়া এতে প্রাচ্য দর্শনের তেমন কিছুই নেই। প্যাগান এবং মধ্যযুগীয় মুসলিম দর্শনকেও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তার পরও মুগ্ধ না হয়ে পারিনি। প্রথম দিকেই গ্যেটের কবিতার একটি চরণ পড়েছিলাম,

যে তিন হাজার বছরকে কাজে লাগাতে পারল না, তার জীবন ব্যর্থ।

সোফির জগৎ পড়ার পর মনে হয়েছে, তিন হাজার বছর কাজে লাগাতে না পারলেও কিভাবে কাজে লাগাতে হবে তা অন্তত বুঝতে পেরেছি। আমার মনে হয়েছে, সোফির জগৎ যে কোনও মনোযোগী পাঠকের জীবন পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে।

ইয়স্তেন গার্ডারের অন্যান্য উপন্যাসের মত, সোফির জগতেরও দুটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। প্রথমত, কিশোরের দৃষ্টি দিয়ে দেখা এবং দ্বিতীয়ত, শেখানোর চেষ্টা। এ ধরণের উপন্যাসের বেস্টসেলার হওয়ার কথা না। তারপরও সোফির জগৎ দীর্ঘ ৪ বছর নরওয়েতে বেস্টসেলার তালিকায় এক নম্বরে ছিল। পৃথিবীর যে দেশেই প্রকাশিত হয়েছে, সে দেশেই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশেও সোফির জগৎ কম বিক্রি হয়নি। এটা দেখেও খুব ভাল লেগেছে। এটাই প্রমাণ করে যে, সাধারণ মানুষ প্রাচীন ধর্ম এবং অতিপ্রাকৃতের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করছে। তারা সবকিছুর জাগতিক ব্যাখ্যা চাচ্ছে। এ কারণেই দর্শনের জটিল সব প্রশ্নের একটি সহজ উত্তরকে এভাবে লুফে নিয়েছে। স্টিফেন হকিংয়ের "আ ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম" যে কারণে জনপ্রিয় হয়েছিল, সোফির জগতের জনপ্রিয়তার কারণও অনেকটা সেরকম। অনেকে তো সোফির জগৎকে "আ ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম"-এর দার্শনিক প্রত্যুত্তর হিসেবে দেখছেন।


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

সোফির জগত খুব সম্ভবত চমৎকার একটি বই । খুব সম্ভবত বলার কারণ, বইটি আমারও পড়া হয়নি। এ ধারণার পুরোটাই পরের মুখে ঝাল খেয়ে - বিভিন্ন রিভিউ পড়ে আর পরিচিত যারা পড়েছে তাঁদের থেকে শুনে। আমি নিজেও কয়েকবার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু অনুবাদের ধরণ আমার ভালো লাগে নি।

জি এইচ হাবীবকে প্রাপ্য সম্মান দিয়েই বলতে চাই, উনার অনুবাদের ধরণ খানিকটা আড়ষ্ট ঠেকে আমার কাছে। অনেক কষ্ট করেই পড়ে ফেলেছিলাম উনার অনুবাদ করা মার্কেজের নিঃসঙ্গতার একশ বছর - এজন্য অনেকেই অবশ্য আমার ধৈর্য্যশক্তির প্রশংসা করেছেন। তবে সোফির জগতের বেলায় তা পারি নি।

সেদিন আজিজে এর মূল ইংরেজী বইটাই দেখলাম। বেশ দামী। সময়মত ফুয়েলের যোগান পেলে কিনে ফেলার পরিকল্পনা আছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

শিক্ষানবিস এর ছবি

মূল বই ইংরেজিতে হলে সাধারণত ইংরেজিটাই পড়ি। কিন্তু, মূল যেহেতু নরওয়েজীয় সেহেতু ইংরেজিটা হাতে পেয়েও পড়িনি। অনুবাদ খুব ভাল বলা যাবে না। আরেকটু ঝড়ঝড়ে হলে ভাল হতো। তারপরও খারাপ লাগেনি। তবে প্রথমে অভ্যস্ত হতে সময় লাগে। এ কারণেই বোধহয় চার বছর আগে পুরোটা পড়তে পারিনি।

নেট ঘেটে দেখলাম, সমালোচকরা ইংরেজির তুলনায় ফরাসি অনুবাদটিকে মূল বইয়ের বেশি কাছাকাছি বলেছেন। তাহলে চিন্তা করুন, নরওয়েজীয় থেকে ইংরেজি তার থেকে বাংলা, ইংরেজিটাও আবার খুব বেশি প্রশংসিত নয়। তবে ইংরেজিটা অবশ্যই বেশি ঝড়ঝড়ে।

রেজাউল করিম সুমন এর ছবি

মার্কেসের ওই উপন্যাসটির আরো একটি বাংলা অনুবাদ আছে। আপনার চোখে পড়েছে কি? দুটি বই পাশাপাশি রেখে পড়লে (ও সেই সঙ্গে গ্রেগরি রাবাসা-র ইংরেজি অনুবাদ) জি এইচ হাবীবের অনুবাদ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন হয়তো পালটাতেও পারে।

হযবরল এর ছবি

"সোফির জগৎ" অনায়াসে পাঠ্যপুস্তক হতে পারে, গল্পের ছলে দর্শন এবং গল্পের ছলে নিজেকে জানা।

অনুবাদ তখনই মূ্ল্যায়ন সম্ভব পাশাপাশি অন্য কারো অনুবাদ পড়লে। আমার কাছে জি এইচ হাবীব ভালোই লাগে।

সবজান্তা এর ছবি

ওহ, আরেকটা কথা, ইয়েস্তেন গার্ডারের আরো একটা উপন্যাসের অনেক প্রশংসা শুনি, তাসের দেশে ( নাম সামান্য ভুল হতে পারে ) । এটা কি কেউ পড়েছেন ?


অলমিতি বিস্তারেণ

শিক্ষানবিস এর ছবি

সম্ভবত "দ্য সলিটেয়ার মিস্ট্রি" (Kabalmysteriet)-র কথা বলছেন। এটা সোফির জগতেরও আগে লেখা। ১৯৯৯ সালের মায়া (Maya)-ও বেশ জনপ্রিয়। এটার বঙ্গানুবাদ হয়েছে। সম্পূর্ণ তালিকা এখানে পাবেন:
http://bn.wikipedia.org/wiki/ইয়স্তেন_গার্ডার

সুমন চৌধুরী এর ছবি

পড়া হয় নাই মন খারাপ
পড়তে হবে।



অজ্ঞাতবাস

ফারুক হাসান এর ছবি

রিভিওটা দারুণ হয়েছে চলুক
এরকম রিভিও পড়লে বই পড়ার যে দুর্দমনীয় ইচ্ছা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে তাতে বইটা পড়া না পর্যন্ত আর ভালো লাগে না। নেক্সট টাইম চোখে পড়া মাত্রই পড়তে হবে।

শিক্ষানবিস এর ছবি

ধন্যবাদ।
ইংরেজি বা বাংলা, যেটাই পান পড়ে ফেলেন।

রায়হান আবীর এর ছবি

আইচ্ছা পইড়া ফেলুম নে। রিভিউ ভাল লিখছিস।

=============================
তু লাল পাহাড়ীর দেশে যা!
রাঙ্গা মাটির দেশে যা!
হেথায় তুরে মানাইছে না গ!
ইক্কেবারে মানাইসে না গ!

রণদীপম বসু এর ছবি

দর্শন আর মেটাফিকশান মিলিয়ে এমন সাকসেসফুল বই এর আগে পাইনি আমি। তাও সিলেট নিউ নেশন লাইব্রেরীর কর্ণধার যুবক (যার নাম এ মুহূর্তে মনে নেই) বই বিষয়ক আমার ছিটগ্রস্ততার সুলুকসন্ধান জানে বলেই হয়তো প্রকাশের সাথে সাথে সেই ২০০২ সালেই আমাকে ধরিয়ে দেয়। ফলে দীর্ঘদিন পর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আমার ছুটিকালীন সময়টা দারুণভাবে কাটলো। দারুণ বলছি এজন্যে যে, এই সোফির জগৎ আমার ভাবনা জগতেও দারুণ প্রভাব ফেলেছিলো।
এমনিতেই সর্বভুক পাঠক হিসেবে বটতলা থেকে আগরতলা , কিছুই পারতপক্ষে বাদ দেই না। হয়তো বাছাই করে পড়লে জীবনে আরও বহু ভালো বই পড়া হয়ে যেতো। তবু এই সর্বগ্রাসিতাও মনে হয় আমাকে ঠকায়নি।
এ বইটা অনুবাদে আড়ষ্টতা থাকলেও আমার জন্য যে ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া সমান। কেননা বাংলা ছাড়া আর কিছুতেই আমি কখনোই স্বাচ্ছন্দ্য পাই না। তাই অনুবাদের জন্যেই বসে থাকি।
অনুবাদ যাই হোক, বইটা আমার কাছে চমৎকার লেগেছে। এখনো মাঝে মাঝে ওল্টাই। বহুজনকে আমি এই বইটার রেফারেন্স দিয়েছি এ পর্যন্ত।
ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটা রিভিউ'র জন্যে। ভালো লাগলো পড়ে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

শিক্ষানবিস এর ছবি

পড়েছেন এমন কাউকে পেয়ে ভাল লাগল।

অগ্নি এর ছবি

রিভিউ পড়েই তো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে জীবনটা বোধহয় বৃথা হয়ে গেল। না, সোফির জগৎ বইটা পড়তেই হবে।
তবে আপনার রিভিউ এর এই লাইনটি কেমন জানি - "মধ্যযুগীয় মুসলিম দর্শনকেও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তার পরও মুগ্ধ না হয়ে পারিনি। " এর মানে কি এটাই যে মুসলিম দর্শন থাকলে মুগ্ধ হতে কোন দ্বিধা হত না?

শিক্ষানবিস এর ছবি

বইয়ে পাশ্চাত্য দর্শনের কোন কিছুই বাদ পড়েনি। তবে এক গৌতম বুদ্ধ ছাড়া এতে প্রাচ্য দর্শনের তেমন কিছুই নেই। প্যাগান এবং মধ্যযুগীয় মুসলিম দর্শনকেও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তার পরও মুগ্ধ না হয়ে পারিনি।

এই পুরোটুকু একসাথে ধরলে বোধহয় খটকা লাগবে না। মুগ্ধতা একটু কমেছে প্রাচ্য দর্শনের অনুপস্থিতি দেখে। প্রাচ্য বলতে মুসলিম, ভারতীয় এবং চৈনিক দর্শন বুঝাচ্ছি। আমি মুসলমান ছিলাম বলে মধ্যযুগীয় মুসলিম দর্শন না থাকায় অসন্তুষ্ট হয়েছি, বিষয়টা এমন না। আর এমনিতেও মধ্যযুগীয় মুসলিম দর্শনের মৌলিকত্ব খুব বেশী ছিল না। অনেকটাই ছিল গ্রিক দর্শনের অনুসরণ। তারপরও উল্লেখ করার মতো।

দ্রোহী এর ছবি

চমৎকার রিভিউ হয়েছে।

এই বইটা বাংলা, ইংরেজি দুই ভাষাতেই পড়েছি।

ইস্নিপ্সে ইংরেজি, নরওয়েজিয়ান, ও ফ্রেঞ্চ ভাষাতে বইটি পাওয়া যায়।


কী ব্লগার? ডরাইলা?

শিক্ষানবিস এর ছবি

ধইন্যবাদ।
ইস্নিপ্‌সটা চরম। সব বই-ই দেখি পাওয়া যায়।

স্বপ্নাহত এর ছবি

এসেম্বলিতে প্রিন্সিপালের কথা শুনে আমিও একদিন লাইব্রেরীতে গিয়া বইটা উল্টায় পাল্টায় দেখসিলাম। কিন্তু পড়া হয়নাই।

আজকে তোমার রিভিউটা পইড়া আবার পড়তে ইচ্ছা করতেসে। কিন্তু আমার সাধের লাইব্ররীখানা.... আহা! সময় থাকতে বুঝিনাইক্কা মন খারাপ

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

রেজাউল করিম সুমন এর ছবি

ভাই শিক্ষানবিস,
অধ্যাপক রফিক কায়সারের লেখার আমি অনুরাগী। জি এইচ হাবীবের অনুবাদেরও। ভালো লাগল "সোফির জগৎ" নিয়ে আপনার আলোচনা।
নতুন সংবাদ : সম্প্রতি জি এইচ হাবীবের উদ্যোগে "ভাষান্তর" নামে একটা অনুবাদ প্রতিষ্ঠান আত্মপ্রকাশ করেছে। এর প্রথম প্রকাশনা : রলাঁ বার্ত-এর "রচয়িতার মৃত্যু"।

শিক্ষানবিস এর ছবি

রফিক কায়সার যে ভাল লিখেন তাতে আমারও কোন সন্দেহ নেই। অনুবাদ প্রতিষ্ঠানটির কথা শুনে খুব ভাল লাগল। এ ধরণের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অনেক অনেক হওয়া উচিত। প্রকাশিত বইগুলো পড়ার চেষ্টা করব। জি এইচ হাবীবের সাথে পরিচিত হতে পারলেও খুব ভাল লাগত।

স্পর্শ এর ছবি

এই বইটা পড়েছিলাম বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের কল্যনে। অসাধারণ
....................................................................................
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

শিক্ষানবিস এর ছবি

আসলেই অসাধারণ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।