ফো পরিবার

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: রবি, ০৮/০১/২০০৬ - ১:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


আমার সাথে কুর্নিয়ার পরিচয় গত জুন এ। আমরা দুজন আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাই বড়দিনের ছুটির পর দেখা হলো আবার বসন্তবিরতিতে। বাকি মাঝের সময়ে যোগাযোগে টেলিফোন ভরসা ।সেমিস্টার শেষ হলো মে মাসের শেষে। আর তখন খবর পেলাম কুর্নিয়া তার বন্ধুদের নিয়ে অনাগত শিশুর আগমন উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান করছে। আমার ছেলের প্রথম অনুষ্ঠানে আমি অনুপস্থিত কারন সময়ে মিলে নি।

আমার আসার পর দেখা হলো তার সাথে। ইন্দোনেশিয়ার ছেলে এবং বাবা। তার ছেলে জশুয়া এবং বউ লিয়ান গরমের ছুটিতে ইন্দোনেশিয়ায়। কুর্নিয়া পরপোকারী এক চরিত্র যার প্রধান কাজ জনগনের উপকার করা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশের নাগরিক তাই ধারনা ছিলো সে মুসলিম পরে জানলাম সে প্রোটেস্টান। তার পূর্বপুরুষ চীন থেকে ইন্দোনেশিয়ায় এসেছিলো বানিজ্যে পরে সেখানেই আবাস গড়েছে। তার বাবা-মা বৈদ্ধ্য বড় বোন ক্যাথলিক ছোটোভাই এখনও ধর্ম স্থির করতে পারে নি।
আমার সাথে পরিচয় হবার পর অনেক ছোট ছোট আড্ডা হয়েছে। তার পিতৃস্নেহের অনেকটাই পেয়েছে ঋক। যদিও গড ফাদার জাতিয় কোন প্রথা নেই প্রচলিত যেমনটা চার্চে পালিত হয়। তবে বাংলাদেশে ধর্মবাবা ধর্মপুত্র জাতীয় কোন প্রথায় সে নিশ্চিত ঋকের ধর্মবাবা। আমি পরিবারের প্রথম ছেলে সন্তান তাই আমার বড় ভাই পোষ্টে এখন কুর্নিয়া। তার পরিবারের সবার সাথে আমাদের সম্পর্ক গভীর। অন্তত অনেক পারিবারিক সম্পর্কেয় তুলনায় বেশী ঘনিষ্ঠ।

জশুয়া 3বছরের এক ছেলে। প্রথম দেখার দিন আমাকে দেখে ভীষন ভয় পেয়ে অন্তত 1 মাস আমার 10 গজের মধ্যে আসে নি। তবে কোন এক আশ্চর্য কারনে সে আমার উপর প্রসন্ন। আমাকে সে ডাকে বেবী রাসেল। যদিও আমাকে এমন সম্বোধন কতটা যৌক্তিক এটা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে কিন্তু সপ্তাহে এক দুই দিন আমাকে বড় জশুয়ার ফোন ধরতে হয়। বেবী খাইলো কিনা ?
গতকাল দুপুরেও ফোন করে খবর নিলো। একটু পরে আসবে বাসায়। আমি কথা বলে সস্তি পাই না তারা কথা বলে ইন্দোনেশিয়ার কোন এক আঞ্চলিক ভাষায় আরআমার সামান্য দখল বাংলায়। ইংরেজী ভাষায় যোগাযোগ কঠিন তাই ইশারা-ইঙ্গিতে কথা বলতে হচ্ছে। আমি চিন্তা করছি জশুয়াকে বাংলা শিখাবো যেন কথা বলতে পারি।

লিয়ান-কুর্নিয়া দুজনের সাথে আমাদের ঘনিষ্ঠতা তাদের বদান্যতা। আমার সামাজিকতা নিয়ে প্রশ্ন অনেক দিনের।
কুর্নিয়া ফো আর তার পরিবারের কথা বলতে গেলে এটুকু বলতে হয় ঋক এর বিছানা আর খেলনার অধিকাংশই জশুয়ার। আর তার অর্ধেক আবার হাত বদল হয়ে যাবে মেঘের কাছে। আমাদের নেপালী বন্ধু মেঘের বাবা হওয়ার কথা সামনের মাসে।
কুর্নিয়া অবশ্য আরো আনন্দিত তার আরো কয়েকজন বন্ধু বাবা হচ্ছে।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।