বই কিনে দেউলিয়া হতে কয়েকটি ঘণ্টাই যথেষ্ট

অনিশ্চিত এর ছবি
লিখেছেন অনিশ্চিত [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৮/০২/২০০৯ - ৩:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক সহকর্মীর কাছে থেকে দুটি বই উপহার পেয়েছি। একটি তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের কবি। হীরকজয়ন্তী সংস্করণ হিসেবে ভীষ্মদেব চৌধুরীর ভূমিকা, সংকলন ও সম্পাদনায় অবসর প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে এটি। আরেকটি নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ঔপন্যাসিক উইলিয়ম গোল্ডিং-এর লর্ড অব দ্য ফ্লাইজ। শফি আহমেদের ভূমিকা ও সম্পাদনা এবং শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়ার রূপান্তরে এই বইটিও প্রকাশিত হয়েছে অবসর থেকে।
বই দুটি পড়ে কেমন লেগেছে সে ধরনের কোনো আলোচনা করছি না। আলোচনা অন্য বিষয়ে।

[i]কবি বইতে মোট অংশ রয়েছে তিনটি। প্রথমটি ভূমিকা, তারপর মূল উপন্যাস এবং শেষে পরিশিষ্ট। পরিশিষ্টে আবার বাংলা কথাসাহিত্য-সমালোচনা: প্রসঙ্গ কবি, জীবনপঞ্জি এবং উপন্যাসপঞ্জি নামে তিনটি অংশ রয়েছে। প্রতিটি অংশকে এক একটি ইউনিট ধরলে মোট ইউনিট দাড়ায় পাঁচটি।

কবি বইটি এর আগে একবার পড়া ছিলো। ফলে বইটি পড়তে বসেছিলাম এক ধরনের পূর্ব-ধারণা (pre-conception) নিয়ে। পাঁচ-সাত বছর আগে পড়ার সময় যেরকম মনে হয়েছিলো, তার কতোটা পরিবর্তন হয়েছে সেটা জানা যেমন একটি উদ্দেশ্য ছিলো; তেমনি দ্বিতীয়বার পড়ায় বইটি থেকে নতুন কী পাচ্ছি, সে বিষয়েও আগ্রহ ছিলো অদম্য। তাই ভূমিকা ও পরিশিষ্টের আলোচনা বাদ দিয়ে মূল উপন্যাসটি পড়েছি প্রথমে। তারপর বাকি অংশগুলো পড়েছি আগ্রহ নিয়ে। বিশেষ করে ভীষ্মদেব চৌধুরীর অনুধাবন এবং বিশ্লেষণটি বোঝার চেষ্টা করেছি। অন্যদিকে লর্ড অব দ্য ফ্লাইজ পড়ছি প্রথমবারের মতো। সেখানেও মূল উপন্যাসের বাইরে সম্পাদক ও অনুবাদকের কিছু কথা আছে।

দুটো বইয়ের ভূমিকা, আলোচনা ইত্যাদি পড়ার পর প্রশ্ন জাগছে, মূল বইয়ের সঙ্গে এ ধরনের আলোচনা জুড়ে দেওয়া কতোখানি প্রাসঙ্গিক? তাও প্রথমদিকে? কোন পাঠক মূল উপন্যাস না পড়ে প্রথমে আলোচনা বা ভূমিকা পড়লে তাঁর মধ্যে কি একটি আরোপিত পূর্ব-ধারণা চলে আসবে না? কেউ হয়তো বলতে পারেন, সেটা পাঠকের ব্যক্তিগত দুর্বলতা বা মূল উপন্যাস পড়ার আগে আলোচনা না পড়লেই হয়। কিন্তু বইয়ের শুরুতে আলোচনা থাকলে সেটি উপেক্ষা করে উপন্যাসে যাওয়ার লোভ সামলানো কঠিন। আবার অনেক সময় এটাও মনে হয়, যেহেতু ভূমিকা হিসেবে আলোচনাটি বইয়ের প্রথমেই রয়েছে, তাই উপন্যাসটি পড়ার আগে হয়তো এটি পড়ে নেয়া উচিত। কিন্তু এতে যে লেখক অগোচরে পাঠকের মনে তার নিজ ধারণা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন, সেটি কি পাঠকের জন্য মঙ্গলজনক হচ্ছে? পাঠকের কাছে একেকটি বইয়ের বিশ্লেষণ হতে পারে একেক রকম। কিন্তু ভূমিকা কিংবা আলোচনা পড়ে পাঠক যদি পূর্বোক্ত পাঠকের (যিনি এখানে ভূমিকা লেখক) চেয়ে ভিন্ন কিছু ভাবতে না পারেন, তাহলে সেটার দায়ভার অনেকটা আলোচক বা সম্পাদকের ঘাড়ে বর্তায়। এবং আমার মতে, এতে সাহিত্য অঙ্গনও বোধহয় কিছুটা ক্ষতির মুখোমুখি হয়।

আরেকটি কারণেও মনে হচ্ছে, মূল উপন্যাসের সঙ্গে এ ধরনের আলোচনা দেয়াটা সমীচীন নয়। আমাদের দেশে বইয়ের দাম এমনিতেই বেশি কিংবা আমাদের ক্রয়ক্ষমতা চাল-ডাল বাদে বই কেনাটাকে সাপোর্ট করে না। তার ওপর এ ধরনের বড়সড় আলোচনা বইয়ের কলেবরই বাড়ায় না শুধু, দামও বাড়ায়। কবি বইয়ের মোট পৃষ্ঠা ২১০। মুল উপন্যাসটি ১৪৩ পৃষ্ঠার। দাম লেখা আছে ১০০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি পৃষ্ঠার দাম পড়ছে প্রায় ৪৮ পয়সা। শুধু যদি মূল উপন্যাসটি দেয়া হতো, তাহলে ৪৮ পয়সার হিসেবে বইটির দাম দাড়াতো ৬৮ টাকা। অর্থাৎ ৩২ টাকা দেয়া হচ্ছে একজন আলোচকের বিশ্লেষণ পড়ার জন্য।

একটু ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে লর্ড অব দ্য ফ্লাইজ বইটিতে। ২১২ পৃষ্ঠার বইটিতে মুল উপন্যাস ১৯১ পৃষ্ঠার। দাম ১৫০ টাকা। প্রতি পৃষ্ঠায় দাম পড়েছে প্রায় ৭১ পয়সা করে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে দুটি বইয়ের কাগজের মান, বাঁধাই ইত্যাদি একই মনে হলেও পৃষ্ঠা প্রতি দামের এই বিশাল পার্থক্য কেনো তা বোঝা যাচ্ছে না। আমি জানি না, বইটি প্রকাশের আগে স্বত্বাধিকারীর অনুমতি নিয়ে যথাযথভাবে প্রকাশ করা হয়েছিলো কি-না। যদি হয়, তাহলে হয়তো দাম ঠিক আছে। কিন্তু সে বিষয়ে কিছু লেখা নেই। যদি আলোচনা বাদ দিয়ে শুধু উপন্যাসটি প্রকাশ করা হতো, তাহলে ৭১ ও ৪৮ পয়সা হারে বইটির দাম হতো যথাক্রমে ১৩৬ ও ৯২ টাকা। অনেকে হয়তো লেখকের জীবনী পড়তে আগ্রহী হবেন। সেক্ষেত্র দাম ১৩৬/৯২ টাকার চেয়ে আরেকটু বাড়তো।

আমাদের এমনিতেই বই কিনে পড়ার অভ্যাস কম। তারওপর বইয়ের দামও তুলনামুলকভাবে বেশি। এই আলোচনার বহর বাদ দিলে বইয়ের দাম কমে আসে অনেকখানি। আর আলোচনা পড়ার জন্য দৈনিক পত্রিকাগুলোর শুক্রবারের সাহিত্য সাময়িকী, সাহিত্য ম্যাগাজিন পত্রিকা, লিটল ম্যাগাজিনগুলো তো আছেই। সেখানে যে আলোচনা পাওয়া যায়, তা বোধহয় সপ্তাহের খোরাক জোগায়। সুতরাং আমার মতে, মূল বইতে অহেতুক বইয়ের আলোচনা দিয়ে দাম বাড়ানোর দরকার নেই।

আরেকটি বিষয়ও বলা দরকার। অনেক বইয়ে ফন্ট সাইজও অনেক বড় থাকে। এমনকি বইয়ের চারদিকে যেভাবে মার্জিন দিয়ে টেক্সট এরিয়া যেভাবে সংকুচিত করে ফেলা হয়, তাতে বইয়ের কলেবর বেড়ে যায় অনেক। হুমায়ূন আহমেদের সাম্প্রতিক কোনো বই হাতে নিলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে। এসব বইয়ে ১৩/১৪ ফন্ট সাইজ দেওয়ার সত্যিই কি কোনো দরকার আছে? হয়তো এতে দু’একজনের সুবিধা হয়, কিন্তু ফন্ট সাইজ ১০ রেখে (সংবাদপত্রের মতো) বই প্রকাশ করলে এবং বইয়ের চারদিকে মার্জিন কমিয়ে ছাপালে বইয়ের কলেবর অনেকটাই কমে এবং দামও কমতে বাধ্য।

বই কিনে কেউ কোনোদিন দেউলিয়া হয় না- আপ্তবাক্যটি তাই এ সময়ের জন্য প্রযোজ্য নয়। ব্যক্তিগতভাবে আমার অভিমত হলো- এ সময়ে বই কিনে মধ্যবিত্তশ্রেণীর আর্থিকভাবে দেউলিয়া হতে মাত্র কয়েকটি ঘণ্টাই যথেষ্ট। এই বইমেলাতেই ইতোমধ্যে যার প্রমাণ পেয়েছি।


মন্তব্য

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

বইয়ের দামের ব্যাপারে ঠিকই বলেছেন। শাহাদুজ্জামানের গল্প, অগল্প, না গল্প-সংগ্রহ বইটি কিনতে দেখি ৪২০ টাকা নাই। এই টাকায় আমার তিনটি বই কেনার কথা ছিল। টুটুল ভাই অবশ্য বিষয়টা ভালো বলতে পারবে। আলোচনায় তার মন্তব্য জানতে চাই। কই টুটুল ভাই, আওয়াজ দ্যান তাড়াতাড়ি।

অনিশ্চিত এর ছবি

ঠিক, এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ সচলদের মতামত জানতে চাই।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক অনেকগুলো গুরুত্বপুর্ন পয়েন্ট তুলেছেন অনিশ্চিত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অনিশ্চিত এর ছবি

ধন্যবাদ, নুরুজ্জামান মানিক।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

দময়ন্তী এর ছবি

বইয়ের বড় ফন্ট বা চারদিকে মার্জিনছাড়া সম্পর্কে বলি: আমি যেমন হাফ অন্ধ, খুব ছোট ফন্টের লেখা আমার পড়তে খুব অসুবিধে হয় ৷ মনে আছে "ফুকো'স পেন্ডুলাম' পেপারব্যাক বেরোল, লাফিয়ে গিয়ে কিনে আনলাম ৷ আর তারপরই যন্ত্রণার শুরু ৷ এতই ছোট ফন্ট যে কিছুতেই পড়তে পারিনা৷ শেষমেষ দোকান থেকে রিডিং গ্লাস কিনে আনলাম ৷ তাই ধরে পড়তে গিয়ে আবার হাতব্যথা হয়ে যায়, মৌজ করে পড়া যায় না৷ তারপর "ইস্তাম্বুল' পড়তে গিয়েও একই অবস্থা ৷ এইটে অবশ্য চেনা দোকান থেকে কিনেছিলাম বলে ভদ্রলোক আমাকে একটা অন্য অপেক্ষাকৃত বড় ফন্টের পেপারব্যাক, অন্য পাবলিকেশানের ছাপা, যোগাড় করে দিয়েছিলেন৷ তো, বাংলাবইয়ে বোধহয় লার্জ ফন্ট আর নর্মাল ফন্ট, দুই আলাদা করে প্রকাশ করতে গেলে খরচে পোষায় না৷ সেক্ষেত্রে মনে হয়, বড় ফন্টে ছাপা অপেক্ষাকৃত ভাল৷

দ্বিতীয়ত: চারপাশে মার্জিন না দিয়ে, কমদামী কাগজে বা নিউজপ্রিন্টে ছাপলে বইয়ের দাম কম হয় বটে, কিন্তু আমার কিরকম যেন সে বই বেশী ভাল লাগে না৷ একটু ভাল কাগজে, সুন্দর করে ছাপালে সে বইয়ের সৌন্দর্য্যই আলাদা ৷ আমাদের এখানে যেমন থীমা, গাংচিল বা তালপাতা এমনকি আনন্দ'র কিছু কিছু বইও স্রেফ হাতে নিলেই কিনে ফেলতে ইচ্ছে হয়৷ কোন লেখক অনেক যত্ন করে একটি বই লেখেন, সেটা দাম কমানোর জন্য যেমন তেমন করে ছাপানোর পক্ষপাতী আমি নই৷
--------------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অনিশ্চিত এর ছবি

দয়মন্তী, আপনার অসুবিধার কারণটা আমি বুঝতে পারছি এবং খারাপ লাগছে। কিন্তু ভেবে দেখুন, আপনার মতো (এবং খানিকটা আমার এক ভাইয়ের মতোও) পাঠক কতোজন আর স্বাভাবিক দৃষ্টিসম্পন্ন পাঠক কতোজন। এটা খুবই দরকার যে, ছোট ফন্ট পড়তে যাদের সমস্যা হয়, তাদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া এবং সেটা কী তা ভেবে বের করা দরকার। কিন্তু অধিকাংশ পাঠকের কথা চিন্তা করে আমি মনে করি, ফন্ট সাইজ ১০ না হোক, ১১ দেয়া যেতে পারে। পাশাপাশি হুমায়ূন আহমেদের বইতে যে মার্জিন থাকে, তাও কমানো উচিত।

আর বইয়ের ভালো লাগা বা না লাগাটা অবশ্যই কিছুটা নির্ভর করে বইটি দেখতে কেমন তার ওপর। কিন্তু ভালো লাগার মূল বিষয়বস্তু তো খোদ বইটিই। পেপারব্যাকে মাসুদ রানা, কিংবা সেবা থেকে প্রকাশিত ক্ল্যাসিকগুলো আমার পড়তে এখনো খুব ভালো লাগে। যদি দীর্ঘমেয়াদের জন্য সংরক্ষণ করতে চাই বা ঘরের শোভা বাড়াতে চাই, তাহলে এগুলো কোনো কাজে আসবে না; কিন্তু অধিক মানুষের পড়ার উপযোগী করার জন্য পেপারব্যাক বই-ই সর্বোত্তম বলে মনে করি।

পেঙ্গুইন পাবলিকেশন্স এই দিকটাতে জোর দিয়েছিলো। তারা খুব সফল।

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

স্পর্শ এর ছবি

বইএর ব্যাখ্যা মূলক ভুমিকা দেখেলে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। বুঝলাম যে কোন একজন পন্ডিত এই ভুমিকা লিখেছে। কিন্তু এটা একটা গল্পের বইয়ের মধ্যে যে 'আবিষ্কার'এর ব্যপার থাকে সেইটাই নষ্ট করে দেয়। আমি নিজে এই গুলো পড়িনা। কখনো কখনো ছিড়ে সরিয়ে ফেলি।
আমি পড়ি শুধু মাত্র এবং কেবল মাত্র আনন্দের জন্য। জ্ঞান অর্জনেরও মনে হয় এইটাই সবচেয়ে সেরা উপায়।
আলোচনার জন্য আলোচনা টাইপ বই ছাপলেই হয়। শুধু শুধু কেন "স্পয়লার আলার্ট" ছাড়া ভূমিকা টানাটানি!

সবচেয়ে দুঃখ হয় যখন কেউ বই না পড়ে তার আলোচনা সমালোচনা পড়ে সেইটা নিয়ে আলাপ জুড়ে! এই দুঃসহ অভিজ্ঞতাও হয়েছে অনেকবার।

অবশ্য আজকাল ওয়ার্ডসোর্থ ক্লাসিক বা পেঙ্গুইন ভুমিকার সামনে আরো একটা ভূমিকা দিয়ে দেয়। যেখানে পাঠক কে পরের "Introduction" টা গল্প পড়ার শেষে পড়তে বলে!!!!
এইটাও একটা বুল শীট। অনুচ্ছেদের নাম "Discussion"/"conclusion" এইসব দিয়ে গল্পের শেষে কেন দেয়না!!

ইয়ে, মানে... অনেক আক্ষেপ প্রকাশ করে ফেললাম দেখি!!
....................................................................................
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অনিশ্চিত এর ছবি

দারুণ। আমার বক্তব্য আপনাকে 'স্পর্শ' করেছে জেনে ভালো লাগলো। তবে আমি ডিসকাশন বা উপসংহার শুধু শেষে নয়, বইতেই না দেওয়ার পক্ষপাতী।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

একজন [অতিথি] এর ছবি

আসলেই বইয়ের দাম এখন এত্ত বেশি, বাজেট বাড়িয়েও ইচ্ছামত বই কেনা যায় না। সেখানে যদি দেখি এক তৃ্তীয়াংশই ভূমিকা, জীবনপঞ্জি ইত্যাদি তখন মেজাজ সামলান কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে আমি এখন জনপ্রিয় লেখকদের বই সাধারনত নিজে কিনিনা। জানি পরিচিতরা কিনবে এগুলো, তাই তাদের কাছ থেকেই নিয়ে পড়ি। নিজে কিনি যেগুলো অন্যরা কিনবেনা সেগুলো।

অনিশ্চিত এর ছবি

বই কেনার ব্যাপারে আপনার সাথে মিলে গেলো। ধন্যবাদ।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এই মন্তব্যটি প্রত্যাহার করা হয়েছে ।

অনিশ্চিত এর ছবি

আপনার মন্তব্যটি কী ছিলো, এবং কেন তা প্রত্যাহার করা হয়েছে জানি না। তবে আপনি ইচ্ছে করলে এই মেইলে জানাতে পারেন। আমিও জানতে আগ্রহী।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

রণদীপম বসু এর ছবি

আমার ধারণা বইয়ের প্রকৃত পাঠকরা অধিকাংশই আধাকানা ! সে কারণে ফণ্ট সাইজ ১০ না করে ১২ পয়েণ্ট যুক্তিযুক্ত। তবে মূল বইয়ের সাথে অতিরিক্ত আলোচনা-কাসুন্দি জুড়ে দেয়ার মানে হচ্ছে এক ধরণের ছ্যাবলামো, যা প্রকৃত পাঠককে মূল বই থেকে বিযুক্ত করে ফেলা। পাঠকের কল্পনার স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করে লেখকের রচনার বহুমাত্রিকতা ক্ষুণ্ন করা। এ কাজ যারা করেন, তাদের বই বিষয়ক আলোচনা লেখার কোন সৃজনশীল যোগ্যতা থাকতে পারে বলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অনিশ্চিত এর ছবি

আপনার ধারণার পক্ষে কি কোনো তথ্য-উপাত্ত বা প্রমাণ আছে? থাকলে সেটাই করা উচিত। তবে আমার পরিচিতমণ্ডলের পাঠকদের অধিকাংশই আধাকানা না, পুরোপুরি চক্ষুষ্মান। যে কারণে আমি ১০/১১ করার পক্ষপাতী। সচলায়তন এ ব্যাপারে একটি জরিপ চালাতে পারে- সদস্যদের মাঝেই।

পাঠকের কল্পনার স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করে লেখকের রচনার বহুমাত্রিকতা ক্ষুণ্ন করা।
-- একমত।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

মূর্তালা রামাত এর ছবি

বইয়ের বিশাল ভূমিকা থাকার কোন প্রয়োজন নেই বলে আমি মনে করি। কাল পাবলো নেরুদার কবিতা নামে একটা বই কিনতে গিয়ে দেখি ১২০ পৃষ্ঠার বইয়ে ৬৫ পৃষ্ঠাই ভূমিকা!! তাহলেতো ভূমিকা নিয়েই লেখক আরেকটি বই করতে পারেন। যারা ভূমিকা পড়তে চায় তারা ভূমিকার বই কিনবে। আর যারা কবিতা পড়তে চায় তারা কবিতার বই কিনবে।

মূর্তালা রামাত

অনিশ্চিত এর ছবি

হা হা হা, ১২০ পৃষ্ঠার বইতে ৬৫ পৃষ্ঠা ভূমিকা। দারুণ তো! এই লেখাটা তো তাহলে আপনারই লেখা দরকার ছিলো।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বইয়ের দাম যত ভাল হয়, ততই লাভ।
লেখা টেনে যত বড় করা যায়, ততই লাভ।
কবিতার বই তো টেনে বড় করা যায় না।

আমাদের "প্রাইসিং মডেল" স্রেফ আকার-নির্ভর।
আকারের পরিবর্তে গুণের ভিত্তিতে দাম ধার্য করার সংস্কৃতি থাকলে এমন হত না।

ভাল কবি, ভাল লেখক এভাবেই বই/পাতার সংখ্যার বদলে লেখার গুনের ভিত্তিতে যথাযথ আর্থিক সম্মাননা পেতে পারেন।

অনিশ্চিত এর ছবি

আপনার পরামর্শটা বিবেচনা করা যেতে পারে। ভালো আইডিয়া। তবে আপনার আইডিয়া শুনে সেই পড়ালেখার কথা মনে পড়লো। যে যতো বেশি লিখতে পারে, সে ততো বেশি নম্বর পাবে। ভেতরে কি লিখলো তাতে কিছু যায় আসে না।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

উপন্যাস ও সেটির আলোচনার আকার বিষয়ে একটি কথাই বলতে ইচ্ছে করছে: কাঁকুড়ের বীচির দৈর্ঘ্য কাঁকুড় অপেক্ষা দীর্ঘতর না হলেও প্রায়-সমান হবে কেন?

বইয়ের পৃষ্ঠাবৃদ্ধির লক্ষ্যে এক জনপ্রিয় লেখক এক সময় এই ধরনের সংলাপ রচনা করতেন (এখনও, বোধ হয়, করেন, জানি না):

- অ্যাই?
- উঁ?
- যাবে?
- কোথায়?
- বাইরে।
- না।
- কেন?
- এমনি...
হো হো হো

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অনিশ্চিত এর ছবি

এখনও করেন। তাঁর বইয়ের ফন্ট সাইজও হয় অনেক বড়। পাশাপাশি চারদিকে স্পেসও থাকে অনেক বেশি।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

মাসরুফ হোসেন এর ছবি

পুটুন দা নাকি?

s-s এর ছবি

তাহলে তো দেখছি এখন থেকে বই কেনা টেনা বাদ, একদম!

জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা

অনিশ্চিত এর ছবি

তাই বলে বাদ দিবেন? প্রকাশকরা একেবারে মাঠে মারা পড়বে না?
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমম... পরিচিত একজন অজ্ঞাত প্রকাশনীর ছাপা ছফার অনূদিত "ফাউস্ট" কিনে ধরা খেয়েছে। পেটমোটা আকৃতি দেখে আমার আগেই সন্দেহ হচ্ছিল, পরে শুনি একেক ফর্মা দু-তিনবার করে বাঁধাই করা।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।