রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের নামে পরিবার তন্ত্রের চর্চা

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: সোম, ২১/০৮/২০০৬ - ১২:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মানুষের রাজনীতি করার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত নয়, তবে বাংলাদেশে পরিবারতন্ত্রের প্রকোপ বাড়ছে রাজনীতিতে, 81তে সম্ভবত শেখ হাসিনাকে নিয়ে এসে আওয়ামী লিগের নেত্বরত্ব দেওয়া হলো, এর আগে প্রত্যক্ষ রাজনীতির কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না তার। এবং এই মাঠপর্যায়ের রাজনীতিতে অংশগ্রহন না করার অনভিজ্ঞতা সুখকর হয় নি, তিনি একটি দলকে তার ব্যক্তিগত বিশ্বাসের প্রচারনায় নিয়োগ করেছেন, তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহনে ভুল থাকলেও সেটা সংশোধনের কোনো প্রচেষ্টা তার নেই , এমন কি শিক্ষার বিষয়টাও তার ভেতরে অনুপস্থিত, আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব পাওয়ার জন্য তার সবচেয়ে বড় গুন দিলো তার পিতা।রাজনীতি বিষয়টা জেনেটিক কোনো গুন না, জন্মসূত্রে কেউ নেতা হয়ে যায় না, নেতা হওয়াটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, এবং এজন্য সক্রিয় রাজনীতির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। তার বড় বড় রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহন, এবং মাঝে মাঝে অনায্য অসংযমী বাক্য চয়ন ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে,মাঝে মাঝে জেদের বসে নেওয়া রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গুলো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি করে,এই দল সামলানোর অদক্ষতা ঢাকতে তার বেশ কিছু পরিজন আওয়ামি লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়, এবং নেতৃর সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার দরুন দলে তাদের অবস্থান পোক্ত, যদিও তাদের রাজনৈতিক বিচক্ষনতা কম এর পরও এই পরিবারতান্ত্রিকতার ফেরে দক্ষ এবং যোগ্য রাজনৈতিক নেতারা সামনে আসতে পারছে না। খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক যোগ্যতা কি ছিলো? শুধু মাত্র একটা আবেগের বশবর্তি হয়ে তাকে নেতৃত্ব দেওয়াচয়েছে, তার আত্মিয় স্বজনের দাপটে সেখানে গনতন্ত্রের চর্চা নেই, একটা দল নিজের অভ্যন্তরে যদি গনতন্ত্রের চর্চা না করে তাহলে কিভাবে দেশের বিষয়ে এসে তারা গনতন্তরের চর্চা করতে পারবে। তার বড় বোন সাংসদ ছিলেন, তার সম্মানিত পূত্র এখন যুগ্মসচিব। কেউ হয়তো সাংসদ এমন নেতাদের ভেতরে এই জিয়া-মুজিব পরিবারের সদস্যদের বিস্তারিত জমা দিতে পারে, তবে এই প্রবনতা সেখানেই সীমাবদ্ধ তা নয়,এর শাদের 2 জন বৌই জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের উচ্চপদে ছিলেন, এরশাদের স্ত্র ী সাংসদ, যদিও এখনও তার মাঠ পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা পোক্ত হয়েছে কি না জানি না, তার কোনো সচেতন ভাবনার কথা শুনি নি কোথাও, দেশের ভবিষ্যত নিয়ে বড় মাপের কোনো পরিকল্পনাও আসে নি তার কাছ থেকে, কিংবা বর্তমানকে আরও একটু সহনীয় করে তোলা, বিভিন্ন ইসু্য ভিত্তিক বিষয়ে আলোচনা(!!!) সংসদে হয় না, কিন্তু এর পরও মাঝে মাঝেও তাদের কাছ থেকে বড় মাপের কোনো আশাবাদি বক্তব্যও পাওয়া যাচ্ছে না।বদরুদ্দোজা চৌধুরির ছেলে এখন রাজনীতিতে সক্রিয়, যদিও বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা ব্যাতিক্রম, নিজস্ব মতের জন্য তাকে বহিস্কৃত হতে হয়েছে- যারা দূর্গন্ধ খুঁজতে চান তারা বদরুদ্দোজার পদত্যাগের সাথে বিষয়টাকে মিলিয়ে কিছু বলতে পারেন, তবে এর আগেও দলের মতের বিপক্ষে তার আবেগের জায়গায় দাঁড়িয়ে কিছু বক্তব্য মাহি চৌধুরির ছিলো।টঙ্গির সাংসদকে খুন করার পর তার ছেলেকে রাজনীতিতে টেনে আনা হলো। একেবারে সস্তা আবেগকে পুঁজি করে রাজনীতি এটা, হয়তো সংসদে আসনের বিষয়টা নিশ্চিত হয় তবে রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি কোনো শুভযোগ হয় না,দলের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে তাকে বক্তব্য দিতে শোনা যায় নি, কাউকে না কাউকে বিরোধিতা করতে হবে, অবস্থান প্রকাশ করতে হবে, এই গনতন্ত্রের চর্চাটা শুরু করতে হবে, অপ্রিয় সত্য বলার অভ্যাসটা তৈরি না করলে গনতন্ত্রের পালে হাওয়া লাগবে না।রওশ এরশাদ, বিদিশা, মাহি চৌধুরি, হাসিনা, খালেদা, জাহেদ চৌধুরি, তারেক জিয়া, নাসিম রহমান, আরও যারা যারা বাদ পড়লো যাদের রাজনৈতিক অভিষেক হয়েছে বাবার ক্ষমতা বদলের কারনে তাদের ধারায় নতুন যুক্ত হতে যাচ্ছে আসমা কিবরিয়া, কিবরিয়ার মৃতু্য দুঃখজনক একটা ঘটনা, সেই মৃতু্যর প্রকৃত তদন্ত না হওয়াও একটা দুঃখজনক ঘটনা কিন্তু আসমা কিবরিয়ার মতো একজনকে এই উপলক্ষে সাংসদ বানিয়ে দেওয়া যুক্তিহীন। এমন তালিকায় আসত পারে কিবরিয়ার পূত্র রেজা কিবরিয়া, তাকেও সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ করছে মানুষজন।আমরা কবে একটু সচেতন হয়ে এই রাজতান্ত্রিক উত্তরাধিকারের দাসত্ব থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারবো। পেপারে বড় বড় করে আলোচনা হচ্ছে, তারেক জিয়া, জয় নিয়ে, এদের নেতৃত্ব নিয়ে কথা উঠছে। অথচ এদের রাজনৈতিক যোগ্যতা কি? শেখ মুজিবের নাতি হওয়া কোনো রাজনৈতিক যোগ্যতা না, রাজনীতি শিখে রাজনীতি করলে হয়তো ভালো করতে পারবে, তবে বাংলাদেশ রাজনীতির ধারা অনুযায়ী, ক্ষমতা যেমন উত্তরাধিরকসূত্র হাত বদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাতে তারেক জিয়া এখন যুগ্ম মহা সচিব- জয়ও এমন ভাবেই কোনো একটা উচ্চ পর্যায়ে আসন পেয়েই শুরু করে প্রধান নেতৃত্ব পাবে।বাবার পরিচয়ে পরিচিত হওয়া দোষের কিছু না, কিন্তু নিজ যোগ্যতার সমান পরিমান সমাদর পাওয়াটা ভালো,এতে নিজের ক্ষমতার পরিমাপ করা যায়।জামাতের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব সম্পর্কে আমার জানা নেই তবে কূর্নিশ দেখে মনে হয়জামাতের পরবর্তি প্রজন্মের নেতৃত্বের বিষয়টাও একটা পর্যায়ে উত্তরাধিকার সূত্রেই নির্ধারিত হবে।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।