শাওনের গান ও আরও ২০টা

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৬/১০/২০০৬ - ১২:২৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হুমায়ন আহমেদ বেশ নিন্দিত হয়েছেন তার বিবাহজনিত কারনে, তার অগনিত ভক্তেরা অসমবিবাহের এই চমক সহ্য করতে পারে নি, আমি তার সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, একজন বয়স্ক মানুষ নিজ বিবেচনায় তার জীবনের সব সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তবে আমি অন্য এক ভিত্তিতে তার ভোক্তাসমপ্রদায়ের অংশ, সেই ভোক্তাবিচারেই আমি তার শাওনকে তারকা বানানোর অপচেষ্টার বিরোধি।হুমায়ুন আহমেদের দুই দুয়ারি, শ্রাবন মেঘের দিন, তার পরিচালিত অনেকগুলো নাটকে অবধারিতভাবেই শাওন প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে, এবং তার নাটকের সবকটা গুনাবলী অক্ষুন্ন থাকলেও শুধুমাত্র গুটিকয় মানুষের অভিনয়ের নিম্নমানের কারনে এখন অতীতে যেমন যেমন আগ্রহ নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের নাটকের প্রতিক্ষা করতাম এখন ততধিক বিতৃষ্ণায় বন্ধ করে দেই হুমায়ুন আহমেদের নাটক। হয়তো কাউকে, কোনো এক শুভচিন্তককে হুমায়ুন আহমেদকে কঠোর একটা সত্য জানানো প্রয়োজন, ইঁদুর দিয়ে হাল চাষ করা সম্ভব না। অবশ্য এই মোহ সহসা কাটবে বলে মনে হয় না, আমাদের শাওন শিশু অভিনেত্রি থেকে নায়িকা, এর পর পরিচালিকা, এবং অতঃপর গায়িক পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে, তার অতীব জঘন্য কিছু গান এবং তারও অধিক জঘন্য সংগীতযোজনার মান, পুরো এক ঘন্টা গায়িকা শাওনের ক্যাসেট শোনার জন্য ক্ষতিপুরনের মামলা করা গেলে ভালো হতো, যদিও বাংলাদেশের সংগীতজগতে শাওনই সবচেয়ে জঘন্য মানের গায়িকা এমন না, পয়সার জোড়ে ওয়াকার চৌধুরিও গোটা শহর ঢেকে ফেলেছিলো তার বিজ্ঞাপনে, এমনই পয়সার জোড়ে যে কেউ একটা ক্যাসেট বের করে ফেলতে পারে। আমাদের দুর্ভাগ্য মাননিয়ন্ত্রনের জন্য খাদ্যের মান দেখা শোনা করার জন্য একজন রোকনউদ দৌলা সাহেব আছেন অথচ মনের খোরাক গানের মান নিয়ন্ত্রনের জন্য এমন কোনো টাস্কফোর্স এখনও তৈরি হয় নি।ঈদে এসেছে হাবিবের গানের সংকলন। এর আগে ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু তোমায় যতনে গানটা শোনার পর মনে হচ্ছিলো এই সুরটা পরিচিত, খুব পরিচিত কোনো একটা সুরের কথা মাথায় ঘুরছিলো অথচ মনে পড়ছিলো না কোনো মতে, এখন মনে হচ্ছে এটা এ আর রহমানের কোনো এক হিন্দি গানের সুরের অনুকরন কিংবা ইন্সপিরেশনের ফলে তৈরি হয়েছে। অন্তত তার নতুন গীতি সংকলনের সংগীত, সুরযোজনা সবকিছুতেই এ আর রহমানের গ্রহন। গানগুলো শ্রুতিমধুর, কোনো কোনো গান হয়তো শ্রোতাদের মনেও দাগ কাটবে, হাবিবের পরিচায়ক যন্ত্রানুসঙ্গও এখানে উপস্থিত তবে আমি মোটামুটি হতাশ, আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিলো, এ আর রহমানের সুরের ভক্ত আমিও, তবে তার এমন অনুকরন করা যখন বাংলাদেশের চলচিত্রের সবগুলো সংগীত পরিচালক হিন্দি গানের সুর মেরে নিজেদের সংগীত পরিচালক জীবন কাটাচ্ছে তখন এমন ঘটা করে একটা গীতি সংকলন সামনে আনা যার অধিকাংশ গান শুনেই অবধারিত ভাবে মনে পড়ে এ আর রহমান, এটা ভালো কোনো লক্ষন মনে হয় নি, গানের বিচারে 100 তে 60 দেওয়া যায় এই গীতি সংকলনকে।যাত্রিও নতুন গীতি সংকলন এনেছে বাজারে। তপুর সুরের ভক্তআমি, তার একুইস্টিক গীটারে গাওয়া "এক পায়ে নুপুর তোমার " শোনার পরের মুগ্ধতা কমে নি, বরং বেড়েছে "আমি এক ভাঙা বাড়ির ভাঙা বারান্দা" শুনে, এর পর শুনলাম "মেয়ে", তখন পছন্দের গ্রাফটা উর্ধমুখী ছিলো, সেটা আরও উপরে উঠেছিলো "একটা গোপন কথা" শোনার পর, সেই আগ্রহ নিয়েই শুনলাম এই গীতি সংকলন, তপুর খালি গলায় গাওয়া গানের মাদকতা এখানে অনুপস্থিত, দুর্বল সুরযোজনা পুরো গানের আবেদনই মাটি করে দিয়েছে, যেমনটা ঘটেছিলো " এক পায়ে নুপুর তোমার" এই গানটা শোনা পরে, খালি গলায় একটা একুইস্টিক গীটারে গাওয়া গানটার ভেতরের মাধুর্য হারিয়ে গিয়েছিলো অহেতুক সংগীত যোজনায়। হয়তো সংগীত যোজনায় আরও সচেতন হলে এসব সম্ভবনাময় গানের মুল্য আরও বাড়তো। তপুর সংগীত প্রতিভা নিয়ে সংশয় নেই, তার শব্দ চয়নের অভিনভত্ব, তার গানের কথা বাছাই করা, তার পরীক্ষামূলক গানের ভক্ত আমি ছিলাম, এখন এই উচ্ছ্বাসের সাথে একটা সংশয়ও জাগছে মনে, সার্বিক গানের বিষয়ে তপুর মমতা কি কম?এর পরও বলছি যাত্রির নতুন গীতি সংকলনটা শোনার মতোই, আমি নির্দিধায় এটাকে 100তে 75 দিবো।গানটা শোনা যাবে এখানে


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।