তাঁর অনন্ত যাত্রা আছে। শুরুও নেই--শেষও নেই এই নিঃসঙ্গ যাত্রার--নির্বাসন কালের।
একটি গাড়ি বহর চলেছে। মাটি নিয়ে দুনিয়াদারি নেই। পদ্মাতীরের কাটালিয়া গ্রাম থেকে পোখরা। ক্যারাভন চলতে থাকে--বিলুটি গোবিন্দপুর, নবাবগঞ্জ, কুতুবগঞ্জ, খয়েরডাঙা, মৌলাহাট।
সাতখানা গাড়িতে এই ঠাই বদল। স্ত্রী সাঈদা, অশক্ত মা, দুটো ছেলে--মেঝটি প্রতিবন্দি মণি আর ছোটটি শফি। আরও আছে বাজা গরু মুন্নি, ধাড়ি ছাগল বাচ্চাসহ কুলসুম। খেদমত করার জন্য অবৈতনিক বান্দা কজন আর মুরিদ। বড় ছেলে নুরুজ্জামান ফাজিল পাশ করে পুরো দস্তুর উর্দু ভাষী--বুঝেছেন তারা বিখ্যাত পীর বংশের লোক। একটা তফাৎ রাখা দরকার গ্রামের গরীব-গুরবোদের থেকে। তাহল ভাষার তফাৎ। আশরাফের ভাষা।
তিনি সৈয়দ আবুল কাশেম মুহম্মদ বদি-উজ-জামান আল হুসায়নি আল খুরাসানি। তিনি চলেছেন--প্রচলিত পথ ছেড়ে--মাঠ পেরিয়ে। নদী পেরিয়ে। সামনে পথ দেখিয়ে চলেছে কালো জিন বা সাদা জিন। মৌলাহাট গ্রামটি দেখে থেমে পড়েছে এই সাত বহর। গ্রামের মানুষ সংবাদ পেয়ে নদী পাড়ে এসেছে। তারা সহজ সরল মানুষ। সারাদিন ভুতের খাটনি করে। তাদের বউ ঝিরা ক্ষেতে ভাত পৌঁছে দেয়। আর মুশকিল আসানের জন্য পীরের থানে যায়। কলাটা মুলাটা দেয়। তারা অপেক্ষা করছিল তাদের নিজস্ব এক পীরের জন্য। তাদের মনে হয়েছে পিতৃপুরুষ এরকম মাজেজাপূর্ণ পীরের আগমণসংবাদ বলে গিয়েছিলেন। তারা মৌলানাকে পেয়ে বর্তে যায়। তার নাম ছোট করে বলে--বদি পীর।
আর এই বদু পীর পীরবাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে। তার কাছে গান বাজনা হারাম। পরণে তার সফেদ পোষাক। মসজিদে পড়ে থাকেন। আর মৃদ স্বরে বলেন--কেতাবের কথা। তার মাঝে যখন মানুষ লোকটি জেগে ওঠে সে মানুষটি ঘরে গিয়ে সাইদার সঙ্গ করেন। সাঈদা তো তার বিবি। বিবি হল শস্যক্ষেত্রের মত। সাইদার কতটুকু ক্ষমতা। একদিন শুধু তাকে ফিরিয়ে দেন। কারণ তার জানা হয়েছে শুদ্ধস্বামী পরনারীতে আসক্ত। ফলে ফুঁসে ওঠা মৌলনা এতেকাফে পড়ে থাকেন। এ খবর কেউ জানে না।
শুধ জানা যায় প্রতিবেশি বিধবা দরিয়াবানুর দুই কিশোরী মেয়ে রোজ-আর রুকুর বিয়ে দিয়ে দেন বড় ছেলে নূরুজ্জামানের সঙ্গে আর মেজ ছেলে অর্ধমানব মণির সঙ্গে। ছোট ছেলে শফি রুকুর বেদনা বুকে পুষে বিবাগী হয়ে পড়ে। দূরের গ্রামে একটি দহলিজ ঘরের দেওয়ালে টানানো বোররাখকে দেখে তার মনে হয় এই ঘোড়াটির মুখ রুকুর। অন্য কারো হতে পারে না। যে জন্য প্রাকৃত নারী আসমার শরীরী সঙ্গ তাকে রুকুর কষ্ট বাড়িয়েই তোলে। রুকু তার মেজ ভাইয়ের বিবি। আর--''রুকু ভাবে, যদি সে 'জন্তু মানুষটার' বউ না হত, তাহলে সংসারে কর্তৃত্বের ন্যায্য শরিকানাটা দখল করতে সেও হয়তো কোমরে আঁচল জড়াত। কিন্তু কী দরকার অত ঝামেলায় নাক গলিয়ে। বেশ তো আছে।
না,--সত্যিই সে ভালো নেই। যখন তখন একটা জন্তু মানুষের কামার্ত আক্রমণ...। চোখ বুজে দাঁতে দাঁত চেপে রুকু তার অবশ শরীর রেখে পালিয়ে যায়--পালাতেই থাকে, দূরে--বহুদূরে। কিন্তু কোথায় যাবে?''
আর মা দরিয়াবানু তার মেয়ের এই যন্ত্রণার অপরাধে কাতর হয়ে ডুমুর গাছে ঝুলে পড়েছে।
শফি ইংরেজি শিখতে গিয়ে বংশচ্যুত। মানুষের মুক্তির জন্য লৌকিক সংগ্রামে নেমেছে। বিদ্যাচর্চা, প্রকৃতি, নারী সাহচর্য, ব্রহ্মবাদ ও মননচর্চা কিছুই তাকে ধরে রাখতে পারে না। হয়ে উঠেছে নৃশংস ঘাতক। উন্মুল। এই ঘাতক মানুষটিই এক সময় লোক মুখে হয়ে ওঠে একজন অলীক মানুষ--ছবিলাল।
তার পিতা আল খোরাসানি তাঁর জাগতিক বুদ্ধি, শাস্ত্রীয় জ্ঞান এবং শরীরী বাসনা-কামনা নিয়ে হয়ে ওঠেন নিঃসঙ্গ মানুষ। স্ত্রী সাঈদার প্রত্যাখান আর শফির আত্মগোপন তাঁকে তাঁর ধ্যানের জগৎ থেকে দূরে সরিয়ে আনে। তিনি চলে যান একা একা আবার দূরের যাত্রায়। ফিরে এলে এক কুহকী নারীর শরীর হয়ে ওঠে অনিবার্য গন্তব্য। তিনিই সফেদ পোষাক নিয়ে হয়ে ওঠেন দুশ্চরিত্রা ইকরাতুনের সন্তানের জনক। আর গ্রামের গরীবগুর্বো লোকজন এই পীরবিরোধী আল খোরাসানীকে লোকোত্তর প্রতিষ্ঠা দেয়--হয়ে ওঠে বদু। আর কবরটি মানতের মাজার।
সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের 'অলীক মানুষ' উনিশ-বিশ শতকের মুসলিম অন্দর মহলের এক তথ্যপূর্ণ ডকুমেন্টশন। তিনি নিমোর্হভাবে তার সহজাত ভাষায় বুনেছেন অসংখ্য কাহিনী-উপকাহিনীর মধ্যে দিয়ে একটি মহাকাব্যিক উপন্যাস। একশ বছরের এই লৌকিক-অলৌকিকের মন্ময় আখ্যানটি রচিত হয়েছে কোলাজ রীতিতে। কখনো সহজ বয়ানে, কখনো মিথ ও কিংবন্তী আবার কখনো ব্যক্তিগত ডায়েরী, সংবাদপত্রের কাটিং জুড়ে দিয়ে দুর সময় ও বিস্ময়কর মানুষের বৃত্যান্ত। বাঙালি হিন্দু মুসলমান জীবনে এক অনাবিষ্কৃত এক সত্যের উদ্ভাসন।
এরকম উপন্যাস দুই বাংলায় বিরল। পাঠ অমৃতসমান। কেননা অমৃতপাঠ থেকেই জানতে পারি :
...'এখন ভাবি, পুরুষের জীবনে ওই যেন কঠিন নির্বাসনের কষ্ট-কাল! নারীর জরায়ু থেকে বেরিয়ে এসে নিরন্তর নারীর সঙ্গে স্পর্শে-সাহচর্যে বেড়ে উঠতে উঠতে তারপর সে ধীরে ধীরে দূরে যেতে থাকে অথবা তাকে সরিয়ে দেওয়া হয় দূরে। নারীর শরীর, নারীর স্তন, নারীর ঠোঁট তাকে অচ্ছুৎ করে ফেলে। নিষিদ্ধ হয়ে ওঠে প্রিয় এক জগৎ, এবং নির্বাসিতের মতো, অচ্ছুতের মতো, তারপর দূরে সরে থাকা। আবার প্রতীক্ষায় থাকা, করে ফিরবে প্রিয়তম ঘরে? কবে ফিরে পাবে সে নারীর শরীর, নারীর স্তন, নারীর ঠোঁট এবং নারীর জরায়ূ--শরীরের পারুষ্যের যৌবনের রক্তমূল্য দিয়ে সবল পেশীর শক্তি দিয়ে হবে তার প্রত্যাবর্তনজনিত পুনরাভিষেক? করে সে ফিরবে পুরনো কোমল ঘরে? কৈশোরের সেই প্রতীক্ষা আর নির্বাসনের কাল।'
মন্তব্য
লেখাটি ভালো লাগলো, দাদা!
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
অনেক ধন্যবাদ। সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের এই বইটা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছিল।...............................................................................................
এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আমি যতটা মনে করতে পারি এনার নাম সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ, মুস্তফা নয়।
...............................................................................................
এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজই হবে। এটা এডিট করার চেষ্টা করলাম। পারি নি। এডমিন যদি ঠিক করে দেন--তাহলে কৃতজ্ঞ হব।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
কনট্যাক্ট এট সচলায়তন.কম ঠিকানায় মেইল দেন। ওনারা ঠিক করে দেবেন।
অসাধারণ একটা উপন্যাস এই অলীক মানুষ, পড়তে পড়তে চলে গিয়েছিলাম যেন সেই সময়টাতে।
সহমত
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
- বইটা পড়া হয় নাই । পড়তে হবে ।
- বইয়ের রিভিউয়ের লেখক এবং পাঠক দু'পক্ষকেই অনুরোধ - বইয়ের প্রকাশকের নাম, এবং কোথায় বইটা কিনতে পাওয়া যায়, এই দুটো তথ্য দিতে পারলে কারো কারো কাজে লাগতে পারে ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এই বইটা কলকাতার 'দে'জ পাবলিশিং' এর, আমি ঢাকার আজিজ মার্কেট থেকে কিনেছিলাম।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
কুলদা,
আকাশলীনা কার? মুস্তাফা সিরাজ নাকি আবুল বাশার? সংখ্যালঘুর ভেতরে আরো লঘুতরদের দ্বন্ধ ও যাপিতজীবন নিয়ে অসাধারন কাজ। পড়েছেন নিশ্চয়।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আকাশলীনা আবুল বাশারের।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
বাংলায় ইসলামের পথপরিবর্তনের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে এই উপন্যাসে। সুফি ধারার প্রতিস্থাপনে ওহাবী ধারার প্রতিষ্ঠায় বাংলার সমন্বিত লোকজ বিশ্বাসে বিভাজন তৈরির প্রক্রিয়াটিও তুলে ধরা হয়েছে। প্রেক্ষাপটকাল আরো পরের হলেও খোয়াবনামা উপন্যাসেও একই ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এই ধরণের উপন্যাসগুলো আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় নিরুপনে সহায়তা করে।
ধন্যবাদ মনামী। আপনার পর্যবেক্ষণটি ভাল। খোয়াবনামায় কাৎলাহার বিলের অনুগত বিশ্বাসটি (মিথটি) এবং চরিত্রচিত্রণেও অলীক মানুষের সঙ্গে একটি ঐক্য আছে। দুটোই বড় ক্যানভাসের কাজ। সে অর্থে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর কাজটি একটু পৃথক। তিনজনই এই আখ্যান উপস্থাপনের জন্য আলাদা ভাষা ব্যবহার করেছেন।
...............................................................................................
এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
দাদা, অন্যত্রে পাঠ করিছি আবারও পাঠ হলো।
ভালো থাকুন।
_________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
দুই বাংলায় মিলে এত চমৎকার বৈচিত্রময় বই খুব কম দেখেছি। মোল্লাদের আধ্যাত্মিকতায় জ্বীনের ভূমিকাটা খুবই মজার! বারবার পড়েও তৃপ্তি মেটে না এই বই।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
একটু লেখকবৃত্যান্ত : চুরি করে দিলাম--
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক । কর্ণেল তাঁর সৃষ্ট একটি গোয়েন্দা চরিত্র ।
প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ খোশবাসপুর গ্রামে ১৯৩০ সালে জন্মগ্রহণ করেন ৷ প্রথম জীবনে বাড়ি থেকে পলাতক কিশোরের জীবন অতিবাহিত করেছেন ৷ রাঢ় বাংলার লোকনাট্য "আলকাপের" সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাচ-গান-অভিনয়ে নিমজ্জিত হয়ে জেলায় জেলায় ঘুরেছেন ৷ আবার একদিন সহসা সব ছেড়ে তিনি শুনলেন নিজের নাড়ির আওয়াজ - তাঁর ভেতরে অন্তর্নিহিত লেখকসত্তার ধ্বনি ৷শুরু হলো সাহিত্যের সাধনা ৷ তাঁর "ইন্তি, পিসি ও ঘাটবাবু", "ভালোবাসা ও ডাউনট্রেন", "তরঙ্গিনীর চোখ","জল সাপ ভালোবাসা", "হিজলবিলের রাখালেরা", "রণভূমি", "উড়োপাখির ছায়া", "রক্তের প্রত্যাশা", "মৃত্যুর ঘোড়া", "গোঘ্ন", "রানীরঘাটের বৃত্তান্ত", ইত্যাদি অসংখ্য ছোটগল্পের জন্য বিশ্বসাহিত্যের দরবারে স্থায়ী আসন পেয়েছেন ৷
সিরাজের প্রথম মুদ্রিত উপন্যাস - "নীলঘরের নটী" প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পাঠকমহলে সাড়া পড়ে যায় ৷ একের পর এক প্রকাশিত হয় "পিঞ্জর সোহাগিনী", "কিংবদন্তীর নায়ক","হিজলকন্যা","আশমানতারা", "উত্তর জাহ্নবী", "তৃণভূমি", "প্রেমের প্রথম পাঠ", "বন্যা","নিশিমৃগয়া","কামনার সুখদুঃখ", "নিশিলতা", "এক বোন পারুল", "কৃষ্ণা বাড়ি ফেরেনি", "নৃশংস","রোডসাহেব", "জানগুরু" ইত্যাদি ইত্যাদি ৷তাঁর গল্প ও একাধিক গ্রন্থ ভারতের সমস্ত স্বীকৃত ভাষায় অনূদিত হয়েছে, এমনকি ইংরেজি তো বটেই, বিশ্বের বহু ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে ৷
ক্ষুদে ও কিশোর পাঠকদের দাবি মেটাতে তিনি সৃষ্টি করলেন "গোয়েন্দা কর্নেল" নামে একজন রহ্স্যময় চরিত্র , যাঁর মাথা জোড়া টাক, ঠোঁটে চুরুট, অবসরপ্রাপ্ত মিলিটারি অফিসার, এখন প্রজাপতি ও পাখি দেখতে ভালোবাসেন ৷ অথচ তিনি অনেক অপরাধ ও হত্যার কিনারা করে শখের গোয়েন্দাগিরি করেন ৷"গোয়েন্দা কর্নেল" পাঠকের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ৷"গোয়েন্দা কর্নেল সমগ্র" খন্ডে খন্ডে প্রকাশিত হয়ে চলেছে ৷
সিরাজ কলকাতায় পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন ষাটের দশকের শুরুতে ৷ দীর্ঘদিন আনন্দবাজার পত্রিকায় সাংবাদিক হিসাবে চাকরি ও লেখালেখি সমানতালে চালিয়ে গেছেন ৷ তাঁর জ্ঞান ও অধীত বিদ্যাসমূহ তাঁকে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হিসাবে বিদ্বানসমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে ৷ইতিহাস,সমাজতত্ত্ব , নৃতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব, বিজ্ঞান, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব - সব বিষয়েই তাঁর বিস্ময়কর জ্ঞান ও বিদ্যার গভীরতা তাঁকে পন্ডিতমহলে উচ্চ আসন এনে দিয়েছে ৷
তিনি কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা প্রদত্ত আকাদেমি পুরস্কার, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা প্রদত্ত নরসিংদাস পুরস্কার, রাজ্য সরকার দ্বারা প্রদত্ত বঙ্কিম পুরস্কার, এছাড়া ভূয়ালকা পুরস্কার, আরও অনেক অনেক পুরস্কার, সম্মান, পদক প্রাপ্ত হয়েছেন ৷তাঁর অনেক কাহিনী চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে ৷তাঁর "মানুষ ভূত" চলচ্চিত্র ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে মঞ্চে ক্রমাগত অভিনীত হয়ে চলেছে ৷তিনি আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা আমন্ত্রিত হয়ে আমেরিকা ঘুরে এসেছেন ৷
...............................................................................................
এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
শারদীয় দেশ-এ একটা উপন্যাস বেশ আগে পড়েছিলাম, ইহুদি ধর্মের প্রবর্তক ইয়াহুদ ছিল প্রধান চরিত্র, সম্ভবত বইটার নাম- মরুতীর্থ বা এ জাতীয় কিছু, এখন মনে পড়ছে না। ওটাও তো মনে হয় মুস্তাফা সিরাজের। নাকি আবুল বাশার ? অদ্ভুত উপন্যাস !
লেখা ভালো লেগেছে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আবুল বাশার এর মরূস্বর্গ?
নতুন মন্তব্য করুন