ডিটেকটিভ গল্প: সেলিব্রিটি প্রবলেমস ২

জ্বিনের বাদশা এর ছবি
লিখেছেন জ্বিনের বাদশা (তারিখ: বিষ্যুদ, ০২/০৮/২০০৭ - ১:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সি.ই.ও'র অফিসঘরটা আয়তনে খুব ছোট হলেও ঢোকা মাত্রই ফার্স্ট ইমপ্রেশন হিসেবে হাসনাইনের যেটা মনে হয় তা হলো, 'নাহ্, লোকটার রুচিবোধ আছে।' রুমের পেছনের দেয়ালটা পুরোটাই কাঁচের, ছাদ থেকে মেঝে পর্যন্ত নেমে গেছে। শুধু লম্বা একটা ব্লাইন্ড দিয়ে বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন ঘরটা। ব্লাইন্ডের দুইপাশে ঝুলতে থাকা দড়ি দিয়ে ইচ্ছেমতো ব্লাইন্ডের ফাঁকটাকে ছোটবড় করা যায় -- একেবারে যে কোন ডিটেকটিভের জন্য পছন্দের অফিসরুম। নিজেকে জগৎ থেকে একপাশে সরিয়ে নিয়ে জগৎদেখার মজাই আলাদা। জানালার দিকে মুখকরে দাঁড়ালে ডানপাশে আর পেছনে যে দুটো দেয়াল, সেগুলো ভারী প্লাইউডের তৈরী, দুটো দেয়ালই ধবধবে সাদা, আর বামপাশের দেয়ালটা সাধারণ কংক্রীটের। ডানপাশের দেয়াল ঘেঁষে লম্বালম্বিভাবে বসানো হয়েছে প্রায় আড়াই মিটা লম্বা একটা ডেস্ক, যেটাকে দেখতে ডেস্কের চেয়ে চওড়া টেবিল বলেই বেশী মনে হয়। ডেস্কের পাশে ছোট্ট একটা ফ্রিজ, ফ্রিজের ওপর কফিমেকার, ব্লেন্ডার, আরও কাপ পিরিচ টাইপের বেশ কিছু কাটলারিজ।

'হামিদ সাহেব তাহলে অফিসে বেশ লম্বা সময়ই কাটান' হাসনাইন ভাবতে ভাবতে রুমটাকে আবারও ঘুরেফিরে ভালমতো দেখে নেয়। দেয়ালে বেশ বড় একটা পেইন্টিং, এক মুহুর্ত দেখলে মনে হবে বিমূর্ত কিছু, ভাল করে দেখলে বোঝা যাবে একটা গাছের কান্ড আর পাতার সংযোগস্থলটুকুকে শুধু ফোকাস করে ছবি আঁকা হয়েছে, ছবির এক কোণায় একটা পাখির বাসার কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। ছবির নীচে আঁকিয়ের নাম লেখা 'শওকত'। হাসনাইন এক মুহূর্ত মনে করবার চেষ্টা করে 'শওকত' নামের কোন বিখ্যাত আঁকিয়ে আছেন কিনা; তারপরই বোঝে হয় এটা হামিদ সাহেবের বন্ধুগোছের কারো আঁকা, অথবা তিনি সস্তায় ছবিটি কিনেছেন। যেটা বোঝায় যে, তারুণ্য সুপারহিট রেডিওস্টেশন হলেও ব্যবসাটা তত জমজমাট না অথবা হামিদ সাহেব বেশ কৃপণ গোছের লোক। এগুলো কোনটাই কোন ব্যাপার না, তাও সে বোঝে; আজ প্রথম প্রধান তদন্তকারী হিসেবে কাজ করতে আসার কারণেই যে পদেপদে তার মস্তিষ্কমশায় নানারূপ অনুমান করে বেড়াচ্ছে সেটা বোঝার মতো বুদ্ধি তার আছে। তবে এইঘরে যেটা দেখে বা অনুমান করে সে সবচেয়ে বেশী আশ্চর্য হয় তা হলো 'তারুণ্য'র সি.ই.ও'র ঘরে তারুণ্যের তেমন কোন ছাপ নেই, বরং সাজানো গোছানো পরিপাটি সংসারী সংসারী ভাব আছে।

ডানদিকের প্লাইউডের দেয়াল আর পেছনের কাঁচের দেয়ালের সোংযোগস্থলের যে কোণাটা সেখানে তিনটা ওয়ান-সীটেড সোফা আর মাঝে একটা ছোট্ট গোল কাঁচের টেবিল। টেবিলটার নিচের গোল উডেন বেইস থেকে কলসী কাঁখে এক বাঙালী নারীর মূর্তি উপরের কাঁচের চাকতিটাকে বহন করছে, এককথায় দেখতে অসাধারণ।
'টেবিলটা এক্সেলেন্ট, না?'রেশমার কথায় হাসনাইনের হুঁশ হয়। তাকিয়ে দেখে রেশমা হতাশ চোখে সোফায় বসে হাসনাইনের দিকে তাকিয়ে আছে।

হাসনাইন আবারও বুঝতে পারে, প্রথমদিন বলে উত্তেজনা আজ অনেক বেশী, সেজন্যই ঘরটাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে অনেক সময় নিয়ে ফেলেছে। পরক্ষণেই তার মনে হয় রেশমাকে কি সে অনেক্ষণ ধরে বসিয়ে রাখল নাকি! একটু ব্যস্ত স্বরেই বলে, 'স্যরি, স্যরি! আপনাকে অনেক্ষণ বসিয়ে রাখলাম।' রেশমার হাসি দেখে খানিকটা আস্বস্ত হয়ে আবার বলে, 'আর হ্যাঁ, টেবিলটা চমৎকার। হামিদ সাহেবের রুচির প্রশংসা করতে হয়।'

'হুম, উনার খুব সুনাম শুনেছি, দেখা হবার পরও ভাল লেগেছে। আ রিয়াল জেন্টলম্যান!'

'তাই? দেখা হলে ভাল হতো।' হাসনাইন কিছু না ভেবেই বলে।

একটু নীরবতা। হাসনাইনই নীরবতা ভাঙে,'আচ্ছা? আপনাকে কি অনেক্ষণ ধরে বসিয়ে রেখেছি? আমি আজই প্রথম মেইন ইনভেস্টিগেটর হিসেবে এসেছি তো, হয়ত একটু বেশী খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব দেখছি।' হাসনাইনের মুখে অপরাধীর হাসি।

রেশমাও সেই হাসির সাথে মিলিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, 'হুমম, বলতে দ্বিধা নেই যে আপনি একটু লম্বা সময় নিয়েই সব দেখেছেন। বিশেষ করে, ফ্রিজের উপর কাপ গুনে আপনি কি রহস্যের সমাধান করবেন সেটা আমি বুঝিনি, হি হি হি।'

'হা হা হা, স্যরি, রিয়্যালি স্যরি,ম্যাডাম। গুণে রাখলাম, পরে যদি খোয়াটোয়া যায় এই ভেবে, হা হা হা।' পরিবেশ কিছুটা হাল্কা হয়।

একটা সোফা টেনে নিয়ে হাসনাইন বসতে বসতে বলে, 'আপনার কেইসফাইল আমি স্টাডি করে এসেছি। বুঝলাম, কেউ একজন আপনাকে প্রচন্ড ডিস্টার্ব করছে। এমনকি আপনি মোবাইল সিমকার্ডও বদলেছেন উৎপাত সইতে না পেরে, রাইট?'

'হুঁ!' হঠাৎ করেই রেশমার চেহারা বদলে যায়, এক ধরনের নীল আতঙ্ক দেখতে পায় হাসনাইন। একটু আগের প্রাণবন্ত ভাবটাও যেন নেই। হাসনাইন একটু হতাশ হয়। আবার ভাবে, আমি তো এই সুন্দরীর সাথে ডেট করতে আসিনি, এসেছি তার সমস্যার কথা শুনতে। নিজের সমস্যাতো কেউ আর উচ্ছল ষোড়শীর মতো হেলেদুলে রিনরিনে গলায় বলবেনা, আতংকে নীল হয়েই বলবে! 'আচ্ছা, আপনি কি শুরু থেকে ডিটেইলস বলবেন, প্লিজ?' হাসনাইন রেশমাকে একটু আস্বস্ত্ব করার চেষ্টা করে।

'তার আগে আপনি আমাকে বলুন আপনাকে শাহাদাৎ সাহেব কতটুকু ব্রিফ করেছেন, তাহলে আমি গুছিয়ে বলতে পারব। ' রেশমা বেশ সপ্রতিভভাবেই বলে।

'ওয়েল, আমি যা শুনেছি বা পড়েছি তা সংক্ষেপে বললে বলা যায়, আপনাকে মাসদুয়েক ধরে একজন চিঠি দিয়ে, ফোনে এবং আরও নানভাবে ভয় দেখিয়ে ডিস্টার্ব করছে। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে। কিন্তু সে যে কি চায় তা আপনাকে কখনই কোনভাবে জানায়নি, এবং আপনার কাছেও ন্যুনতম ক্লু নেই এটা কে হতে পারে।' প্রতিটি বাক্য সময় নিয়ে আস্তে আস্তে বলতে বলতে রেশমার প্রতিক্রিয়া খেয়াল করে হাসনাইন, যদিও কোন পরিবর্তন বা বিশেষ কিছউ ধরা পড়েনা।

'ইয়ে, একটা ব্যাপার। "কোন ক্লু নেই" সে ব্যাপারটা সেটা আসলে আমার পরিচিতদের মধ্যে কেউ করে থাকলে সেব্যাপারে ক্লু নেই সেটা ঠিক, তবে যাকেই আমি সমস্যাটার কথা বলেছি সেই বলেছে এরকম ঝামেলা হয়ত ভক্তদের কেউ করে থাকতে পারে।' রেশমা একটানে বলে যেতে থাকে, 'আপনি জানেন হয়ত, ম্যারিকাতে এখন 'স্টকার' প্রবলেমটা খুব প্রকট। অকারণেই একটা মেয়ের পিছে একটা ছেলে লেগে তার জীবনটাকে দূর্বিষহ করে ফেলে।'

'হুমম, আমি এরকম কয়েকটা কেস স্টাডি পড়েছি।' হাসনাইন বাধ্য ছাত্রের মতো মাথা ঝাঁকাতে থাকে, 'আর শাহাদাত সাহেবও আপনার এই সন্দেহটার কথা আমাকে বলেছেন। ইন ফ্যাক্ট, আমাদেরও মনে হচ্ছে এটা কোন ক্রেজী ভক্তের কাজই হবে। তাই আমরা ভাবছি, আগামী কয়েক সপ্তা আপনার সাথে সবসময় পুলিশ প্রটেকশন দিয়ে রাখবো, হয়ত সেটা দেখে ভক্তের ঝামেলা করার উৎসাহ নষ্ট হয়ে যাবে। সো লেটস যাস্ট কীপ এ্যান আই অন ইট ফর এনাদার ফিউ উইকস, ওকে ম্যাডাম?'

'আমার যে কোন সমস্যা নেই সেটা আমি শাহাদাত সাহেবকে জানিয়ে দিয়েছি' রেশমা বোঝানোর চেষ্টা করে যে সে নিজেও সবকিছুর সাথে আপডেট, 'আচ্ছা, আপনার যে ঈগলস আই দুজন উনারা কি করবেন? আই মীন উনারা কি নিচে ফোর্সের ইউনিফর্মে থেকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন যে আমার জন্য ফোর্স প্রোটেকশন আছে, নাকি উনারাও সিভিল ড্রেসে?'

'ওহহো' হাসনাইন হাসতে হাসতে বলে, 'আজ কিন্তু আমরা ঠিক ফোর্স প্রোটেকশনের কোন পরিকল্পনা নিয়ে আসিনি। আজ এসেছি আপনার সাথে সামনাসামনি কথা বলে, পুরো ব্যাপারটা বুঝে নিতে। আর আপনার জন্য সুখবর হলো, মূল কেইসটা কিন্তু শাহাদাত স্যারই দেখাশোনা করবেন, আমার মতো বোকাসোকা গোয়েন্দা শুধু আজকের জন্যই আপনার সেবায় থাকবে।'

'ওহ! গ্রেইট!!' রেশমা প্রায় চিৎকার করে উঠে, ' দ্যাট'ল বি আ রিয়াল থিং!!'

হাসনাইন সরু চোখে রেশমার দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসি হেসে বলে, 'কেন? আমাকে দেখে কি ভরসা হয়না?'

'না না, তা না! তবে আপনি কাপ গুনতে গুনতে অপরাধী পালিয়ে যেতে পারে, হি হি হি।' রেশমাকে আবারও বেশ উচ্ছল দেখায়।

'হা হা হা', হাসনাইন বুঝতে পারে মেয়েটার সঙ্গ সে ভীষনভাবে পছন্দ করা শুরু করছে।

কিছুক্ষণের নীরবতার পর হাসনাইন বলে উঠল, 'সর্বনাশ! যেজন্য আসলাম, সেই ডিটেইলসইতো শোনা হলোনা!'

'ইউ রূকী!!' চুটকী বাজিয়ে বলতে বলতে হাসনাইনের দিকে অদ্ভুত এক আবেদনময়ী ভঙ্গীতে তাকায় রেশমা, চমৎকার আকর্ষণীয় এক হাসি ঠোঁটের কোণে ঝুলিয়ে বলে, 'ওকে লেটস স্টার্ট। আমি পুরোটা বলব, আপনি কোন প্রশ্ন থাকলে মাঝপথে করতে পারেন।'

'ও.কে', হাসনাইন তার কাগজকলম নিয়ে গোলটেবিলটাকে টেনে নিয়ে রেডি হয়।

বেলের শরবতে চুমুক দিতে দিতে রেশমা বলতে থাকে, 'আমি আপনার সুবিধার জন্য আমার ডায়েরী ঘেঁটে মোটামুটি দিনতারিখের ক্রনোলজী ঠিক রেখে সব ঘটনা সাজিয়েছি। প্রথম ঝামেলাটা হয়, আমার ধারনা, ঠিক যেদিন আমরা সুইস থেকে ফিরলাম সেদিন সন্ধ্যায়। আমরা বিকেলের নাস্তা করেছিলাম সেসময়। ইনফ্যাক্ট আমি এর আগেও মোবাইলে অনেক স্প্যামকল বা মিসকল পেতাম, কিন্তু আমার ধারনা সেদিন বিকেলের সেই কলটা এই লোকটার থেকে। এটা যাস্ট আমার একটা ইন্সটিংক্ট।'

'একটা প্রশ্ন' হাসনাইন স্কুলছাত্রদের মতো ডানহাত উপরে তুলে বলে, 'আমরা মানে আপনারা কে কে? আর আপনি কি নিশ্চিত যে ক্রিমিনাল একজন লোক? মেয়েও তো হতে পারে।'

'ওওহ। আমরা মানে আমি, পিয়া আর মডেল তানিম। ওহ, তানিম আমার খুব ভাল ফ্রেন্ড, আর পিয়ার সাথে তানিমের কাইন্ডা ... ইউ নো ...' বলে রেশমা মুচকি হাসে, আবার বলতে থাকে, 'আর ক্রিমিনাল আমার সাথে ফোনে কথা বলেছে।' রেশমা এবার একটু শ্রাগ করে বলল, 'আচ্ছা? আপনি কি এত ফ্রিকুয়েন্টলি কোয়েশ্চেন করবেন? দেন আই থিংক আই মে লূজ কনসেন্ট্রেশান!'

রেশমা ভয়েস চড়তে দেখে কিছুটা নার্ভাস হয়ে পড়ে হাসনাইন। কিছুটা সমঝোতার স্বরেই বলে, 'ওয়েল দেন। আমি শর্টহ্যান্ড জানি, সো বেটার হয়, যদি আপনি একটানে সব বলেন, তারপর আমি শর্টহ্যান্ডে লেখা প্রশ্নগুলো আপনাকে পরে করব।'

'সেটাই ভাল হবে', মাথা নড করতে করতে রেশমা আবার শুরু করে বলা।

প্রায় বিশ মিনিট ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রেশমা যা বলে তার সারমর্ম অনেকটা এরকম যে কেউ একজন তার উপর খুব ক্লোজ নজর রাখছে। গত দুমাসে তাকে মোট ৩৮ টি চিঠি, প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ বার ফোন (কলার আই.ডি শো করেনা কখনই) করে. কখনও খুব ভালভাবে কথা বলে, কখনও বকাঝকা করে; কখনও খুব সুন্দর করে চিঠি লিখে, আবার কখনও খুবই রূঢ় ভাষায় লেখে। এমনকি কয়েকটি চিঠিতে রেশমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়, যেমন একটি চিঠিতে রেশমাকে সে বলে যে তাকে বিয়ে না করলে সে রেশমার গলায় এসিড ঢেলে দেবে, রেশমা আর গাইতে পারবেনা, ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার কয়েকটি চিঠি আর ফোনের কথায় বোঝা যায় অপরাধী রেশমার প্রতিদিনের জীবনযাপনকে খুব ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে, যেমন রেশমাকে এপর্যন্ত আটবার সে জিজ্ঞেস করে 'আজ অমুক রেস্টুরেন্টে কি খেলে?' এমনকি একদিন রাতে বাসায় খাওয়াদাওয়ার পর বারান্দায় এসে যখন দাঁড়ায় রেশমা, হঠাৎ লোকটা ফোন করে বলে, 'আজকের চিকেনটা পুরো খেতে পারনি কেন?' রেশমা সাথে সাথে দৌড়ে যায় ডায়নিং রুমে গিয়ে দেখে ডায়নিংয়ের জানালা খোলা, পর্দা সরানো। ষেদিন রেশমা এমন ভয় পায় যে তার চীৎকার শুনে পিয়া আর তার মা ছুটে আসেন ডায়নিংয়ে। পরে তিনজন মিলে তিনটি জানালা দিয়ে অনেক চেষ্টা করে খুঁজে বের করতে চেষ্টা করে আশপাশে কোথাও বাইনোকুলার টাইপের কিছু হাতে নেয়া কোন ছেলেকে দেখা যায় কিনা! কিন্তু কাউকেই পাওয়া যায়নি। রেশমা কবে কোন ড্রেস পরেছে সেটাও লোকটা জানে, যেমন যেদিন সে হাল্কা গোলাপী ফিনফিনে শাড়ীটা পরে তানিমের বার্থডেতে গিয়েছিল পিয়ার সাথে, তার দুদিন পর আসা চিঠিতে লোকটা লেখে যে রেশমা যাতে সবসময় এই ফ্যাশনটা ধরে রাখে কারণ লোকটার সাথে বিয়ের পর রেশমাকে সে শুধু এই বেশেই দেখতে চায়!

রেশমার চোখমুখ দেখে হাসনাইন বুঝতে পারে পুরো ব্যাপারটা মনে করতে গিয়ে সে ভয়ে বারবার হিম হয়ে যাচ্ছে। হাসনাইনের মনে হচ্ছিল, সেলিব্রিটিরা শুধু মজায় মজায় আনন্দস্ফুর্তি করে লাইফ কাটায়, ব্যাপারটা কখনই অত সহজ না। তবে তার চেয়েও যে ব্যাপারটাতে সে বেশী আশ্চর্য হয় সেটা হচ্ছে, রেশমার বুদ্ধি। মেয়েটা যেভাবে সবঘটনা গুছিয়ে বলেছে, দিনতারিখ ঠিক রেখে তার কাছে ব্রিফ করেছে তাতে এটা নিশ্চিত পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বা আইনজীবি হিসেবে এই মেয়ে কাজ করলে খুব দ্রুত শীর্ষে চলে যেত। হাসনাইনের মনে হলো, সেলিব্রিটি হিসেবেও এই মেয়ে টপে গেছে শুধু গ্ল্যামারের জন্য না, তার পেছনে নিশ্চয়ই তার এই বুদ্ধিমত্তাও কাজ করেছে।

(চলবে)


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সচলরা তো সবাই দেখি কিরিটি হয়ে উঠছে হাসি

-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শামীম এর ছবি

ডুব দিয়েন না যেন .. .. ..
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ঝরাপাতা এর ছবি

পড়ছি। হাসনাইনকে আরেকটু সপ্রতিভ করে দিন। কেমন বোকা বোকা লাগছে।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

অপালা এর ছবি

মাথায় শয়তানি ঘুরতেছে।

দেখি আপনি কোন দিকে যান,শেষ হলে বলবো শয়তানি টা কি ছিল।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

মোরশেদ ভাই, শামীম ভাই,
আমার মতো আনাড়ীর চেষ্টা আর কি! পড়ছেন জেনে ভাল লাগছে, সচল রাখার পেট্রোল হিসেবে কাজ করবে

ঝরাপাতা, আপনার কমেন্টটা দেখে ভাল লাগছে ,,, আমার প্ল্যানই হচ্ছে দেখতে শুনতে বোকা বোকা এক গোয়েন্দার কথা লেখা

অপালা, আপনার আইডিয়া নিয়ে শুরু করে দিন

পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ঝরাপাতা এর ছবি

তাইলে ঠিক আছে। আপনার ধারাতেই এগুক।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ওয়াও!!! যাকে বলে একেবারে টেনে নেয়া। কাহিনী আমাকে টেনে নিলো। আর থামার উপায় নেই!!!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তাই? শিমুল ,,,
আপনার কমেন্ট পড়ে আমার বেশী ভাল লাগছে, আসলেই হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অতিথি এর ছবি

৩৫ বছর বয়সেও রেশমা আপা মাশাল্লাহ বড়ই ইয়ে আছেন। এমন বাঙালি সেলিব্রিটির কথা পাঠ করেও সুখ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।