কতিপয় সংজ্ঞা - ২

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: শনি, ২৫/০২/২০০৬ - ৪:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ব্লগ, ব্লগার, ব্লগাচরণঃ
এটা একটা নিয়মিত বিষয়। এ ব্লগের কর্নাধারেরা সবচেয়ে বিপদে আছেন বোধ হয়। তারা ব্লগকে স্বাধীন করে দিয়েও ব্লগারদের রোষের মুখোমুখি হচ্ছেন প্রতিদিন।
ব্লগের প্রতিশব্দ এখনও আমরা খুঁজছি, যারা যারা এটার উন্নতি করতে চান তারা মুখফোড় অথবা হিমুর পোষ্টে গিয়ে মন্তব্য ঝেড়ে আসতে পারেন।
আমি ব্লগের শব্দান্তর করেছি- স্বগতালাপ ( যারা বাংলা কম জানেন তাদের জন্য বলা, স্বগতালাপের প্রায়োগিক অর্থ নিজের সাথে নিজে কথা বলা, বা নিজের কথা প্রকাশ করা) স্বগতোক্তি করতে পারতাম কিন্তু ওটার সাথে আক্ষেপজনিত একটা দুষন রয়েছে বিধায় স্বগতালাপ আমার পছন্দ।
তেমনি ব্লগারকে বলতে চাইছি - লিপিকার, আলাপক, তবে মনপুত হচ্ছে না একটাও।

যাই হোক মূল কথায় ফিরে আসি, ব্লগে কে কি লিখবে এটাকে মডারেটরের শ্যেন দৃষ্টি থেকে মুক্ত রাখাই ভালো। উস্কানি ,আক্রমনাত্বক, এসব শব্দের সাথে মাত্রাবোধ জড়িত, সবার মাত্রা সমান নয়, অশ্ল ীলতা বিরোধি একটা রূপরেখা দাড়া করানো যেতো কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটাও একটা দূরহ বিষয় হয়ে যাবে, কবিতায় সাচ্ছন্দে গালি ব্যাবহার করা যাবে যদি সেটা কবিটার বক্তব্য প্রকাশ করতে পারে সঠিক ভাবে, এটাকে বাধা দেওয়া শালিনতার নামে আমার পছন্দ নয়। গল্পের ক্ষেত্রেও একই বিষয়। মূলত প্রকাশের ধরনের উপর শালিনতার সংজ্ঞা নির্ভর করে।

এর পরে অংশটুকু সবার পড়ার প্রয়োজন নেই।

আবারও সংজ্ঞা
ধর্ম ঃ
একদল মানুষের জীবনাচার।তবে তাদের একটা নির্দিষ্ট লোকালয়ের গন্ডিভুক্ত হতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই।

এটাতে কিছু স্থির নিয়ম কানুন রয়েছে, কিছু বাধা নিষেধ । এবং এই নিয়ম কানুনগুলো সমাজের উন্নয়নের সহায়ক হবে ভেবেই করা।
তবে ধর্মের দুটো শ্রেনি আছে।
ইশ্বর প্রদত্ত ধর্ম
মানুষের তৈরি ধর্ম
ইশ্বরপ্রদত্ত ধর্ম বলতে সাধারনত ইসলাম খ্রিষ্টান এবং ইহুদি ধর্মকে বোঝানো হয়। এসব ধর্মপ্রচারকদের দাবি ইশ্বর এ বিধান তৈরি করেছেন, এবং কার প্রতিপালক কেমন এটা নিয়ে বিস্তর মতভেদ আছে।
মনুষ্যধর্ম ঃ
মানুষের শুভবোধের দ্্বারা তৈরি, হিন্দু ধর্ম (এটা প্রায় 5000 বছরের পুরোনো চিন্তকদের ভাবনার ধারাবাহিকতায় একটা আকার ধারন করেছে, এটাকে তারা জীবনাচার বলতে চান, একটা মানুষ কিভাবে জীবনযাপন করবে কি পরিধান করবে, সমাজে তার ভুমিকা কি হবে, এসব নিয়মিত বিষয়াসয় তারা ইশ্বরকে বাদ দিয়ে নিজেরাই ঠিক করে ফেলেছে, তবে কেউ কেউ বলতে চায় হিন্দু ধর্মের মূলে এক নিরাকার ইশ্বরের চেতনা আছে,
তবে তাদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ এবং সহায়ক গ্রন্থগুলোতে এমন দাবি করা নেই যে ইশ্বর পাঠিয়েছেন সবগুলোই, কিছুমুনি ঋষিরচিত কিছু গল্পকারের গল্প সব মিলিয়ে একটা হজবরল অবস্থা বিদ্যমান।
বৌদ্ধ ধর্মঃ প্রচারক বুদ্ধ। যৌক্তিক এবং বস্তুবাদি ধর্ম। মানুষের নিজের শুদ্ধতার উপর জোড় দেয় বেশি। এ ধর্মানুসারিদের চুড়ান্ত লক্ষ্য নির্বান লাভ।
কনফুসিয়াসের ধর্মঃ চীনের দার্শনিক প্রবর্তিত সমাজ সংস্কারের প্রস্তাব। এটা চীনের সামাজিক স্থিরতা কল্পে ঘোষিত। এবং এ ধর্মের অনুসারি এখনও কিছু কিছু বিদ্যমান। তবে সময়ের সাথে এ ধর্মের ধরন ধারন বদলেছে।
শিখেরা একটা নির্দিষ্ট ধর্ম পালন করে, সে ধর্মের অনুরাগিরা প্রাথমিক ভাবে হিন্দু এবং মুসলিম এই দুই ধর্মের অনুসারি ছিলো।
একটা উজ্জল ব্যাতিক্রমঃ মুঘল সম্রাট আকবর( সেই নিরক্ষর লোকটা) যখন অধিপতই হলেন তখন দ্্বিন এ ইলাহি নামের এক রাষ্ট্রিয় ধর্মের সূচনা করেছিলেন, তবে ভাত পায় নি আকবরের এই শুভচিন্তা।

ইশ্বর: ধর্মের প্রধান পুরুষ, কেতাবি মতে তার দুটো হাত এবং একটি পশ্চাতদেশ বিদ্যমান, তবে তিনি নিরাকার। একটু কঠিন কল্পনা করা, তবে তাকে কল্পনা বা উপলব্ধি না করেই অনেকে অনেক কিছু করে ফেলছে।

মানুষঃ সবচেয়ে গতিশীল চরিত্র ধর্মের পরিপ্রেক্ষিতে, এরাই ধর্মপালন করে, দঃর্মের নামে হানাহানি, খুনাখুনি, উন্মাদনা , গনউন্মত্ততা, গন সম্মোহন অনেক কিছুই তারা সামগ্রিক ভাবে করে থাকে।

ইশ্বরহীনতা: এমন এক মতবাদ যেখানে ইশ্বরের কোনো প্রয়োজন নেই। ইশ্বর ছাড়াই জীবনযাপন করা যায় এবং এটা ইশ্বরের আবশ্যিকতা নিয়ে অবশেষে একটা প্রশ্ন উত্থাপন করে ।

ধর্মহীনতা: মুলত এটা নৈরাজ্যাক একটা অবস্থা, কেউ ধর্মহীন হতে পারে না। সবারই জীবনযাপনের রীতি নীতি বিদ্যমান। চোরের ধর্ম চুরি করা, তস্করের ধর্ম তস্করবৃত্তি করা, কিন্তু তারা তাদের জীবনে সৎ। একজন সৎ চোর তার চুরির কাজে সৎ থাকার চেষ্টা করে। এ সততার কোনো মুল্য নেই। কারন সমাজের অধিকাংশ মানুষ চোর ধর্ম বিরোধি।

যেহেতু সবাই কিছু না কিছু নিয়মনীতি মেনে চলে তাই তাদর জীবন কোনো না কোনো ধর্মের অধীন। হতে পারে সেটা ইশ্বরভিত্তিক ধর্ম কিংবা ইশ্বর বিহীন ধর্ম।

ধর্মনিরপেক্ষতা:
এটার ব্যাকরন সম্মত অর্থ এত বার এত ভাবে বলা হয়েছে এখানে আরো একবর বললে হয়তো সুবিধা হবে
এটার প্রায়োগিক অর্থ ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে বিচার না করা। মতাবাদ, নীতি এসবের উর্ধে থেকে বিচার করা। ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ কোনো না কোনো ধর্মের অনুসারি হতে পারেন। ধর্মের অনুসারি হওয়া ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য বাধা নয়।
একজন ধর্মের নিয়মিত অনুসারিও ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারেন, উদাহরন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। এবং এমন অনেক লোকজন আছেন যারা ধর্ম নিরপেক্ষ মানে তাদের বিবেচনা বোধ কোনো ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে না।
দুঃখজনক সত্য হলো এটাকে কেউ কেউ পৃথক একটা ধর্ম বলতে চান। কেউ কেউ এটার সাথে নারীনির্যাতনের সংযোগ খুজে পান, এটা কিভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে সংযুক্ত হয় এটা আমার বিবেচনায় আসে না।
কেউ যদি ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা চান তবে ওয়ালির পোষ্টে দেওয়া আছে রাসেল(.......) এর মন্তব্য ওটাই সবচেয়ে কাছাকাছি।

পরিবার: আমাদের নিজস্ব ছোট্ট সংগঠন, যেখানে আমরা লালিত পালিত হই এবং শিক্ষা লাভ করি।

আরও অনেক কিছুই বাদ পরে গেলো। মনে পড়লে সেসবের সংজ্ঞা নিয়ে হাজির হবো। যেসব জিনিষ এমূহুর্তে স্পর্শ করতে পারলাম না, তা মন্তব্যে মনে করিয়ে দিলে সেসবের সংজ্ঞা দেওয়ার আন্তরিক চেষ্টা করবো।
ধন্যা বাদান্তে
অপ বাক চন্ডর বিদ্যাঢিবি


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।