হারুন ইয়াহিয়া এবং তার সব ভন্ডামি

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: রবি, ১৬/০৪/২০০৬ - ৪:৫৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হারুন ইয়াহিয়া নতুন যুগের প্রাযুক্তিক সহায়তাপ্রাপ্ত এক ভন্ড দিব্যি বিশ্বাসের বোসাতি করছে এবং তার বিভিন্ন বঙ্কিম সত্যকে কিছু মানুষ কোনো রকম বিবেচনা না করেই তোতা পাখীর মতো উগড়ে দিচ্ছে, এ পরিস্থিতি ভয়ংকর।
তার জীবনি নিয়ে কোনো কথা নেই প্রায় 50 বছর বয়েসের এক লোক এ পর্যন্ত শতাধিক বই লিখেছেন, বই লেখা কোনো যোগ্যতা নয় হুমায়ুন আহমেদও প্রায় 150টা বই লিখে ফেলেছেন এই 35 বছরের সাহিত্য জীবনে,
উপন্যাস লেখা এক অর্থে তথ্যনির্ভর বই লেখার চেয়ে সহজ, তথ্য উপস্থাপন করতে হলেও যাচাই বাছাই করতে হয়, বিশ্লেষণ করতে হয় এবং অবশেষে নির্যাসটুকু তুলে আনতে হয়, যথারীতি হারুন ইয়াহিয়া সাহেব যার আসল নাম আদনান ওকটার( হয়তো বাংলাদেশের হলো নামটা হতে পারতো আদনান আখতার) 1979 সালে তার শিক্ষাজীবন শেষ করেন এবং 1991 থেকে বই লেখা শুরু করেন এবং বিগত 15 বছরে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় এবং এখানে সৃষ্টিকর্তার মাহত্ব্য তুলে ধরে অনেক বই লিখেছেন।
তার প্রধান শত্রু ডারউইনের বিবর্তনবাদ, এবং লক্ষ্য ইসলামী জ্ঞানের প্রসার এবং কোরানের গুনগান বর্ননা করা। আমি সবগুলো বই পড়ি নি, সাদিক একটা বিষয়ে পড়তে বলেছিলো এবং আরও কয়েকজনের লেখায় তার ভক্তি উপচে পড়ছে দেখে পড়ার একটা চেষ্টা করছি, মনে হয় না শেষ পর্যন্ত সব পড়ে শেষ করতে পারবো, এই সব আবর্জনা গলধকরনের কোনো মানে হয় না। আমার মনে হয় এই খানে যারা তার লেখার উদ্ধৃতি দিচ্ছে তারাও তার সবগুলো বই পড়ে দেখেছে। তারা গুটিকতক বই পড়ে তাদের আদর্শিক কোরানের বিজ্ঞানভিত্তিক বয়ানের জন্য হারুন ইয়াহিয়াকে উদ্ধৃত করছে।
আমি একটা বইয়ের কথা বলি,
দি হিস্টোরিক্যাল লাই- যেখানে বলা হয়েছে সভ্যতা প্রথম থেকেই একটা অবস্থানে রয়েছে, কোনো উত্থান পতন হয় নি, ডারউইনএর বিবর্তনবাদের উপর ভিত্তি করে সবাই ধারনা করে মানুষ প্রস্তরযুগ , ধাতব যুগ এবং এই ধারাবাহিকতায় এখন বর্তমানে প্লাস্টিক এবং মহাকাশযুগে প্রবেশ করেছে, হারুন ইয়াহিয়া এই ধারনাটার শেকড় কটার চেষ্টা করেছেন এই বইতে।
এটা তার হোম পেজের শোভা বর্ধন করছে , যারা হারুন ইয়াহিয়া বলতে অজ্ঞান তাদের অনুরোধ এই বইটা একটু খোলা মন নিয়ে পড়তে, যদি তাদের বন্দনা এবং বান্দিশ কিছুটা বাধাগ্রস্থ হয় এবং যদি তাদের 20 শতকের মস্তিস্ক আবার সচল হয় এই সামান্য অনুগ্রহ টুকু পেলেই তারা বুঝতে পারবে হারুন ইয়াহিয়া সাহেব কি প্রচার এবং প্রসারের চেষ্টা করছেন, ওটা কি বিজ্ঞানের আলোকে কোরান কে দেখা না কি বিজ্ঞানের কুরূচিপুর্ন ব্যাবহার করে মানুষের বিশ্বসকে বিভ্রান্ত করা।
আমার আপত্তি যে খানে এই বইটা নিয়ে সেটা বয়ান করি।
বলা হয়েছে সভ্যতা বিবর্তিত হয় নি তেমন করে, আর এই মানুষএর জীবনধারনের ধরন বিচার করে সভ্যতা যাচাই করা কোনো বৈজ্ঞানিক পন্থা হতে পারে না, এবং এর সপক্ষে বিভিনণ কুযুক্তিপ্রদর্শন, যুক্তি যখন আছে ওটার অন্ধ ব্যাবহারও আছে, এবং ধর্মব্যাবসায়িরা যুক্তির কুটব্যাবহারে সিদ্ধহস্ত, যারা ধর্মকে বিশ্বাস করে অলৌকিকতাকে বিশ্বাস করে তারা নিজেরা নিজেদের মানসিক অবস্থান মধ্যযুগীয় কি না এটা নিজেরা যাচাই করা শুরু করতে পারে, মানুষের অন্ধ বিশ্বাসের ফল সব সময়ই খারাপ। যাই হোক আমি বইটা পড়ে তার পর বলতে বলছি আমাকে কিছু কথা-
যদি এখন কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমার বাসাটা 20 হাত লাভার নীচে তলিয়ে যায়, তবে কিছুই পাওয়া যাবে না হয়তো, এই প্রাস্টিক নির্ভর সভ্যতায় সেটা আশা করাও উচিত হবে না, প্লস্টিক দাহ্য এবং গলে যায় সামান্য উত্তাপে কিন্তু যদি অন্য কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মাটির নীচে অজ্ঞাতবাসে যায় আমার এই বাসস্থান তবে সেখানে আমার ব্যাবহৃত সকল প্লাস্টিক উপকরন এই সাধের কম্পিউটার তার সাথে সংযুক্ত সব তার, আমার তৈজসপত্র এসবই কিছুটা ভেঙে যাবে কিন্তু অক্ষত থাকবে, এমন কি স্বর্নালংকার এবং স্টেইনলেস স্টিলে তৈরি চামচ এবং হড়িগুলোও টিকে থাকবে সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে, ওটা খুঁজে পাওয়া যাবে।
ইয়াহিয়া যেসব বইয়ের উদাহরন দিয়ে এই দাবিটা করেছে তার বয়েস 50 বছর হয়েছে, সেই 50 বছরে সভ্যতায় নতুন উপকরন এসেছে পি ভিসি পাইপ এবং এই ধাঁচের জিনিষ, স্টেইনলেস স্টিলের বিভিন্ন বস্তু এবং সভ্যতায় নির্মান কাজে ধাতুর বহুল ব্যাবহার অন্তত একটা ব্যাপক বিপর্যয়ের পরও কিছু ধাতব কাঠামোকে অক্ষুন্ন রাখবে এটা আমি জোড় গলায় বলতে পারি। আর যদি তা না হয় তাহলে পৃথিবীতে সভ্যতাই থাকবে না, তেমন বড় মাপের বিপর্যয় পৃথিবীতে সম্ভব না। সমস্ত পৃথিবী লাভার তলায় তলিয়ে যাবে এমনটা সম্ভব নয়, সম্ভব নয় বিভিন্ন দ্্ব ীপ রাষ্ট্র লাভায় ঢেকে যাওয়া, একেবারে সাধারন জ্ঞান সম্পন্ন যেকোনো মানুষ এটা বলতে পারবে, সুতরাং এই দাবি করা যে মাটির নীচে চাপা পড়েছিলো বলেই সেই সব সভ্যতার উৎকর্ষের নিদর্শন আমরা দেখছি না এটা সবৈর্ব মিথ্যা কথা।
যাই হোক আমি নাস্তিক এবং অধম শ্রেনীর মানুষ আমার দাবি সঠিক হতে হবে এমন কোনো কথা নেই, যারা অতিলৌকিকতায় বিশ্বাসি তাদের মননে হয়তো এটা মেনে নেওয়ার সমস্যা থাকতেই পারে।
এতগুলো সভ্যতা, এত জায়গায় খনন চালানো হয়েছে সব খানেই মোটামুটি একই ধাঁচের জিনিষপত্র পাওয়া গেছে, ইয়াহিয়া মাঝে মাঝে সূত্র উল্লেখ করে বলেছেন যে কিছু সময় বৈজ্ঞানিকরা গোঁজামিল দেয়, সত্য বিকৃত করে, তা এতগুলো প্রত্নতত্ত্ববিদ সবাই চাপাবাজ, সবাই একই ধাঁচের জিনিষপত্র উত্তোল ন করলো, সেসবের কার্বন ডেটিং করলো, সবগুলোই কি ভুয়া?
পৃথিবীতে বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের ধারাবাহিকতা আছে, মানুষ যখন বিভিন্ন মৌলিক পদার্থ আবিস্কার শুরু করলো তখন সেগুলোকে পৃথক করতে পেরেছে বলেই এবং সেগুলোকে একেবারে বিশুদ্ধ ধাঁচে পাওয়া গেছে বলেই মৌলিক বলেছে, হিলিয়াম নামক পদার্থটা যখন পর্যায় সারনী তৈরি করা হয় তখন পাওয়া যায় নি, কিন্তু ওটার অস্তিত্ব নিয়ে কারো সমস্যা ছিলো না, বৈজ্ঞানিক কল্পনের একটা যৌক্তিক ধারাবাহিকতা আছে, এবং সব কিছুর একটা ব্যাখ্যা আছে, যেমন ব্যাখ্যা আছে তেজস্ক্রিয়তার, হিলিয়াম প্রথম পৃথক মৌল হিসেবে স্ব ীকৃত হয় যখন যুর্যের বর্নালী বিশ্লেষন করে তাকে পাওয়া যায়।
এই সব নাস্তিক বিজ্ঞানীরা আগেই হিসেব করে বলে দিয়েছিলো যদি হিলিয়ামের বর্নালী থাকে তবে সেই বর্নালীর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কত হবে, এবং কি ভাবে তা অন্য সব পরমানু এবং অনু থেকে পৃথক হবে। আমরা মধ্য যুগের অনেক রহস্যময় রসায়নের বই পাই, বিভিন্ন সভ্যটা থেকে কাগজ আবিস্কার হয় নি, হয়েছে প্যাপিরাসে লেখা বই, পাওয়া গেছে কাদায় লেখা বই, বাঁশপাতায় লেখা বই, কাগজ এটাও এই সভ্যতার অবদান, সভ্যতার অগ্রগতির অবদান, তা প্রাচীন সভ্যতাগুলো বিবর্তিত না হলে কেনো সেখানে কাগজের পুস্তক পাওয়া যায় না।
যারা প্রকৌশলী তারা নড়ে চড়ে বসবে এখন, প্রাযুক্তিক উন্নয়ন হয়েছে সময়ের সাথে, কিন্তু মানুষের বিবর্তন হয় নি তেমন করে? সভ্যতা বিষয়ে হারুন ইয়াহিয়া সাহেবের বানী কিন্তু এটাও সমর্থন করে না। যাই হোক, এই ভন্ড লোকের লেখা বই পড়তে চাই না আমি, যেই লোক একেবারে সরল কোনো বিষয়কে নিয়ে এমন জল ঘোলা করতে পারে সে লোক যেসব বিষয়ে তেমন যৌক্তিক প্রমান নেই সেসব বিষয়ে কত বড় ধাপ্পা দিতে পারে এটা অনুমান করে নেওয়া কঠিন হবে না।
সাদিকের পাঠানো লিংকগুলো সব আবর্জনায় পরিপূর্ন, এবারও সহায়ক লিংকের অবস্থা তাই-
পৃথিবীর বিভিন্ন গুনাগুন বর্ননা করে বলা হয়েছে এই পৃথিবী স্রষ্টার কারিগরি জ্ঞানের ফসল। একেবারে হিসেব করে বানানো সব কিছুই, এর ভুচুম্বকত্ব এর তাপমাত্রা, এর বায়ুমন্ডলের গঠন, এর মহাকর্ষ সবই একেবারে হিসেব করে রাখা যেনো এটা জীবনধারনের সহায়ক পরিবেশ হয়। কথা প্রসঙ্গে এসেছে এখানে কার্বনের আধিক্য- সবগুলোর বৈজ্ঞানিক কার্যকরণ কি বয়ান করতে হবে?
মহাকর্ষ নিয়ে যে কথাটা বলা আছে যে এটা একেবারে হিসেব করে তৈরি করা, কথা হলো মহাকর্ষ নির্ভর করে বস্তুর ভর এবং বস্তুর কেন্দ্র থেকে এর উপরিতলের দুরত্বের উপর, পৃথিবীর ভর এবং কেন্দ্র থেকে এর দুরত্ব যদি একযোগে 2 গুন করে ফলো হয় তবেও এর মহাকর্ষএর পরিমান একই থাকবে, যদি 2টাই অর্ধেক কমিয়ে ফেলা হয় তবে তার মহাকর্ষ সমান থাকবে, আমি 2 গুন বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষপাতি, মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে প্রাযুক্তিক উন্নয়নের সাথে সাথে, আগের মতো মরকে মানুষ নিকেশ হচ্ছে না তাই জনসংখ্যা বাড়ছেই, এখন মানুষ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে, পৃথিবীর ভূমি যদি কোনো কারনে স্রষ্টা বাড়িয়ে দিতো তাহলে এত ঝামেলা হতো না, বরং আমার মনে হয় যখন তিনি এই পৃথিবীটা ডিজাইন করেছিলেন তখন তার ধারনা ছিলো না এখানে জনসংখ্যা এমন দুর্বিষহ ভাবে বেড়ে যাবে। চীনের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় 2000 বছর আগের পৃথিবীর সম্মিলিত জনসংখ্যার চেয়ে বেশী।
যাই হোক কার্বন তৈরি হয় নিউক্লিয়ার ফিসনের মাধ্যমে, হাইড্রোজেন 4টা সুক্ত হয়ে হিলিয়াম এবং 3টা হিলিয়াম যুক্ত হয়ে কার্বন তৈরি হয়, এই বিষয়টাকে ইয়াহিয়া একটা অতিলৌকিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মনে হয়, ধাপ্পাবাজদের নিয়ে এই সমস্যা সবখানেই ধাপ্পা দেওয়ার চেষ্টা।
যাই হোক 2টা হিলিয়াম যুক্ত হলে যেই নিউক্লিয়াস তৈরি হয় তার সম্মিলিত হয়ে থাকার চেয়ে পৃথক অবস্থায় তার প্রতিসাম্য বেশী। এটা বুঝতে হলে অন্তত 2 পাতা নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ্যা পড়তে হবে, বুঝতে হবে আইনস্টাইন কি বলতে চেয়েছিলেন তার বিখ্যাত সমীকরণে। যেখানে বস্তুর ভর এবং বস্তুর শক্তিকে তুল্য ধরা হয়েছে।
যখন কোনো ফিসনে কোনো নতুন নিউক্লিয়াস তৈরি হয় তখন কিছু পরিমান ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং এই ভর কমে যাওয়ার কারনে 2টা নিউক্লিয়াস যুক্ত হয়, এবং এর ফলে নিউক্লিয়াসের স্থায়িত্ব বেড়ে যায়। কিন্তু 2টা হিলিয়াম যুক্ত হলে যা হয় তা এ রকম না, এই ক্ষেত্রে হারানো ভর যা এদের সংযুক্ত করার শক্তির পরিমাপক তার হেরফের এত কম হয় যে সামান্য উত্তজনায় এটা আবার 2টা হিলিয়ামে পরিবর্তিত হতে পারে। এর জন্য বৈজ্ঞানিক সূত্র বিদ্যমান, অর্থ্যাৎ এটাকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব এবং এটার মধ্যে অতিলৌকিকতা নেই কোনো।
কার্বনের সংযুক্তিবল বেশী তাই ওটা টিকে থাকে এবং এই সংযুক্তি বলের সাম্যতা সবচেয়ে বেশী লোহায়। এই জন্য নিউক্লিয়ার ফিসনে যেসব নক্ষত্রের শক্তি তৈরি হয় তারা এই ভাবে পর্যায়ক্রমে সমস্ত হাইড্রোজেন লোহা হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নিউক্লিয়ার ফিসন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে পারবে, এর পরের যেসব নিউক্লিয়াস আছে তা সাধারন নিউক্লিয়ার ফিসনে তৈরি করা সম্ভব নয়। পৃথিবীতে লোজার উপস্থিতির চেয়ে ইউরেনিয়াম রেডিয়ামের উপস্থিতি বেশী রহস্যময়, ওটা এই সাক্ষ্য ভন করে যে পৃথিবীর উদ্ভব কোন এক সুপারনোভা বিস্ফোরনে,
পৃথিবীর বায়ুমন্ডল এবং এই সংক্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়েছে উৎস, যেখানে সল্প কথায় বলা আছে পৃথিবী পৃষ্টে যেই টুকু হাইড্রোজেন আছে তা পানি এবং বিভিন্ন যৌগ হিসেবে বিদ্যমান, মুক্ত হাইড্রোগেন পৃথিবীতে নেই। পৃথিবীর উপরে স্টরে ওজোন স্টরের ক্ষেত্রে এই কথা বলা যায় যে ওখানের পরিবেশে ওজোন সৃষ্টির সহায়ক উপাদান বিদ্যমান, এমন কি ভোর বেলা নদীর ধারে ওজোন তৈরি হয়, যেসব জ্ঞানী বৃদ্ধ অলস তরুনদের নদির ধারে হাটাহাটি করতে বলেন ভোর বেলায় তারা একটা ভালো উপদেশ দেন কারন, ওজোন রক্ত পরিশুদ্ধ করে, আয়োনোমন্ডলে যেই পরিমান বিকিরন পতিত হয় তা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, কিন্তু ওটার সম্পুর্নটা এখানে বয়ান করা সম্ভব নয়, যারা এইটুকু তথ্যে শান্তি পাচ্ছেন না তারা তড়িৎচুম্বকবিদ্যার বিভিন্ন উচ্চশ্রেনীর পাঠ্য পড়তে পারেন।
ও ভুল হয়েছে হারুন ইয়াহিয়ার বক্তব্য বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার নয়, এটা কেউ সচেতন ভাবে তৈরি করে রেখেছে এই দাবীতে।
এখন কেউ যদি এই বিশ্বস নিয়ে বসে থাকে তাহলে তাকে ভ্রান্ত প্রমনা করা কঠিন,
যাই হোক সাদিক যারা বিশ্বাস করতে চায় তাদের বিশ্বাস করার জন্য এত বড় বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা লাগে না। ওরা এর চেয়ে অনেক আজগুবি বিষআয়কেই গিলতে পারে। এসবের জন্য হারুন সাহেবের শরণাপন্ন হওয়া নিসপ্রয়োজন। আপনি নিজে গাছের পাতা দেখে আশ্চর্য হতে পারেন, কি আশ্চর্য কোথাও সেলাই নেই তার পরও গাছের পাতা কি ভাবে গাছে রসাথে লেগে আছে, এটাতে নিদর্শন আছে যারা বিশ্বাসী তাদের জন্য। হাসি
যাই হোক আপনি আবার হস্তরেখাবিদ, মহাকর্ষ আকাশে জন্মতিথিতে বিভিন্ন নক্ষত্রের অবস্থান এবং সংগম মুহুর্তে আকাশের নক্ষত্র গ্রহের অবস্থান হিসেব করে মানুষের ভুত ভবিষ্যত বর্তমান সব বলে দেওয়া সম্ভব বিশ্বাস করেন, আপনাকে যুক্তি শোনানো কতটুকু যৌক্তিক এই বিষয়ে আমার নিজের একটা প্রশ্ন আছে ভিতরে ভিতরে এই প্রশ্ন উল্লেখ করে একটা ঘটনা বলি, ঘটনাটা 2001এর সম্ভবত- পৃথিবী, সূর্য এবং মঙ্গল, শুক্র, বৃহঃস্পতি, ইউরেনাস, শনি এই সবগ্রহ একই সরল রেখায় উপস্থিত হয়েছিলো 30 মিনিটের জন্য। অনেকে অনেক অমঙ্গলআশংকা ব্যাক্ত করেছিলেন, বৈজ্ঞানিকরা হিসেব করে বলেছিলো চাঁদের প্রভাবে যে জোয়ার ভাঁটা হয় এই সরলরৈখিক অবস্থানে তার উচ্চতা 1 মিলিমিটারও বদলাবে না, কিন্তু মানুষ জন তা বিশ্বাস করে নি, মহাকর্ষ বল। আপনার পোষ্টে উৎসের মন্তব্য দেখুন রেফারেন্স হিসেবে, বস্তুর ভরের এবং দুরত্বের উপর নির্ভর করে, এবং বস্তুর ভর যত বেশী এই বলের পরিমান তত বেশী হবে। আপনি যখন মহাকর্ষ বলের অনু পর্যায়ে আকর্ষনের কথা বলবেন তখন এইটুকু বিবেচনা করতে হবে পৃথিবীর সম্মিলিত জলরাশির ভর একটা অনুর তুলনায় অসম্ভব রকমের বেশী, সেখানে যখন তেমন কোনো পর্যবেক্ষনযোগ্য প্রভাব রাখতে পারে না তখন একটা অনুর শক্তিস্তরে এটা তেমন প্রভাব রাখবে না। কিংবা বলা যায় এভাবেও,
মহাকর্ষ বল এতই ক্ষীন যে যদি মহাবিশ্বের তাপমাত্রা সমাগ্রিক ভাবে 1 ডিগ্রি বেড়ে যায় সেটা পৃথিবীথেকে হিসেব করা সম্ভব কিন্তু যদি আপনার 1 আলোকবর্ষ দুরে নতুন কোনো নক্ষত্র থাকে তার প্রভাবে অনুদের শক্তিস্টরের পরিবর্তন মাপা সম্ভব হবে না, এমন কি সূর্যের তাপের প্রভাবে অনুর শক্তিস্তরে যে পরিবর্তন মাপা সম্ভব সেটা সুর্যের মহাকর্ষের প্রভাবে শক্তিস্তরে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মাপা সম্ভব নয়। মঙ্গল। শুক্র চাঁদ এই 3টার প্রভাব সবসময়ই মানুষের জীবনের বশী হতো। চাঁদের প্রভাব হতো সবচেয়ে বেশী যদি হস্তরেখাবিদ্যা সঠিক হয় এবং সেই প্রভাবে এবং শুক্র মঙ্গলের প্রভাবে সবার জীবন সুন্দর শিল্পময়, কামময় হতো, শনির প্রভাব থাকতো না।
নিউমারোলজি সম্পর্কেও এমন কথাই বলা যায়, আপনার নাম সাদিক না হয়ে কৌশিক হলেও আপনার অবৈজ্ঞানিক চেতনা বদলাতো না, আপনার জন্ম যদি আরও 1 সপ্তাহ পরে হতো তাহলেও আপনি এই আপনিই থাকতেন সংখ্যাতত্তব মানুষের জন্মতিথির উপর নির্ভর করে না, এই সব ভূয়া ধারনা থেকে যত তাড়াতাড়ি নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন তত বেশী মঙ্গল। কিংবা আমি বলতেই পারি,বৃষের জাতক এই হয়, কন্যার জাতক ঐ হয়, মেষএর গাতক এই ধনুর জাতক সেই এইসব সান্তনা নিয়ে আপনি এবং আপনার অবিজ্ঞানিক মনন মুড়ি খাক, এটা আপনার প্রিয় বক্তব্য, ধর্মান্ধরা মুড়ি খাক, আমিও বলি যুক্তি অন্ধরা মুড়ি খাক।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।