ইসলামী শাসনব্যবস্থা ও বাংলাদেশ

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: মঙ্গল, ১০/০১/২০০৬ - ১:২৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘটনাটা বেশ কয়েক বছর আগের- উদিচির বোমাবিস্ফোরনের আগে বা পরে। আফগানিস্তানে মোল্লা ওমরের তালেবান দল ক্ষমতায়। অলস আলোচনা শুরু হয়েছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বুদ্ধ মুর্তি ধ্বংসকরা নিয়ে। মুর্তিপুজা নিষিদ্ধ কিন্তু পরধর্মপালনে সম্পূর্ন স্বাধীনতাও ইসলামের একটা ধারা। যদি অন্য ধর্মের প্রতি সামান্য শ্রদ্ধাবোধ থাকে তাহলে বিধর্মীদের রক্তের লালসা থাকতে পারে না। আর তারচেয়ে বেশী গুরূত্বপূর্ন বিষয় তার পূরাতাত্তি্বক মূল্য। সভ্যতার অগ্রগতির এক একটা সোপান মুর্তিগুলো। নির্বোধের মতো নিজের দেশের ঐতিহ্য ধ্বংস করা নিজের সংস্কৃতির প্রতি তীব্র বিরাগ কোন উন্নত মননশীলতার বিষয় না।

আসলে এই উগ্র ইসলামিক রাজনীতি কতটুকু গ্রহনযোগ্য। দুইটা বহুল ব্যবহার করা হাদিস- তোমাদের মধ্যে সেই প্রকৃত মুসলিম যার জি্বহবা এবংহাত থেকে অন্যেরা নিরাপদ। অন্যটা নিজের জন্মভুমিকে শ্রদ্ধা কর। যদি ইসলামিক রেনেসাঁর আগমন স্বপ্নে পাওয়া বিপ্লবের মন্ত্র সফলও হয় ধর্মের বিষয়ে কোন জবরদস্তি নেই এটা আদৌ পালিত হবে। ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধাবিহীন কিছু নির্বোধ নিজের মতো ব্যাখ্যা দাড় করিয়ে অন্যায় করছে এবং তাদের প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আহমদিয়া ধর্মবিশ্বাসের প্রতিশ্রদ্ধা নেই। তাদের অমুসলিম ঘোষনার দাবী নিয়ে মিছিল মিটিং দাঙ্গা বোমাবাজি-- তাদের নিজস্ববিশ্বাস নিয়ে তারা জীবনযাপন করছেএমন কোন উদাহরন নেই যে তারা আহমদিয়া ইসলাম প্রচার করছে বা অন্য কাউকে প্রতারিত করছে। নিজের ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী জীবনযাপনের স্বাধীনতাও তাদের নেই।

ধর্ম পালন করা বা না করা মানুষের নিজস্ব পছন্দ হওয়া উচিত। যেহেতু জোরজবরদস্তি নিষিদ্ধ তাই অস্ত্রের জোরে কাউকে নিজের বিশ্বাস ত্যাগ করতে বলা অনুচিত। তারপরও কিছু ধার্মিক মানুষ অন্য মানুষের ব্যাক্তিস্বাধীনতায় আঘাত করছে। বাংলাদেশ আমাদের জন্মভুমি কেউ কেউ পছন্দ না করলেও পৌষ সংক্রান্তির ঘুড়ি ঢাকা আকাশ, চৈত সংক্রন্তির চরকের মেলা হালখাতা বর্ষবরন উৎসব নবান্ন দুই ঈদ দুর্গা পুজা সব আমাদের লৈকিকউৎসব এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ আর দেশকে ভালোবাসা মানে এই সব সংস্কৃতিকে ভালোবাসা আর যখন দেশের সংস্কৃতি আক্রান্ত হয় বাংলাদেশের মানুষ তা প্রতিরোধ করে।
ইসলামি মৌলবাদী সংগঠনগুলো ধর্মনিরপেক্ষতা আর ধর্মহীনতার মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না। তারা জিকির করছে মুসলিমদের ধর্মপালন করতে দেওয়া হবে না নামাজ রোজা করার জন্যে ইসলামী সমাজব্যবস্থা প্রয়োজন । প্রয়োজনে বোমা ফাটিয়ে নিরীহ মানুষ মেরে ফেল কি আশ্চর্য কথা। যেসব মানুষ মারা যাচ্ছে তাদের মধ্যে কি প্রকৃত মুসলিম নেই। কে প্রকৃত মুসলিম আর কে কাফের এটা বিচারের ভারতো মানুষকে দেওয়া হয় নি । কোন ইমাম বা মৌলবাদী নেতা কাউকে মুরতাদ ঘোষনা করলো আর মৃতু্যদন্ড দেওয়ার জন্যে আরো কিছু নির্বোধ খুন করতে চলে গেল এই যদি বাস্তবতা হয় তবে এমন মৌলবাদ প্রতিরোধের জন্যে সবার চেষ্টা করতে হবে।

ছাত্রশিবিরের অধিকাংশ কর্মী 71 দেখে নি তাদের রাজাকার বলাটা উচিত না কিন্তু তাদের নৃশংসতার জন্যে তাদের পশু বলাটা পশু সমাজের অপমান একটা সুস্থ মানুষ অন্য এক মানুষকে ড্রিল দিয়ে ফূটো করছে এটা বর্বরতার চুড়ান্ত। কিন্তু এটাই সন্ত্রাস শিবির স্টাইল। 88 থেকে 2002 শিবিরের হাতে যতজন অত্যাচারিত হয়েছে তাদের তালিকা দিয়েও কোন লাভ নেই অন্ধ জামায়াত সমর্থক বলতে পারে অন্য দল গুলোও এই অপরাধে অপরাধী। আমার পাদটিকা- ইসলাম কায়েম করতে হলে অন্তত মুসলিম হয়ে চেষ্টা করুন -- তায়েফের শিক্ষাটা স্বরণ করলে হয় না। যদি ইসলামের নিজস্ব সৈন্দর্য্য থাকে ওটার টানে মানুষ আসবে গলায় ছুড়ি ধরে কাউকে মুসলিম বানানোর চেষ্টা অন্য সব ইসলাম ধর্মবিশ্বাসিদের ক্ষতি করছে আর এটাতে হাদিসের পালন হচ্ছে না। ইসলামি মৌলবাদী দলগুলো নিজেরাই প্রকৃত মুসলিম দিয়ে তৈরী না তারা যতই গলায় রক্ত তুলে জিকির করুক ইসলামি শাসনতন্ত্র চাই তাদের হাতে ইসলামের কোধ অগ্রগতি হবে না।

1400 বছর আগের বাস্তবতায় ইসলাম প্রগতিশীল ধর্ম ছিলো। নারীর অধিকার দিয়েছিলো যা পন্য থেকে নারীকে মানুষেল স্বীকৃতি দিয়েছিলো কিন্তু এই 1400 বছরে সভ্যতা সামনে এগিয়েছে নারীরা এখন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন আর তাই বর্তমানের সম অধিকারেরযুগে নারী পুরুষ সমান। 2জন নারী =একটা পুরুষ এমন হিসেব এখনপশ্চাৎপদতা। এই অগ্রসর সময়কে ধারন করে ইসলামকেও আধুনিক হতে হবে আর এই সুযোগ ইসলামে বিদ্যমান। ইজমা কায়েস এই দুটো ব্যবহার করলেই হয়। হাদিসে আছে 10 জন মুসলিম যা বিশ্বাস করে ওটাই আল্লাহর পছন্দ। আর কোরানের প্রথম মডিফিকেশন করেছেন আলী সেটা 650 এর ঘটনা। তখন সম্ভব হলে 1355 বছর পরে কিছুপরিমার্জন সম্ভব নয় কেনো?

ইসলাম জীবন যাপনের একটা ধারা। অন্যসব ধর্মের মতই ভালো কাজ করতে বলেছে সৎ থাকো হালাল রুজি খাও প্রার্থনা করো অন্য্য মানুষের সাথে অন্যায় করো না --আর 5কলেমায় বিশ্বাস করো। এর বেশী কিছুতো না। আর সামাজিক স্থিরতার জন্যে কিছু রীতি আছে যারকাছাকাছি রীতি সব দেশেই বিদ্যমান । এই রীতিগুলো প্রতিষ্ঠিত রীতি এবং তা রীতিমতো পালিত হচ্ছে। অতএব সেই রীতি প্রতিষ্ঠার জন্যে ইসলামি বিপ্লব বোমাবাজীর প্রয়োজন নেই। আমি এখনও বুঝছি না --ব্যাক্তিগত বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার জন্যে ইসলামি শাসনতন্ত্রের প্রয়োজন নেই-- সামাজিক রীতি প্রতিষ্ঠার জন্যেও ইসলামি শাসনতন্ত্রের প্রয়োজন নেই তাহলে কেন 5-6টাদল এই আন্দোলন করছে আর যারা তাদের সমর্থন করছে সেই নির্বোধগুলোর কোন বোধ কি অবশিষ্ট নেই।

চুরান্ত ইসলামি দলের প্রচারনায় এই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে চায় ঠিকমতো যাকাত আদায় করে বায়তুল মাল এ জমা দিলে 5বছরে বাংলাদেশে দারিদ্রতা থাকবে না। কিভাবে বন্টিত হবেতার একটা রুপরেখা আছে ইউটোপিয়া কারন টা হলো 650এর পর 200 বছর বিভিন্ন ইসলামি দার্শনিকের রমরমা বাজারেও ধনী গরিব ব্যাবধান ছিলো আরব উপদ্্বীপেই। অন্ধরা আলো দেখে না তাদের চোখে পর্দা তাদের অন্তরে সিলগালা তাদের কর্নে সীসা ঢেলে বন্ধ করা। এটা কোরানের আয়াত।কাফিরদের নিয়ে লেখা। বর্তমান ইসলামী মৌলবাদী দল আর তাদের সমর্থকদেরজন্যেও এ কথা প্রযোজ্য।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।