জামাত আর ইসলাম

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: বুধ, ২৩/০৮/২০০৬ - ১১:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মানুষের আবেগ মানুষের সচেতন ভাবনাকে নিয়ন্ত্রন করে, বিষয়নিষ্ঠতা থেকে দুরে সরিয়ে দেয়, এবং যুক্তি নির্ভর আলোচনাকে বাধাগ্রস্থ করে। মানুষ যখন বিশ্বাস করতে ব্যাগ্র তখন তাকে বোঝানোর মতো পাপ করতে নেই।বেশ অনেক দিন ধরে একটু একটু করে প্রচারনা চলছে, ধর্ম নিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে, নাস্তিকতাকে ধর্ম প্রমানের চেষ্টা চলছে, এবং বিজ্ঞানমনস্কতাকেও ধর্ম উপাধি দেওয়া হচ্ছে, আর কয়েক দিন মাত্র এর পর লাম্পট্যকেও ধর্ম আখ্যা দিয়ে মানুষের বিকৃত যৌনচর্চাকেও ধর্মপালনের স্ব ীকৃতি দেওয়া হবে।কিছু সমাজকতৃক নির্ধারিত বিষয় আছে, কিছু প্রথাগত সংজ্ঞা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে, মানুষের জীবনদর্শনের জন্যও একটা যুক্তিনিষ্ঠ আলোচনার রূপরেখাও তৈরি করে দেওয়া আছে, এই একাডেমিক আলোচনার ক্ষেত্র থেকে দেখতে গেলে কিভাবে দেখতে হবে বিষয়গুলোকে এসব নিয়ে আলোচনার ন্যায়শাস্ত্রও বিদ্যমান। বিতর্কের রীতিনীতি না মেনে যদি বিতর্ক শুরু করা হয় তাহলে তা কখনই কোনো ঊপসংহারের পৌঁছায় না।প্রশাসনিক কাঠামোর ভেতরে থেকে জীবনযাপন করার সময় যেমন আমাদের সেই প্রশাসনকতৃক নির্ধারিত আইনের সংজ্ঞায় জীবন কাটাতে হয় যুক্তিনির্ভর আলোচনাও সেই নিয়মনীতির কাঠামো অক্ষত রেখেই আলোচনা করাটা উচিত। তবে মানুষের ঔচিত্যবোধের জায়গাটা কখনই স্থির কিছু না, আর অপোগন্ডদের সাথে যুক্তিযুক্তি খেলাটা নেহায়েতই সময় অপচয় ধরে নিয়েই শুরু করতে হয়।ইসলামী দর্শন এবং জামাতে ইসলামীর দর্শনকে এক করে ফেলার মধ্যে যে বোকামি তা অনেকেই করছে এবং এই ভ্রান্তিকে মেনে নেওয়ার বিষয়টাও তাদের মধ্যে অনুপস্থিত। জামাতে ইসলামির প্রচার যন্ত্র ইসলাম ও জামাত কে এক সুতায় বাধার পরিকল্পনা করেছে, তাই কানাডার শরিয়া আইন সংক্রান্ত বিতর্কে জামাতের পক্ষের বক্তা স্পষ্ট করে উচ্চরন করতে পারেন জামাতের বিরোধিতা করার মানেই ইসলামের বিরোধিতা করা। এমন উচ্চারন ইসলামের নীতিকে কলুষিত করে।ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়েছে তরবারীর জোড়ে, আদর্শের জোড়ে ইসলাম খুব বেশী দুর অগ্রসর হতে পারে নাই। এর পরও যৌথ সমাজে বসবাসের জন্য মুহাম্মদকে তার কল্পনাকে যুক্তিযুক্ত করার জন্য কেতাবী ধর্মের ধামা ধরতে হয়েছে, প্রথমত ইহুদিদের পেছনে পেছনে গিয়ে তাদের কাছ থেকে স্ব ীকৃতি আদায়ের চেষ্টা, ইহুদি ধর্মের নীতি ছিলো যা পারসিক ধর্মের প্রভাবে অনেক বেশী পরিশীলিত হয়েছিলো ইসলাম আসারও 1000 বছর আগে, প্রয়োজনের সময় বনী ইসরাইলদের জন্য পথপ্রদর্শক আসবে- এই পথ প্রদর্শক হওয়ার চেষ্টা করেছিলো মুহাম্মদ, বেশীর ভাগ ইহুদি তা গ্রহন করে নাই, মদীনা আসার পরে মদীনার এই ইহুদিদের সমর্থন না পাওয়ায় মুহাম্মদের ঐশী বানীতে মূলগত পরিবর্তন দেখা যায়, মুসাকে প্রশংসা করে রচিত সুরা সমুহকে আর বাতিল ঘোষনা করার ক্ষমতা ছিলো না, মককায় যেমন করে মুক্তিপূজার সাথে সঙ্গতি রেখে রচিত আয়াতগুলোকে শয়তানের প্ররোচনা বলে ভবিষ্যতে বাতিল করা হয়েছিলো এ ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হয় নি। তাছারা মুসা, ইউসুফ, সোলায়মান, দাউদ, সহ আরও যত নবী সবাইকে ধর্মের খাতিরে ব্যাবহার করার পর সেগুলোকে বাতিল ঘোষনা করার মতো নির্বোধ মুহাম্মদ ছিলো না। কারন মুহাম্মদের ধর্মচেতনার উন্মেষের আগেই বিভিন্ন ভাবে এইসব ধারনা মুহাম্মদের কাছে পৌঁছেছে। মাককি সুরাসমুহের ভেতরে মুসাকে নিয়ে রচিত সুরা নেই, সে সময়টাতে রচিত সুরাসমুহকে বাতিল ঘোষনা করেই মুহাম্মদের মদীনায় হিজরত করা। একথার প্রমান পাওয়া যাবে ইবনে মাসাউদের বিভিন্ন মন্তব্যে, এর আগে কোরান সংকলনের ইতিহাস সম্পর্কিত পোষ্টে বেশ অনেকগুলো ঘটনা বয়ান করা হয়েছিলো, কোরানের বর্তমানের আয়াত সংখ্যা 6666 লোকে বলে, কেউ যোগ করে দেখেছে কি না জানি না, তবে আলীর ভাষ্য মতে কোরানের আয়াতের মোট সংখ্যা ছিলো 17000 এর মতো। এর 65% বাতিল করে যা অবশিষ্ট তা নিয়েই আমাদের ইসলামপ্রেমী ভাই-বেরাদানদের যত উলম্ফন।তবে সুবিধা হলো মককার 10 বছরের প্রচারনা অভিযানে যতজন মানুষ ইসলাম গ্রহন করেছিলো তা হাতে গোনা যেতো। এই সল্পসংখ্যাক অনুসারী নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় হিজরত শেষে মদিনার পথে রওনা হওয়ার পর 10 বছরে রচিত অনেকগুলো আয়াতকে বর্জন করে নতুন করে কোরানের ভাবধারা বদল করা হলো।মুহাম্মদের এই নেশা কাটতে সময় লাগে নি বেশী, মদিনায় হিজরতের 5 বছরের মাথায় তার বোধোদয় হয়েছিলো ইহুদিরা তাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে মুহাম্মদকে কখনই মেনে নিবে না, তাই ইহুদিদের মদিনা থেকে নির্বাসন দেওয়ার পরিকল্পনা, তাদের নির্মূলের পরিকল্পনা করা হলো। এবং সেই সাথে সমস্যা যা হলো তা হচ্ছে মুসা, ইউসুফ আদম, সৃষ্টিতত্তব সংক্রান্ত আয়াতগুলোকে বাতিল ঘোষনা করে নতুন এক ধরনের সৃষ্টিতত্ত্ব তৈরির মতো মেধা ছিলো না মুহাম্মদের, তাই ইহুদি রাবি্বদের বর্নিত স্বর্গের বিবরন ছড়িয়ে আছে বুখারি আর কোরানের পাতায় পাতায়। এবং এর সাথে যা মূল সমস্যা তা হলো মদীনার মানুষের ভেতরের সিক্ষিতের সংখ্যা ছিলো বেশী এবং তারা বেশ কিছু আয়াত নিয়ম করে লিপিবদ্ধ করেছিলো, এই সব লিপিবদ্ধ আয়াতকে বাতিল ঘোষনা করা যেতো তবে একেবারে ইশ্বরের বানী বলে লিপিবদ্ধ প্রায় 600 আয়াতকে এক কথায় বাতিল ঘোষনা করাটা মুহাম্মদের এই মদিনার ক্ষমতা দখল প্রক্রিয়াকে কখনই মসৃন করতো না।মুহামমদ কোরানের আয়াত শোধন করেছেন, কখনও বরজনও করেছেন তবে তা সামাজিক চাপে, কখনও পরিস্থিতি বিবেচনা করে মুহাম্মদের ইশ্বর তার বানীকে বদল করেছেন।ইহিদুদের সহানুভুতি এবং সমর্থন হারানোর পর মুহাম্মদের সামনে ছিলো অন্য একটা সমপ্রদায় তা হলো খ্রিষ্টান, এর পর সুরা মরিয়ম সহ আরও কিছু সুরায় যীশুর গুনকীর্তন করা হলো। তবে সেখানেও ব্যার্থতা। খুব বেশী খ্রিষ্টান ধর্মত্যাগ করে মুসলিম ধর্মগ্রহন করে নাই। ইহুদি খ্রিষ্টানদের বিষয়ে সাবধান করে দিয়ে সুরা রচিত হলো এই সব ঐক্য প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার পর।এবং আমরা তার জের টেনে যাচ্ছি এখনও। কেউ কিছু বললেই হলি বুক সামনে টেনে এনে বলে দেওয়া কোরানেই এই দুই ধর্মাবলম্বিদের বিষয়ে সাবধান করা হয়েছে মুসলিমদের।মুহাম্মদের জীবনিকাররা অনেক কথাই লিখে গেছেন, অনেক মহান মহান তথ্য উদ্ভাসিত সেই সব সীরাতুন্নবির পাতায় আমরা মুহাম্মদকে খুঁজে পাই না তেমন করে, মুহাম্মদকে খুঁজতে হবে হাদিসের পাতায় আর কোরানের পাতায়, মুহাম্মদের স্বেচ্ছাচারিতা বিশ্বাসবদল আর জীবনের সিদ্ধন্ত গ্রহনের সময় কিংবা ব্যাক্তিলিপ্সাকে সম্মিলিত লিপ্সা বলে চালানোর সময় তার ইশ্বরকে ব্যাবহার করার রাজনীতির প্রমান পাওয়া যাবে সেখানে। তবে এর জন্য সবচেয়ে ভালো হতো আলীর সংকলিত কোরানটা পাওয়া গেলে। সেখানে এই ধারাবাহিক পরিবর্তনটা লিপিবদ্ধ ছিলো। মুহাম্মদকে যৌনকাতর হিসেবে প্রমানের চেষ্টার বিপরীতে সবাই একটা কথা বলে থাকে, জীবনের অনেকটা সময় শুধুমাত=র খাদিজার সাথেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন তিনি। আমার মনে হয় এটা ছাড়া তার অন্য কোনো উপায় ছিলো না, বাকারা নাজিল হয় নাই, সম্পদের অধিকার, কর্মচারীর আনুগত্য সবই ছিলো খাদিজার পক্ষে, সেখানে মুহাম্মদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না খাদিজাকে রুষ্ঠ করে তার চাহিদা পূরনের চেষ্টা করা, আমি আগেই বলেছি মুহাম্মদ নির্বোধ নয় বরং বেশ কৌশলী মানুষ। আবু বকরকে বাধ্য করা তার মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, যায়েদকে বাধ্য করা বিয়ে করার জন্য এবং এ কাজে ঐশ্বরিক আদেশের সহায়তা নেওয়া, এবং পরবর্তিতে আবার সেই ঐশীবানীর কথা বলে জায়েদের সাথে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়ে সেই মহিলাকে বিবাহ করা। উমরের কন্যাকে বিয়ে করা, আয়েশা- হাফসা দ্্বন্দ্বের গ্যাড়াকলে পড়ে 1 মাস কৌমার্যব্রত গ্রহন, যুদ্ধের ময়দানে আয়েশা হাফসাকে নিয়ে যাওয়া, সবই কৌশলী মুহাম্মদের রূপ।এমন কৌশলেই তার বিভিন্ন গোত্রপতিদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন-মানবের পোষ্টগুলো নিষিদ্ধ হওয়ায় এর অনেক অংশই আমাদের মুসলিম বেরাদানদের জানা হলো না।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।