তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে-২

মেঘা এর ছবি
লিখেছেন মেঘা [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৭/১০/২০১১ - ১০:৪৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তুমি আমায় ডেকে ছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে-১

৬।

“তুমি কবিতা শুনেছো কখনো?” জিজ্ঞেস করে রিশান।

“শুনেছি। তবে খুব কম।" বলে মৌ।

“তোমাকে আমার একটা প্রিয় কবিতা শোনাই?” জিজ্ঞেস করে রিশান

“শোনাতে পারো তবে আমি কবিতা বেশী ভালো বুঝি না। গান এমন করে শোনাতে চাইলে বেশী ভালো হতো।" মিটমিট করে হাসতে হাসতে বলে মৌ।

“গান?! আমি?! ওহ নো। মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি বাথরুমেও গান গাই না। যাহোক, শুনবে কিনা বলো?”

“আচ্ছা এতো শখ করে বলছো যখন শোনাও।" হাসি মুখে বলে মৌ।

“আমার প্রিয় কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ-র কবিতা। আমি শিউর তুমি নাম শোন নি। কিন্তু অসাধারণ ভালো লিখতেন।"

অতোটা হৃদয় প্রয়োজন নেই,
কিছুটা শরীর কিছুটা মাংস মাধবীও চাই।
এতোটা গ্রহণ এতো প্রশংসা প্রয়োজন নেই
কিছুটা আঘাত অবহেলা চাই প্রত্যাখান।
সাহস আমাকে প্ররোচনা দেয়
জীবন কিছুটা যাতনা শেখায়,
ক্ষুধা ও খরার এই অবেলায়
অতোটা ফুলের প্রয়োজন নেই।

বুকে ঘৃণা নিয়ে নীলিমার কথা
অনাহারে ভোগা মানুষের ব্যথা
প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন নেই
করুনা কাতর বিনীত বাহুরা ফিরে যাও ঘরে,
নষ্ট যুবক ভ্রষ্ট আধাঁরে কাঁদো কিছুদিন
কিছুদিন বিষে দহনে দ্বিধায় নিজেকে পোড়াও
না হলে মাটির মমতা তোমাতে হবে না সুঠাম,
না হলে আঁধার আরো কিছুদিন ভাসবে তোমাকে।

অতোটা প্রেমের প্রয়োজন নেই
ভাষাহীন মুখ নিরীহ জীবন
প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন নেই

কিছুটা হিংস্র বিদ্রোহ চাই কিছুটা আঘাত
রক্তে কিছুটা উত্তাপ চাই, উষ্ণতা চাই
চাই কিছু লাল তীব্র আগুন।

“কি সুন্দর কথা গুলো। কিন্তু মানে বুঝলাম না। মানে আমি কাজ চালানোর মত বাংলা পারি আর কি। এতো কঠিন কঠিন কথা ঠিক বুঝি না।" মুখ করুন করে বলতে থাকে মৌ।

“হুম বুঝতে পেরেছি তুমি বোঝোনি।" মুচকি হেসে বলে রিশান।

“না রিশান আমি বুঝতে চাই। তুমি আমাকে বুঝিয়ে দাও।" জিদ ধরে বলে মৌ।

“উম কিভাবে বুঝাই? আচ্ছা ঠিক আছে তোমাকে একটা ঘটনা বলি। আমি একটা মেয়েকে পাগলের মত ভালোবাসতাম। বলতে পারো আমার ভার্সিটি লাইফে আমি ওকে ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই করি নি। যখন যা বলেছে সেটা আমাকে করতেই হবে এমন একটা অবস্থা ছিলো। আমি ওকে কষ্ট দিয়ে কিছু করতাম না। আর ওর যখন তখন রাগ আমার উপর। কথা বলতে ইচ্ছা না করা, দেখা করতে ইচ্ছা না করা, এই ধরনের অনেক কিছু ছিলো। আমি পাগলের মত হয়ে যেতাম ও আমার সাথে রাগ করলে। কি করবো, কিভাবে করে রাগ ভাঙ্গাবো, কার কাছে বলবো বুঝে পেতাম না। বুঝতে পারছো আমার অবসেশনের মাত্রাটা?” মৌর দিকে তাকিয়ে বলে রিশান।

“হুম বুঝতে পারছি। তারপর কি হলো?” জিজ্ঞেস করে মৌ।

“মৌ ওর সাথে আমার রিলেশন ছিলো পাঁচ বছর। আমি ওর সব প্রয়োজন, সব চাওয়ার গুরুত্ব আমার নিজের যে কোন চাওয়া পাওয়ার আগে দিয়েছি। কিন্তু শেষে এসে দেখা গেলো তারপরও আমি ওর কাছে শুধু একটা অভিযোগ আর ত্রুটিতে পূর্ণ মানুষ। আমার কোন কিছু ওর ভালো লাগে না। আমার জবে অনেক প্রেসার নিতে হয় আমাকে। তাই শেষের দিকে তেমন সময় দিতে পারতাম না। আমি জানি না সত্যিটা আসলে কি তবে কেন যেন মনে হয় ও একটা বাহানা খুঁজছিলো আমাকে ছেড়ে চলে যাবার। হঠাৎ এই তিন চার সপ্তাহ আগে ও আমাকে ফোনে বললো আমি ওকে সময় দিচ্ছি না অনেক নাকি অবহেলা করছি। আমার সাথে পাঁচ বছর ধরে আছে দেখে নাকি আমার কাছে ওর দাম কমে গেছে। কিন্তু ওর অনেক দাম অনেক মানুষের কাছে। আমার সাথে আর রিলেশন রাখবে না। ওর জন্য একটা ছেলে নাকি পুরো পাগল হয়ে গেছে নাদিয়া সেই ছেলেটাকে বিয়ে করবে বলে ঠিক করেছে।" কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মৌ-এর দিকে তাকিয়ে রিশান বলে,

“বিশ্বাস করো মৌ আমার তখন মনে হয়েছিলো আমার পৃথিবীটা আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিলো। আমি অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম নাদিয়াকে। কিন্তু কোন কথাতেই কোন কিছু হলো না। মোবাইল অফ করে রাখলো। বাসার দারোয়ানকে বলে রাখলো আমাকে যেন ঢুকতে না দেয়। দুই সপ্তাহ আগে আমার বন্ধুদের কাছ থেকে শুনলাম বিশাল বড় ব্যবসায়ীর সাথে আমার নাদিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে! আমি তারপর বলতে গেলে ভেঙ্গেই পরেছিলাম। আমি জানি না আমি কি করেছি। আমি ঠিক মত নিঃশ্বাস নিতেও পারতাম না আমার কাছে এমন লাগতো। কি ভয়াবহ কষ্ট। আমার সব কিছু উল্টাপাল্টা হয়ে গেলো। আমার অবস্থা এতো খারাপ হয়ে গেলো যে আমার অফিসের বসের চোখ এড়ালো না সেটা। তারপর বলতে পারো জোর করেই আমাকে ছুটিতে পাঠিয়েছে বস। অনেক ভেবেছি আমি। এখানে আসার পর তোমাকে দেখেছি তারপর আরো বেশী ভেবেছি। কতদিনের জীবন আমাদের?! কতটা দিন বা আর বাকী আছে জীবনের? কেন আমি শুধুমাত্র একজন মানুষকে না পাওয়ার শোকে আমার সব শেষ করে দিবো?” মৌর মুখটা হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে যাচ্ছে দেখে চুপ করে যায় রিশান।

“জানো তুমি যখন ঘটনা বলছিলে আমি মনে মনে ভাবছিলাম তোমাকে বলবো কেন নিজের জীবনের সুন্দর দিনগুলো শুধু কষ্ট আর ফ্রাস্ট্রেশানে শেষ করে দিচ্ছো? You are young! Don’t destroy your life for just a simple girl. And most importantly she doesn’t deserve someone like you! আমাকে যদি কেউ এমন করে লাভ করতো আমি তার জন্য কি করতাম নিজেই জানি না। আমার এইসব দিকে কোনদিন ইন্টারেস্ট ছিলো না। আমি খুব অ্যাডভেঞ্চার লাইক করি। নতুন সব করতে আমার ভালো লাগে।" রিশানের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে মৌ। রিশান কোন কথা না বলে চুপ করে বসে ভাবতে থাকে।

“ভালোবাসা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই সেই ভার্সিটি থেকে এতো দিন গেছে। এখন আর কি করবো বলো?!” বলে রিশান।

“একটা মজার কথা শোন রিশান। বাংলা গান শুনে আমার ধারণা হয়েছে বাঙ্গালীরা ভালোবাসা জিনিসটা খুব বিলিভ করে। এটা অনেকটা বিলাসিতার মত। সবাই শখ করে এটা করে। না পেলে আফসোস করে, কান্নাকাটি করে। এমন একটা অবস্থা যেন পৃথিবীতে করার জন্য আর কিছু নেই।" বলেই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাবার অবস্থা মৌর।

“তোমার কথা গুলো ইনসাল্টিং হলেও সত্যি। আমরা বাঙ্গালীরা ভালোবাসতে ভালোবাসি। সারা জীবন কারো ভালোবাসা পাবার স্বপ্ন নিজের অজান্তেই বুকে লালন করে রাখি। তবে হ্যা আমি এটা এখন বুঝি ভালোবাসার জন্য বাঁচা উচিৎ না। আরো কিছু করা উচিৎ। তোমাকে না দেখলে হয়ত এটা মনে হতো না। আমি আজ থেকে শুধুই ভালো থাকবো মৌ। তোমাকে অনেক থ্যাংস।" হাসি মুখে বলে রিশান।

৭।

“তুমি কি এয়ারপোর্টে আসবে আমাদের সি অফ করতে?” জিজ্ঞেস করে নিরু।

“আন্টি আমি পারবো না জানি না তবে চেষ্টা করবো। মৌ কোথায়? ও কথা বলবে না?” জিজ্ঞেস করে রিশান।

“কি হয়েছে আমি জানি না রিশান। মৌ আমাকে বলল তোমাকে জিজ্ঞেস করতে তুমি আসবে কিনা।" বলে নিরু।

"আন্টি ওকে একটু ফোনটা দেবেন? আমি নিজেই না হয় বলতাম আমি আসবো।" বলে রিশান

"ঠিক আছে তুমি লাইনে থাকো আমি বলছি।" বলে নিরু। একটু নীরবতা তারপর বলে,

"হ্যালো রিশান স্যরি বাবা তোমার সাথে ও কথা বলতে চাইছে না। আমি জানি না কি কারণে।" বলে নিরু।

“ঠিক আছে আন্টি কথা বলতে না চাইলে তো আর কিছু বলার নাই। কখন ফ্ল্যাইট আপনাদের?” একটু মন মরা হয়ে জিজ্ঞেস করে রিশান

“সকাল এগারটায়।" বলে নিরু

“ওহ আন্টি তাহলে আপনাদের সাথে দেখা হচ্ছে না আর। আমার মিটিং আছে কাল অফিসে।" বলে রিশান।

“ঠিক আছে বাবা যাবার আগে আমি তোমাকে জানাবো। তুমি আমাদের জন্য যা করলে সেটা আমি কোনদিন ভুলবো না।" বলে ফোন রেখে দেয় মৌর নিরুম্মা।

কেন যেন খুব মন খারাপ লাগতে থাকে রিশানের। মৌ চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। একসাথে ঢাকা আসার পর আর দেখা হয় নি মৌর সাথে। কথা হয়েছে প্রত্যেকদিন। বার বার রিশানকে বলেছে, “বাঁচো রিশান বাঁচো। নিজের জন্য, নিজের মনের আনন্দের জন্য বাঁচো।" রিশান বলতে গেলে নতুন করে বাঁচতে শুরু করেছে আবার। সব ভালো লাগছে, কাজ করতে ভালো লাগছে। এমন কি মা আর ভাবির ঝগড়া শুনতেও মজা লাগে। মনে হয় বাসার মধ্যেই হিন্দি সিরিয়াল চলছে। যার জন্য এই সব আবার নতুন করে উপলব্ধি করা সেই মেয়েটা চলে যাচ্ছে!

সকাল থেকে অস্থির লাগছে রিশানের। বার বার ঘড়ি দেখছে কত বাজলো। দশটার সময় আর না পেরে ফোন করে মৌকে। কিন্তু ফোন ধরে নিরু আন্টি। চলে যাচ্ছে বলে বিদায় নিয়ে ফোন রেখে দেয়। মৌর সাথে কথা হয় না। কি করবে কি করবে চিন্তা করতে করতে ভাবে মৌকে একটা টেক্সট করবে। পরেই মনে হয় মৌ তো পড়তে পারবে না। তাহলে......!

প্লেনে সিট খুঁজে বসার পর মৌর ফোনটা বেজে ওঠে তাই শুনে মৌ বলে,

“দেখো তো নিরুম্মা কে মেসেজ দিলো?”

“নাও শুনে দেখো। ভয়েস মেসেজ।" বলে নিরুম্মা। ফোন কানে নিয়ে শুনতে পায় রিশানের গলা,

“একটা কবিতা শুনবে মৌ? আমি জানি তুমি কিছু বুঝবে না তারপরও তোমাকে বলতে হবে।

জীবনের বারোটা তো কবেই বেজেছে
আমি শূণ্যের কোঠায় স্থির ঘড়ির কাঁটা
কেন খুঁজি সময়ের দুকূল
ঢং ঢং ঢং !
মধ্য রাতে শুধুই জোয়ারের বারো-আনা ভাটা
তার আনন্দের অনেকটাই ভুল
আমার মত করে তোমাকে চাই না
তোমার মত করে আমাকে নিয়ো
আমার দুঃস্বপ্নগুলো নিংড়ে মুছে
তোমার চক্ষুটাই আমাকে দিয়ো
আমি তোমার ‘অন্ধত্ব’ ঘোচাব।

আমি জানি মৌ সোনা তুমি কিছু বোঝো নি। আমি চাই তোমার পাশে থাকতে। তোমার হাত ধরে জীবনের বাকী দিনগুলো পার করতে। তুমি কি ফিরে আসবে ছুটির অন্য কোন অবসরে আমার কাছে?”

অনেকক্ষন চুপ করে থেকে রিশানকে ফোন করে দিতে বলে মৌ নিরুম্মাকে।

“রিশান কোন একদিন আমি ফিরে যাবো আবার যেখানে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিলো সেখানে। তুমি কি আমার জন্য অপেক্ষা করবে?” জিজ্ঞেস করে মৌ।

“করবো। সেই কোন একদিনটা যতদিন পরই হোক আমি অপেক্ষা করবো। তবু তুমি এসো।" বলে রিশান।

“হয়ত দুই বছর............” মৌর কথা শেষ হবার আগেই লাইনটা কেটে যায়। বারবার ফোন করে একই কথা শুনতে পায় রিশান

“দুঃখিত এই মুহুর্তে মোবাইল সংযোগ.........”

পরিশেষ

ভরা বর্ষায় সাগরের কাছে আসা রিশানের একটা শখে পরিনত হয়েছে। প্রত্যেক বছর এই সময় কক্সবাজার রিশানের আসতেই হবে। ১৯ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত কক্সবাজার থেকে আবার ঢাকা ফিরে যায়। পর পর চার বছর একবারও এর হেরফের হয় নি। সকালের প্লেনে ঢাকা ফিরে যেতে হবে রিশানকে। সারা সন্ধ্যা খুব বৃষ্টি হয়েছে এখানে। বীচে যাওয়া হয় নি তার জন্য। চলে যাবার আগে রাতের সাগর দেখার জন্য বীচে যায়। হাঁটতে হাঁটতে পানির দিকে যেতে থাকে রিশান। হঠাৎ মনে হয় কে যেন বসে আছে এই রাতে বালিতে। কেমন যেন বুকের মধ্যে কাঁপতে থাকে রিশানের। দৌড়ে কাছে যেয়ে দেখে একটা মেয়ে হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে আছে। রিশান কাছে যেয়ে জিজ্ঞেস করে,

“তুমি কে?” মেয়েটা ওর কন্ঠস্বর শোনার পর সটান দাঁড়িয়ে যায়। তারপর ওর দিকে ফিরে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,

“আপনি আবার এসেছেন? বললাম তো আমাকে একটু একা থাকতে দিন। আমি একটু বসবো এখানে। পানির কাছে যাবো না।“

“মৌ! মৌ তুমি এসেছো?” রিশান ছুটে মৌর কাছে যেয়ে বলে।

“রিশান! তুমি? এটা কি তুমি?” সামনে হাত বাড়িয়ে রিশানকে ধরার চেষ্টা করতে করতে বলে মৌ।

“মৌ হ্যা আমি।“ মৌর হাত ধরে বলে রিশান।

“আমি অন্ধ হয়ে গেছি। আমি তোমাকে দেখতে পারছি না।“ কাঁদতে কাঁদতে বলে মৌ।

“এই তো আমি। ছুঁয়ে দেখো। আমার চোখ দিয়ে দেখবে তুমি। কাঁদে না সোনা। অনেক অনেক অপেক্ষা করেছি এই চার বছর তোমার ফিরে আসার। তুমি আসো নি।" মৌর চোখের পানি মুছিয়ে দিতে দিতে বলে রিশান।

“এসেছি। সব ছেড়ে, সবাইকে রেখে তোমার কাছে চলে এসেছি একা। অন্ধ। নেবে তুমি আমাকে নেবে এখন?” জিজ্ঞেস করে মৌ।

“নেবো। আমার মৌ সোনা।" বুকের মধ্যে জড়িয়ে বলে রিশান।

“আমি ঢাকা থেকে যাবার পর ভেবেছিলাম তোমার সাথে আর কোনদিন দেখা করবো না। পুরো পুরি অন্ধ হয়ে যাবার পর আমি জানি না কেন শুধু আমি তোমাকেই ভেবেছি। তোমাকে জানাতে চাই নি কিছু। ফিরে আসবো ভাবি নি। ইচ্ছা করলেই আমি তোমাকে খুঁজে নিতে পারতাম। নিরুম্মার কাছে হয়ত এখনো তোমার নাম্বার আছে। কিন্তু আমি কাউকে কিছু বলি নি। নিজের কাছেই এতোদিন স্বীকার করতে চাই নি। ভালোবাসা আমি বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু.........নিজেকে হঠাৎ করে আমার ভীষণভাবে বাঙ্গালী মনে হচ্ছে। আমি ভালোবেসে ফেলেছি।" করুন মুখে বলতে থাকে মৌ। ওর বলার ধরনে হেসে ফেলে রিশান। তারপর মৌ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওর ঠোঁটে টুক করে চুমু দিয়ে বলে,

“তুমি এতো কিউট করে কথা বলো কি করে?”

“আমি জানি না।" বলে রিশানের দিকে মুখ উঁচু করে আহ্লাদি গলায় বলে,

“কিসি দাও।"

সমাপ্ত

উৎসর্গঃ আমার বোন মৌটুসির জন্য ছোট্ট একটা গিফট।

মেঘা


মন্তব্য

দ্যা রিডার এর ছবি

সুন্দর একটি গল্প ... হাসি

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ রিডার।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

রুদ্রের কবিতা অনেকদিন পর পরলাম। আজ ওর কবিতার বই নিয়ে বসার ইচ্ছা জাগছে। সময় পেলে হয়ত ইচ্ছা পূরণ হবেও। ধন্যবাদ আপনাকে।

--------------------------------------------------------------------------------

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ মেহবুবা আপু। রুদ্রের কবিতাগুলো আসলেই অনেক ভালো। এই কবিতাটা আমার নিজের খুব পছন্দের। তাই গল্পে ঢুকিয়ে দিলাম।

তাপস শর্মা  এর ছবি

ভালো লাগল ভীষণ।

কবিতাগুলি পড়িনি এর আগে, আমার অজ্ঞতা কবির কথাও জানতাম না। এখন জানার চেষ্টা করব। জানেন আমাদের এদিকের সমস্যা, আমরা যারা সাধারণ পাঠক আছি আমরা ওপারের লেখালেখি পড়তেই পারিনা। কারণ বই পাই না । এখানে ঠিকঠাক পাওয়া যায়না। এখন অনলাইনে চেষ্টা চালাই। যা পাই গোগ্রাসে গিলে ফেলি, কত ভালো লেখা যে এখনো পড়তে পারিনি, ভীষণ কষ্ট হয় সবসময়।

মেঘা এর ছবি

তাপসদা আপনারা আমাদের লেখা যে পড়তে চান সেটাই তো আসলে আপনাদের লাইব্রেরিয়ানরা জানেন না। এই জন্যেই হয়ত বইপত্র গুলো পান না। তবে নেটে অনেক কবিতার সাইট পাবেন যেখানে অনেক কবিতা আছে। আপনি বাংলাদেশের আর কোন কবির নাম না জানলেও আশা করি তসলিমা নাসরিনের নাম জানেন। রুদ্র মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহ কিন্তু তসলিমা নাসরিনের হাসবেন্ড ছিলেন। এই কবিতাটার নাম অবেলায় শঙ্খবাস।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগলো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভাই, আপনার লেখার শিরোনাম নিয়ে মজা করতে ইচ্ছে করতেছে। কিছু মনে করবেন না যেন।

তুমি আমায় ডেকে ছিলে
ছুটির নিমন্ত্রনে খেলে গিলে।

হাসি

"ডেকেছিলে" মনে হয় এক শব্দ।

মেঘা এর ছবি

আমি খুব দুঃখিত ভাইয়া মন খারাপ । ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ নতুন হিসাবে মন খারাপ মন খারাপ মন খারাপ মন খারাপ মন খারাপ মন খারাপ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আরে না, কী যে বলেন। দু:খিত হওয়ার কিছু নেই। হঠাৎ মজা করতে ইচ্ছে করল হাসি

মেঘা এর ছবি

ঠিক আছে। এর পর থেকে খেয়াল রাখবো মন খারাপ

তিথীডোর এর ছবি

[বাঙ্গালি নয়, বাঙালি।]

'কিছুটা তো চাই- হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই।'
অভিমানের খেয়া : রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ

রুদ্রের এই কবিতাটাও খুব পছন্দের। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ আপু।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

শুধু রুদ্রের কবিতা নয়, রুদ্রও আমার খুব পছন্দের ছিল। রুদ্র তখনও বড় কবি হয়ে ওঠেনি। প্রতিসন্ধ্যায় সে ও মিনার আমাদের সাথে আড্ডায় বসতো। রুদ্র তাঁর নতুন লেখা কবিতাটি সুর করে পড়ে শোনাতো। আমরা বুঝে না বুঝেই বাহবা দিতাম। অনেক পুরোনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল। রুদ্রের জন্য আকাশের ঠিকিনায় পাঠান একরাশ ভালবাসা।

আপনার লেখাটিও খুব ভাল লাগলো।

প্রৌঢ়ভাবনা

মেঘা এর ছবি

বাহ আপনি রুদ্রকে চিনতেন?! কি চমৎকার একটা ব্যাপার সত্যি একজন কবিকে চেনাটা। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য। লেখাটা আসলে এমন কিছু ভেবে লিখি নি। শুধু ছোট বোনের আবদার মেটাতে।

অচেনা আগুন্তুক এর ছবি

সুন্দর লিখেছেন মেঘা। হাসি

অচেনা আগুন্তুক
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
"আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে"

মেঘা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অচেনা (কেমন জানি চেনা চেনা নিক ইয়ে, মানে... )

কল্যাণF এর ছবি

চিন্তিত

মেঘা এর ছবি

কি হলো? ইয়ে, মানে...

কল্যাণF এর ছবি

গল্প নাকি সত্যি?

মেঘা এর ছবি

গল্প ভাইয়া। তবে একটু সত্যের মিশেল দেয়া গল্প। মেয়েটির সব কথা সত্যি। কিন্তু আমার এই খুব কিউট বোনটার জীবনে রিশানের মত কোন ছেলে আসে নি এই যা গল্পে বানানো।

কল্যাণF এর ছবি

তাহলে মৌটুসি তো পড়তে পারলো না মন খারাপ

মেঘা এর ছবি

হুম মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।