কেয়ামতের কালপঞ্জি

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: মঙ্গল, ২৫/০৪/২০০৬ - ৯:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেশ কিছু বিষয় চোখে পড়ছে, নতুন একজন বিজ্ঞানমনস্ক!!! ব্লগার এসে আমাদের বিজ্ঞানের নতুন কিছু ধারনা শিখাচ্ছেন। হকিং সাহেবকে নিয়ে বিস্তর টানাটানি হচ্ছে তাও দেখা গেলো, কথা হলো হকিংএর ব্রিফ হিস্টোরি ওফ টাইম বইটার কিয়দংশ জনাব ত্রিভূজ পড়েছেন কি পড়েন নি? তার রেফারেন্সে তিনি হকিংএর নাম নিলেন বলেই প্রশ্নটা সামনে এলো,
কোরানের 4টা আয়াত এসেছে সহায়ক হিসাবে
81ঃ15 "তারারা পিছে হটিয়া যায়," জনাব ত্রিভুজকে এবার কিছু বলাটা উচিত হবে না তিনি বলেছেন সকল নক্ষত্রই পৃথিবী থেকে দুরে সরে যাচ্ছে কিন্তু ঘটনা সেরকম নয় মোটেও, এনড্রোমিন্ডা বলে একটা গ্যালাক্সি মিল্কি ওয়ের দিকে এগিয়ে আসছে, মিল্কি ওয়ে হচ্ছে সেই গ্যালাযি যেটার একটা দূরবর্তি কোণে সূর্য্য সহ আমাদের সৌর জগতের অবস্থান। নিখাদ বৈজ্ঞানিক তথ্য যদিও সকলা তারা পিছনে সরে যাচ্ছে কিন্তু প্রায় 10 কোটি নক্ষত্র সহ একটা সম্পুর্ন গ্যালাক্সি পৃথিবী তথা এই মিল্কি ওয়ের দিকে এগিয়ে আসছে এবং এই বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার মতো না,
যাই হোক কথা হলো এই পশ্চাত গমনটা মাপা হয় কি ভাবে? হাবল সাহেব পৃথিবীতে বসে 40 হাজার আলোকবর্ষ দুরের নক্ষত্রদের ঘরের খবর কি ভাবে জানলেন? উত্তর হলো বর্নালী বিশ্লেষন, রেড শিফট এবং ব্লু শিফট এর কথা , কিছু তারার ব্লু শিফট হচ্ছে এর মানে এই না যে তারা রলজ্জায় নীল হয়ে যাচ্ছে এইটার অর্থ তাদের বর্নালীর রেখাগুলো নীলের দিকে সরে যাচ্ছে, এইটা ডপলার শিফট,যেইটা বলে যদি উৎস এগিয়ে আসে দর্শকের দিকে তাহলে দর্শকের সাপেক্ষে কম্পাংক বৃদ্ধি পাবে, এই কম্পাংক বৃদ্ধির ঘটনাকে বলে ব্লু শিফট, এবং যদি উৎস দুরে সরে যেতে থাকে তাহলে কম্পাংকের সংখ্যা কমতে থাকবে, এইটাকে বলে রেড শিফট। ব্লু শিফটের ফলে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কমে যায় এবং রেড শিফটের ফলে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়, সার্বিক বিশ্লেষন করে দেখা গেছে কিছু গ্যালাক্সির ক্ষেত্রে সেখান থেকে আগত আলোক রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে অর্থ্যাৎ তারা দুরে সরে যাচ্ছে, কিছু গ্যালাক্সির ক্ষেত্রে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কমছে মানে ঐ গুলো পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে, তবে সবটা বিচার করলে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসা গ্যালাক্সির চেয়ে পৃথিবী থেকে দুরে সরে যাওয়া গ্যালাক্সির সংখ্যা বেশী, সুতরাং আমরা নিশ্চিতে বলতে পারি মহাবিশ্ব প্রসারিত হইতেছে।
হকিংয়ের বইটা না পড়লে কিংবা হকিংয়ের বইগুলোর ভাষা খুবই সরল মানের মনে হলেও এর ভিতরেও কিছু যুক্তির বিষয় আছে, চিন্তার বিষয় আছে, হকিংয়ের এনথ্রোপলজিক্যাল প্রিন্সিপালের ক্ষেত্রেও এই কথাটা প্রযোজ্য, আশা করছি মানুষের উৎপত্তি হিসেবে কোনো এক মহান ইসলাম প্রেমি ভবিষ্যতে এই মহাবিশ্ব তৈরির মানব তত্ত্ব নিয়ে কিছু লিখে ফেলবে, বাঁদরের হাতে এটম বোম দিলে বাঁদর ওটা কামড়াবে, যদিও জানে না ওটা দিয়ে কি কাজ হবে তার পরও বাঁদর এটম বোম হাতে পেলে বলে বসবে ঐ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী বাঁদর, কোরান হাতে উল্মফনরত এই ব্লগের বিভিন্ন মানুষ দেখলে আমার সেই বাঁদরের উপমাই মনে আসে। যারা বিজ্ঞান নিয়ে কিছু না জেনেই অতি সরলীকৃত মন্তব্য করে, একজন কয়দিন আগে নক্ষত্রের মৃতু্য এবং কেয়ামত নিয়ে কয়েক লাইন লিখেছে, সবাইকে সমান মাপে শিক্ষিত করা সম্ভব নয়,
যাই হোক কেয়ামত এবং বৃহত সংকোচনের মধ্যে যারা একটা সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করবেন অনাগত ভবিষ্যতে তাদের জন্য একটা ছোটো দুঃসংবাদ আছে,
যদি বোলড ফন্টের ব্যাবহার থাকতো তাহলে এটাকে লাল করে বড় ফন্টে লিখতাম সম্ভব না বিদঃায় একটু ফাঁকা রেখে লিখছি

মহাবিশ্বের বর্তমান বয়েসের অর্ধেক অতিক্রান্ত হওয়ার পর সূর্যের জন্ম। সূর্যের গড় আয়ু যদি 1000 কোটি বছর হয়, সূর্যের মাপের নক্ষত্রের ক্ষেত্রে বয়স সীমাটা এমনই, তাহলে সূর্য আরও 500 কোটি বছর আলো দিবে এর পর সূর্য ধ্বংস হয়ে যাবে। এই পর্যন্ত বুঝতে পারলেই হবে,
বিজ্ঞানের নিয়মকানুন খুব সরল, যদি মহাবিশ্ব বিকশিত হয়ে 1200 থেকে 1500 কোটি বছরে এই অবস্থানে আসে তাহলে তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে হলে ঠিক ততটা সময়ই অতিক্রম করতে হবে, আমি সংক্ষেপে যা বলতে চাইছি আমাদের সূর্যের মৃতু্যর পরেও মহাবিশ্ব থাকবে, কিন্তু সূর্যের মৃতু্যর পরে পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ব থাকবে না, অন্তত সূর্যের মৃতু্যর পরে প্রায় 500 থেকে 1000 কোটি বছর আমাদের অপেক্ষা করতে হবে যদি এর পর বৃহৎ সংকোচন হয়, বৃহৎ সংকোচনের বিপক্ষেই যত সব পর্যবেক্ষন এখন পর্যন্ত এর পরও
যদি কোনো দিন বৃহৎ সংকোচন( বিগ ক্রাঞ্চ) হয় তাহলে ওটা হবে আমাদের পরিচিত পৃথিবীতে সভ্যতার এবং জীবনের সবটুকু নিশ্চিহ্ন হওয়ার 500 কোটি বছর পরে। এবং আল্লা মিয়া তার যতই ক্ষমতা থাক এই সময়সীমাকে অতিকড়ম করতে পারবে না।
আমরা মানুষেরা যদি এই সময়ের মধ্যে উন্নত মানের কোনো মহাকাশযান তৈরি করে অন্য কোথাও পারি না জমাই তাহলে আমাদের সভ্যতার মৃতু্যর পরও 500 কোটি বছর বামন সূর্য টিকে থাকবে, এক সময় তাপবিকিরন ক্ষমতা হারিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
বিজ্ঞান আমাদের 400 কোটি বছর দিয়েছে এই ঘটনা ঘটার আগে এর তাই অন্তত 400 কোটি বছর মাস্তি করতে পারবে মানুষ সেই সময় পর্যন্ত কেয়ামত হবে না। এবংআমি বলতে পারি যদি আগামি কালই সংকোচন শুরু হয় তাহলেও আরও 1200 কোটি বছর পর আবার বিগ ক্র্যাঞ্চের ফলে মহাবিশ্ব ঠিক সূচনার অবস্থায় ফিরে যাবে। বড়ই কষ্টের কথা। কিন্তু কি আর করার।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।