সপ্তআসমান কি ব্লাক হোলের ভেতরে??

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: বুধ, ০৭/০৬/২০০৬ - ১২:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যারা যুক্তির সাধারন বিষয়গুলোকে মেনে চলে তাদের জন্য-যারা এই সত্য মেনে নিয়েছে 1 যোগ 1 = 2, 2 যোগ 2 =4, 4যোগ 4 =8 এই রকম সাধারন হিসাবগুলোকে সত্য মানে তাদের জন্য। যারা এই সব সাধারন বিষয়কে প্রাধান্য দিতে চায় না এবং যাদের যৌক্তিক আলোচনার ক্ষমতা নেই তাদের বলে কোনো লাভ হবে না তাই তাদের শুভবোধ জাগ্রত হোক এবং তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করুক রূপকথার জগতে।

আদিকান্ড থেকে শুরু হোক আলোচনা আমাদের, ইশ্বর বলিলেন লেট দেয়ার বি লাইট এন্ড দেয়ার ইজ লাইট- এই ভাবে মুখের কথায় ইশ্বর বিশ্বসৃজন করিলেন। ষড়দিন ব্যাপি ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হইলো এবং স্বর্গ মর্ত্য তৈয়ার হইলো। সেই স্বর্গের 7টা অংশ, প্রতিটা অংশ এমন বড় যে উহা হাটিয়া পাড় হইতে পঞ্চশতাধিক বছর কালক অতিক্রান্ত হইবে, স্বর্গ চৌকোনা বাস্কের মতো কাঠামো, উহার উচ্চতা প্রস্থ, এবং দৈর্ঘের হিসাব পাওয়া যাইবে ইহুদিদের গ্রন্থে। অবশ্য ইহুদির গ্রন্থে একটা চমৎকার হিসাব ছিলো যা আমি একটা হাদিসে পেয়েছি পরে, একটা বিশাল বৃক্ষ থাকিবে যাহার কান্ডের পরিধি বরাবার হটিলে কয়েকশত বছর লাগিয়া যাইবে। সে বিশাল এক বর্ননা, সেই ইশ্বরের নিবাসের সামনে 4টা নদী ভমান, যার 2টা দৃশ্য এবং 2 টা অদৃশ্য। হাদিসের বয়ান, এই একই হাদিসের ইহুদি রূপে দেখা যায় সেইখানে দজলা ফেরাত নীল নদের উপস্থিতি। চতুর্থ নদীটির নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না, তবে হিন্দু পুরাণে এমন একটা ঘটনা আছে যেখানে স্বর্গ থেকে গঙ্গা সরাসরি পৃথিবীতে চলিয়া আসে। এমন ভাবেই এই সব দজলা ফেরাত নীল নদ স্বর্গের নদী। তাদের মরত্যাগমনের কোনো রাস্তা আমরা দেখছি না, নীল নদের উৎস খুঁজিয়া বাহির করিয়াছিলেন সম্ভবত লিভিংস্টোন নামক এক ব্যাক্তি, নামে ভুল হইতেই পারে, কিন্তু নীল নদের উৎস খুঁজিয়া দেখা গিয়াছে উহা পৃথিবীর উপরেই একটা স্থান স্বর্গের সাথে সেখানে কোনো সরাসরি দরজা নেই। ভালো হইতো তবে আনপড় আফ্রিকা বাসিদের জন্য তাহারা দিব্যি ড্যাং ড্যাং করিয়া চলিয়া যাইতে পারিত বৈকুণ্ঠ হইতে যমালয় হইতে স্বর্গপুরী যেখানে ইচ্ছা সেইখানে। কেলোভুতদের বিষয়ে ইশ্বর বড় একচোখা নীতি পালন করিয়াছেন, তাহাদের নামাজ পরার ঢংঢাং ও আমাদিগের চেয়ে আলাদা- এইটা আমার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে দেখা ধারনা, এই ব লগে অনেক ইসলামের সৈনিক রহিয়াছে যাহারা ম্লেচ্ছ দেশে ইসলাম প্রচারে ব্রতী কিন্তু তাহারা কোনোক্রমেই ম্যালেরিয়া, কালা জ্বর অধু্যষিত আফ্রিকা মহাদেশের জীবনধারনের সুবিধা বঞ্চিত অংশে ইসলাম প্রসারের দায়িত্ব নিতে রাজি নয়। সবাই গৃহকোণে সুখে আহ্লদে ইসলাম প্রচারের কাজ করিবে। রোমের মাঝে এক দেশ আছে ভ্যাটিকান, সেইখানে কোনো তাবলীগে জামাতের লোকজন ধর্ম প্রচারে যায় না, উহার সকল অধিবাসীই কেরেস্তান ধর্মাবলম্বি কিন্তু উহাদের ভ্রান্ত ধারনা সত্যের আলোতে পরিস্কার করে দিতে কেউ সেই খানে ধর্মের বানী প্রচার করে না।
আমরা আলোচনা থেকে বাহিরে চলিয়া যাইতেছি তাই আবার আেখাচনার মধ্যস্থলে ফিরিয়া আসি।
যদিও সপ্তম আসমান ইশ্বরের নিবাস কিন্তু উহা স্বর্গ নহে। বিষয়টা ভীষন গোলমেলে তবে স্বর্গ রহিয়াছে এই বিষয়ে কোনো মতভেদের অস্তিত্ব নেই, সপ্ততলা আসমান রহিয়াছে এই বিষয়েও কাহারো কোনো দ্্বিমত নেই। সুতরাং সেই সপ্তম আসমানে থেকে এই যে চারটা নদী পৃথিবীতে আসিল তাহাদের সহিত সপ্তম আসমানের সরাসরি সংযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়, উহা সাধারন জল মাত্র আলোক নহে যে বিকিরনের মাধ্যমে মহাশুন্য পাড়ি দিয়া পৃথিবীতে আসিয়া পড়িবে। সুতরাং হাদিসের বর্ননা অনুযায়ি এই তথ্য একটি ভুয়া তথ্য। যাহাই হোক মুহাম্মদকে সরাসরি মিথু্যক বলিলে সবাই আস্তিন গুটিয়ে তেড়ে আসতে পারে আমার দিকে। তবে স্বর্গের আমোদের বর্ননা দিতে গিয়া অতি আবেগে বাস্তবজ্ঞান হারাইয়া ফেলিয়াছিলো মুহাম্মদ। ইহাই বোধ হয় সঠিক হইবে, কিংবা ইহা একটি রূপক হইতে পারে যেমন করিয়া সূর্য প্রতিদিন কোনো এক অদৃশ্য বিন্দুতে গিয়ে পরবর্তি দিনে উঠিবার অনুমতি প্রার্থনা করে।
যাহাই হউক একদা স্বর্গের সহিত পৃথিবীর হট লাইন কানেকশন বিদ্যমান ছিলো। তখন আজরাঈল গিব্রাঈল সবাই যাদৃচ্ছিক পৃথিবীতে চলিয়া আসিত, জিব্রাঈল বত্রিশ ঘাটের মটি খুঁজিয়া আদমের জন্য উপযুক্ত মাটি লহিয়া গিয়াছিলো সপ্তম স্বর্গে। আমি যদিও বুঝি না কেনো সমস্ত মহাবিশ্ব মুখের কথায় তৈয়ার করিবার পর আদমের সৃষ্টির জন্য ইশ্বরকে মাটিকাঁদা ঘাটাঘাটি করিতে হইলো। তিনি এইসব ছোয়াচ এড়িয়ে শুধু বলিলেই আদম খাড়া হইয়া যাইতো। উহার পরে কেনোই বা আদমের পাঁজর কাটিয়া হাওয়া বানাইতে হইলো,এই প্রশ্নের ুত্তর আছে ইহুদিদের গ্রন্থে। কোরানে ইহার উত্তর নাই। কোরানের এই খামতিটা রয়েই গেলো। ইহুদি গ্রন্থ মতে ইশ্বর মাটিকাাঁদা ঘাটিয়া একটি পুরুষ এবং একটি রমনী তৈয়ার করিয়াছিলেন, রমনি তাহার উত্তপ্ত মস্তিস্ক এবং অতিগ্রবের কারনে সমমনা আদমে তাহার পতি স্ব ীকার করিত রাজি হইলেন না, তাই আদম নয় প্রথম স্বর্গচু্যতি ঘটে এই পাপিষ্ঠা রমনীর। অতঃপর আদম কাঁদিয়া পড়িলেন ইশ্বরের পদে আমার সঙ্গিবিহীন জীবনে একটা সঙ্গি আনিয়া দাও। এবং ইশ্বর আদমের চেয়ে হীন করিয়া হাওয়াকে তৈয়ার করিলেন, যেনো রমনীর অবিবেচক ঔদ্ধত্যে হাওয়া আদমকে পতিরূপে অস্ব ীকারের ক্ষমতা না পায়। সুতরাং নিয়ম হইলো যোগ্যতায় হীন রমনীকে বিবাহ করিতে হইবে, যোগ্যতার তোমার চেয়ে উচ্চ এমন কোনো রমনীকে বিবাহ করিতে পারিবে আদমসন্তানেরা।
যাহাই হোক উহার পর অনেক কান্ড ঘটিয়া গেলো, হাওয়া জ্ঞানবৃক্ষের ফল খাইয়া স্বর্গচু্যত হইলেন, এবং অতঃপর পাপমোচনের জন্য পৃথিবীতে প্রর্থনা করিলেন, আদমও প্রার্থনারত ছিলো তবে ইবলিশ শয়তান যাহাকে আদম হাওয়ার মাত্র ঘন্টা কয়েক আগে স্বর্গ থেকে বহিস্কার করা হইয়াছিলো সেই পাপিষ্ট হাওয়াকে আবার প্রলোভন দেখাইয়া পাপের পথে লইয়া যায়, আদম একটানা 40 দিন স্রোতশীল নদীর মধ্যে নাবিয়া প্রার্থনা করিয়া অনেক কিছুই হাসিল করিয়া ফেলে।

যে সময়ের কথা বলা হইতেছে সেই সময়ে স্বর্গে যাওয়ার জন্য অসংখ্য উপায় বিদ্যমান ছিলো। এমন কি হাওয়া তার পূত্র শীষ কে লইয়া স্বর্গাভিমূখি যাত্রা শুরু করে তাহাকে আদমের মৃতু্যর সুসংবাদ দেওয়া হয়।
এবং ইহার পরে আরও 2000 বছর যেকোনো বিপদে আপদে ফেরেশতাকূল সরাসরি পৃথিবীতে আগমন করিয়াছিলো। কিন্তু যীশুর জন্মের পর তাহাদের ভেতরে এক অকারন অলসতা দেখা যায়। তাহার এর 600 বছর পর পৃথিবিতে আগমন করে। এবং 23 বছরাধিক কাল পৃথিবীতে ঘংহন আগমন করিয়া তাহাদের পৃথিবী বিতৃষ্ণা চলিয়া আসে। উহার পর আর ইশ্বর অনেক অনুরোধ করিয়াও জীবিত মানুষের সামনে আনিতে পারেন নাই। তবে মৃত মানুষের কবরে ফেরেশতাকূল নিয়মিত যাতায়ত করে। তাহাদের স্বর্গ এবং নরকের হালহকিকত জানানো হয় প্রত্যহ। যদিও অপঘাতে মৃতু্যর সরাসরি শাস্তি হইতেছে নরকবাস, এমন কি মুমিন বান্দাকে অন্যায় ভাবে হত্যা করার ফলাফলও নরকবাস। পাপী বান্দা যখন মৃতু্য বরন করে তখন তাহার কবর চাপিয়া আসিয়া তাহর পাঁজরে ভীষন চাপ প্রয়োগ করিবে। কিন্তু ময়নাতদন্তের জন্য যতগুলো লাশ উঠানো হয় তাহারা সবাই প্রকৃত মূমিন এবং অতিশয় দঃার্মিক ব্যাক্তি কারন তাহাদের কবর খুড়িয়া কোনো রকম শাস্তির নিশানা পাওয়া যায় না।
কিংবা ইহাও নিশ্চিত নয় যখন কোনো লাশের সুরথালের জন্য কব্বর থেকিয়া উত্তোলন করা হয় তখন সেই কবরের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা দ্্বয় ঠিক কি করিয়া সময় অতিবাহিত করে? তাহাদের স্বশরীরে কোথাও যেতে দেখা যায় নাই। এমন কি মর্গ থেকেও লাশ কোথাও হাওয়া খেতে গিয়াছে এমন সংবাদও পাওয়া যায় নাই।
1400 বছর আগে নরকের গরম বাতাস আরবে আসিত, কিন্তু হঠাৎ করিয়া নরকের দ্্বাররুদ্ধ হইয়াছে, এখন আরবের শেখেদের তেলবেচা টাকা, তাই তাহারা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত মসজিদে শান্তিতে ধর্মপালন করে।
যেহেতু মুহাম্মদ মিথ্যাবাদী নয়- তাই তাহার বলা সবগুলো কথাই সত্য বিবেচিত হইবে, সাধারন যুক্তি ইহাই বলে।
বোখারির হাদিস লইয়া সাদিকের সন্দেহ থাকিলেও অন্যসব বীরপুঙ্গব ধার্মিকদের কোনো সন্দেহ নাই। বোখারিতে মুহাম্মদের সত্যভাষন সঞ্চিত রহিয়াছে। এবং উহার মধ্যে বেশ কিছু মিথ্যা ভাষনও বিদ্যমান যাহার কোনো উত্তর নাই আপাতত। সাদিকের সহজ উত্তর ছিলো হাদিসের পূর্নলিখন প্রয়োজন। বুখারীর এক একটা হাদিসের সংকলনের পিছনে যে পরিমান নিষ্ঠা দেখানো হইয়াছে উহার পরে ইহার হাদিসকে ভুল বলা হইলে উহা প্রকারান্তরে মুহাম্মদকে মিথ্যাবাদী বলার সামিল।
কথা হইলো নরকের উত্তাপ, বেহেশতের বাতাস সব কিছুই পৃথিবীর কবরবাসী মানুষের গায়ে লাগে। কিন্তু আমরা যখন চারপাশে এত সব বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি লইয়া মহাকাশ পর্যবেক্ষন করি তখন কেনো শুধুমাত্র আমরা যাহা পাইবো আশা করি শুধুমাত্র সেইসব তরঙ্গই খুঁজিয়া পাই। নরকের উত্তাপ যদি পথীবীতে আসিতে হয় তবে উহাকে তাপ সঞ্চালনে তিনটা মাধ্যেমের একটা মাধ্যম ব্যাবহার করিতে হইবে। যেহেতু মাহাশুন্যের ভেতরের বস্তুন্নত্ব খুব কম তাই পরিবহন ও পরিচলন পদ্ধতিতে তাপ সঞ্চালন হয়ই না, মূলত বিকিরণের মাধ্যমে তাপ পৃথিবীতে আসে। কিন্তু এই বিকিরন পৃথীবীর রাডারের ধরা পড়ে না। রেডিও টেলিস্কোপে ধরা পড়া না, অপটিক্যাল টেেিলস্কোপেও ধরা পড়ে না। সপ্তম আসমানে মিরাজের কালে মুহাম্মদ গমন করিয়াছিলো, সেইখানে গিয়া এই ফেরাত দজলা নীলনদের মূল উৎস দেখিয়া আসিয়াছিলো মুহাম্মদ কিন্তু পরবর্তিতে দজলা ফেরাতের উৎস পাওয়া গিয়াছে। পাওয়া গিয়াছে নীল নদের উৎস এবং উহারা পৃথিবীর উপরেই অবস্থিত তাই বলা যায় মেরাজের বর্ননায় এই খানে একটা মিথ্যা বলিয়াছে মুহাম্মদ। অথবা সেই গুঢ় রূপকের ফাঁদ ছিলো।
কথা হইলো আমরা মাত্র 2টা সমাধান পাই এই আলোচনার, সমাধান 1- বর্গ আসমান সবই এই মহাবিশ্বের ভেতরে কিন্তু কোনো এক অজানা কারনে তাহা অদৃশ্য। একটা সময় উহা অদৃশ্য ছিলো না, 1400 বছর আগেও- কিন্তু গত 1400 বছরে তাহা হারাইয়া গিয়াছে। কিংবা আধুনিক বিজ্ঞানের মতে এই সমস্ত বিষয়ই কোনো একটা কৃষ্ণবিবরের ভেতরে অবস্থিত। উহার অবস্থান বাহিরে থেকিয়া দেখা সম্ভব নয়। তবে সমস্যা হইলো এই রকম করিয়া যদি গোটা স্বর্গলোক গিলিয়া খায় ব্লাখোল তবে তাহার কিছু নমুনা আমরা বিকিরনের মাধ্যমে দেখিতে পারিতাম। সুতরাং ইহাকে আমরা মিথ্যা বলিতে পারি।
অন্য একটা সমাধান হইতেছে এই সপ্ত আসমান, সহ বাকী স্বর্গ নরক কোনো এক ভাবে এই মহাবিশ্বের বাইরে উহা এই মহাবিশ্বের অংশ নহে। যদি এমনটাই সত্যি হয় তাহলে উহা নিয়া আমদের না ভাবিলেও চলিবে। আমাদের এই মহাবিশ্ব স্বয়ংসম্পূর্ন একটা বিষয় যার নিয়মকানুন সবগুলোই এইখানে প্রযোজ্য, এবং উহা বিচ্ছিন্ন একটা অংশ যাহার উপর অপরাপর মহাবিশ্বের(যদি থাকে তবে) কোনো প্রভাব নাই।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।