বৃক্ষ থেকে ভুমিতে- সভ্যাতার ইতিহাস - ১

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০২/২০০৬ - ১০:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মানব স্রোতে ভাসাইলাম ভেলা, বিজ্ঞজনেরা লগি দিও।
ভুমিকাঃ এটা শুধুমাত্র তাদের জন্য যাদের পুর্বপুরুষ কোনো এক কালে গাছে ল্যাজ দোলাতো, বিবর্তনের এক ধাপে যাদের পুর্বপুরুষ কোনো এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে 2 পায়ের বিকল্প ব্যাবহার শিখে সেটাকে হাতে রূপান্তরিত করে। এর সূচনা কাল লক্ষাধিক বছর আগে।
তাদের ঠিক মানুষ না বলে মানুষের আদল বলা যায়। মানুষ হয়ে উঠা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, এমন কি এই বর্তমান যুগেও মানুষ হয়ে উঠাটা একটা চেতনার অংশ।

আগুনের আবিস্কার এবং ব্যাবহার শেখার আগে মানুষ কাঁচা খাবার খেতো, এ বিষয়ে যাদের দ্্বিমত নেই এটা তাদের উদ্দেশ্যে।
পশুচারন এবং খাদ্য উৎপাদন(কৃষিকাজ শেখার আগে) মানুষ যাযাবর ছিলো এ কথা যারা বিশ্বাস করে এ লেখা তাদের জন্য।
এ লেখা বিশ্বাসিদের জন্য যারা বৈজ্ঞানিক ধারাবাহিকতা বিশ্বাসি। এটা অবশ্যই বিশ্বাসিদের বয়ান।
আমি অনুলেখক অপ বাক। শুধুমাত্র সামান্য লিপিকার।

ঝোপঝাড়ে আলগাপটকা বাড়াবাড়ি না করে ঝোপ বুঝে কোপ মারা হোক তাহলে। আদিম মানুষ কোন খানে প্রথম গাছ থেকে মাটিতে নামে এটা নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে তারা যে গাছ থেকেই ভুমিতে পদার্পন করেছিলো এটাতে সন্দেহের অবকাশ নেই।
এমনটাও হতে পারে বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনে খাদ্য সঙ্কটে অনেক জায়গায় একযোগেই বানরকূল মাটিতে নেমে আসে। প্রমান করা শক্ত, আমাদের নৃতাতি্বক সংগ্রহ থেকে বিশ্লেষন করে এবং প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন থেকে যুক্তির ধারাবাহিকতায় পেছন থেকে সামনে আগাতে হবে।
লোকাচারগুলোকে সংগ্রহ করে আমাদের সেসব নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে, মানুষ যেভাবে প্রচলিত রূপকথা থেকে ইতিহাস পুর্ননির্মান করে প্রক্রিয়াটা তেমন হওয়াই উচিত।

বনচারী মানুষের জীবনে ধর্মের প্রয়োজন ছিলো না, যেকোনো প্রানীর মতো প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল মানুষ বিবর্তনের এক পর্যায়ে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রন করতে শেখে,
ধর্মের আবির্ভাব জগতে এই পর্যায়ের পর।

আদিম সংস্কৃতি নৃত্যনাট্য হিসেবে মঞ্চিত হতো জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে,
কলা হিসেবে নৃত্য বাচনিক কলা বা অংকন শিল্প আবির্ভাবের আগের। বেড়াল তার শিশুকে শিকার শিক্ষা দেয়, কিভাবে শিকার করতে হবে তার প্রাথমিক শিক্ষাটা বিড়াল শিশু মাতার কাছে পায়। ঠিক এমনই এক প্রক্রিয়ায় মানুষ অস্ত্র আবিস্কারের পর পশুবধের নিয়মকানুনকে একটা শিক্ষার মতো অভিনয় করতো। এর প্রমানে বিভিন্ন আদিবাসি নাচের কথা বলা যায়, যেখানে এখনও অস্ত্র হাতে শিকারের প্রক্রিয়া অভিনীত হয়ে থাকে।

অংকন শিল্প এবং বাচনিক উৎকর্ষতার পর্যায় আমরা নির্ধারন করতে পারবো না, এটা একটা অনুমান, অনুমানের সপক্ষে এবং বিপক্ষে যুক্তি বিদ্যমান, তবে অনুমানগুলো আঢুনিক মানুষের অতীত বিনির্মান, এখানে খানিকটা কল্পনার রং থাকবে, তবে লৌকিক উপাদান এবং অন্য সব প্রাকৃতিক উপযোগ এতে নিয়ামকের ভুমিকা পালন করবে।
কোনো এক কালে আরবের মরূভুমি শস্যশ্যামলা, এবং বৃক্ষময় ছিলো, এখন ধু ধু শুন্যতা, তবে কি এ কথা মিথ্যা , এ দাবি মিথ্যা যে আরব শস্যশ্যামলা বৃক্ষময় ছিলো?
উত্তর দাবিটা সত্য, অতিব সত্য, কারন আরবের উপকূলে প্রচুর খনিজ তেল আছে, কলুর বলদ যেমন শর্ষে পেষন করে তৈল উৎপাদন করে, ভুমির জঠরে তেমন এক পেষনে বর্তমানের খনিজ তৈল তৈরি হয়েছে, অর্থাৎ পৃথিবী নিস্তরঙ্গ স্থির একই রকম ছিলো না সব সময়, এটার উপর দিয়ে অনেক বড় বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় ভুমির উত্থান পতন ঘটেছে, এমনই সাংঘাতিক ছিলো সেসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় যে ভুমিস্থ বৃক্ষ সোজা ডুব দিয়ে 1000 থেকে 5000 ফুট মাটির গভীরে গিয়ে প্রবল চাপে অদগ্ধ দহনে খনিজ তৈল হয়েছে।

মানব সমপ্রদায়ের অস্তিত্ব সে সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পুর্বে ছিলো এমন অনুমান সম্পুর্ন মিথ্যা নাও হতে পারে, আমাদের নৃতাত্তি্বক এবং প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শনের উপর নির্ভর করে সামনে আগাতে হবে।

আমাদের লিখিত ভাষা আবিস্কারের পরে ইতিহাস লিখে রাখা সম্ভব হয়েছে, এর আগে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মানুষ ইতিহাস বহন করতো গল্প উপকথার সাহায্যে। সেই মতো, আমাদের স্মৃতিকথা নির্ভর ইতিহাসের অতীত এর শেষ বিন্দু গিয়ে থামে 10000 বছর আগে, প্রত্নতাতি্বক নিদর্শন বলছে এর চেয়ে অনেক পুরোনো মানব বসতি বিদ্যমান, অনেক মানব বসতির বয়স লাখখানেক, এমন কি হালের অধিবাসিভুমি আমেরিকায় মানব বসতির বয়স 25000 বছর, এর চেয়ে পুরোনো মানব বসতির খোঁজ পাওয়া যাবে যদি খনন করা হয়,
খনন করবার ক্ষেত্র কিভাবে নির্ধারন করে প্রত্নতাত্তি্বকেরা , এটা নদীর পরিবর্তন বিশ্লেষন করে, সাধারনত জলের সহজ লভ্যতা এবং খাদ্যপ্রাচুর্য যাযাবর মানব প্রজাতির আবাসনের অবস্থান ঠিক করতো। প্রাচীন মানুষ অনেকটা পঙ্গপালের মত ছিলো, একদিক থেকে খাওয়া ধরতো, খেতে খেতে সামনে এগিয়ে যাওয়া, নদীর সসীমতা বা জলাশয়ের সংখ্যাসল্পতা বেশিরভাগ সময়ই যাত্রার এক পর্যায়ে অন্য এক দল যাযাবর মানব বসতির সামনে ফেলে দিতো এবং এর পর ইতিহাস রচিত হতো, কারন খাদ্য এবং নদী দখলের ইতিহাস রক্তে লিখিত হয়, এভাবেই সভ্যতা সামনে আগায়।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।