ইহুদি ধর্ম

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: রবি, ১৪/০৫/২০০৬ - ৫:১১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আদমের বয়েস যখন 130 বছর তখন তার একটা সন্তান হয় তার নাম সেথ, এটার ইসলামি করন হয়েছে বোধ হয় শীস নামে। শীস বা সেথ এর বয়েস যখন 105 বছর তখন এনাশ নামের এক ছেলে হয় তার,
এনাশের বয়েস যখন 90 বছর তখন জন্ম হয় কেনান এর।
কেনান এর বয়েস যখন 70 তখন মাহলালেল এর জন্ম হয়, মাহলালেলএর বয়েস যখন 65 তখন জন্ম হয় যারেদের জন্ম হয়,
যারেদের বয়েস যখন 162 তখন জন্ম হয় এনুশের। এনুশ65 বছর বয়েসে সেই সন্তানের জনক হয় তার নাম মেথুসেলাহ,
মেথুসেলাহর 187 বছর বয়েসে যেই সন্তান জন্ম হয় তার নাম লামেশ, লামেশের বয়েস যখন 182 তখন নোয়ার জন্ম হয়।
সংখ্যাগুলো যোগ দেওয়া যাক
130, 105, 90, 70,65, 65, 162, 187, 182
এটা হয় 1057, আদমের বয়েস ছিলো মৃতু্যকালে 930 বছর, সেথ এর বয়েস ছিলো মৃতু্য কালে 912, এনোশের বয়েস ছিলো মৃতু্য কালে 905, কেনানের বয়েস মৃতু্যকালে ছিলো 910, মাহলালেলের বয়েস হয়েছিলো মৃতু্যকালে 895, যারেদের বয়েস হয়েছিলো মৃতু্যকালে 902, এনাশের বয়েস হয়েছিলো মৃতু্যকালে 365, মেথুসেলাহের বয়েস হয়েছিলো মৃতু্যকালে 969, লামেশের বয়েস হয়েছিলো মৃতু্যকালে 777,
হিসাবটা তাওরাতের, নুহ 500 বছর বয়েসে 3 সন্তানের জনক হন, শাম, হাম, যাফেথ।
আদমের মৃতু্যর 112 বছর পরে নোয়া র জন্ম হয়, এবং সে সময় সিথ জীবিত ছিলো, যাই হোক মানুষ হাজার বছর বাঁচলেও কোনো ক্ষতি নেই, কোরানে উল্লেখিত বিশিষ্ঠ ব্যাক্তিদের মধ্যে শীষ, ইউনুস, শাম, নুহরয়েছে, মাঝের নামগুলো খুজে পাওয়া গেলো না, হয়তো বিস্মৃত নাম সেগুলো, বা তারা কোনো কারনে নবুয়ত প্রাপ্ত হয় নাই। যে কারনেই হোক না কেনো, ইহুদি ধর্ম যা কি না ইহুদের নামে এসেছে, এবং ইহুদের জন্ম মুসার অনেক পড়ে, ইব্রাহিম যে কিনা একত্ববাদী ইসরাঈলের সন্তানদের জন্য নির্দিষ্ট ধর্ম এনেছে, ওটার প্রথম অংশে এই ইব্রাহিমের ধর্ম সার্বজনীন ছিলো না, ইব্রাহিম পুতুল ভেঙে ফেলে পালিয়ে চলে আসেন অন্য এক এলাকায়, সেখানে আসার পর তার নাম হয় ইবরি, অর্থ্যাৎ অপারের লোক, ওপার বলতে এখানে টাইগ্রেস এবং ইউফ্রেটাসের কথা বলা হয়েছে, ইব্রাহিম টাইগ=রেস এবং ইউফ্রেটাস এর ওপার থেকে এসেছিলেন বলে নতুন ভূখন্ডের মানুষ জন তাকে ডাকতো ইরবি বলে, যেখান থেকে তাদের বয়ে আনা ভাষার নাম হয় হিব্রু। এবং এই ভাষা এবং সংস্কৃতির ধারা বয়ে নিয়া যায় মুসার আগ পর্যন্ত ইসরাঈলের সন্তানেরা।
তারা মিশরে দাস হিসেবে পরিচিত ছিলো, এবং মিশরের বহমান সংস্কৃতির সাথে তাদের মিলমিশ না হওয়ায় তারা মূলত মিশরের দেবতাদের মেনে চলতো না বরং ইব্রাহীমের প্রবর্তিত ইশ্বরের উপাসনা করতো।
এই ধর্ম বিষয়টাতে সারাক্ষনই সাংস্কৃতিক দন্দ্ব বিদ্যমান, এবং যাদের সাথেই সংস্কৃতির মিলমিশ নেই তারাই কাফের বা পৌত্তলিক বিবেচিত হয়েছে। ফেরাউনের ধর্মবিশ্বাসের সাথে মুসার ধর্মবিশ্বাসের মিল ছিলো না, এর পরও মুসা গিয়া ফেরাউনের কাছ থেকে হিব্রুভাষিদের সাংস্কৃতিক েঅধিকার এবং দাসত্ব মুক্তির জন্য দাবি জানায়। এক অর্থ মুসা সেই সময়ে মিশরের হিব্রু ভাষি লোকদের নেতা। ফেরাউন অবশেষে মুক্তি দিয়েছিলো কিনা জানা যায় নি বরং মুসা সমস্ত অনুসারি সহ নীল নদের অববাহিকা ছেড়ে সিরিয়া পার হয়ে, প্যালেস্টাইনে অবস্থান গ্রহন করে, এখানেই তার টেন কামন্ডমেন্টস পাওয়া, এবং একটা পর্যায়ে তারা যাযাবর জীবন ছেড়ে কৃষিজীবি হয়ে উঠে, এবং কৃষিজীবি হওয়ার সাথে সাথে তাদের দঃর্মের বিবর্তন হয়, প্রতিযুগে কিছু নবী এসে বা ধর্ম প্রচারক এসে ধর্মকে নতুন করে যেতো, এবং ইহুদিদের বিশ্বাস যখনই ধর্মে অনাচার বা কলুষতা আসবে এবং যখনই শোষনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে তখনই কোনো কোনো মানুষ ধর্মের ঐক্যে সবাই এক করে ইহুদিদের মুক্তি দিবে।
যাই হোক মুসার অনুসারিরা একটা সাম্রাজ্য গঠন করে, সেখানে রাজত্ব করে দাউদ, সোলায়মান, এবং সোলায়মান বিখ্যাত উপাসনালয় তৈরি করে, এর পর উত্তর এবং দক্ষিনে বিভাজিত হয়ে যায় এি সম্রাজ্য, এর পর থেকেই আবার ইসরাইলের সন্তানদের দূর্দশার দিন শুরু হয়, তারা প্রথমে ব্যাবিলনের রাজাদের হাতে পরে কালক্রমে পার্সিয়ানদের পদানত হয়।
ইতিহাসের মজাটাই এমন, মাঝে মাঝে ওরা পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার মতো ঘটনার জন্ম দেয়।

পার্সিয়ান রাজা জরাথুষ্ট ধর্মাবলম্বি ছিলেন, জরাথুষ্ট ছিলেন একেশ্বরবাদী, এবং ইসরাইলের সন্তানদের ধর্ম এবং ইশ্বর চেতনায় জরাথুষ্টের দঃারনার অনুপ্রবেশ ঘটে। অবশ্য এটা ইতিহাসের একটা বিশ্লেষণ, অন্য রকম বিশ্লেষন কেউ করলেও করতে পারে, যেমন পদানত হয়েও ইহুদিরা তাদের ধর্মবিশ্বাস অক্ষুন্ন রেখেছিলো মিশরে, মুসা সেই বিশ্বাসিদের নেতা হয়ে দলবল সহ মিশর ছেড়ে প্যালেস্টাইনে চলে আসেন, তেমনই ঐতিহাসিক সত্য এই রাজ্য একটা সময় পার্সিয়ানদের দখলে যায়, পার্সিয়ান তাদের উপর একেশ্বরবাদ চাপিয়ে দিতে পারে নাি, কারন ইহুদি ধর্ম একেশ্বরবাদী ছিলো, তবে কিছু পরিবর্তন হয়, ইশ্বরের ধারনা এবং এখটা শাররীক অবকাঠামো ছিলো ইসরাইলের সন্তানদের ধর্মে, জরাথুষ্টের ধর্মের ইশ্বর বিমূর্ত এটা একটা বোধের মতো, জগতের সকল ভালো কাজ তদারক করছে একটা বোধ সেই বোধ ইশ্বর, এবং জগতের সকল মন্দ কাজ তদারক করছে আরেক জন, মন্দ ইশ্বর, এই বিষয়টার এক পর্যায়ে ছিলো যখন শেষ জামানা আসবে তখন ভালোইশ্বর মন্দ ইশ্বরের উপর নিজের প্রভুত্ব কায়েম করবে এবং ভালোর জয় হবে অবশেষে, একজন ধর্মপ্রচারক এসে এই ধর্মের পূর্ণতা দিবে, এই শেষ জামানার ধারনা এবং একজন ভবিষ্যত নবির আগমনের বিষয়টা এই ভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় ইহুদি ধর্মে, এবং অন্য যে ধারনাটা প্রবিষ্ট হয় যেটা হলো সার্বজনীন মানুষের জন্য ধর্ম। ইতিহাসের এই পর্যায়ে এসে ইসরাইলের সন্তানদের জন্য নির্দিষ্ট ধর্ম শুধু ইসরাইলের সন্তানদের জন্য নির্দিষ্ট থাকলো না, বলা হলো একজন আসবে এই ধর্মের পূর্নতা দিতে এবং তখন সেটা সব মানুষের জন্য নির্দিষ্ট ধর্ম হবে।
কাছাকাছি মনোভাবাপন্ন এই 2টি ধর্মের মধ্যে মিল হলো এরা 2 জনেই একেশ্বরবাদি, তবে জরাথুষ্ঠের ধর্মবোধে খানিকটা বিমুর্ততা আছে, ইশ্বরের রূপ কল্পনা নেই, বরং তার ভালোত্বের উপর জোড় দেওয়া হয়েছে। এ জন্যই আমার মনে হয় এটা একটা বোধের মতো, ইসরাইলের সন্তানদের ধর্মে ইশ্বরের শাররিক কাঠামো কল্পনা করা হয়েছে, সেখানে ইশ্বরের হাত পা মাথা সবই বিদ্যমান, এটাও এক ধরনের পুতুল পুজার মতোই শুধু এই পূজার জন্য কোনো মুর্তি নেই বরং মানসমূর্তি কল্পনা করা হয়, জরাথুষ্ঠের ধর্ম বোধের উপর, কোথাও ইশ্বররূপ কল্পনার অবকাশ নেই।
এটা আমার বিশ্লেষন কেউ নতুন বিশ্লেষন দাঁড়া করাতেই পারে।যাই হোক পদানত হওয়ার পরে ইহুদ বলে একজন ধর্ম প্রচারক আবারও ইহুদিদের একদলভূক্ত করেন এবং তাদের স্বাধিনতা দেন, এবং এই নেতা ইহুদিদের নিয়ে একটা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেন আবার, এই নেতার নামানুসারে মুসা প্রবর্তিত দঃর্মের নাম হয় ইহুদের ধর্ম এবং এই ধর্মানুসারিদের আমরা ইহুদি বলি।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।